15-05-2024, 01:28 AM
"ঝিকো ঝিকো করি রে
আঞ্চলে বান্ধিয়া রে,
ঝিকো ঝিকো করি রে
আঞ্চলে বান্ধিয়া রে,
যায় নীলীমণ গৌরীপুরের হাট রে
নীলীমণ মিলাইও না
কি পালা কদমের তলে বৈশ রে
নীলীমণ মিলাইও না।"
সন্দীপের গানে গলা ভালো। তার সাথে সঙ্গত করেছে রূপসা, চৈ ও বিক্রম। হুডখোলা জিপের মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়া পাখিটি দেখে চৈ বলল---কি পাখি বলতো, ভয় পেয়েছে!
---ওটা বাজ। ভয় পায় না পাওয়ায়।
---ধ্যাৎ। বিক্রম অমান্য করল অর্কর কথাটিকে, বলল--সবেতেই তোর উদ্ভট জবাব।
রূপসা বলল---এসব পশু পাখির কথা পরশই বলতে পারবে।
বিক্রম বলল---পরশ এখন কিছু একটা গভীর চিন্তায় আছে। কথা নেই মুখে।
হুড খোলা জিপের ড্রাইভিং সিটে পরশ বসেছে। বড্ড শখের গাড়ি এটি তার। ইউনিভার্সিটির লাস্ট ইয়ার। এবারই সে পাকাপাকি ভাবে জেনিভা চলে যাবে। বাবাকেও সঙ্গে নিয়ে চলে যাবে। বাবা এই গাড়িটি তাকে এ' বছর উপহার দিয়েছেন।
---কি হল পরশ? কি এত ভাবছিস? রূপসা কাঁধে হাত রাখলো পরশের।
পরশ বলল---ওটা একটা স্ক্যাভেঞ্জার। আশপাশে শ্মশান আছে নিশ্চই।
পরশ মৈত্র। আসলেই পশু পাখির বিষয়ে ছাত্র নয়। সে কোয়ান্টাম ফিজিক্সের ছাত্র। অত্যন্ত মেধাবী হওয়ায় গবেষণার কাজে সুইজারল্যান্ডের জেনিভায় সুযোগ পেয়েছে। তার বাবা পীযুষ মৈত্র একজন জীববিজ্ঞানী, অধ্যাপক।
এই সুন্দরবনে এসেছে তারা বন্যাত্রান পৌঁছে দিতে। কিছুদিন আগেই তুমুল ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সুন্দরবন। যখন বন্ধুরা প্রস্তাব করে তখন কিছু ডোনেশন করেই নীরব থাকতে চেয়েছিল সে। কিন্তু কাগজে জায়গাটার নাম সরবেড়িয়া দেখে চোখ আটকে গেছিল পরশের।
একটা স্থানীয় হাই কলেজেই গ্রামের মানুষের ক্যাম্প। ওখানে হাজির হল ওরা। যোগাযোগটা করেছে অর্ক। ওর এক কাকা সমাজসেবী। তার সুবাদেই আসা।
সুন্দরবনের এমন অজ গাঁয়ে এতবড় কলেজ, বেশ চমকপ্রদ। সাজানো গোছানো এমনভাবে, যেন কেউ নিজের হাতে গড়েছে এই কলেজ।
অর্কর কাকা সন্তোষ সরকার হাজির হলেন। এর আগেও পরশের সাথে সন্তোষ বাবুর পরিচয় ঘটেছে। একদা ছাত্র বয়সে উগ্র রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। পরে চাকরি করতে বিদেশ গেছিলেন। মন বসল না সেখানেও। প্রচুর টাকা পয়সা করেছিলেন বিদেশে চাকরি করে। এখন সুন্দরবনের মানুষদের জন্য কাজ করেন।
সন্তোষ বাবু বললেন---এই তোমরা এসেছ।
তিনি চেয়ার টেনে সকলকে বসতে দিলেন। তারপর বললেন---কে কোথায় আছিস লরি থেকে রিলিফের মাল নামা।
পরশদের জিপের পেছনেই ছিল ওদের লরি ভর্তি ত্রাণসামগ্রী। সন্তোষবাবুর কথায় গ্রামের কয়েকজন যুবক লরি থেকে রিলিফের সামগ্রী নামাতে লাগলো।
ওদের জন্য চা দিয়ে গেলেন একজন গ্রাম্য মহিলা। রূপসা দেখছিল সন্তোষ বাবুর সাথে সবসময়ই একটা সাত-আট বছরের শ্যামলা ছেলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ছেলেটি বেশ মিষ্টি দেখতে। ঝকঝকে পাঞ্জাবি পরা শ্যামলা গড়নের শিশুটিকে দেখে বোঝা যায় ধনী পরিবারের। রূপসা ছেলেটিকে ডাকলো। বলল---কি নাম তোর?
ছেলেটি মোটেই লজ্জা পেল না। খুব সাবলীল ভাবে বলল---চাঁদ বেদে
আঞ্চলে বান্ধিয়া রে,
ঝিকো ঝিকো করি রে
আঞ্চলে বান্ধিয়া রে,
যায় নীলীমণ গৌরীপুরের হাট রে
নীলীমণ মিলাইও না
কি পালা কদমের তলে বৈশ রে
নীলীমণ মিলাইও না।"
সন্দীপের গানে গলা ভালো। তার সাথে সঙ্গত করেছে রূপসা, চৈ ও বিক্রম। হুডখোলা জিপের মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়া পাখিটি দেখে চৈ বলল---কি পাখি বলতো, ভয় পেয়েছে!
---ওটা বাজ। ভয় পায় না পাওয়ায়।
---ধ্যাৎ। বিক্রম অমান্য করল অর্কর কথাটিকে, বলল--সবেতেই তোর উদ্ভট জবাব।
রূপসা বলল---এসব পশু পাখির কথা পরশই বলতে পারবে।
বিক্রম বলল---পরশ এখন কিছু একটা গভীর চিন্তায় আছে। কথা নেই মুখে।
হুড খোলা জিপের ড্রাইভিং সিটে পরশ বসেছে। বড্ড শখের গাড়ি এটি তার। ইউনিভার্সিটির লাস্ট ইয়ার। এবারই সে পাকাপাকি ভাবে জেনিভা চলে যাবে। বাবাকেও সঙ্গে নিয়ে চলে যাবে। বাবা এই গাড়িটি তাকে এ' বছর উপহার দিয়েছেন।
---কি হল পরশ? কি এত ভাবছিস? রূপসা কাঁধে হাত রাখলো পরশের।
পরশ বলল---ওটা একটা স্ক্যাভেঞ্জার। আশপাশে শ্মশান আছে নিশ্চই।
পরশ মৈত্র। আসলেই পশু পাখির বিষয়ে ছাত্র নয়। সে কোয়ান্টাম ফিজিক্সের ছাত্র। অত্যন্ত মেধাবী হওয়ায় গবেষণার কাজে সুইজারল্যান্ডের জেনিভায় সুযোগ পেয়েছে। তার বাবা পীযুষ মৈত্র একজন জীববিজ্ঞানী, অধ্যাপক।
এই সুন্দরবনে এসেছে তারা বন্যাত্রান পৌঁছে দিতে। কিছুদিন আগেই তুমুল ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সুন্দরবন। যখন বন্ধুরা প্রস্তাব করে তখন কিছু ডোনেশন করেই নীরব থাকতে চেয়েছিল সে। কিন্তু কাগজে জায়গাটার নাম সরবেড়িয়া দেখে চোখ আটকে গেছিল পরশের।
একটা স্থানীয় হাই কলেজেই গ্রামের মানুষের ক্যাম্প। ওখানে হাজির হল ওরা। যোগাযোগটা করেছে অর্ক। ওর এক কাকা সমাজসেবী। তার সুবাদেই আসা।
সুন্দরবনের এমন অজ গাঁয়ে এতবড় কলেজ, বেশ চমকপ্রদ। সাজানো গোছানো এমনভাবে, যেন কেউ নিজের হাতে গড়েছে এই কলেজ।
অর্কর কাকা সন্তোষ সরকার হাজির হলেন। এর আগেও পরশের সাথে সন্তোষ বাবুর পরিচয় ঘটেছে। একদা ছাত্র বয়সে উগ্র রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। পরে চাকরি করতে বিদেশ গেছিলেন। মন বসল না সেখানেও। প্রচুর টাকা পয়সা করেছিলেন বিদেশে চাকরি করে। এখন সুন্দরবনের মানুষদের জন্য কাজ করেন।
সন্তোষ বাবু বললেন---এই তোমরা এসেছ।
তিনি চেয়ার টেনে সকলকে বসতে দিলেন। তারপর বললেন---কে কোথায় আছিস লরি থেকে রিলিফের মাল নামা।
পরশদের জিপের পেছনেই ছিল ওদের লরি ভর্তি ত্রাণসামগ্রী। সন্তোষবাবুর কথায় গ্রামের কয়েকজন যুবক লরি থেকে রিলিফের সামগ্রী নামাতে লাগলো।
ওদের জন্য চা দিয়ে গেলেন একজন গ্রাম্য মহিলা। রূপসা দেখছিল সন্তোষ বাবুর সাথে সবসময়ই একটা সাত-আট বছরের শ্যামলা ছেলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ছেলেটি বেশ মিষ্টি দেখতে। ঝকঝকে পাঞ্জাবি পরা শ্যামলা গড়নের শিশুটিকে দেখে বোঝা যায় ধনী পরিবারের। রূপসা ছেলেটিকে ডাকলো। বলল---কি নাম তোর?
ছেলেটি মোটেই লজ্জা পেল না। খুব সাবলীল ভাবে বলল---চাঁদ বেদে