01-02-2024, 07:48 AM
(01-02-2024, 06:10 AM)মাগিখোর Wrote: অতসীকে, রমেনবাবু এতটাই ভালোবাসেন; আজ অবধি, অতসীর কোনও কথায় না বলেননি। আজও বলতে পারলেন না। নিমরাজি হলেন। তাঁর শেষ কথা, তুমি যা ভালো বোঝো করো। ভবিষ্যতে কোনও সমস্যা এলে তার মোকাবিলা করতে হবে। কি আর করা যাবে।
✪✪✪✪✪✪
নিজের স্বামীর বুকে মাথা রেখে, শুয়ে শুয়ে, অতসী চিন্তা করতে লাগলো; পরবর্তী কার্যক্রমের কথা। নিজের ছেলে সুকান্তকে, পুরো ব্যাপারটায়; রাজি করতে হবে।
নিজের বিবাহিত স্ত্রীর শরীরের দাবি ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে, সে পাবে; নিজের পুরুষত্বহীনতার বদনাম থেকে মুক্তি।
বকলমে, সন্তানের পিতা হওয়ার সুযোগও তার আসবে। অন্যথায়,
নপুংসক হিসেবে, সমাজের ঘৃণার সম্মুখীন হতে হবে।
সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই ছেলের ঘরে গেল অতসী। ছেলেকে ঘুম থেকে তুলে বললো,
- অফিসে জানিয়ে দে; মায়ের শরীর খারাপ বলে আজকে অফিস যেতে পারবি না। মাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। তোর সঙ্গে কথা আছে, দুপুরবেলা বাড়িতে থাকিস।
একরাশ চিন্তা মাথায় নিয়ে; অফিসের নম্বরে ফোন ঘোরালো সুকান্ত। মায়ের কথামতো, অফিসে জানিয়ে দিল যে, সে আজকে অফিস যাবে না।
ব্রেকফাস্ট করে বাড়িতেই রইল সুকান্ত। ব্রেকফাস্ট করিয়ে রমেন বাবুকে দোকানে পাঠালো অতসী। নিজের কাজকর্ম সব গুছিয়ে, সাড়ে দশটা নাগাদ ছেলের ঘরে গেল।
মাথার নিচে হাত দিয়ে সুকান্ত বিছানায় শুয়ে আছে। ছেলের পাশে বিছানায় গিয়ে বসলো অতসী।
- কি ভাবছিস এত? কালকের ব্যাপারটা নিয়ে কিছু ভাবলি?
- এতদিন ধরে ভেবে যখন কিছু কিনারা করতে পারিনি; তখন, একদিনে কি আর ভাববো মা! — হতাশাগ্রস্ত সুকান্তর জবাব।
- কালকে রাতে, এই ব্যাপারটা নিয়ে তোর বাবার সঙ্গে আলোচনা করে; আমি একটা উপায় খুঁজে বার করেছি। অবশ্য, তোর বাবা রাজি হয়নি। কিন্তু, তুই যদি রাজি থাকিস; তাহলে তোর বাবাকে রাজি করতে, আমার বেগ পেতে হবে না।
- একরাত্রে কি এমন উপায় খুঁজে বার করলে মা? — ক্লিষ্ট স্বরে সুকান্তর প্রশ্ন,
- আমি সবটা বলব। কিন্তু, তুই আমাকে কথা দে, পুরো কথাটা শোনার পর যুক্তি দিয়ে বিচার করবি, আবেগ দিয়ে নয়। কোন সমস্যার সম্মুখীন হলে; আবেগের চাইতে যুক্তি বেশি কার্যকর।
- ঠিক আছে বলো আমি তোমার কথা শুনছি।
- না। আমাকে আগে কথা দিতে হবে; আমার পুরো কথাটা শোনার আগে, কথা বলতে পারবি না। আগে পুরোপুরি শুনবি; তারপরে যুক্তি দিয়ে বিচার করে তোর জবাব দিবি।
- আচ্ছা, ঠিক আছে মা। আমি কথা দিচ্ছি; তোমার কথা পুরোপুরি না শুনে; আমি কোন মন্তব্য করবো না। এখন বলো, কি এমন সমাধান তুমি খুঁজে বার করেছো এক রাত্রে।
অতসী ধীরে ধীরে বলতে শুরু করলো; তার শারীরিক অসুবিধার জন্য রমেন বাবুর কৃচ্ছসাধনের কথা। তাদের স্বামী-স্ত্রীর অকৃত্রিম ভালোবাসা এবং বোঝাপড়ার কথা। সুকান্তর শারীরিক ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও, পরিবারের প্রতি রমার ভালোবাসা এবং আত্মীয়তার অনুভব। সুকান্ত শারীরিক সমস্যার ব্যাপারটা জানাজানি হয়ে গেলে; সামাজিকভাবে হেয় হওয়ার সম্ভাবনা। সমস্ত ঘটনার জনসমক্ষে প্রকাশিত হলে, বন্ধুবান্ধবদের কাছে সুকান্ত যে হীনমন্যতার শিকার হবে তার কথা।
ছেলের মাথায় হাত বোলাতে বলাতে, অতসী ধীরে ধীরে; সামগ্রিক পরিকল্পনার কথা খুলে বললেন ছেলের কাছে।
সবশেষে এটাও বললেন; এই ব্যাপারটা না হলে, রমাকে ডিভোর্স দিয়ে দিতে হবে। অকারণে, ওই মেয়েটা শাস্তি পাবে; এটা অতসীর পছন্দ নয়।
- তুমি, বাবাকে বলেছ এই কথাগুলো? বাবা রাজি হয়েছে? — অবাক বিস্ময়ে, মায়ের মুখের দিকে চেয়ে প্রশ্ন সুকান্তর।
- না। তোর বাবা এখনো রাজি হয়নি। তবে, আমাকে এইটুকু অনুমতি দিয়েছে; তোকে এই প্রস্তাবটা দেওয়ার। তুই রাজি থাকলে, আমি রমাকে পুরো ব্যাপারটা জানাবো। তোদের মতামত জানার পরেই; তোর বাবা এই ব্যাপারটা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করবে। তবে আমি জানি, আমার কথা তোর বাবা কোনদিন ফেলতে পারেনি। এখনো পারবে না। এখন, এই সমস্ত জিনিসটা সীমাবদ্ধ, তোর মতামত আর রমার মতামতের উপর।
- কিন্তু মা, এই ঘটনাটা যদি ঘটে; আমি রমার সামনে মুখ দেখাবো কি করে? এক বাড়িতে থাকবোই বা কিভাবে?
- দেখ সুকু, ব্যাপারটা অহেতুক জটিল না করলেই হল। তোর আর রমার; যে সম্পর্কটা থাকার কথা, বাহ্যিকভাবে সেই সম্পর্কটাই বজায় থাকবে। শুধু রাত্রি দশটা থেকে সকাল ছ'টা অবধি, রমা তোর সঙ্গে থাকবে না। তুই এটাও বুঝতে পারছিস যে, তোর সঙ্গে ওই সময়টা রমার থাকার কোন প্রয়োজন নেই। সেক্ষেত্রে, থাকা বা না থাকা; দুই তোর কাছে সমান। বাকি জিনিসটা, স্বামী-স্ত্রীর যেভাবে সম্পর্ক থাকা দরকার, সেই ভাবেই থাকবে। আমি রমাকে সেটাই বুঝিয়ে বলবো। … ছেলেকে আরো বিশদভাবে বুঝিয়ে বলল অতসী,
- তুই রাত্তিরে খাওয়া দাওয়া করে যে রকম ঘরে চলে যাস, সেই ভাবে চলে যাবি। তোর বাবা আর রমা গেস্ট রুমে গিয়ে শুয়ে পড়বে। এবার ওদের চাহিদা মিটে গেলে; সকালবেলা যে যার ঘরে চলে গিয়ে; শশুর-বৌমা সম্পর্কিত স্বাভাবিক জীবন যাপন করবে। এর মধ্যে জটিলতা কিছু নেই।
অযথা জটিলতা আমরা নিজেরাই তৈরি করি।
প্রথম প্রথম, এই ব্যাপারটা হয়তো রোজই হবে। দেখবি, ধীরে ধীরে এই ব্যাপারটা; সপ্তাহে একবার দুবার থেকে, মাসে একবার দুবার হবে।
রমার গর্ভসঞ্চার হয়ে গেলে, ধীরে ধীরে সবটাই কমে আসবে। কারণ, তখন রমা নিজের সন্তানকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। তোকে মনে রাখতে হবে, রমার গর্ভে যে সন্তান আসবে; বাহ্যিক সমাজে, সে তোর সন্তান বলে পরিচিত হলেও, সে কিন্তু তোর ভাই। সে ক্ষেত্রে, তাকে মানুষ করার ব্যাপারে; তোর মতামতের চাইতে, তোর বাবার এবং রমার মতামতই প্রাধান্য পাবে।
এখন তুই এই ব্যাপারটা নিয়ে ভাবতে থাক। দুপুরে খাওয়া দাওয়া কর, আবার এটা নিয়ে আলোচনা করবো আমরা।
✪✪✪✪✪✪
Time stamp 06:10\\01/02/20242555
Best???