Thread Rating:
  • 34 Vote(s) - 2.85 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery আগুণের পরশমণি;কামদেব
দ্বাদশ পরিচ্ছেদ





আজ সেকেণ্ড সাটারডে।রনো গুনে গুনে সকলকে কাগজ বুঝিয়ে দিচ্ছে।সন্তোষ মাইতি দোকানে বসে রনোর কাজকর্ম লক্ষ্য করছেন।ছেলেটি খুধ বিশ্বাসী আজকালকার ছেলেদের মত মেয়েদের পিছে ঘোরার বাতিক নেই।ওর উপর দোকানের দায়িত্ব দিয়ে নিশ্চিন্ত থাকা যায়।ফোন বাজতে পকেট হতে বের করে স্ক্রিনে প্রভাত বসুর নাম দেখে বললেন,বলুন প্রভাতদা.....মিটিং তো সন্ধ্যেবেলা আমার মনে আছে...তার আগে আলোচনা?...স্বার্থে ঘা লাগলে অভিযোগ জমা পড়বেই....ঠিক আছে আমি মিনিট পনেরোর মধ্যে আসছি...লাল সেলাম।
ফোন রেখে ভাবেন কি কমপ্লেন?একবার নকশালী মেয়েটাকে নিয়ে কথা উঠেছিল এখন আবার কি নিয়ে?
শোন রনো তোর কাগজ বিলি হল?
তপনকে দেওয়া হলেই হয়ে যাবে।
বাক্সে টাকা কিসের?
কাল কিছু বিক্রিবাট্টা হয়েছে।
তালা দিয়ে রাখবি না?শোন তোকে একটা কথা বলি।ভালো মানুষ হলেই তোকে সবাই ভাল মানুষ বলবে না।আমি আসছি,কেউ খোজ করলে বলবি পার্টি অফিসে আছি।
সন্তোষবাবু চলে গেলেন।রনো আবার কাগজ গুনতে থাকে।
স্টেটস্ম্যান একটা বেশী দিবি নতুন একটা পার্টি ধরেছি।তপন বলল।
সবাই চলে যেতে রনো কাউণ্টারে এসে বসল।সন্তোষদা ভাল মানুষের কথা বলছিল।মান্তু বলছিল সাচ্চা ইন্সানের কথা।ওরা জানেনা মালা মুখার্জীর সঙ্গে কি করেছে।নিজেকে কেমন অশুচি মনে হয়।;., না হলেও নৈতিক অপরাধ অস্বীকার করা যায় কি?ওরকম একটা  বয়স্কা মহিলার সঙ্গে--রনো কিছুতেই ভুলতে পারেনা।ডাক্তারবাবুর মত একটা অভিজাত পরিবারের মহিলা এত কম বয়সী ছেলেকে দিয়ে--ছিঃ একটু রুচিতে বাধল না।
বিশু এসে বলল,পাত্তা লাগিয়ে এলাম।
কিসের পাত্তা?
ঐ যে জিন্সের প্যাণ্ট।
এরা আছে এদের তালে রনো চুপ থাকে।
কি বস মুড অফ মনে হচ্ছে।এনি প্রব্লেম?
রনো হেসে বলল,সমস্যা কিসের?কি পাত্তা লাগালি?
নাম চিনি, বীরু প্রোমোটারের ফ্লাটে এসেছে আই টি সেক্টারে কাজ করে।এখনো খালি আছে।
খালি আছে তাহলে ঝুলে পড়।
আরো কয়েকজন আসতে ওরা প্রসঙ্গ বদল করে।
সপমা রিয়েল ফ্রেণ্ড ভোর বেলা ফ্লাক্সে করে চা নিয়ে এসেছিল।কাল সারাদিন তার সঙ্গে ছিল।এরকম কজন করে।ওর জন্য খারাপ লাগে।বলছিল হয়তো পাস করে যাব সবাই বলবে সুপমা মণ্ডল এম এ ইন ইংলিস।এতে কি লাভ বল।শুনেছি বাবা এক ব্যবসায়ী পাত্রের ব্যাপারে কথা বলছে বাড়ী গাড়ী আছে কিন্তু ছেলেটি মাধ্যমিক না কি পাস।বাবার কথা পাসপুস  দিয়ে কি হবে।একজন মানুষের জীবন আরো অনেক মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে।আমার বাবা যদি অন্য হতো তাহলে আমার লাইফটাও অন্যরকম হতো।
সুপমার কথাগুলো মনে মনে নাড়াচাড়া করতে করতে মিস ব্রাউন বারান্দায় এসে দাড়ালো।সত্যি কেউ স্বয়ং সম্পূর্ণ নয়।পরিবার পারিপার্শ্বিকের সমন্বয়ে একটা মানুষ ধীরে ধীরে পুষ্ট সমৃদ্ধ হয়। অনেকদিন পর মামনের সঙ্গে দেখা হবে।বিয়ে করলনা নিজের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে নিজেই নষ্ট করছে।নীচে নজর পড়ে সুপমা সেজেগুজে এখন কোথায় চলল?ফ্লাটেই তো ঢুকছে তাহলে কি আমার কাছেই আসছে।গল্প করে দুপুরটা ভালই কাটবে।কলিং বেল বাজতে মিস ব্রাউন দরজা খুলে বলল,আয় ভিতরে আয়।
সুপমা ভিতরে ঢুকে চারপাশ দেখে।একটা চৌকি ছাড়া কোনো আসবাব নেই।
কোথাও বেরোচ্ছিস?
হ্যারে আজ দেশে চলে যাচ্ছি।রেজাল্ট আউট হলে আবার আসব।সুপমা ব্যাগ দলিল বের করে এগিয়ে দিয়ে বলল,মামা এগুলো তোকে দিতে বলল।
মিস ব্রাউন হাত বাড়িয়ে দলিল নিল।সুপমা বলল,আসি রে।ও হ্যা তোর নম্বরটা দেতো সেভ করে রাখি।
মিস ব্রাউন নম্বর দিয়ে বলল,একটা মিস কল দে।আমিও সেভ করে রাখব।
সুপমা চলে যেতে আবার কেমন ফাকা ফাকা লাগে।দলিলের সঙ্গে একটা ইংলিস ড্রাফটও আছে।মাম্মীর নামে করতে বলেছিল কিন্তু মি.সামন্ত বললেন,তাহলে ওনাকে আসতে হবে সই সাবুদ করতে হবে।পরে গিফ্ট করে দিও যাকে ইচ্ছে।অগত্যা দলিল নিজের নামেই করতে হল।মাম্মী কিছু মনে না করলেও মামন খুব রিএ্যকট করবে।বাড়ী ঘরের প্রতি তার কোনো মোহ নেই।সেরকম হলে মি.সামন্ত বলেছেন গিফট করে দেবে।নীচে একটা লোক বোধহয় তার খোজ করছে।চোখাচুখি ইশারা করে উপরে ডাকে।লোকটি লাঞ্চ নিয়ে এসেছে।পেমেণ্ট করে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল।বেশ ক্ষিধে পেয়ে গেছে।খেয়ে নেওয়া যাক। 
 সবে দোকান খুলেছে পিকলু এল।দেখে কেমন আপসেট মনে হল।আরণ্যক কিছু বলেনা।
তুই বেশ আছিস।পিকলু বলল।
হঠাৎ একথা কেন আরণ্যকের মনে হল কিছু নিশ্চয়ই হয়েছ।হেসে বলল,তুই কি খারাপ আছিস?
তুই পার্টি করিস না তুই বুঝবি না।
পার্টিতে কোনো গোলমাল হয়েছে সম্ভবত আরণ্যক হাল্কা সুরে বলল,কোনো তাত্ত্বিক কথা মনে হয়?
সব ব্যাপারে তামাশা করিস নাতো।ভাল্লাগে না।
আরণ্যক চুপ করে যায়।
দ্যাখ রনো যে নেতাকে শ্রদ্ধা করা যায়না তার নির্দেশ মেনে চলা কত যন্ত্রণাদায়ক তোকে কি বলব।
কিছু একটা হয়েছে নাহলে হঠাৎ এই প্রসঙ্গ কেন তাও একজন পার্টির বাইরের লোকের কাছে। 
তুই তো সন্তোষদার দোকানে এতকাল কাজ করছিস।সত্যি করে বলতো সন্তোষদা মানুষটা কেমন?
কি বলবে বুঝতে পারেনা আরণ্যক বলল,শোন পিকলু বাইরে থেকে সব বলা যায়না।তুই কি বলতে পারবি আমি কেমন?
তোকে এতদিন ধরে দেখছি তুই কেমন জানিনা।পিকলুর গলায় তাচ্ছিল্যের ভাব।
আরণ্যক মনে মনে ভাবে তোরা আমাকে চিনিস না।মালা মুখার্জীর সঙ্গে কি করেছি জানলে আমার সম্বন্ধে ধারণার সৌধ হুড়মুড়িয়ে ভেঙ্গে পড়বে।
আমি ফুলন দেবীর কথা বলছি না কিন্তু জানিস প্রোমোটারের টাকা খেয়েছে?
আমি কি করে জানবো  আমি কি দেখেছি?
যা  দেখা যায়না তা সত্যি নয়?
পিকলু তুই কিন্তু ঝগড়ার জায়গায় চলে যাচ্ছিস।
স্যরি।শোন রনো আমিও দেখিনি কিন্তু যে সোর্স থেকে জেনেছি মিথ্যে বলবে না।বিশুকে আসতে দেখে বলল,এই আলোচনা থাক।বিশেকে এসব বলার দরকার নেই।
কিরে পিক্লু কতক্ষণ?মান্তু আসেনি?
এই একটু আগে,মান্তুকে কি দরকার?
আরণ্যুক মজা করে বলল,কিরে চিনির খবর কি?
এক্ষুনি অফিস থেকে এই পথ দিয়ে ফিরবে দেখতে পাবি।
চিনি কে?পিকলু জানতে চাইল।নতুন কাউকে জোটালি নাকি?
ছাড় তো রনোর কথা।ন্যাড়া বারবার বেলতলায় যাবে ভেবিছিস?
সবাইকে এক পাল্লায় ফেলে বিচারকরা ঠিক নয়। 
আমার সঙ্গে প্রেম করছে দেখা করে কত প্রেম পীরিতের কথা অথচ ঘুনাক্ষরে জানতে দেয়নি সপ্তায় সপ্তায় পাত্রপঙ্গ দেখতে আসছে আর উনি সেজেগুজে তাদের সামনে বসছে।শালা কি ডেঞ্জারাস মেয়ে মাইরি।
যাক গে বিয়ে হয়ে গেছে গাল দিয়ে কি হবে?
তুই জানিস না পিকলু দিনের পর দিন এইভাবে চালিয়ে গেছে।আমাকে পছন্দ নাহলে স্পষ্ট জানিয়ে দে।আসলে কি জানিস হাতে রেখেছে মনের মত পাত্র না জুটলে তখন বিশু ভটচায।বিয়েতে নেম্তন্ন পর্যন্ত করেনি অবশ্য করলে যেতাম থোড়াই।
ঐতো মান্তু আসছে।
বিশু এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করল,কি খবর বল।
মান্তু বলল,দুই বোন বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে।বাবা রিটায়ার করে ফ্লাট কিনে এখানে এসেছে।কগনিজেণ্টে কাজ করে।
কেউ নেইতো?
যতদূর জানি এখনো কেউ নেই।
কথা শেষ করে ওরা দোকানে চলে এল।দোকানে এসেমান্তু বলল,কিরে রনো তোকে বলেছিলাম না ভাড়াটে উচ্ছেদ করে ছাড়বে।দেখলি তো?
বীরু সামন্ত কাকে কি দিয়েচে তুই জানিস?পিক্লু জিজ্ঞেস করল।
দ্যাখ পিক্লু আমরা আদার ব্যাপারী জাহাজের খবরে দরকার নেই।বেশী খোড়াখুড়ি করলে কি বের হবে,কি দরকার বাবা।
হ্যা সত্যের দিকে পোদ ঘুরিয়ে বসে থাকো।
শোন পিকলু মান্তু ঘোষ পোদ ঘুরিয়ে থাকলেও কোনোকিছু তার নজর এড়ায় না।কালাবাবু কার কথায় ওঠ বস করে সবাই জানে।হারু সাহা পার্টি অফিসে যাবার আগে কালাবাবুর সঙ্গে কথা বলেছিল রনোর কথা শুনে কেসটা কালাবাবু এড়িয়ে গেছে তুই জানিস?
আরণ্যক নতুন শুনলো মান্তু আগে একথা বলেনি।পিকউ বলল,কিরে রনো তোকে বলেছিলাম এবার বুঝলি?আমার সোর্শ ভুল  খবর দেবে না।
আলোচনা অন্যদিকে যাচ্ছে দেখে আরণ্যক বলল,এসব রজনীতির আলোচনা থাক।নতুন কি সিনেমা দেখলি বল।
দিদিমণি স্কুল থেকে  ফিরে দেখল সজল বসে আছে।কি মতলবে আসে খুলে বলছে না।অবশ্য একটা মন্দের ভাল হয়েছে ঐ মাকুটা আর বিরক্ত করতে আসেনা।মুখে হাসি টেনে বলল,কতক্ষণ?
ডিউটি শেষ হয়ে গেল ভাবলাম যাই ঘুরে আসি।আপনার এত দেরী হল?
আমি তো জানি না আপনি বসে আছেন তাই এক্টূ আড্ডা দিচ্ছিলাম।
আমি এসে কি বিরক্ত করলাম?
আপনার তো খুব রাগ।বসুন চা করে আনছি।ঝর্ণা পাল ভিতরে চলে গেল।
সজল বসু ভাবে কথাটা কিভাবে বলবে।বেশী দেরী করা ঠিক হবেনা।এদিক-ওদিক কিছু একটা হয়ে যাক।সব কিছুর জন্য মানসিকভাবে তৈরী।
পোশাক বদলে চোখে মুখে জল দিয়ে রান্না ঘরে ঢুকে চায়ের জল চাপিয়ে দিল।ভেরি স্মার্ট দেখতে শুনতে খারাপ নয় তাহলেও  পুলিশের লোক এই জন্য চিন্তা।অনিতার কথা মনে পড়তে ঠোটের ফাকে হাসি ফোটে।সব কিছুর মধ্যে রোমান্সের গন্ধ পায়।কি জন্য আসেন জিজ্ঞেস করার অর্থ হয় না।বলেছে তো গল্প করতে আসি।চা করে মাকে এককাপ দিয়ে দু-কাপ নিয়ে বসার ঘরে চলে এল।এককাপ সজলের দিকে এগিয়ে উলটো দিকের সোফায় বসে চায়ে চুমুক দিল ঝর্ণা।
সজল চায়ে চুমুক দিতে দিতে ভাবে কিভাবে কথাটা বলা যায়।কপালে ঘাম জমতে থাকে সজল দম নিয়ে বলল,একটা প্রশ্ন করব?
প্রশ্ন করবেন?পুলিশ তো জেরা করে।
পুলিশ আপনার খুব অপছন্দ?
ঝর্ণা উদাস চোখে অন্যদিকে তাকিয়ে কিভাবে তারপর বলতে থাকে,আপনি বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা। আমাদের দলের একটি ছেলে ছানুকে পুলিশ এ্যারেস্ট করে ভ্যানে তুলে নিল।কিছুটা গিয়ে ছানুর কোমরের বাধন খূলে দিয়ে বলল,যা ভাগ। ছানু তো ছাড়া পেয়ে ভ্যান থেকে লাফ দিয়ে নেমে লাগাল দৌড়।পিছন থেকে গুলি এসে লাগল রক্তাক্ত ছানু লুটিয়ে পড়ল রাস্তায়।নিজেকে সামলাতে কিছুক্ষণ সময় নিয়ে বলল,আচ্ছা সজল এর মধ্যে কোনো বীরতা আছে?কয়েকজন পুলিশের আচরন দিয়ে পুলিশকে বিচার করা ভুল।আমাদের ছেলেমেয়েরাই পুলিশ হয়।
সজলের মুখে কথা নেই।মাথা নীচু করে বসে থাকে।
শুনুন সজল আমি অত প্যাচপয়জার জানিনা সোজা কথার মানুষ।পুলিশকে অপছন্দ করলে সজল বোসকে নিজ হাতে চা করে আপ্যায়ন করতাম না।
সজল মুখ তুলে চাইতে ঝর্ণা বলল, এবার আপনার প্রশ্নটা বুলুন।
খুব সহজ প্রশ্ন আপনি শুধু হ্যা অথবা না বলে উত্তর দেবেন।
প্রশ্নটা তো বলবেন।
ধরুন আপনার পদবী পালের বদলে যদি বোস হয় তাতে আপনার আপত্তি আছে?
আপত্তি করব কেন এটাই তো রীতি মেয়েদের বিয়ের পর বোস ঘোষ দাস সাহা কিছু একটা হতে পারে।বামুন নই কাজেই মুখার্জী চ্যাটার্জী হবার সম্ভাবনা কম।
আপনি কিন্তু আমার প্রশ্নের উত্তরটা এড়িয়ে যাচ্ছেন।
এড়িয়ে যাচ্ছি না।এমন আচমকা প্রশ্নটা করলে সামলাবার জন্য একটু সময় নিলাম।তোমাকে আমার অপছন্দ নয় ইউ আর ভেরি স্মার্ট কিন্তু মুষ্কিল হচ্ছে--।
কি মুষ্কিল বলো সেটাই তো শুনতে চাই। 
ঝর্ণার চোখ ছলছল করে ওঠে বলল,আমি ছাড়া আমার মায়ের আর কেউ নেই।মাকে একা ফেলে কোথাও গিয়ে আমি শান্তি পাবোনা
মায়ের কথা আমিও ভেবেছি।ধরো আমি যদি কাছাকাছি কোথাও ঘর নিই তুমি যখন ইচ্ছে মায়ের কাছে চলে আসবে।
দ্যাখো তুমি যা ভালো বোঝো।
তাহলে ঝর্ণা বোসে আপত্তি নেই?
বিশ্বাস হচ্ছেনা কাছে এসো।
সজল কাছে যেতে জড়িয়ে বুকে চেপে ধরে ঝর্ণা ফিস ফিস করে জিজ্ঞেস করল,বিশ্বাস হয়েছে?
ইলিনা ব্রাউন শুয়ে পড়েছিল।ফোন বাজতে উঠে বসে বালিশের পাশ থেকে মোবাইলটা কানে লাগিয়ে বলল,হ্যালো...সবে শুয়েছিলাম...পৌছে গেছিস রাস্তায় কোনো প্রবলেম...ট্রেন লেট...।নীচে গাড়ীর শব্দ হতে চৌকি থেকে নেমে বারান্দায় গিয়ে ঝুকে দেখল।অন্ধকারে বোঝা যাচ্ছে না মনে হচ্ছে ম্যাটাডোর থেকে মাম্মী আর মামন নামলো।ইলিনা ফোনে বলল,সুপমা তোকে পরে ফোন করছি মাম্মী এল হচ্ছে...গুড নাইট। 
কলিংবেল বাজতে দরজা খুলে ইলিনা অবাক মাম্মী আর কাজের মহিলা অনিকা মাসী দাড়িয়ে তার সামনে।তাহলে ভুল দেখেছে মামন নয়।ইলিনা বলল,আনিকা মাসী তুমি কলকাতায় চলে এলে?
দুনিয়ায় যার কেউ নেই তার কোই জায়গা ফ্যারাক নেই।
ইলিনা ওদের ভিতরে ঢুকিয়ে চৌকিতে বসালো।মজুররা আসবাব পত্র ঢোকাতে থাকে।
বড়িয়া ঘর আছে।চারপাশ দেখে আনিকা বলল।
মামন আসেনি নিশীথ এসেছে অফিস কামাই করে।সে মজুরদের নির্দেশ দিচ্ছে কোনটা কোথায় রাখবে।
অনিকা কৈরালা বিধবা সংসারে  তার একমেয়ে ছাড়া কেউ নেই।তার বিয়ে হয়ে গেছে,নেপালে থাকে।মালকিন যখন কলকাতায় যাবার প্রস্তাব দেয় সে এককথায় রাজী হয়ে যায়।
ইলিনা মায়ের পাশে বসতে গন্ধ পেল।পান করেছে, বয়স হচ্ছে  বললে শুনবে না।এবার তাকে এড়িয়ে কিভাবে পান করে দেখবে।
মাম্মী মামন আসবে না?
সায়নী ব্রাউন ইশারায় আনিকাকে অন্যত্র যেতে বললেন।অনিকা বারান্দায় চলে যেতে বললেন,মেয়েটা দিন দিন বহুৎ জিদ্দি হয়ে যাচ্ছে।এত বুঝাইলাম বলে কিনা ব্রাউনের বিটির সাথে থাকতে লারব।
আমার কি ক্সুর?ইলিনা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল।    
কসুর কারো নাই।ম্যাথুলে মেরি ছোরিকো বরবাদ পারে।
আমাকে অপছন্দ তাহলে হোয়াই ডিড শী গিভ বার্থ?শী কুড হ্যাভ হ্যাড এ্যান এ্যবরশন।ইলিনার নিজেকে বিধ্বস্ত মনে হয়।মাকে জড়িয়ে ধরে কেদে ফেলে।মাম্মী আমি তাহলে কি করব?
মেয়ের পিঠে হাত বোলাতে বোলাতে সায়নী ব্রাউন বললেন,বেটি হিম্মত মৎ ছোড়না।মাথার উপর কুমারী মাই আছে সব দেখবে।
ইলিনা কিছুটা শান্ত হয়ে আচল দিয়ে চোখ মোছে।
সায়নী ব্রাউন সুযোগ হাতছাড়া করেন না।নেশা করলেও হুশ আছে বললেন,বেটি আমি বলি কি তুমি একটা সাদি করে আপনা সংসার বানাও।
শ্লেষ মিশ্রিত গলায় ইলিনা বলল,যার কোনো আতাপতা নেই তাকে কে সাদি করবে।
সাইনী ব্রাউন হুউউউউম বলে ঘাড় নাড়েন।বিড়বিড় করে বলেন আসলি মাদার কৌন জানলে কেউ সাদি করতে রাজি হবেনা।   কিছুক্ষণ চুপচাপ থেকে সায়নী মেয়ের কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিস্ফিস করে বললেন,তুমি নিশীথকে সাদি করো।
ইলিনা অবাক হয়ে মায়ের মুখের দিকে তাকাতে সায়নী বললেন,আমি কথা বলেছি ও নারাজ নাই।এলআইসির বড়া অফসার হাকিম পাড়ায় আপনা মওকান।তুমি চলে গেলে মামন ভি আসতে পারে।
আড়চোখে দেখল নিশীথ একটা ঘরে মাল পত্তর গোছগাছ করছে।কলকাতায় আগমনের উদ্দেশ্য এখন বুঝতে পারে।বুঝলেও ইলিনার মনের যা অবস্থা কোনোকিছু বিবেচনার স্পৃহা হারিয়ে ফেলেছে।ক্লান্ত গলায় বলল,ডু হোয়াট ইউ থিঙ্ক ইজ বেস্ট।
ইলিনা উঠে বারান্দায় গিয়ে দাড়ালো।মাথার উপর বিশাল তারা ঝলমল আকাশ।সেদিকে তাকিয়ে নিজেকে দিশাহীন মনে হল।
বড় ঘরটা গোছানো হয়ে  যেতে নিশীথ এসে বলল,মামণি ঐ ঘরে চলুন।
আনিকাকে চা কোরতে বলে সায়নী নিশীথের সঙ্গে ঘরে গিয়ে খাটে উঠে বসলেন।মামণির কাছে কিছু শোনার অপেক্ষায় নিশীথ দাঁড়িয়ে থাকে।
সাদিকে এন্তেজাম করো।
মামণি একপিঠের ভাড়ায় এতদূরে কেউ আসতে চায়না দু-পিঠের ভাড়া দিতে হয়েছে।আজরাতে ঐ গাড়ীতে চলে যাই।ওখানে গিয়ে রেজিস্ট্রি করে নেব।
ওকে বুঝায়ে বলো।
নিশীথ ইতস্তত করে।মামণি এক কঠিণ পরীক্ষায় ফেলল।কিন্তু বলতে তো হবে।রুমালে মুখ মুছে বারান্দার দিকে গেল।রেলিং-এ ভর দিয়ে ইলিনা আকাশ দেখছে।নিশীথ গিয়ে বলল,মামণি বলল এই গাড়ীতে আজই রওনা হয়ে যাও ভাড়া বেচে যাবে তারপর হাকিমপুরে রেজিস্ট্রি সেরে ফেলবে।ইলিনা কোনো কথা বলেনা।এক্টু দাড়িয়ে থেকে নিশীথ ফিরে আসে।
অনিকা সবাইকে চা দিলে সায়নী বললেন,এই ট্রলি ব্যাগে মেমসাহেবের সব গুছিয়ে দেবে।
রাত একটা নাগাদ ম্যটাডোর স্টার্ট করে।ইলিনা ড্রাইভারের পাশে সামনে বসল।এল আই সির অফিসার মজুরদের সঙ্গে পিছনে ডালায় বপ্সল।     
Like Reply


Messages In This Thread
RE: আগুণের পরশমণি;কামদেব - by kumdev - 29-05-2024, 01:36 AM



Users browsing this thread: 4 Guest(s)