01-02-2024, 02:02 AM
(This post was last modified: 01-02-2024, 02:05 AM by বয়স্ক মহিলা প্রেমী. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
পর্ব :১১
গাড়িতে বসে নয়নী ভাবছে আকর্ষ এইটা কি বললো। আকর্ষ যেভাবে নায়নীর দিকে তাকিয়ে কথাটা বলেছে তাতে স্পষ্ট বুঝতে পেরেছে আকর্ষ কথাটা সিরিয়াসলি বলেছে। কিন্তু এই কথাটা বলার মানে কি নায়নী ভেবে পায় না। নায়নীর মনে একটা কথা বার বার নাড়া দিচ্ছে, একটা কথা জানতে খুব ইচ্ছে করছে, কিন্তু কিভাবে বলবে ভেবে পাচ্ছে না। আবার নিজের কৌতূহলও দমিয়ে রাখতে পারছে না। কোনো উপায় না পেয়ে বলেই দিলো,
"আচ্ছা তুমি আমাকে কেন এতো গুলো কথা বললে? আর বললে তো বললে তুমি যে অন্য মেয়েদের সাথে রাত কাটিয়েছো সেটাও বললে কেন? আমি যদি অন্য কাউকে বলে দেই এইসব।"
নায়নীর এই কথায় আকর্ষ শুধু নায়নীর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো আর বললো,
"আমি জানি আপনি কাউকে বলবেন না।"
"কেন বলবো না?"
"কারণ আপনি আমার বন্ধু। আর এখনকার সময় এইসব খুব নরমাল একেবারেই ডালভাত তো বলেও কোনো লাভ নেই।"
নায়নী ভাবলো আসলেই কথাটা সত্যি। আকর্ষ এবার জিজ্ঞেস করলো,
"শনিবার আর রবিবার আপনার কি কোনো প্ল্যান আছে?"
নায়নী বুঝলো না কিসের কথা আকর্ষ জিজ্ঞেস করছে।
"বুঝলাম না ঠিক কি প্ল্যান?"
"যেমন ধরুন বাইরে যাওয়ার বা কোনো রিলেটিভের বাসায় ঘুরে আসার কি কোনো প্ল্যান আছে?"
"না নেই কেন?"
"পারফেক্ট শনিবার আর রবিবার আমারো কোনো প্ল্যান নেই। শনিবার আর রবিবার আমি আপনাকে নিয়ে ঘুরতে যেতে চাই যাবেন আমার সাথে?"
এই কথা শুনে নায়নীর চোখ বড়ো বড়ো হয়ে গেছে, আকাশ থেকে পড়লো এই কথা শুনে। বলে কি এই ছেলে এই পিচ্চি একটা ছেলে ওকে নিয়ে ঘুরতে যেতে চায়। আর কি সাহস একেবারে মুখের ওপর বলে দিলো। আকর্ষ বুঝলো নায়নী একটু শক খেয়েছে। তাই বললো,
"এখন উত্তর দিতে হবে না। পরে উত্তর দিলেও চলবে। আর হ্যা যদি যেতে না ইচ্ছা হয় তাহলে না করতে পারেন। আমি আপনাকে জোর করবো না।"
নায়নী এই কথার প্রতি উত্তরে কিছু বলতে পারল না।
এরই মাঝে আকর্ষ হুট করে বলে উঠলো,
"আমার কাঁধ খালি আছে যদি ঘুমাতে চান ঘুমাতে পারেন। "
এই কথা বলেই আকর্ষ মুচকি হাসলো। এটা শোনার পর নায়নী লজ্জায় পুরো লাল হয়ে গেল। গাল দুটো লাল হয়ে গেল সাথে কানও। এত লজ্জা এর আগে কখনো পেয়েছি কিনা মনে করতে পারছে না নায়নী। নায়নী ভাবতে লাগলো,
"ইসস কি বলছে ছেলেটা। ওর মুখে কি কোনো লাগাম নেই নাকি। অফিসে তো এতো কথা বলতে দেখেনা নায়নী, কিন্তু আজকে মনে হয় কথার ঝুলি খুলে বসেছে।"
নায়নীকে লজ্জা পেতে দেখে বেশ লাগছে আকর্ষের। লজ্জা পেলে যে নায়নীকে এতো সুন্দর লাগবে সেটা কল্পনা করেনি আকর্ষ। একভাবে তাকিয়ে দেখতে ইচ্ছা করছে আকর্ষের। কিন্তু সেটা পারছে না, তাতে নায়নীর অস্বস্তি হতে পারে ভেবে আর তাকালো না।
সারা রাস্তা নায়নী আর আকর্ষের মাঝে কোন কথা হলো না। আসতে আসতে একটু রাত হলো, আকর্ষ দেখলো নায়নীর এখন যেতে হলে অনেক কষ্ট করতে হবে আর ট্যাক্সি বাস ঠিক মতো পাবে কিনা আর তার মধ্যে রাতে এভাবে ওকে ছেড়ে দেওয়াও ঠিক হবে না। তাই আকর্ষ জিজ্ঞেস করলো ড্রাইভারকে,
"আচ্ছা দাদা আপনি আমাদের কোথায় নামিয়ে দিবেন?"
আকর্ষের এমন প্রশ্ন শুনে অবাক হলো নায়নী এই প্রশ্ন করছে কেন আকর্ষ?
ড্রাইভার বললো,
"স্যার আমাকে তো অফিসে নামিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।"
আকর্ষ কিছুক্ষন ভাবলো আর বললো,
"দাদা আপনি আমাকে সামনের বাসস্ট্যান্ড এ নামিয়ে দিন। আর অফিসে যাওয়ার থেকে আপনি নায়নী ম্যামকে তার বাসায় নামিয়ে দিয়ে আসুন।"
"কিন্তু স্যার যদি পরে কিছু বলে?"
"চিন্তা করবেন না আমি স্যারকে ম্যানেজ করে নিবো।"
নায়নী এই কথা শুনেই বললো,
"আরে কি করছো অফিসে যেতে বলেছে অফিসেই নামিয়ে দিক না। "
"নাহ আমি আজকে বাইক আনিনি আর সামনের বাসস্ট্যান্ড থেকে আমার ঘর পর্যন্ত যাওয়া সহজ কিন্তু তোমার অফিস থেকে ঘর অনেক দূরে তোমার সমস্যা হবে তার চেয়ে ভালো আমি সামনে নেমেই চলে যাবো। আর দাদা তোমাকে ঘর পর্যন্ত দিয়ে আসবে ঠিক আছে। ঘরে গিয়ে এসএমএস করো। "
নায়নী কয়েকবার বুঝানোর চেষ্টা করলেও আকর্ষ শুনলো না। ও সামনের বাসস্ট্যান্ড এ নেমে চলে গেলো। নায়নী ভাবলো, এই টুকু একটা ছেলে কতই বা বয়স হবে এই বয়সেই এতো ম্যাচুরিটি। নায়নীকে যদি অফিসে নামিয়ে দিতো ড্রাইভার তাহলে আসলেই নায়নীর ঘরে ফিরতে অনেক সমস্যা হতো। নায়নীর এই কেয়ারিং স্বভাবটা খুব ভালো লাগলো। নায়নীর আজকে নিজেকে স্পেশাল মনে হলো। মনে হলো ওর জন্যও কেও আছে। নায়নীকে ড্রাইভার নায়নীর ঘোরের সামনেই নামিয়ে চলে আসলো। নায়নী ঘরে এসেই স্নান করে নিলো। সারাদিন অনেক দৌড়াদৌড়ি করতে হয়েছে, তার জন্য একটু টায়ার্ড লাগছে। স্নান শেষে নিজেকে অনেক ফ্রেশ লাগলো। আজকে শুধু একটা নাইটি পরে নিলো। অন্য কিছু পড়ার মুড হচ্ছে না। এই সময় নায়নীর মনে পড়লো, আকর্ষকে একবার এসএমএস দিয়ে জানিয়ে দেওয়ার দরকার না হলে হয়তো ওকে নিয়ে টেনশন করবে, আচ্ছা আসলেই কি টেনশন করবে নাকি ও বেশি ভাবছে এর উত্তর নেই নায়নীর কাছে। কিন্তু ও এসএমএস দিলো,
"আমি এসে পড়েছি।"
এই এসএমএস দেওয়ার কিছুক্ষন পরেই এসএমস আসলো,
"হ্যা জানি আমি খেয়ে নাও।"
নায়নী এই কথা শুনে আবার অবাক হলো, তাই জিজ্ঞেস করলো,
"কিভাবে?"
"আমি ড্রাইভার দাদাকে ফোন দিয়েছিলাম তোমাকে ঠিক মতো ঘরে পৌছিয়ে দিয়েছে কিনা সেই জন্য।"
এই এসএমএস পাওয়ার সাথে সাথে নায়নী আরেকবার শক খেলো আজকে সারাদিন এতো শক খাচ্ছে যে সেটা বলার বাইরে। নায়নী কি নলবে বুঝতে পারলো না একটা এসএমএস বার বার পড়তে লাগলো। কতটা ভাবলে একটা মানুষের জন্য এতো টা করা যায়। এইসবের পিছনে কি কোনো স্বার্থ নেই তো? এই সবই ভাবছিলো এমন সময় আরেকটা এসএমএস আসলো।
"খেয়েছো?"
"হুম খেয়েছি। "
"ঠিক আছে ঘুমিয়ে পড়ো। গুড নাইট।"
"গুড নাইট।"
নায়নী বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে ওর সাথে। যে নায়নী পুরুষ মানুষ একটু এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে সেই নায়নী আকর্ষকে এড়িয়ে চলতে পারছে না। কিন্তু কেন এর কোনো জবাব নেই। নায়নী আর এই সব নিয়ে ভাবলো না। সারাদিন অনেক জার্নি করতে হয়েছে শরীরটা অনেক ক্লান্ত তাই বিছানায় যাওয়ার সাথে সাথে ঘুমিয়ে পড়লো নায়নী।
চলবে
এই গল্প যদি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। যদি কোনো মতামত থাকে জানাতে ভুলবেন না। আমাকে ইমেইল করতে পারেন lf859782; অথবা টেলিগ্রাম এ এসএমএস দিতে পারেন @Paradox78789 এই নামে। আপনাদের এসএমএস এ আমি উৎসাহ পাই। তাই আমাকে বেশি বেশি করে উৎসাহ দিবেন এই আশা করি।