05-06-2024, 07:04 PM
পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ
কাগজের ভ্যান থেকে বাণ্ডিলগুলো বুঝে নিয়ে চালানে সই করে দিল।সন্তোষ মাইতি দোকানে বসে রনোর কাজ দেখতে দেখতে ভাবেন ছেলেটাকে পেয়ে তার দোকান নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই।গুনে গুনে একেকজনকে কাগজ বুঝিয়ে দিতে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়ছে।সন্তোষ মাইতি দোকান থেকে বেরিয়ে বললেন,আমি একটু পার্টি অফিসে যাচ্ছি।
আপনি চলে যাচ্ছেন?
হ্যা কেন?কিছু বলবি?
দাদা একদিন আমি সন্ধ্যে বেলা এক জায়গায় যাব--।
কবে?
ডাক্তার বাবুর স্ত্রী আমেরিকা চলে যাচ্ছেন মেয়ের কাছে।আমাকে বললেন এয়ারপোর্টে পৌছে দিতে।দ্বিধা জড়িত গলায় বলল আরণ্যক।
তোকেই বলল?
হঠাৎ এসে বললেন।
কবে কিছু বলেছে?
মেয়ে টিকিট পাঠালে জানা যাবে।
মিসেস মুখার্জী ঠিক লোককেই চিনেছে।মানুষ এত সরল হয় কিভাবে কমরেড মাইতি বুঝতে পারেন না।হেসে বললেন,কবে যেতে হবে বলবি সেদিন না হয় আমি বসব।আচ্ছা আমি আসি কেউ খোজ করলে পার্টি অফিসে পাঠিয়ে দিবি।
আরণ্যকের একটা চিন্তা দূর হল।গাড়ী করে যাবে আবার সেই গাড়ীতে ফিরে আসবে।মালা মুখার্জীর কাছ থেকে দিনটা জেনে নিতে হবে।এয়ারপোর্টে এক্টূ ভাল পোশাক পরে যেতে হবে।সে কোনো দিন এয়ারপোর্টে যায়নি দেখাও হয়ে যাবে।
পুরানো লোকজন চলে যাচ্ছে নতুন নতুন লোক পাড়ায় আসছে।সবার সঙ্গে পরিচয়ও হয়নি।কেউ কেউ কাগজ নিতে আসে তখন দু-একটা কথা হয়।বেলা বাড়তে থাকে আরণ্যক গালে হাত দিয়ে দোকানে বসে রাস্তা দিয়ে লোক চলাচল দেখতে থাকে।কখনো একটা কাগজে আকিবুকি করে। কখনো একটা জার্নাল টেনে নিয়ে চোখ বোলায়। এবেলা কেউ একটা আসেনা কাজে কম্মে বেরিয়ে যায়।
ডাকাডাকিতে ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলে ইলিনা দেখল জল নিয়ে দাড়িয়ে আছে।বাথরুমের বালতিতে দু-টিন জল ঢেলে দিয়ে চলে গেল।দরজা বন্ধ করে বাথরুমে হিসি করতে বসে নজরে পড়ল যোনীর ঠোটে র্যাশ মত।ডেটল জল দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। খুব উদবিগ্ন বোধ করে।নিশীথকে ব্যাপারটা খুলে বলতে লজ্জা করে। এত বেলা হল আসছে না কেন।তাহলে কি অফিস সেরে আসবে? কুয়োর জল ওরও ব্যবহার করা ঠিক হচ্ছে না।নিশীথের অপেক্ষায় না থেকে ইলিনা চা করতে গেল।
স্বামীকে খাইয়ে কলেজ পাঠিয়ে দিয়ে ড.মিত্র চেম্বারে গিয়ে বসেন।একবেলা দশজন পেশেণ্ট দেখে তাও আগের থেকে এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট করতে হয়। সেজন্য চেম্বারে বেশী ভীড় হয়না।পেশেণ্টকে দেখার সঙ্গে সঙ্গে কোন পরিবেশে পেসেণ্ট বাস করে তার সামাজিক স্টাটাস খুটিয়ে খুটিয়ে জেনে নেন ড.মিত্র।এসব তার বাবার কাছ থেকে শেখা।এজন্য একজনের পিছনে একটু বেশী সময় লাগে।পেসেণ্টরাও এতে সন্তুষ্ট।পান্নাবাবু ডাক্তারের কপাউণ্ডার তথা চেম্বার দেখাশুনার দায়িত্বে।
একের পর এক রোগীর ডাক পড়ে তারা ভিতরে ঢুকে যায়।ড.মিত্র রোগীকে পরীক্ষা কোরতে কোরতে জিজ্ঞেস করে কোথায় থাকে স্বামী কি করে ইত্যাদি।রোগী দেখা প্রায় শেষ হবার মুখে এমন সময় ইলিনা ব্রাউন ঢুকলেন।পান্নাবাবুর নজর এড়ায় না।কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন,আপকো এ্যপয়ণ্টমেণ্ট হ্যায়?
আই ওয়াণ্ট এন এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট।
পান্নাবাবু কি বুঝলেন বললেন,এই সপ্তাহে নেহি হোগা কাম নেক্সট উইক
প্লীজ স্যার প্লীজ
কেয়া প্লীজ প্লীজ করতা হ্যায় বলতা নেহী হোগা
রোগী দেখা শেষ বাইরে গোলমাল শুনে ড.মিত্র বেরিয়ে দেখলেন একজন বিদেশিনী মহিলার সঙ্গে পানুবাবুর তর্কাতর্কি হচ্ছে।ড.মিত্র মিত্র জিজ্ঞেস করলেন,হোয়াটস দা ম্যাটার?
যত বলছি এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট ছাড়া উনি দেখেন না খালি বলছে প্লীজ-প্লীজ।
ড.মিত্র হাসি দমন করে ইলিনার দিকে তাকাতে হাত জোড় করে বলে,আই এ্যাম ইন গ্রেট ট্রাবল ম্যাম--প্লীজ--
ড.মিত্র কব্জি ঘুরিয়ে ঘড়ি দেখলেন বারোটা বেজে গেছে, তারপর পানুবাবুকে ওকে পাঠিয়ে দিন।ড.মিত্র চেম্বারে ঢুকে চেয়ারে বসে অপেক্ষা করতে থাকেন।
পানুবাবু বিরক্ত হয়ে বললেন, ইউ আর ভেরি লাকি, গো।
ইলিনা ভিতরে ঢুকে বলল,আপনার অনেক দয়া।
মেমসাব দেখছি সুন্দর বাংলা বলতে পারে।ড.মিত্র বললেন,বসুন।আপনার নাম?
ইলিনা বর্মন।
আপনি ম্যারেড?
হ্যা ম্যাডাম কদিন হল বিয়ে করেছি।
আপনার স্বামী বাঙালী?
হ্যা ম্যাডাম।
এবার বলুন আপনার সমস্যা কি?
আমাদের বাথরুমের জল ভ্যাজিনাতে ঢুকতে চুলকানি শুরু হয়--
প্রস্রাবের সময় জ্বালা হয়?
হ্যা ম্যাডাম।
আপনি কাপড়টা কোমর অবধি তুলে ওখানে শুয়ে পড়ুন।
ইলিনা পর্দা সরাতে দেখল ছোট একটা খুপরি ঘর।সেখানে একটা লম্বা টেবিল।উপর থেকে ঝুলছে আলো।ইলিনা কাপড় কোমর অবধি তুলে চিত হয়ে শুয়ে পড়ল।
ড.মিত্র দু-হাতে গ্লাভস পরে একটু পরে ঢুকে ঝুলন্ত বাতিটা জ্বেলে দিয়ে নীচু হয়ে যোনীটা দেখতে থাকেন।আঙুলটা যোনীর উপর বুলিয়ে ঠোটে ঠোট চেপে কি যেন ভেবে জিজ্ঞেস করেন,নিয়মিত সহবাস করেন?
একদিন করেছি।
তার আগে চুলকাতো?
ইলিনা ভেবে বলল,তার আগে হয়নি।কি হয়েছে ম্যাডাম খারাপ কিছু?
ড.মিত্র কথার উত্তর না দিয়ে বললেন,কাপড় ঠিক করে আসুন।
গ্লাভস খুলে বেসিনে গিয়ে ঘষে ঘষে হাত ধুয়ে তোয়ালেতে মুছে নিজের চেয়ারে বসে প্রেসক্রিপশন লিখতে থাকেন।
ইলিনা শাড়ী ঠিক ডাক্তারের সামনে এসে বসে বলল,ম্যাডাম খারাপ কিছু?
ড.মিত্র এ্যাটাচি খুলে একটা ট্যাব্লেট বের করে এগিয়ে দিয়ে বললেন,এটা খেয়ে নিন।
ইলিনা জলের বোতল বের করে ট্যাবলেটটা গিলে নিল।
ড.মিত্র বললেন,যা বলছি মন দিয়ে শুনুন।এখন কনসিভ করা যাবে না।ওষুধগুলো নিয়মিত খাবেন আর এই টেস্ট দুটো করে এ্যাজ আর্লি পসিবল রিপোর্ট দেখিয় যাবেন।
ম্যাডাম কি হয়েছে?
ক্লামাইডিয়া বললে কিছু বুঝবেন?সেক্সুয়াল ডিজিজ ।তবে বেশীদূর স্প্রেড করেনি।সব ঠিক হয়ে যাবে।আর হ্যা পরে যেদিন আসবেন হাজব্যাণ্ডকে সঙ্গে নিয়ে আসবেন।
ইলিনাকে ভীষণ চিন্তিত দেখায়।ড.মিত্র বললেন,চিন্তা করবেন না সব ঠিক হয়ে যাবে।
জলের থেকে হয়নি বলছেন?
টেস্টগুলো করে আনুন আর ওষুধগুলো নিয়মিত খান,আমি তো আছি।আর একটা কথা কটা দিন সহবাস বন্ধ রাখলে ভাল হয়।
ম্যাডাম ফিজটা?
বাইরে পানুবাবুকে দিয়ে দিন।
টাকা পয়সা মিটিয়ে দিয়ে বেরিয়ে পড়ল ইলিনা।যেন এক ঘোরের মধ্যে পা ফেলছে।জল থেকে ইনফেকশন হয়নি,তাহলে?কটা দিন সহবাস বন্ধ রাখতে বললেন।ড.মিত্রকে খারাপ লাগেনি বেশ যত্ন করে দেখেছেন।এরপর স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে আসবেন।কি মিন করতে চাইছেন?নিশীথ থেকে ইনফেকশন হয়েছে?সব কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে।না বেশী ভাবতে চায়না, নজরে পড়ল রাস্তার পাশে একটা প্যাথোলজিক্যাল সেণ্টার।ইলিনা হন হন করে ঢুকে গিয়ে কাউণ্টারে বসা লোকটির দিকে প্রেস্ক্রিপশন এগিয়ে দিয়ে বলল,এই টেস্টগুলো করতে চাই।
ঠিক আছে লিখে রাখলাম।কাল সকাল সাতটা-সাড়ে সাতটার মধ্যে লোক চলে যাবে।
কাল যাবে মানে?
লোকটি একটা প্লাস্টিকের কনটেনার এগিয়ে দিয়ে বলল,ভোরে উঠে এতে ইউরিন ধরে রাখবেন আর সকালে কিছু খাবেন না।
আমাদের লোকের হাতে দিয়ে দেবেন।
ইলিনা বুঝতে পারে ইউরিন টেস্ট করার কথা বলেছেন।এখন কিছু হবে না।জিজ্ঞেস করল,রিপোর্ট কখন পাওয়া যাবে?
সন্ধ্যে ছটার পর এই কাউণ্টার হতে পেয়ে যাবেন।
সেণ্টার থেকে বেরিয়ে একটা মেডিসিনের দোকানে গিয়ে ওষুধ কিনে বাসার দিকে হাটতে থাকে ইলিনা।খুব ক্ষিধে পেয়ে গেছে।
পাশ দিয়ে গাড়ী ছুটে চলেছে।এতবড় অফিসার একটা গাড়ী কিনতে পারে না।গরু বাথানে তাদের গাড়ী ছিল।আস্তে আস্তে সব কোরতে হবে। নিশীথ কি ফিরেছে নাকি অফিস সেরে সন্ধ্যেবেলা ফিরবে।হঠাৎ মনে হল নিশীথকে এখনই সবকিছু বলার দরকার নেই।ও হয়তো ইন্সাল্টেড ফিল করতে পারে।
বাসার কাছে এসে দেখল দরজার তালা খোলা।নিশীথ তাহলে ফিরে এসেছে।এতবেলা অবধি না খেয়ে রয়েছে।ঘরে ঢুকে দেখল পাখা চালিয়ে শুয়ে আছে।লজ্জিত বোধ করে ইলিনা জিজ্ঞেস করল,তোমাকে খেতে দেব?
অফিস ক্যাণ্টিনে খেয়ে এসেছি।তুমি এতবেলা অবধি কোথায় ছিলে?
শরীরটা খারাপ লাগছিল তাই ডাক্তার দেখিয়ে এলাম।
শরীর খারাপ আমায় বলোনি তো?
তোমায় কোথায় পাবো--
একটা ফোন তো করতে পারতে।
ফোন করেছিলাম সুইচ অফ।
কোন ডাক্তার দেখালে?তুমি এখানে নতুন--।
ড.পাঞ্চালী মিত্র।
নামটা শুনেই জ্বলে উঠল নিশীথ,ঐ পেচি ডাক্তার?
পেচির কি হল?লেডী ডক্টর তার উপর গাইনী।
তুমি এখানকার কতটুকু চেনো?শোনো ওখানে আর যাবার দরকার নেই।আমি বড় ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যাব।
খুব ক্ষিধে পেয়েছে।ইলিনা কথা না বাড়িয়ে রান্না ঘরে চলে গেল।
ইলিনা খেতে বসেছে।পাচি ডাক্তার!মেয়েদের প্রতি শ্রদ্ধার অভাব।একজন মহিলা ভাল ডাক্তার হতে পারে ভাবতে পারেনা।
সহবাস বন্ধ রাখার কথা বলেছে ড.মিত্র।কি বলবে ওকে?অসুস্থতার ভান করতে হবে।খাওয়া শেষ হলে আড়ালে গিয়ে ওষুধ খেয়ে একটা বই নিয়ে বসল।
কি শোবে না?নিশীথ জিজ্ঞেস করে।
আমি দিনে ঘুমাই না তাহলে রাতে অসুবিধে হয়।
কাগজের ভ্যান থেকে বাণ্ডিলগুলো বুঝে নিয়ে চালানে সই করে দিল।সন্তোষ মাইতি দোকানে বসে রনোর কাজ দেখতে দেখতে ভাবেন ছেলেটাকে পেয়ে তার দোকান নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই।গুনে গুনে একেকজনকে কাগজ বুঝিয়ে দিতে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়ছে।সন্তোষ মাইতি দোকান থেকে বেরিয়ে বললেন,আমি একটু পার্টি অফিসে যাচ্ছি।
আপনি চলে যাচ্ছেন?
হ্যা কেন?কিছু বলবি?
দাদা একদিন আমি সন্ধ্যে বেলা এক জায়গায় যাব--।
কবে?
ডাক্তার বাবুর স্ত্রী আমেরিকা চলে যাচ্ছেন মেয়ের কাছে।আমাকে বললেন এয়ারপোর্টে পৌছে দিতে।দ্বিধা জড়িত গলায় বলল আরণ্যক।
তোকেই বলল?
হঠাৎ এসে বললেন।
কবে কিছু বলেছে?
মেয়ে টিকিট পাঠালে জানা যাবে।
মিসেস মুখার্জী ঠিক লোককেই চিনেছে।মানুষ এত সরল হয় কিভাবে কমরেড মাইতি বুঝতে পারেন না।হেসে বললেন,কবে যেতে হবে বলবি সেদিন না হয় আমি বসব।আচ্ছা আমি আসি কেউ খোজ করলে পার্টি অফিসে পাঠিয়ে দিবি।
আরণ্যকের একটা চিন্তা দূর হল।গাড়ী করে যাবে আবার সেই গাড়ীতে ফিরে আসবে।মালা মুখার্জীর কাছ থেকে দিনটা জেনে নিতে হবে।এয়ারপোর্টে এক্টূ ভাল পোশাক পরে যেতে হবে।সে কোনো দিন এয়ারপোর্টে যায়নি দেখাও হয়ে যাবে।
পুরানো লোকজন চলে যাচ্ছে নতুন নতুন লোক পাড়ায় আসছে।সবার সঙ্গে পরিচয়ও হয়নি।কেউ কেউ কাগজ নিতে আসে তখন দু-একটা কথা হয়।বেলা বাড়তে থাকে আরণ্যক গালে হাত দিয়ে দোকানে বসে রাস্তা দিয়ে লোক চলাচল দেখতে থাকে।কখনো একটা কাগজে আকিবুকি করে। কখনো একটা জার্নাল টেনে নিয়ে চোখ বোলায়। এবেলা কেউ একটা আসেনা কাজে কম্মে বেরিয়ে যায়।
ডাকাডাকিতে ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলে ইলিনা দেখল জল নিয়ে দাড়িয়ে আছে।বাথরুমের বালতিতে দু-টিন জল ঢেলে দিয়ে চলে গেল।দরজা বন্ধ করে বাথরুমে হিসি করতে বসে নজরে পড়ল যোনীর ঠোটে র্যাশ মত।ডেটল জল দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। খুব উদবিগ্ন বোধ করে।নিশীথকে ব্যাপারটা খুলে বলতে লজ্জা করে। এত বেলা হল আসছে না কেন।তাহলে কি অফিস সেরে আসবে? কুয়োর জল ওরও ব্যবহার করা ঠিক হচ্ছে না।নিশীথের অপেক্ষায় না থেকে ইলিনা চা করতে গেল।
স্বামীকে খাইয়ে কলেজ পাঠিয়ে দিয়ে ড.মিত্র চেম্বারে গিয়ে বসেন।একবেলা দশজন পেশেণ্ট দেখে তাও আগের থেকে এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট করতে হয়। সেজন্য চেম্বারে বেশী ভীড় হয়না।পেশেণ্টকে দেখার সঙ্গে সঙ্গে কোন পরিবেশে পেসেণ্ট বাস করে তার সামাজিক স্টাটাস খুটিয়ে খুটিয়ে জেনে নেন ড.মিত্র।এসব তার বাবার কাছ থেকে শেখা।এজন্য একজনের পিছনে একটু বেশী সময় লাগে।পেসেণ্টরাও এতে সন্তুষ্ট।পান্নাবাবু ডাক্তারের কপাউণ্ডার তথা চেম্বার দেখাশুনার দায়িত্বে।
একের পর এক রোগীর ডাক পড়ে তারা ভিতরে ঢুকে যায়।ড.মিত্র রোগীকে পরীক্ষা কোরতে কোরতে জিজ্ঞেস করে কোথায় থাকে স্বামী কি করে ইত্যাদি।রোগী দেখা প্রায় শেষ হবার মুখে এমন সময় ইলিনা ব্রাউন ঢুকলেন।পান্নাবাবুর নজর এড়ায় না।কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন,আপকো এ্যপয়ণ্টমেণ্ট হ্যায়?
আই ওয়াণ্ট এন এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট।
পান্নাবাবু কি বুঝলেন বললেন,এই সপ্তাহে নেহি হোগা কাম নেক্সট উইক
প্লীজ স্যার প্লীজ
কেয়া প্লীজ প্লীজ করতা হ্যায় বলতা নেহী হোগা
রোগী দেখা শেষ বাইরে গোলমাল শুনে ড.মিত্র বেরিয়ে দেখলেন একজন বিদেশিনী মহিলার সঙ্গে পানুবাবুর তর্কাতর্কি হচ্ছে।ড.মিত্র মিত্র জিজ্ঞেস করলেন,হোয়াটস দা ম্যাটার?
যত বলছি এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট ছাড়া উনি দেখেন না খালি বলছে প্লীজ-প্লীজ।
ড.মিত্র হাসি দমন করে ইলিনার দিকে তাকাতে হাত জোড় করে বলে,আই এ্যাম ইন গ্রেট ট্রাবল ম্যাম--প্লীজ--
ড.মিত্র কব্জি ঘুরিয়ে ঘড়ি দেখলেন বারোটা বেজে গেছে, তারপর পানুবাবুকে ওকে পাঠিয়ে দিন।ড.মিত্র চেম্বারে ঢুকে চেয়ারে বসে অপেক্ষা করতে থাকেন।
পানুবাবু বিরক্ত হয়ে বললেন, ইউ আর ভেরি লাকি, গো।
ইলিনা ভিতরে ঢুকে বলল,আপনার অনেক দয়া।
মেমসাব দেখছি সুন্দর বাংলা বলতে পারে।ড.মিত্র বললেন,বসুন।আপনার নাম?
ইলিনা বর্মন।
আপনি ম্যারেড?
হ্যা ম্যাডাম কদিন হল বিয়ে করেছি।
আপনার স্বামী বাঙালী?
হ্যা ম্যাডাম।
এবার বলুন আপনার সমস্যা কি?
আমাদের বাথরুমের জল ভ্যাজিনাতে ঢুকতে চুলকানি শুরু হয়--
প্রস্রাবের সময় জ্বালা হয়?
হ্যা ম্যাডাম।
আপনি কাপড়টা কোমর অবধি তুলে ওখানে শুয়ে পড়ুন।
ইলিনা পর্দা সরাতে দেখল ছোট একটা খুপরি ঘর।সেখানে একটা লম্বা টেবিল।উপর থেকে ঝুলছে আলো।ইলিনা কাপড় কোমর অবধি তুলে চিত হয়ে শুয়ে পড়ল।
ড.মিত্র দু-হাতে গ্লাভস পরে একটু পরে ঢুকে ঝুলন্ত বাতিটা জ্বেলে দিয়ে নীচু হয়ে যোনীটা দেখতে থাকেন।আঙুলটা যোনীর উপর বুলিয়ে ঠোটে ঠোট চেপে কি যেন ভেবে জিজ্ঞেস করেন,নিয়মিত সহবাস করেন?
একদিন করেছি।
তার আগে চুলকাতো?
ইলিনা ভেবে বলল,তার আগে হয়নি।কি হয়েছে ম্যাডাম খারাপ কিছু?
ড.মিত্র কথার উত্তর না দিয়ে বললেন,কাপড় ঠিক করে আসুন।
গ্লাভস খুলে বেসিনে গিয়ে ঘষে ঘষে হাত ধুয়ে তোয়ালেতে মুছে নিজের চেয়ারে বসে প্রেসক্রিপশন লিখতে থাকেন।
ইলিনা শাড়ী ঠিক ডাক্তারের সামনে এসে বসে বলল,ম্যাডাম খারাপ কিছু?
ড.মিত্র এ্যাটাচি খুলে একটা ট্যাব্লেট বের করে এগিয়ে দিয়ে বললেন,এটা খেয়ে নিন।
ইলিনা জলের বোতল বের করে ট্যাবলেটটা গিলে নিল।
ড.মিত্র বললেন,যা বলছি মন দিয়ে শুনুন।এখন কনসিভ করা যাবে না।ওষুধগুলো নিয়মিত খাবেন আর এই টেস্ট দুটো করে এ্যাজ আর্লি পসিবল রিপোর্ট দেখিয় যাবেন।
ম্যাডাম কি হয়েছে?
ক্লামাইডিয়া বললে কিছু বুঝবেন?সেক্সুয়াল ডিজিজ ।তবে বেশীদূর স্প্রেড করেনি।সব ঠিক হয়ে যাবে।আর হ্যা পরে যেদিন আসবেন হাজব্যাণ্ডকে সঙ্গে নিয়ে আসবেন।
ইলিনাকে ভীষণ চিন্তিত দেখায়।ড.মিত্র বললেন,চিন্তা করবেন না সব ঠিক হয়ে যাবে।
জলের থেকে হয়নি বলছেন?
টেস্টগুলো করে আনুন আর ওষুধগুলো নিয়মিত খান,আমি তো আছি।আর একটা কথা কটা দিন সহবাস বন্ধ রাখলে ভাল হয়।
ম্যাডাম ফিজটা?
বাইরে পানুবাবুকে দিয়ে দিন।
টাকা পয়সা মিটিয়ে দিয়ে বেরিয়ে পড়ল ইলিনা।যেন এক ঘোরের মধ্যে পা ফেলছে।জল থেকে ইনফেকশন হয়নি,তাহলে?কটা দিন সহবাস বন্ধ রাখতে বললেন।ড.মিত্রকে খারাপ লাগেনি বেশ যত্ন করে দেখেছেন।এরপর স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে আসবেন।কি মিন করতে চাইছেন?নিশীথ থেকে ইনফেকশন হয়েছে?সব কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে।না বেশী ভাবতে চায়না, নজরে পড়ল রাস্তার পাশে একটা প্যাথোলজিক্যাল সেণ্টার।ইলিনা হন হন করে ঢুকে গিয়ে কাউণ্টারে বসা লোকটির দিকে প্রেস্ক্রিপশন এগিয়ে দিয়ে বলল,এই টেস্টগুলো করতে চাই।
ঠিক আছে লিখে রাখলাম।কাল সকাল সাতটা-সাড়ে সাতটার মধ্যে লোক চলে যাবে।
কাল যাবে মানে?
লোকটি একটা প্লাস্টিকের কনটেনার এগিয়ে দিয়ে বলল,ভোরে উঠে এতে ইউরিন ধরে রাখবেন আর সকালে কিছু খাবেন না।
আমাদের লোকের হাতে দিয়ে দেবেন।
ইলিনা বুঝতে পারে ইউরিন টেস্ট করার কথা বলেছেন।এখন কিছু হবে না।জিজ্ঞেস করল,রিপোর্ট কখন পাওয়া যাবে?
সন্ধ্যে ছটার পর এই কাউণ্টার হতে পেয়ে যাবেন।
সেণ্টার থেকে বেরিয়ে একটা মেডিসিনের দোকানে গিয়ে ওষুধ কিনে বাসার দিকে হাটতে থাকে ইলিনা।খুব ক্ষিধে পেয়ে গেছে।
পাশ দিয়ে গাড়ী ছুটে চলেছে।এতবড় অফিসার একটা গাড়ী কিনতে পারে না।গরু বাথানে তাদের গাড়ী ছিল।আস্তে আস্তে সব কোরতে হবে। নিশীথ কি ফিরেছে নাকি অফিস সেরে সন্ধ্যেবেলা ফিরবে।হঠাৎ মনে হল নিশীথকে এখনই সবকিছু বলার দরকার নেই।ও হয়তো ইন্সাল্টেড ফিল করতে পারে।
বাসার কাছে এসে দেখল দরজার তালা খোলা।নিশীথ তাহলে ফিরে এসেছে।এতবেলা অবধি না খেয়ে রয়েছে।ঘরে ঢুকে দেখল পাখা চালিয়ে শুয়ে আছে।লজ্জিত বোধ করে ইলিনা জিজ্ঞেস করল,তোমাকে খেতে দেব?
অফিস ক্যাণ্টিনে খেয়ে এসেছি।তুমি এতবেলা অবধি কোথায় ছিলে?
শরীরটা খারাপ লাগছিল তাই ডাক্তার দেখিয়ে এলাম।
শরীর খারাপ আমায় বলোনি তো?
তোমায় কোথায় পাবো--
একটা ফোন তো করতে পারতে।
ফোন করেছিলাম সুইচ অফ।
কোন ডাক্তার দেখালে?তুমি এখানে নতুন--।
ড.পাঞ্চালী মিত্র।
নামটা শুনেই জ্বলে উঠল নিশীথ,ঐ পেচি ডাক্তার?
পেচির কি হল?লেডী ডক্টর তার উপর গাইনী।
তুমি এখানকার কতটুকু চেনো?শোনো ওখানে আর যাবার দরকার নেই।আমি বড় ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যাব।
খুব ক্ষিধে পেয়েছে।ইলিনা কথা না বাড়িয়ে রান্না ঘরে চলে গেল।
ইলিনা খেতে বসেছে।পাচি ডাক্তার!মেয়েদের প্রতি শ্রদ্ধার অভাব।একজন মহিলা ভাল ডাক্তার হতে পারে ভাবতে পারেনা।
সহবাস বন্ধ রাখার কথা বলেছে ড.মিত্র।কি বলবে ওকে?অসুস্থতার ভান করতে হবে।খাওয়া শেষ হলে আড়ালে গিয়ে ওষুধ খেয়ে একটা বই নিয়ে বসল।
কি শোবে না?নিশীথ জিজ্ঞেস করে।
আমি দিনে ঘুমাই না তাহলে রাতে অসুবিধে হয়।