02-06-2024, 01:32 PM
(01-06-2024, 09:35 PM)Godhuli Alo Wrote: আমি ওর কাছে এগিয়ে গিয়ে ওর খোলা গায়ে হাত দিয়ে বললাম, এতো শুকিয়ে গেছিস কেন এই কদিনেই? বড় হবার পর আমি এভাবে ওর গায়ে কখনো হাত দেই নি তাই সে সংকোচে একেবারে জড়সড় হয়ে বলল, কই? আমি তো আগের মতোই আছি। আমি আবার ওর গায়ে হাত দিয়ে বললাম, নারে, অনেকটাই শুকিয়ে গেছিস। খাওয়া দাওয়া ঠিকমতো করবি। আর বেতনের টাকা তো প্রায় সবটাই আমার হাতে তুলে দিস। নিজের হাত খরচ কি থাকে কিছু? শাহেদ - আমার যা লাগে তা রাখি নিজের কাছে। এই নিয়ে চিন্তা করবেন না আম্মা। আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললাম, আমার কপালের দোষ। নইলে এই বয়সে আমার বুকের মানিককে পড়াশোনা ছেড়ে সংসারের হাল ধরতে হবে কেন? বলেই ওর মাথাটা ধরে আমার বুকে চেপে ধরলাম।
শেষে আবার একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললাম, হুম। এই ভেবেই নিজেকে সান্ত্বনা দিতে হবে। আর উপায় কি? আচ্ছা বাবা, এখন থেকে মাঝে মাঝে রাতে সবাই ঘুমানোর পর আসবো তোমার কাছে সাংসারিক আলাপ করতে। এখন তো তুমিই বাড়ির কর্তা। সব ব্যাপারে তোমার সাথে আলোচনা করাটা তো দরকার। শাহেদ হেসে বলল, আসবেন আম্মা। তবে যেকোনো ব্যাপারে আপনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। সংসার আগেও আপনার ছিল আর এখনো আপনারই আছে। আমি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললাম, বেঁচে থাকো বাবা। আল্লাহ মনের সব আশা পূরণ করুক। আচ্ছা, আমি এখন যাই। কাল রাতে আবার আসবো নে। সে হাসিমুখেই বলল, আচ্ছা আম্মা। আমি বেরিয়ে আসতেই সে দরজা লাগিয়ে দিলো আর সাথে সাথেই আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম। কি বলতে আসছিলাম আর কি বললাম। কি করার কথা ছিল আর কি করলাম। নিজের ওপর, নিজের ভাগ্যের ওপর রাগ হচ্ছিল। ধীর পায়ে নিচে নেমে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম আর নিজের অজান্তেই চোখের জলে বালিশ ভেজালাম।
মাতা ও পুত্রের কথোপকথন বড় মনোরম ভাষায় বলিয়াছেন। লেখক, আপনাকে ধন্যবাদ জানাই।