22-03-2024, 11:41 AM
১ম পর্ব ~
ঢাকার নবীনগরের শহরাঞ্চল থেকে একটু ভিতরে গ্রাম্য পরিবেশে একটা দোতলা ডুপ্লেক্স বাড়ি। বাড়িটা বিশাল জায়গার ওপর নির্মিত, এর আশেপাশে প্রায় বেশিরভাগ ফাকা যায়গা এবং বাড়ির সামনের রাস্তার পাশে রয়েছে পানিতে পরিপূর্ণ একটি নদী।
বাড়ির মূল দরজার সামনে নিজের জীবনের তাগিদে দাড়িয়ে আছে কালো * ও * পরিহীত ২৩ বছর বয়সী একটি নারী সবাই তাকে সীমা বলেই চিনে। তার মূল উদ্দেশ্য এই বাড়ির বর্তমান মালিকের কাছে সাহায্য চাওয়া। বাড়ির দারোয়ান ভিতর থেকে অনুমতি নিয়ে মহিলাকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেয়। বাসার ভিতর প্রবেশ করলে ১৯,২০ বছর বয়সী একটি ছেলে তাকে ড্রইন রমে বসতে দেয়। এটিকে আসলে ড্রইন রুম বলা যাবে কিনা সন্দেহ পুরো রুমের ঠিক মাঝখানে একটা বড় কারুকার্য শোভিত টেবিল এবং তার বিপরীতে রয়েছে একটা রাজকীয় চেয়ার বা সিংহাসন বলা যায় এর পাশই রয়েছে ছোট একটি চেয়ার যেটিতে বসে আছে যুবকটি। বাকি টেবিলের সামনে রয়েছে ২০ জনের মতো বসার ব্যবস্থা। বাকি সবকিছু স্বাভাবিক যেমন একপাশে রান্নাঘর ডাইনইন টেবিল যা পর্দা দ্বারা আলাদা করা হলেও চেয়ারটির পেছন দিকে দেখা যায় দোতালায় যাওয়ার সিড়ি।
হঠাৎ এক পুরুষের ভয়ানক আত্ম চিৎকার ভেসে আসে সীমার বা দিকের একটি ঘর থেকে। যা ধিরে ধিরে বাড়তে থাকে যেন প্রবল ভাবে আঘাত করা হচ্ছে তাকে। ভয়ে সীমার কপালে ঘাম দেখা যায় গলা যেন শুকিয়ে গেছে পানি তৃষ্ণায়।সে তো এখানে আসার আগেই শুনেছিল এটি এমন একটা বাসা যেখানে বাস করে কিছু ভয়ানক হায়না আর এই হায়না গুলোকে পরিচালিত করে একটা সিংহ।
সীমার অবস্থা দেখে সামনে বসে থাকা যুবকটি তাকে আশ্বস্ত করে - ভয় পাবেন না ভাইজান আসছে অপেক্ষা করুন।
তার কথা শেষ হতেই দোতলার সিঁড়ি দিয়ে নামতে দেখা যায় সাদা পাঞ্জাবি পরিহিত এক বলবান পুরুষকে। ঊচ্চতায় তো ৬ ফুট হবেই। পেশিবহুল শরীর পাঞ্জাবির ভিতর থেকেও যেন জিম করা শরীরের প্রতিচ্ছবি দেখা যায়।লোকটার আসার সাথেই যেন পরিবেশ নিস্তব্ধ হয়ে গেল শুধু শোনা যাচ্ছে তার হাটার শব্দ। লোকটির হাটার শব্দ যেন ভয়ানক হবেই না কেন এতগুলো খু'ন, বড় বড় সন্ত্রা'সীরা যার অধিনে, তার ভয়ানক চোখের চাহনি যেখানে পড়েছে সব ধ্বংস করে দিয়েছে। একদিকে সাধারণ লোকের জন্য তিনি যেমন ফেরেশতা স্বরূপ তেমনি কিছু লোকের কাছে কাছে সে জমের চেয়েও বেশি। কিন্তু শুধু তার কাছের লোকগুলো এবং শত্রুরা জানে সুলতান ভাই ঠিক কতোটা ভয়ানক।
সুলতান নামটা দেয়া সাধারণ জনগণের। কারণ তার চলাফেরা,তেজ,সহিংস'তা কোনো সুলতানের চেয়ে কম নয়।
সুলতান তার চেয়ারে বসলে সীমা দাড়িয়ে সালাম দেয়। সুলতান গম্ভীর কণ্ঠে সালাম নিয়ে মেয়েটির সমস্যা খুলে বলতে বলে।
- আমি সীমা। দেড় বছর হয়েছে আমার বিয়ের। আমার স্বামী অনেক ভালো মানুষ ছিলেন ৬ মাস আগে তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। তার মৃত্যুর পরে দীপক পাল নামের এক লোক কিছু কাগজ পত্র নিয়ে আমার কাছে আসে এবং জানায় তিনি আমার স্বামী কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা পাবেন। ব্যাবসার জন্য আমার স্বামী তার কাছ থেকে এই টাকাগুলো নিয়েছিল এবং সব প্রমান ও দেখায়। এসব জানার পর আমার স্বামীর ভাইয়েরা আমার ও শ্বাশুড়ি মার উপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। প্রথমে দিপক পালের কাছে সময় চাইলে তিনি সময় দেন কিন্তু বর্তমানে...
এটুকু বলে সীমা থেমে যায় তার চোখ থেকে পানি পড়তে শুরু করে সীমা আবার বলা শুরু করে।
-দু সপ্তাহ থেকে দিপক পাল টাকার জন্য জোর দেয়া শুরু করে এবং কাল লোকজন এনে আমাদের একমাত্র দোকান দখল করে এবং লোকজনের আড়ালে আমাকে খারাপ প্রস্তাব দেয় সাথে খারাপ ভাবে স্পর্শ করে।
সুলতান সবটা শুনে পাশে বসা যুবক আসিফের দিকে তাকায় এবং দিপক পালের সব ইনফরমেশন যোগাড় করতে বলে।
আসিফ - ভাইজান দিপক পালকে কি তুলে নিয়ে আসবো?
সুলতান ভয়ানক হাসি দিয়ে বলে - আমি নিজে যাবো।
এবং সীমাকে বলে - কালকের মধ্যে আপনার দোকান আপনি পেয়ে যাবেন পাশাপাশি দিপকও ওর প্রাপ্য পাবে। এখন নিশ্চিন্তে বাসায় যান।
সীমা একজোড়া হাতের বালা ও স্বর্ণের চেন ব্যাগ থেকে বের করে আসিফের দিকে বাড়িয়ে দেয় কিন্তু সুলতান তা ফিরিয়ে দেয় এবং গম্ভীর কণ্ঠে বলে কাজ শেষে সে চেয়ে নিবে যা দরকার।
সীমা প্রস্থানের দশ মিনিটের মধ্যে আসিফ দিপকের সব ইনফরমেশন যোগাড় করে সুলতানকে দেয়। সুলতান নিজের ছেলেপেলে নিয়ে দিপকের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
বাকি আগামী পর্বে.....