Thread Rating:
  • 10 Vote(s) - 3.1 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica Dikkhamonjuri
#9
সাফল্যের দাম ও ছায়াযুদ্ধ


আদি পরের দিন সকাল সকাল কোর্টে চলে যায়…
অন্য সময় শ্রী ওকে জর করে হলেও ব্রেকফাস্ট করিয়ে দেয় কিন্তু আজকে সে নিজেই নিজের মধ্যে নেই… আদি কাল রাগের মাথায় বলেছে ওকে… ধুর শ্রী কি পারে নাকি নিজের আদির ক্ষতি করতে? নিজেকেই বলে শ্রী।
আদিশ্রী স্টুডিও… নিজেরা কলকাতা ঘুরে নেম্প্লেট টা এনে সাজিয়েছিল…
শ্রী ই গান করতো আর আদি থাকতো ক্যামেরা আর কম্পিউটার এর পেছনে। 
ইউটিউব এর insta তে ঘটা করে নিজেদের স্টুডিও এর ট্যুর আপলোড করেছিল…
Prod by maskedmaker এটাই আদিস্রি এর ব্র্যান্ড হয়ে গেছিলো।
সবই ভালো ছিল…আদি যখন কোর্ট এ যেত শ্রী তখন হয়ে উঠত পাকা গিন্নি। 
আদি অপেক্ষা করছিল অ্যাডিশ্রি কবে একটা বিরাট অ্যালবাম নামাবে ফলে ওদের এর ফিরে তাকাতে হবে না।
দিন ভোর রেওয়াজ আর বিকেলে কলেজ কলেজ এর ছেলে মেয়েদের টিউশন করিয়ে অধিরাজ আর শ্রেষ্ঠা এর দিব্যি চলছিল। 


শ্রেষ্ঠা জানত আদি গান করে না । 
তবে একদিন ওর স্টুডিও তে আস্তে দেরি হয় ।
ও শুনতে পায় একটা গমগমে ভারী গলায় কেউ ভৈরবী রাগ করছে ব্যাকগ্রাউন্ডে বিনা বাজছে।
আর তবলার আওয়াজ।
শ্রী থেমে যায়। এই আওয়াজ যেনো তাকে উষ্ণতায় মুরে দিচ্ছে। 
আর এই তবলার তান যেনো ওকে গান করতে বাধ্য করছে… 
আদি দা কি ?
কিন্তু ও এই ভোরবেলা তো উঠবে না…
2 বছর ধরে দেখছে বাবুর ঘুম যদি কোনোদিন 9টার আগে খুলেছে… একবার সাড়ে আটটা তে উঠেছিল ওই প্রথম আর শেষ।
শ্রী সকাল সকাল আসে এসে স্টুডিও পরিষ্কার করে… আদি সিগারেট অ্যালকোহল খায় না।
তবে চকলেট ওর চাই ই। আর ওদের স্টুডিওতে সব সময় কফি আর টফি থাকবেই।
আর আদির দোষ যেখানে সেখানে টফির মোড়ক ফেলে রাখে খেয়ে। 
একবার তো ঘরভরে সে কি পিঁপড়ের উৎপাত…
ভীষণ বকেছিল শ্রেষ্ঠা ওকে। 
সপ্তাহ খানেক নিপাট ভদ্রলোক তারপর যে কে সেই।
শ্রেষ্ঠা এর মা ওকে বলেছেন… তোর সংসার তোকেই সামলাতে হবে। 
তাই ভোরবেলা আগের কাজ বাবুর সব টাফির রাপার আর কফির ফাঁকা প্যাকেট গুল ফেলা।
তারপর রেওয়াজ করে দেখে নেওয়া আগের রেকর্ডিং সেভ করেছে কি না, সব যন্ত্র ঠিক থাক আছে কি না… শ্রী সাড়ে চারটে কি পাঁচটা এর মধ্যে চলে আসে। আদি কে ডাকতে যায় সাড়ে সাতটা নাগাদ। আদি যদি বলে আরো পাঁচ মিনিট .. মানে আরো এক ঘন্টা ঘুমোবেন।
এরপর আদির কিচেনে এ গিয়ে বাবুর জন্য ডিম, সসেজ, ঝাল দিয়ে তরকারি আর কফি।
আদির বাড়িটা দোতলা। উপরে স্টুডিও নিচে ও থাকে। নিচেই ওর কিচেন, জিম, চেম্বার। 
আর একটা ঘরে ওরা দুজনে পড়ায়।
শ্রী এর জন্যে উপরে একটা ছোট ঘর করে দিয়েছে। যেদিন ওদের রেকর্ডিং এ রাত হয় শ্রী ওখানেই থাকে। 
তবে ওই যে আদি নামহীন সম্পর্কে বিশ্বাসী নয় ।
শ্রী তো বলেছিল যে এবার তো ওরা বিয়ে করতেই পারে…
আদি বলেছিল… যেদিন sh এর ওপরে অ্যাডিশ্রী উঠবে… যেদিন দেব রায় দের থেকেও সিংহ এর নাম উপরে উঠবে…তার আওয়াজ লোকের প্লেলিস্ট এ প্রথম পাঁচ এ থাকবে সেদিন ধুমধাম করে বিয়ে করবে অধিরাজ শ্রেষ্ঠা কে।


শ্রী ওর কথায় বিভোর হয়… বাইরে যতই কঠিন বর্ম পরুক… মনে মনে সব মেয়েই চায় তার ভালোবাসার মানুষ রূপকথার রাজার মতোই তাকে বিয়ে করে নিয়ে যাক।


আদি কে শ্রী বলে , সেসব পরে হবে… তুমি যদি এভাবে রাত জাগো তাহলে কিন্তু ভুরি হয়ে যাবে তারপর কিন্তু আমি তোমায় বিয়ে করব না…
ভুরি? হাহা বলে আদি তার টিশার্ট টা ওপরে তোলে আর ওর পাথরে খোদাই করা অ্যবস গুলো বেরিয়ে পরে 
ইসস। কি অসব্য তুমি! ছি।
বলে শ্রী দুই হাতে মুখ ঢাকে..  
আরে কি অসভ্যতা করলাম বাবা? 
জানি না… আহা.. যাও না… স্নান সেরে বেরও… আমি টিফিন গোচাচ্ছি… ।
আদি বাথরুম যাওয়ার আগে একটা ফ্লাইং কিস ছুড়ে দেয় ।
শ্রী টাওয়েল টা ওর মুখে ছুড়ে মেরে ওর দিকে তাকিয়ে মুখ ভেংচে দেয়।
এই সব ভাবতে ভাবতে ওর মনে পড়ে যায় যে আদি কি দূর্দান্ত গায়ক। ওর গানের মধ্যে একটা শীতের সকালে কম্বল গায়ে দিয়ে মিঠে রোদ পোহানোর মত আরাম যা কান হয়ে সারা শরীর ছড়িয়ে যায়। এই গান কোনোদিন করেনি ও।
আর ওর তবলা বাজানোর মধ্যে সাপের বশীকরণ ক্ষমতা। ওটা শুনলে মনে হয় যেন শরীর আর আত্মা আলাদা হয়ে গেছে.. ।
সেদিন যদি ভুল করে ওর হাতে লেগে কফির কাপটা না ভাঙত ও জিজ্ঞেস করত কেনো নিজের এই প্রতিভা সবার আড়ালে রাখতো? 


কেনো সবার সামনে পশ্চিমী সঙ্গীতের প্রশংসায় পঞ্চমুখ অধিরাজ প্রধান ধ্রুপদী সংগীতের এক মূর্তিহিন পূজারী? 


গাড়িতে যেতে যেতে এসব ভাবছে…
ওর পাশে বসা ওর গুরু। যাকে ছেলেবেলা থেকে দেখে তার মতই হতে চেয়েছে। স্বয়ং রাজনন্দিনী দেব রায়! ঐশী ড্রাইভার এর পাশে। 
মাসখানেক হয়েছে শ্রী নন্দিনী ম্যাম এর থেকে তালিম নিচ্ছে ।
প্রথম প্রথম ঐশী ওর খুব ভালো বন্ধু ছিল কিন্তু যখন একসাথে রেওয়াজ এর সময় ঐশী আধুনিক গানের লম্বা টান গুলো তুলতো শ্রী ওকে শুধরাতে বলত।
এতে ওদের ভিতর দূরত্ব তৈরি হয়।
শ্রী আর আদির ব্রেকআপ এর কথা আদি ই ওর বাবা মা কে বলে। যেমন আদির সভাব। অটল,অবিচল। 
আদি ওর গাড়িতে উঠে ফিরেও তাকায়নি।
তাকালে দেখতে পেত শ্রী এর নিঃশব্দ আর্তনাদ।


শ্রী এখন দেব রায় ম্যানসন এ থাকে। অন্তত আগামী পাঁচ বছর তো থাকবেই।
অনিল বাবু পরিবারের বিষয়ে থাকেন না।
আর সুকান্ত বাবু রাশভারী লোক। 
নন্দিনী ম্যাম কে যেমন ভেবেছিল শ্রী তেমন নয়।
ওনাকে দেখলে মনে হয় কেউ জোর করে গান করায়। সাক্ষাৎ দেবী সরস্বতী। যেমন রূপ তেমন উগুন। আদির মুখ ওনার সাথে খুব মেলে। তবে ওর মধ্যে একটা পুরুষালি রুক্ষতা আছে যেটা ওর সভাবের উল্টো। এটাই তো ছিল ওর বৈশিষ্ট্য।


শ্রী রিলাক্স। তুমি অতিরিক্ত ভাবছ। ঐশী বলে। 
দোষ করেছে শাস্তি পাচ্ছে ।


ঐশী প্লিজ!
ওহ কাম অন মা…দা ভাই এর ওপর তোমার এই সফট কর্নার রেখোনা তো। It's way too much annoying… 
ঐশী, নন্দিনী ম্যাম.. আমি … আমি আদি দা কে কি করে ফেস করব..?
দেখো শ্রেষ্ঠা…অনেক সময় আমরা পরিস্থিতে পড়ে যাই অনেক সময় আমরা নিজেরা সেই পরিস্তিতি বানাই। কিন্তু যেকোনো পরিস্থিতিতে আপন জন যদি কষ্ট পায় তাহলে সেই কষ্ট নিজের গায়েই ফিরে আসে… আজ বুঝবে না… যেদিন বুঝবে সেদিন হয়তো দেরি হয়ে যাবে… ।


শ্রেষ্ঠা এবার নিজেকে প্রশ্ন করে…
আদি দা ওর গান কেন বিক্রি করবে?
আর ও যদি একদমই খারাপ গায় তাহলে সেদিন যে অত সুন্দর করে গাইলো? 
শ্রেষ্ঠা ভুল করেনি তো? 


গাড়ি প্রায় আদির বাড়ির কাছে পৌঁছে গেছে… ।


ঐশী বলে … শ্রী জাস্ট লুক! তোমার গান স্পটিফকাস এ একদম ট্রেন্ড করছে! 
তোমার নতুন ম্যানেজার সোহিনী যদি ঐ অডিও ক্লিপ না দিত আর ড্রিল বিট এর সাথে ক্লাসিক মেশানোর কথা না বলত.. উফ্। পাপা আর দাদুভাই কে খবর টা দি… ।


শ্রেষ্ঠা ভাবে তো এটা সোহিনী এর কাজছিল!!??


সে সঙ্গে সঙ্গে সোহিনী কে ফোন করে… 


সোহিনী বলে , থ্যাঙ্কস বলা লাগবে না … তুই ট্রেন্ড এ আছিস … 


তোর একটুও কাণ্ডজ্ঞান আছে? জানিস তোর জন্য কি হয়েছে? 


আরে আমি কি করলাম আবার? 
তোকে গত কাল আমি ফোন করেছিলাম… 
তুই কি বললি? তুই ক্লিপ সরস্নি? তাহলে এটা কি? 
তুই আমার ম্যানেজার? কবে ? কিভাবে?


শোন শ্রী, তোকে মিথ্যে বলেছি এর জন্যে রাগ করলে কর। কিন্তু আমায় যা করতে বলা হয়েছিল আমি করেছি। অনিল স্যার আমায় তোর ম্যানেজার এর পোস্ট দিয়েছেন। আমি সেই কবে থেকে মিডিয়া প্রফেসনাল হওয়ার জন্যে অ্যাপ্লাই করছি… তোর র ক্লিপ টা শুনে স্যার ওটা কিনতে চান। তাই আমি… কেন কি হয়েছে?! 


সোহিনী এটা আমায় বললে কি হতো? 
আমি তাহলে ওকে … 
আরে এতে আগে পরের কি আছে? তুই তোর গুরু পেয়েছিস, কত ব্র্যান্ড, ফেম, টাকা … আর তোর তো আমাকে থ্যাঙ্কস বলা উচিত … আমি ক্লিপটা যদি আদি দার পিসি থেকে সেন্ড না করতাম ওটা হয় পরে থাকত বা আদি দা এমন মডিফাই করতো ওর আসল টিউন টাই নষ্ট করত। 


দেখ তুই আমায় ক্লিপ টা 2 সপ্তাহ আগে দিয়েছিলি… তখনও নন্দিনী ম্যাম এর সাথে তোর পরিচয় হয়নি… আমরা শুধু ঐশী এর সাথে মিট করতে গেছিলাম…
তার দিন তিনেক পর নন্দিনী ম্যাম তোর গান সামনে থেকে শোনেন আর তোকে অফার করেন তুই ওনার থেকে গান শিখবি কি না… 
আমি এর মধ্যে sh এ চাকরি পাই। 
আমায় নতুন কোনো আইডিয়া দিতে বললে তোর ক্লিপ টা দি… 


এবার বলবি হয়েছে টা কি? 


মানে আদি দা গান বেঁচে নি? 
আদি দা গান বেচবে কোন দুঃখে? 
আর এখানে বেচা কেনার কথা হচ্ছেই বা কেনো? 
সোহিনী আমি সব শেষ করে ফেলেছি রে… 
সাফল্য তার দাম নিতে এসেছে…


এরপর শ্রেষ্ঠা গত কাল রাতের সব কথা বলে…


সোহিনী বলে… সবই বুঝলাম শ্রী কিন্তু ব্যাপারটা কোর্ট অবধি উঠেছে… তুই নিজেও জানিস যে আদি দা কে ভগবানের ও টলানোর ক্ষমতা নেই…


কিন্তু ওর সিস্টেমে তো তোর একসেস দেখলাম না… 
শ্রী তুই বইয়ের বাইরে বেরোলে বুঝতিস যে একাধিক ইউসার থাকলে সেকেন্ডারি ইউসার কে লগআউট করে আস্তে হয় আর আমি মেমোরি ক্লিন করে দি যাতে পিসি স্মুথ চলে… ।
তুই বললি আমি কোনো মেল সেন্ড করেছি কি না… আমি তো কোনো কিছু সেন্ড করিনি রে… জাস্ট ক্লিপ টা কপি করেছি… ।


আর তুই সেটা না বুঝে আদি দা কে এসব বলেছিস?! Very good..। 


এতক্ষণ সব শুনছিলেন রাজ নন্দিনী দেব রায়।


তিনিও এবার বলে ওঠেন… সব .. সব ওই দেব রায় দের চাল…
বাবাই কে এর আগেও কষ্ট দিয়েছে… এবার ও কষ্ট দিচ্ছে… ।
আমারই সব দোষ… ।


এবার তিনি কেদেই ফেলেন… ।


শ্রেষ্ঠা সোহিনী কে বলে ফোন রেখে দেয়… 
ফোন রেখে নন্দিনী কে সামলায়..


অতীতের অন্ধকার আর সোনার শেকল।


গাড়ি আর আধা ঘণ্টার মধ্যে আধিরাজ এর বাড়ির সামনে চলে আসবে … 


ম্যাম আপনার কি হয়েছে..?
আমি অন্যায় করেছি তোমার সাথে.. তোমায় ঠকিয়েছি।
কি বলছেন আপনি? আমি যে কিছুই বুঝতে পারছি না … 
শ্রেষ্ঠা এর বুক কাঁপতে থাকে…


নন্দিনী বলতে শুরু করে…
আমার স্বামী মারা যাবার পর আমি খুব ভেঙে পড়ি…আমায় বাবাই এর বাবা আমার জোর করে হতে যাওয়া বিয়ে থেকে একপ্রকার উদ্ধার করে…
আমি ছিলাম গরীব ঘরের মেয়ে..আমার বাবা তাই এক মাড়োয়ারি ব্যবসায়ী কে আমি 18 তে পড়ার সাথে সাথে আমায় বিয়ের নামে প্রায় বেঁচেই দিচ্ছিলেন… কিন্তু বাবাই এর বাবা আদিনাথ.. 
এলাকায় টিউশন পড়াতে আসতো.. সে যখন জানতে পারে ওর বন্ধুদের সাথে এসে ওই বুড়ো আর আমায় বিক্রি করতে চাওয়া বাবাকে মেরে চিৎপত করে ওই মন্দপেই আমায় বিয়ে করে।


আমার আর আদিনাথ এর বয়সের ফারাক 5 বছরের। ও ছিল দারুন তবলচি। ওর তানে আমি গান করতাম। বিশেষ করে পুজোর সময় এর অনুষ্ঠান গুলোতে। আমায় বিয়ে করায় ওর পরিবার ওকে একপ্রকার ত্যাগ করে।
তবে আমার ভাসুর, বড় যা, আর শাশুড়ি আমায় আলাদা করেনি।
আমরা দমদম এ চলে আসি। আলাদা করে সংসার পাতি। দাদাভাই আর্মি তে ছিলেন। আর ও আমায় যখন বিয়ে করে তখন সদ্য বায়ুসেনা তে অফিসার হয়েছে। মা, দিদিভাই যখন বাবাই হলো তখন খুব খেয়াল রেখেছেন।
কিন্তু সুখ সৈল না আমার। আজ থেকে 10 বছর আগে বাবাইয়ের বাবা মারা যান।
বাবাই এর মুখ চেয়ে ওর বাবার ঘট তি কিছুটা কমত। কিন্তু পুত্র শোকে শশুর শাশুড়ি গত হলেন।
এদিকে দাদাভাই ও তখন কাশ্মীরে।
যা টাকা আসতো তাতে খরচ চালানো মুশকিল হয়ে যায়… দিদিভাই তখন 6 মাসের প্রেগন্যান্ট।
আমি তাই গান শেখাতে শুরু করি…
SH এর তখন অবস্থা পতন মুখী। 
এক অনুষ্ঠান এ ওই কোম্পানির কর্নধার সুকান্ত বাবুর আমায় পছন্দ হয়। তিনি আমায় তাদের কোম্পানির জন্য গাইবার প্রস্তাব দেন।
আমার এদিকে হাতে সত্যিই টাকার অভাব। বাবাই এর খরচ, দিদিভাই এর চিকিৎসা ওর বাবার পেনশনের টাকায় চলে না… দাদাভাই টাকা দেয় কিন্তু সেটা যদি নিজেদের সুখে খরচ করি তাহলে দিদিভাই আর দাদাভাই এর ওপর বাড়তি বোঝা…
আমিও তাই খড়কুটো আঁকড়ে ধরার মত এই সুযোগ নিয়ে নি। 


প্রথম প্রথম কষ্ট হত… বাবাই কে রেখে যেতে। ও কতটা মা কে মিস করে জানতাম না কিন্তু আমি ওকে না দেখে থাকতে পারতাম না।
ছেলে আমার তখন বড় হয়েছে। নিজের পড়াশোনা আর রেওয়াজ নিয়েই থাকে।
ওর বাপের মতই তবলচি। আর ওই বয়সেই কি সুন্দর নিচের সুর ধরতে পারতো। 


Sh এ গাওয়া আমার গান পর পর হিট হয়।
তবে সেটা তো কোম্পানির লাভ। আমি আমার বাবাই কে এখন আবার সময় দিতে পারছি এটা ভেবেই আমি খুশি ছিলাম। 


আরো মাসখানেক পর অনিল দেব রায় এসে sh এর দায়িত্ত্ব নিল।
অনিল এর আগেও বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু ও কোনোদিন বাবা হতে পারবে না তাই ও ডিভোর্স নিয়ে নেয়। 


তাহলে ঐশী? শ্রেষ্ঠা ভাবে… 


স্টুডিওতে , রেকর্ডিং এর সময় আমার আর অনিলের বন্ধুত্ত্ব হয়.. হয়তো আমরা সমবয়সী ছিলাম আর দুজনেই সঙ্গী হিন ছিলাম … 


এরপর আরো দুঃখের খবর এলো… দাদাভাই কাশ্মীরে জঙ্গি দমনে সহিদ হন।
দিদিভাই এই যন্ত্রণা সহ্য করতে পারেন না…
বাঁচার আশা ছেড়ে দেন।
ডেলিভারি এর সময়ই উনিও আমায় ছেড়ে নিজের পরিবার কে যোগ করতে না ফেরার দেশে চলে যান। 
এদিকে প্রধান পরিবারের দুই সন্তান কে নিয়ে আমি পড়ি বিপদে। বাবাই তখন সাড়ে 5। আর ঐশী কেবল জন্মেছে… ।


বাচ্চা মেয়ে কে দেখতে গিয়ে আমার বাবাই এর দিকে মন দেওয়াও হয় না।
এদিকে ওর কলেজ থেকে কমপ্লেন আস্তে শুরু করে বাবাই ভীষণ hostile! 
বাবাই শুনে এসেছে আমার আর অনিলের নাকি সম্পর্ক আছে আর আমাদের মেয়ে ঐশী! 
আমি সেদিন বাবাই কে খুব বকি। আর প্রথম বার ওকে মারি পর্যন্ত। 
ওকে আমি হোস্টেল এ দিয়ে দি। 


অনিল প্রস্তাব দেয় যে আমি যদি তাকে বিয়ে করি ঐশীর ভবিষ্যৎ টা ভালো হবে। আর বাবৈয়ের পড়াশোনা গান বাজনা ও কোনো সমস্যা হবে না।


তারপর আমাদের বিয়ে হয়। আমি চেয়েছিলাম ব্যাপারটা কোর্ট ম্যারেজ হয়ে থেমে যাক। কিন্তু সুকান্ত বাবু নিজের একমাত্র পুত্রবধূর ধুমধাম করে বিয়ে দেন। বছর খানেক ঐশীর ব্যাপার গোপন রাখা হয়। আর পরে ঐশী যে অনিলের মেয়ে সেটা বলা হয়। 


কিন্তু আমি তো মূর্খ ছিলাম। আমি বুঝিনি আমি নিজে হারিকাঠে গলা দিচ্ছি। এটা মঙ্গলসূত্র নয় শ্রেষ্ঠা… এটা হলো সোনার বক্লেস.. স্লেভ কলার যেটা দিয়ে দেব রায় পরিবার আমায় বেঁধে রেখেছে। 


ঐশী কানে হেডফোন থাকায় কিছু শুনতে পাচ্ছে না।


বাবাই কে আমি বকাবকি করে দুইদিনের ভিতর হোস্টেল এ পাঠিয়ে দেওয়া… তারপর মাস দুয়েকের ভিতর বিয়ে আর সব শেষে ঐশীর খবর বাবাই এর ভুল ধারণা কে একটা বাস্তব আক্ষা দেয়।
আর এসব ছিল অনিল আর সুকান্ত দেব রায় এর চাল। যাতে আমি আমার একমাত্র সম্বল কে হারাই। 
আজ আমি ভাবি যে বাবাই কে ওর জেম্মা আর বোনের ব্যাপারে খুলে বললে ছেলে আমার বুঝত।
কিন্তু এখন তো বলেও লাভ নেই। 
অনিল যে শারীরিক ভাবে সক্ষম সেটা প্রমাণ করতে অনেক খরচ করে ওরা ডিএনএ রিপোর্ট ও বানিয়েছে। 


আর আমার ঘটা করে বিয়ের অনুষ্ঠান বাবাই লাইভ দেখেছে… । 


ঐশীর যখন 11 বাবাই তখন কলেজ থেকে পাস করেছে। কলকাতায় ফিরে এসে গেছিল তার বাড়ি। যেটা আমায় দিয়ে অনিল বিক্রি করায়।


অনিল আমায় বলেছিল যে বাড়ির যা অবস্থা , ধুলো , ঝুল পড়ে… আমার নিতান্ত প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে আমি যেনো চলে আসি.. ।


আমি বাবাই এর বাবার স্মৃতি, আর আমার পরিবারের ফটো নিতে চাইছিলাম… 
অনিল বলেছিল পরে অনিয়ে নেবে … কিন্তু সেটা ও করেনি। আমিও রেকর্ডিং, ট্যুর, প্লেব্যাক এ ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।


বাবাই ওর বাড়ি গিয়ে ওর বাবার সামগ্রী বাইরে ফেলা দেখে দেব রায় ম্যানসন এ ভীষণ অশান্তি করে। বাবাই এর রুদ্র রূপ দেখেছিল সেদিন সবাই। ও যে আদিনাথ এর ই ছেলে এটা দেখে আমার যেমন ভালো লাগছিল নিজের ওপর রাগ হচ্ছিল বেশি। আমি কেনো পারলাম না ওর বাবার স্মৃতি আগলে রাখতে? কেনো পরিস্থিতি কে দোষ দিচ্ছি? আমিও তো সাফল্য উপভোগ করেছি।
একটা বিরাট ঘর শুধু ট্রফি, সার্টিফিকেট, মেডেল, আওয়ার্ড, আর ছবি তে আর গিফট এ ভরা।


বাবাই এর এই রুদ্র রূপ দেব রায় রা ভালো ভাবে নেয়নি। আমায় হুমকি দেয় আমার বর্তমান শশুর যে ছেলের ক্ষতি না চাইলে ওকে এখানে ভদ্র ভাবে থাকতে বলো অথবা চলে যেতে বলো।


ঐশী ও কম যায় না। ওর দাদাকে যা নয় তাই বলে। ঐশীর কাছে ওর দাদা একটা গুন্ডা গোছের লোফার ছেলে যে কোনকিছুতেই ভালো না।


বাবাই আমার সাথে ফ্রাঙ্ক নয়। দেব রায় ম্যানসন এ আমি ওকে একপ্রকার নিজের দিব্যি দিয়ে আটকে রাখি। 


প্রধান বাড়ির ছেলে ও। মেধা, শক্তি, আর প্রতিভা ওর রক্তেই আছে। সেদিন যদি বলতাম অশান্তি না করে চলে যা.. ফিরে ও তাকাতো না। ওর নামে 6 টা স্কলারশিপ আছে যার মোট রাশি 6 লাখ টাকা। 
ইচ্ছে করলে ও এখন কোনো ভালো কলেজে ভর্তি হয়ে নিজের মতই থাকতে পারে। 


কিন্তু আমি তো পারবো না। আমি জানি শ্রেষ্ঠা তুমি আমায় লোভী , স্বার্থপর, ভীতু ভাবছ। এটাই তো ঠিক। কিন্তু আমি আমার বাবাই এর ভালো ছাড়া কিছু চাইনি। 


বাবাই এর গানের গলা খুব গভীর আর দূর্দান্ত গলার কাজ। দাদাভাই এর মত গলার স্বর। 
ওর বাবার মতো চেহারা। 
অনিল এর সহ্য হতো না। অনিল কে আমি বিয়ে করেছি তাই স্ত্রী ধর্ম পালন করি। কিন্তু ভালো তো বাসি আমার আদিনাথ আর আধিরাজ কেই।


অনিল তাই একদিন অধিরাজ এর সবচেয়ে দুর্বল নাড়ি তে হাত দিল.. 
ওকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল।
এতই যখন অহংকার নিজের ওপর, পারলে ঐশী কে হারিয়ে দেখাক।
বাবাই ফালতু চ্যালেঞ্জ ন্যায় না।
ও জানে ঐশীর গানের কোনো ট্যালেন্ট নেই। 
অটটিউন সরালে ওর গান সোনার মত থাকে না।
পশ্চিমী গায়িকা দের অনুকরণ এর চেষ্ট করে ঐশী। 
এখন আমি বুঝলাম না অনিল এই কাজ কেনো করলো? 
কারণ বাবাই এর সামনে খালি গলায় গাইলে ঐশী শুধু হারবেই না … একটা হস্যকৌতুক হয়ে যাবে… ।
বাবাই সরাসরি অনিল এর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলো। 
এবার অনিল চাল্লো তার সবচেয়ে ধূর্ত চাল।
তুমি নিজেকে ভাব তোমার চেয়ে বেটার কেউ নেই তাইনা? তুমি রাজনন্দিনী দেবরায়ের ছেলে । এ ছাড়া কি তোমার পরিচয়? তোমার মত লাখ লাখ ছেলে মেয়ে কলেজ কলেজে টপ করে বসে আছে…
ভারতে তোমার পরিচয় কি? 
ঐশী কে দেখো… তোমার চেয়ে মেরেকেটে 3 বছর ছোট, তাতে নিজের একটা মিউজিক অ্যালবাম বার করে ফেলেছে… কনসার্ট করছে… তোমার মায়ের সাথে লাইভ গাইছে.. তুমি … কি পারো তুমি অধিরজ প্রধান? 
বেশ তুমি যদি পারো ঐশীকে হারিয়ে দেখাও। যদি পারো আমি কথা দিচ্ছি তোমার মা কে দিয়ে কোনো কন্ট্রাক্ট সাইন করাবো না।
আমি জানি তুমি চাও না তোমার মা আমাদের হয়ে গান করুক , তুমি চাও তোমার মায়ের নিজের ব্র্যান্ড। বেশ তাই হোক। 
তবে তুমি যদি হারো কোনোদিন লাইভে না গাইবে না তবলা বাজাবে। ভেবে দেখ প্রধান… তোমার হারানোর অনেক কিছু আছে…


আমি রাজি।


বাবাই! এটা কি বলছিস বাবা! না না অনিল বাবাই কি বলছে ও বুঝছে না। 


আঃ, হচ্ছেটা কি রাণী!! অনিল ধমক দেয় রাজনন্দিনী কে। 


আদি চোয়াল শক্ত করে। নন্দিনীকে সে ভালবাসে না । কিন্তু মায়ের চেয়ে আপন কেউ নেই। তাই দেব রায় দের এই অত্যাচার সে নিতে পারে না।


তার মা কে এরা দাসীর মত পরিশ্রম করায়। আর আইনের জালে এমন পেঁচিয়ে রেখেছে যে না এদের থেকে বেরোতে পারবে না নিজের কিছু খুলতে পারবে। লোকে গান শুনবে চলে যাবে। এটা দেখার কারো না প্রয়োজন না দরকার যে গায়িকা কোন অবস্থায় আছে।
সেলুন, চায়ের ঠেক, ট্রেনের বাসের সিট এ যেতে কানে হেডফোন পরে বা রেডিওতে গান চালিয়ে বলবে … না আগের মত নেই… গায়িকা লেজেন্ড, কুইন অফ ক্লাসিকাল, গডেস অফ ইন্ডিয়ান মিউজিক ইত্যাদি ভারী ভারী উপাধি আর হ্যাশট্যাগ এর তলায় চাপা পড়তে পড়তে হারিয়েই যাবে। 


বাবাই ওর মায়ের ঘরে সিগারেট আর ওয়াইন দেখেছে। হুইস্কি ও দেখেছে। ওর মা যে এখন এগুলোর আশ্রয়েই টিকে আছে… ।
আগের ক্লাসিকাল আর জমছিল না। 
তাই চটক গান থেকে শুরু করে আইটেম সং অবধি করানো হয়েছে ওকে দিয়ে।
জনতা অবাক ও হয়েছে আবার সাদরে গ্রহণ ও করেছে। 


Adhiraj ঠিক করে, হয় এবার এই নরক থেকে ওর মা কে উদ্ধার করবে ওর সেই অস্ত্র দিয়ে যা ওকে ওর মা আর ওর বাবা দিয়েছে অথবা রণভূমিতে অস্ত্রত্যাগ করবে সারাজনমের মত। 
[+] 4 users Like মহারাজ's post
Like Reply


Messages In This Thread
Dikkhamonjuri - by মহারাজ - 03-02-2024, 01:29 PM
RE: Dikkhamonjuri - by KingisGreat - 03-02-2024, 08:02 PM
RE: Dikkhamonjuri - by মহারাজ - 03-02-2024, 08:05 PM
RE: Dikkhamonjuri - by Patrick bateman_69 - 15-02-2024, 11:18 PM
RE: Dikkhamonjuri - by KingisGreat - 16-02-2024, 12:24 AM
RE: Dikkhamonjuri - by DEEP DEBNATH - 16-02-2024, 12:29 AM
RE: Dikkhamonjuri - by KingisGreat - 16-02-2024, 12:51 PM
RE: Dikkhamonjuri - by Jibon Ahmed - 16-02-2024, 07:01 AM
RE: Dikkhamonjuri - by মহারাজ - 16-02-2024, 12:55 PM
RE: Dikkhamonjuri - by মহারাজ - 16-02-2024, 12:56 PM
RE: Dikkhamonjuri - by Bapon - 16-02-2024, 03:30 PM
RE: Dikkhamonjuri - by Fardin ahamed - 17-02-2024, 01:49 PM
RE: Dikkhamonjuri - by KingisGreat - 17-02-2024, 05:40 PM
RE: Dikkhamonjuri - by Lucifer1201 - 17-02-2024, 10:23 PM
RE: Dikkhamonjuri - by Jibon Ahmed - 18-02-2024, 05:55 AM
RE: Dikkhamonjuri - by Lucifer1201 - 24-02-2024, 09:14 AM
RE: Dikkhamonjuri - by Kutkut - 03-03-2024, 01:07 AM
RE: Dikkhamonjuri - by Somnaath - 03-03-2024, 10:55 AM
RE: Dikkhamonjuri - by kapil1989 - 03-03-2024, 12:06 PM
RE: Dikkhamonjuri - by Lucifer1201 - 21-03-2024, 12:46 AM
RE: Dikkhamonjuri - by Saj890 - 21-03-2024, 10:29 AM
RE: Dikkhamonjuri - by Kutkut - 30-03-2024, 01:09 AM
RE: Dikkhamonjuri - by KingisGreat - 30-03-2024, 03:41 AM



Users browsing this thread: 3 Guest(s)