15-05-2024, 01:30 AM
(This post was last modified: 15-05-2024, 02:04 AM by Henry. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
পিকুলকে বসালো ঠান্ডা ঘরে ষষ্ঠী। ঘরে এসি চলছে। দরজা বন্ধ করে এলো ষষ্ঠীপদ। বলল---তুমার বাপ-ব্যাটা দিদিমণিরে ছেড়ে চইলে গেলে। দিদিমণি তখুন পোয়াতি ছিল। দিদিমণি তার ব্যাংক থিকা টাকা তুইলে সংসারে দিত। চাঁদ জন্ম হইলে দিদিমণি বুঝতে পাইরলো সব টাকা শেষের পথে কি লা। শম্ভুর আয় উপার্জন কিছু লাই। নদীর মাছ কখুন কি উইঠে ছোট ডিঙা নৌকায়, গঙ্গা মা ছাড়া কেউ বইলতে পাইরবে লাই। আর মাছ বিকেও ক' টাকা আয় হয়। দিদিমণি কইল শম্ভুরে সাপের বিষ বিকবার জইন্য। শম্ভু ভীমনাগ বেদের ব্যাটা। তার বাপ তারে বইলেছিল কুনোদিন সাপের বিষ বিকে টাকা লিবিনি। সাপ মা মনসার বাহন, বেদে লিগে তারে পুষে। তার বিষ বাইর কইরে বিকা যাবে লাই। তার লগে শম্ভু শুনে লাই দিদিমনির কুথা। সে সাপের বিষ বিকতে লারাজ। কিন্তু গরিবীর কষ্ট দিনকে দিন বাড়তে থাইকে। চাঁদ বড় হয়। শুধু কি আর মাং-ভাতারে পীরিত আর চোদাচুদি হইলে পেট ভরে।
ষষ্ঠীর মুখের ভাষা গ্রাম্য। অশ্লীলতা স্বাভাবিক। অবশ্য পিকলুর অত গল্প কথা শুনতে ভালো লাগছে না। সে বলল---ষষ্ঠী আঙ্কেল, আমার এসব শুনে কি হবে। মা তার কর্মফল পাবে এতেই স্বাভাবিক। বাবা কি মাকে অসুখে রেখেছিল? যাহোক এখন তো রমা মৈত্র বেশ বড়লোক দেখছি।
ষষ্ঠী হাসলো। বলল---দিদিমণিরে খারাপ ভাইবছ। সিটা দিদিমণির দোষ। মাইনলাম। কিন্তু শম্ভুর কি দোষ। বেচারা সুখ ভোগ লা কইরে সগ্গে চইলে গেল।
অবশ্য শম্ভু আঙ্কেলের মত তরতাজা যুবক হঠাৎ মরল কি করে কিংবা মা কিভাবে এত বড়লোক হল, তা জানতে একটা আগ্রহ তৈরি হচ্ছে পিকলুর। সে বলল---শম্ভু আঙ্কেল আমার জীবন বাঁচিয়েছে। তার মৃত্যু বেদনা দায়ক। কিন্তু শম্ভু আঙ্কেল তো ক্ষতিও করেছে আমাদের। সে কি নিরাপরাধ?
---অপরাধী তো সে ছিইল। কিন্তু তার অপরাধ আরো বড় যখুন সে বিষের ব্যবসাটা শুরু কইরল।
---ওঃ তার মানে ঐ সাপের বিষ বেচে এত পয়সা?
ষষ্ঠীপদ পুনরায় শুরু করল---দিদিমণির জোরাজুরির কাছে হার মাইনলো শম্ভু। শুরু কইরল সাপের বিষ বিকার ব্যবসা। বেদের ব্যাটা হাভাতে শম্ভু টাকার পাহাড় হই গেল সে। ইদ্রিশের পাল্লায় পইড়ে শম্ভু রমা দিদিমণিরে ভোটে দাঁড় করাইলো। শম্ভুর পয়সায় দিদিমণি জিইতে গেল। গেরামে শম্ভু বেদেরে সকলে মানে। মাতব্বর সে। টিপ সহি দিলে কি হবে, তার মত বড়লোক সরবেড়িয়া, দেবীপুর, পাঁচ গ্রামে লাই। গগন ঘোষের চাল কল কিইনে লিল শম্ভু। মাছ ধরার ট্রলার নাম করাইল। মাত্র দেড় বছরে সে কোটিপতি।
---এত কোটিপতি লোকের হঠাৎ মৃত্যু? প্রশ্নটা করে বসল পিকুল।
---শাপ! শাপ ছিল তার উপর। লুকাইছে সে।
---শাপ! কিসের শাপ! কিসব ফালতু কথা!
---জানি পিকলু বাবু। তুমি হলে গিয়া মাস্টারবাবুর ব্যাটা। শহুরে অনেক পড়ালিখা কইরেছ, বিশ্বাস কইরবে লা। তুমার বাবাও বিশ্বাস কইরে ছিল লা শম্ভু বেদে তুমারে সুস্থ কইরে তুলতে পাইরে।
কথাটা ঠিক। পিকলুর মনে পড়ে। মায়ের অবদান না থাকলে সে কি আজ বাঁচতো? মা তাকে জন্ম দিয়েছে দু'বার। একবার গর্ভ হতে, দ্বিতীয়বার মৃত্যু মুখ থেকে উদ্ধার করে। মা জোরাজুরি না করে তাকে এখানে না নিয়ে এলে সে কি শম্ভু আঙ্কেলের চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠতে পারতো? যতই সে বিজ্ঞানের ছাত্র হোক, সেদিনের ঘটনার পর থেকে অলীক জিনিসে কৌতুহল তার রয়ে গেছে।
ষষ্ঠী বলল---দিদিমণিরে সকলে সম্মান করে এ পাঁচ গেরামে। শম্ভু মূর্খ, তারে দিদিমণিই সাহায্য কইরে। দিদিমণি গেরামের মানুষদের ভালো মন্দ দেখে। ই ইকলেজ গড়ল দিদিমণি। গেরামের সবচেয়ে বড় ইকলেজ। চারটা গাড়ি এখুন দিদিমণির। সব শম্ভুর পাপের পয়সা।
---পাপের পয়সা কেন? সাপের বিষ বিক্রি কি পাপ নাকি? দেশে বিদেশে এত এন্টি ভেনম তৈরি হচ্ছে ঐ বিষ সংগ্রহ করেই তো।
---তা হয় পিকলু বাবু। কিন্তু শম্ভুর যে বেদে বংশের শাপ ছিল। সে অভিশাপ তারে দিছিল, ভীমনাগের পূর্বপুরুষরে পাহাড়ি এক সাধু। যে কিনা ই বেদে বংশে শিখাইছিল অমূল্য চিকিচ্ছা। সাপের বিষ তো বিকে অনেক লোক, এ চিকিচ্ছা পারে ক'জন?
---কি সেই শাপ? প্রশ্ন করল পিকলু।
ষষ্ঠীর মুখের ভাষা গ্রাম্য। অশ্লীলতা স্বাভাবিক। অবশ্য পিকলুর অত গল্প কথা শুনতে ভালো লাগছে না। সে বলল---ষষ্ঠী আঙ্কেল, আমার এসব শুনে কি হবে। মা তার কর্মফল পাবে এতেই স্বাভাবিক। বাবা কি মাকে অসুখে রেখেছিল? যাহোক এখন তো রমা মৈত্র বেশ বড়লোক দেখছি।
ষষ্ঠী হাসলো। বলল---দিদিমণিরে খারাপ ভাইবছ। সিটা দিদিমণির দোষ। মাইনলাম। কিন্তু শম্ভুর কি দোষ। বেচারা সুখ ভোগ লা কইরে সগ্গে চইলে গেল।
অবশ্য শম্ভু আঙ্কেলের মত তরতাজা যুবক হঠাৎ মরল কি করে কিংবা মা কিভাবে এত বড়লোক হল, তা জানতে একটা আগ্রহ তৈরি হচ্ছে পিকলুর। সে বলল---শম্ভু আঙ্কেল আমার জীবন বাঁচিয়েছে। তার মৃত্যু বেদনা দায়ক। কিন্তু শম্ভু আঙ্কেল তো ক্ষতিও করেছে আমাদের। সে কি নিরাপরাধ?
---অপরাধী তো সে ছিইল। কিন্তু তার অপরাধ আরো বড় যখুন সে বিষের ব্যবসাটা শুরু কইরল।
---ওঃ তার মানে ঐ সাপের বিষ বেচে এত পয়সা?
ষষ্ঠীপদ পুনরায় শুরু করল---দিদিমণির জোরাজুরির কাছে হার মাইনলো শম্ভু। শুরু কইরল সাপের বিষ বিকার ব্যবসা। বেদের ব্যাটা হাভাতে শম্ভু টাকার পাহাড় হই গেল সে। ইদ্রিশের পাল্লায় পইড়ে শম্ভু রমা দিদিমণিরে ভোটে দাঁড় করাইলো। শম্ভুর পয়সায় দিদিমণি জিইতে গেল। গেরামে শম্ভু বেদেরে সকলে মানে। মাতব্বর সে। টিপ সহি দিলে কি হবে, তার মত বড়লোক সরবেড়িয়া, দেবীপুর, পাঁচ গ্রামে লাই। গগন ঘোষের চাল কল কিইনে লিল শম্ভু। মাছ ধরার ট্রলার নাম করাইল। মাত্র দেড় বছরে সে কোটিপতি।
---এত কোটিপতি লোকের হঠাৎ মৃত্যু? প্রশ্নটা করে বসল পিকুল।
---শাপ! শাপ ছিল তার উপর। লুকাইছে সে।
---শাপ! কিসের শাপ! কিসব ফালতু কথা!
---জানি পিকলু বাবু। তুমি হলে গিয়া মাস্টারবাবুর ব্যাটা। শহুরে অনেক পড়ালিখা কইরেছ, বিশ্বাস কইরবে লা। তুমার বাবাও বিশ্বাস কইরে ছিল লা শম্ভু বেদে তুমারে সুস্থ কইরে তুলতে পাইরে।
কথাটা ঠিক। পিকলুর মনে পড়ে। মায়ের অবদান না থাকলে সে কি আজ বাঁচতো? মা তাকে জন্ম দিয়েছে দু'বার। একবার গর্ভ হতে, দ্বিতীয়বার মৃত্যু মুখ থেকে উদ্ধার করে। মা জোরাজুরি না করে তাকে এখানে না নিয়ে এলে সে কি শম্ভু আঙ্কেলের চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠতে পারতো? যতই সে বিজ্ঞানের ছাত্র হোক, সেদিনের ঘটনার পর থেকে অলীক জিনিসে কৌতুহল তার রয়ে গেছে।
ষষ্ঠী বলল---দিদিমণিরে সকলে সম্মান করে এ পাঁচ গেরামে। শম্ভু মূর্খ, তারে দিদিমণিই সাহায্য কইরে। দিদিমণি গেরামের মানুষদের ভালো মন্দ দেখে। ই ইকলেজ গড়ল দিদিমণি। গেরামের সবচেয়ে বড় ইকলেজ। চারটা গাড়ি এখুন দিদিমণির। সব শম্ভুর পাপের পয়সা।
---পাপের পয়সা কেন? সাপের বিষ বিক্রি কি পাপ নাকি? দেশে বিদেশে এত এন্টি ভেনম তৈরি হচ্ছে ঐ বিষ সংগ্রহ করেই তো।
---তা হয় পিকলু বাবু। কিন্তু শম্ভুর যে বেদে বংশের শাপ ছিল। সে অভিশাপ তারে দিছিল, ভীমনাগের পূর্বপুরুষরে পাহাড়ি এক সাধু। যে কিনা ই বেদে বংশে শিখাইছিল অমূল্য চিকিচ্ছা। সাপের বিষ তো বিকে অনেক লোক, এ চিকিচ্ছা পারে ক'জন?
---কি সেই শাপ? প্রশ্ন করল পিকলু।