Thread Rating:
  • 139 Vote(s) - 3.73 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery পদ্ম নাগের বিষ
---লছমন বেদে আবার কে?

----বিহারের দিক থিকা যে ভীমনাগ বেদের ভাইর ব্যাটাটা আসছিল সে। ভীমনাগ বেদের বাপ ছিল লখিন্দর। লখিন্দর বেদের বড় ব্যাটা ভীমনাগ, ছোট ব্যাটা কুলীন বেদে। যার ব্যাটা হল গিয়ে ই লছমন। শম্ভুরে বলে গিছিলি এর থিকা রক্ষা পাবার পথ।

থেমে গেল ষষ্ঠী। আর যেন সে কিছু বলতে চায় না। গোপন করতে চায়। গোপনীয়তার প্রতি প্রত্যেকের উৎসাহ থাকে। পিকলুরও যেন উৎসাহ আরো বাড়ল। সে বলল---কি সেই রক্ষা পাবার পথ।

---পিকলু বাবু, ই কথা পাঁচ কান কইরবে লা। ই শুধু তুমারে বইলছি। শম্ভু যখুন বুঝল সে বাঁচবে লাই। তখুন লছমনকে জিগাই ছিল অভিশাপ যেন তার চাঁদকে লা লাগে। শম্ভু উপায় শুনে চমকে উইঠ ছিল। বুঝতে পারল তার বাপও তবে কোনো পাপ কইরে ছিল। মনে পইড়ল তার একবার তার বাপ জাল থিকা মাছ ছাড়াইতে গিয়ে একটা গোখুরাকে জালে জড়াই যাতে দিখতে পায়। ছাড়াইতে গিয়ে তারে ভুল বশত ফাঁস লাগাই দেয়। মইরে যায় গোখুরা। সে কি দুশ্চিন্তা তার বাপের সিদিন। রাত হলে তার মা কমলারে কি সব কথা বুঝাই ছিল ভীমনাগ।

---এর সাথে অভিশাপ মুক্তির পথ কি?

----তন্ন তন্ন কইরে ভীমনাগ খোঁজ লিয়াসে গোসাবার দক্ষিনারায় মন্দিরের পাশে খাদান বাড়িতে মারা পইড়ছে একটা মস্ত বড় সোনালী গোখুরা। ভীমনাগ দের লা কইরে সিখানটা হাজির হয়। ভাগ্য ভালো ছিল তার সিদিন। মারা পড়া গোখুরাটা মাদী দুধিয়া পদ্ম। সে লাকি গরুর দুধ খায়। গোখুরার অনেক বাচ্চা, সবরে মেরে ফেইলছে তার গেরামের মরদরা। শুধু একটা ডিম পইড়ে ছিল তখুন। তা তুইলে আনে ভীমনাগ। সাপ মাইরে সে যা ভুল কইরছে তার প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে তারে। সে প্রায়শ্চিত্ত; যে সাপ গরুর বাঁট চুষে তারে গৃহকত্রীর স্তন থিকা দুধ দিতে হবে। সে জন্য শম্ভুর মা কমলা গোখুরার বাচ্চাটারে নিজের বাচ্চা কইরে লালন কইরেছিল।

---তার মানে মায়ের বুকের দুধ খাচ্ছে এখন যে সে ঐ গোখরোটা।

---হম্ম। ঠিক ধইরেছ, পিকলু বাবু। তার চেহারা দেইখেছ তো। সে এখন পুরা মরদ। নিজের বাচ্চার উপর যাতে শাপ না লাইগে তার জন্য শম্ভু বইলে যায় রমা দিদিমণিকে এই পদ্মরে বুকের দুধ দিতে হবে। দিদিমণি পরথম দিকা কি ডরতো, স্বামী মইরে গেছে, চাঁদের কি হবে তার। সেই ডরে পদ্মরে দুধ দিতে লাগে। এখুন পদ্মরে ছাইড়া দিদিমণির চইলে লা। সারাদিন পদ্ম আর পদ্ম। পদ্ম আর কিছু খায় লা। দিদিমণির বুকের দুধ ছাইড়া।

---কিন্তু কামড় দেয় না? বিষাক্ত জন্তু তো?

হেসে ওঠে ষষ্ঠী। বলে---দিদিমণি তারে লিয়ে ঘুমায়। মাই দেয়। এখন সে দিদিমনির.....


---কি রে পরশ তুই এখানে? তোকে রূপসা খুঁজছে।

কথা থেমে যায় ষষ্ঠী আর পিকলুর। পিকলুকে বাধ্য হয়ে নীচে নামতে হয়। মনের মধ্যে অনেক ধন্দ-দ্বন্দ্ব। সেদিন ষষ্ঠীপদর সাথে আর একটিও কথা বলার সুযোগ হল না পিকলুর।

বিকেলে ওরা গাড়ি করে গেল মাতলার দিকে। পিকলুর মনে পড়ল শম্ভু আঙ্কেল নৌকায় করে তাকে আর মাকে ঘুরিয়ে এনেছিল এই নদীবক্ষে একদিন। সেদিন জ্যোৎস্না রাত্রি ছিল। আজ চতুর্থীর ফালি চাঁদ। নদীতে জোয়ার। রূপসা যেন নদীর জলে শিশুর মত হয়ে উঠেছে। পিকলু দেখছে তাকে।

জেনিভা চলে গেলে রূপসার সাথে যোগাযোগ থাকবে না আর। রূপসা আর চৈ দু'জনেই একসাথে ডেকে উঠল---পরশ, তুই কি জলে নামবি না?

হেসে ঠাট্টা করে পিকলু বলল---পেছনে দেখ আস্ত বড় কুমির!

অমনি ভয়ে ওরা নদীর জল ভেঙে সোজা মাঝি ঘাটে। বিক্রম বলল---এই যে সব ভীতুর ডিম। আমাদের অর্ক জীও কম নয়।

অর্ক চোখের মোটা ফ্রেমের চশমার ওপর দিয়ে বলল---কুমির না থাকার কিছু নেই। সুন্দরবনে প্রায়শই শোনা যায় কুমিরের কথা।

ওরা ফিরল রাত করে। ডিনার টেবিলে দারুন রান্না সব। পিকলুর কিছু খেতে ইচ্ছে নেই। মাঝে রমা নিজে এসে দেখে গেল ওদের খাওয়া দাওয়া। চৈ বলল---এই ম্যাডাম কিন্তু হেব্বি সুন্দরী।

অর্ক বলল---খুব স্ট্রিক্টও। বেশ রাশভারী।

পিকলু তার মায়ের এমন মহারানী সুলভ সৌন্দর্য ও আচরণ দেখে বিস্মিত হয়েছে। তার মা রমা মৈত্র বদলে গেছে। মা এখনো তার বাবার পদবীই ব্যবহার করছে কেন, জানতে হবে ষষ্ঠী আঙ্কেলের কাছ থেকে।

ডিনার শেষ করে ওরা ঘুমোতে গেল। নীচ তলায় চৈ আর রূপসার জন্য বরাদ্দ হয়েছে একটা রুম। আর ছেলেদের জন্য একটা।

ঘুম আসছে না পিকলুর। বড় বারান্দায় সিগারেট টানতে বার হল সে। কালনাগিনী নদী যেন এখনো একই রকম। যেন এই নদী শম্ভু আঙ্কেলের একার ছিল। সব কিছু বদলে গেছে। শম্ভু আঙ্কেল আর নেই। মা এখন আর সেই শিক্ষিতা বুদ্ধিদীপ্ত গৃহিণী নয়, যেন কোনো কঠিন হৃদয়ের রানী। গায়ে সুগন্ধী পারফিউম, সিল্কের দামী শাড়ি-ব্লাউজ, মুক্তোর গয়না তার সাথে নম্র অথচ এক নিয়ন্ত্রক ব্যক্তিত্ব; সব যেন অচেনা।
[+] 10 users Like Henry's post
Like Reply


Messages In This Thread
পদ্ম নাগের বিষ - by Henry - 21-10-2023, 11:21 PM
RE: পদ্ম নাগের বিষ - by Henry - 15-05-2024, 01:34 AM



Users browsing this thread: Hoga mara, SrDarkSide, 6 Guest(s)