10-04-2024, 07:50 PM
সুনির্মল – রাতের খাওয়া হয়ে গেলেই আর বসে থাকতে ইচ্ছা করে না। মনে হয় কখন গিয়ে বিছানায় শোবো। আবার সটান গিয়ে শুয়ে পড়লে চট করে ঘুম আসতে চায় না। তাই কিছুক্ষণ ফোন ঘেঁটে একটা বা আধটা সিগারেটে সুখটান দিয়ে তবে শুতে যায়। এই একটা সিগারেট হয় নিজের ইচ্ছেয় আর আধটা অবশ্যই রাইয়ের নির্দেশে। রাই ওর সিগারেট খাওয়া একদমই পছন্দ করে না। তাই বাধ্য হয়েই আগের থেকে অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে নিজের সুখটানের সংখ্যাটা। বাড়ির বাইরে থাকলে তবু দু-একটা খায়, কিন্তু বাড়িতে থাকলে সংখ্যা আক্ষরিক অর্থেই এক- আধটায় নেমে আসে। কারণ রাইয়ের খবরদারী সব সময় ভালো লাগে না ওর। কেমন যেন মাত্রাতিরিক্ত বলেই মনে হয়। এই যেমন আজকের সন্ধ্যের ঘটনাটার কথাই ধরা যাক। কোনো কারণই ছিল না এইরকম একটা সিন ক্রিয়েট করার। তবুও করল। ও ভেবেছিল আজকের রাতটা কিছু খাবে না। রাগ দেখিয়ে শুয়ে থাকবে। শেষপর্যন্ত অবশ্য তা পারেনি। খাবার বাড়ার পরে বার তিনেক ডাকার পরেও ও খেতে যায়নি, তখনই রাই বুঝতে পেরেছিল ও ভুল করেছে। তাই প্রথমে বাবানকে দিয়ে ডাকতে পাঠিয়েছিল। যখন সেই অস্ত্রেও কাজ হয়নি, তখন নিজে এসেছিল ওকে খেতে ডাকতে। প্রথমে মুখের উপরে মানা করে দিয়েছিল খাবে না বলে, কিন্তু রাই যখন বলল ও না খেলে, সে-ও খাবে না, সারারাত উপোস করে থাকবে তখন আর না গিয়ে উপায় থাকে না। খেয়ে দেয়ে এসে বিছানায় শুয়ে মোবাইলটা ঘাঁটতে শুরু করল। তারপর বাবানকে বকে ঘুম পাড়াল। আজকে আর সিগারেট খেতে ইচ্ছে করছে না। মাথাটা একটু ধরে আছে। বাবান একটু পরেই ঘুমিয়ে পড়ল। রাইয়ের কাজ সেরে শুতে আসতে এখনও অনেকটাই সময় বাকী। এই সময়টুকুকে কাজে লাগানোই যেতে পারে। বিছানায় আধশোয়া হয়ে একবার দরজার দিকে তাকালো। এখন আর বন্ধ করার উপায় নেই। তাহলেই রাইয়ের সন্দেহ হবে। আর তাহলেই মুশকিল। এখন হাজারটা প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়ার একদমই ইচ্ছা নেই। দরজার দিকে ভালো করে তাকিয়ে দেখে নিল। রাই এখন আশেপাশে নেই। হয় কিচেনে হেঁশেলের কাজ গোছাচ্ছে। কিম্বা মায়ের ঘরে আছে। একপ্রকার নিশ্চিন্ত হয়ে মোবাইলের অ্যাপটাকে খুলল। প্রথমেই গেল অ্যাফ্রোডাইটের প্রোফাইলে। বর্তমানে সেটা ইনঅ্যাকটিভ। সেখান থেকে বেরিয়ে এসে গেল এইসেথের প্রোফাইলে। কিন্তু সেটাও ইনঅ্যাকটিভ দেখে মনটা একটু খারাপ হয়ে গেল। যদিও মন খারাপের আদৌ কোনো কারণ আছে বলে ওর নিজেরই মনে হল না। একটু আগে পর্যন্তও ও অ্যাফ্রোডাইটের সঙ্গে আড্ডা মেরেছে। এবং সে এটা বুঝছে মেয়েটা ওর সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে সবিশেষ আগ্রহী। যদিও কারণটা ও এখনও বুঝে উঠতে পারেনি। সেটা আশা করি দিন কয়েকের মধ্যে পেরে যাবে। কিন্তু একটা জিনিস পরিষ্কার মেয়েটা ওর সঙ্গে কথা বলে ইমপ্রেসড হয়ে গেছে। অবশ্য এর জন্য দায়ী তাপস। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে তাপস ওর হয়ে কথা বলেনি ঠিকই, কিন্তু কতকটা তাপসেরই শেখানো বুলি ও আউড়ে গেছে। ফলও পেয়েছে হাতে হাতে। মেয়েটা কথা দিয়েছে ও আবার কাল রাত নটার সময় ওর সাথে কথা বলবে। ইনফ্যাক্ট প্রতিদিন রাতেই নটার পরে ওর সাথে আড্ডা দেবে। তাপসকে কি একবার ফোন করে থ্যাঙ্কস জানানো উচিত? সেটা কি এত রাতে ঠিক হবে? শালা, কি অবস্থায় আছে তার ঠিক নেই। তার চেয়ে বরং কাল অফিসে গিয়েই কথা হবে। তবে শালা, মাতাল হলেও তালে ঠিক আছে। বারবার ওকে বলে দিয়েছিল, “শোন গান্ডু, বিয়ে না করতে পারি, তবে মেয়েদের বিষয়ে তোকে একটা জ্ঞান দিই।”
- “কি জ্ঞান?” রঙিন তরলে এক চুমুক।
- “সেটা হল, মেয়েরা কখনই ওভার স্মার্ট ছেলেদের পছন্দ করে না।”
- “ওভার স্মার্ট?!” আরেক চুমুক।
- “হ্যাঁ। ঐ বাংলায় যাকে বলে পোঁদপাকা, বুঝেছিস?”
- “বুঝেছি।”
- “হ্যাঁ, মানে মেয়েরা আজকালকার ঐ পোঁদপাকা, ডেঁপো ছেলেদের একদম পছন্দ করে না।”
- “তাহলে কেমন ছেলে পছন্দ করে?”
- “এই আমার মতো লালুভুলু ছেলেদের।”
- “তুই? আর লালুভুলু?” চুমুকে চুমুকে গ্লাসের তরল প্রায় শেষ।
- “সেটাই তো বলছি। মন দিয়ে শোন না, গান্ডু। তোকে লালুভুলু হতে হবে, সেটা বলছি না। তোকে লালুভুলু সাজতে হবে।”
- “মানে!?”
- “জানতাম বুঝতে পারবি না। শোন মেয়েদের কাছে সবসময় লালুভুলু টাইপের সেজে থাকবি। আর পারলে মাঝে মাঝে সেন্টু দিবি। আবার সেন্টু বুঝিস তো?” তাপসের প্রশ্নের উত্তরে ও কেবল একবার ঘাড়টা নাড়ল। তাপস খুশী হয়ে আবার বলতে শুরু করল, “গুড। তারপর শোন। যখন কথা বলবি তখন বুঝেশুনে, মেপে কথা বলবি। যেন ওরা তোর আসল চেহারাটাকে বুঝতে না পারে।”
তাপসের কথা ও অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেছে। কিন্তু প্রথমেই হোঁচট খেতে হয়েছিল ওকে। মেয়েটা বুদ্ধিমতি তাতে সন্দেহ নেই। ও ভুল করে অফিসের কথা বলে ফেলেছিল। টপ করে সেটা ধরে ফেলেছে। সামাল দিতে হাজারটা মিথ্যে কথা বলতে হয়েছে। তাতে বিশেষ আফসোস কিছু নেই। মেয়েটার সাথে বন্ধুত্ব তো হয়ে গেল। এবার থেকে শুধু ওর সঙ্গেই নয়, সবার সঙ্গেই এই অ্যাপে সাবধানে কথা বলতে হবে। তবে অ্যাফ্রোডাইটের বিষয়েও ও অনেক কিছু জানতে পেরেছে। তার বয়স ২৩ আর কলকাতায় থাকে সেটা তো ওর প্রোফাইল থেকেই জানতে পারা গেছিল। এছাড়াও আরো অনেক কিছুই জানতে পেরেছে। যেমন মেয়েটা কলেজে পড়ে। যদিও কলেজের নামটা বলেনি। বাড়িতে মা-বাবা আর ভাইয়ের সঙ্গে থাকে। ভাই কলেজে পড়ে। ইত্যাদি আরো অনেক কিছুই। একবার ওর ইচ্ছা হয়েছিল বাড়ির ঠিকানাটা জানার, কিন্তু সাহসে কুলায় নি। প্রথম দিনেই বাড়ির ঠিকানাটা জানতে চাওয়াটা বোকামি হয়ে যেত। সেই ভেবেই আর চায় নি। যাই হোক যা যা ইনফরমেশন পাওয়া গেছে, তাতেই যথেষ্ট।
বিছানায় আধশোয়া হয়ে যখন ও ফোনে ওর আর অ্যাফ্রোডাইটের চ্যাটগুলো পড়ছিল, তখনই রাই ঘরে ঢুকল। ওকে ঘরে ঢুকতে দেখে চমকে গিয়েছিল ঠিকই কিন্তু মূহুর্তের মধ্যে নিজেকে সামলে নিল। রাইকে দেখে ফোনটা রেখে দিলেই সন্দেহ করতে পারে ভেবে ফোনটা হাতেই ধরে রাখল। সুখের থেকে শান্তি অনেক, অনেকটাই ভালো। সে যাই হোক। রাই কিন্তু অতশত লক্ষ্য করেনি। ও সোজা হাত-পা-গলা মুছে বসে পড়ল ড্রেসিং টেবিলের সামনে। এখন ও চুল আঁচড়াবে। তারপর শুতে আসবে। রাই এখন ওর দিকে পিঠ করে বসে আছে। সাহস একটু বাড়ল। অল্পক্ষণ অ্যাপটায় এদিক ওদিক ঘুরল। ঠিক এই সময় রাই কিছু একটা কথা বলল। ওর মন ওদিকে না থাকায় কথাটা ও শুনতে পেল না। রাই আবার আগের মতোই বলল, “কই গো, শুনছো, আমি কি বলছি?” এবারে কথাটা ওর কানে ঢুকল। কিন্তু ফোন থেকে চট করে চোখটা সরাতে পারল না। সেইভাবেই ও উত্তর দিল, “বলো, শুনছি।” ওর এই কথাতে রাই কেন যে এত রেগে গেল ও বুঝতে পারল না। রাই তৎক্ষণাই চুল আঁচড়ানো থামিয়ে দিয়ে পিছন ফিরে ওর দিকে তাকিয়ে একপ্রকার খেঁকিয়ে উঠে বলল, “না। তুমি শুনছো না। ফোনটা রাখবে? নাকি জানলা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেবো ওটাকে?” এরপর আর বিপদ বাড়ায় কোন বোকা? ও-ও বাড়াল না। সুবোধ বালকের মত অ্যাপটা থেকে বেরিয়ে এসে ফোনটাকে বিছানায় রেখে দিয়ে রাইয়ের দিকে তাকিয়ে ভালো মানুযের মত গলা করে বলল, “বলো, কি বলছিলে?” রাই এবার খুশী হল। মুচকি হেসে আবার ওর দিকে পিছন ফিরে চুলে বিনুনি করতে শুরু করল। তারপর বলল, “বলছিলাম, তপতী আবার কনসিভ করছে।” কথাটা শুনে ও প্রথমে বুঝতে পারল না, রাই আসলে কার কথা বলছে। ও একটু ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞাসা করল, “কে?” রাই আগের মতই চুলে বিনুনি করতে করতেই জবাব দিল, “আরে তপতী। আমার বন্ধু। ঐ যে, কসবার ওদিকে থাকে।” হ্যাঁ, এইবার মনে পড়েছে। উফ্! আবার ঐ মহিলা! রাইয়ের একমাত্র বন্ধু। যেমন ন্যাকা, আর ঠিক তেমনই গায়েপড়া। দেখলেই গা জ্বলে যায়। সেকথা আবার রাইকে একদম বলা যাবে না। ঐ তপতী না কি, ও হচ্ছে রাইয়ের প্রাণের বন্ধু। বরের হাজারটা নিন্দে মুখ বুজে সহ্য করে নেবে, কিন্তু বন্ধুর আধখানা নিন্দেও সহ্য করবে না। উল্টে চারখানা কথা শুনিয়ে দেবে। তো, সে কনসিভ করছে, তাতে ওর কি? রাইয়ের সবেতেই আদিখ্যেতা। কিন্তু সেকথা ওকে বুঝতে দিলে চলবে না। তাহলেই অনিবার্য কুরুক্ষেত্র। স্বাভাবিক স্বরেই ও জিজ্ঞাসা করল, “যার বর ফাইনান্সে কাজ করে?” রাই ঘাড় নেড়ে কনফার্ম করে বলল, “হ্যাঁ গো।” কাজ নেই আর! মুখটা একটু বেঁকিয়ে ও আবার প্রশ্ন করল, “ওর একটা মেয়ে আছে না?” রাই আবার আগের মতই ঘাড় নেড়ে উত্তর দিল, “আছে তো। আমাদের বাবানের থেকে বছর খানেকের বড়ো।” এই কথাবার্তা আর ওর ভালো লাগছে না। ও বিছানায় শুতে শুতে বলল, “এত বছর পর আবার ইস্যু নিচ্ছে?” রাইয়ের এতক্ষণে চুল বাঁধা শেষ। এখন ও ঘাড়ে, গলায় পাউডার মাখছে। এত রাতে এত সাজার কি দরকার ও বুঝতে পারছে না। যাই হোক রাই আবার আগের মতই জবাব দিল, “তবে আর বলছি কি? আমিও তো ওকে একই কথা বললাম।” বিরক্তিকর কথাবার্তা! ও পাশ ফিরে শুয়ে পড়ল। এবার একটু ঘুমের নাটক করতেই হবে। তা নাহলে রাইয়ের হাত থেকে নিস্তার নেই। বকবক করে মাথা খারাপ করে দেবে। তাই কথাটা একপ্রকার শেষ করার জন্যই ও পাশ ফিরে শুয়ে পড়ে বলল, “বড়লোকেদের কথা ছাড়ো। ওরা দুটো কেন চারটে ইস্যুও নিতে পারে ইচ্ছে হলে।” কিন্তু বিধি বাম! এত সহজে রাই চুপ করার মেয়ে নয়। সাজাগোজা শেষ করে ঘরের বড়ো আলোটাকে নিভিয়ে দিয়ে নাইট ল্যাম্পটাকে জ্বেলে দিল। ও চোখ বন্ধ করে ঘুমের ভান করে শুয়ে রইল। কিন্তু কপাল আজ নেহাতই খারাপ। এত সহজে রেহাই দেবে না রাই। ওর পাশে এসে শুলো। অন্যদিন বাবানকে মাঝে দিয়ে নিজে অন্য ধারে শোয়। হাত ধরে টানলেও কাছে আসেনা। আজ আবার ন্যাকামো করে বাবানকে সরিয়ে দিয়ে নিজে ওর পাশে শুলো। তারপর মুখটাকে ওর কানের কাছে এনে ফিস ফিস করে বলল, “কি গো, ঘুমিয়ে পড়লে নাকি?” উফ্ কি জ্বালাতন! এখন একদম বকবক করার ইচ্ছে নেই। কিন্তু কথা না বলেও উপায় নেই। তাই ইচ্ছে করেই গলাটাকে একটু ঘুমের মত জড়িয়ে বলল, “না। বলো।” হঠাৎ করেই ও টের পেল রাই ওর পিঠে নিজের মুখটা ঘষছে। কি করতে চাইছে ও? তারপর বলল, “আমরাও একটা নেবে?” এইটাই ভয় পেয়েছিল ও। মেয়েছেলের বুদ্ধি আর কি হবে? চিরকাল পরের দেখে নেচে এসেছে। আজও তাই। ও আরও ঘুম জড়ানো গলা করে বলল, “কি?” এতেও শেষ নেই। রাই এবার ওর শরীরের উপরে উঠে এল প্রায়। অন্যদিন ওকে কত সাধ্যসাধনা করতে হয়। আর আজ দেখো? হঠাৎ নিজের কানের লতিতে একটা ভেজা ভেজা স্পর্শ টের পেল। রাই কি ওর কানের লতিটা চাটল? হবে হয়তো। কিন্তু না। ওর ফাঁদে একদম পা দেওয়া যাবে না। আগে জানলে ফেরার পথেই কিনে আনত। আজ বেশ সুযোগ। কিন্তু ঘরে একটাও স্টকে কন্ডোম নেই। রিস্ক নেওয়াটা বোকামি হয়ে যাবে। যখন রাই নিজে থেকে এতটা ডেসপারেট হয়ে আছে। “কি আবার! বলছি আরেকটা ইস্যু নেবে?” রাই আবার কানের কাছে মুখ নিয়ে এসে বলল। এবার আর এসব বাড়তে দেওয়া যায় না। ও হাত দিয়ে কানটাকে একবার মুছে নিয়ে বলল, “ঘুমিয়ে পড়ো, রাই। অনেক রাত হয়েছে।” কিন্তু সবই ওর কপাল। এত সহজে এসব থামার নয়। রাই এবার সরাসরি ওর বুকে হাত রাখল। আঙুল দিয়ে ওর বুকে দাগ কাটতে কাটতে বলল, “বলো না। নেবে আরেকটা ইস্যু?” আর নয়। এবার রাইকে থামাতেই হবে। তা নাহলে ও নিজেকে থামাতে পারবে না। আর রাই ঠিক এটাই চাইছে। কিন্তু ও কিছুতেই এটা হতে দেবে না। নিজের বুক থেকে রাইয়ের হাতটা ঠেলে সরিয়ে দিল ও। তারপর পাশবালিশটাকে শক্ত আঁকড়ে ধরে বলল, “আমার প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছে। কাল সকালে আবার উঠতে হবে। এখন ঘুমাতে দাও।”
হঠাৎ করে কেন যে ঘুমটা ভেঙ্গে গেল প্রথমে ও বুঝতেই পারল না। কেনই বা ভাঙ্গল সেটাই শুরুতে বুঝতে পারল না। পাশ ফিরে দেখল বাবান অকাতরে ঘুমাচ্ছে। কিন্তু রাই কোথাও নেই। তাহলে কি বাথরুমে গেছে? হবে হয়তো। কি মনে হতে ফোনটা একবার হাতে নিল। অ্যাপটা ইন্সটল করার পর থেকেই কেমন যেন একটা নেশার মত হয়ে গেছে। লকস্ক্রিণে চোখ পড়তে দেখল দুটো বেজে তেত্রিশ। অনেকটাই রাত হয়ে গেছে। অ্যাপটা একবার খুলল। কি মনে হতে সোজা চলে গেল এইসেথের প্রোফাইলে। দেখল সে এখন অ্যাকটিভ আছে। কথা বলার লোভটা সামলাতে পারল না। চ্যাটে লিখে পাঠাল, “এত রাতেও ঘুমাও নি?” তড়িৎগতিতে জবাব এল, “আমি না ঘুমালে কার কি?” কথাটার মধ্যে কেমন যেন একটা অভিমানের গন্ধ পাওয়া গেল না। এমন মাছই তো ছিপে গাঁথা দরকার। ও তাড়াতাড়ি লিখল, “কারোর কিছুই না হতে পারে। কিন্তু তোমার নিজের তো অনেক কিছুই।”
- “তুমি নিজেও তো এখনও ঘুমাওনি, আবার আমাকে জ্ঞান দিচ্ছো?” উফ্ কি মেয়ে রে বাবা! কি চ্যাটাং চ্যাটাং বুলি!
- “জ্ঞান দিচ্ছি না, তোমার ভালো চাই, তাই বললাম।” নিজেকে গুড বয় প্রমাণ করার চেষ্টা করল।
- “তুমি আমাকে চেনো?” সরাসরি এই প্রশ্নে হোঁচট খেল ও।
- “না। তা চিনিনা।”
- “তাহলে আমার সম্পর্কে ভাবতে তোমাকে কে বলেছে? আমার সম্পর্কে কাউকে কিচ্ছু ভাবতে হবে না। I am strong enough to fight alone.” কথাতেই স্পষ্ট কিছু একটা হয়েছে।
- “তুমি কি কিছু বিষয়ে ডিস্টার্বড?” প্রশ্নটা না করে ও পারল না।
- “কেন বলোতো?” মেয়েটা উত্তর কিন্তু দিয়ে যাচ্ছে। ছাড়ছে না।
- “না। তোমার কথা থেকে এমনটাই মনে হচ্ছে।” কয়েক মূহুর্তের নীরবতা। তারপর জবাব এল,
- “হ্যাঁ। আমি একটু ডিস্টার্বড। But You don’t need to bother about this at all.”
মনে মনে একটু হলেও খুশীই হল ও। মেয়েটার কথা থেকেই পরিষ্কার কিছু একটা হয়েছে। এটাই সুযোগ। সিমপ্যাথি দেখিয়ে বন্ধুত্বটা পাতাতেই হবে। বাহ্যজ্ঞান ভুলে গিয়ে ফোনের স্ক্রিণের উপরে ঝুঁকে পড়ে টাইপ করতে লাগল সুনির্মল।
![[Image: 20240303-191414.png]](https://i.ibb.co/Tt1Q2yJ/20240303-191414.png)


![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)