Thread Rating:
  • 38 Vote(s) - 2.24 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অসম বয়সের বসন্ত(আপডেট-২১)(সাপ্তাহিক )
"আপনি এইটা আপনার স্বামীর বা শাশুড়ির কাছে কিছু বলেননি?"
"বলেছিলাম কিন্তু কেও বিশ্বাস করেনি। আমি সবসময় ঘরেই থাকতাম দরকার না হলে খুব একটা বের হতাম না আর বিকাশ সকালে অফিসে চলে যেত আসতো রাতে। সারাদিন নানান কাজে আর মা বাবাকে সময় দিয়েই চলে যেত। বিক্রম মাঝে মাঝেই আসতো আমার কাছে কথা বলতে আমিও না করতাম না। কিন্তু ওর লালসা ভরা চোখ আমাকে সব সময় ভয়ে রাখতো। আমি যতটা পারতাম নিজেকে ওর থেকে আড়ালে রাখতাম। ও কথার চলে আমাকে টাচ করার চেষ্টা করতো অ্যাডাল্ট জোকস মারতো আমি যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতাম। ঐ ঘরে বিকাশ ছাড়া দম বন্ধ হয়ে আসতো আমার কিন্তু আমার শশুর শাশুড়ি আমাকে এতো ভালোবাসতো এতো আদর করতো আমি তাঁদের কষ্ট দিতে চাইনি বলে তাঁদের সাথেই থাকতাম। এইভাবেই চলছিল দিন কাল আমরা বাচ্চা নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম এমন একটা সময় আমি খবর পাই বিকাশ গাড়ি এক্সিডেন্ট করেছে। আমার পায়ের নিচের মাটি সরে যায় আমি কি করবো ভেবে পাই না। বিকাশকে হসপিটালে আনার পর আমার ডাক্তার বলে ও মারা গিয়েছে।"
এই টুকুই বলে গভীর ভাবে একটা নিশ্বাস ছাড়লো নায়নী। কখের কোনে পানি চিক চিক করছে যেকোনো সময় পড়বে এই রকম অবস্থা। আকর্ষের এইটা দেখে মনের ভেতর উথাল পাথাল শুরু হয়ে গেছে। আকর্ষ চাইছে এখনই ওকে বুকে জড়িয়ে ওর চোখের পানি মুছে দিতে কিন্তু আকর্ষের এই অধিকার নেই তাই বললো,
" আমি দুঃখিত আমি বুঝতে পারিনি।"
"সমস্যা নেই এই ব্যাপারে কেও এতো টা জানেও না। বিকাশ চলে যাওয়ার পর আমার জীবনে শুন্যতা নেমে এসেছে পড়ে আমি খেতাম ঠিক মতো না কথা বলতাম কারো সাথে সারাদিন এক সাদা কাপড়ে থাকতাম ঘরে থাকলেই বিকাশ আর আমার স্মৃতি আমাকে তারা করে বেড়াতো। আমি অনেকটাই পাগলের মতো হয়ে গিয়েছিলাম। আমাকে আমার শশুর শাশুড়ি অনেক বার বলেছে আমি যেন আরেকটা বিয়ে করে সুখে থাকি কিন্তু আমি শুনি নি, কারণ ঐ ৩ টে মানুষের আমার ছাড়া কেও নেই। কিন্তু বিধিবাম একদিন ঘটে এক বীভৎস ঘটনা যা আমার সারাজীবনকে পাল্টে দেয়। আমি শুয়ে ছিলাম ঘরে রাত তখন ১টা কি ২টো হবে এমন সময় দরজায় টোকা শুনি আমি মনে করি হয়তো বাবা মা এসেছে তাই আমি  দরজাটা খুলে দেই দরজাটা খুলে দেওয়ার পর দেখি আর কেউ না বিক্রম আমি বলি "কি হয়েছে?" কিন্তু ও কথা না বলে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। ও আমার ঘরে ঢুকে একটু একটু করে আগাতে থাকে ও ঘরের ভেতরে এসে দরজাটা আটকিয়ে দেয় আমি বলি " তুমি এগুলো কি করছ? "ও কোন কথা না বলে  আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ও আমার কাপড় খুলতে শুরু করে আমি জোরে জোরে চিল্লাতে থাকি এমন সময় আমার শশুর শাশুড়ির ঘুম ভেঙে গেলে তারা আসে এবং এবং শুনতে পায় আমি বাঁচাও বাঁচাও বলে চিল্লাচ্ছি নিজেকে বাঁচানোর প্রাণ পন চেষ্টা করি।বাবা-মা তারাও প্রচন্ড জোরে দরজা খটখটাচ্ছে তারাও বলছে কি হয়েছে কি হয়েছে দরজা খুলতে বলছে। আমি মনে মনে ওপরওয়ালাকে ডাকছিলাম, আমি ভেবেছিলাম আজকেই মনে হয় আমার সতীত্ব খোয়াতে হবে  কিন্তু আমি একটিবার বছর শেষ চেষ্টা করলাম, আমার বিছানার পাশে একটা ফুলদানি ছিলো আমি সেটা দিয়েই বিক্রমের মাথায় আঘাত করলাম দেখলাম ওর মাথায় দিয়ে রক্ত পড়ছে একটু পড়ে ও অজ্ঞান হয়ে গেলো। আর আমি সাথে সাথে ঘর খুলে  বাবা মা কে জড়িয়ে ধরলাম। আমার অবস্থা দেখে তাঁদের বুঝতে বাকি রইলো না কি হয়েছে। সেদিনের সেই রাত ঐভাবেই কাটলো, সকালে আমাদের পরিবারকে সবাইকে ডাকা হয় আমার মা বাবা তারা পাথর হয়ে যায় আমার সাথে কি হয়েছিল শুনে। আমার মা বাবা তখন পুলিশ কেস করতে চেয়েছিল কিন্তু আমি না করি এতে আমার মৃত স্বামীর সম্মান নষ্ট হবে তাই আমি আর কিছু বলিনি তারপর ২ পরিবার মিলে সিদ্ধান্ত নেয় যে আমি আর ঐ ঘরে থাকবো না অনেক কষ্ট হয়েছিল ঐ মানুষ দুটোকে ছেড়ে আসতে কিন্তু আমার আর কিছুই করার ছিলো না। বাবা মা আমাকে বাসায় নিয়ে আসে, কিন্তু আমার সাথে যা হয়েছিল তার জন্য আমি অনেক বড়ো শক খাই আর আমি ট্রমাতে চলে যাই। মা বাবা আমাকে এই রূপে দেখে শুধু কাঁদতো। আমি সারাদিন ঘরে বন্দি করে রাখতাম নিজেকে। বাবা ছাড়া কোনো পুরুষ মানুষের কাছে যেতাম না। ভাই যখন আসলো তখন ও অনেক বুঝালো কিন্তু আমি এতো তাই ভয়ে ছিলাম যে আমি কিছুই বুঝতাম না। আমি আসার ৪ মাসের মাথায় বাবা মারা যায়, আমার বাবা আমাকে সব চেয়ে বেশি আদর করতো আমি কিছুই বলার আগেই আমাকে তা এনে দিতো। বাবার মৃত্যু আমি নিতে পারলাম না। নিজেকে দোষী মনে হতে লাগলো আমার জন্য এসব হচ্ছে না তো এইসব ভাবতাম। আমার অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছিলো তারপর আমার মা এক সাইক্যাট্রিস  এর সাথে আমার কাউন্সেলিং  করান। আস্তে আস্তে আমি ভালো হতে শুরু করি, বুঝতে শুরু করি সব পুরুষ এক না, নিজেকে বুঝাতে শুরু করি এর পাশাপাশি আমার কাউন্সেলিং ও চলতে থাকে। বাবা মারা যাবার দেড় বছরের মাথায় মা ও আমাকে একা রেখে চলে যায়। আমি হয়ে যাই এতিম। আমার ভাই ছাড়া আমার আর কেও নেই এই পৃথিবীতে। আমার মা মারা যাবার পর ভাই বলেছিলো ওর সাথে মুম্বাই যেতে কিন্তু আমি যায়নি। আমি এইখানেই একটা জব নেই। কিন্তু সেখানের মানুষ গুলো আমাকে চোখ দিয়েই গিলে খেত আমাকে কুপ্রস্তাব দিতো তাই আমি ঐ জবটা ছেড়ে দেই আর এইখানে আসি। অফিস শেষ করে যখন বাসায় যাই তখন  আমি বড্ডো একা আকর্ষ বড্ডো একা। "
এই বলে নায়নী কাঁদতে শুরু করলো। আকর্ষ এইটুকু সময় একটা কথাও বলেনি শুধু শুনে গেছে। মানুষ কতটা নিচু মন মানসিকতার হলে নিজের বৌদিকে রেপ করতে যায়  আকর্ষ দেখল  নায়নী অঝোরে কাঁদছে তাই দেরি না করে সাথে সাথে নায়নীকে জড়িয়ে ধরল আর বললো,
"আপনি একা না নায়নী আমি আপনার পাশে আছি সব সময় ছায়ার মতো আমি আপনাকে কিছুই হতে দিবো না।"
এই বলে নায়নীর চোখের জল মুছিয়ে দিতে লাগলো। নায়নী মুখে ওপরে তুলে দেখতে লাগলো আকর্ষকে। এইভাবে এতো শক্ত করে বিকাশের পর আকর্ষ প্রথম ধরলো। একটা শান্তির বাতাস নায়নীর বুঁকের ভেতর দিয়ে বইতে লাগলো।
আকর্ষ বললো,
"আর কাঁদবেন না আপনাকে কাঁদলে একটুও সুন্দর দেখা যায় না আপনি কাঁদবেন না আমি আছি আপনার পাশে সবসময়।"
এই বলে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো নায়নীকে আকর্ষ। নায়নী তাও কেঁদেই চলেছে আকর্ষ আর কিছু বললো না কাঁদুক কাঁদলে মন হালকা হবে অনেক দিনের কষ্ট জমিয়ে রেখেছে নিজের ভেতর। এতটা কষ্ট নিয়ে মানুষ বাঁচতে পারে  কিভাবে?  এইভাবে কতক্ষন ছিলো জানে না আকর্ষ আর নায়নী। অনেকক্ষন পড়ে ওদের ধ্যান ভাঙে। নায়নী দেখলো ও আকর্ষের বুকে একেবারে মিশে আছে, সাথে  সাথে আকর্ষকে একঝটকায় ছেড়ে দিলো। নায়নী মনে মনে বললো, ইসস কি লজ্জা পিচ্চি একটা ছেলেকে ধরে কাঁদলো, না জানি কি মনে করবে। আকর্ষ ও বসা থেকে উঠে পড়লো। আর নয়নী কে বলল
"চলুন সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে আপনাকে দিয়ে আসি।"
" এই বলে ওরা বাইকের কাছে গেল আর বাইকে করে চলে যেতে লাগলো এমন সময় আকর্ষ দেখলে সামনে একটা আইসক্রিম পার্লার সেখানে নিজের বাইক দাঁড় করালো আকর্ষ। তারপর নায়নীকে নামতে বলল।
আকর্ষ একবার নয়নের মুখে শুনে ছিল নায়নীর চকলেট আইসক্রিম  অনেক ভালো লাগে তাই নেমে ২টো চকলেট আইসক্রিম দিতে বললো। নায়নী বুঝলো আকর্ষ মনে রেখেছে ওর পছন্দ। ওর খুব ভালো লাগলো এইটা দেখে।  আইসক্রিম আকর্ষ নিয়ে আসলো একটা নায়নীকে দিলো আর একটা আকর্ষ খেতে লাগলো।  নায়নী দেখলো আকর্ষ আইসক্রিম খাওয়ার সময় ওর একটু নাকে লেগেছে এটা দেখে নায়নী হাসতে লাগলো। আকর্ষ বুঝতে পারলো না নায়নী কেন হাসছে তাই ইশারায় জিজ্ঞেস করলো কেন সে হাসছে?  নায়নী কিছু না বলেই আকর্ষের নাকে হাত দিয়ে আইসক্রিম পরিষ্কার করে দিতে লাগলো আর বললো,
"আইসক্রিম লেগেছেছিলো নাকে।"
এই বলে নায়নী হাসতে লাগলো।। আকর্ষও এটা শুনে হেসে দিলো। তারপর আইসক্রিম খেয়ে ঘরের জন্য রওনা দিলো। নায়নী সারা রাস্তা আকর্ষের পিঠের ওপর মাথা দিয়ে সারারাস্তা এসেছে। দেখতে দেখতে আকর্ষ নায়নীর ঘরে এসে পড়লো। নায়নী বাইক থেকে নেমে ঘরে চলে যেতে লাগলো। এমন সময় পিছনে ঘুরে বললো,
"ধন্যবাদ আজকের এই দিনটার জন্য।"
এমন সময় আকর্ষ নায়নীকে  বললো,
"নায়নী আপনি একা না আমি আপনার পাশে আছি। আর থাকবো।"
এইটা শুনে নায়নীর অনেক ভালো লাগলো। আর বললো,
"ঠিক আছে bye।"
"Bye।"
এই বলে আকর্ষ বাইক নিয়ে চলে আসলো। আর নায়নী আকর্ষের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।


চলবে
জানিনা কেমন হয়েছে আজকের পর্ব, নায়নীর কষ্ট কি ঠিক মতো তুলে ধরতে পেরেছি কিনা? আশা আজকের পর্ব কালকের পর্বের চেয়ে অনেক বড়ো। তাই আপনার গঠনমূলক মন্তব্য আশা করছি।

এই গল্প যদি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। যদি কোনো মতামত থাকে জানাতে ভুলবেন না। আমাকে ইমেইল করতে পারেন lf859782; অথবা টেলিগ্রাম এ এসএমএস দিতে পারেন @Paradox78789 এই নামে। আপনাদের এসএমএস এ আমি উৎসাহ পাই। তাই আমাকে বেশি বেশি করে উৎসাহ দিবেন এই আশা করি।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অসম বয়সের বসন্ত(আপডেট-১৪) - by বয়স্ক মহিলা প্রেমী - 10-02-2024, 08:06 PM



Users browsing this thread: 16 Guest(s)