10-05-2024, 01:47 AM
(This post was last modified: 23-05-2024, 04:41 PM by kumdev. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
অষ্টম পরিচ্ছেদ
অপু সরকার বেরিয়ে গেছে।মিতাও বেরোবার জন্য তৈরী,শৈলীর জন্য অপেক্ষা করছে।শৈলীর আসল নাম সহেলী।রেল লাইনের ধারে বস্তিতে থাকে।সরকার বাড়ীতে কাজ করে।ভোর বেলা আসে জলযোগ সেরে বৌদিকে রান্নায় এটা ওটা যোগান দিয়ে সাহায্য করে।তারপর বৌদির ছেলেকে কলেজে পৌছে দেওয়া বাসায় ফিরে মধ্যহ্ন ভোজ ঘুম তারপর আবার কলেজে গিয়ে ছেলেকে নিয়ে আসা।রাতে খেয়ে বস্তিতে ফিরে যায়।সহেলী বিবাহিত কিছুকাল সংসার করে নিরুদ্দেশ।বাধ্য হয়ে লোকের বাড়ীতে কাজ নিতে হয়েছে।
নজরে পড়ে শৈলী আসছে।কালো মাজা গায়ের রঙ বছর তেত্রিশ/চৌত্রিিশ বয়স।পায়জামা-কুর্তি পরে বলে পাছার দুলুনি সহজে নজরে পড়ে।কাছে আসতে মিতা নিত্যদিনের মত জিগেস করল,বিচ্ছুকে দিয়ে এসেছ?যাও খেয়ে নেও।
বাস রাস্তার দিকে হন হন হাটতে শুরু করল মিতা।বুক স্টলে বসে আছে রনো,উদাসীন দৃষ্টিি।কাল রাতের কথা মনে পড়ল।কে একজন জিজ্ঞেস করেছিল কি অসভ্যতা করেছে।রনো তাকে ধমক দিয়ে থামিয়ে দিয়েছিল।মিতার মুখে হাসি খেলে যায়।বাসে ওঠার পর থেকেই পিছনে দাঁড়িয়ে পাছা খামচে ধরছে।প্রথমে আস্তে আস্তে তারপর জোরে জোরে টিপতে থাকে।পিছনে হাত দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছে তাও ভ্রুক্ষেপ নেই।খারাপ লাগছিল না কিন্তু জানা নেই চেনা নেই একী অসভ্যতা।খুব বেচে গেছে।রনোকে তো চেনেনা।বাস আসতেই উঠে পড়ল মিতা,লেডিস সিট ফাকা দেখে বসে পড়ল।যাবার সময় অসুবিধে হয়না।ফেরার সময় খুব ভীড় হয় বসার জায়গা পাওয়া যায়না।
বুক স্টলে বসে চুনীর সঙ্গে গল্প করছে আরণ্যক।সকালে কেউ আসেনা।রাস্তা দিয়ে লোক চলাচল লক্ষ্য করে।মিতা বৌদি অফিস চলে গেল।বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে ভীড় কমতে থাকে। বাজার থেকে ঢাউস ব্যাগ হাতে বেরিয়ে মিসেস মুখার্জী বাড়ী ফিরছেন।একবার বা-দিকে কাত হন আরেকবার ডান দিকে কাত হচ্ছেন।রনোর খারাপ লাগে এই বয়সে এত ধকল।ডাক্তার মুখার্জী চলে যাওয়ার পর আণ্টি একবারে একা।এক্টু কম করে বাজার করতে পারেন।এই বয়সটা বেশ কষ্টের।আণ্টির কোনো ছেলে নেই এক মেয়ে তাও বিদেশে থাকে।অসুখ বিসুখ হলে কে দেখবে।এক সময় অসুখ বিসুখ হলে সবাই ডাক্তার বাবুর কাছে ছুটতো।কি অদ্ভুত ব্যাপার....।মিসেস মুখার্জী টাল খেয়ে পড়ে যাচ্ছিলেন পাশের দেওয়ালে ভর দিয়ে দাড়িয়ে আছেন।বাজারের থলিটা মাটিতে পড়ে আছে।পাশ দিয়ে লোক হেটে যাচ্ছে কেউ ফিরেও দেখছে না।থাকতে নাপেরে চুনীকে দোকান দেখতে আরণ্যক ছুটে গেল।কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করল,আণ্টি শরীর খারাপ লাগছে?
মিসেস মুখার্জী একপলক দেখে বললেন,তুই?এখুনি ঠিক হয়ে যাবে।
মাটিতে বসে থলে থেকে বেরিয়ে আসা আলু টোমাটো কুড়িয়ে থলেতে ভরতে ভরতে রনো বলল,এত বাজার একসঙ্গে করার দরকার কি?
রোজ রোজ বাজারে আসা এখন আর পারিনা তাই চার-পাচদিনের বাজার একসঙ্গে করে রাখি।
থলেতে আনাজপাতি ভরে উঠে দাঁড়িয়ে রনো বলল,চলুন আপনাকে এগিয়ে দিয়ে আসি।
একটু দাড়া।
শরীর খারাপ লাগছে?
শরীর ঠিক আছে।বয়স হয়েছে হাটতে হাটতে কখনো মনে হয় মালাইচাকিটা খুলে গেল,হাটু ভাজ করতে পারিনা।কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে ঠিক হয়ে যায়।এবার চল।
রনো একটু ধীরে হাটে,আণ্টি পিছিয়ে পড়ছে।
ডাক্তারবাবু মারা যাবার পর সবদিক আপনাকেই সামলাতে হয়।
ও থাকলে হাটুর সমস্যা থাকতো নাকি।
আপনি যদি যোগ ব্যায়াম করতেন--
আমার কোনো রোগ ব্যয়রাম নেই।
রনো বুঝতে পারে আণ্টি কানে একটু কম শোনেন।
ডাক্তারবাবুর দোতলা বাড়ী।একতলা ফাকা আণ্টি দোতলায় থাকেন।রনো বলল,আণ্টি নীচটা ভাড়া দিতে পারতেন।
মেয়ের আপত্তি।ও এইসব ঝামেলা পছন্দ করেনা।
আপনি মেয়ের কাছে গিয়ে থাকতে পারেন না?
ও যখন এসেছিল বলেছিলাম।পাসপোর্ট হয়ে গেছে।দেখি কবে নিয়ে যায়।
দোতলায় উঠে মিসেস মুখার্জী চাবি ঘুরিয়ে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকলেন।রনো দরজার কাছে থলে নামিয়ে বলল,আমি আসি আণ্টি?
আসি কিরে?ইয়ার্কি হচ্ছে ভিতরে আয় একটু কিছু মুখে না দিয় চলে যাবি।তুই আজ প্রথম এলি--।
রনো ভিতরে ঢুকে বলল,দোকান ফেলে এসেছি--।
চা না সরবৎ?দাড়া লেবু দিয়ে সরবৎ বানিয়ে দিচ্ছি--।
সরবৎ থাক আপনি বরং এক কাপ চা দিন।
শ্যামেরও খুব চায়ের নেশা ছিল।মিসেস মুখার্জী হেসে বললেন।তুই বোস।
মিসেস মুখার্জী চলে যেতে রনো চারপাশ তাকিয়ে দেখতে থাকে।একা মানুষ তবু সবকিছু পরিপাটি করে সাজানো।মেয়েরা ঘরের লক্ষী কথাটা মিথ্যে নয়।দেওয়ালের একদিকে ডাক্তার এসপি মুখার্জীর হাস্যোজ্বল ছবি।ছবিতে রজনী গন্ধার মালা।অঞ্চলের বিশিষ্ট ডাক্তার ছিলেন।এলাকার বাইরে রুগী আসতো।শেষদিকে চেম্বারে বসতেন না।বাড়ীতে বসেই রুগী দেখতেন।
মিসেস মুখার্জী দু-কাপ চা নিয়ে ঢুকে বিপরীত দিকের সোফায় বসার আগে ঝুকে রনোর দিকে চায়ের কাপ এগিয়ে দিয়ে বললেন, সাম্রনের দিকে ঝুকতে পারিনা কোমরে লাগে।
রনো চায়ের কাপ নিয়ে বলল,যোগ ব্যায়াম করে দেখতে পারেন।
সংসারের কাজ করে ফুরসৎ পাইনা ব্যয়াম।তুই এসেছিস বলে একটু বসে কথা বলছি।
আপনি তো একটা কাজের লোক রাখতে পারেন--।
ক্ষেপছিস,সবাই কি তোর মত?একা মেয়েমানুষ মেরে খুন করে লুঠপাট করে চলে যাক আর কি।
রনোর চা খাওয়া হতে উঠে দাঁড়িয়ে বলল,আজ আসি আণ্টি?
যাবি?শ্যাম চলে যাবার পর কথা বলার লোক ছিলনা।অনেক কাল পরে তোর সঙ্গে কথা বললাম।দেওয়ালে ঝোলানো স্বামীর ছবির দিকে তাকিয়ে মনটা হারিয়ে যায়।বিছানায় শুয়ে জড়িয়ে মালা-মালা বলে কিছুক্ষণ আদর করল।মতলব বুঝে নাইটীটা কোমর অবধি তুলে অপেক্ষা করছেন তিরতির কাপছে যোনীর ঠোট এই ঢোকে এই ঢোকে অবস্থা।শ্যাম বলল,আজ আর করবনা।
কেন কি হল?
আজ ভাল লাগছে না,কাল করব।
সকালে বেড টি দিতে এসে সাড়া নেই।বলেছিল কাল করব।কথা রাখেনি।মিসেস মুখার্জী বললেন,দ্যাখ আমাকে একা ফেলে রেখে কেমন হাসছে।কথার কোনো দাম নেই।
রনোর চোখ ছলছল করে আণ্টির মনে হয় কোনো পুরানো কথা মনে পড়েছে। সান্ত্বনা দেবার জন্য বলল,ডাক্তারবাবু নেই তো কি হয়েছে, কোনো দরকার হলে আমাকে বলবেন।
তোকে বলব?
রনো চলে যেতে দরজা বন্ধ করে বারান্দায় এলেন।উপর থেকে দেখছেন তাকালে হাত নাড়বেন।বাড়ীর থেকে বেরিয়ে এদিক-ওদিক তাকিয়ে আবার গলিতে ঢুকে গেল।কৌতূহলী মিসেস মুখার্জী বারান্দার শেষ প্রান্তে এসে ঝুকতেই বুকের মধ্যে শিহরণ খেলে গেল।হাতের তালুতে যেন হোস পাইপ ধরে আছে।পাইপের মুখ থেকে তীব্র বেগে জলধারা আছড়ে পড়ছে দেওয়ালে।যোনীর মুখ শুর শুর করে।মিসেস মুখার্জী দ্রুত সরে এলেন।
তোয়ালে নিয়ে স্নানে ঢুকে গেলেন মিসেস মুখার্জী।অনেক বেলা হয়ে গেল।বাথরুমে নিজেকে অনাবৃত করে শাওয়ারের নীচে দাঁড়িয়ে গা ভিজিয়ে সারা শরীরে সাবান ঘষতে ঘষতে তলপেটে হাত থেমে গেল।কিছুক্ষণ যোনীর উপর আলতো হাত বোলালেন।রনোর মুষলটা চোখের উপর ভেসে উঠল।মেয়ে সুমির থেকে বয়স কমই হবে কিন্তু মুষলটা যে কোনো মেয়েকে ঘায়েল করবে।
দোকানে পৌছাতে চুনী বলল,কিরে সেই গেছিস তো গেছিস?
আর বলিস না চা খাবার জন্য জোর করলেন।
দোকান বন্ধ করবি তো?সন্তোষ দা এসে তোর খোজ করছিল--।
কি বললি?
কি আবার বললাম সব কথা।কি বলল জানিস?ছেলেটার মনটা খুব নরম।নরম রনোর ক্যালানী তো খাওনি।
রনো হাসল।চুনী বলল,বেলা হল আসিরে ওবেলা দেখা হবে।
স্নান খাওয়া সারতে সারতে বারোটা বেজে গেল।আবার চারটের সময় খোকনকে আনতে যেতে হবে।মেঝেতে শতরঞ্চি পেতে শুয়ে পড়ল সহেলী।বাবুলালটা কোথায় যে উধাও হল।ভালবেসে বিয়ে করেছিল। বেচে আছে কিনা কে জানে।স্বামীর কথা ভাবে সহেলী।কেলোর দলে মিশতো।কতবার মানা করেছে গুণ্ডা বদমাশদের সঙ্গে মেশার দরকার কি।মারতে তেড়ে এসেছে।আজ আসার পথে সনাতন ধরেছিল।বাবুলাল থাকতে তাদের বাড়ীতেও আসতো।বাবুলালের বন্ধু, বন্ধুই বটে।বন্ধু নেই তার বউরে নিয়ে পড়েছে।সহেলী বলে দিয়েছে ফেলো কড়ি মাখো তেল।ঐসব খাতির টাতির চলবে না।আর বেলুন লাগায়ে করতি হবে।ভদ্রলোকের ছেলে হয় আলাদা,গুণ্ডা বদমায়েসের ব্যাপার কি রোগ ঢুকোয়ে দেবে বাজনার চেয়ে খাজনা মিটোতি দম বেরোয়ে যাবে।এইসব ভাবতে ভাবতে চোখ লেগে গেছিল।বাড়ীওলার গলা শুনে উঠে বসল।
অপু তো এই সময় থাকে সেতো অফিসে।সন্ধ্যেবেলা এসো।
জানলা ফাক করে দেখল সনাতন উপরের দিকে তাকিয়ে বাড়ীওলার সঙ্গে কথা বলছে।টাকা হাতছাড়া হচ্ছে বুঝেও সহেলীর বেশ মজা লাগে।
এখন আর শোবার দরকার নেই।এক্টু পরেই খোকাবাবুকে আনতে যেতে হবে।আজ একটু ঘুর পথে যাবে পথে সনাতন ধরতে পারে।তার কি দোষ সেতো ঘুমোচ্ছিল সনাতন কখন এসেছিল জানবে কি করে।বাড়ীওলার সাথে কি কথা হয়েছে তার জানার কথা নয়। সহেলী চোখেমুখে জল দিয়ে তৈরী হতে থাকে।
ঝর্ণা পাল কলেজ থেকে বাড়ী ফিরতে জাহ্নবীদেবী ফিস্ফিস করে বললেন,রাস্তায় কিছু দেখলি?
কোথায়?কিছু দেখলাম নাতো।
কেলো গুণ্ডা দলবল নিয়ে এসেছিল।পাড়ার লোক সবাই বেরিয়ে পড়েছিল।কেলেঙ্কারী কাণ্ড।শেষে পুলিশ এসে গোলমাল থামায়।
উত্তেজনায় কথা এলোমেলো হয়ে য়ায়।
চুপ করো তো।আগা নেই মাথা নেই।গুছিয়ে একটা কথা বলতে পারোনা?
ঠিক আছে।চা খাবি তো?জাহ্নবী দেবী চলে গেলেন।
গুণ্ডা পুলিশ পাড়ার লোক কিযে বলে?পোশাক বদলে রান্না ঘরে গেল।
অনিতা বয়সে তার চেয়ে অনেক ছোট হলেও সেই তুলনায় বুদ্ধি অনেক পরিণত।বিয়ের পর বুদ্ধি আরও পরিণত হয় ঝর্ণার মনে হল।আবেগের বশে সজলকে অনেক কথা বলে ফেলেছে।এখন মনে হচ্ছে আগ বাড়িয়ে অতকথা বলার দরকার ছিল না।
ম্যাথু আর্ণল্ড ব্রাউনের পরিবার আছে বোস্টনে।নিছক যৌনক্ষুধা মেটাতে স্ত্রী হিসেবে রেখেছিল মমকে।স্ত্রীর সম্মান মর্যাদা কোনো কিছুই দেয়নি।অক্সফোর্ডে পড়ার স্বপ্ন নিমেষে চুর চুর হয়ে ভেঙ্গে পড়ে।ইলিনা আজ রাতের ট্রেনে ফিরে যাবে।কলকাতায় থেকে কটা দিন এনজয় করবে ভেবেছিল সুপমা।ইলু চলে গেলে সেও দিদার বাড়ী চলে যাবে।ইলু মামার বাড়ীর ফোন নম্বর নিয়েছে পৌছে খবর দেবে।
অপু সরকার বেরিয়ে গেছে।মিতাও বেরোবার জন্য তৈরী,শৈলীর জন্য অপেক্ষা করছে।শৈলীর আসল নাম সহেলী।রেল লাইনের ধারে বস্তিতে থাকে।সরকার বাড়ীতে কাজ করে।ভোর বেলা আসে জলযোগ সেরে বৌদিকে রান্নায় এটা ওটা যোগান দিয়ে সাহায্য করে।তারপর বৌদির ছেলেকে কলেজে পৌছে দেওয়া বাসায় ফিরে মধ্যহ্ন ভোজ ঘুম তারপর আবার কলেজে গিয়ে ছেলেকে নিয়ে আসা।রাতে খেয়ে বস্তিতে ফিরে যায়।সহেলী বিবাহিত কিছুকাল সংসার করে নিরুদ্দেশ।বাধ্য হয়ে লোকের বাড়ীতে কাজ নিতে হয়েছে।
নজরে পড়ে শৈলী আসছে।কালো মাজা গায়ের রঙ বছর তেত্রিশ/চৌত্রিিশ বয়স।পায়জামা-কুর্তি পরে বলে পাছার দুলুনি সহজে নজরে পড়ে।কাছে আসতে মিতা নিত্যদিনের মত জিগেস করল,বিচ্ছুকে দিয়ে এসেছ?যাও খেয়ে নেও।
বাস রাস্তার দিকে হন হন হাটতে শুরু করল মিতা।বুক স্টলে বসে আছে রনো,উদাসীন দৃষ্টিি।কাল রাতের কথা মনে পড়ল।কে একজন জিজ্ঞেস করেছিল কি অসভ্যতা করেছে।রনো তাকে ধমক দিয়ে থামিয়ে দিয়েছিল।মিতার মুখে হাসি খেলে যায়।বাসে ওঠার পর থেকেই পিছনে দাঁড়িয়ে পাছা খামচে ধরছে।প্রথমে আস্তে আস্তে তারপর জোরে জোরে টিপতে থাকে।পিছনে হাত দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছে তাও ভ্রুক্ষেপ নেই।খারাপ লাগছিল না কিন্তু জানা নেই চেনা নেই একী অসভ্যতা।খুব বেচে গেছে।রনোকে তো চেনেনা।বাস আসতেই উঠে পড়ল মিতা,লেডিস সিট ফাকা দেখে বসে পড়ল।যাবার সময় অসুবিধে হয়না।ফেরার সময় খুব ভীড় হয় বসার জায়গা পাওয়া যায়না।
বুক স্টলে বসে চুনীর সঙ্গে গল্প করছে আরণ্যক।সকালে কেউ আসেনা।রাস্তা দিয়ে লোক চলাচল লক্ষ্য করে।মিতা বৌদি অফিস চলে গেল।বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে ভীড় কমতে থাকে। বাজার থেকে ঢাউস ব্যাগ হাতে বেরিয়ে মিসেস মুখার্জী বাড়ী ফিরছেন।একবার বা-দিকে কাত হন আরেকবার ডান দিকে কাত হচ্ছেন।রনোর খারাপ লাগে এই বয়সে এত ধকল।ডাক্তার মুখার্জী চলে যাওয়ার পর আণ্টি একবারে একা।এক্টু কম করে বাজার করতে পারেন।এই বয়সটা বেশ কষ্টের।আণ্টির কোনো ছেলে নেই এক মেয়ে তাও বিদেশে থাকে।অসুখ বিসুখ হলে কে দেখবে।এক সময় অসুখ বিসুখ হলে সবাই ডাক্তার বাবুর কাছে ছুটতো।কি অদ্ভুত ব্যাপার....।মিসেস মুখার্জী টাল খেয়ে পড়ে যাচ্ছিলেন পাশের দেওয়ালে ভর দিয়ে দাড়িয়ে আছেন।বাজারের থলিটা মাটিতে পড়ে আছে।পাশ দিয়ে লোক হেটে যাচ্ছে কেউ ফিরেও দেখছে না।থাকতে নাপেরে চুনীকে দোকান দেখতে আরণ্যক ছুটে গেল।কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করল,আণ্টি শরীর খারাপ লাগছে?
মিসেস মুখার্জী একপলক দেখে বললেন,তুই?এখুনি ঠিক হয়ে যাবে।
মাটিতে বসে থলে থেকে বেরিয়ে আসা আলু টোমাটো কুড়িয়ে থলেতে ভরতে ভরতে রনো বলল,এত বাজার একসঙ্গে করার দরকার কি?
রোজ রোজ বাজারে আসা এখন আর পারিনা তাই চার-পাচদিনের বাজার একসঙ্গে করে রাখি।
থলেতে আনাজপাতি ভরে উঠে দাঁড়িয়ে রনো বলল,চলুন আপনাকে এগিয়ে দিয়ে আসি।
একটু দাড়া।
শরীর খারাপ লাগছে?
শরীর ঠিক আছে।বয়স হয়েছে হাটতে হাটতে কখনো মনে হয় মালাইচাকিটা খুলে গেল,হাটু ভাজ করতে পারিনা।কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে ঠিক হয়ে যায়।এবার চল।
রনো একটু ধীরে হাটে,আণ্টি পিছিয়ে পড়ছে।
ডাক্তারবাবু মারা যাবার পর সবদিক আপনাকেই সামলাতে হয়।
ও থাকলে হাটুর সমস্যা থাকতো নাকি।
আপনি যদি যোগ ব্যায়াম করতেন--
আমার কোনো রোগ ব্যয়রাম নেই।
রনো বুঝতে পারে আণ্টি কানে একটু কম শোনেন।
ডাক্তারবাবুর দোতলা বাড়ী।একতলা ফাকা আণ্টি দোতলায় থাকেন।রনো বলল,আণ্টি নীচটা ভাড়া দিতে পারতেন।
মেয়ের আপত্তি।ও এইসব ঝামেলা পছন্দ করেনা।
আপনি মেয়ের কাছে গিয়ে থাকতে পারেন না?
ও যখন এসেছিল বলেছিলাম।পাসপোর্ট হয়ে গেছে।দেখি কবে নিয়ে যায়।
দোতলায় উঠে মিসেস মুখার্জী চাবি ঘুরিয়ে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকলেন।রনো দরজার কাছে থলে নামিয়ে বলল,আমি আসি আণ্টি?
আসি কিরে?ইয়ার্কি হচ্ছে ভিতরে আয় একটু কিছু মুখে না দিয় চলে যাবি।তুই আজ প্রথম এলি--।
রনো ভিতরে ঢুকে বলল,দোকান ফেলে এসেছি--।
চা না সরবৎ?দাড়া লেবু দিয়ে সরবৎ বানিয়ে দিচ্ছি--।
সরবৎ থাক আপনি বরং এক কাপ চা দিন।
শ্যামেরও খুব চায়ের নেশা ছিল।মিসেস মুখার্জী হেসে বললেন।তুই বোস।
মিসেস মুখার্জী চলে যেতে রনো চারপাশ তাকিয়ে দেখতে থাকে।একা মানুষ তবু সবকিছু পরিপাটি করে সাজানো।মেয়েরা ঘরের লক্ষী কথাটা মিথ্যে নয়।দেওয়ালের একদিকে ডাক্তার এসপি মুখার্জীর হাস্যোজ্বল ছবি।ছবিতে রজনী গন্ধার মালা।অঞ্চলের বিশিষ্ট ডাক্তার ছিলেন।এলাকার বাইরে রুগী আসতো।শেষদিকে চেম্বারে বসতেন না।বাড়ীতে বসেই রুগী দেখতেন।
মিসেস মুখার্জী দু-কাপ চা নিয়ে ঢুকে বিপরীত দিকের সোফায় বসার আগে ঝুকে রনোর দিকে চায়ের কাপ এগিয়ে দিয়ে বললেন, সাম্রনের দিকে ঝুকতে পারিনা কোমরে লাগে।
রনো চায়ের কাপ নিয়ে বলল,যোগ ব্যায়াম করে দেখতে পারেন।
সংসারের কাজ করে ফুরসৎ পাইনা ব্যয়াম।তুই এসেছিস বলে একটু বসে কথা বলছি।
আপনি তো একটা কাজের লোক রাখতে পারেন--।
ক্ষেপছিস,সবাই কি তোর মত?একা মেয়েমানুষ মেরে খুন করে লুঠপাট করে চলে যাক আর কি।
রনোর চা খাওয়া হতে উঠে দাঁড়িয়ে বলল,আজ আসি আণ্টি?
যাবি?শ্যাম চলে যাবার পর কথা বলার লোক ছিলনা।অনেক কাল পরে তোর সঙ্গে কথা বললাম।দেওয়ালে ঝোলানো স্বামীর ছবির দিকে তাকিয়ে মনটা হারিয়ে যায়।বিছানায় শুয়ে জড়িয়ে মালা-মালা বলে কিছুক্ষণ আদর করল।মতলব বুঝে নাইটীটা কোমর অবধি তুলে অপেক্ষা করছেন তিরতির কাপছে যোনীর ঠোট এই ঢোকে এই ঢোকে অবস্থা।শ্যাম বলল,আজ আর করবনা।
কেন কি হল?
আজ ভাল লাগছে না,কাল করব।
সকালে বেড টি দিতে এসে সাড়া নেই।বলেছিল কাল করব।কথা রাখেনি।মিসেস মুখার্জী বললেন,দ্যাখ আমাকে একা ফেলে রেখে কেমন হাসছে।কথার কোনো দাম নেই।
রনোর চোখ ছলছল করে আণ্টির মনে হয় কোনো পুরানো কথা মনে পড়েছে। সান্ত্বনা দেবার জন্য বলল,ডাক্তারবাবু নেই তো কি হয়েছে, কোনো দরকার হলে আমাকে বলবেন।
তোকে বলব?
রনো চলে যেতে দরজা বন্ধ করে বারান্দায় এলেন।উপর থেকে দেখছেন তাকালে হাত নাড়বেন।বাড়ীর থেকে বেরিয়ে এদিক-ওদিক তাকিয়ে আবার গলিতে ঢুকে গেল।কৌতূহলী মিসেস মুখার্জী বারান্দার শেষ প্রান্তে এসে ঝুকতেই বুকের মধ্যে শিহরণ খেলে গেল।হাতের তালুতে যেন হোস পাইপ ধরে আছে।পাইপের মুখ থেকে তীব্র বেগে জলধারা আছড়ে পড়ছে দেওয়ালে।যোনীর মুখ শুর শুর করে।মিসেস মুখার্জী দ্রুত সরে এলেন।
তোয়ালে নিয়ে স্নানে ঢুকে গেলেন মিসেস মুখার্জী।অনেক বেলা হয়ে গেল।বাথরুমে নিজেকে অনাবৃত করে শাওয়ারের নীচে দাঁড়িয়ে গা ভিজিয়ে সারা শরীরে সাবান ঘষতে ঘষতে তলপেটে হাত থেমে গেল।কিছুক্ষণ যোনীর উপর আলতো হাত বোলালেন।রনোর মুষলটা চোখের উপর ভেসে উঠল।মেয়ে সুমির থেকে বয়স কমই হবে কিন্তু মুষলটা যে কোনো মেয়েকে ঘায়েল করবে।
দোকানে পৌছাতে চুনী বলল,কিরে সেই গেছিস তো গেছিস?
আর বলিস না চা খাবার জন্য জোর করলেন।
দোকান বন্ধ করবি তো?সন্তোষ দা এসে তোর খোজ করছিল--।
কি বললি?
কি আবার বললাম সব কথা।কি বলল জানিস?ছেলেটার মনটা খুব নরম।নরম রনোর ক্যালানী তো খাওনি।
রনো হাসল।চুনী বলল,বেলা হল আসিরে ওবেলা দেখা হবে।
স্নান খাওয়া সারতে সারতে বারোটা বেজে গেল।আবার চারটের সময় খোকনকে আনতে যেতে হবে।মেঝেতে শতরঞ্চি পেতে শুয়ে পড়ল সহেলী।বাবুলালটা কোথায় যে উধাও হল।ভালবেসে বিয়ে করেছিল। বেচে আছে কিনা কে জানে।স্বামীর কথা ভাবে সহেলী।কেলোর দলে মিশতো।কতবার মানা করেছে গুণ্ডা বদমাশদের সঙ্গে মেশার দরকার কি।মারতে তেড়ে এসেছে।আজ আসার পথে সনাতন ধরেছিল।বাবুলাল থাকতে তাদের বাড়ীতেও আসতো।বাবুলালের বন্ধু, বন্ধুই বটে।বন্ধু নেই তার বউরে নিয়ে পড়েছে।সহেলী বলে দিয়েছে ফেলো কড়ি মাখো তেল।ঐসব খাতির টাতির চলবে না।আর বেলুন লাগায়ে করতি হবে।ভদ্রলোকের ছেলে হয় আলাদা,গুণ্ডা বদমায়েসের ব্যাপার কি রোগ ঢুকোয়ে দেবে বাজনার চেয়ে খাজনা মিটোতি দম বেরোয়ে যাবে।এইসব ভাবতে ভাবতে চোখ লেগে গেছিল।বাড়ীওলার গলা শুনে উঠে বসল।
অপু তো এই সময় থাকে সেতো অফিসে।সন্ধ্যেবেলা এসো।
জানলা ফাক করে দেখল সনাতন উপরের দিকে তাকিয়ে বাড়ীওলার সঙ্গে কথা বলছে।টাকা হাতছাড়া হচ্ছে বুঝেও সহেলীর বেশ মজা লাগে।
এখন আর শোবার দরকার নেই।এক্টু পরেই খোকাবাবুকে আনতে যেতে হবে।আজ একটু ঘুর পথে যাবে পথে সনাতন ধরতে পারে।তার কি দোষ সেতো ঘুমোচ্ছিল সনাতন কখন এসেছিল জানবে কি করে।বাড়ীওলার সাথে কি কথা হয়েছে তার জানার কথা নয়। সহেলী চোখেমুখে জল দিয়ে তৈরী হতে থাকে।
ঝর্ণা পাল কলেজ থেকে বাড়ী ফিরতে জাহ্নবীদেবী ফিস্ফিস করে বললেন,রাস্তায় কিছু দেখলি?
কোথায়?কিছু দেখলাম নাতো।
কেলো গুণ্ডা দলবল নিয়ে এসেছিল।পাড়ার লোক সবাই বেরিয়ে পড়েছিল।কেলেঙ্কারী কাণ্ড।শেষে পুলিশ এসে গোলমাল থামায়।
উত্তেজনায় কথা এলোমেলো হয়ে য়ায়।
চুপ করো তো।আগা নেই মাথা নেই।গুছিয়ে একটা কথা বলতে পারোনা?
ঠিক আছে।চা খাবি তো?জাহ্নবী দেবী চলে গেলেন।
গুণ্ডা পুলিশ পাড়ার লোক কিযে বলে?পোশাক বদলে রান্না ঘরে গেল।
অনিতা বয়সে তার চেয়ে অনেক ছোট হলেও সেই তুলনায় বুদ্ধি অনেক পরিণত।বিয়ের পর বুদ্ধি আরও পরিণত হয় ঝর্ণার মনে হল।আবেগের বশে সজলকে অনেক কথা বলে ফেলেছে।এখন মনে হচ্ছে আগ বাড়িয়ে অতকথা বলার দরকার ছিল না।
ম্যাথু আর্ণল্ড ব্রাউনের পরিবার আছে বোস্টনে।নিছক যৌনক্ষুধা মেটাতে স্ত্রী হিসেবে রেখেছিল মমকে।স্ত্রীর সম্মান মর্যাদা কোনো কিছুই দেয়নি।অক্সফোর্ডে পড়ার স্বপ্ন নিমেষে চুর চুর হয়ে ভেঙ্গে পড়ে।ইলিনা আজ রাতের ট্রেনে ফিরে যাবে।কলকাতায় থেকে কটা দিন এনজয় করবে ভেবেছিল সুপমা।ইলু চলে গেলে সেও দিদার বাড়ী চলে যাবে।ইলু মামার বাড়ীর ফোন নম্বর নিয়েছে পৌছে খবর দেবে।