07-04-2024, 02:43 AM
ঘরে আসতে আসতে বেশ রাত হলো আকর্ষের। ঘরে এসে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় গা টা এলিয়ে দিলো। সারাদিন কম খাটনি যায় না সারাদিন অফিস করে ডিনারে যাওয়া আবার তারপর ঘুরতে বের হওয়া অনেক কঠিন কাজ। আজকে বাইকটা ছিলো বলে। আকর্ষ দেখলো নায়নী কল করেছিল যখন ও বাথরুমে ছিলো। তাই সাথে সাথে কল করলো। নায়নীও ঘুমায়নি জেগেই ছিলো।
ফোন ধরলো নায়নী, নায়নী ফোন ধরার পর আকর্ষ বললো,
"সরি সরি আমি আসলে স্নান করছিলাম তাই আর ধরতে পারিনি ফোন, বলো কি করছিলে?"
নায়নী তখন বলে উঠলো,
"তাড়িয়ে দিয়ো আমায়, নিশুতিরাতের তারা, তাড়িয়ে দিও আকাশ, তাড়িয়ে দিও মেঘ,
আমারও খুব পা বাড়িয়ে, হারিয়ে যাবার তাড়া। রাত্রি বলেই অন্ধকারে, আমার ভীষণ ভয়,
যদি ভুলে যাওয়া স্মৃতির সাথে হঠাৎ দেখা হয়,
মানুষ জানে, বাড়লে রাত্রি, মানুষ একা হয়!"
আকর্ষকে এই ছোট ৪ লাইনের কবিতা বলে শোনালো নায়নী। আকর্ষ বুঝলো নায়নীর একা লাগছিলো। তাই আকর্ষ বললো,
"তুমি তো একা নও। আমি আছি তোমার পাশে আর এখন যে রকম আছি আমি সব সময় তোমার পাশে সেভাবে থাকবো সেটা অন্ধকারে হোক কিংবা আলোয় আমি তোমাকে একা হতে দিবো না।"
"তাই কি হয় সব থাকার পরেও মানুষ মাঝে মাঝে নিজেকে একা অনুভব করে। তখন মনে হয় আমার বুঝি কেও নেই।"
"কে বলেছে তোমার কেও নেই। আমি আছি তো তোমার পাশে আর সব সময় থাকবো। "
"তাই কি থাকা যায় আমরা কেও সারাজীবন থাকতে পারি না।"
"থাক সময় হলে দেখা যাবে কে থাকে না থাকে। এখন বলো খেয়েছো?"
"হুম তুমি?"
"আমিও।"
"কোথায় গিয়েছিলে অফিস শেষে?"
"সত্যি শুনতে চাও না মিথ্যে?"
"সত্যিটা নাহয় বলো। "
"রাগ করবে না তুমি আবার শুনলে?"
"রাগ করবো কিনা জানি না কিন্তু আগে শুনি তারপর দেখি?"
"সবিতা ম্যামের সাথে ডিনারে গিয়েছিলাম উনি ইনভাইট করেছিল।"
"বাহ্ এতো ভালো কথা।"
আকর্ষ এই কথা শুনে আকাশ থেকে পড়লো,
আকর্ষ মনে করেছিল নায়নী রাগের ফেটে পড়বে ওকে অনেক কথা শুনাবে, কিন্তু এতো দেখি উল্টো হয়ে গেলো। তাই আকর্ষ বললো,
"তুমি রাগ করোনি?"
"নাহ রাগ করার কি আছে?"
"কেন এই যে আমি সবিতা ম্যামের সাথে খেতে গিয়েছিলাম?"
"শোনো আমি মনে করি তুমি যা করবে ভেবে চিন্তে করবে আর আশা করি তুমি খারাপ কিছু করবে না।"
"ধণ্যবাদ আমাকে এতো বিশ্বাস করার জন্য।"
"আচ্ছা শোনো কালকে কি তোমার কি কোনো কাজ আছে ?"
" নাহ কেন? "
"কালকে আমার সাথে একটু মলে যেতে পারবে?"
আকর্ষ ভাবলো এতো মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি। তাই সাথে সাথে বলে ফেললো,
"কখন যাবে?"
"কালকে বিকেলে।"
"ঠিক আছে আমি কালকে তোমার ঘরের সামনে গিয়ে তোমাকে ফোন করবো তুমি রেডি থেকো।"
"হ্যা তুমি ঠিক মতো এসো।"
"কালকে হটাৎ মলে কেন যাবে?"
"আর কেন সবিতা ম্যাম যে সবাইকে ওয়েস্টার্ন ড্রেস পড়ে যেতে বলেছে সেটাই কিনতে যাবো আমার তো কোনো ওয়েস্টার্ন ড্রেস নেই যা আছে সেগুলো অফিসে ড্রেস আর কিছু শাড়ি আর কিছু ৩ পিস আর কিছু নেই।"
"আচ্ছা ঠিক আছে কালকে আমি তোমার সাথে যাবো রেডি থেকো। "
তারপর আর কিছু কথা বলে ফোন রেখে দিলো ওরা।
আকর্ষ দুপুরের খাবার খেয়ে একটু রেস্ট নিয়ে বেরিয়ে পড়লো নায়নীর ঘরের জন্য। বের হওয়ার আগে একবার নায়নীকে এসএমএস করলো,
"আমি আসছি তুমি রেডি হও।"
বাইক নিয়ে আকর্ষ নায়নীর ঘরের সামনে আসলো। ঘরের সামনে এসেছে নায়নীকে ফোন দিলো আকর্ষ। নায়নী ফোন ধরে বললো,
"এইতো আসছি পাঁচ মিনিট তুমি দাড়াও।"
আকর্ষ কিছু বললো না, কারণ কি বলবে মেয়েদের কোথাও বের হতে গেলে যে একটু সময় লাগবেই সেটা আকর্ষ জানে তাই আর কিছু বললো না। আকর্ষ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ফোন ঘাটছিলো এর কিছুক্ষন পরেই নায়নী ওর সামনে আসলো। আজকে প্রথম নায়নীকে শাড়ি আর অফিস ড্রেস ছাড়া দেখছে আজকে নায়নী একটা সালোয়ার কামিজ পড়েছে। মুখে হালকা লিপস্টিক আর চোখে হালকা লিপস্টিক এতেই নায়নী হাজির। এই রূপে নায়নীকে দেখে আকর্ষ এর মুখে বন্ধ হয়ে গেছে। নায়নী দেখলো আকর্ষ হা করে ওর দিকে তাকিয়ে আছে, তাই ও জিজ্ঞেস করলো,
"এই এভাবে কি দেখছো শুনি?"
আকর্ষ তখন বললো,
"প্রহর শেষে আলোয় রাঙা সেদিন
চৈত্র মাস
তোমার চোখে দেখেছিলাম
আমার সর্বনাশ।"
এটা শুনে সাথে সাথে নায়নী হেসে দিলো আর বললো,
"হয়েছে আর কবি হতে হবে না এখন চলো সন্ধে হয়ে যাচ্ছে।"
"মহারানীর আদেশ শিরোধার্য।"
এই কথা শুনে নায়নী আবার হেসে দিলো আর আকর্ষের পেছনে বসলো। আকর্ষ বাইক স্টার্ট করে চলতে লাগলো। আকর্ষ আর নায়নীকে নিয়ে কলকাতার সাউথ সিটি মলে যাবে। যেভাবা সেই কাজ ওরা আসলো সাউথ সিটি মল। আকর্ষ বাইকটা পার্কিং করে নায়নীকে নিয়ে মলে ঢুকলো।
আর মেয়েদের ড্রেস আছে এই রকম একটা শোরুমে ঢুকলো। শোরুমে যাওয়ার সাথে সাথে একটা সেলস গার্ল আসলো,
"ওয়েলকাম ম্যাম ওয়েলকাম স্যার। কি দেখাবো আপনাদের?"
আকর্ষ তখন বললো,
"আমাদের কিছু ওয়েস্টার্ন ড্রেস দরকার ছিলো।"
মেয়েটি বললো,
"অবশ্যই স্যার। আপানরা আমার সাথে আসুন।"
আকর্ষ নায়নী পেছনে গেলো। মেয়েটি আকর্ষ আর নায়নীকে প্রথমে কয়েকটা মিনি বডিকন ড্রেস দেখালো। আকর্ষ বললো,
"দেখো এই গুলো নিবে?"
নায়নী আকর্ষের দিকে তাকিয়ে বললো,
"এগুলো একটু বেশি ছোট হয়ে যায় আর আমার এইগুলো পড়ার অভ্যাস নেই।"
আকর্ষ বললো,
"আচ্ছা বুঝেছি তুমি ট্রাই করে আসো দেখি। "
"ট্রাই না করলে হয় না। "
"আরে বাবা ট্রাই না করলে কি করে বুঝবো। তুমি ট্রাই করো। "
নায়নী আকর্ষের কথায় রাজি হলো আর ট্রায়াল রুমে গেলো চেঞ্জ করতে। আর সেখানে রাখা সোফায় বসে ম্যাগাজিন পড়তে লাগলো। নায়নী কিছুক্ষন পরেই ট্রায়াল রুম থেকে বের হলো। আকর্ষ দেখলো নায়নীকে। এইটা কোন নায়নীকে দেখছে এই নারীর বয়স নাকি ৩৫ এই ড্রেস পড়ে যদি নায়নী কোথাও যায় আর তার পাশে যদি আকর্ষ থাকে তাহলে নায়নীকে দিদি আর আকর্ষকে আঙ্কেল বলে ডাকবে সবাই। নায়নীর শরীরে ড্রেসটা একেবারে পারফেক্ট ম্যাচ হয়েছে কিন্তু ওর শরীরের বেশির ভাগ অঙ্গই দেখার যাচ্ছে। নায়নীর স্তনযুগল গুলো অনেক বেশি বুঝা যাচ্ছে এই ড্রেসে আর ড্রেসটা অনেক শর্ট এতো শর্ট যে একেবারে নিতম্ব যেখানে শেষ হয়েছে ড্রেসটাও সেখানে শেষ হয়েছে মানে ড্রেসটা আসলেই অনেক শর্ট। নায়নী বললো,
"আমরা অন্য কোনো একটা ড্রেস নেই এইটা আমার অনেক অসস্তি হচ্ছে।"
আকর্ষ বুঝলো নায়নী এই ড্রেসে আনকমফোর্টেবল ফীল করছে তাই বললো,
" ঠিক আছে আমরা অন্য একটা দেখি। "
এই বলে আকর্ষ নায়নীর জন্য কয়েকটা ড্রেস দেখলো এর মধ্যে একটা ড্রেস আকর্ষের খুব মনে ধরে। আকর্ষ বললো,
"নায়নী তুমি এইটা ট্রাই করো।"
এই বলে নায়নীর হাতে একটা ড্রেস ধরিয়ে দিলো।
আকর্ষ নায়নীকে একটা ব্ল্যাক শিথ মিডি ড্রেস পছন্দ করে দিলো। আকর্ষ নায়নীকে বললো ট্রায়াল দিতে নায়নী ট্রায়াল রুমে গিয়ে ড্রেসটা পড়ে আসলো,
ড্রেসটার ওপরের কিছু নেই নায়নী কাঁধ পুরো দেখা যায় আর বাম পায়ের পাশে হাঁটুর ওপর পর্যন্ত কাঁটা। নায়নী ড্রেস পড়ে আকর্ষের সামনে আসলো। আকর্ষ আবার একবার নিজেকে হারিয়ে ফেললো নায়নীর সৌন্দর্যএর মাঝে কি বলবে ও। নায়নীকে নিয়ে যা বলবে তাই যে কম। নায়নী জিজ্ঞেস করলো,
"কেমন লাগছে?"
"কি বললে তুমি খুশি হবে?"
"সত্যি।"
"তাহলে বলতে হয় আমি আগে এই নায়নীকে দেখিনি আমি দেখিছি নায়নীকে শাড়িতে যেখানে ও একরকম সুন্দরী ছিলো এখন পুরো অন্য নায়নীকে দেখছি। এখন শুধু তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করছে আর মনে হচ্ছে?"
এই বলে থেমে গেলো আকর্ষ, নায়নী জিজ্ঞেস করলো, "কি?"
আকর্ষ কিছু না বলে নায়নীর একে বারে কাছে গিয়ে কানের পাশে চুল গুঁজে দিয়ে বললো
"এখন ঠিক আছে। "
আকর্ষের এইটুকু কাজেই নায়নী লজ্জায় লাল হয়ে গেছে। তাই তাড়াতাড়ি আকর্ষের কাছে থেকে সরে গিয়ে বললো,
"হয়েছে এইটাই প্যাক করতে বলি।"
আকর্ষ সম্মতি দিলো আর নায়নী সেটা প্যাক করতে দিলো এমন সময় ড্রেসের বিল আকর্ষ পে করে দিলো। তখন নায়নী বললো,
"তুমি কেন পে করলে ড্রেসটাতো আমার? "
"কেন পে করতে পারি না। "
"নাহ আমি দিতাম।"
"হয়েছে এইবার থেকে আমি দিবো কোনো সমস্যা?"
"বাহ্ বাহ্ পিচ্চি ছেলে কি আমার ভরণ পোষনের দায়িত্ব নিলো নাকি।"
"খালি ভরণ পোষণ না সব কিছুর দায়িত্ব আমি নিবো।"
আর নায়নীর কানের কাছে মুখে নিয়ে আস্তে আস্তে বললো,
"আর হ্যা তোমার স্তন দুটোর দায়িত্ব আমি নিবো।"
এটা শুনে নায়নীর কান গরম হয়ে গেলো কান দুটো লাল হয়ে গেলো। এই কথা শোনার সাথে সাথে নায়নী আকর্ষকে এলোপাতাড়ি মারতে লাগলো।
আকর্ষ মার খেয়ে বললো,
"আহঃ নায়নী ব্যথা পাচ্ছি তো মেরো না প্লিজ। আচ্ছা আর বলবো না। এখন চলো।"
আর এই কথা শুনে নায়নী শান্ত হলো। আর আকর্ষের সাথে শপিং মল থেকে বের হলো।
আকর্ষ আর নায়নী ড্রেস কিনে বের হয়ে গেলো। আকর্ষ নায়নীকে বললো
" তুমি পার্কিংলটের সামনে গিয়ে দাড়াও আমি বাইক নিয়ে আসছি।"
নায়নী আর কিছু না ভেবে সেখানে চলে গেলো। এমন সময় কিছু বখাটে ছেলে পার্কিং এর সামনে দিয়ে যাচ্ছিলো নায়নীকে দেখে ওরা বলে উঠে,
"ইসসস কি মাল মাইরি এতো দেখছি মধুর ভান্ডার চল না দেখি মধুর ভাণ্ডারে মুখটা দেওয়া যায় কিনা।"
এই বলে ৩ জন ছেলে নায়নীর সামনে আস্তে লাগলো। ছেলেগুলো আস্তে আস্তে একেবারে নায়নীর সামনে এসে পড়লো। ঐ ৩ জন ছেলের মাঝে একজন বলে উঠলো,
"কিগো সুন্দরী এতো রাত এ কি তুমি একা নাকি তা চলো না আমরা তোমাকে সঙ্গ দিবো তোমার রাতটা রঙিন করে দিবো।"
এই কথা শুনে নায়নী ভয়ে সিটিয়ে গিয়েছে অন্য সময় খুব নিজেকে সাহসী দেখালেও এখন যেন কি হয়েছে। ও ভয়ে সিটিয়ে গিয়েছে। নায়নী কি করবে বুঝতে পারছে না। নায়নীর মাথায় অনেক আবোল তাবোল সব কথা ঘুরছে। নায়নী মনে মনে ওপরওয়ালাকে ডাকতে শুরু করলো। এমন সময় ঐ ৩ জনের মাঝে একটা ছেলে বলে উঠলো,
"এই মালের মনে হয় কেও নেই চল আমরা একে নিয়ে যাই।"
এই বলে নায়নীর দিকে হাত বাড়াতে লাগলো। নায়নী এই দেখে চোখ বন্ধ করে ফেললো। এমন সময় শুনতে পেলো একটা চিৎকার নায়নী চোখ খুলে দেখলো ছেলেটি সামনে পড়ে আছে। আর আকর্ষ সেখানে বাইক নিয়ে দাঁড়ানো,
ঐ ৩ জনের মাঝে থাকা একজন বলে উঠলো,
"কি ভাই আপনি কি চোখে দেখেন না এমন করে কেও বাইক চালায় এখন যদি কিছু একটা হয়ে যেত। "
এই বলে নিচে পড়ে থাকা ছেলেটিকে তুললো,
আকর্ষ হেসে দিয়ে বললো,
"সত্যি বলতে আমি চোখে ঠিকই দেখি কিন্তু কেও যদি নিজের বউয়ের দিকে খারাপ হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে কি আমি ঠিক থাকতে পারি। এখন তো শুধু বাইকটাই লেগেছে, কিছু হয়নি। কিন্তু পরেরবার যদি এমন কিছু হয় তাহলে এমন অবস্থা করবো নিজের লাশটাও পরিবার চিন্তা পারবে না। ঠিক আছে আজকে তাহলে যাই আমরা রাস্তা দিন।"
তখন ছেলে গুলো নিচে পড়ে থাকা ছেলেটিকে নিয়ে চলে গেলো। আকর্ষ আসার পর পর নায়নী আকর্ষের বাইকে বসে পড়লো। নায়নী আকর্ষকে এমন ভাবে ধরে বসলো যেনো হাত ছাড়লেই আকর্ষ পালাবে, আকর্ষ বুঝতে পারলো নায়নী অনেক ভয় পেয়েছে। ভয়ে সিটিয়ে গেছে নায়নী।
আকর্ষ বুঝলো নায়নীর ভয়টা দূর করা দরকার টাই নায়নীকে নিয়ে সাউথ সিটি মল থেকে একটু দূরে যোধপুর পার্কে এসে বসলো। পার্কের ব্রেঞ্চে বসার সাথে সাথে নায়নী আকর্ষকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো ভয়ে কাঁপছে নায়নী।
আকর্ষ তাই বললো,
"ভয় নেই বাবা আমি আছি তো কিচ্ছু হবে না।"
নায়নী তখন কাঁদতে কাঁদতে বলতে শুরু করলো,
"আমি বড্ডো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আমি ভেবেছিলাম আবার মনে হয় আমাকে কিছু মানুষরূপী জানোয়াররা আমার সব শেষ করে দিবে আমি কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। নিজেকে সব সময় এই পুরুষদের কাছে থেকে দূরে রেখেছি এই ভয়ে যে আবার কি হয়। আমি নিজেকে কখনো পুরুষ সঙ্গ দেইনি সেই দিনের ঘটনার পর। আমি তোমার সাথেও কোথাও যেতে ভয় পেতাম যদি তুমি কোনো ক্ষতি করো কিন্তু তুমি হলে অন্যরকম আমাকে সম্মান দিয়েছো আমাকে আগলে রেখেছো কিন্তু এইভাবে কতদিন আজ বাদে কাল এই সব শেষ হয়ে যাবে।"
এইটা শুনে আকর্ষ বললো,
"নাহ কিচ্ছু শেষ হবে না।"
তাও নায়নী কেঁদেই চললো আকর্ষের শার্ট পুরো ভিজিয়ে ফেলেছে চোখের জলে। আকর্ষ তখন নায়নী মাথা উঁচু করে ধরলো দেখলো,
নায়নীর চোখের কাজল থেবড়ে গেছে চোখ লাল হয়েছে আর হবেই বা না কেন কাঁন্না তো কম করেনি। আকর্ষ বললো,
"শোনো নায়নী আমি থাকবো তোমার পাশে সব সময় ভালো খারাপ সব সময় তোমার পাশে থাকবো তোমাকে আগলে রাখবো তোমাকে কষ্ট দেওয়া তো দুর তোমাকে একটা ফুলের টোকাও লাগতে দেবো না। তুমি আর কষ্ট পাবে না বুঝেছো।"
"কোন অধিকারে?"
আকর্ষ মনে করেছিল বলবে না এতো তাড়াতাড়ি মনের কথা কিন্তু আজকে ওকে বলতেই হবে, তাই বললো
"আমি তোমাকে ভালোবাসি নায়নী আমি তোমাকে প্রথম দিন দেখার পর থেকেই ভালোবাসি। তোমাকে আমি আমার নিজের চেয়েও বেশি ভালোবাসি। তোমাকে আমি বিয়ে করবো।"
এই কথা শুনে নায়নী আকাশ থেকে পড়লো, কি বললো আকর্ষ, আকর্ষ ওকে ভালোবাসে সত্যি কি আকর্ষ ওকে ভালোবাসে নাকি শুধু এইটা একটা কল্পনা?
আকর্ষ বললো,
"আমি এই কথাটা অনেক পড়ে বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু আজকে বলা ছাড়া কোনো উপায় ছিলো না। তোমাকে আমি আগলে রাখবো তোমাকে ভালো রাখবো তোমাকে সুখে রাখবো তোমাকে সকল সুখ দেবো যা তুমি চাও যা তোমার প্রাপ্য তোমাকে আমি আমার স্ত্রীর মর্যাদা দিবো নায়নী।"
নায়নী আর কিছু বলতে পারলো না। খুশির কারণে আকর্ষকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো আর কেঁদে দিলো, এই কান্না কষ্টের কান্না না এইটা সুখের কাঁন্না।
আকর্ষ জিজ্ঞেস করলো,
"আমি তোমাকে ভালোবাসি? তুমি আমাকে ভালোবাসো তো?"
আকর্ষ নায়নীকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে শুধু বললো,
"হুমম। বাসি।"
আকর্ষ এই কথা শুনে নিজেও বিশ্বাস করতে পারছিলো না যে নায়নীও ওকে ভালোবাসে।
আকর্ষ নায়নীর মাথায় একটা চুমু খেলো। আর নায়নীকে নিজের বুকে থেকে উঠিয়ে, চোখ মুছিয়ে দিয়ে বললো,
"হয়েছে আর কাঁদতে হবে না অনেক হয়েছে।"
মুছিয়ে দেওয়ার পর একটা অদ্ভুত নীরবতা ওদের মাঝে এসে ভর করলো। আকর্ষ কোনো এক আকর্ষণে নায়নীর ঠোঁটের সাথে নায়নীর ঠোঁট বসিয়ে দেয়। নায়নী ও আকর্ষের এই কাণ্ডে অবাক নায়নী প্রথমে কি করবে বুঝতে না পারলেও আস্তে আস্তে ও নিজেও পড়ে আকর্ষের চুম্বনে সারা দিতে লাগলো। ২ জন অনেক দিনের অভুক্ত ভালোবাসার জন্য ২ জন ২ জনের ঠোঁটে পাগলের মতো কামড়াতে লাগলো শুষে নিতে লাগলো ঠোঁটের সব রস। আকর্ষকে নায়নী কামড়াচ্ছে আবার শুষে নিচ্ছে। আকর্ষও কম যায় না ও নায়নীর ঠোঁটের সাথে আকর্ষের ঠোঁটের সাথে তীব্র যুদ্ধ যেখানে কোনো হাড় জিত নেই আছে শুধু ভালোবাসা। এইভাবে কতক্ষন ছিলো নায়নী আর আকর্ষের খেয়াল নেই ২ জন নিজেদের ঠোঁটের চুম্বন থেকে আলাদা হলো তখন ২ জনেই হাপাচ্ছে।নিশ্বাস নিচ্ছে জোরে আকর্ষ নায়নী ২ জনে এইটা দেখে হেসে দিলো। আকর্ষ নায়নীকে আবার জড়িয়ে ধরে বললো,
"ভালোবাসি।"
"আমিও।"
আজকে নায়নীর মনে বয়ে চলছে এক শান্তির হওয়া আজকে থেকে আসলেই একা না তার ভালোবাসার মানুষ আছে। তাকে কেও ভালোবাসে সব দিয়ে। আকর্ষের বুকে মাথা রাখা অবস্থায় জিজ্ঞেস করলো,
"ছেড়ে যাবে না তো?"
"না।"
"সারাজীবন আগলে রাখবে তো?"
"হ্যা।"
"আমি অনেক রাগী কিন্তু?"
"সমস্যা নেই ভালোবাসা দিয়ে ঠান্ডা করে দিবো।"
"আমি তোমার চেয়ে বয়সে ৮ বছরের বড় জানো"
"জানি।"
"তাও কি তুমি এই বুড়িকে ভালোবাসবে?"
"হ্যা সারাজীবন বাসবো। মৃত্যু এর সময়ও বলবো নায়নী তোমায় আমি ভালবাসি।"
"আমিও ভালোবাসি।"
কতক্ষন যে দুইজন দুইজনকে জরিয়ে ধরে রেখে ছিল এর হিসেব নেই। নায়নী আর আকর্ষ এখন নতুন প্রেমে মজেছে সময়ের হিসেব না থাকাটা স্বাভাবিক। দুইজনের হুশ ফিরল দারোয়ানের বাশিতে দারোয়ান সবাইকে পার্ক থেকে বেরতে বলছে পার্ক বন্ধ করে দেওয়া হবে। আকর্ষ আর নায়নী ছেড়ে দিল নিজেদেরকে। নায়নী যে অনেক লজ্জা পেয়েছে বলার কোনো অপেক্ষা রাখে না। আকর্ষ সেটা দেখে হেসে দিল, আজকে নায়নীকে দেখে মনে হচ্ছে কোনো ১৮ বয়সের তরুনী যে সবে মাত্র প্রেমে পরেছে। আকর্ষ বলল ,
“চলো তাহলে তোমাকে ঘরে পৌছিয়ে দিয়ে আসি।”
এই বলে আকর্ষ নিজের হাত বাড়িয়ে দিল, আকর্ষ এর হাত ধরে নায়নী ব্রেঞ্ছ থেকে উঠলো। নায়নী ব্রেঞ্ছ থেকে উঠর পর নায়নীর হাত ধরেই চলতে লাগল আকর্ষ। নায়নীর আজকে বড্ড লজ্জা করছে এত লজ্জা নায়নীর কখনই ছিল না কিন্তু আজকে যেন কোথায় থেকে ওর ওপর লজ্জা এসে ভর করেছে, আর কিভাবে ওর হাত ধরে নিয়ে যাচ্ছে দেখ মনে হচ্ছে ও রাস্তা চিনে না। নায়নি কিছু বলল না, আকর্ষকে কি বলবে ওকে বললে কি ও শুনবে ? কখনই না তাই আর কিছু বলল না। আকর্ষ নায়ণীকে নিয়ে পার্ক থেকে বের হল, আর বাইক যেখানে পার্ক করা সেখানে গিয়ে আগে আকর্ষ বাইকে উঠলো আর তারপর নায়নীকে উঠতে বলল নায়নীও একেবারে ভাল মেয়ের মত আকর্ষের বাইকের পেছনে উঠে পরল। নায়নী বাইকে উঠার পর আকর্ষ চলতে শুরু করল। আজকে নায়নীর মাঝে আর কন জরতা নেই। আজকে একেবারে সবাইকে বলতে পারবে যে
“দেখ এই সুদর্শন দেখতে ছেলেটি আমার প্রেমিক এই ছেলেটি আমাকে ভালবাসে শুধু আমাকেই ভালবাসে।”
নায়নী আজকে আকর্ষকে খুব শক্ত করে জরিয়ে ধরে রেখেছে, হ্যা এক্তু আগেও জরিয়ে ধরে রেখেছিল সেটা ছিল ভয়ে কিন্তু এখন সেটা ভয়ে না এখন জরিয়ে ধরে রেখেছে ভালবেসে। নায়নী চাইছে এইভাবেই সময়টা থেমে যাক আর না চলুক সময়। আকর্ষের ও আজকে বড্ড ভাল লাগছে এত দিন পর নিজের ভালবাসার কথা নিজের প্রেয়সির কাছে বলতে পেরেছে। দেখতে দেখতে নায়নীর ঘরের সামনে এসে পরল আকর্ষ। আকর্ষ বাইক থামাল নায়নীর ঘরের সামনে, কিন্তু একি আকর্ষকে ছাড়ার নাম নিচ্ছে না দেখি মহারানি।আকর্ষ তাই বলল,
“কি হল মহারানী এসে পরেছি তো নামতে হবে।”
নায়নী বাইক থেকেই বলল,
“উহু নামবো না। আমি যাবো না আমি এইভাবেই থাকব।”
“এটা বললে কি হবে যেতে ত হবেই। ”
“আরেকটু থাকি না।”
“পাগলি আমি তো পালিয়ে যাচ্ছি না আমি তো তোমারই আর আমি আবার তোমাকে নিয়ে যাবো আবার ঠিক আছে।”
“সত্যি তো ?”
“হ্যা বাবা ৩ সত্যি।”
এই কথা শোনার পর নায়নী একটু আশ্বস্ত হল, আর নায়নী বাইক থেকে নেমে গেল। নায়নী বাইক থেকে নামলো, আর বলল,
“ঘরে গিয়ে সাথে সাথে আমাকে জানাবে। আর ঠিক মত খাবে ওকে”
“এই রে মেরেছে !”
“কি হল ?”
“একদিনেই এত আদেশ ।“
“কেন মানতে কোন সমস্যা আছে নাকি ?”
"নাহ তা নেই কিন্তু যদি না মানি?"
"না মানলে মেরে হাত ভেঙ্গে হাতে ধরিয়ে দিবো। "
এটা শুনে আকর্ষ হেসে হেস এই রূপটা আকর্ষ কখনো দেখেনি নায়নীর। আকর্ষ বললো,
"ঠিক আছে। আজকে তাহলে যাই।"
"হুমম।"
এই বলে নায়নী চলে যাওয়ার জন্য রওনা হলো,
আকর্ষ তখন নায়নীকে পিছন থেকে ডাক দিলো,
"নায়নী।"
নায়নী পিছনে তাকিয়ে বললো,
"কি হয়েছে?"
আকর্ষ তখন নায়নীকে কাছে আসতে বলে,
নায়নী কাছে আসার পর কিছু না বলেই নায়নীকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ফেলে। আকর্ষের এই কাণ্ডে নায়নী পুরো অবাক হয়ে যায়, তাই নায়নীকে জিজ্ঞেস করে,
"কি হলো?"
আকর্ষ কোনো উত্তর না দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেই নায়নীর গালে কপালে এলোপাথারি চুমু দেয়। নায়নী এই রকম কাণ্ডে একেবারে অবাক আর সাথে লজ্জায় লাল হয়ে যায়। চুমু দেওয়া শেষ হলে আকর্ষ বললো,
"এখন যাও।"
আকর্ষের এই কান্ড দেখে নায়নী হাসলো আর বললো,
"বাচ্চা একটা এখন যাও অনেক রাত হলো।"
"হুমম।"
নায়নী জানে যতই বলুক নায়নী ঘরে যাওয়ার আগে আকর্ষ যাবে না। তাই নায়নী আগে নিজের ঘরে আসলো। ঘরে এসেছে যখন বেলকনিতে আসলো তখন আকর্ষ ঘরের জন্য রওনা হলো।
ঘরে এসে
ফ্রেশ হয়ে নেয়। আজকে নিজেকে বড্ডো অচেনা লাগছে। এইটা কি নায়নী যে হাসতো না সারাদিন চুপ করে থাকতো কাজ আর ঘর ছাড়া কিছুই বুঝতো না সারাদিন কাজ করে ঘরে এসে শুধু ঘুমিয়ে আবার কাজে চলে যেত, কিন্তু এখন সত্যি বলতে নায়নীর জীবন অনেকটা বদলে গেছে হয়তো সামনে আরো যাবে। আজকে যা হলো তা যদি রাখিকে না বলে তাহলে নায়নীর পেটের ভাত হজম হবে না। তাই ফোন দিলো রাখিকে,
কয়েকবার ফোন দেওয়ার পর রাখি ফোন ধরলো,
"হ্যালো।"
"হ্যালো। হ্যা বল।"
"কেমন আছিস?"
"আমি ভালো আছি আজকে বড্ডো বেশি ভালো আছি।"
"১ মিনিট।"
এই বলে রাখি ফোনটা চেক করলো, দেখে নিলো নায়নী তো নাকি অন্য কেও ওর হোয়াটস্যাপ থেকে কল করেছে। তা দেখতে পেলে না নায়নী ফোন করেছে, ফোনটা আবার কানে দিয়ে আবার বললো,
"আচ্ছা তুই নায়নী তো?"
এই প্রশ্ন শুনে নায়নী খুব অবাক হলো আর জিজ্ঞেস করলো,
" এইটা কেমন প্রশ্ন আবার? "
"নাহ মানে এতো বছরের এই রকম উচ্ছোশিত তোকে তো কখনো দেখেনি তাই বলছি।"
"আচ্ছা।"
"এখন বল এই রকম খুশি হওয়ার কারণ কি?"
"কিছু না এমনি।"
"এমনি এমনি খুশি হওয়ার লোক তুই না। তোকে আমি হাড়ে হাড়ে চিনি।"
"নাহ কিছু হয়নি।"
"দেখ নায়নী তুই না বললে কিন্তু আমি ফোনটা রেখে দিবো।"
"আরে বাবা রোগে যাচ্ছিস কেন?"
"তাহলে বল।"
"কিভাবে বলি লজ্জা করছে তো?"
"তুই এতো ন্যাকামো কেন করছিস বল তো তুই তো আগে এই রকম ছিলি না?"
"আকর্ষ আমাকে ভালোবাসে।"
"মানে আকর্ষকে?"
"আরে আকর্ষ ঐ পিচ্ছি ছেলেটার কথা বলেছিলাম মনে নেই?"
"কি সেই ছেলে তোকে ভালোবাসে?"
"হুমম।"
"আর তুই কি বাসিস?"
"হুমম বাসি।"
এই কথা শুনে রাখি চুপ হয়ে যায়। কিছুক্ষন রাখি চুপ করে থাকে।
রাখি চুপ করে আছে বলে নায়নী জিজ্ঞেস করে,
"তুই চুপ করে আছিস কেন?"
"তুই তো আগে পুরুষ মানুষ সহ্য করতে পারতি না? তাহলে এইটা কিভাবে হলো?"
তখন নায়নী সব বললো রাখিকে। রাখি শুনে তো খুব খুশি। তখন রাখি বলে,
"বিয়ে করবি কবে?"
"মানে মাত্র আমরা নিজেদের মনের কথা বলেছি ২ জন ২ জনকে কয়েকটা দিন যাক।"
"সেটা ঠিক আছে কিন্তু তুই কি খেয়াল করেছিস তোর বয়স হয়ে যাচ্ছে।"
"হুমম তাই কি?"
"তুই বুঝতে পারছিস না কেন?"
"কি বুঝবো?"
"ও তোর থেকে ছোট ও যদি ওর বয়সের অন্যকারো প্রেমে পড়ে বা তোর বয়স বেশি হয়ে গেলে যদি ওর পরিবার না মানে?"
রাখির কথা শুনে নায়নীর কিছুটা টনক নড়ে।
রাখির কথা সত্য যদি আকর্ষের পরিবার না মানে যদি আকর্ষকে হারিয়ে ফেলতে হয় তখন কি হবে?
নায়নীর মাথায় হাজার হাজার চিন্তা এসে ভর করে। নায়নীর মনটা কিছুটা খারাপ হয়ে যায়। আর রাখিকে বলে,
"শোন রাখি জানি না কি হবে? কিন্তু আশা করি যা হবে ভালো হবে। আজকে রাখি তোর সাথে পরে কথা বলবো।"
এই বলে নায়নী ফোন রেখে দেয়।
রাখির সাথে কথা বলার কিচ্ছুক্ষন পরেই আকর্ষ কল করলো।
"হ্যালো। "
"হ্যালো হ্যা বলো।"
"কি করছো?"
"বসে আছি। আচ্ছা ঘরে পৌছিয়েছো কখন?"
"এই একটু আগে এসে ফ্রেশ হয়ে কিছু রাতের খাবার খেয়ে তোমাকে কল দিলাম। তুমি খেয়েছো তো?"
"হুমম।"
"কি হয়েছে? এতো চুপ চাপ কেন?"
"নাহ কিছু না।"
"বলো শুনি তোমার কথা শুনে বুঝতে পারছি তুমি কিছু নিয়ে চিন্তিত আমাকে বলো। "
"আচ্ছা আমাদের এই সম্পর্কের কি পরিণতি হবে আকর্ষ তোমার সাথে আমার বয়সের তফাৎ ৮ বছরের কোনো পরিবার চাইবে না তাঁদের একমাত্র ছেলে বয়সে বড়ো কোনো মেয়েকে বিয়ে করুক। আর তোমার মা যদি না মানে?"
এইটা শুনে আকর্ষ ও কিছুক্ষন ভাবলো তারপর নায়নীকে বললো,
"দেখো নায়নী আমি বর্তমানে বাঁচতেই বেশি পছন্দ করি ভবিষ্যত নিয়ে খুব বেশি একটা ভাবি না আর আমি তোমাকে ভালোবাসি আমার ভালোবাসার ওপর তোমার বিশ্বাস আছে তো?"
"হুমম আছে। "
"তাহলে আর চিন্তা করো না আমি তোমাকে আমার চেয়ে দূর হতে দিবো না। সূর্য যদি পশ্চিম দিক দিয়েও উঠে আমি তাও তোমাকে বিয়ে করবো তোমাকে কষ্ট পেতে দিবো না। তুমি এই নিয়ে চিন্তা করো না আমি আছি তো আমি তোমাকে আমার করেই ছাড়বো।"
আকর্ষের এই কথা শুনে, নায়নী কিছুটা স্বস্তি পেলো। নিজের মনের ভেতর যে ঝড় চলছিল সেটা অনেকটাই থেমে গিয়েছে।
নায়নী জিজ্ঞেস করলো,
"আচ্ছা তোমার আমাকে কি দেখে ভালোবাসলে তোমার চেয়ে ৮ বছরের বড়ো একজনকে। তুমি তো আর ইয়ং আর সুন্দরী মেয়ে পেতে আমাকে কেন ভালোবাসলে।"
আকর্ষ এটা শুনে হেসে দিয়ে বললো,
"সত্যি বলবো?"
"হ্যা অবশ্যই।"
"শোনো ভালোবাসা কি দেখে হয় আর কেন হয় সেটা বলা যাবে না। তুমি এমনটা মনে করতে পারো যে, তুমি একটা ঘুটঘুটে অন্ধকার ঘরে একটা কালো বিড়াল খুঁজছো কিন্তু আদতে সেই কালো বিড়ালটা সেখানে নেই এইটাই ভালোবাসা। ভালোবাসা শুধু হয়ে যায় কেন ভালোবাসলাম কি দেখে ভালোবাসলাম এটার উত্তর তুমি কখনোই দিতে পারবে না। আর যদি তুমি বলতে পারো কাউকে কি দেখে ভালোবাসো তাহলে সেটা ভালোবাসা নয় সেটা ভালোলাগা। তুমি কখনোই বলতে পারবে না তুমি তাকে কি দেখে ভালোবেসেছো।"
আকর্ষের কথা গুলো নায়নী মুগ্ধ হয়ে শুনছিলো।
কি বলবে এর উত্তরে সত্যি তো বলেছে আকর্ষকে কেন ভালোবাসলো এর উত্তর কি আছে নায়নীর কাছে। হয়তো আছে আবার হয়তো নেই। আকর্ষের কথা শুনে নায়নী কিছুটা ঘোরের মধ্যে চলে গিয়েছিলো।
এমন সময় আকর্ষ বললো,
"কি চুপ কেন?"
"নাহ কিছু না। শোনো কোনো কিছুই নিয়ে বেশি চিন্তা করবে না যা হবে ভালো হবে।"
"হুমম। "
এই বলে কথা বলতে বলতে কখন যে ওরা মধ্য রাতে এসে পড়েছে সেটার কোনো খেয়াল নেই। নায়নী কথা বলতে বলতেই খেয়াল করলো রাত ২:৩০ বাজে তাই আকর্ষকে বললো,
"এইযে মহাশয় আপনার কি সময়ের দিকে খেয়াল আছে?"
"কেন?"
"একটু তাকিয়ে দেখুন?"
আকর্ষ ঘড়ি দেখে দেখলো, রাত তখন ২:৩০ তাই আকর্ষ বললো,
"হুমম দেখলাম অনেক রাত হয়েছে।"
"এখন ঘুমাও কালকে আবার সকালে উঠতে হবে।"
"সকালে উঠে কি করবে?"
"সকালে উঠে আমি ব্যায়াম করি আমি খুবই টাইমটেবিল মেইনটেইন করি আশা করি তুমিও মানবে এখন বেশি কথা না বলে ঘুমাও।"
"আচ্ছা আর যদি না মানি?"
"না মানলে তোমার ওপর শনিদেবের প্রকোপ দেখার দিবে।"
"এইরে মেরেছে। আমি ভাই চাই না এই শনিদেবের প্রকোপ।"
"তাহলে এখন ঘুমাও।"
"আচ্ছা। একটা পাপ্পি দাও না।"
"পাপ্পি কি?"
"পাপ্পি বুঝো না?"
"না।"
"হায়রে পাপ্পি মানে হলো কিস।"
এই কথা শুনে নায়নী তো হেসেই খুন। আকর্ষ ওর হাসি শুনে বললো,
"হাসছো যে।"
"হাসবো না তো কি করবো বলো?"
"কেন?"
"শোনো আমি সময় হলে এমনি তোমার পাপি দিবো সেটা সামনাসামনি এই ফোন দেওয়ার দরকার হবে না।"
"সত্যি তো?"
"হ্যা বাবা সত্যি।"
"ঠিক আছে। "
"রাখছি তাহলে।"
এই বলে ফোন কাটতে যাবে এর মধ্যে আকর্ষ বললো,
"এই শোনো।"
"আবার কি হলো?"
"ভালোবাসি নায়নী।"
এই কথা শুনে লজ্জায় লাল হয়ে গেলো নায়নী। আর বললো,
"পাগল একটা ঘুমাও এখন।"
"আচ্ছা আমার উত্তর দিলে না?"
"কালকে দিবো।"
এই বলে নায়নী ফোন রেখে দেয়। আর দুইজন দুইজনের ভাবনায় পুরো মশগুল হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
দুই জন অসম বয়সের ব্যক্তির মাঝে বসন্তের আনাগোনা শুরু হয়েছে।
নায়নী প্রত্যেকদিনের মতোই সকালে ঘুম থেকে উঠলো। নায়নীর মন বড্ডো ফুরফুরে আজকে নিজের মাঝে কিছু একটা পরিবর্তন সে পেয়েছে কিন্তু কি সেই পরিবর্তন এখনও সেটা বুঝে উঠতে পারেনি। নায়নী আজকে ঘরের কিছু কাজ করবে সারা সপ্তাহ অফিস করে করে ঘরের দিকে খুব বেশি একটা লক্ষ্য করা হয় না। নায়নী আজকে সারা ঘর ঝাড়লো মুছলো নিজের বই গুলো গুছিয়ে রাখলো। বেলকনিতে ফুলের গাছ গুলোর একটু যত্ন নিলো। এর মাঝে আকর্ষ ফোন করেছিল একবার খুব বেশি একটা কথা হয়নি। ঘরের কাজ গুলো করার পর স্নান করে নিলো নায়নী। আজকে পার্টির ভেন্যু অনেক বড়ো একটা হোটেলে যা ওর বাসা থেকে একটু দূরে আর ও লেট্ করতে চায় না। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাতের কাজ গুলো করে নিলো। আকর্ষ আজকে ঘরের জন্য বাজার করলো এই শনিবার আর রবিবার ছাড়া বাজার করার খুব বেশি সময় পায় না। আর থাকে মাত্র ২ জন মানুষ কতই বা বাজার লাগবে, যা বাজার করে তা দুই মা ছেলের ভালোভাবে চলে যায়। আকর্ষের মায়ের যেনো খুব কাজ করতে না হয় সেটার জন্য একজন কাজের মাসি রেখেছে সে মোটামুটি বাড়ির ভারী কাজ গুলো করে, আর রান্নাবাঁনার কাজটা শারতী দেবী করে থাকেন। আকর্ষের মা শারতী দেবী আর যাই হোক রান্নাটা নিজের হাতেই করে থাকেন। আকর্ষ বাজার করে আনার পর শারতী দেবী নিজের হাতে সব রান্না করলেন কারণ ছেলে কাজের জন্য বেশির ভাগ সময় বাইরে খায় এতে যদি ছেলেটার শরীর খারাপ হয় সেই ভয়ে পাগল হয়ে যান শারতী দেবী। শারতী দেবী নিজের হাতে রান্না করে খাওয়ালেন আজকে ছেলেকে, আকর্ষও পেট ভরে খেলো। আকর্ষ দুপুরের খাবার পর একটু রেস্ট নিলো কারণ পার্টি শেষ না হওয়া পর্যন্ত হয়তো থাকতে হবে আর কতক্ষন পার্টি শেষ হয় তার কোনো খবর নেই। আকর্ষ বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে একবারের জন্য নায়নীকে ফোন দিলো। নায়নী ফোন দিলো, নায়নী পার্টির জন্য সব রেডি করছিলো।
নায়নী সব চেক করছিলো এমন সময় আকর্ষ ফোন দিলো, আকর্ষের ফোন দেখে নায়নীর মুখে হাসি ফুটে। নায়নী ফোন ধরে,
"হ্যালো।"
"হ্যালো হ্যা বলো।"
"কি করছো?"
"এই পার্টির জন্য সব চেক করছি সব ঠিক আছে কিনা দেখছি। তুমি কি করছো?"
"আমি আপনাকে ভালোবাসার অপরাধ করছি মহারানী।"
এই কথা শুনে হেসে দেয় নায়নী। আর বলে,
"আমি চাই এই অপরাধ তুমি বার বার করো।"
"অবশ্যই করবো মহারানীর আদেশ কি ফেলা যায়।"
"তুমি কি পড়বে পার্টির জন্য?"
"সেটা নাহয় পার্টিতে দেখতে পারবে। আমি কি তোমাকে নিতে আসবো?"
"নাহ একদম না কোনো দরকার নেই। আমি উবার দিয়ে চলে যাবো তুমিও সোজা পার্টিতে যাবে ওকে।"
"তোমার সমস্যা হবে না তো?"
"নাহ হবে না।"
"ঠিক আছে তাহলে দেখে এসো। রাখছি।"
"আচ্ছা।"
চলবে
এই গল্প যদি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। যদি কোনো মতামত থাকে জানাতে ভুলবেন না। টেলিগ্রাম এ এসএমএস দিতে পারেন @Paradox78789 এই নামে। আপনাদের এসএমএস এ আমি উৎসাহ পাই। তাই আমাকে বেশি বেশি করে উৎসাহ দিবেন এই আশা করি।
ফোন ধরলো নায়নী, নায়নী ফোন ধরার পর আকর্ষ বললো,
"সরি সরি আমি আসলে স্নান করছিলাম তাই আর ধরতে পারিনি ফোন, বলো কি করছিলে?"
নায়নী তখন বলে উঠলো,
"তাড়িয়ে দিয়ো আমায়, নিশুতিরাতের তারা, তাড়িয়ে দিও আকাশ, তাড়িয়ে দিও মেঘ,
আমারও খুব পা বাড়িয়ে, হারিয়ে যাবার তাড়া। রাত্রি বলেই অন্ধকারে, আমার ভীষণ ভয়,
যদি ভুলে যাওয়া স্মৃতির সাথে হঠাৎ দেখা হয়,
মানুষ জানে, বাড়লে রাত্রি, মানুষ একা হয়!"
আকর্ষকে এই ছোট ৪ লাইনের কবিতা বলে শোনালো নায়নী। আকর্ষ বুঝলো নায়নীর একা লাগছিলো। তাই আকর্ষ বললো,
"তুমি তো একা নও। আমি আছি তোমার পাশে আর এখন যে রকম আছি আমি সব সময় তোমার পাশে সেভাবে থাকবো সেটা অন্ধকারে হোক কিংবা আলোয় আমি তোমাকে একা হতে দিবো না।"
"তাই কি হয় সব থাকার পরেও মানুষ মাঝে মাঝে নিজেকে একা অনুভব করে। তখন মনে হয় আমার বুঝি কেও নেই।"
"কে বলেছে তোমার কেও নেই। আমি আছি তো তোমার পাশে আর সব সময় থাকবো। "
"তাই কি থাকা যায় আমরা কেও সারাজীবন থাকতে পারি না।"
"থাক সময় হলে দেখা যাবে কে থাকে না থাকে। এখন বলো খেয়েছো?"
"হুম তুমি?"
"আমিও।"
"কোথায় গিয়েছিলে অফিস শেষে?"
"সত্যি শুনতে চাও না মিথ্যে?"
"সত্যিটা নাহয় বলো। "
"রাগ করবে না তুমি আবার শুনলে?"
"রাগ করবো কিনা জানি না কিন্তু আগে শুনি তারপর দেখি?"
"সবিতা ম্যামের সাথে ডিনারে গিয়েছিলাম উনি ইনভাইট করেছিল।"
"বাহ্ এতো ভালো কথা।"
আকর্ষ এই কথা শুনে আকাশ থেকে পড়লো,
আকর্ষ মনে করেছিল নায়নী রাগের ফেটে পড়বে ওকে অনেক কথা শুনাবে, কিন্তু এতো দেখি উল্টো হয়ে গেলো। তাই আকর্ষ বললো,
"তুমি রাগ করোনি?"
"নাহ রাগ করার কি আছে?"
"কেন এই যে আমি সবিতা ম্যামের সাথে খেতে গিয়েছিলাম?"
"শোনো আমি মনে করি তুমি যা করবে ভেবে চিন্তে করবে আর আশা করি তুমি খারাপ কিছু করবে না।"
"ধণ্যবাদ আমাকে এতো বিশ্বাস করার জন্য।"
"আচ্ছা শোনো কালকে কি তোমার কি কোনো কাজ আছে ?"
" নাহ কেন? "
"কালকে আমার সাথে একটু মলে যেতে পারবে?"
আকর্ষ ভাবলো এতো মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি। তাই সাথে সাথে বলে ফেললো,
"কখন যাবে?"
"কালকে বিকেলে।"
"ঠিক আছে আমি কালকে তোমার ঘরের সামনে গিয়ে তোমাকে ফোন করবো তুমি রেডি থেকো।"
"হ্যা তুমি ঠিক মতো এসো।"
"কালকে হটাৎ মলে কেন যাবে?"
"আর কেন সবিতা ম্যাম যে সবাইকে ওয়েস্টার্ন ড্রেস পড়ে যেতে বলেছে সেটাই কিনতে যাবো আমার তো কোনো ওয়েস্টার্ন ড্রেস নেই যা আছে সেগুলো অফিসে ড্রেস আর কিছু শাড়ি আর কিছু ৩ পিস আর কিছু নেই।"
"আচ্ছা ঠিক আছে কালকে আমি তোমার সাথে যাবো রেডি থেকো। "
তারপর আর কিছু কথা বলে ফোন রেখে দিলো ওরা।
আকর্ষ দুপুরের খাবার খেয়ে একটু রেস্ট নিয়ে বেরিয়ে পড়লো নায়নীর ঘরের জন্য। বের হওয়ার আগে একবার নায়নীকে এসএমএস করলো,
"আমি আসছি তুমি রেডি হও।"
বাইক নিয়ে আকর্ষ নায়নীর ঘরের সামনে আসলো। ঘরের সামনে এসেছে নায়নীকে ফোন দিলো আকর্ষ। নায়নী ফোন ধরে বললো,
"এইতো আসছি পাঁচ মিনিট তুমি দাড়াও।"
আকর্ষ কিছু বললো না, কারণ কি বলবে মেয়েদের কোথাও বের হতে গেলে যে একটু সময় লাগবেই সেটা আকর্ষ জানে তাই আর কিছু বললো না। আকর্ষ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ফোন ঘাটছিলো এর কিছুক্ষন পরেই নায়নী ওর সামনে আসলো। আজকে প্রথম নায়নীকে শাড়ি আর অফিস ড্রেস ছাড়া দেখছে আজকে নায়নী একটা সালোয়ার কামিজ পড়েছে। মুখে হালকা লিপস্টিক আর চোখে হালকা লিপস্টিক এতেই নায়নী হাজির। এই রূপে নায়নীকে দেখে আকর্ষ এর মুখে বন্ধ হয়ে গেছে। নায়নী দেখলো আকর্ষ হা করে ওর দিকে তাকিয়ে আছে, তাই ও জিজ্ঞেস করলো,
"এই এভাবে কি দেখছো শুনি?"
আকর্ষ তখন বললো,
"প্রহর শেষে আলোয় রাঙা সেদিন
চৈত্র মাস
তোমার চোখে দেখেছিলাম
আমার সর্বনাশ।"
এটা শুনে সাথে সাথে নায়নী হেসে দিলো আর বললো,
"হয়েছে আর কবি হতে হবে না এখন চলো সন্ধে হয়ে যাচ্ছে।"
"মহারানীর আদেশ শিরোধার্য।"
এই কথা শুনে নায়নী আবার হেসে দিলো আর আকর্ষের পেছনে বসলো। আকর্ষ বাইক স্টার্ট করে চলতে লাগলো। আকর্ষ আর নায়নীকে নিয়ে কলকাতার সাউথ সিটি মলে যাবে। যেভাবা সেই কাজ ওরা আসলো সাউথ সিটি মল। আকর্ষ বাইকটা পার্কিং করে নায়নীকে নিয়ে মলে ঢুকলো।
আর মেয়েদের ড্রেস আছে এই রকম একটা শোরুমে ঢুকলো। শোরুমে যাওয়ার সাথে সাথে একটা সেলস গার্ল আসলো,
"ওয়েলকাম ম্যাম ওয়েলকাম স্যার। কি দেখাবো আপনাদের?"
আকর্ষ তখন বললো,
"আমাদের কিছু ওয়েস্টার্ন ড্রেস দরকার ছিলো।"
মেয়েটি বললো,
"অবশ্যই স্যার। আপানরা আমার সাথে আসুন।"
আকর্ষ নায়নী পেছনে গেলো। মেয়েটি আকর্ষ আর নায়নীকে প্রথমে কয়েকটা মিনি বডিকন ড্রেস দেখালো। আকর্ষ বললো,
"দেখো এই গুলো নিবে?"
নায়নী আকর্ষের দিকে তাকিয়ে বললো,
"এগুলো একটু বেশি ছোট হয়ে যায় আর আমার এইগুলো পড়ার অভ্যাস নেই।"
আকর্ষ বললো,
"আচ্ছা বুঝেছি তুমি ট্রাই করে আসো দেখি। "
"ট্রাই না করলে হয় না। "
"আরে বাবা ট্রাই না করলে কি করে বুঝবো। তুমি ট্রাই করো। "
নায়নী আকর্ষের কথায় রাজি হলো আর ট্রায়াল রুমে গেলো চেঞ্জ করতে। আর সেখানে রাখা সোফায় বসে ম্যাগাজিন পড়তে লাগলো। নায়নী কিছুক্ষন পরেই ট্রায়াল রুম থেকে বের হলো। আকর্ষ দেখলো নায়নীকে। এইটা কোন নায়নীকে দেখছে এই নারীর বয়স নাকি ৩৫ এই ড্রেস পড়ে যদি নায়নী কোথাও যায় আর তার পাশে যদি আকর্ষ থাকে তাহলে নায়নীকে দিদি আর আকর্ষকে আঙ্কেল বলে ডাকবে সবাই। নায়নীর শরীরে ড্রেসটা একেবারে পারফেক্ট ম্যাচ হয়েছে কিন্তু ওর শরীরের বেশির ভাগ অঙ্গই দেখার যাচ্ছে। নায়নীর স্তনযুগল গুলো অনেক বেশি বুঝা যাচ্ছে এই ড্রেসে আর ড্রেসটা অনেক শর্ট এতো শর্ট যে একেবারে নিতম্ব যেখানে শেষ হয়েছে ড্রেসটাও সেখানে শেষ হয়েছে মানে ড্রেসটা আসলেই অনেক শর্ট। নায়নী বললো,
"আমরা অন্য কোনো একটা ড্রেস নেই এইটা আমার অনেক অসস্তি হচ্ছে।"
আকর্ষ বুঝলো নায়নী এই ড্রেসে আনকমফোর্টেবল ফীল করছে তাই বললো,
" ঠিক আছে আমরা অন্য একটা দেখি। "
এই বলে আকর্ষ নায়নীর জন্য কয়েকটা ড্রেস দেখলো এর মধ্যে একটা ড্রেস আকর্ষের খুব মনে ধরে। আকর্ষ বললো,
"নায়নী তুমি এইটা ট্রাই করো।"
এই বলে নায়নীর হাতে একটা ড্রেস ধরিয়ে দিলো।
আকর্ষ নায়নীকে একটা ব্ল্যাক শিথ মিডি ড্রেস পছন্দ করে দিলো। আকর্ষ নায়নীকে বললো ট্রায়াল দিতে নায়নী ট্রায়াল রুমে গিয়ে ড্রেসটা পড়ে আসলো,
ড্রেসটার ওপরের কিছু নেই নায়নী কাঁধ পুরো দেখা যায় আর বাম পায়ের পাশে হাঁটুর ওপর পর্যন্ত কাঁটা। নায়নী ড্রেস পড়ে আকর্ষের সামনে আসলো। আকর্ষ আবার একবার নিজেকে হারিয়ে ফেললো নায়নীর সৌন্দর্যএর মাঝে কি বলবে ও। নায়নীকে নিয়ে যা বলবে তাই যে কম। নায়নী জিজ্ঞেস করলো,
"কেমন লাগছে?"
"কি বললে তুমি খুশি হবে?"
"সত্যি।"
"তাহলে বলতে হয় আমি আগে এই নায়নীকে দেখিনি আমি দেখিছি নায়নীকে শাড়িতে যেখানে ও একরকম সুন্দরী ছিলো এখন পুরো অন্য নায়নীকে দেখছি। এখন শুধু তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করছে আর মনে হচ্ছে?"
এই বলে থেমে গেলো আকর্ষ, নায়নী জিজ্ঞেস করলো, "কি?"
আকর্ষ কিছু না বলে নায়নীর একে বারে কাছে গিয়ে কানের পাশে চুল গুঁজে দিয়ে বললো
"এখন ঠিক আছে। "
আকর্ষের এইটুকু কাজেই নায়নী লজ্জায় লাল হয়ে গেছে। তাই তাড়াতাড়ি আকর্ষের কাছে থেকে সরে গিয়ে বললো,
"হয়েছে এইটাই প্যাক করতে বলি।"
আকর্ষ সম্মতি দিলো আর নায়নী সেটা প্যাক করতে দিলো এমন সময় ড্রেসের বিল আকর্ষ পে করে দিলো। তখন নায়নী বললো,
"তুমি কেন পে করলে ড্রেসটাতো আমার? "
"কেন পে করতে পারি না। "
"নাহ আমি দিতাম।"
"হয়েছে এইবার থেকে আমি দিবো কোনো সমস্যা?"
"বাহ্ বাহ্ পিচ্চি ছেলে কি আমার ভরণ পোষনের দায়িত্ব নিলো নাকি।"
"খালি ভরণ পোষণ না সব কিছুর দায়িত্ব আমি নিবো।"
আর নায়নীর কানের কাছে মুখে নিয়ে আস্তে আস্তে বললো,
"আর হ্যা তোমার স্তন দুটোর দায়িত্ব আমি নিবো।"
এটা শুনে নায়নীর কান গরম হয়ে গেলো কান দুটো লাল হয়ে গেলো। এই কথা শোনার সাথে সাথে নায়নী আকর্ষকে এলোপাতাড়ি মারতে লাগলো।
আকর্ষ মার খেয়ে বললো,
"আহঃ নায়নী ব্যথা পাচ্ছি তো মেরো না প্লিজ। আচ্ছা আর বলবো না। এখন চলো।"
আর এই কথা শুনে নায়নী শান্ত হলো। আর আকর্ষের সাথে শপিং মল থেকে বের হলো।
আকর্ষ আর নায়নী ড্রেস কিনে বের হয়ে গেলো। আকর্ষ নায়নীকে বললো
" তুমি পার্কিংলটের সামনে গিয়ে দাড়াও আমি বাইক নিয়ে আসছি।"
নায়নী আর কিছু না ভেবে সেখানে চলে গেলো। এমন সময় কিছু বখাটে ছেলে পার্কিং এর সামনে দিয়ে যাচ্ছিলো নায়নীকে দেখে ওরা বলে উঠে,
"ইসসস কি মাল মাইরি এতো দেখছি মধুর ভান্ডার চল না দেখি মধুর ভাণ্ডারে মুখটা দেওয়া যায় কিনা।"
এই বলে ৩ জন ছেলে নায়নীর সামনে আস্তে লাগলো। ছেলেগুলো আস্তে আস্তে একেবারে নায়নীর সামনে এসে পড়লো। ঐ ৩ জন ছেলের মাঝে একজন বলে উঠলো,
"কিগো সুন্দরী এতো রাত এ কি তুমি একা নাকি তা চলো না আমরা তোমাকে সঙ্গ দিবো তোমার রাতটা রঙিন করে দিবো।"
এই কথা শুনে নায়নী ভয়ে সিটিয়ে গিয়েছে অন্য সময় খুব নিজেকে সাহসী দেখালেও এখন যেন কি হয়েছে। ও ভয়ে সিটিয়ে গিয়েছে। নায়নী কি করবে বুঝতে পারছে না। নায়নীর মাথায় অনেক আবোল তাবোল সব কথা ঘুরছে। নায়নী মনে মনে ওপরওয়ালাকে ডাকতে শুরু করলো। এমন সময় ঐ ৩ জনের মাঝে একটা ছেলে বলে উঠলো,
"এই মালের মনে হয় কেও নেই চল আমরা একে নিয়ে যাই।"
এই বলে নায়নীর দিকে হাত বাড়াতে লাগলো। নায়নী এই দেখে চোখ বন্ধ করে ফেললো। এমন সময় শুনতে পেলো একটা চিৎকার নায়নী চোখ খুলে দেখলো ছেলেটি সামনে পড়ে আছে। আর আকর্ষ সেখানে বাইক নিয়ে দাঁড়ানো,
ঐ ৩ জনের মাঝে থাকা একজন বলে উঠলো,
"কি ভাই আপনি কি চোখে দেখেন না এমন করে কেও বাইক চালায় এখন যদি কিছু একটা হয়ে যেত। "
এই বলে নিচে পড়ে থাকা ছেলেটিকে তুললো,
আকর্ষ হেসে দিয়ে বললো,
"সত্যি বলতে আমি চোখে ঠিকই দেখি কিন্তু কেও যদি নিজের বউয়ের দিকে খারাপ হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে কি আমি ঠিক থাকতে পারি। এখন তো শুধু বাইকটাই লেগেছে, কিছু হয়নি। কিন্তু পরেরবার যদি এমন কিছু হয় তাহলে এমন অবস্থা করবো নিজের লাশটাও পরিবার চিন্তা পারবে না। ঠিক আছে আজকে তাহলে যাই আমরা রাস্তা দিন।"
তখন ছেলে গুলো নিচে পড়ে থাকা ছেলেটিকে নিয়ে চলে গেলো। আকর্ষ আসার পর পর নায়নী আকর্ষের বাইকে বসে পড়লো। নায়নী আকর্ষকে এমন ভাবে ধরে বসলো যেনো হাত ছাড়লেই আকর্ষ পালাবে, আকর্ষ বুঝতে পারলো নায়নী অনেক ভয় পেয়েছে। ভয়ে সিটিয়ে গেছে নায়নী।
আকর্ষ বুঝলো নায়নীর ভয়টা দূর করা দরকার টাই নায়নীকে নিয়ে সাউথ সিটি মল থেকে একটু দূরে যোধপুর পার্কে এসে বসলো। পার্কের ব্রেঞ্চে বসার সাথে সাথে নায়নী আকর্ষকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো ভয়ে কাঁপছে নায়নী।
আকর্ষ তাই বললো,
"ভয় নেই বাবা আমি আছি তো কিচ্ছু হবে না।"
নায়নী তখন কাঁদতে কাঁদতে বলতে শুরু করলো,
"আমি বড্ডো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আমি ভেবেছিলাম আবার মনে হয় আমাকে কিছু মানুষরূপী জানোয়াররা আমার সব শেষ করে দিবে আমি কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। নিজেকে সব সময় এই পুরুষদের কাছে থেকে দূরে রেখেছি এই ভয়ে যে আবার কি হয়। আমি নিজেকে কখনো পুরুষ সঙ্গ দেইনি সেই দিনের ঘটনার পর। আমি তোমার সাথেও কোথাও যেতে ভয় পেতাম যদি তুমি কোনো ক্ষতি করো কিন্তু তুমি হলে অন্যরকম আমাকে সম্মান দিয়েছো আমাকে আগলে রেখেছো কিন্তু এইভাবে কতদিন আজ বাদে কাল এই সব শেষ হয়ে যাবে।"
এইটা শুনে আকর্ষ বললো,
"নাহ কিচ্ছু শেষ হবে না।"
তাও নায়নী কেঁদেই চললো আকর্ষের শার্ট পুরো ভিজিয়ে ফেলেছে চোখের জলে। আকর্ষ তখন নায়নী মাথা উঁচু করে ধরলো দেখলো,
নায়নীর চোখের কাজল থেবড়ে গেছে চোখ লাল হয়েছে আর হবেই বা না কেন কাঁন্না তো কম করেনি। আকর্ষ বললো,
"শোনো নায়নী আমি থাকবো তোমার পাশে সব সময় ভালো খারাপ সব সময় তোমার পাশে থাকবো তোমাকে আগলে রাখবো তোমাকে কষ্ট দেওয়া তো দুর তোমাকে একটা ফুলের টোকাও লাগতে দেবো না। তুমি আর কষ্ট পাবে না বুঝেছো।"
"কোন অধিকারে?"
আকর্ষ মনে করেছিল বলবে না এতো তাড়াতাড়ি মনের কথা কিন্তু আজকে ওকে বলতেই হবে, তাই বললো
"আমি তোমাকে ভালোবাসি নায়নী আমি তোমাকে প্রথম দিন দেখার পর থেকেই ভালোবাসি। তোমাকে আমি আমার নিজের চেয়েও বেশি ভালোবাসি। তোমাকে আমি বিয়ে করবো।"
এই কথা শুনে নায়নী আকাশ থেকে পড়লো, কি বললো আকর্ষ, আকর্ষ ওকে ভালোবাসে সত্যি কি আকর্ষ ওকে ভালোবাসে নাকি শুধু এইটা একটা কল্পনা?
আকর্ষ বললো,
"আমি এই কথাটা অনেক পড়ে বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু আজকে বলা ছাড়া কোনো উপায় ছিলো না। তোমাকে আমি আগলে রাখবো তোমাকে ভালো রাখবো তোমাকে সুখে রাখবো তোমাকে সকল সুখ দেবো যা তুমি চাও যা তোমার প্রাপ্য তোমাকে আমি আমার স্ত্রীর মর্যাদা দিবো নায়নী।"
নায়নী আর কিছু বলতে পারলো না। খুশির কারণে আকর্ষকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো আর কেঁদে দিলো, এই কান্না কষ্টের কান্না না এইটা সুখের কাঁন্না।
আকর্ষ জিজ্ঞেস করলো,
"আমি তোমাকে ভালোবাসি? তুমি আমাকে ভালোবাসো তো?"
আকর্ষ নায়নীকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে শুধু বললো,
"হুমম। বাসি।"
আকর্ষ এই কথা শুনে নিজেও বিশ্বাস করতে পারছিলো না যে নায়নীও ওকে ভালোবাসে।
আকর্ষ নায়নীর মাথায় একটা চুমু খেলো। আর নায়নীকে নিজের বুকে থেকে উঠিয়ে, চোখ মুছিয়ে দিয়ে বললো,
"হয়েছে আর কাঁদতে হবে না অনেক হয়েছে।"
মুছিয়ে দেওয়ার পর একটা অদ্ভুত নীরবতা ওদের মাঝে এসে ভর করলো। আকর্ষ কোনো এক আকর্ষণে নায়নীর ঠোঁটের সাথে নায়নীর ঠোঁট বসিয়ে দেয়। নায়নী ও আকর্ষের এই কাণ্ডে অবাক নায়নী প্রথমে কি করবে বুঝতে না পারলেও আস্তে আস্তে ও নিজেও পড়ে আকর্ষের চুম্বনে সারা দিতে লাগলো। ২ জন অনেক দিনের অভুক্ত ভালোবাসার জন্য ২ জন ২ জনের ঠোঁটে পাগলের মতো কামড়াতে লাগলো শুষে নিতে লাগলো ঠোঁটের সব রস। আকর্ষকে নায়নী কামড়াচ্ছে আবার শুষে নিচ্ছে। আকর্ষও কম যায় না ও নায়নীর ঠোঁটের সাথে আকর্ষের ঠোঁটের সাথে তীব্র যুদ্ধ যেখানে কোনো হাড় জিত নেই আছে শুধু ভালোবাসা। এইভাবে কতক্ষন ছিলো নায়নী আর আকর্ষের খেয়াল নেই ২ জন নিজেদের ঠোঁটের চুম্বন থেকে আলাদা হলো তখন ২ জনেই হাপাচ্ছে।নিশ্বাস নিচ্ছে জোরে আকর্ষ নায়নী ২ জনে এইটা দেখে হেসে দিলো। আকর্ষ নায়নীকে আবার জড়িয়ে ধরে বললো,
"ভালোবাসি।"
"আমিও।"
আজকে নায়নীর মনে বয়ে চলছে এক শান্তির হওয়া আজকে থেকে আসলেই একা না তার ভালোবাসার মানুষ আছে। তাকে কেও ভালোবাসে সব দিয়ে। আকর্ষের বুকে মাথা রাখা অবস্থায় জিজ্ঞেস করলো,
"ছেড়ে যাবে না তো?"
"না।"
"সারাজীবন আগলে রাখবে তো?"
"হ্যা।"
"আমি অনেক রাগী কিন্তু?"
"সমস্যা নেই ভালোবাসা দিয়ে ঠান্ডা করে দিবো।"
"আমি তোমার চেয়ে বয়সে ৮ বছরের বড় জানো"
"জানি।"
"তাও কি তুমি এই বুড়িকে ভালোবাসবে?"
"হ্যা সারাজীবন বাসবো। মৃত্যু এর সময়ও বলবো নায়নী তোমায় আমি ভালবাসি।"
"আমিও ভালোবাসি।"
কতক্ষন যে দুইজন দুইজনকে জরিয়ে ধরে রেখে ছিল এর হিসেব নেই। নায়নী আর আকর্ষ এখন নতুন প্রেমে মজেছে সময়ের হিসেব না থাকাটা স্বাভাবিক। দুইজনের হুশ ফিরল দারোয়ানের বাশিতে দারোয়ান সবাইকে পার্ক থেকে বেরতে বলছে পার্ক বন্ধ করে দেওয়া হবে। আকর্ষ আর নায়নী ছেড়ে দিল নিজেদেরকে। নায়নী যে অনেক লজ্জা পেয়েছে বলার কোনো অপেক্ষা রাখে না। আকর্ষ সেটা দেখে হেসে দিল, আজকে নায়নীকে দেখে মনে হচ্ছে কোনো ১৮ বয়সের তরুনী যে সবে মাত্র প্রেমে পরেছে। আকর্ষ বলল ,
“চলো তাহলে তোমাকে ঘরে পৌছিয়ে দিয়ে আসি।”
এই বলে আকর্ষ নিজের হাত বাড়িয়ে দিল, আকর্ষ এর হাত ধরে নায়নী ব্রেঞ্ছ থেকে উঠলো। নায়নী ব্রেঞ্ছ থেকে উঠর পর নায়নীর হাত ধরেই চলতে লাগল আকর্ষ। নায়নীর আজকে বড্ড লজ্জা করছে এত লজ্জা নায়নীর কখনই ছিল না কিন্তু আজকে যেন কোথায় থেকে ওর ওপর লজ্জা এসে ভর করেছে, আর কিভাবে ওর হাত ধরে নিয়ে যাচ্ছে দেখ মনে হচ্ছে ও রাস্তা চিনে না। নায়নি কিছু বলল না, আকর্ষকে কি বলবে ওকে বললে কি ও শুনবে ? কখনই না তাই আর কিছু বলল না। আকর্ষ নায়ণীকে নিয়ে পার্ক থেকে বের হল, আর বাইক যেখানে পার্ক করা সেখানে গিয়ে আগে আকর্ষ বাইকে উঠলো আর তারপর নায়নীকে উঠতে বলল নায়নীও একেবারে ভাল মেয়ের মত আকর্ষের বাইকের পেছনে উঠে পরল। নায়নী বাইকে উঠার পর আকর্ষ চলতে শুরু করল। আজকে নায়নীর মাঝে আর কন জরতা নেই। আজকে একেবারে সবাইকে বলতে পারবে যে
“দেখ এই সুদর্শন দেখতে ছেলেটি আমার প্রেমিক এই ছেলেটি আমাকে ভালবাসে শুধু আমাকেই ভালবাসে।”
নায়নী আজকে আকর্ষকে খুব শক্ত করে জরিয়ে ধরে রেখেছে, হ্যা এক্তু আগেও জরিয়ে ধরে রেখেছিল সেটা ছিল ভয়ে কিন্তু এখন সেটা ভয়ে না এখন জরিয়ে ধরে রেখেছে ভালবেসে। নায়নী চাইছে এইভাবেই সময়টা থেমে যাক আর না চলুক সময়। আকর্ষের ও আজকে বড্ড ভাল লাগছে এত দিন পর নিজের ভালবাসার কথা নিজের প্রেয়সির কাছে বলতে পেরেছে। দেখতে দেখতে নায়নীর ঘরের সামনে এসে পরল আকর্ষ। আকর্ষ বাইক থামাল নায়নীর ঘরের সামনে, কিন্তু একি আকর্ষকে ছাড়ার নাম নিচ্ছে না দেখি মহারানি।আকর্ষ তাই বলল,
“কি হল মহারানী এসে পরেছি তো নামতে হবে।”
নায়নী বাইক থেকেই বলল,
“উহু নামবো না। আমি যাবো না আমি এইভাবেই থাকব।”
“এটা বললে কি হবে যেতে ত হবেই। ”
“আরেকটু থাকি না।”
“পাগলি আমি তো পালিয়ে যাচ্ছি না আমি তো তোমারই আর আমি আবার তোমাকে নিয়ে যাবো আবার ঠিক আছে।”
“সত্যি তো ?”
“হ্যা বাবা ৩ সত্যি।”
এই কথা শোনার পর নায়নী একটু আশ্বস্ত হল, আর নায়নী বাইক থেকে নেমে গেল। নায়নী বাইক থেকে নামলো, আর বলল,
“ঘরে গিয়ে সাথে সাথে আমাকে জানাবে। আর ঠিক মত খাবে ওকে”
“এই রে মেরেছে !”
“কি হল ?”
“একদিনেই এত আদেশ ।“
“কেন মানতে কোন সমস্যা আছে নাকি ?”
"নাহ তা নেই কিন্তু যদি না মানি?"
"না মানলে মেরে হাত ভেঙ্গে হাতে ধরিয়ে দিবো। "
এটা শুনে আকর্ষ হেসে হেস এই রূপটা আকর্ষ কখনো দেখেনি নায়নীর। আকর্ষ বললো,
"ঠিক আছে। আজকে তাহলে যাই।"
"হুমম।"
এই বলে নায়নী চলে যাওয়ার জন্য রওনা হলো,
আকর্ষ তখন নায়নীকে পিছন থেকে ডাক দিলো,
"নায়নী।"
নায়নী পিছনে তাকিয়ে বললো,
"কি হয়েছে?"
আকর্ষ তখন নায়নীকে কাছে আসতে বলে,
নায়নী কাছে আসার পর কিছু না বলেই নায়নীকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ফেলে। আকর্ষের এই কাণ্ডে নায়নী পুরো অবাক হয়ে যায়, তাই নায়নীকে জিজ্ঞেস করে,
"কি হলো?"
আকর্ষ কোনো উত্তর না দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেই নায়নীর গালে কপালে এলোপাথারি চুমু দেয়। নায়নী এই রকম কাণ্ডে একেবারে অবাক আর সাথে লজ্জায় লাল হয়ে যায়। চুমু দেওয়া শেষ হলে আকর্ষ বললো,
"এখন যাও।"
আকর্ষের এই কান্ড দেখে নায়নী হাসলো আর বললো,
"বাচ্চা একটা এখন যাও অনেক রাত হলো।"
"হুমম।"
নায়নী জানে যতই বলুক নায়নী ঘরে যাওয়ার আগে আকর্ষ যাবে না। তাই নায়নী আগে নিজের ঘরে আসলো। ঘরে এসেছে যখন বেলকনিতে আসলো তখন আকর্ষ ঘরের জন্য রওনা হলো।
ঘরে এসে
ফ্রেশ হয়ে নেয়। আজকে নিজেকে বড্ডো অচেনা লাগছে। এইটা কি নায়নী যে হাসতো না সারাদিন চুপ করে থাকতো কাজ আর ঘর ছাড়া কিছুই বুঝতো না সারাদিন কাজ করে ঘরে এসে শুধু ঘুমিয়ে আবার কাজে চলে যেত, কিন্তু এখন সত্যি বলতে নায়নীর জীবন অনেকটা বদলে গেছে হয়তো সামনে আরো যাবে। আজকে যা হলো তা যদি রাখিকে না বলে তাহলে নায়নীর পেটের ভাত হজম হবে না। তাই ফোন দিলো রাখিকে,
কয়েকবার ফোন দেওয়ার পর রাখি ফোন ধরলো,
"হ্যালো।"
"হ্যালো। হ্যা বল।"
"কেমন আছিস?"
"আমি ভালো আছি আজকে বড্ডো বেশি ভালো আছি।"
"১ মিনিট।"
এই বলে রাখি ফোনটা চেক করলো, দেখে নিলো নায়নী তো নাকি অন্য কেও ওর হোয়াটস্যাপ থেকে কল করেছে। তা দেখতে পেলে না নায়নী ফোন করেছে, ফোনটা আবার কানে দিয়ে আবার বললো,
"আচ্ছা তুই নায়নী তো?"
এই প্রশ্ন শুনে নায়নী খুব অবাক হলো আর জিজ্ঞেস করলো,
" এইটা কেমন প্রশ্ন আবার? "
"নাহ মানে এতো বছরের এই রকম উচ্ছোশিত তোকে তো কখনো দেখেনি তাই বলছি।"
"আচ্ছা।"
"এখন বল এই রকম খুশি হওয়ার কারণ কি?"
"কিছু না এমনি।"
"এমনি এমনি খুশি হওয়ার লোক তুই না। তোকে আমি হাড়ে হাড়ে চিনি।"
"নাহ কিছু হয়নি।"
"দেখ নায়নী তুই না বললে কিন্তু আমি ফোনটা রেখে দিবো।"
"আরে বাবা রোগে যাচ্ছিস কেন?"
"তাহলে বল।"
"কিভাবে বলি লজ্জা করছে তো?"
"তুই এতো ন্যাকামো কেন করছিস বল তো তুই তো আগে এই রকম ছিলি না?"
"আকর্ষ আমাকে ভালোবাসে।"
"মানে আকর্ষকে?"
"আরে আকর্ষ ঐ পিচ্ছি ছেলেটার কথা বলেছিলাম মনে নেই?"
"কি সেই ছেলে তোকে ভালোবাসে?"
"হুমম।"
"আর তুই কি বাসিস?"
"হুমম বাসি।"
এই কথা শুনে রাখি চুপ হয়ে যায়। কিছুক্ষন রাখি চুপ করে থাকে।
রাখি চুপ করে আছে বলে নায়নী জিজ্ঞেস করে,
"তুই চুপ করে আছিস কেন?"
"তুই তো আগে পুরুষ মানুষ সহ্য করতে পারতি না? তাহলে এইটা কিভাবে হলো?"
তখন নায়নী সব বললো রাখিকে। রাখি শুনে তো খুব খুশি। তখন রাখি বলে,
"বিয়ে করবি কবে?"
"মানে মাত্র আমরা নিজেদের মনের কথা বলেছি ২ জন ২ জনকে কয়েকটা দিন যাক।"
"সেটা ঠিক আছে কিন্তু তুই কি খেয়াল করেছিস তোর বয়স হয়ে যাচ্ছে।"
"হুমম তাই কি?"
"তুই বুঝতে পারছিস না কেন?"
"কি বুঝবো?"
"ও তোর থেকে ছোট ও যদি ওর বয়সের অন্যকারো প্রেমে পড়ে বা তোর বয়স বেশি হয়ে গেলে যদি ওর পরিবার না মানে?"
রাখির কথা শুনে নায়নীর কিছুটা টনক নড়ে।
রাখির কথা সত্য যদি আকর্ষের পরিবার না মানে যদি আকর্ষকে হারিয়ে ফেলতে হয় তখন কি হবে?
নায়নীর মাথায় হাজার হাজার চিন্তা এসে ভর করে। নায়নীর মনটা কিছুটা খারাপ হয়ে যায়। আর রাখিকে বলে,
"শোন রাখি জানি না কি হবে? কিন্তু আশা করি যা হবে ভালো হবে। আজকে রাখি তোর সাথে পরে কথা বলবো।"
এই বলে নায়নী ফোন রেখে দেয়।
রাখির সাথে কথা বলার কিচ্ছুক্ষন পরেই আকর্ষ কল করলো।
"হ্যালো। "
"হ্যালো হ্যা বলো।"
"কি করছো?"
"বসে আছি। আচ্ছা ঘরে পৌছিয়েছো কখন?"
"এই একটু আগে এসে ফ্রেশ হয়ে কিছু রাতের খাবার খেয়ে তোমাকে কল দিলাম। তুমি খেয়েছো তো?"
"হুমম।"
"কি হয়েছে? এতো চুপ চাপ কেন?"
"নাহ কিছু না।"
"বলো শুনি তোমার কথা শুনে বুঝতে পারছি তুমি কিছু নিয়ে চিন্তিত আমাকে বলো। "
"আচ্ছা আমাদের এই সম্পর্কের কি পরিণতি হবে আকর্ষ তোমার সাথে আমার বয়সের তফাৎ ৮ বছরের কোনো পরিবার চাইবে না তাঁদের একমাত্র ছেলে বয়সে বড়ো কোনো মেয়েকে বিয়ে করুক। আর তোমার মা যদি না মানে?"
এইটা শুনে আকর্ষ ও কিছুক্ষন ভাবলো তারপর নায়নীকে বললো,
"দেখো নায়নী আমি বর্তমানে বাঁচতেই বেশি পছন্দ করি ভবিষ্যত নিয়ে খুব বেশি একটা ভাবি না আর আমি তোমাকে ভালোবাসি আমার ভালোবাসার ওপর তোমার বিশ্বাস আছে তো?"
"হুমম আছে। "
"তাহলে আর চিন্তা করো না আমি তোমাকে আমার চেয়ে দূর হতে দিবো না। সূর্য যদি পশ্চিম দিক দিয়েও উঠে আমি তাও তোমাকে বিয়ে করবো তোমাকে কষ্ট পেতে দিবো না। তুমি এই নিয়ে চিন্তা করো না আমি আছি তো আমি তোমাকে আমার করেই ছাড়বো।"
আকর্ষের এই কথা শুনে, নায়নী কিছুটা স্বস্তি পেলো। নিজের মনের ভেতর যে ঝড় চলছিল সেটা অনেকটাই থেমে গিয়েছে।
নায়নী জিজ্ঞেস করলো,
"আচ্ছা তোমার আমাকে কি দেখে ভালোবাসলে তোমার চেয়ে ৮ বছরের বড়ো একজনকে। তুমি তো আর ইয়ং আর সুন্দরী মেয়ে পেতে আমাকে কেন ভালোবাসলে।"
আকর্ষ এটা শুনে হেসে দিয়ে বললো,
"সত্যি বলবো?"
"হ্যা অবশ্যই।"
"শোনো ভালোবাসা কি দেখে হয় আর কেন হয় সেটা বলা যাবে না। তুমি এমনটা মনে করতে পারো যে, তুমি একটা ঘুটঘুটে অন্ধকার ঘরে একটা কালো বিড়াল খুঁজছো কিন্তু আদতে সেই কালো বিড়ালটা সেখানে নেই এইটাই ভালোবাসা। ভালোবাসা শুধু হয়ে যায় কেন ভালোবাসলাম কি দেখে ভালোবাসলাম এটার উত্তর তুমি কখনোই দিতে পারবে না। আর যদি তুমি বলতে পারো কাউকে কি দেখে ভালোবাসো তাহলে সেটা ভালোবাসা নয় সেটা ভালোলাগা। তুমি কখনোই বলতে পারবে না তুমি তাকে কি দেখে ভালোবেসেছো।"
আকর্ষের কথা গুলো নায়নী মুগ্ধ হয়ে শুনছিলো।
কি বলবে এর উত্তরে সত্যি তো বলেছে আকর্ষকে কেন ভালোবাসলো এর উত্তর কি আছে নায়নীর কাছে। হয়তো আছে আবার হয়তো নেই। আকর্ষের কথা শুনে নায়নী কিছুটা ঘোরের মধ্যে চলে গিয়েছিলো।
এমন সময় আকর্ষ বললো,
"কি চুপ কেন?"
"নাহ কিছু না। শোনো কোনো কিছুই নিয়ে বেশি চিন্তা করবে না যা হবে ভালো হবে।"
"হুমম। "
এই বলে কথা বলতে বলতে কখন যে ওরা মধ্য রাতে এসে পড়েছে সেটার কোনো খেয়াল নেই। নায়নী কথা বলতে বলতেই খেয়াল করলো রাত ২:৩০ বাজে তাই আকর্ষকে বললো,
"এইযে মহাশয় আপনার কি সময়ের দিকে খেয়াল আছে?"
"কেন?"
"একটু তাকিয়ে দেখুন?"
আকর্ষ ঘড়ি দেখে দেখলো, রাত তখন ২:৩০ তাই আকর্ষ বললো,
"হুমম দেখলাম অনেক রাত হয়েছে।"
"এখন ঘুমাও কালকে আবার সকালে উঠতে হবে।"
"সকালে উঠে কি করবে?"
"সকালে উঠে আমি ব্যায়াম করি আমি খুবই টাইমটেবিল মেইনটেইন করি আশা করি তুমিও মানবে এখন বেশি কথা না বলে ঘুমাও।"
"আচ্ছা আর যদি না মানি?"
"না মানলে তোমার ওপর শনিদেবের প্রকোপ দেখার দিবে।"
"এইরে মেরেছে। আমি ভাই চাই না এই শনিদেবের প্রকোপ।"
"তাহলে এখন ঘুমাও।"
"আচ্ছা। একটা পাপ্পি দাও না।"
"পাপ্পি কি?"
"পাপ্পি বুঝো না?"
"না।"
"হায়রে পাপ্পি মানে হলো কিস।"
এই কথা শুনে নায়নী তো হেসেই খুন। আকর্ষ ওর হাসি শুনে বললো,
"হাসছো যে।"
"হাসবো না তো কি করবো বলো?"
"কেন?"
"শোনো আমি সময় হলে এমনি তোমার পাপি দিবো সেটা সামনাসামনি এই ফোন দেওয়ার দরকার হবে না।"
"সত্যি তো?"
"হ্যা বাবা সত্যি।"
"ঠিক আছে। "
"রাখছি তাহলে।"
এই বলে ফোন কাটতে যাবে এর মধ্যে আকর্ষ বললো,
"এই শোনো।"
"আবার কি হলো?"
"ভালোবাসি নায়নী।"
এই কথা শুনে লজ্জায় লাল হয়ে গেলো নায়নী। আর বললো,
"পাগল একটা ঘুমাও এখন।"
"আচ্ছা আমার উত্তর দিলে না?"
"কালকে দিবো।"
এই বলে নায়নী ফোন রেখে দেয়। আর দুইজন দুইজনের ভাবনায় পুরো মশগুল হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
দুই জন অসম বয়সের ব্যক্তির মাঝে বসন্তের আনাগোনা শুরু হয়েছে।
নায়নী প্রত্যেকদিনের মতোই সকালে ঘুম থেকে উঠলো। নায়নীর মন বড্ডো ফুরফুরে আজকে নিজের মাঝে কিছু একটা পরিবর্তন সে পেয়েছে কিন্তু কি সেই পরিবর্তন এখনও সেটা বুঝে উঠতে পারেনি। নায়নী আজকে ঘরের কিছু কাজ করবে সারা সপ্তাহ অফিস করে করে ঘরের দিকে খুব বেশি একটা লক্ষ্য করা হয় না। নায়নী আজকে সারা ঘর ঝাড়লো মুছলো নিজের বই গুলো গুছিয়ে রাখলো। বেলকনিতে ফুলের গাছ গুলোর একটু যত্ন নিলো। এর মাঝে আকর্ষ ফোন করেছিল একবার খুব বেশি একটা কথা হয়নি। ঘরের কাজ গুলো করার পর স্নান করে নিলো নায়নী। আজকে পার্টির ভেন্যু অনেক বড়ো একটা হোটেলে যা ওর বাসা থেকে একটু দূরে আর ও লেট্ করতে চায় না। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাতের কাজ গুলো করে নিলো। আকর্ষ আজকে ঘরের জন্য বাজার করলো এই শনিবার আর রবিবার ছাড়া বাজার করার খুব বেশি সময় পায় না। আর থাকে মাত্র ২ জন মানুষ কতই বা বাজার লাগবে, যা বাজার করে তা দুই মা ছেলের ভালোভাবে চলে যায়। আকর্ষের মায়ের যেনো খুব কাজ করতে না হয় সেটার জন্য একজন কাজের মাসি রেখেছে সে মোটামুটি বাড়ির ভারী কাজ গুলো করে, আর রান্নাবাঁনার কাজটা শারতী দেবী করে থাকেন। আকর্ষের মা শারতী দেবী আর যাই হোক রান্নাটা নিজের হাতেই করে থাকেন। আকর্ষ বাজার করে আনার পর শারতী দেবী নিজের হাতে সব রান্না করলেন কারণ ছেলে কাজের জন্য বেশির ভাগ সময় বাইরে খায় এতে যদি ছেলেটার শরীর খারাপ হয় সেই ভয়ে পাগল হয়ে যান শারতী দেবী। শারতী দেবী নিজের হাতে রান্না করে খাওয়ালেন আজকে ছেলেকে, আকর্ষও পেট ভরে খেলো। আকর্ষ দুপুরের খাবার পর একটু রেস্ট নিলো কারণ পার্টি শেষ না হওয়া পর্যন্ত হয়তো থাকতে হবে আর কতক্ষন পার্টি শেষ হয় তার কোনো খবর নেই। আকর্ষ বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে একবারের জন্য নায়নীকে ফোন দিলো। নায়নী ফোন দিলো, নায়নী পার্টির জন্য সব রেডি করছিলো।
নায়নী সব চেক করছিলো এমন সময় আকর্ষ ফোন দিলো, আকর্ষের ফোন দেখে নায়নীর মুখে হাসি ফুটে। নায়নী ফোন ধরে,
"হ্যালো।"
"হ্যালো হ্যা বলো।"
"কি করছো?"
"এই পার্টির জন্য সব চেক করছি সব ঠিক আছে কিনা দেখছি। তুমি কি করছো?"
"আমি আপনাকে ভালোবাসার অপরাধ করছি মহারানী।"
এই কথা শুনে হেসে দেয় নায়নী। আর বলে,
"আমি চাই এই অপরাধ তুমি বার বার করো।"
"অবশ্যই করবো মহারানীর আদেশ কি ফেলা যায়।"
"তুমি কি পড়বে পার্টির জন্য?"
"সেটা নাহয় পার্টিতে দেখতে পারবে। আমি কি তোমাকে নিতে আসবো?"
"নাহ একদম না কোনো দরকার নেই। আমি উবার দিয়ে চলে যাবো তুমিও সোজা পার্টিতে যাবে ওকে।"
"তোমার সমস্যা হবে না তো?"
"নাহ হবে না।"
"ঠিক আছে তাহলে দেখে এসো। রাখছি।"
"আচ্ছা।"
চলবে
এই গল্প যদি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। যদি কোনো মতামত থাকে জানাতে ভুলবেন না। টেলিগ্রাম এ এসএমএস দিতে পারেন @Paradox78789 এই নামে। আপনাদের এসএমএস এ আমি উৎসাহ পাই। তাই আমাকে বেশি বেশি করে উৎসাহ দিবেন এই আশা করি।