Thread Rating:
  • 50 Vote(s) - 4.1 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
সুন্দর শহরের ঝাপসা আলো (নতুন আপডেট - ১০ম পর্ব )
#24
৪র্থ - পর্ব

যৌন মিলনের পর সুমিত্রার মন সতেজ থাকে যেটা ওর দৈনন্দিন জীবনের কর্মকান্ডের উপরেও প্রভাব ফেলে। স্বামী মদ্যপায়ী হোক, জুয়াড়ি হোক, ওকে গালাগালি করুক….ক্ষনিকের জন্য সব মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু নিয়মিত শরীরের ক্ষুদা শান্ত হলেই সেসব ভুলে থাকা যায়। চিন্তা শুধু একটাই, ছেলে সঞ্জয়….। যাকে ঘিরে ওর বিরাট স্বপ্ন। বড়ো করে তোলার স্বপ্ন। বাবুদের বাড়িতে কাজ করতে করতে অনেক সময় টিভির মুখে বসে বসে অনেক সিনেমায় পার করে দেয় সুমিত্রা। ওর নিজের বাড়িতে টেলিভশন নেই। সুতরাং বিনোদনের খোরাক টা এখান থেকে পেতে হয়।


সিনেমাতে ওর ভালবাসার গল্প বিশেষ পছন্দ হয়না। সে নিজে যুবতী মেয়ে হলেও, নায়কের নায়িকার পেছন পেছন ঘুরে নাচ করা আর বাবা মায়ের অমতে গোপনে প্রেম করে বিয়ে করা সে একদম পছন্দ করে না। ওর বিশ্বাস আজ কাল কার ছেলে মেয়েরা ওই সব সিনেমা দেখেই পেকে যায়। ওর বরঞ্চ ঐসব সিনেমা ভালো লাগে যেগুলোতে নায়ক বহু কষ্ট করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে। দুঃখী মায়ের স্বপ্ন পূরণ করে। ওই সব সিনেমা ওর বিশ্বাস কে আরও দৃঢ করে, যে সিনেমার নায়কের মতো ওর ছেলে সঞ্জয় ও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবে ,ওর মায়ের স্বপ্ন পূরণ করবে, সুমিত্রা কে সুখী করবে।


মাঝে মধ্যেই সুমিত্রা, সঞ্জয়ের কাছে জেনে নেয়, ওর লেখা পড়া কেমন চলছে। সুমিত্রা নিজে নিরক্ষর হওয়ার কারণে, ছেলে লেখাপড়া সম্বন্ধে যায় বলে তাই মেনে নেয়। সে মানে যে সঞ্জয় তাকে অন্তত মিথ্যা কথা বলবে না। সঞ্জয় ঘরের মধ্যে যখন পড়াশোনা করে সুমিত্রা ওর পাশে বসে মনযোগ দিয়ে সব শোনে, ওর সেই কবিতা টাও মুখস্ত হয়ে গেছে…..
“মা গো আমায় বলতে পারিস কোথায় ছিলাম আমি….কোন না জানা দেশ থেকে তোর কোলে এলাম আমি…

আমি যখন আসিনি মা, তুই কি আঁখি মেলে….চাঁদকে বুঝি বলতিস ওই ঘর ছাড়া মোর ছেলে…..”
মাঝে মধ্যে সুমিত্রাও সেটা গুনগুন করে। মায়ের মুখে ওর পাঠ্য কবিতা শুনে সঞ্জয় বলে “মা….আমি তোমাকে লেখা পড়া শিখিয়ে দেবো কেমন…?”
ছেলের কথা শুনে সুমিত্রা হাঁসে….”বলে আগে তুই ঠিক মত লেখা পড়া কর, তারপর আমাকে শেখাবি..”
“তুই আবার ক্লাসে ফার্স্ট হয়ে দেখা….তারপর আমি ও তোর সাথে পড়তে বসবো…”
সঞ্জয় মায়ের কথা শুনে গর্ব বোধ করে, বলে “হ্যাঁ মা আমি তোমার কথা রাখবো।“

মাকে খুশি করায় এখন ওর জীবনের মূলমন্ত্র।
সেহেতু সে আবার মনযোগ দিয়ে পড়া আরম্ভ করে দেয়।
পরদিন কলেজে সে বেঞ্চের মধ্যে একাকী বসে অনেক গভীর দিয়ে চিন্তা ভাবনা করে।
বাবা মায়ের চিন্তা। সেদিন ওর বাবা মদ খেয়ে ওর মাকে কি সব নোংরা অসভ্য গালিগালাজ করে ছিলো। “চোদাচুদি…!!!”


ঐদিন বন্ধুরা বলাবলি করছিলো চোদাচুদি মানে ছেলে মেয়ে দের নুনু ঠোকা ঠুকি…।
“নানাঃ আমার বাবা মা ওসব নোংরা কাজ করে না…ওগুলো অসভ্য লোকের কাজ…” নিজের মন থেকে ওঠা প্রশ্নকে নিজেই জবাব দেয়, সঞ্জয়।
কিছু ক্ষণের মধ্যেই ঢং ঢং টিফিন শেষ হওয়ার ঘন্টা বেজে যায়। এই বার সেই ম্যাডাম টার ক্লাস শুরু হবে। যার মধ্যে ও নিজের মা, সুমিত্রা কে কল্পনা করে।
মাঝে মাঝে ভাবে হয়তো মা ই কাজ করার ছলে বেরিয়ে এসে এখানে পড়াতে আসে। 

তারপর আবার একবার মনে হয়। না ইনি মায়ের থেকে একটু মোটা আর বেটে…। সুতরাং ওর কল্পনা বাস্তব হওয়া প্রায় অসম্ভব।

বাড়ি ফিরে মা বলল চল আজ একটা জায়গা থেকে ঘুরে আসি…। “কোথায় যাবে মা..?” প্রশ্ন করে সঞ্জয়।
সুমিত্রা বলে “চল না…! সামনের ওই মন্দিরে…”
একটু অবাক ভঙ্গিতে প্রশ্ন সঞ্জয়ের “কেন মা….”
সুমিত্রা হাঁসি মুখে আবার জবাব দেয় “তোর সামনে ফাইনাল পরীক্ষা না…মায়ের কাছে প্রার্থনা করবো…যেন তোর পরীক্ষা ভালো হয়”।

মায়ের কথা শুনে সঞ্জয় খুশি হয়। বলে হ্যাঁ মা চলো।
তারপর মা ছেলে দুজন মিলে বেরিয়ে পড়ে।
বাড়ি থেকে প্রায় দুই আড়াই কিলোমিটার দূরে মন্দির। ওরা পায়ে হেঁটেই সেখানে যায়।
সুমিত্রা মন্দিরের ঘন্টি বাজায়। আর সঞ্জয় কেউ বাজানোর পরামর্শ দেয়।

অবশেষে সেও নিজের গোড়ালি উঁচু করে ঢং ঢং করে মন্দিরের ঘন্টি বাজায়।
অবশেষে মায়ের ঠাকুর প্রণাম করা। দেখতে থাকে। মা এক মনে প্রণাম করে ঠাকুরের কাছে নিজের মন কামনার প্রার্থনা করে যাচ্ছিলো। শুধু আড় চোখে সেটাই দেখে যাচ্ছিলো সঞ্জয়।
সেও হয়তো মনে মনে ভাবছিলো, ওর লেখা পড়ার প্রতি মা কতোটা সচেতন।

সেখানকার বৃদ্ধ পুরোহিত মশাই একবার তাদের সমীপে এসে দাঁড়ালেন। একবার সুমিত্রা আর সঞ্জয় কে দেখলেন। ওনার মুখে একটা মৃদু হাঁসি।
সুমিত্রা নিজের চোখ খুলে দেখে ওর সামনে পুরোহিত।
লোকটি হাঁসি মুখে সুমিত্রাকে প্রশ্ন করেন “মা…এটা কি তোমার ছেলে…?? “
সুমিত্রা একটু অবাক হয়ে বলে হ্যাঁ…পুরোহিত মশাই…এই আমার একমাত্র ছেলে।
লোকটি এবার সঞ্জয় এর দিকে তাকিয়ে বলেন…”কি করা হয় ছেলের..”

সঞ্জয় সামান্য ভয় মিশ্রিত গলায় বলে “আমি বস্তির হাই কলেজে ক্লাস সেভেন এ পড়ি..”।
লোকটি আবার হাসেন….। বলেন হম বস্তির কলেজ।
তারপর কিছু প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় সঞ্জয় এর দিকে…প্রথমে বিজ্ঞান…তারপর গণিত…তারপর ইংরেজি।
সঞ্জয় সব প্রশ্নের যথাযত উত্তর দেয়। তবে ইংরেজিতে সামান্য সড়গড়।

পুরহিত মশাই খুশি হোন। ওকে নাম জিজ্ঞাসা করেন। “তোমার নাম কি…?”
সঞ্জয়…!!!
“বাহ্ চমৎকার নাম..এতো মহাভারতের একজন চরিত্র…!!!” বাহ্ বাহ্ খুব ভালো।
এবার তিনি সুমিত্রার দিকে তাকালেন..। দিয়ে ওকে প্রশ্ন করলেন..”মা…তোমার নাম কি…?”
সুমিত্রা বলে আজ্ঞে..”সুমিত্রা…”

পুরোহিত আবার উৎসাহিত স্বরে বলে ওঠেন..এতো দেখছি…রামায়ণ মহাভারতের সব চরিত্র এসে এখানে হাজির।
সুমিত্রা তারপর পুরোহিতের কথা শুনে বলে ওঠে…”কি করবো বলুন..ঠাকুর মশাই…মূর্খ বাবা মা যা নাম রেখেছেন তাই মেনে নিতে হয়েছে..”
সুমিত্রার কথা শুনে পুরোহিত উত্তর দেন…”আহঃ এতে খারাপ কি আছে…। সুমিত্রা খুব ভালো নাম তো…ভারী মিষ্টি…তোমার সাথে বেশ মানিয়েছে। তোমার মুখশ্রীও তো খুব মিষ্টি মা…”।

পুরোহিতের কথা শুনে সুমিত্রা হাঁসলো।
পুরোহিত আবার কথা শুরু করলেন। বললেন তা ছেলে তো খুবই মেধাবী মনে হচ্ছে। ওকে ঠিক মতো পড়াশোনা করিও। দেখবে বড়ো মানুষ হবে।
সুমিত্রা তার কথা শুনে একদম গদগদ হয়ে গেলো। বলল..”আপনি আশীর্বাদ করুন…যেন..আমার ছেলেকে ঠিক মতো মানুষ করতে পারি..।“
পুরোহিত মশাই “হ্যাঁ মা নিশ্চই…”বলে সঞ্জয়কে নিজের সামনে বসতে বললেন। 

সঞ্জয় এসে তার সমীপে বসল। তিনি একবার সুমিত্রার মুখের দিকে চেয়ে তাকালেন। তারপর সঞ্জয়কে উদ্দেশ্য করে বললেন..দেখি তোমার আধ্যাত্মিক জ্ঞান কেমন আছে বল।
প্রশ্ন করলেন…বলো..”মায়ের কতগুলো সমার্থক শব্দ আছে বলো..”
এই প্রশ্নের উত্তর সঞ্জয়ের পাঠ্য পুস্তকে লেখা নেই..!! তবুও সে যথাসম্ভব উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করে..আড়ষ্ট বলে..”মা…! মাতা..! আর মাদার..!!”
সঞ্জয়ের উত্তর শুনে পুরোহিত হো হো করে হেঁসে পড়েন।

বলেন…না না তোমাকে ইংরেজি তে উত্তর দিতে বলিনি। বলেন..”শোনো…মাকে আরও কতো গুলি শব্দে ডাকা হয়…যেমন গর্ভধারিনী…মানে যে তোমাকে গর্ভে ধারণ করেছে। জননী মানে যার যোনিতে সৃষ্ট বা জন্ম তোমার। দুগ্ধদায়িনী মানে যার বুকের দুধ তুমি পান করেছো। আর সম্মানিয়া মানে যাকে সমাজে সর্বোচ্চ সম্মান দেওয়া হয়। আর তোমাকেও মায়ের সম্মান করা উচিৎ।
সঞ্জয় মনোযোগ সহকারে ওনার কথা গুলো শুনে আসছিলো। ওর বিভোর মনোচিত্তে সবকটা প্রশ্ন উত্তর গাঁথা হয়ে গেলো।
সে এর আগে এই রকম প্রশ্ন বা উত্তরের সম্মুখীন হয়নি। এগুলো কলেজেও পড়ানো হয়নি। তবে এগুলো শিখতে বা জানতে পেরে সে মনে মনে ভীষণ খুশি। সে চাই আরও শিখতে আরও অজানা জিনিস জানতে। অনেক প্রশ্ন এর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করে সে। আজ সে নতুন জ্ঞানে পুষ্ট হলো। তবে ওর মনে কিছু নতুন জিনিসের দ্বিধা জন্মালো।

আজ সে মায়ের সমশব্দ জানতে পারলো…নিজের মনেই পুরোহিত এর দেওয়া উত্তর গুলোর বিশ্লেষণ করতে লাগলো…এক মায়ের আরেক নাম গর্ভধারিনী মানে যে আমায় গর্ভে ধারণ করেছে…হ্যাঁ ঠিকই…আমি আমার মায়ের ছোট বেলায় অনেক বার কোলে চেপেছি…আর মা আমাকে ধরে রেখেছে অর্থাৎ ধারণ করেছে। ওটাও ঠিক যে আমি মায়ের দুধ খেয়েছি। চার সম্মানীয়া…হ্যাঁ আমি মাকে অনেক অনেক সম্মান করবো। কিন্তু জননী….মায়ের যোনি থেকে আমার জন্ম…এটা ঠিক বুঝতে পারলাম না..।

মায়ের যোনি…!!! ওটা কি জিনিস…যোনি…মা সেটা কোথায় লুকিয়ে রেখেছে..। যোনি জিনিস টা কি…??”
মনে একটা বিরাট সংশয় নিয়ে সে বসে রইলো। শুধু জিজ্ঞাসু সঞ্জয় নিজের মনকে বলে সান্ত্বনা দেয় যে একদিন না একদিন সে সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবে।
“কি হলো বালক…!!!” কোথায় হারিয়া গিয়াছো..”।
পুরোহিতের কথায় আবার বাস্তবে ফিরে এলো সঞ্জয়।

সুমিত্রা তখন আবার হেঁসে উঠে পুরোহিত কে বলে। “ঠাকুর মশাই আমরা গরিব বস্তির মানুষ বহু কষ্টে ছেলেকে লেখাপড়া শেখাচ্ছি…। ও যদি আপনার সকল প্রশ্নের সঠিক উত্তর না দিয়ে থাকে, তাহলে মাফ করে দেবেন…”।
বৃদ্ধ পুরোহিত সুমিত্রার কথায় আশ্চর্য ভাব প্রকাশ করেন। বলেন “তুমি বস্তির মহিলা…!!! তোমার দর্শন এবং আচরণে সেটা তো ধরা দেয়না”।
সুমিত্রা বলল আজ্ঞে হ্যাঁ আমি বস্তিতে থাকি। লোকের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করি। স্বামী রিক্সা চালক, তবে খুবই মাতাল। ঘরে টাকা কড়ি দেয়না। 

পুরোহিত একটু বেশি উৎসাহিত হলো সুমিত্রার কথা শুনে। বলেন “এসো মা এসো…আমার কাছে এসে বসো..।
সুমিত্রা একবার কি যেন ভাবলো তারপর নিজের পা মুড়ি দিয়ে ওনার সামনে এসে বসল।
পুরোহিত বললেন “দেখি মা তোমার বাঁ হাত টা…একটু দেখে দি…তোমার গ্রহ দশা কি বলছে….তোমার মুখের লালিমা আর তোমার বর্তমান পরিস্থিতি এক দেখছি না..”

সুমিত্রা একটু ইতস্তত হয়ে নিজের বাঁ হাত পুরোহিতের দিকে বাড়িয়ে দেয়। নরম আর মসৃন সুমিত্রার হাতটা নিজের হাতে নিয়ে তালুর দিকটায় চোখ ফেরায় পুরোহিত।
সুমিত্রার ঘামে তালু ভিজে গিয়েছিল, সেটাকে বৃদ্ধ নিজের হাত দিয়ে মুছে পরিষ্কার করে নেয়। তারপর এক দৃষ্টিতে কি যেন দেখতে থাকেন।
অবশেষে বলেন..”মা তোমার হাতে যা দেখছি…তাতে তোমার এমন দারিদ্র দশা বেশি দিন থাকার কথা নয়। তোমার স্বামীর দুর্ভাগ্য তোমার জীবনে প্রভাব ফেলেছে……। যাকে বলে রাহুর দশা।“

আবার তিনি মনোযোগ দিয়ে সুমিত্রার হাতের তালু আর ওর নরম ফোলা আঙ্গুল গুলো উল্টো পাল্টে দেখতে লাগলেন।
তারপর বললেন “মা আমি কিছু অশুভ লক্ষণ দেখছি তোমার হাতে..”
বলে তিনি সঞ্জয় এর তাকালেন। দিয়ে বললেন…বাবা সঞ্জয় তুমি একটু মন্দির টা ঘুরে ফিরে দেখোনা।
সঞ্জয় পুরোহিত মশাই এর আদেশ অমান্য করল না। তখুনি সে উঠে গিয়ে ওখান থেকে চলে যায়।

পুরোহিত আবার সুমিত্রার হাতের দিকে চোখ ফেরান। বলেন.. “মা তোমার মঙ্গল দশা খারাপ হওয়ার জন্য তোমার কপালে স্বামী সুখ নেই দেখছি। তুমি যদি এই বিয়েতে অমত প্রকাশ করে অন্যথা বিয়ে করতে তাহলে হয়তো তোমার এই দশা এতটা প্রবল হতো না। কারণ তোমার শুক্র দশা খুবই ভালো। যার কারণে তুমি যথেষ্ট রূপবতী। আমি এই কারণেই অবাক। এমন সুন্দরী মহিলার এইরূপ দশা। তোমার বরের রাহু দোষ আছে সেকারণে তোমার জীবনে দারিদ্র যোগ রয়েছে। ওকে না বিয়ে করলে তুমি বেশি সুখী হতে”।

সুমিত্রা, পুরোহিতের কথা গুলো মনোযোগ দিয়ে শুনছিলো।
তিনি আবার বলা শুরু করলেন…হাত দেখতে দেখতে কেমন একটা বিচিত্র প্রশ্ন করে বসলেন “মা তোমার কোনো গুপ্ত প্রেম ভালো বাসা আমি দেখতে পাচ্ছি..”।
পুরোহিতের কথা শুনে সুমিত্রা আশ্চর্য হয়ে ওঠে..ওই প্রশ্ন ওকে অস্বস্তিতে ফেলে দেয়।
বলে “না ঠাকুর মশাই…আমি মনে প্রাণে নিজের স্বামী কেই ভালোবাসি”।

পুরোহিত মশাই এবার আড়ষ্ট গলায় বললেন “না…মানে আমি হয়তো ভুল দেখছি…তবে এই রকম শুক্র শনি সংযোগ থাকলে নারীর অবৈধ সম্পর্ক থেকে থাকে…এইরূপ নারীকে বহু পুরুষ গমন করে থাকে..”।
তবে কি মা…। যখন তোমার জীবনে এমন ঘটনা ঘটেনি তাহলে খুবই ভালো কথা। একটু সচেতন থেকো। তোমার ভাগ্যের এই অশুভ লক্ষণের কথায় বলছিলাম। খুব সাবধান। আগামী সময় ভালো নয়।

পুরোহিতের কথায় সুমিত্রা একটু দুঃখিত হলো। মনে মনে কিছুটা সে ভেঙে পড়ে গেলো। উদার মন নিয়ে বলে উঠল “আমার সারা জীবন টাই দুঃখের..সুখ কোথায়…”
পুরোহিত মশাই সুমিত্রার কথা শুনে ওকে সান্ত্বনা দেয়। বলেন..”আহঃ ভেঙে পড়ছো কেন মা। সুখ দুঃখ সবার জীবনেই আছে”।
এইতো দেখো তোমার বৃহস্পতি খুব ভালো। তোমার চন্দ্র ভালো সুতরাং তোমার ছেলের দ্বারা সুখী হবে।
তখনি সঞ্জয় আবার ফিরে এসে তাদের সামনে বসে পড়ে।

পুরোহিত তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন। দেখি ভাই তোমার হাত টা একবার আমাকে দেখাও।
পুরোহিত আবার উত্তেজিত হয়ে বলেন। এইতো ছেলের রাশি আর মায়ের রাশি এক। ছেলের চন্দ্র এবং মায়ের চন্দ্র দশা খুবই ভালো। সুতরাং এই ছেলেই তোমাকে সুখী করবে । ছেলের আঠারো বছর বয়সের থেকে তোমাকে নিয়মিত সুখ দিতে থাকবে। অতঃপর তোমার যাবতীয় গ্রহ দোষ আস্তে আস্তে কেটে যাবে। সমস্ত ভয় দূর হবে।

পুরোহিতের কথা শুনে সুমিত্রা একটু আস্বস্থ হয়। মুখে হাসি ফোটে ওর।
পুরোহিত আবার বলে ওঠেন। “হ্যাঁ মা..নিজের ছেলের প্রতি একটু ধ্যান রেখো। দেখবে ও তোমার সব দুঃখ দূর করবে”। আর তোমার স্বামী তো মা তোমাকে সম্মান করেনা। এমনিতেই। সেহেতু ওর থেকে একটু দূরত্বে থেকো। কেনোনা ও ঘোর রাহু। তোমার জীবন কে প্রভাবিত করবে।“
এবার তিনি সঞ্জয়ের দিকে তাকিয়ে বলেন..”কি…বালক…মা কে ভালোবাসবে তো…মায়ের গর্ব তুমি…। মাকে সুখী করে তোমার সামর্থ যাচাই করতে হবে।“

সঞ্জয় ও সুবোধ বালকের মতো মাথা নেড়ে হ্যাঁ বলে উত্তর দেয়।
পুরোহিত মশাই বলেন। “ওই দেখ মন্দিরে মা…জগতের মা। আর সামনে তোমার মা তোমার জগৎ। বুঝলে।
অবশেষে সুমিত্রা আর ছেলে সঞ্জয় তাকে প্রণাম করে নিজের বাড়ি ফেরে।

রাস্তায় আসতে আসতে সুমিত্রা, বৃদ্ধ পুরোহিতের কথা ভাবতে লাগলো। অনেক কথায় তার সত্য আবার অনেক কথায় ধোঁয়াশা।
তবে তিনি যে সাবধান বার্তা দিয়েছেন সেগুলো মাথায় রাখতে হবে…মনে মনে বলে সে। একবার মা কালী কে স্মরণ করে নেয় সে। বলে হে মা তুমি আমায় সমস্ত বিপদ থেকে রক্ষা করো।
সঞ্জয় মায়ের সাথে আসতে আসতে, মায়ের দিকে চেয়ে একটা প্রশ্ন করে। “মা…ওই দাদুটা কি বলছিলো….তোমাকে..”

সুমিত্রা ছেলের কথায় উত্তর দেয়। বলে…”শুনলি না…যে তিনি বলছিলেন…মাকে ভালোবাসতে…মায়ের খেয়াল রাখতে..সম্মান করতে”।
সঞ্জয় ওর মায়ের কথা শুনে উত্তর দেয়। বলে “মা আমি তোমাকে ভালোবাসিতো…!”
সুমিত্রা বলে “কোথায় রে….না তুমি আমার কথা শুনিস না..আমাকে সম্মান করিস..আর ঠিক মতো পড়াশোনা ও করিস না…শুধু ওই দস্যি ছেলে দের সাথে সারাদিন টো টো করে ঘুরে বেড়াস..”।

সঞ্জয় বলে “না আমি সত্যি খুবই ভালো বাসি মা…তোমাকে, তোমার মন খারাপ হলে আমার মন খারাপ হয়ে যায়।…আর ওরা দস্যি ছেলে নয় ওরা আমার ভালো বন্ধু…”।

সুমিত্রা মুচকি হাঁসে, বলে “আচ্ছা..!!”
সঞ্জয় হুম দিয়ে কথা শেষ করে।
সুমিত্রা মনে মনে পুরোহিতের বলা ভবিষ্য বাণী কথা আবার মনে করে। খুশি হয় যে ছেলের দ্বারা সুখী হবে সে একদিন।
দেখতে দেখতে সঞ্জয়ের পরীক্ষার সময় আবার সমীপে চলে এলো। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে সে আরও এক ক্লাস উঁচুতে উঠে যাবে। অষ্টম শ্রেণীতে পদার্পন হবে ওর।

মায়ের দেওয়া শক্ত নির্দেশ।
পরীক্ষা চলা কালীন বাইরে যাওয়া একদম নিষিদ্ধ। সুতরাং বন্ধু দের সাথে মেলা মেসা একদম বন্ধ।
সারাদিন ঘরের মধ্যেই পড়াশোনা করে সে।
সুমিত্রা নিয়ম মতো ছেলের জন্য খাবার দাবার ওর পড়ার ঘরেই দিয়ে চলে যায়।

ওর শুধু একটাই চিন্তা এই কয়দিনে স্বামী মদ খেয়ে এসে ঝামেলা না করে বসে। ছেলের খুবই অসুবিধা হয় ওতে। মন খারাপ হয়ে যায়। পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটে।
বলেনা…যেটা চাইনা, সেটাই ঘটে।
একদিন সেইরকম পরেশনাথ মদ খেয়ে হাজির। জড়ানো গলা আর টলোমলো শরীর।
ক্রোধী পরেশনাথের মুখে খিস্তি। শুধু সুমিতার অঙ্গ প্রত্যঙ্গের উপর কটূক্তি।

ভয় পেয়ে ওঠে সুমিত্রা। একবার চেয়ে দেখে সঞ্জয় ঠিক মতো পড়ছে কি না।
তৎক্ষণাৎ বাইরে বেরিয়ে স্বামীকে সামলানোর চেষ্টা করে।
বলে “কি…হয়েছে। চিৎকার করোনা। ছেলেটা পড়ছে। এইদিকে এসো”।
পরেশনাথ জড়ানো গলায় বলে ওঠে..”নিকুচি করেছে ওর পড়াশোনা…”।

সুমিত্রা, মাতাল স্বামীকে নিয়ে কুয়োর কাছে নিয়ে যায়। মাথায় জল ঢালে।
সঞ্জয় ও সেসময় নিজের পড়া বন্ধ করে, বাইরে কি হচ্ছে জানার উৎসাহ দেখায়। কিন্তু উপায় নেই। মায়ের আদেশ, পড়া ছেড়ে ওটা চলবে না।
ওদিকে সুমিত্রা বরের মাথায় ঠান্ডা জল ঢেলে দেয়। যাতে ওর নেশা শান্ত হয়।
তাসত্ত্বেও পরেশনাথ কুয়ো তলায় বসে বসে ওর বউকে গালাগালি দিতে থাকে…”খানিক মাগি….!!! তোর গুদ ফাটিয়ে দেবো আজ। দেখবো আজ তোর কত রস…”

সুমিত্রা তাতে বিচলিত হয়না, সে জানে এগুলো ওর দৈনন্দিন বেপার। তবুও নিজের ছেলে কে কি দৃষ্টান্ত দিতে চাই সে, সেটা ভেবেই ওর বর কে বলে, “বেশ…চুপ করো এবার। ছেলের পরীক্ষা চলছে, ও এইসব শুনলে পড়াতে মন বসবে না..”
বউয়ের কথার কোনো তোয়াক্কা করে না, পরেশনাথ।

মনের ইচ্ছা না থাকলেও অনেক সময় বরকে খুশি করার জন্য। দু পা ফাঁক করে শুতে হয় সুমিত্রা কে।
সে রাতেও তাকে ওটাই করতে হবে।
পরেশনাথ…অন্ধকারে বউয়ের গুপ্ত স্থানে হুড়মুড়িয়ে লিঙ্গ ঢোকানোর চেষ্টা করে। সুমিত্রার ও সে মুহূর্তে যৌন কামনা প্রবল হয়েছে। বর আজ তাকে অনেক ক্ষণ ধরে সঙ্গম করবে। অবশেষে তার তৃপ্তি হবে।

কিন্তু না পরেশনাথ, সুমিত্রার টাইট যোনির ভেতরে লিঙ্গ ঢোকানোর পরক্ষনেই। বীর্যস্খলন হয়ে গেলো।
অতৃপ্ত রয়ে গেলো। সুমিত্রা। মনে মনে একটা তীব্র বিরক্তি ভাব প্রকাশ করলো সে।
এতো উৎসাহ দেওয়ার পর, এমন কান্ড ঘটাবে কে জানত। অগত্যা তাকে অতৃপ্ত অবস্থা তেই ঘুমিয়ে পড়তে হলো।
[+] 8 users Like aaniksd's post
Like


Messages In This Thread
RE: সুন্দর শহরের ঝাপসা আলো - by aaniksd - 05-04-2024, 02:01 PM



Users browsing this thread: 8 Guest(s)