09-03-2024, 07:28 PM
(This post was last modified: 30-03-2024, 06:44 PM by রতিদেবী. Edited 3 times in total. Edited 3 times in total.)
আয়ুষ – সকালের পর থেকে অনেকটা সময়ই এর মধ্যে কেটে গেছে। এখন সময়ের হিসেবে দুপুর। সারা বাড়িতে এখন ও সম্পূর্ণ একা। এই সময়ে ও সাধারণত বাড়িতে থাকে না। কলেজে থাকে। কিন্তু আজ কলেজে যায়নি বলে বাড়িতে রয়েছে। তাও আবার একা। এখন ও যা খুশী তাই করতে পারে। কিন্তু কিছুই করতে ইচ্ছে করছে না। সকাল থেকে একবারও তিতিরের সঙ্গে কথা হয়নি ওর। এরকম দিন ওর জীবনে প্রায় আসেই না বলতে গেলে। কারণ তিতির যেমন ওর সঙ্গে কথা না বলে থাকতে পারে না, ঠিক তেমনই ও নিজেও তিতিরের সঙ্গে কথা না বলে থাকতে পারে না। কিন্তু এই তিতিরটা কে? তিতির হল ওর একমাত্র বন্ধু। বা বান্ধবীও বলা চলে। একমাত্র কারণ কলেজে তিতির ছাড়া অন্য কারোর সঙ্গে ওর ঠিক জমে না। আসলে ওর মত লাজুক আর ইন্ট্রোভার্ট ছেলে যে আজকের এই ডিজিটাল যুগে একেবারেই অচল, সেটা ও নিজেও ভালো করেই জানে। কিন্তু তাও ওর কিছু করার নেই। আসলে ও চট করে কারোর সঙ্গে গায়ে পড়ে বন্ধুত্ত্ব করতে পারে না। কেউ যদি যেচে ওর সাথে কথা বলতে চায়, বা বন্ধুত্ব করে তবে ও তার সঙ্গে মেশে, কথা বলে এবং বন্ধুত্বও করে। যদিও সেই বন্ধুত্ব খুব বেশী দিন টেকে না, সেটা আলাদা কথা। যেমন এর আগে কলেজে ওর দু তিনজন বন্ধু ছিল। কিন্তু আজ তারা কোথায়, কোন কলেজে পড়ে ও সেসব কিছুই জানে না। তার কারণ খোঁজ রাখেনি। ও চুপচাপ নিজের মধ্যে থাকতেই বেশী পছন্দ করে। খুব বেশী হট্টগোল, হাসি ঠাট্টা এসব পছন্দ করে না। আর ওর মত সিরিয়াস ছেলেকে কেউই বিশেষ পাত্তা দেয় না। মেয়েরা তো নয়ই। অবশ্য এসব নিয়ে ওর খেদ কোনোকালেই ছিল না। নিজেকে নিয়েই থাকতো। সেই অভ্যেসটা হোঁচট খেল কলেজের প্রথম দিনেই। সেই দিনটার কথা ওর বেশ ভালো করেই মনে আছে। নিজের অভ্যেস মতো শেষের দিকের একটি বেঞ্চে একলা বসেছে। ওর পাশে এসে বসার মতন উদারতা তখনও পর্যন্ত কেউই দেখায়নি। এতে অবশ্য ওরই লাভ হয়েছে। ক্লাস শুরু হতে আর অল্পক্ষণই বাকী আছে। নীচু হয়ে ব্যাগ থেকে পেন আর নোটবুকটা বের করছিল, হঠাৎ করে প্রায় কানের গোড়ায় একটা কণ্ঠস্বর শুনতে পেল। গলাটা মেয়েলী বলেই ও হয়তো চমকে উঠেছিল প্রথমে। পাশ ফিরে দেখল বেঞ্চের ঠিক পাশে রোগা আর লম্বা মতন একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তাকিয়ে দেখল মেয়েটার চোয়াল নড়ছে। দেখে মনে হল কিছু চিবোচ্ছে। সম্ভবত চুয়িংগাম। ও মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বলল, “তুমি কি আমায় কিছু বললে?” একমুহুর্তের জন্য চোয়ালটা থেমে গেল। তারপর আবার আগের মত নড়তে শুরু করে দিল। সেই গতির মধ্যেই জবাব এল, “হ্যাঁ।”
- “কি?” ভদ্রতার খাতিরে অনিচ্ছা সত্ত্বেও জিজ্ঞাসা করল।
- “বলছি, একটু সরে বসো। আমি বসবো এখানে।” আগের মতই চোয়াল নড়ছে।
- “কেন?” প্রশ্নটা করেই বুঝতে পারল নিতান্তই বোকার মত প্রশ্নটা করে ফেলেছে। তার জবাবটা ও পরের কথাতেই টের পেল।
- “কেন আবার কী? বেঞ্চে বসবো না তো কোথায় বসব। তোমার কোলে?” গলায় বিরক্তির সাথে মজাটাও লুকিয়ে আছে সেটা প্রথমে বুঝতে পারেনি।
- “আমি সেটা বলতে চাইনি...” এই প্রথম কাউকে জবাবদিহি করতে চাইল, কিন্তু পারল না।
- “তাহলে কি বলতে চেয়েছিলে?” মেয়েটা ওকে প্রায় চুপ করিয়ে দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করল।
- “আমি বলতে চেয়েছিলাম। তুমি এখানে বসবে কেন? অন্য কোথাও বসো।” ঠান্ডা মাথায় জবাব দিল।
- “কেন এখানে বসলে কি হবে?” আবার পাল্টা প্রশ্ন।
- “বসলে কিছু হবে না, বাট...” এবারেও কথা শেষ করতে পারল না।
- “তাহলে আমি এখানেই বসবো।” বলে মেয়েটা নিজের ব্যাগপত্র নিয়ে ওর পাশেই গ্যাঁট হয়ে বসে পড়ল। প্রতিবাদ করার তিলমাত্র সুযোগও পেল না।
এরপরেই একজন স্যার এলেন। এবং ক্লাস নিতে শুরু করলেন। ও মনোযোগ দিয়ে ক্লাস শুনছে এবং নোটস নিচ্ছে হঠাৎ ঘাড় ঘুরিয়ে টের পেল মেয়েটি দিব্বি ওর পাশে বসে ফোনে চ্যাট করে যাচ্ছে। আবার মাঝে মাঝে মুখ টিপে টিপে হাসছে। ও কিছু বলল না। কিন্তু মেয়েটি বলল, “আমার দিকে তাকিয়ে না থেকে, সামনে স্যারের দিকে তাকাও। তা নাহলে স্যার ভাববে লাস্ট বেঞ্চে বসে তুমি আমার সাথে প্রেম করছো।” কথাটা বলল বটে, তবে একবারের জন্যেও চোখদুটো ফোন থেকে সরালো না। তাহলে কিভাবে টের পেল যে ও ওর দিকেই তাকিয়ে রয়েছে। রহস্যভেদ করার চেষ্টা করল না। নিজেকে সামলে নিয়ে আবার ক্লাসে মন দিল। কিন্তু সেটাও বেশীক্ষণ পারল না। হঠাৎ ওর কানে এল মেয়েটা বলছে, “অ্যাই, ক্লাস শেষ হয়ে গেলে তোমার নোটসগুলোর ছবি তুলে আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে সেন্ড করে দিওতো। আমার নম্বরটা টুকে নাও। নাইন এইট সেভেন সিক্স....” গড়গড় করে নিজের ফোন নম্বরটা বলে গেল মেয়েটা। ও তো যাকে বলে অবাক। এতটাই যে, নম্বরটা টুকতেও ভুলে গেল। মেয়েটা একবার আড়চোখে ওর দিকে তাকিয়ে দেখল। তারপর নিজেই ওর নোটবুকটা টেনে নিয়ে পিছনের পাতায় খসখস করে নিজের ফোন নম্বরটা লিখে দিল। তারপর নোটবুকটা আবার ওর দিকে ঠেলে দিল। ও তাকিয়ে দেখল নম্বরের ঠিক উপরে নিজের অটোগ্রাফটাও মেয়েটি দিয়ে দিয়েছে। ‘তিতির’। দেখেই মনে হচ্ছে ডাক নাম। কারণ তিতির কারোর ভালো নাম হতে পারে না। হলেই বা দোষ কি? অযাচিত ভাবে অন্য কারোর কথা ভাবছে ও, তাও একটা মেয়ের বিষয়ে? নিজের মনকেই কষে ধমক লাগালো। তারপরেই শুনতে পেল মেয়েটা অর্থাৎ তিতির ওকে উদ্দেশ্য করেই বলছে, “তুমি কি সারাক্ষণই এরকম বিড়বিড় করে বকো, নাকি এখন কিছু স্পেশাল।” ও তাকিয়ে দেখল মেয়েটা ওর দিকে তাকিয়ে ঠোঁট টিপে মুচকি হাসছে।
দুপুরে খাওয়া দাওয়া সেরে ও নিজের ঘরে এল। বুবলা অর্থাৎ ওর বোন একটু আগেই কোথাও বেরিয়ে গেল। কোথায় গেল জানে না। জানতে চায়ও না। নিজের ঘরে এসে দরজাটা বন্ধ করে বসল। যদিও এই মুহুর্তে বাড়িতে ও ছাড়া দ্বিতীয় কোনো জনপ্রাণী নেই, তবুও সাবধানতা বশত দরজাটা বন্ধ করেই দিল। বিছানার উপরে ফোনটা পড়ে আছে। তিতিরকে একবার ফোন করা দরকার। তা না হলে পরে ঝাড় খেতে হবে। মেয়েটা সত্যিই একটা পাগলী। কিন্তু এই পাগলী মেয়েটাকে ওর খুব ভালো লাগে। দুবছরের সম্পর্কে ওরা দুজনেই তুমি থেকে তুইতে নেমে এসেছে। কিন্তু আজও ও তিতিরের ভালো নাম জানে না। জানতে চায়ওনি কোনোদিন। কি হবে জেনে? ও বরং ওর কাছে তিতির হয়েই থাকুক না। ক্ষতি কি? এরই নাম কি ভালোবাসা? ও জানে না। হবে হয়তো। কোনোদিন এসব নিয়ে ভাবে নি। তিতিরও নিশ্চয়ই ভাবে না। আসলে তিতির কিছু নিয়েই বড়ো একটা ভাবে না। কোনো কিছু নিয়েই ও সিরিয়াস নয়। আর এই জন্যেই হয়তো ওকে ওর এত বেশী ভালো লাগে। ফোনটা হাতে তুলে নিয়ে তিতিরের নম্বরটা ডায়াল করল। এনগেজ টোন আসছে। নিশ্চয়ই কারোর সাথে ভাট বকছে। বকতে পেলে তো আর কিচ্ছু চায় না মেয়েটা। কলটা কেটে দিল। পরে একবার ট্রাই করবে। বিছানায় লম্বা হয়ে শুয়ে পড়ল। সকাল থেকেই কেমন একটা আলস্য অনুভব করছে। শুয়ে পড়ে ফোনটাকে রাখতে গিয়েও রাখল না। কি মনে হতে দ্রুত আঙুল চালিয়ে অ্যাপটাকে খুলে ফেলল। ইউজার নেম আর পাসওয়ার্ডটা টাইপ করল। অনেক ভেবে ইউজার নেমটা রেখেছে। Baphomet34। ছাগল মুখো এই দানবটিকে অনেকে শয়তান বলেও উল্লেখ করে থাকে। অনেক খুঁজে এই নামটিই ওর পছন্দ হয়েছে। সেই সঙ্গে ভয়াল দর্শন একটি ছবিকে প্রোফাইল পিকচার করেছে। আজ সারাটা সকাল ধরে বসে বসে নিজের প্রোফাইলটিকে তৈরী করেছে। অবশ্য তার জন্য গাদাগুচ্ছের মিথ্যে কথাও লিখতে হয়েছে ওকে। ওর বয়স, হাইট, ইত্যাদি তো আছেই। বেশীর ভাগ প্রশ্নে অনেক ভেবেচিন্তে অপশন চুজ করেতে হয়েছে। Dominant অপশনটা অবশ্য ইচ্ছে করেই রেখেছে। লোকেশনটা কলকাতাই রেখেছে। প্রথমে ভেবেছিল ফেসটা ব্লারড করবে না। তারপর অনেক ভেবে Yes করে দিয়েছে। কিন্তু Interested in অপশনে কেবল women টাতেই ক্লিক করেছে। অনেকটা সময় নিয়েই নিজের প্রোফাইলটা তৈরী করেছে। যাতে অ্যাট্রাকশনটা বজায় থাকে। এখন অ্যাপটা খুলতেই অটোমেটিক্যালি কিছু সাজেশন চলে এল। বলা বাহুল্য সবগুলোই মহিলাদের প্রোফাইল। প্রায় খান আষ্টেক তো হবেই। সময় নিয়ে এক এক করে সব কটা প্রোফাইল খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে অবসার্ভ করল ও। এর মধ্যে বেশীর ভাগটাই যে ফেক প্রোফাইল তাতে কোনো সন্দেহ নেই। হয়তো সবগুলোই। কিন্তু তার মধ্যেও দুটো প্রোফাইল ওর চোখে পড়ল। এবং দুটোতেই কিছু না কিছু অসঙ্গতি আছে। কেমন যেন আনাড়ি হাতে তৈরী প্রোফাইল। এই অ্যাপে খুব বেশী লোকের সাথে মিশবে না, এটা আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিল। হাতে গোণা কয়েকজনের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতবে। এই দুটো প্রোফাইলই ওর কাছে পারফেক্ট বলে মনে হল। কারণ এই অসঙ্গতিগুলোর কারণেই ওর মনে হল এইগুলো জেনুইন প্রোফাইল হলেও হতে পারে। এই প্রোফাইলগুলোর মালিক বা মালকিন এসব জিনিসে খুব একটা বেশী অভ্যস্থ নয়। তাই এই অসঙ্গতিগুলো রয়ে গেছে। প্রথম নামটা ওর মনে ধরল। Lilith99। ছবি দেখে বোঝার কোনো উপায় নেই। নেট থেকে যে ডাউনলোড করা সেটা বোঝাই যাচ্ছে। প্রোফাইলটাও যেন একটু এলোমেলো। Slave শব্দটাও ওর নজর এড়ালো না। বয়স লেখা আছে ২৫। সঠিক বা ভুল হতেই পারে। কিন্তু বাকী অপশনগুলো একটু খাপছাড়া। বেশী কিছু না ভেবে ও send partner request অপশনটাতে ক্লিক করল। ও আশা করেনি এতটা চটজলদি জবাব পাবে। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই নোটিফিকেশন এল Lilith99 accepts your request. Now you can chat with HER. লিলিথের প্রোফাইলটা দ্বিতীয়বার খুলল ও। এতক্ষণে চ্যাট অপশনটাও এনেবল হয়ে গেছে। লিলিথের নামের পাশে একটা মাঝারী সবুজ রঙের বৃ্ত্ত জ্বলজ্বল করছে। তারমানে সে এখন অ্যাকটিভ আছে। ও চ্যাট অপশনটা খুলল। তারপর এক লাইন টাইপ করল। Hi sexy, this is Baphomet. Wanna chat with you. সেন্ড অপশনটাতে আঙুল বোলাতেই চ্যাটটা চলে গেল প্রাপকের কাছে। কিন্তু কোনো জবাব এলো না। তার বদলে নামের পাশের বৃত্তটা নিভে গেল মুহুর্তের মধ্যে। তার মানে ওর চ্যাটটা পাওয়ার পরেই লিলিথ ইনঅ্যাকটিভ হয়ে গেল। ও কি একটু হলেও তাড়াহুড়ো করে ফেলল? বুঝতে পারল না। যাক। এরপর ও দ্বিতীয় প্রোফাইলটায় নজর দিল। এই প্রোফাইলটার নাম Aphrodite24। বয়স – ২৪। তবে Dominant। Favourite Sex Position অপশনে NA লেখা রয়েছে। বাদবাকী সেক্স রিলেটেড কোশ্চেনগুলোতেও কেমন যেন সব খাপছাড়া গোছের উত্তর। কিছু একটা দিলেই হলো এরকম একটা ব্যাপার। ও বুঝতে পারল, এই প্রোফাইলের মালিক হয় এই সব প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে চায় না, অথবা এই সব প্রশ্নের সঠিক উত্তর তার জানা নেই। তাই কোনো না কোনো একটা অপশনে ক্লিক করেছে। এখানেও অসঙ্গতি। তাই আগের মত এই প্রোফাইলেও send partner request অপশনটাতে ক্লিক করল। ও জানে এর উত্তর এখনই পাবে না। কারণ নামের পাশের বৃত্তটি নিষ্প্রভ হয়ে আছে। তবে ও অপেক্ষা করতে রাজী। আরো কিছুক্ষণ অ্যাপটা ঘেঁটে দেখার ইচ্ছে ওর ছিল, কিন্তু সেই সুযোগ পেল না। কারণ ওর ফোনটা ততক্ষণে পূর্ণস্বরে বাজতে শুরু করে দিয়েছে। স্ক্রিণে তিতিরের নামটা দেখতে পেয়ে আর দেরী করল না। তাড়াতাড়ি কলটা রিসিভ করল।
সারাটা দিন কেটে যাওয়ার পরেও একটা প্রোফাইল কিন্তু অ্যাকটিভ হল না। সন্ধ্যের দিকে একবারের জন্য Aphrodite24 প্রোফাইলটা অ্যাকটিভ হয়েছিল। কিন্তু তা খুবই অল্প সময়ের জন্য। কেবলমাত্র ওর partner request টা accept করল। আর তার অল্পক্ষণ পরেই সেটা ইনঅ্যাকটিভ হয়ে গেল। ও আবার লিলিথের প্রোফাইলটা খুলল, কিন্তু সেটাও ইনঅ্যাকটিভ হয়ে পড়ে আছে। একটু পরে মা কলেজ থেকে ফিরল। প্রথমে কলিং বেলের শব্দ, তারপর মায়ের গলার আওয়াজ পেয়ে বাইরে এসে দরজাটা খুলল। মা ওকে একপ্রকার ঠেলা মেরে ঘরের ভিতরে ঢুকল। ডাইনিং টেবিলে নিজের কাঁধের ব্যাগটা নামিয়ে রাখল। মা ঘেমে নেয়ে চান করে গেছে প্রায়। কপাল আর গলায় জমে ওঠা ঘামের বড়ো বড়ো ফোঁটাগুলোকে এত দূর থেকেও স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিল। ও জানে মা সবার আগে বাথরুমে ঢুকে গা ধোবে। তাইই হল। মা তোয়ালেটা নিয়ে সটান বাথরুমে ঢুকে গেল। তবে যাওয়ার আগে ওর দিকে তাকিয়ে বলল, “ব্যাগে তোমার জন্য ফিস ফ্রাই আছে। বের করে খাও। তা নাহলে ঠান্ডা হয়ে যাবে।” মা বাথরুমে ঢুকে পড়তেই ও আর সময় নষ্ট করল না। ব্যাগ থেকে ফিস ফ্রাইগুলো বের করে সদগতি করতে লেগে গেল। সারাটা সন্ধ্যে কেটে গেলেও লিলিথ বা অ্যাফ্রোডাইট কেউই অ্যাকটিভ হল না। হাল ছেড়ে দিয়ে বই আর ল্যাপটপ নিয়ে পড়তে বসে গেল। তা নাহলে মা কুরুক্ষেত্র করবে। আর ও সেটা একেবারেই চায় না। ন’টার বেশ খানিকটা পরে ফোনের নোটিফিকেশন টোনটা একবার বেজে উঠল। বিছানা থেকে উঠে গিয়ে দরজাটা বন্ধ করে দিল। তারপর ফোনটা হাতে নিয়ে অ্যাপটা খুলে ফেলল। ওর চ্যাট বক্সে একটা চ্যাট এসেছে। দেখল লিলিথ ওকে চ্যাট পাঠিয়েছে। নামের পাশের বৃত্তটাও আবার আগের মত জ্বলজ্বল করছে। ও তাড়াতাড়ি চ্যাটটা খুলল। দেখল এক লাইন লেখা আছে। “Hi, this is Lilith”. উত্তরে কি লেখা যায় প্রথমে সেটা বুঝে উঠতে পারল না। বোকার মত লিখল, “Are you active now?” উত্তর এল অল্প একটু পরে। “Yes” এরপর কি লেখা যায় চট করে ওর মাথায় এলো না। একটু সময় নিয়ে ও লিখল, “Are you Bengali?” আবার অল্পক্ষণের বিরতি। তারপর উত্তর এল, “Yes. But why?” মুচকি হেসে কি বোর্ডে ঝড়ের মত আঙুল চালাতে শুরু করল আয়ুষ।