Thread Rating:
  • 87 Vote(s) - 3.05 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery আগুণের পরশমণি;কামদেব
#45
পঞ্চম পরিচ্ছেদ





আজ খুব চাপের মধ্যে ছিল আরণ্যক।মাসের শেষে পেমেণ্টের দিন।কাগজ বিতরণ সেই সঙ্গে খাতা দেখে হিসেব করে টাকা বুঝে নেওয়া।শেষের দিকে সন্তোষদা এসে সাহায্য করেছে।আরণ্যকের কাজে দাদা সন্তুষ্ট।কাগজ বিতরণ শেষ হলে সন্তোষ মাইতি হিসেবের খাতা খুলে টাকা পয়সা বুঝে নিয়ে পার্টি অফিসে চলে গেলেন।
টাকা মিটিয়ে দিয়ে হাল্কা বোধ করে আরণ্যক।রাস্তার দিকে লোক দেখতে থাকে।বড় রাস্তায় বাস থেকে নেমে পাড়ায় ঢোকার পথ
দোকানের সামনে দিয়ে।একা হলে পুরানো দিনের কথা ভীড় করে আসে মনে।বাবার কথা মনে পড়ল।কখনো গায়ে হাত তোলেনি।একটা কথা বলতো,কোনো সম্পদ রেখে যেতে পারলাম না।মন দিয়ে পড়াশুনা করো সেটাই হবে সম্পদ।সেদিন যদি বাবা মাথার উপর থাকতে থাকতে আড্ডা নাদিয়ে একটু পড়াশুনা করতাম আরণ্যকের চোখ ঝাপসা হয়ে এল।ছোটোবেলা থেকে ছবি আকার ঝোক ছিল কারো কাছে শেখেনি নিজে নিজেই আকতো। শেখানেও কিছু হল না।একটা জিনিস লক্ষ্য করেছে কোনো কিছুতে লেগে থাকা তার ধাতে নেই।  হারু সাহার বাড়ীতে থাকতে এদিক-সেদিক কাজের চেষ্টা করছিল।খাওয়া-থাকার ব্যবস্থা হওয়ায় সেই চেষ্টাটা মিইয়ে গেছে।এই কি একটা জীবন।
নজরে পড়ল ডাক্তারবাবুর বউ মানে মিসেস মুখার্জী বাজারের থলে হাতে বাজার করে ফিরছেন।পা ফেলতে একবার বা কাত একবার ডান কাত হয়ে যাচ্ছেন।দেখে খারাপ লাগে।আন্টি যদি নিয়মিত যোগচর্চা করতো তাহলে এমন হতো না। ডাক্তারবাবুর কোনো ছেলে নেই,এক মেয়ে।বিয়ের পর বিদেশে থাকে।ডাক্তারবাবুর মারা যাবার পর একবার এসেছিল।শুনেছে বিদেশ থেকে টাকা পাঠায়।টাকাটাই সব নয়।মিসেস মুখার্জীকে সব নিজেকেই করতে হয়।বাধর্ক্যে মানুষ বড় অসহায়।একান্নবর্তী পরিবার ভেঙ্গে যাওয়ায় এই অবস্থা হয়েছে।মেয়েদের শরীর কি ভারী হয়? মিসেস মুখার্জীকে দেখে মনে হল কথাটা।বিশেষ করে কোমরের নীচটা ছেলেদের চেয়ে ভারী মনে হয়।
সন্তোষদা তার উপকার করেছে তাহলেও মানুষটাকে এখনো চিনতে পারেনি।পিক্লু ফুলনদেবীর চাকরির কথা তুলতে সন্তোষদা অস্বীকার করে বলেছিল তার কোনো হাত নেই।মানলাম ফুলনদেবী নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছে।কিন্তু ফুলন দেবীকে নিয়ে থানায় গেছিল কেন।বিশু নিজে দেখেছে। থানায় লোকে অভিযোগ জানাতে জানাতে য়ায়।ওরা দুজন একসঙ্গে কি করতে গেছিল?এক সময় ফুলনদেবী পার্টির লোকদের প্রতি কম অত্যাচার করেনি।মহিলার জন্য খারাপও লাগে।ভাল করে সংসার করতে না করতে বিধবা হয়ে গেল। সব কেমন তালগোল পাকিয়ে যায়।এইজন্য রাজনীতি এড়িয়ে চলে আরণ্যক।অনেক বেলা হল দোকান বন্ধ করে স্নান খাওয়া সেরে ফেলা যাক।হোটেলে একটা ঝামেলা।রোজ কাটাপোনার ঝোল।রকমারি মাছ কদাচিত পাওয়া য়ায়।
সুপমা দেশ থেকে ফিরে একদিন দিদার কাছে থাকবে তারপর মেসে চলে যাবে।পরশু হতে পরীক্ষা শুরু।ইলু হয়তো এসে গেছে।ইলুকে দিদারও ভালো লেগেছে।পথে মামার সঙ্গে দেখা।ফ্লাটে বড় বড় পিলার উঠেছে।সুপমাকে দেখে বীরু সামন্ত বলল,কিরে পুটি তোর পরীক্ষা তো এসে গেল।
হ্যা।আজ দিদার কাছে থাকবো কাল মেসে চলে যাব।  
যা বাসায় যা মা তোকে দেখলে খুশী হবে।সুপমা হেসে চলে গেল।সত্যি বলতে কি দিদার জন্যই এখানে আসে।
ভাগ্নীর দিকে তাকিয়ে বীরু সামন্ত ভাবে পুটিই তাদের বংশে এতদূর পড়াশুনা করেছে।স্বর্ণশিল্পী তাদের জাত ব্যবসা।তিনি ঝোকের মথায় প্রোমোটারি শুরু করেছেন।এ যাবৎ ছটা ফ্লাট তার হাত দিয়ে হয়েছে।এটা নিয়ে সাতটা হবে।তার আগে কেষ্ট হালদারের সঙ্গে যৌথভাবে দুটো ফ্লাট করেছেন।কেষ্টদার সঙ্গে থেকে কাজ শিখেছেন।কোথায় কি দিতে হয় কাকে  কিভাবে খাতির করতে হয় সব কেষ্টদার মারফৎ আয়ত্ব করেছেন।এখন সবাই বীরু প্রোমোটার বলে একডাকে চেনে।ইতিমধ্যে ফ্লাট কেনার জন্য অনেকে এসেছে।প্লানে দাগ দিয়ে সবাইকে বলেছে একতলা দোতলা বুক হয়ে গেছে।এসব কায়দা কেষ্টাদার কাছে শেখা।দোতলার দিকেই সবার নজর।
পুটিকে সরমার তেমন পছন্দ নয়।মার জন্য কিছু বলার সাহস নেই।চুপচাপ সহ্য করে যায়।একবার পুটির প্রশংসা করেছিল বলে সরমা মুখ ঝামটা দিয়ে বলেছিল,পুটি তোমাদের বংশের কি করে হয়।যতসব আদিখ্যেতা।
পুটির মত তোমাদের বাড়ীতে কেউ আছে?
আমার বাপের বাড়ী নিয়ে কোনো কথা বললে ভালো হবে না বলছি--।
বীরু সামন্ত আর কথা বড়ায় না।মেয়েছেলের ব্যাপার কখন কি করে বসে তার ঠিক নেই।মুখ গোমড়া কথা বন্ধ করলে রাত্তিরটাই মাটি। সরমার ক্ষমতা আছে যখন যেভাবে করি কখনো না বলতে শুনিনি।নিজের চেয়ে আমার সুখের দিকে বেশী নজর।মেয়েদের এই একটা গুণ।
ছুটির ঘণ্টা বাজতেই সবাই হৈ-হৈ করে বেরিয়ে পড়ল।ঝর্ণার আর কোনো সন্দেহ নেই সবকিছুর পিছনে সন্তুর হাত ছিল।যাক বড়বাবু তারই সামনে ডায়েরীর সব পৃষ্ঠা ছিড়ে ফেলেছে সন্তুর কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে।বড়বাবুর সঙ্গে সন্তুর খুব খাতির।
ঝর্ণাদি তোমার খোজ করছিল রেখা।অনিতা বলল।
কি করে যাব বল।তুই তো জানিস কটা দিন থানা পুলিশ কিভাবে কেটেছে।বিয়েতে সবাই গেছিল?
তুমি বাদে কলেজের সবাই গেছিল।
ঠিক আছে কলেজে আসলে বুঝিয়ে বলব।বর কেমন হয়েছে?
বাইরে থেকে তো ভালোই মনে হল।
বাইরে থেকে মানে?
লাজুক হেসে অনিতা বলল,না কিছুনা।
কিছুনা বললে হবে?আমার কাছেও চেপে যাচ্ছিস।থাক বলতে হবে না।
তুমি রাগ করছো?জানো এক একজনের ঐটা এত ছোটো হয় কি বলব।আমি তো খুব চিন্তায় ছিলাম।সারা জীবন যার সঙ্গে ঘর করতে হবে ঐটাই যদি--।
তোরটার বড় আছে?
খুব বড় না ইঞ্চি পাচেক হবে--কাজ চলে য়ায়।
শুনেছি বাজারে বড় করার জন্য অনেক মলম মালিশ পাওয়া য়ায়।
সন্তুরটা এত ছোট ওর বউয়ের ভাগ্যটাই খারাপ।বাসায় ফিরে ঝর্ণা পোশাক বদলায়।মাকে জিজ্ঞেস করে,কেউ এসেছিল?
নাতো।কারো আসার কথা আছে নাকি?
না ঠিক আছে।
রান্না ঘরে গিয়ে এক কাপ চা নিয়ে এসে আয়েস করে চুমুক দিল।পুরানো কথা মনে পড়ল।সিআরপি আর পুলিসের কুম্বিং অপারেশন হল।পালাতে গিয়ে নিমু তারই সামনে লুটিয়ে পড়ল।কমরেডরা যে যেদিকে পারছে পালাচ্ছে।ঝর্ণা পালাতে গিয়েও মায়ের কথা কোনো রকমে বাড়ীতে এসে আত্মগোপন করল।অপারেশনের মাকুরা ফিরে এসে পাড়ার দখল নিল।কিভাবে যে  ঘরবন্দী হয়ে দুটো দিন কাটলো।এতো শালা আরেক বিপদ।
সন্ধ্যেবেলা দরজার কড়া নাড়ার শব্দে বুকের মধ্যে ছ্যৎ করে উঠল।ছ-ঘড়ার মেশিনটা কোমরে গুজে দরজার ফুটোয় চোখ চিনতে পারল সন্তোষ মাইতি।আশপাশ ভালো করে দেখে কাউকে নজরে পড়লনা।তার মানে একাই এসেছে।সংঘাতের উদ্দেশ্য থাকলে দলবল নিয়ে আসতো।সন্তোষ মাইতির আগমনের উদ্দেশ্য কি ঝর্ণাপাল ধন্দ্বে পড়ে যায়।মাথায় একটা দুষ্টু বুদ্ধি খেলে গেল। একটানে পরনের শাড়ীটা খুলে গায়ে জড়িয়ে নিল।আবার কড়া নাড়ার শব্দ হতে হ্যা  খুলছি বলে দরজা খুলে অবাক গলায় বলল,দাদা আপনি!আসুন আসুন ভেতরে আসুন।
সন্তোষ মাইতি প্রবেশ করে ঝর্ণাকে ওই অবস্থায় দেখে অস্বস্তি বোধ করে।স্বাভাবিক গলায় বললাম,বসুন দাদা।এইমাত্র গা ধুয়ে
এলাম।
একটা সোফায় বসতে বসতে সন্তোষ বলল,তোমাদের কৃষি বিপ্লব কতদূর হল?
ব্যঙ্গ করছেন?
ব্যঙ্গ করব কেন তোমরাই তো দেওয়ালে দেওয়ালে লিখেছিলে গ্রাম দিয়ে শহর ঘেরো,কৃষি বিপ্লব সফল করো।চোখ তুলে এক পলক দেখে বলল,শাড়ীটা পরে নেও।
দাদা চা খাবেন তো?
চা মন্দ হয়না।বিষ মিশিয়ে দেবে না তো?
কি মতলবে এসেছে বোকাচোদা।বললাম,আগে আমি এক চুমুক দেব।
সন্তোষ হো-হো করে হেসে উঠল।পুরুষ মানুষের নজর আমার খুব চেনা।শাড়ী কোমরে গিট দিয়েছি।একটু ঝুকি নিয়ে বললাম,দাদা কুচিটা একটু ধরবেন?
কুচি ধরবো?পূর্ণ দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালো।
চোখ কুচকে এমনভাবে তাকালাম আচ্ছা আচ্ছা লোকের পতাক উত্তোলন হয়ে যাবে।বললাম,এনি প্রব্লেম?
না না প্রবলেমের কি আছে।সোফা থেকে নেমে মেঝেতে বসে কুচি ধরলো।
কাপড় পরা হয়ে গেলে বললাম,বসুন আমি চা নিয়ে আসি।
বুঝতে পারছি না মক্কেলের কেন আগমন।মালটা মোটামটি ঘায়েল।আচ্ছা ওকে দিয়ে কিছু কাজ করিয়ে নিলে কেমন হয়।একটু পরে দু-কাপ চা নিয়ে ফিরে এলাম।
চায়ে চুমুক দিয়ে কি যেন ভাবতে থাকে।জিজ্ঞেস করলাম,কি ভাবছেন দাদা বিষ আছে কিনা?
ভাবছি তোমার কথা।নিমুটা এভাবে মারা যাবে ভাবিনি।
নিমু কেন ভোম্বল শ্যাম দিলীপ কারো মৃত্যুই কাম্য ছিল না।
কি বলছো কি নিমুর মৃত্যু আর অন্যদের মৃত্যু তোমার কাছে এক হল?
সকলেই আমার কমরেড--।
নিমু কেবল কমরেড?আর কিছু নয়?
সন্তোষদা কি বলতে চাইছে বুঝতে পারি।সন্তোষদাকে ব্যাপারটা খুলে বলা যেতে পারে।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: আগুণের পরশমণি;কামদেব - by kumdev - 29-04-2024, 10:47 PM



Users browsing this thread: 11 Guest(s)