19-03-2024, 09:04 PM
সুনির্মল – আজকের গোটা দিনটাই এককথায় বেকার গেল। যদিও সন্ধ্যের পর থেকে একটু ভালো চলছিল। কিন্তু বাড়ি ফেরার পর আবার যে কে সেই। রাই মাঝেমধ্যে এমন ওভার রিঅ্যাক্ট করে ফেলে, যে বলার কথা নয়। ও যে একজন পুরুষ মানুষ, তার উপর ওর বর, সেটাই বোধহয় মাঝে মাঝে ও ভুলে যায়। শোওয়ার ঘরে বিছানায় শুয়ে শুয়ে এই কথাগুলোই ভাবছিল। এই যে একটু আগে রাই যেটা করল ওর সাথে, সেটা কি উচিত হয়েছে? না হয় একটু আধটু ড্রিঙ্ক করেছে, তাতে কি এমন মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল, সেটাই ও বুঝে উঠতে পারছে না। ও কি বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে মেলামেশা করা, একটু আনন্দ ফূর্তি করাও বন্ধ করে দেবে? তাও তো এখন শুধু অফিস থেকে ঘর। আর ঘর থেকে অফিস। এর বাইরে জগৎ আছে বলে তো ভুলেই গেছে একপ্রকার। আর বন্ধু বলতে তো ঐ একজনই। তাপস। ওর পাল্লায় পড়ে মাঝেসাঝে এক-দু পাত্তর হয়। সব কথা কি ধরলে হয় রে বাপু। রাই কেমন জানি একটা হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। আগে কিন্তু এরকম মোটেও ছিল না। এখন সব কথা ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে ধরে। আর মুখের উপরে উত্তর দেয়। এই যেমন আজকে সকালেই। রোজই চান টান করে দেখে রাই ব্রেকফাস্ট রেডী করে উঠতে পারে না। তার ফলে রোজই ওর অফিস যেতে দেরী হয়। সেই কথাটাই ও আজকে রাইকে বলেছিল। তার উত্তরে রাই ওকে একগাদা কথা শুনিয়ে দিয়েছিল। তার উত্তরও ওর কাছেও ছিল। কিন্তু ঐ যে বলে না, কথায় কথা বাড়ে। তাই ও আর কথা বাড়ায় নি। কিন্তু অফিসে গিয়েও কি শান্তি আছে? বসের ধাঁতানি ওর কপালে বাঁধা। টিফিন টাইমে ও আর তাপস একই সঙ্গে টিফিন করে। তাপস ব্যাচেলর। বিয়ে করেনি। বয়স ওরই মতো হবে। তিনকূলে কেউই নেই। একদম ঝাড়া হাত পা। ব্যাটার ঐ জন্যেই অত ডাঁট। বিয়ে করলে বুঝতে পারত। সে যাই হোক। রোজই টিফিনের সময় বিভিন্ন জিনিস নিয়ে ওদের মধ্যে কথা হয়। খেলা-সিনেমা-পলিটিক্স সবরকমের পাঁচমেশালী কথা হয়। আজকের বিষয় ছিল সেক্স। এই জিনিসটা নিয়ে এত কানাঘুষো হয় কেন, সেটা ও আজও বুঝতে পারেনি। ওর জীবনে রাইই একমাত্র নারী। কলেজে ওর থেকে জুনিয়র ছিল। তবে প্রেমটা বেশ মাখো মাখোই ছিল দুজনের। রাইকে প্রথম কিস করাটাও ওর মনে আছে। তখন ওরা দুজনেই কলেজে পড়ে। সেই বছর রিলিজ হল শাহরুখ খানের বীর-জারা। রাই যাকে বলে শাহরুখের অন্ধ ভক্ত। আর ও আমীরের। তবুও রাইয়ের বায়না রাখতে দুজনে গিয়েছিল সিনেমাটা দেখতে। তখন চারিদিকে এত মাল্টিপ্লেক্সের রমরমা ছিল না। আর থাকলেও, মাল্টিপ্লেক্সে সিনেমা দেখার মত রেঁস্ত ওর পকেটে ছিল না। কলেজের কাছেই একটা সিঙ্গল স্ক্রিণে দুপুরের শোতে গিয়েছিল ওরা। টিকিটটা কেটে দিয়েছিল কিন্তু তাপসই। একমাত্র সে-ই জানত ওদের প্রেমের কথা। টিকিট দুটো ওর হাতে ধরিয়ে দিয়ে কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস করে বলেছিল, “কর্ণারের টিকিট আছে কিন্তু। এবার আর গান্ডুর মতো শুধু সিনেমা দেখেই ফিরে আসিস না যেন। বন্ধুর মুখটা রাখিস, ভাই।” প্রথমে বন্ধুর মুখে এই কথা, তার উপরে মুচকি হাসি দেখে সেদিন সত্যিই ওর লজ্জা লাগছিল। ওর স্পষ্ট মনে আছে সেদিনের টিকিটের টাকাটা আজও তাপসকে দিয়ে ওঠা হয়নি। ও-ও চায়নি অবশ্য। সে যাই হোক। কথাটা বলেই তাপস চলে গিয়েছিল ওখান থেকে। ও চলে যেতেই রাই জিজ্ঞাসা করেছিল, “তোমার কানে কানে কি বলে গেল গো?” ও কথা ঘুরিয়ে বলেছিল, “ও কিছু না। চলো। শো শুরু হয়ে যাবে।” রাই আর কোনো কথা বলেনি। কেবল মাত্র একবার ভ্রু দুটো কুঁচকে ওর দিকে তাকিয়েছিল। রাই কি কিছু বুঝতে পেরেছিল সেদিন? এইকথাটা ও কোনোদিন রাইকে জিজ্ঞাসা করেনি। কি হবে সব কথা জেনে? সিনেমা হলের অন্ধকার ঘরটাতে ঢুকতে গিয়ে ওর সেদিন কি ভয়ই না পাচ্ছিল। আজ সেসব কথা মনে পড়লে হাসি পায়। এর আগে অনেকবার রাইয়ের সঙ্গে একলা সিনেমা দেখতে গেছে। কোনোবার এরকম ফিলিংস হয়নি। আজ মনে হচ্ছে কি যেন একটা নিষিদ্ধ কাজ করতে চলেছে ও। রাইয়ের হাতটাকে শক্ত করে নিজের মুঠোয় ঢুকিয়ে নিয়ে চুপচাপ নিজেদের সিটে গিয়ে বসল। একে দুপুরের শো। তার উপরে কর্ণার সিট। সোনায় সোহাগা যাকে বলে। মনে মনে তাপসকে থ্যাঙ্কস জানতে ভোলেনি। কাছে পিঠে লোকজন বিশেষ নেই। যে কজন আছে সবই ছড়িয়ে ছিটিয়ে। ওদের দু তিনটে রো আগে আরো দুজন বসে আছে। দেখেই বোঝা যায় কাপল। হয়তো ওদের মতোই কলেজ কেটে সিনেমা দেখতে এসেছে। হয়তো ওদেরও কোনো বন্ধুই টিকিটি কেটে এনে দিয়েছে। হবে হয়তো। সিনেমা শুরু হল। পর্দা জুড়ে বুড়ো শাহরুখকে দেখেই রাইয়ের কি চিৎকার! পারলে সিট ছেড়ে পর্দার উপরে গিয়ে পড়ে। অনেক কষ্টে শান্ত করে বসাতে হয় ওকে। কিন্তু এক একটা সিনে বাচ্চা মেয়ের মত হাততালি দিয়ে উঠছে। যদিও তাতে কারোরই অসুবিধা হচ্ছে না। সবাই ওর মতই মজা নিচ্ছে। ইন্টারভ্যালের পর ও উঠে গিয়ে এক প্যাকেট পপ কর্ণ কিনে আনল। সিনেমা আবার শুরু হতেই রাই একটা করে নিজে খাচ্ছে, আর একটা করে ওকে খাইয়ে দিচ্ছে। ওর মন কিন্তু সিনেমায় নেই। বারবার তাপসের বলা কথাগুলো মনে আসছে। একবার আড়চোখে দেখল রাইয়ের চোখ পর্দার সাথে সেঁটে গেছে। ও আলতো করে ওর ডানহাতটা রাখল রাইয়ের বাঁ পায়ের উপরে। এর আগে ও অনেকবার রাইয়ের শরীর ছুঁয়েছে। কখনও অজান্তে। আবার কখনও জেনে শুনে। কিন্তু আজকের স্পর্শটাই যেন আলাদা। ওর গোটা শরীর জুড়ে একটা শিহরণ খেলে গেল। বুকের মধ্যে কিছু একটা লাবডুব করে যাচ্ছে অনবরত। গলার কাছে দলা পাকিয়ে আছে কিছু একটা। এরপরেই একটা চমক। রাই একটা আলতো হাত রাখলো ওর হাতের উপরে। রাইয়ের গরম হাতের স্পর্শ যেন ওর শরীরের ছ্যাঁকা লাগিয়ে দিচ্ছে। ও চাইছে নিজের হাতটা সরিয়ে নিতে। কিন্তু পারছে না। রাই এখন শক্ত করে ওর হাতটা ধরে আছে। ও শরীরের সব ইন্দ্রিয় দিয়ে বুঝতে পারল সময় উপস্থিত। তিলার্ধ সময়ও অপচয় না করে ডানহাতটা দিয়ে রাইয়ের পাতলা কোমরটা ধরে নিজের দিকে টান দিল আলতো করে। রাই কোনো বাধা দিল না। কেবল একবার ওর চোখের দিকে তাকালো। তারপর ধীরে ধীরে নিজের চোখদুটোর বন্ধ করে নিল। ও নিজের মুখটা রাইয়ের মুখের আরো কাছে নিয়ে গেল। চেষ্টা করল ওর নরম ঠোঁট দুটো ছোঁয়ার। পারল না। চেয়ারের হাতল দুটো খামোকা বাধা সৃষ্টি করছে। বিরক্ত হয়েই রাইয়ের শরীরটাকে নিজের দিকে টেনে নিতে চাইল আরো কিছুটা। তাতে বিপদ আরো বাড়ল। ওর আচমকা টানে টাল সামলাতে না পেরে রাইয়ের শরীরটা হুমড়ি খেয়ে পড়ল ওর বুকের উপরে। নিজের বুকের মাঝে সেই প্রথমবার টের পেয়েছিল রাইয়ের নরম বুকদুটোর কোমল স্পর্শ। চুড়িদারের তলায় ব্রা। আর ব্রা ভেদ করে নরম বুকদুটোর স্পর্শ অনুভব করতে পারছিল ও। এতকিছুর পরেও রাই চোখ খোলেনি। এতক্ষণে ওর ঠোঁটদুটো নাগালের মধ্যে এসেছে। এই সুযোগ। আর দেরী না করে রাইয়ের ঠোঁটদুটোর উপরে নামিয়ে আনল নিজের ঠোঁটদুটোকে।
বালিশের পাশে পড়ে থাকা ফোনটা হাতে তুলে দেখল, এখন ন’টা বেজে ষোলো মিনিট। বাইরের ঘর থেকে টিভির আওয়াজ ভেসে আসছে। রাই এখন সিরিয়ালে মত্ত। বিছানা থেকে উঠে বিড়ালের মত করে পা টিপেটিপে দরজার কাছে গিয়ে পৌঁছাল। একবার বাইরে উঁকি মেরে দেখল। রাই সোফায় বসে টিভি দেখছে একমনে। সন্তর্পণে দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে ছিটকিনি তুলে দিল। সাবধানের মার নেই। বিছানায় ফিরে এসে ফোনটা হাতে নিয়ে প্রথমেই অ্যাপটা খুলে ফেলল। ইউজার নেম আর পাসওয়ার্ড লিখে লগ ইন করল। Cupid69। নামটা তাপসই দিয়েছে। শালা, জাতে মাতাল হলেও তালে কিন্তু একদম ঠিকঠাক। কিউপিড হচ্ছে নাকী রোমানদের প্রেমের দেবতা। এসব বিষয়ে শালার জ্ঞান প্রচুর। ও এসব জানে শোনে না খুব একটা। “আর 69 টা কেন দিলাম, সেটা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছিস...” বলে ওর দিকে চোখ মেরে খানিকক্ষণ খিকখিক করে হাসল হারামীটা।
- “দাঁত না কেলিয়ে বলবি এটা কী?” বিরক্ত হয়ে জিজ্ঞাসা করল।
- “গুপিযন্ত্র!!” বলে আরেক দফা খিকখিক করে হাসল তাপস।
- “ধুর বাল! বলবি তো বল, তা নাহলে আমি এখনই ডিলিট করে দিচ্ছি।” তাপসের হাত থেকে ফোন ছিনিয়ে নিতে গিয়েও পারল না।
- “অ্যাই খবরদার। একদম ডিলিট করবি না, বলে দিচ্ছি। আমার দিব্যি রইল।” মেয়েদের মত গলা করে বলল তাপস।
- “শালা, মালের ঘোরে আবার ফালতু বকছিস?”
- “যখন এটা চালাবে, তখন বুঝবে কে ফালতু বকছে।”
বলে নিজেই কিসব টেপাটেপি করতে শুরু করল ওর ফোনে। তারপর একটু পরে ওর কোলের উপরে ফোনটাকে ছুঁড়ে দিয়ে বলল, “এই নে, তোর প্রোফাইলটা যা তৈরী করে দিয়েছি না, দেখবি এক একজন মাল এসে ভীড় করছে। তুই শুধু বাবু হয়ে বসে শো দেখে যাবি। আর এঞ্জয় করে যাবি।”
- “আমি কিন্তু এখনও বুঝতে পারছি না, এটায় কি হয়। আলবাল না বকে, বলনা বাবা, এটার কাজটা কি।” বন্ধুর কাছে কাতর মিনতি জানায় ও।
- “তুই পানু দেখেছিস কখনো?” হঠাৎ জিজ্ঞাসা করল তাপস।
- “মানে!?”
- “মানে পানু, ব্লু ফিল্ম, নোংরা ছবি, যাতে ছেলে মেয়েরা মিলে ‘ইয়ে’ করে রে, গান্ডু।” দাঁত খিঁচিয়ে বলে তাপস।
- “পানু মানে কি আমি তা জানি। আমি বলতে চাইছি এই কথা হঠাৎ জিজ্ঞাসা করছিস কেন?” বন্ধুকে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করে।
- “কারণ আছে। বলনা বাবা, দেখেছিস নাকি।” অধৈর্য হয়ে বলে তাপস।
- “দেখেছি।” বাধ্য হয়ে বলে ও।
- “লাইভ দেখেছিস কখনো? মানে তোর নিজের নয়, অন্য কারোর। ধর। তুই বসে আছিস একটা চেয়ারে। আর তোর সামনে একটা ছেলে আর একটা মেয়ে সেক্স করছে। একদম খুল্লামখুল্লা। যেমনটা পানুতে দেখায় সেরকম। কিন্তু এখানে এটা লাইভ। যেন চাইলেই তুই হাত বাড়ালে তাদের স্পর্শ করতে পারবি। ছুঁতে পারবি। তুই চাইলে ওদের যা খুশী অর্ডার করতে পারিস। তুই যেমন যেমন অর্ডার করবি, ওরা তেমন তেমন করেই করবে। বাধ্য ছেলেমেয়ের মত।”
- “বলিস কি?!!” এইটুকু শুনেই ওর কপালে চোখ উঠে যায়।
- “তাহলে আর বলছি কি? শুধু তাইই নয়, তুই চাইলে ওদের সঙ্গে ইনভল্ভও হতে পারবি। অবশ্য তারা যদি এমনটা চায় তবেই। আর তার জন্য পকেট একটু খালি করতে হবে।”
- “তুই তাহলে এসবের কথা বলছিলিস এতক্ষণ?” এখনও ওর এসব বিশ্বাস হয় না।
- “তবে আর বলছি কি, প্রতি রাতে আমার শোওয়ার ঘরে আমার প্রাইভেট শো চলে। বুঝেছিস? তোকেও একদিন দেখাবো।”
- “আমিও এটা করতে পারবো?”
- “আলবৎ পারবি। তাই তো বলছি, এটা অ্যাপ নয়, আলাদিনের চিরাগ। কেবল ঠিকমতো করে ঘষতে জানা চাই। বুঝলি গান্ডু?”
লগইন করার পর ও সোজা চলে গেল পার্টনার সাজেশন অপশনে। এই অ্যাপের প্রতিটা ঘাঁতঘোঁত ওকে তাপস বুঝিয়ে দিয়েছে। এও বুঝিয়ে দিয়েছে কীভাবে চার ফেলে মাছ ধরতে হয়। আর সেই মাছকে কিভাবে খেলিয়ে পাড়ে মানে বিছানায় তুলতে হয়। তাপসের কথা অনুযায়ী ও প্রথমেই কম বয়সী মেয়ের প্রোফাইল খুঁজতে শুরু করল। ২৩-২৪-২৫-২৬ যাই হোক। এর বেশী নয়। সাজেশন অপশনে অনেকগুলো প্রোফাইল ভীড় করে এসেছে। একটা সুবিধে আছে অবশ্য। লোকেশন কলকাতা হওয়ার কারণে সবই নিশ্চয়ই কাছেপিঠের হবে। দেখেশুনে গোটা ছয়েক প্রোফাইলে পার্টনার রিকোয়েস্ট সেন্ড করল। তারমধ্যে একটা অল্পক্ষণের মধ্যেই অ্যাকসেপ্টও করল ওর রিকোয়েস্ট। এত তাড়াতাড়ি যে ব্যাপারটা হবে সেটা ও বুঝতে পারেনি। প্রোফাইলটায় ঢুকতেই নামটা আগে পড়ল ও। Aphrodite24। ২৪ বছরের মেয়ে। নামের মানেটা বুঝতে পারল না। প্রোফাইলটা দেখেও কিছু বুঝতে পারল না। কিন্তু কি করা যায়। তাপসের গুরুবাক্য মনে পড়ল। চার ফেলতে হবে। তাড়াতাড়ি চ্যাট অপশনে গিয়ে লিখল, “Hi, Aphrodite, want to be my friend?” টাইপ করার সময় ওর আঙ্গুলগুলো থর থর করে কাঁপছিল। বুকটা ঢিবঢিব করছে। সেন্ড করার পর অল্প কিছুক্ষণের বিরতি। ও ভেবেছিল ওপাশ থেকে হয়তো কোনো জবাব আসবে না। কিন্তু উত্তর এল। এবং প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই এলো বলা চলে। জবাবটা পড়ে ও নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছে না। দুটো শব্দে উত্তর লেখা আছে। “Of Course.” এত তাড়াতাড়ি যে ফিরতি জবাব পাবে সেটা ও একদমই আঁচ করতে পারেনি। এরপর কি লেখা যায় এটা ভাবতেই কিছুটা সময় কেটে গেল। কিছুটা একটা লিখতে হবে। তা নাহলে ওপাশের মেয়েটা কি ভাববে? কি ক্যাবলা রে বাবা! চ্যাট করতেও জানে না। ও তাড়াতাড়ি টাইপ করতে লাগল। “Are you free now? Want to talk with you.” এবার ও আশা করেছিল সদর্থকই কোনো জবাব আসবে। কিন্তু এবার ওকে নিরাশ হতে হল। কারন আবার দুটো শব্দেই উত্তর এসেছে। কিন্তু এবার উল্টো। “Not Now.” জবাবটা পড়ে বেশ কিছুটা দমে গেল ও। কিন্তু এভাবে হেরে গেলে তো হবে না। কিছু একটা লিখতে যাবে, হঠাৎই প্রোফাইলটা ইনঅ্যাকটিভ হয়ে গেল। মনটা সত্যি করেই খারাপ হয়ে গেল। বোধহয় ও একটু তাড়াহুড়ো করে ফেলেছে। যাইহোক পরে আবার চেষ্টা করে দেখতে হবে। ফোনটা রেখে দিতে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই অ্যাপে একটা নোটিফিকেশন এল। Eisheth26 accepts your request. Now you can chat with HER. Eisheth26। আগেরটার মতো এর মানেও ও বুঝতে পারল না। তবে আবার আগের মতোই চ্যাটে “Hi, Eisheth, want to be my friend?” লিখে পাঠাল। কিন্তু এবারে ফল হল উল্টো। একটু পরেই জবাব এলো। “Fuck off, Pimp.” ও বুঝতে পারল এটা শক্ত ঘাঁটি। সময় দিতে হবে। আবারও নিরাশ হয়ে ফোনটা রেখে দিতে যাচ্ছিল। কিন্তু বিধি বাম। এবারেও তা পারল না। কারণ একটা নতুন চ্যাট এসে জমা হয়েছে ওর চ্যাট বক্সে। তাড়াতাড়ি সেটা খুলে দেখল আবার অ্যাফ্রোডাইট। চ্যাটে লেখা রয়েছে। “Now I am free. We can talk freely.” নতুন করে একটা জোশ খেলে গেল ওর মনের মধ্যে। ফোনের স্ক্রিণের উপরে প্রায় হুমড়ি খেয়ে পড়ে টাইপ করতে শুরু করল সুনির্মল।
বালিশের পাশে পড়ে থাকা ফোনটা হাতে তুলে দেখল, এখন ন’টা বেজে ষোলো মিনিট। বাইরের ঘর থেকে টিভির আওয়াজ ভেসে আসছে। রাই এখন সিরিয়ালে মত্ত। বিছানা থেকে উঠে বিড়ালের মত করে পা টিপেটিপে দরজার কাছে গিয়ে পৌঁছাল। একবার বাইরে উঁকি মেরে দেখল। রাই সোফায় বসে টিভি দেখছে একমনে। সন্তর্পণে দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে ছিটকিনি তুলে দিল। সাবধানের মার নেই। বিছানায় ফিরে এসে ফোনটা হাতে নিয়ে প্রথমেই অ্যাপটা খুলে ফেলল। ইউজার নেম আর পাসওয়ার্ড লিখে লগ ইন করল। Cupid69। নামটা তাপসই দিয়েছে। শালা, জাতে মাতাল হলেও তালে কিন্তু একদম ঠিকঠাক। কিউপিড হচ্ছে নাকী রোমানদের প্রেমের দেবতা। এসব বিষয়ে শালার জ্ঞান প্রচুর। ও এসব জানে শোনে না খুব একটা। “আর 69 টা কেন দিলাম, সেটা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছিস...” বলে ওর দিকে চোখ মেরে খানিকক্ষণ খিকখিক করে হাসল হারামীটা।
- “দাঁত না কেলিয়ে বলবি এটা কী?” বিরক্ত হয়ে জিজ্ঞাসা করল।
- “গুপিযন্ত্র!!” বলে আরেক দফা খিকখিক করে হাসল তাপস।
- “ধুর বাল! বলবি তো বল, তা নাহলে আমি এখনই ডিলিট করে দিচ্ছি।” তাপসের হাত থেকে ফোন ছিনিয়ে নিতে গিয়েও পারল না।
- “অ্যাই খবরদার। একদম ডিলিট করবি না, বলে দিচ্ছি। আমার দিব্যি রইল।” মেয়েদের মত গলা করে বলল তাপস।
- “শালা, মালের ঘোরে আবার ফালতু বকছিস?”
- “যখন এটা চালাবে, তখন বুঝবে কে ফালতু বকছে।”
বলে নিজেই কিসব টেপাটেপি করতে শুরু করল ওর ফোনে। তারপর একটু পরে ওর কোলের উপরে ফোনটাকে ছুঁড়ে দিয়ে বলল, “এই নে, তোর প্রোফাইলটা যা তৈরী করে দিয়েছি না, দেখবি এক একজন মাল এসে ভীড় করছে। তুই শুধু বাবু হয়ে বসে শো দেখে যাবি। আর এঞ্জয় করে যাবি।”
- “আমি কিন্তু এখনও বুঝতে পারছি না, এটায় কি হয়। আলবাল না বকে, বলনা বাবা, এটার কাজটা কি।” বন্ধুর কাছে কাতর মিনতি জানায় ও।
- “তুই পানু দেখেছিস কখনো?” হঠাৎ জিজ্ঞাসা করল তাপস।
- “মানে!?”
- “মানে পানু, ব্লু ফিল্ম, নোংরা ছবি, যাতে ছেলে মেয়েরা মিলে ‘ইয়ে’ করে রে, গান্ডু।” দাঁত খিঁচিয়ে বলে তাপস।
- “পানু মানে কি আমি তা জানি। আমি বলতে চাইছি এই কথা হঠাৎ জিজ্ঞাসা করছিস কেন?” বন্ধুকে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করে।
- “কারণ আছে। বলনা বাবা, দেখেছিস নাকি।” অধৈর্য হয়ে বলে তাপস।
- “দেখেছি।” বাধ্য হয়ে বলে ও।
- “লাইভ দেখেছিস কখনো? মানে তোর নিজের নয়, অন্য কারোর। ধর। তুই বসে আছিস একটা চেয়ারে। আর তোর সামনে একটা ছেলে আর একটা মেয়ে সেক্স করছে। একদম খুল্লামখুল্লা। যেমনটা পানুতে দেখায় সেরকম। কিন্তু এখানে এটা লাইভ। যেন চাইলেই তুই হাত বাড়ালে তাদের স্পর্শ করতে পারবি। ছুঁতে পারবি। তুই চাইলে ওদের যা খুশী অর্ডার করতে পারিস। তুই যেমন যেমন অর্ডার করবি, ওরা তেমন তেমন করেই করবে। বাধ্য ছেলেমেয়ের মত।”
- “বলিস কি?!!” এইটুকু শুনেই ওর কপালে চোখ উঠে যায়।
- “তাহলে আর বলছি কি? শুধু তাইই নয়, তুই চাইলে ওদের সঙ্গে ইনভল্ভও হতে পারবি। অবশ্য তারা যদি এমনটা চায় তবেই। আর তার জন্য পকেট একটু খালি করতে হবে।”
- “তুই তাহলে এসবের কথা বলছিলিস এতক্ষণ?” এখনও ওর এসব বিশ্বাস হয় না।
- “তবে আর বলছি কি, প্রতি রাতে আমার শোওয়ার ঘরে আমার প্রাইভেট শো চলে। বুঝেছিস? তোকেও একদিন দেখাবো।”
- “আমিও এটা করতে পারবো?”
- “আলবৎ পারবি। তাই তো বলছি, এটা অ্যাপ নয়, আলাদিনের চিরাগ। কেবল ঠিকমতো করে ঘষতে জানা চাই। বুঝলি গান্ডু?”
লগইন করার পর ও সোজা চলে গেল পার্টনার সাজেশন অপশনে। এই অ্যাপের প্রতিটা ঘাঁতঘোঁত ওকে তাপস বুঝিয়ে দিয়েছে। এও বুঝিয়ে দিয়েছে কীভাবে চার ফেলে মাছ ধরতে হয়। আর সেই মাছকে কিভাবে খেলিয়ে পাড়ে মানে বিছানায় তুলতে হয়। তাপসের কথা অনুযায়ী ও প্রথমেই কম বয়সী মেয়ের প্রোফাইল খুঁজতে শুরু করল। ২৩-২৪-২৫-২৬ যাই হোক। এর বেশী নয়। সাজেশন অপশনে অনেকগুলো প্রোফাইল ভীড় করে এসেছে। একটা সুবিধে আছে অবশ্য। লোকেশন কলকাতা হওয়ার কারণে সবই নিশ্চয়ই কাছেপিঠের হবে। দেখেশুনে গোটা ছয়েক প্রোফাইলে পার্টনার রিকোয়েস্ট সেন্ড করল। তারমধ্যে একটা অল্পক্ষণের মধ্যেই অ্যাকসেপ্টও করল ওর রিকোয়েস্ট। এত তাড়াতাড়ি যে ব্যাপারটা হবে সেটা ও বুঝতে পারেনি। প্রোফাইলটায় ঢুকতেই নামটা আগে পড়ল ও। Aphrodite24। ২৪ বছরের মেয়ে। নামের মানেটা বুঝতে পারল না। প্রোফাইলটা দেখেও কিছু বুঝতে পারল না। কিন্তু কি করা যায়। তাপসের গুরুবাক্য মনে পড়ল। চার ফেলতে হবে। তাড়াতাড়ি চ্যাট অপশনে গিয়ে লিখল, “Hi, Aphrodite, want to be my friend?” টাইপ করার সময় ওর আঙ্গুলগুলো থর থর করে কাঁপছিল। বুকটা ঢিবঢিব করছে। সেন্ড করার পর অল্প কিছুক্ষণের বিরতি। ও ভেবেছিল ওপাশ থেকে হয়তো কোনো জবাব আসবে না। কিন্তু উত্তর এল। এবং প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই এলো বলা চলে। জবাবটা পড়ে ও নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছে না। দুটো শব্দে উত্তর লেখা আছে। “Of Course.” এত তাড়াতাড়ি যে ফিরতি জবাব পাবে সেটা ও একদমই আঁচ করতে পারেনি। এরপর কি লেখা যায় এটা ভাবতেই কিছুটা সময় কেটে গেল। কিছুটা একটা লিখতে হবে। তা নাহলে ওপাশের মেয়েটা কি ভাববে? কি ক্যাবলা রে বাবা! চ্যাট করতেও জানে না। ও তাড়াতাড়ি টাইপ করতে লাগল। “Are you free now? Want to talk with you.” এবার ও আশা করেছিল সদর্থকই কোনো জবাব আসবে। কিন্তু এবার ওকে নিরাশ হতে হল। কারন আবার দুটো শব্দেই উত্তর এসেছে। কিন্তু এবার উল্টো। “Not Now.” জবাবটা পড়ে বেশ কিছুটা দমে গেল ও। কিন্তু এভাবে হেরে গেলে তো হবে না। কিছু একটা লিখতে যাবে, হঠাৎই প্রোফাইলটা ইনঅ্যাকটিভ হয়ে গেল। মনটা সত্যি করেই খারাপ হয়ে গেল। বোধহয় ও একটু তাড়াহুড়ো করে ফেলেছে। যাইহোক পরে আবার চেষ্টা করে দেখতে হবে। ফোনটা রেখে দিতে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই অ্যাপে একটা নোটিফিকেশন এল। Eisheth26 accepts your request. Now you can chat with HER. Eisheth26। আগেরটার মতো এর মানেও ও বুঝতে পারল না। তবে আবার আগের মতোই চ্যাটে “Hi, Eisheth, want to be my friend?” লিখে পাঠাল। কিন্তু এবারে ফল হল উল্টো। একটু পরেই জবাব এলো। “Fuck off, Pimp.” ও বুঝতে পারল এটা শক্ত ঘাঁটি। সময় দিতে হবে। আবারও নিরাশ হয়ে ফোনটা রেখে দিতে যাচ্ছিল। কিন্তু বিধি বাম। এবারেও তা পারল না। কারণ একটা নতুন চ্যাট এসে জমা হয়েছে ওর চ্যাট বক্সে। তাড়াতাড়ি সেটা খুলে দেখল আবার অ্যাফ্রোডাইট। চ্যাটে লেখা রয়েছে। “Now I am free. We can talk freely.” নতুন করে একটা জোশ খেলে গেল ওর মনের মধ্যে। ফোনের স্ক্রিণের উপরে প্রায় হুমড়ি খেয়ে পড়ে টাইপ করতে শুরু করল সুনির্মল।