Thread Rating:
  • 4 Vote(s) - 3 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Interfaith Collection
#6
বিজয়া

আসছে বছর আবার হবে
আজ বিজয়া দশমী। চারিদিকে মায়ের চলে যাবার দুঃখ কিন্তু মনটা ভরসায় আছে যে মা আবার সামনের বছর আসবে। প্রতিবারের মতন মাকে বরণ করতে পাড়ার জন্য প্যান্ডেলে সস্ত্রীক গিয়েছিলাম। আমার স্ত্রীর নাম বিজয়া। নামটা আজকের দিনের সঙ্গে বেশ কাকতালীয়।
বিকেল প্রায় পাঁচটা বাজে। প্যান্ডেলে বেশ ভিড়। পুরো পাড়ার সধবা মহিলারা এসেছে মাকে বরণ করতে। বেশিরভাগেরই পরণে লাল পাড় সাদা সাড়ি এবং লাল ব্লাউজ, আমার স্ত্রীও তাই পড়েছে। বিজয়া আবার একটু মডার্ন, ব্লাউসটা স্লিভলেস। সবাই মিলে খুব আনন্দ করছি। পুরুষেরা কোলাকুলি করছে। মেয়েরা সিঁদুর খেলছে। মায়ের বরণ করে তারা মেতে উঠেছে নাচে।
আমার স্ত্রী বেশ ভালই নাচ করে। ক্লাসিক্যাল ড্যান্সের ছাত্রী ছিল। বিয়ের পরেও ওর নাচের প্রতি আগ্রহ কমেনি, আমিও কোনো বাধা দিতে চাইনি। ওকে অনেকবার বলেছি যে বাড়িতে একটা নাচের স্কুল খুলতে। হয়তো একদিন খুলবে। প্যান্ডেলের সামনের মাঠে সাংস্কৃতিক মঞ্চে ওরা পারফর্ম করছে। বিজয়ার পারফরম্যান্সের কিছু সময় বাকি ছিল।
আমি তার ফাঁকে একটু সাইড হয়ে একটা সিগারেট ধরালাম। আমার সিগারেট খাওয়া বিজয়ার একটুও পছন্দ নয়, তাই লুকিয়ে খাই। কিস করার সময় সিগারেটের গন্ধ ও সহ্য করতে পারে না, তাই পকেটে চুইংগাম রাখি। যাকগে, একটু পরেই বিজয়া মঞ্চে উঠলো। আমি সিগারেটটা ফেলে মঞ্চের সামনে চলে গেলাম।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের গানের সুরে বিজয়া নাচতে শুরু করলো। শাড়িটাকে ভালো করে কোমরে গোজা, যাতে কোনো অসুবিধে না হয়। বিজয়ার নাচ সত্যি বেশ ভালো। হাতের মুদ্রা, পায়ের স্টেপস চমৎকার। নির্মেদ কোমরে গোজা শাড়ির ফাঁক দিয়ে তার ফর্সা সাদা পেটের কিছু অংশ দেখে আমারতো প্রায় দাড়িয়ে গেলো। সুন্দর ভাবে নাচ শেষ করে বিজয়া নিচু হয়ে প্রণাম করলো। লো কাট ব্লাউজের মধ্যে দিয়ে সাদা দুধগুলো একটু উঁকি মারলো। আমার পাজামা তখন তাবু হয়ে গেছে।
নাচ শেষ করে সে মঞ্চের পিছনে চলে গেলো। আমি কোনরকমে আমার তাবুর দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ না করিয়ে একটু দূরে গিয়ে দাড়ালাম। তখনই আমার নজর পড়ল মাঠের পাশের রাস্তায়। একটা পুরনো মারুতি অমনি গাড়ি। তার ভিতরে বেশ কয়েকটি ছেলে বসে আছে। দেখে মনে হলো তারাও আমার বউয়ের ড্যান্স দেখছিল।
ছেলেগুলোকে কিন্তু চিনতে পারলাম না। আমাদের পাড়ার তো নয়। একটু ভালো করে লক্ষ্য করলাম। ভিতরে প্রায় ৮ বা ৯ জন। বয়স ১৬ থেকে ত্রিশের ওপর। বয়স অনুযায়ী গালে অল্প থেকে বড় দাড়ি। আরো ভালো করে দেখলাম। একজনকে চিনতে পেরেছি। বশির, আমাদের পাশের পাড়ার কসাইয়ের দোকানে দেখেছি। মোটামুটি ২০ বছর বয়স। একটু পরেই গাড়িটা চলতে শুরু করল আর কিছুক্ষনেই মোড় থেকে বাঁক নিয়ে চলে গেলো।
এটাই সমস্যা। মেয়ে দেখলেই এদের ছোকছোকানি শুরু হয়ে যায়। যাকগে, বিদেয় হয়েছে। কিছুক্ষনে প্রতিমা বিসর্জনে যেতে হবে। বিজয়াকে গিয়ে ডাকলাম।
– “কি গো! এবার তো বিসর্জনে যেতে হবে।”
– “হ্যাঁ রে বাবা, যাচ্ছি। চাবিটা একটু দাও, বরণ ডালাটা রেখে আসি।”
– “কি মুশকিল। চলো আমি তোমার সঙ্গে যাই।”
– “আ হা হা হা। তোমরা ছেলেরা ঠাকুর তলো লরিতে। আমি যাবো আর আসবো। মিনু বৌদিদের সঙ্গে ছোট লরিতে থাকবো। তোমরা তো বড় লরিতে মদ গিলবে।”
– “কি যে বলো।”
– “শোনো, আজকের জন্য ছাড় দিলাম। কাল থেকে যেনো এসব বায়না করবে না। দাও চাবিটা এবার।”
নিরুদ্দেশ
চাবিটা নিয়ে ও চলে গেলো। আমি অন্যদের সঙ্গে গল্পগুজব করতে লাগলাম। কিছক্ষনের মধ্যেই ঠাকুর তোলা হলো। লরিতে উঠার সাথে সাথেই বিষ্ণুদা একটা গ্লাস ধরিয়ে বলল “মেরে দে”। যদিও আরো দুটো মারলাম এর পরে। সবাই এসে গেছে। পাড়ার মেয়েরা পিছনের ছোট লরিতে উঠে পড়তেই “বলো দুগ্গা মাই কি” বলে লরি ছেড়ে দিল।
আমরা সবাই আনন্দ করছি। আমার চোখ গেলো পিছনের ছোট লরিটার দিকে। বিজয়াকে দেখতে পেলাম না। কি জানি, মদের নেশায় ঠাহর করতে পারছিনা বোধহয়। পকেট থেকে ফোনটা বার করে নম্বরটা ডায়াল করলাম। ফোনটা বেজেই গেলো, তুললো না। আমার মনটা যেনো কেমন কু দিয়ে উঠলো। সঙ্গে সঙ্গে লতা বৌদিকে ফোন করলাম।
– “হ্যাঁ বৌদি? আমি শুভম বলছি সামনের লরি থেকে। বিজয়াকে একটু দাও নাগো।”
– “দাড়াও ঠাকুরপো, এই বিজয়া, বিজয়া।”
আমি উৎকণ্ঠা ভরে অপেক্ষা করলাম। ওদিক থেকে লতা বৌদির গলা পাচ্ছি।
– “বিজয়া কইরে মিনু? তোর সঙ্গেই তো গেলো। নেই, লরিতে ওঠেনি? ও ঠাকুরপো, বিজয়া তো এখানে নেই গো। মনে হয় ও লরিতে উঠা মিস করেছে।”
– “আচ্ছা ঠিক আছে বৌদি।”
ফোনটা রেখেই হাঁক পারলাম লরি থামাতে। সুজনদাকে বললাম যে হয়তো বিজয়া লরিতে উঠতে পারেনি। ওরা এগোক, আমি ওকে বাইকে করে নিয়ে আসছি।
ততক্ষনে আমরা পাড়া থেকে বেশ কিছুটা দূরে চলে এসেছি। লরি থেকে লাফ দিয়ে নেমে আমি জোরে হাঁটতে শুরু করলাম প্যান্ডেলের দিকে। আবার ফোন করলাম কিন্তু ও তুললো না। ফোনটা কি সাইলেন্ট করে রেখেছে নাকি? ও তো এমন করে না। আমি পা চালিয়ে মণ্ডপে পৌছালাম। পুরো পাড়া থমথমে। বেশিরভাগ লোকই বিসর্জনে গেছে। বাকিরা পুজোর আগেই ছুটি কাটাতে চলে গেছিল।
প্যান্ডেলে ওকে না পেয়ে আমি হাঁটা লাগলাম বাড়ির দিকে। পাঁচ মিনিটেই বাড়ি পৌছালাম। কিন্তু বাড়ির গেটেতো তালা ঝুলছে। তারমানে ও বাড়ি থেকে বেরিয়েছে। তাহলে কি হেঁটেই লরির পিছনে গেলো? না, তাহলে আমি দেখতে পেতাম বা আমাকে ফোন করতো। তাহলে কি হলো?
মনটা যেন বসে গেলো, এক মুহূর্তের জন্য চোখে অন্ধকার দেখলাম। না, মনটাকে শক্ত করতেই হবে। ওকে খুঁজতেই হবে। সন্ধ্যা প্রায় সাড়ে ছয়টা বাজে, বেশ অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছে। বাইকটা বাইরেই ছিল, ভাগ্যিস চাবি ছিল আমার পকেটে। বাইকে করে বেরিয়ে পড়লাম। শোভাযাত্রার দিকে আর গেলাম না। ওদিকে তো পাইনি ওকে। সুজনদাকে ফোন করে বললাম যদি ও ওখানে যায় তাহলে যেনো ফোন করে। বাইক নিয়ে পাড়াটা একটা চক্কর মারলাম, কোথাও নেই।
Like Reply


Messages In This Thread
Interfaith Collection - by Nisat - 14-09-2023, 08:39 PM
RE: Interfaith Collection - by Nisat - 17-09-2023, 04:13 AM
RE: Interfaith Collection - by Nisat - 17-09-2023, 04:14 AM
RE: Interfaith Collection - by Nisat - 17-09-2023, 04:17 AM
RE: Interfaith Collection - by Nisat - 17-09-2023, 04:20 AM
RE: Interfaith Collection - by Nisat - 05-04-2024, 07:29 AM
RE: Interfaith Collection - by Nisat - 05-04-2024, 07:30 AM
RE: Interfaith Collection - by Nisat - 05-04-2024, 07:32 AM
RE: Interfaith Collection - by Nisat - 05-04-2024, 07:33 AM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)