Thread Rating:
  • 26 Vote(s) - 2.69 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery অন্তর্বর্তী শূন্যতা
#50
ইন্দুমতি – আজকে কিভাবে বাড়ি ফিরেছে সেটা কেবল ও নিজে জানে। না। ওর সঙ্গে কোনো খারাপ ঘটনা বা দূর্ঘটনা কোনোটাই ঘটেনি। তবুও এই কথাটাই ওর বারবার মনে হয়েছে। তার কারণও অবশ্য একটা আছে। সেটা বাড়ি ফেরার পথে বারবার মনে হয়েছে। আজ বিকালে কলেজ থেকে ফেরার পথে ঝোঁকের মাথায় আগের স্টপেজে নেমে পড়েছিল। এখন বাড়ি ফিরছে। একবার মনে হয়েছিল বাস নাহোক একটা অটো বা টোটো ধরা যাক। তারপর মনে হয়েছে, থাক, একদিন হেঁটেই বাড়ি ফেরা যাক। এখন মনে হচ্ছে ভুলই করেছে সে। যাহোক কিছু একটা নিলেই ভালো হতো। হাঁটতে আর ইচ্ছে করছে না। কেমন যেন ক্লান্ত লাগছে শরীরটাসেই সাথে কিছুটা হলেও মনটাও। ব্যাগের স্ট্র্যাপটা বারবার কাঁধ থেকে খসে পড়ছে। সেইসঙ্গে অসহ্য গরম। সারাশরীর বেয়ে ঘামের ফোঁটাগুলো গড়িয়ে নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে অনবরত। ব্লাউজের পিঠ আর বগলের কাছটা অনেক আগেই ভিজে গেছে। বুকের দিকটাও ভিজতে শুরু করেছে অল্প অল্প। আর সেইজন্য আরো বেশী করে গা ঘিনঘিন করছে। তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে গা ধোওয়া অবধি ঠিক শান্তি পাওয়া যাচ্ছে না। বাড়ি ফেরার তাড়ায় পা জোরে চালানোয় একই সাথে দুটো জিনিস ঘটছে ওর সাথে। এক, ও আরো বেশী ঘেমে যাচ্ছে। এবং দুই, সেই সাথে পাল্লা দিয়ে ক্লান্তও হয়ে পড়ছে। বার তিনেক কাঁধ থেকে খসে পড়া ব্যাগের স্ট্র্যাপগুলোকে সামলে আরো কিছুটা পথ হেঁটে এগিয়ে গেল। তারপর আর পারল না। রাস্তার ধারে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে বিরাম নিতে লাগল। জল তেষ্টাও পেয়েছে প্রচন্ড। সঙ্গের ব্যাগে বোতল আছে বটে, কিন্তু জল নেই। একটু আগেই সেই অন্ধগলি থেকে বের হওয়ার আগে শেষ ঢোঁক জলটা খেয়ে এসেছে। রাস্তার ধারে কোথাও কোনো জলের কলও চোখে পড়ছে না। একটু জল ধরে খাবে সে উপায়ও নেই। চারিদিকে এখন ঘোর অন্ধকার নেমে এসেছে। রাস্তার ধারের একটা ল্যাম্পপোস্টের তলায় দাঁড়িয়ে বাঁ হাতের কবজিতে লাগানো ঘড়িটা দেখল। ছ’টা বেজে সাতচল্লিশ। অন্তত আধঘন্টা ধরে হাঁটছে। তার বেশীও হতে পারে। তার গন্তব্যের আগের স্টপেজটা যে এত দূরে সেটা ও আগে বুঝতে পারেনি। পারলে ঐরকম হঠকারী সিদ্ধান্ত নিত না। আরো কয়েক পা এগিয়ে গিয়ে আর পারল না। রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে অটোর অপেক্ষা করতে লাগল। ওর পাশ দিয়ে শাঁ শাঁ করে সব গাড়ি বেরিয়ে যাচ্ছে। এই সময়টায় রাস্তায় বেশ ভীড় থাকে। সবারই বাড়ি ফেরার তাড়া থাকে এই সময়টায়। বেশ কয়েকটা অটোও ওর পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেল। তবে কোনোটাই দাঁড়ালো না। হয় অটোগুলো ভর্তি, নয়তো বা ওরা ওকে খেয়ালই করেনি। বাধ্য হয়ে ও সামনের একটা ল্যাম্পপোস্টের তলায় এসে দাঁড়াল। যাতে অটোরা ওকে দেখতে পায়। হাত বাড়িয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল। কিন্তু কোনো অটোই দাঁড়াল না। ইতিমধ্যে আরো মিনিট দশেক কেটে গেছে। ও ঠিক করে উঠতে পারল না, ও কি এখানেই এভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে, নাকি আবার হাঁটতে শুরু করবে? হাঁটার কথা মনে আসতেই হাঁটুর ব্যাথাটা আরো একবার নিজেকে জানান দিল। সত্যিই এবার বয়স বাড়ছে। কিন্তু এভাবে কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা যায়। হঠাৎ করে একটা অটোকে আসতে দেখল সে। এটাকে যেভাবেই হোক পাকড়াতে হবে। কাঁধের ব্যাগটা সামলে নিয়ে ও একপ্রকার প্রায় রাস্তায় নেমে পড়ল। জোরে জোরে হাত নাড়াতে শুরু করল। সৌভাগ্যক্রমে অটোর গতিও কমে এল। ধীরে ধীরে গতি কমিয়ে অবশেষে ওর প্রায় গায়ের কাছে এসে ব্রেক কষল অটোটা। তাকিয়ে দেখল ভিতরে দুজন বসে রয়েছে। তার মানে ও হাত না দেখালেও হয়তো ওর কাছে এসে দাঁড়াত। যাই হোক ড্রাইভার মুখ বাড়িয়ে জিজ্ঞাসা করল, “কোথায় যাবেন, মাসিমা?” ক্লান্তির মধ্যেও ‘মাসিমা’ শব্দটা বড্ড বেশী কানে লাগল ওর। তবুও সেটা মেনে নিয়ে নিজের গন্তব্যের ঠিকানা জানিয়ে জিজ্ঞাসা করল, “যাবে?” লোকটা মুখটা আবার ঢুকিয়ে নিয়ে বলল, “উঠে আসুন।” ও অটোতে উঠে বসতেই গতিপ্রাপ্ত হল সেটা। খানিক গুছিয়ে বসার পরে মনে হল এই রে, ভাড়াটাতো জিজ্ঞাসা করা হয়নি। নামার সময়ে আবার ঝামেলা করবে না তো? যাই হোক, এরপর আর হাঁটার ইচ্ছা নেই। যা নেয় নেবে। অটোর শক্ত সিটে পিঠটাকে এলিয়ে দিয়ে বসল ও। একটু হলেও আরাম পেল। বাইরে থেকে হাওয়া ঝাপটা এসে মারছে ওর মুখে। অথচ একটু আগেও কি গুমোট গরম ছিল! চোখ বোজা অবস্থাতেই একটা লম্বা দীর্ঘশ্বাস নিল।

-  “আমি আবার বলছি, তুমি হঠকারী সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছো। এতে লাভ কিছুই হবে না। উল্টে তোমার ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।” তন্নিষ্ঠা ওর হাতটাকে খপ করে ধরে নিয়ে বলল।

-  “আমার কি ক্ষতি হবে? তুমিই তো একটু আগে বললে যে, এখানে কেউ নিজের আসল নাম দেয় না। আমিও দেবো না। তাহলেই কেউ আমাকে চিনতে পারবে না। তাহলে আমার ক্ষতি কিভাবে হবে?” নিজের যুক্তির ঘুঁটি সাজিয়ে ও বলে।

-  “সেটা ঠিক আছে, কিন্তু তুমি ওদেরকেই বা আইডেন্টিফাই করবে কিভাবে?” পাল্টা যুক্তি ওর দিকে ছুঁড়ে মারে তন্নিষ্ঠা।

-  “সেটা তুমি হেল্প করলেই আমার কাজটা সহজ হয়ে যেত। কিন্তু তুমি তো গোঁ ধরে বসে আছো, আমাকে হেল্প করবে না। তাহলে আমার অন্ধকারে ঢিল ছোঁড়া ছাড়া আরো কোনো গতি নেই।” চোখ থেকে নেমে আসা চশমাটাকে আরো একবার যথাস্থানে পাঠিয়ে দিল।

-  “দেখো, আমি তোমাকে হেল্প করতে চাইছি না, ব্যাপারটা এরকম নয়। আমি বলতে চাইছি, এত করে তোমার কোনো লাভ হবে না।” পাল্টা যুক্তি সাজানোর মরিয়া চেষ্টা করল তন্নিষ্ঠা।

-  “তুমি কি চাইছো, সেটা আমার কাছে প্রাধান্য নয়। আমি কি করতে চাইছি, সেটাই মূল কথা। তুমি এবার খোলসা করে বলো, তুমি আমায় হেল্প করবে কিনা। না করলেও অবশ্য ক্ষতি কিছুই নাই, আমি একাই এসব করে নিতে পারবো। কিন্তু সময় লাগবে এই যা। তুমি থাকলে তাড়াতাড়ি হয়ে যেত দুজনে মিলে।”

-  “বেশ, তুমি যদি আমার কথা না শোনো, তাহলে আমার আর কিছু করার নেই। আমি কিন্তু তোমাকে আগেভাগেই সাবধানও করেছি, বারণও করেছি। তুমি আমার কথা না শুনলে আমার কিছু করার নেই। তবে হ্যাঁ, বিপদে পড়লে যেন আবার আমাকে ডাকতে এসো না। আমি এসবে নেই, তা আগেভাগেই বলে রাখছি। আমাকে এসবে একদম জড়াবে না।” তন্নিষ্ঠা ওর দিকে সিরিয়াস মুখ করে বলল।

-  “বেশ তাই হবে। আজকের পর আমি তোমাকে এই বিষয়ে কিচ্ছু বলবো না। তুমি কেবল আমার প্রোফাইলটা তৈরী করে দাও, তাহলেই হবে।” তন্নিষ্ঠাকে আশ্বস্ত করে বলল।

-  “ঠিক আছে, দাও। তোমার ফোনটা দাও।” মুচকি হেসে তন্নিষ্ঠার বাড়িয়ে দেওয়া হাতের তালুতে নিজের ফোনটা রাখল ও।
 
-  “মাসিমা, এসে গেছি।” ড্রাইভারের ডাকে বর্তমানে ফিরল। চোখ চেয়ে দেখল এরইমধ্যে ওকে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েছে। অটো থেকে নেমে জিজ্ঞাসা করল, “কত হয়েছে?”

-  “আশি টাকা মাসিমা।” নির্লিপ্ত স্বরে বলল ড্রাইভারটা।

অন্যদিন হলে এটা নিয়ে বার্গেনিং করত হয়তো, কিন্তু আজ ইচ্ছা করল না। খুচরো আশিটাকা ধরিয়ে দিয়ে ব্যাগটা কাঁধ নিয়ে আবার হাঁটতে শুরু করল। গলির মুখের দোকানটায় দেখল গরম গরম ফিসফ্রাই ভাজা হচ্ছে। কিছু মনে করে দাঁড়িয়ে কিনে নিল বেশ কয়েকটা। ছেলেটা খেতে খুব পছন্দ করে। বরও করে, তবে ওর ভয়ে কিনতে পারে না। ফিসফ্রাই কিনে নিয়ে আবার বাড়ির পথ ধরল ও। বাড়িতে পৌঁছে দেখল ঘরটা ভেতর থেকে লক। তখনই মনে পড়ল বুবান আজ বাড়িতেই আছে। কলিংবেল টিপলবারদুয়েক বাজানোর পরে একবার হাঁক পাড়ল, “বুবান, দরজাটা খোলো।” প্রায় সঙ্গে সঙ্গে বুবান দরজাটা খুলে দিল। ওকে পাশ কাটিয়ে ঘরের ভিতরে ঢুকল। কাঁধের ব্যাগটাকে ডাইনিং টেবিলের উপরে রাখতে আরাম হল কিছুটা। কাঁধটা যেন ছিঁড়ে যাচ্ছে ব্যাথায়। শাড়ি ব্লাউজ সবই ঘামে ভিজে গায়ের সঙ্গে লেপ্টে গেছে। এক্ষুণি গা না ধুলে শান্তি পাওয়া যাচ্ছে না। তোয়ালেটা হাতে নিয়ে বাথরুমের দিকে পা বাড়ালো। বুবান কাছেই দাঁড়িয়েছিল। ওকে দেখে ফিস ফ্রাইয়ের কথাটা মনে পড়ে গেল। পিছন ফিরে ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, “ব্যাগে তোমার জন্য ফিস ফ্রাই আছে। বের করে খাও। তা নাহলে ঠান্ডা হয়ে যাবে।” বলে আর দাঁড়ালো না। বাথরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে শাড়িটাকে খুলে ফেলল। ব্লাউজটা ঘামে ভিজে যেন ন্যাতা হয়ে গেছে। ঘামের গন্ধও ছাড়ছে। তাড়াতাড়ি ব্লাউজটা খুলে ফেলল। তারপর সায়া। সবশেষে ব্রেসিয়ার। সব জামাকাপড়গুলোকে এক জায়গায় জড়ো করে রাখল। পরে কাচতে হবে। এখন আর ইচ্ছে করছে না। শাওয়ারের হাতলটা ঘোরাতেই বেশ কিছুটা গরম জল গায়ে এসে পড়ল। সারাদিনের রোদে ট্যাঙ্কের জলটা যেন ফুটছে। তবে একটু পরেই ঠান্ডা জল আসতে শুরু করল। আঃ! কি আরাম। আরো একবার চোখ বুজে এল ওর।

গলির ভিতরে ঢুকে অ্যাপটা খুলে নিজের ইউজার নেম আর পাসওয়ার্ডটা লিখে লগ ইন করল। Aphrodite24 নামটা তন্নিষ্ঠাই নেট ঘেঁটে বের করেছে। কোনো এক দেবীর নাম নাকী। গ্রীকদের প্রেমের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। যত সব ঢং! ওর একদমই পছন্দ হয়নি। তবে তন্নিষ্ঠা বলল এই অ্যাপে নাকি সব এইরকম নামই চলে। তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও এই নামটাকেই রাখতে হয়েছে। খুঁজে খুঁজে একটা ছবি বের করে সেটাকে আবার প্রোফাইল পিকচার করে দিল। একটা মস্তবড়ো ঝিনুকের উপরে একটা নারীমূর্তি দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেই নারীর গায়ে যে এককণাও সুতো নেই, সেটা আশা করি বলার অপেক্ষা রাখে না। এক হাত দিয়ে সে নিজের বুক আর অন্য হাত দিয়ে নিজের তলপেটটা ঢেকে কোনোরকমে লজ্জা নিবারণ করছে। বা চেষ্টা করছে। তন্নিষ্ঠার কথায় এতে নাকি ছেলেছোকরারা ওর প্রোফাইলে হামলে পড়বে। মুখে কিছু বলতে পারল না বটে, তবে শুনে গাটা রি রি করে উঠল। কিন্তু কছু উপায় নেই, নাচতে নেমে ঘোমটা মুখের উপরে টানা অন্যায়। সেটা ও করবে না। এরপর শুরু হল প্রোফাইল তৈরী। সে এক পর্ব গেল বটে। প্রথম প্রথম প্রশ্নগুলো ঠিকই ছিল। নর্মাল। বয়স। হাইট। গায়ের রঙ। জেন্ডার – এসব। একমাত্র জেন্ডার বাদে বাকী সবই তন্নিষ্ঠা ইচ্ছা করেই ভুল লিখল। তারপর থেকে যা সব প্রশ্ন শুরু হল, তা দেখে শুনে দুজনেরই গলদঘর্ম অবস্থা। ভাবগতিক দেখে ও তন্নিষ্ঠাকে বলল, “এত বুঝে শুনে গুছিয়ে লেখার দরকার নেই। যাহোক কিছু একটা লিখে প্রোফাইলটা তৈরী করো যেভাবে হোক।” তন্নিষ্ঠাও ওর কথা বাড়ায় নি। কিছুটা আন্দাজে আর বাকিটা যাহোক কিছু একটা ক্লিক করে বেরিয়ে গেল। কেবল Interested in এর বেলায় ও তন্নিষ্ঠাকে দাঁড়াতে বলল। তারপর কিছু একটা ভেবে বলল, “Both অপশনটা দাও।” তন্নিষ্ঠা কৌতুহল ভরে একবার ওর দিকে তাকাল। কিছুটা জবাবদিহির ভঙ্গিতে বলল, “Both না করলে মেয়েগুলোকে ধরতে পারবো না।” তন্নিষ্ঠাও আর কথা বাড়াল নাচুপচাপ করে গেল সব কিছু। সবশেষে ওকে জিজ্ঞাসা করল ফেস ব্লার করবে কিনা। ওতে ও হ্যাঁ বলল। আর লোকেশনও কলকাতাই লিখল। প্রোফাইলটা তৈরী শেষ হওয়ার পর দুজনেই ঘেমে নেয়ে একসা। ফোনটা ওর হাতে ফেরত দিয়ে তন্নিষ্ঠা বলল, “আরো একবার ভেবে দেখো।” ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ও বলল, “আমার ভাবা হয়ে গেছে।”

গলির মধ্যে লগ ইন করার সাথে সাথেই একটা নোটিফিকেশন ঢুকল ওর অ্যাপে। আঙুল বুলিয়ে সেটাকে খুলে ফেলল। দেখল লেখা আছে Baphomet34 wants to be your partner. নীচে দুটো অপশন আছে। Accept আর Decline. মনের মধ্যে একটা দোলাচল শুরু হল। কি করবে একমূহুর্তের জন্য বুঝে উঠতে পারল না। নামটা আরো একবার পড়ল বিড়বিড় করে। Baphomet34এটা কোনদেশী নাম বুঝতে পারল না। আরো একবার আঙুল বুলিয়ে প্রোফাইলটাকে খুলে ফেলল। 27, Male, Dominant, interested in Women, lives in Kolkata – অপশনগুলোকে এক এক করে চোখ বুলিয়ে যেতে লাগল। খুব বেশীদূর যাওয়ার ইচ্ছা হল না যদিও। গেলও না। এটা কে? কলেজের কেউ? নাকি অন্য কেউ? প্রোফাইল দেখে তো কিছুই বোঝার উপায় নেই? যদি অপরিচিত কেউ হয়? তাহলে তো কেবল সময় নষ্ট করা হবে। আর এটা ও একদমই চায় না। কিন্তু এটা যদি ওর কলেজের কেউ হয়? তাহলে তো একটা সুযোগ নষ্ট হয়ে যাবে। ও ঠিকই বলেছিল। অন্ধকারে ঢিল ছোঁড়াই না হয়ে দাঁড়ায় শেষপর্যন্ত। কিন্তু কিছু তো করার নেই। একটা চান্স নিতেই হবে। আর বেশী না ভেবে Accept অপশনটায় ক্লিক করেই দিল। তারপর তাড়াতাড়ি অ্যাপটা থেকে বেরিয়ে এল। গা ধোওয়া সেরে একটা ম্যাক্সি অঙ্গে জড়িয়ে বাথরুমের বাইরে এল। এসে দেখল বুবান খাওয়া সেরে নিজের ঘরে চলে গেছে। পড়াশোন করছে হয়তো। কিচেনে ঢুকে এক কাপ চা বানিয়ে নিল নিজের জন্য। মাথাটা কেমন যেন টিপটিপ করছে। ডাইনিংয়ের ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে দেখল আটটা বেজে সাতাশ। ওর ফিরতে অনেকটাই দেরী হয়েছে আজকে। অন্যান্যদিন এই সময় ওর রাতের খাওয়ার তৈরী হয়ে যায়। তারপর বসে কলেজের ছেলেমেয়েদের অ্যাসাইনমেন্ট চেক করতে। আজকে এক্ষুণি রান্না করতে ইচ্ছা করছে না। পরে করবে। তার চেয়ে ছেলেমেয়েদের অ্যাসাইনমেন্টগুলোই একটু চেক করা যাক। বই, নোটস, খাতা, ফোন নিয়ে বসল। আধঘন্টারও বেশী কাজ করার পরে ঘাড়টা টনটন করতে শুরু করল। ডান হাতে ঘাড়টা আলতো ম্যাসাজ করতে করতে ফোনটাকে হাতে তুলে নিল। কি মনে হতে অ্যাপটাকে খুলে ফেলল। তবে খোলার আগে একবার বুবানের ঘরের দিকে তাকিয়ে নিতে ভুলল না। ছেলেটা দেখে ফেললে মুশকিল হবে। নিশ্চিন্ত হয়ে অ্যাপটাকে খুলল। খুলতেই দুটো জিনিস চোখে পড়ল ওর। এক, ব্যাফোমেট ওকে চ্যাট পাঠিয়েছে। “Hi sexy! What’s up!!” ভাষার কি ছিরি!! ইচ্ছে করছে কষে দুটো থাপ্পড় মারি। বিরক্তি সহকারে চ্যাটটাকে কেটে দিতেই আরো একটা জিনিস চোখে পড়ল ওর। আরো দুটো পার্টনার রিকোয়েস্ট এসেছে। নামদুটো পড়ল। একটা হচ্ছে Cupid69আর অন্যটা হল Eisheth26নামদুটোর মানে কোনোটাই ও বুঝতে পারল না। শুধু এটুকু বুঝতে পারল। কিউপিড ছেলে আর এইসেথ মেয়ে। অল্প একটু ভেবে দুজনেরই রিকোয়েস্ট অ্যাকসেপ্ট করল ও। তারপর অ্যাপটাকে একটু বোঝার জন্য এদিক সেদিক ঘুরতে লাগল। দেখে যা বুঝল এর থেকে নরকও বুঝি পরিষ্কার হবে। ঘেন্নায় অ্যাপটাকে বন্ধ করতে গেল কিন্তু পারল না। কারণ অ্যাপটা বন্ধ করার আগে একটা চ্যাট এল। কিউপিড পাঠিয়েছে। লেখা আছে, “Hi, Aphrodite, want to be my friend?” লেখাটা পড়ে ও বুঝতে পারল এটা আগেরটার মত কেউ নয়। তা নাহলে এভাবে বন্ধু হতে চাইত না। ও উত্তরে লিখল, “Of course.” ঠিক সেই সময়েই ঘরের দরজাটা খুলে গেল। মুখ তুলে সামনের দিকে তাকিয়ে দেখল। বর ঢুকছে। আজ ওরও দেরী হয়েছে ফিরতে। বরকে ঢুকতে দেখে ফোনটাকে চোখের সামনে থেকে নামিয়ে নিয়ে বলল, “আজ এতো দেরী হল যে।” বর জুতো খুলতে খুলতে উত্তর দিল, “কাজের চাপ তো বোঝোই।” কিন্তু তখন আর বরের কথায় ওর মন নেই। কারণ ওর চোখ চলে গেছে হাতে ধরা ফোনটার উপরে। ও দেখতে পেল চ্যাট বক্সে লেখা ফুটে উঠেছে ইতিমধ্যে, “Are you free now? Want to talk with you.” কপালে ঘাম জমে উঠতে শুরু করল। ফিরতি উত্তরে কেবল “Not now.” টাইপ করে উঠে পড়ল। তারপর ফোনটাকে রেখে দিয়ে কিচেনের দিকে যেতে যেতে ইন্দুমতি বরের উদ্দেশ্যে বলল, “তুমি জামাকাপড় ছেড়ে হাত পা ধুয়ে এসো। আজ ফিস ফ্রাই এনেছি। গরম করে দিচ্ছি। খাও।” 
[Image: 20240303-191414.png]
[+] 4 users Like রতিদেবী's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অন্তর্বর্তী শূন্যতা - by রতিদেবী - 17-03-2024, 08:04 PM



Users browsing this thread: 6 Guest(s)