Thread Rating:
  • 9 Vote(s) - 2.22 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
হাতটা রেখো বাড়িয়ে (Writer: ইশরাত জাহান)
#25
পর্ব -১৭


শুদ্ধ'র হাসি ধারার কানে এখনও বাজছে। নিজেকে ধাতস্থ করে ধারা মনে মনে নিজেকে একটা ধমক দিলো। এইসব কি ভাবছে সে! এমনিতেই মুখ দিয়ে বেফাঁস কথাটা বলে দিয়ে এখন যা ভাবা উচিত তা না ভেবে আরও স্টুপিডের মতো চিন্তা করছে। ধুর! মাথাটাই বুঝি আজকাল খারাপ হয়ে যাচ্ছে ধারার। এসব কেমন ধরণের চিন্তা! লজ্জায় তার ইচ্ছা করছে মাটির সাথে মিশে যেতে। সে রক্তিম মুখে একবার আস্তে আস্তে শুদ্ধ'র দিকে তাকিয়ে এক ছুটে সেখান থেকে চলে এলো। শুদ্ধ আসার আগেই বাতি নিভিয়ে, কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমের আশ্রয় নিয়ে তবেই সে ব্যাপারটার সেখানে ধামাচাপা দিতে সক্ষম হলো।

সকালে ধারার ঘুম থেকে উঠতে উঠতে বেলা উঠে গেলো। ঘুম চোখে তাকিয়ে দেখলো শুদ্ধ রুমে নেই। গায়ের সুতি ওড়নাটা চাদরের মতো পেঁচিয়ে বারান্দায় চলে এলো ধারা। সকালের নরম আলো স্নিগ্ধতার সাথে ছুঁয়ে দিলো তাকে। বারান্দার কাঠের রেলিংয়ে হাত রেখে নিচে তাকিয়ে দেখলো, খোদেজা খোয়াড় থেকে হাস মুরগীগুলোকে ছেড়ে দিয়ে বাসী ভাত খাওয়াচ্ছে। খানিকবাদেই ঘর থেকে শুদ্ধ বেড়িয়ে এলো। তার হাতে একটা কাস্তে আর একটা ছোট চটের বস্তা। তা নিয়ে সে যাচ্ছে নিজের ক্ষেত খামারের দিকে। ধারা অপলক সেদিকে তাকিয়ে রইলো। কোন সাধারণ মানুষও প্রথম দেখায় হয়তো এটা স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারবে না যে এমন উচ্চশিক্ষিত একটা ছেলে রোজ কাস্তে হাতে ক্ষেতে যায়। যেখানে চেষ্টা করলেই একটা ভালো চাকরি পেতে পারে সে। আচ্ছা, স্বপ্নের শক্তি কি আসলেই এতো বেশি হয়? প্রয়োজনে মানুষকে সমাজের সাধারণ ধারণারও বিপরীতে নিয়ে যেতে পারে সে? ব্যতিক্রম থেকে ব্যতিক্রম ধারণাও সম্ভবপর হয় এই স্বপ্নের জোরেই! শুদ্ধ'র একটা শক্ত স্বপ্ন আছে৷ নিজের উপর আত্মবিশ্বাস আর পূর্ণ প্রচেষ্টার জোরে সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়নের পথেও নেমে পড়েছে সে। তার চাক্ষুষ প্রমাণ তো ধারা গতকাল নিজের চোখেই দেখলো৷ সবকিছু কতো সুন্দর ছিল! সেখানে একটা স্বপ্নের ছোঁয়া ছিল, পরিশ্রমের রেশ ছিল, আত্মবিশ্বাসের বাস্তব সাক্ষ্য ছিল। অনিন্দ্য ব্যক্তিত্বের অধিকারী শুদ্ধকে নিরীক্ষণ করতে গিয়ে    
পরনির্ভরশীল, ভীতু, ব্যক্তিত্বহীন ধারা হঠাৎ নিজের গভীরে হাঁতড়ে বেড়ালো। তার মনের কোন গোপন অংশেও কি ধীরে ধীরে গড়ে উঠছে এমন স্বপ্ন দেখার আহ্বান! একটা সুন্দর চেষ্টার মাধ্যমে সেও কি পারলেও পারতে পারে কিছু একটা। 
__________________________________________

শুদ্ধ'র বন্ধু ফাহিমের একটা নিজস্ব রুম আছে প্রাইভেট পড়ানোর। তার পাশের রুমেই তার থাকার সমস্ত ব্যবস্থা। মূলত বাসাটি হলো দু কামরার। এক রুম থাকার জন্য রেখে আরেক রুমে কাঠের বেঞ্চ পেতে স্টুডেন্ট পড়ানোর ব্যবস্থা রেখেছে ফাহিম। এগুলো হলো আগের ব্যবস্থা। প্রায় ছয় মাস হয়ে গেলো ফাহিম স্টুডেন্ট পড়ানো ছেড়ে দিয়েছে। নেহাত বন্ধুর অনুরোধের জোরেই ধারাকে পড়াতে রাজী হয়েছে সে। সামনের কাঠের বেঞ্চিটিতে বসে আছে ধারা। তার সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে ফাহিম। শুদ্ধ দরজার বাইরে সিমেন্টের বাঁধানো বসার জায়গায় বসে আছে। এখানেই রোজ ধারার পড়া শেষ হবার অপেক্ষা করে সে। ধারা ইংরেজির গ্রামার অংশের একটা টপিক নিয়ে ফাহিমের থেকে বুঝে নিচ্ছিলো। বোঝানো শেষ হলে ফাহিম বলল, 'আপনি তো খুব ভালোই প্রোগ্রেস করছেন ভাবী।'
ধারা কি বলবে ভেবে পায় না। স্যার ধরণের মানুষের মুখে ভাবী ডাকটা একটু অপ্রস্তুত কর। এখন এটা নিয়ে তো আবার কিছু বলা যায় না। ফাহিম বলতে থাকে,
'এভাবেই যদি চেষ্টা করতে থাকেন তাহলে একটা হোপ রাখাই যায় ইউনিভার্সিটিতে চান্স পাওয়ার। আরো ভালো মতো চেষ্টা করুন ভাবী। যদি চান্সটা পেয়ে যান না আমার বন্ধুটা বেজায় খুশি হবে। কি কি সে না করছে আপনাকে পড়ানোর জন্য! আমি তো প্রথমে রাজীই হতে চাইনি পড়ানোর জন্য। আসলে আমার সময় নেই বলে। শুদ্ধ আমাকে এতোটাই অনুরোধ করেছে যে আমি আর না রাজী হয়ে পারেনি। তার উপর ও যেই প্রোজেক্টে হাত দিয়েছে এর জন্য তো ও'র নিজেরই অফুরন্ত সময়ের প্রয়োজন। তবুও তার থেকে সময় বের করে রোজ আপনাকে দুই ঘন্টার জন্য শহরে নিয়ে আসে। আবার যতক্ষণ পড়া শেষ হয় বাইরে বসে অপেক্ষাও করে। সিরিয়াসলি বউয়ের পড়ালেখার জন্য কোন স্বামীকে আমি এতো খাটতে দেখিনি। শুদ্ধ আমার কলেজ লাইফের বন্ধু৷ আমরা একসাথেই এডমিশনের প্রিপারেশন নিয়েছিলাম। বিশ্বাস করেন ভাবী, আমি ও'র নিজের এডমিশনের সময়েও ওঁকে এতোটা ব্যাকুল দেখিনি। শুদ্ধ অনেক সাপোর্টিভ। ও পাশে থাকলে ইনশাআল্লাহ আপনি চান্স পেয়ে যাবেন।'

ফাহিমের কথা শুনে ধারা দরজা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে শুদ্ধকে দেখতে লাগলো। কিভাবে চোখে মুখে একটা ক্লান্তিহীন ছাপ নিয়ে দু ঘন্টা যাবৎ বসে আছে লোকটা। ধারার ঠোঁটে একধরনের আবেগ্লাপুত হাসি ফুটে উঠে।

ফাহিমের ওখান থেকে বেড়িয়ে এসে ধারা আর শুদ্ধ রাস্তা দিয়ে হাঁটতে থাকে। দুজনেই চুপচাপ। মুখে কোন কথা নেই। ধারা আড়চোখে একবার শুদ্ধ'র দিকে তাকায়। শুদ্ধ'র গায়ে নীল রঙের চেকশার্ট। মাথার ঘন চুলগুলো পরিপাটি হয়েই আছে। দু তিন দিন যাবৎ শেভ না করায় গালে গজিয়েছে হালকা খোঁচা খোঁচা দাড়ি। ধারা সন্তর্পণে সেদিকটায় তাকিয়েই থাকে। আচ্ছা, খুব কি আহামরি দেখতে ছেলেটা? তবুও সবার জন্য এতো নজরকাড়া কেন? আসল ব্যাপারটা হলো শুদ্ধ'র ব্যক্তিত্বে। আর ব্যক্তিত্বের রূপের মতো ভয়ংকর সুন্দর আর কিছু হয় না। তার কথার মধ্যে জড়তা নেই, দৃষ্টির মধ্যে কোন সংকোচ নেই। সে স্পষ্ট আর স্বচ্ছ। তার সাধারণ কথা শুনতেও শান্তি লাগে। সেখানে প্রবল অনুপ্রেরণার জোয়ার থাকে। বিশেষ করে সে যখন জড়তাহীন, সংকোচবিহীন, স্পষ্ট স্বরে 'ধারা' বলে ডেকে উঠে...সেই ডাকের মধ্যেই ভরসা, আস্থা, বিশ্বাস খুঁজে পায় ধারা। সেই ডাকটাও কতো সুন্দর, সুমধুর। মনে হয় কেউ একজন আছে। সবসময় আছে।

হঠাৎ একটা গোলা আইসক্রিমের ভ্যান নজরে পড়ায় শুদ্ধ ডেকে উঠলো, 'ধারা!'
ধারার প্রাণ জুড়ে একধরনের শীতল শিহরণ বয়ে গেলো। আবারো সেই ডাক! 
শুদ্ধ বলতে থাকলো, 'গোলা আইসক্রিম খাবেন?'
প্রশ্ন তো করলো ঠিকই কিন্তু ধারা কিছু বলার আগেই তার হাত টেনে ভ্যানের কাছে নিয়ে গেলো শুদ্ধ। আইসক্রিমওয়ালা কমলা ফ্লেভারের দুটো গোলা আইসক্রিম দিলো তাদের। ধারা এর আগে কখনো গোলা আইসক্রিম খায়নি। আইসক্রিম পেয়ে আনন্দের সাথে খেতে লাগলো সে। হঠাৎ শুদ্ধ'র দিকে তাকিয়ে হেসে দিলো ধারা। বলল,
'আপনার ঠোঁট, জিভ কেমন কমলা রঙের হয়ে গেছে!' 
শুদ্ধ বলল, 'আমারটা একার হয়েছে? আপনারটাও হয়েছে। দেখুন।'
এই বলে শুদ্ধ ধারাকে ভ্যানের সাথের ছোট্ট আয়নাটায় দেখালো। তারা দুজনেই বাচ্চাদের মতো জিভ বের করে আয়নায় দেখতে লাগলো আর খিলখিল শব্দে হাসতে লাগলো। সোজা হয়ে উঠতে গিয়েই ধারা একটা বারি খেলো শুদ্ধ'র মাথার সাথে। শুদ্ধ কিছু বলতে যাবে তার আগেই সেই সুযোগ না দিয়ে ইচ্ছে করে মাথা দিয়ে আরেকটা বারি দিয়ে ধারা বলল, 'আপনাকে কৃতার্থ করলাম। মাথায় শিং গজাবার হাত থেকে বাঁচিয়ে।'

শুদ্ধ হেসে ফেললো। সাথে ধারাও। আইসক্রিম খাওয়া হয়ে গেলে শুদ্ধ ধারাকে সামনে হাঁটতে বলে আইসক্রিমওয়ালাকে বিল পরিশোধ করতে লাগলো। ধারা খানিক এগিয়ে গিয়ে শুদ্ধ এখনো আসছে না বলে বারবার পেছনে ফিরে দেখতে লাগলো। রাস্তা সম্পূর্ণ ফাঁকা। ভাংতি না থাকায় শুদ্ধ'র দেরি হচ্ছিল। হঠাৎ ধারার পাশ ঘেঁষে একটা পিকআপ ভ্যান গাড়ি দ্রুত চলে গেলো। ধারা রাস্তার একটু বেশিই কাছ ঘেঁষে দাঁড়ানোয় ড্রাইভার গাড়ি থেকে মাথা বের করে তার সাইডে না যাওয়ায় মুখ খিচে একটা গালি দিলো। ধারা কিছুই বললো না। নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। দূর থেকে দৃশ্যটা চক্ষুগোচর হলো শুদ্ধ'র। গাড়িটা ওদের থেকে খানিক সামনে গিয়েই থেমে গেলো। শুদ্ধ ধারার কাছে গিয়ে বলল,
'ঐ লোকটা আপনাকে গালি দিলো আপনি কিছু বললেন না কেন? আর সে আপনাকে গালি দিলোই বা কেন? আপনি তো তার গাড়ির সামনে গিয়ে পড়েননি। আপনি কিছু বললেন না কেন তাকে?'

ধারা বিমর্ষ মুখে বলল, 'না থাক! দোষটা বোধহয় আমারই ছিল। আমি হাঁটতে হাঁটতে মনে হয় গাড়ির কাছে চলে গিয়েছিলাম।'

'ধারা, সব দোষ সবসময় নিজের ঘাড়ে নিয়ে যাবেন না৷ রাস্তা যথেষ্ঠ প্রশস্ত। তার উপর পুরো ফাঁকা। আপনি হঠাৎ করে উদয় হননি। আগে থেকেই ছিলেন। সে তার গাড়ি নিয়ে আগে থেকেই সাইড হয়ে যায়নি কেন? আর আপনি কি রাস্তার মাঝে গিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন? সাইডেই তো ছিলেন। তাহলে? দোষটা তার। তার ভুলের কারণে আজ একটা এক্সিডেন্টও হয়ে যেতে পারে। তবুও নিজের ভুল না বুঝে সে উল্টো আপনাকেই গালি দিয়ে গেলো। ড্রাইভারটা ওখানে দাঁড়িয়ে আছে। যান গিয়ে তাকে একটা ধমক দিয়ে আসুন।'

ধারা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বলল, 'থাক না। শুধু শুধু আবার ঝামেলা করার কি দরকার?'

'ঝামেলার কিছু নেই। আপনি জাস্ট তার কথার জবাব দিবেন।'

ধারা নার্ভাস হয়ে গেলো। অভ্যাসবশত কপালের কার্ণিশ ঘষার জন্য হাত উঠানোর জন্য নাড়াতেই শুদ্ধ খপ করে ধারার সেই হাত ধরে ফেললো। শক্ত করে সেই হাত চেঁপে ধরে বলল,
'ভয় পাবেন না ধারা। সবকিছুর জন্যই সবসময় আপনার দোষ থাকে না। যতদিন পর্যন্ত এভাবে সবটা সহ্য করে যাবেন, ততদিন এই পৃথিবীবাসী সব দোষ আপনার উপর চাপিয়ে দেবে। এখানে দোষটা আপনার ছিল না। অন্যের উপর বিশ্বাস করার আগে নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে শিখুন। আপনাকে কেউ একজন শুধু শুধুই গালি দিয়ে যাবে আর আপনি সেটা সহ্য করবেন কেন? যান, গিয়ে তার জবাব দিয়ে আসুন।'

গুটিগুটি পায়ে ধারা লোকটার দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো। নার্ভাস চোখে একবার পেছনে ফিরে তাকালোও শুদ্ধ'র দিকে। শুদ্ধ নিজের মতো স্থির থেকেই দেখতে লাগলো ধারা কি করে? পিকআপ গাড়িটার সামনে ড্রাইভারটা দাঁড়িয়ে ছিল। ধারা গিয়ে সামনে দাঁড়াতেই কপাল ভাঁজ করে ড্রাইভারটা জিজ্ঞাসাসূচক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। ধারা কাঁপা কাঁপা গলায় বলল, 'আপনি আমাকে গালি দিলেন কেন?'
এতক্ষণ পর এসে এই কথা তোলায় লোকটা খানিক অবাক হলো। তার খশখশে গলায় কুৎসিত ভঙ্গিমা করে বলল, 'গাড়ির সামনে আইয়া দাঁড়ায় থাকো কে? গায়ে হাওয়া লাগানির আর কোন জায়গা পাও না!'
লোকটার কথা বলার ধরণ এতো বিশ্রী। শুনলেই রাগ চড়ে যাবার কথা। ধারা আবারো কাঁপা গলায় কিছু বলতে গিয়ে থেমে গেলো। চোখ বন্ধ করে একটা গভীর শ্বাস নিয়ে গলার জোর বাড়িয়ে বলল,
'আমি গাড়ির সামনে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম নাকি আপনি গাড়ি নিয়ে আমার কাছে এসেছিলেন। এতো বড় ফাঁকা রাস্তার মধ্যে আপনি আমার সাইড দিয়েই গাড়ি নিলেন কেন? অপর সাইড দিয়েও তো যেতে পারতেন। আরেকটু হলে তো আপনি গাড়ি আমার উপরেই উঠিয়ে ফেলতেন। দোষটা আপনার।'

ধারার সাথে যে আরেকজন আছে এটা ড্রাইভারটি বুঝতে পারেনি। একা একটা মেয়েকে দেখে তার গলা একটু বেশিই চড়ে গেলো। সে চোখ গরম করে বলল, 'এই মাইয়া, বেশি কথা বলবা না!'

'কেন? আমি কি ভুল কিছু বলেছি? দোষও আপনি করলেন তারউপর গালিও আমাকে দিলেন! এই রাস্তার পাশে একটা সিসিটিভি ক্যামেরা আছে। চলুন সামনের ট্রাফিক পুলিশ বক্সে গিয়ে দেখা যাক দোষটা কার। বাকিটা না হয় পুলিশই দেখবে।'

পুলিশের কথা শুনতেই লোকটা ঘাবড়ে গেলো। আমতা আমতা করতে লাগলো সে। ধারা বারবার তাড়া লাগিয়ে বলল, 'কি হলো চলুন, আপনার যা ইচ্ছা আপনি রাস্তার মধ্যে একজনকে বলে যাবেন। আর সে চুপচাপ শুনবে? এর হেনস্তা এখন পুলিশই করবে।'

লোকটা ভয় পেয়ে গেলো। শত চেষ্টা করেও যখন ধারাকে থামাতে পারলো না তখন শেষমেশ গালি দেবার জন্য ধারার কাছে বারবার মাফ চাইতে লাগলো। আর সাথে এটাও বলল এরকম সে আর কখনো করবে না। এরপর যত দ্রুত সম্ভব গাড়ি নিয়ে কেটে পড়লো। ধারার ভীষণ আনন্দ অনুভব হলো। নিজের উপর কিছুটা যেন বিশ্বাস খুঁজে পেলো সে। হাসিমুখে পেছন ঘুরে শুদ্ধ'র দিকে তাকালো ধারা। শুদ্ধ'র মুখে সন্তুষ্টির হাসি। ধারা যেভাবে সিসিটিভি ক্যামেরা আর ট্রাফিক পুলিশের কথা বলে ব্যাপারটা সামলালো তাতে শুদ্ধও অবাক, সাথে মুগ্ধ।

বাড়ি ফিরেই শুদ্ধ খোদেজার কাছে বসে বসে আজকের সমস্ত ঘটনা খুলে বলল। ধারা যে আস্তে আস্তে কিভাবে পাল্টাচ্ছে তা খোদেজাকেও জানিয়ে রাখলো সে। ধারার উন্নতিতে ছেলের মুখে এতো আনন্দ দেখে খোদেজার প্রাণ জুড়িয়ে গেলো। খোদেজা ভেবে পায় না এতো আনন্দ কি তার ছেলে কখনো নিজের সাফল্যতেও হয়েছিল! খোদেজা মনে মনে প্রার্থনা করলো তার ছেলের এই সুখ সবসময় বজায় থাকুক। মায়ের প্রার্থনা করা মুখ দেখে শুদ্ধ বলল,  
'তোমার দোয়া কখনোই বিফলে যায় না আম্মা।'

কথাটা বলেই মিষ্টি করে হাসলো শুদ্ধ। শুদ্ধ হাসতেই তার বাম গালে টোল পড়লো। আর সেই টোল দেখে খোদেজার বুকের মধ্যে ছ্যাৎ করে উঠলো। সাধারণত ছেলের মুখের হাসি দেখলে মায়েরা আনন্দিত হয়। কিন্তু খোদেজার ক্ষেত্রে হয় বিপরীত। তার ছেলে হাসলেই তার গালে টোল পড়ে। আর সেই টোল চোখে পড়লে খোদেজার মুখের হাসি থেমে যায়। মনে পড়ে যায় সেই অপ্রিয় সত্য।


চলবে*******
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

[+] 1 user Likes Bangla Golpo's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: হাতটা রেখো বাড়িয়ে (Writer: ইশরাত জাহান) - by Bangla Golpo - 29-05-2024, 07:02 AM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)