Thread Rating:
  • 38 Vote(s) - 2.24 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অসম বয়সের বসন্ত(আপডেট-২১)(সাপ্তাহিক )
#94
পর্ব :১০

নায়নী ঘরে এসে ফ্রেশ হয়ে নিলো। আজকে একটু ভালোই লাগছে। সারাজীবন বাইকে না বসা নায়নী আজকে বাইকে করে নিজের ঘরে এসেছে, আর কে দিয়ে গেছে নিজের অফিসের এক জুনিয়র। অন্য সবাই যেখানে ফায়দা লুটার চেষ্টা করতো টা করেনি। নায়নী ধরেই নিয়েছিলো, আকর্ষ বার বার ব্রেক করবে নিজের শরীরের সাথে ওর শরীর যেনো টাচ লাগে সে জন্য, কিন্তু আকর্ষ একদম তা করেনি উঠলো খুব সাবধানে এসেছে। নায়নীর অনেক ভালো লেগেছে ব্যাপারটা। ফ্রেশ হয়ে আসার পর নায়নীর মনে হলো একটি বার কল করে জানা উচিত বাড়ি পৌছালো কিনা? তাই নায়নী আকর্ষকে হোয়াটস্যাপে এসএমএস করলো,
"ঘরে পৌছিয়েছো?"
এসএমএস ডেলিভারি হলো ঠিকই কিন্তু সীন করলো না আকর্ষ। নায়নী বুঝলো হয়তো ব্যস্ত তাই রেপ্লায় দিচ্ছে না। আজকে আর কিছু খাবার ইচ্ছে নেই রেস্টুরেন্ট এ অনেক খাবার খেয়েছে। এই খাবারের জন্য কতো কষ্ট করতে হবে তা নায়নী ছাড়া কেও বুঝবে কিনা সন্দেহ। নায়নী ৩৭ বছরের হলেও নিজের শরীরকে একে বারে ফিট রেখেছে। যেখানে ওর বান্ধবীদের দেখলেই বলে দেওয়া যায় তার বয়স ৩০ এর ওপরে সেখানে নায়নীকে দেখলেই এখনও বুড়ো থেকে ছোকরা সবাই ঘুরে দেখে।


ঘরে এসে ফ্রেশ হয়ে মায়ের সাথে কথা বলেই ঘরে গিয়ে ফোনটা চার্জে দিলো সারাদিনের কাজের চাপে ফোনটা চার্জ দিতে ভুলে গেছে। ফোনটা যে কখন বন্ধ হয়ে গেছে সেটার কোনো খেয়াল নেই। তাই ফোনটা চার্জে দিলো। ফোনটা খোলার সঙ্গে সঙ্গে দেখলো নায়নীর এসএমএস। এসএমএসটা দেখে আকর্ষের মনে খুশির বন্যা বইতে লাগলো। কেন জানি আকর্ষের মনে আজকে রঙ লেগেছে।
আকর্ষ তাই দেরি না করে এসএমএস দিলো,
"হ্যা আমি পৌছিয়েছি। "

নায়নীর একটা ওয়েব সিরিজ দেখছিলো তখন নোটিফিকেশন আসে হোয়াটস্যাপের। নায়নী দেখে আকর্ষ পৌছিয়ে গেছে। তাই আর বেশি কিছু বললো না, শুধু বললো,
"ঠিক আছে। গুড নাইট।"

আকর্ষের এই এসএমএস পাওয়ার পর মনের ভেতর জ্বলতে থাকা আগুন ধপ করে নিভে গেলো।
মনে করেছিল আজকে একটু কথা বলবে কিন্তু না কথা বলা হলো না, কিন্তু যাক আকর্ষ এইটা ভেবেই খুশি যে ওকে নিয়ে ভেবেছে।


সৌমিত্র রায়ের কেবিনে যাওয়ার জন্য ডাক পড়েছে  আকর্ষের। সৌমিত্র রায়ের সাথে তার কেবিনে এইবার প্রথম যাবে। বাইরে ২ একবার কথা হলেও অফিসের ভেতর এই প্রথম। আকর্ষ দেরি না করে সৌমিত্র রায়ের কেবিনে গেলো। গিয়ে দেখলো নায়নী আগে থেকেই সেখানে বসা আছে। আকর্ষ কিছুটা অবাক হয়েই রইলো নায়নী আর আকর্ষকে একসাথে কেন ডাকা হলো ভেবে পেলো না। সৌমিত্র রায় দেখলো আকর্ষ দাঁড়িয়ে আছে,
"আরে আকর্ষ দাঁড়িয়ে আছো কেন বসো?"
"হ্যা স্যার।"
সৌমিত্র রায় বলতে লাগলো,
"তোমরা ২ জন অবাক হয়েছো হয়তো আমি তোমাদের আগে পরে কেন দেখলাম। আসলে আমাদের কোম্পানির একটা প্রজেক্টের কাজের জন্য আমাদের অফিসে থেকে ২ জনের কৃষ্ণনগর যেতে হবে। আমি ভেবেছি তোমরা ২ জন যাবে। আর আমাদের প্রজেক্টটা হ্যান্ডেল করবে আর ঐ কাজটা শেষ হওয়ার পর আমাকে একটা রিপোর্ট জমা দিবে। "
আকর্ষ কি বলবে বুঝতে পারলো না। এতো দেখি মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি। আকর্ষ সঙ্গে সঙ্গে সৌমিত্র রায়কে বললো, ও রাজি ও যাবে।  সৌমিত্র রায়ও ওর এতো উৎসাহ দেখে খুব খুশি। আকর্ষ নিজের কাজ নিয়ে খুব প্যাশনেট। তখন সৌমিত্র রায় অদ্রর বললো,
"কালকে সকালে অফিসার সামনে গাড়ি থাকবে সেই গাড়ি করে তোমরা যাবে। আর বিকেলের পর পরই তোমরা ব্যাক করবে। ঠিক আছে।"

আকর্ষ আর নায়নী দুইজনেই রাজি হলো তারা যাবে। তাঁদের কোনো সমস্যা নেই। সৌমিত্র রায় বললো,
"তাহলে তোমরা যেতে পারো।"
তখন নায়নী বললো,
"আমার কিছু কথা আছে স্যার।"
"হ্যা বলো।"

আকর্ষ তখন বললো, "আমি আসি স্যার।"
আকর্ষ এই বলে চলে গেলো। নায়নী তখন বললো,
"স্যার আমি চাচ্ছিলাম  রুপাকে  নিয়ে যেতে, রুপাকে নিয়ে যেতে পারলে ভালো হতো।"
সৌমিত্র রায় বুঝতে পারল নায়নীর ভয় করছে তাই সৌমিত্র নয় বলল,
"নায়নী তোমার কোন সমস্যা নেই আকর্ষ ভালো ছেলে। আর ওর কাজ অনেক দক্ষ আর আমি আশা করি কোন সমস্যা হবে না। তুমি নিশ্চিন্তে যাও যদি কোন সমস্যায় আমাকে ফোন দিও।"
নায়নী  আর কিছু বলতে পারোনা শুধু বলল,
"ঠিক আছে স্যার। আমি যাবো।"

আকর্ষ ডেস্কে যাওয়ার সাথে সাথে সবাই ওকে ঘিরে ধরল কি হয়েছে শোনার জন্য। আকর্ষ সব ভেঙে বলল ওদের। সবাই শুনে বলল ঘুরে আসতে কাজটা করে আসতে। ওরা সবাই কথা বলছিল এমন সময়  নায়নী আসলো আর ওদের সবাইকে একসাথে ডাকলো। আর সবাইকে বলল যে কালকে ও আর আকর্ষ থাকবে না তাই কার কি
কাজ করতে হবে সব বুঝিয়ে দিলো। আর বলল যদি কোন সমস্যা হয় নায়নীকে যেন ফোন দেয়।
এই কথা বলে নায়নী নিজের ডেস্কে চলে গেল। আর ওরা সবাই কাজে লেগে পড়লো।

ঘরে গিয়ে আকর্ষ ওর মাকে বলল কালকে ও  কিছু কাজে কৃষ্ণনগর যাবে আসতে অনেক রাত হতে পারে আবার তাড়াতাড়িও চলে আসতে পারে। সে যেনো খেয়ে নেয়। আর ওষুধ যেনো না ভুলে


কৃষ্ণনগর একটু দূরে যেতে কম করে ২ থেকে ৩ ঘন্টা লাগবেই তাই ওরা একটু সকাল সকাল রওনা দিবে। তাই নায়নী আর আকর্ষ ২ জনেই সকাল সকাল অফিসের সামনে হাজির। আকর্ষের আসতে একটু দেরি হয়েছে, কিন্তু খুব বেশি না।  আকর্ষ আজকে বাইক আনেনি। বাসে এসেছে তাই দেরি হয়েছে। আকর্ষ আসার সাথে সাথে গাড়ি ছেড়ে দিলো। প্রথমে আকর্ষ ভেবেছিলো ড্রাইভার এর পাশে বসবে কিন্তু নায়নী বসতে দেয়নি।  আকর্ষ নায়নীর সাথেই বসলো। নায়নী আকর্ষকে বুঝিয়ে দিতে লাগলো কি করতে হবে কিভাবে রিপোর্টটা তৈরী করতে হবে সব। আকর্ষও মনোজোগ দিয়ে সব শুনলো। কাজ বুঝানো হয়ে গেলে আকর্ষ ফোন বের করে গান শুনতে লাগলো চোখ বন্ধ করে আর নায়নী জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে ছিলো। এইভাবে কিছুক্ষন যাওয়ার পর নায়নী হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করেছিল, কিন্তু কক্ষ বন্ধ করার কিছুক্ষন পরেই নায়নীর চোখে ঘুম এসে পরে।


চোখ বন্ধ করে গান শুনছিলো আকর্ষ এমন সময় ওর কাঁধে ভারী কিছু অনুভব হয়। আকর্ষ বুঝতে পারে না কি? তাই ও চোখ খুলে দেখে আসলে কি হয়েছে? কিন্তু যা দেখলো তা দেখে ওর মাথা ঘুরে পরে যাবার মতো অবস্থা।  আকর্ষ দেখলো, নায়নী আকর্ষেরঘাড়ে কাঁধে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। ইসস কি সুন্দর লাগছে এই মানবীকে। মানবী বললে অপরাধ হবে নায়নী কোনো অপ্সরার থেকে কম না। আকর্ষ একবার হুমায়ন আহমেদের বইয়ে পড়েছিল,

“ যে নারীকে ঘুমন্ত অবস্থায় সুন্দর দেখায়
সেই প্রকৃত রূপবতী ”

সেই কথাটা নায়নীর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। অনেক নারীকে আকর্ষ ঘুমন্ত অবস্থায় দেখেছে কিন্তু নায়নীর মতো কাওকেই দেখেনি। আকর্ষ আর কিছুই বললো না। ও ঘুমিয়ে থাকতে দিলো। নায়নী যদি ওর কাঁধে সারাদিন ও এইভাবে ঘুমায় তাও আকর্ষ কিচ্ছু বলবে না। তাই ঐভাবেই রইলো।
তখনই রবীন্দ্রনাথের গান ফোনে বেজে উঠলো,

"তোমায় হৃদমাঝারে রাখবো
ছেড়ে দিবো না।"

আকর্ষ গান শুনতে লাগলো। আকর্ষের মনে কিছু হচ্ছে যা আকর্ষ বুঝতে পারছে না। বা বুঝেও না বুঝার মতো করে রয়েছে।
দেখতে দেখতে গাড়ি কৃষ্ণনগরের যে অফিসে আসার কথা ছিলো সেখানে এসে পড়লো। ড্রাইভার বললো,
"স্যার এসে পড়েছি।"
আকর্ষের মনে হলো এতো তাড়াতাড়ি এসে পড়েছে।  কিন্তু আদতে গাড়ি অনেক সময় ভোরেই এসেছে কিন্তু আকর্ষ একটা ঘোরের মধ্যে ছিলো এতক্ষন তাই বুঝতে পারেনি। আকর্ষ দেখলো নায়নী এখনও ঘুমে, এতো সুন্দর রমণীকে ঘুম থেকে উঠানোর কোনো ইচ্ছা না থাকলেও কোনো উপায় নেই তাই ডাকতে লাগলো।

"ম্যাম, ম্যাম উঠুন এসে পড়েছি। "

নায়নী চোখ খুলে দেখলো আকর্ষ ওকে ডাকছে। নায়নীর বুঝতে একটু সময় লাগলো কি হয়েছে যখনই  নায়নী দেখলো ও আকর্ষের কাঁধে মাথা দিয়ে আছে। সেটা দেখার পরেই এক ঝটকায় উঠে পড়লো। লজ্জায় লাল হয়ে উঠলো নায়নী। এই রকম লজ্জায় খুব কম পড়েছে নায়নী।
ইসস কি লজ্জা। এখন কি ভাববে আকর্ষ। এইসব ভাবতেই লাগলো। কিন্তু এই সব ভাবার সময় না এখন ওদের গন্তব্যে এসে পড়েছে। তাই দেরি না করে তাড়াতাড়ি গাড়ি থেকে নেমে অফিসে ঢুকলো।  অফিসে ঢুকেই কাজ শুরু করে দিলো। ওরা পুরো অফিস ঘুরতে লাগলো, আর রিপোর্ট তৈরী করতে লাগলো। নায়নী মনে করেছিল অনেক প্রশ্ন করবে আকর্ষ রিপোর্ট নিয়ে। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হলো আকর্ষ কোনো প্রশ্ন করেনি। যখন সব শেষ হয় আকর্ষের কাছে রিপোর্ট চায় তখন দেখে আকর্ষ অনেক সুন্দর করেই রিপোর্ট করেছে। এতো ভালো ভাবে রিপোর্ট করেছে যে সেখানে ভুল ধরার কোনো জায়গা নেই। যেখানে অন্য কেও আসলে অনেক সময় লাগতো রিপোর্টাও এতো ভালো হতো কিনা সন্দেহ আছে।  কাজ করতে করতে যে কখন দুপুর হয়ে গেছে। সেটা বুঝতে পারেনি নায়নী আর আকর্ষ। খিদেও লেগেছে তাই অফিসের কাজের পাঠ চুকিয়ে একেবারের অফিস থেকে বের হয়ে গেলো আকর্ষ আর নায়নী।  নায়নী ড্রাইভারকে বললো, পাশের একটা  রেস্টুরেন্টে নিয়ে যেতে। সেখানেই দুপুরের লাঞ্চটা সারলো নায়নী আর আকর্ষ। খাওয়া শেষ করেই দেখে  ড্রাইভার নেই কোথায় গেলো? ড্রাইভারকে ফোন দেওয়ার পর জানতে পারলো ড্রাইভার ওর এক দূরসম্পর্কের ভাইয়ের কাছে গিয়েছে। আসতে একটু সময় লাগলো। আকর্ষ এইটার সুজোগ নিয়ে বললো,
"ম্যাম পাশেই একটা পার্ক আছে চলুন সেখানে গিয়ে বসি ড্রাইভার আসলে আমাদের ফোন দিবে তখন না হয় আমরা রওনা দেই।"
নায়নীর ইচ্ছে না থাকলেও এতটা সময় কি করবে ভেবে না পেয়ে যাওয়ার জন্য তৈরী হয়ে গেলো।
যাওয়ার সময় একরাহ নিজের ফুল হাতা শার্ট গুটিয়ে নিলো। আকর্ষকে এইভাবে কয়েকদিন দেখেছে নায়নী এই লুকে আকর্ষকে দেখতে নায়নীর ভালো লাগে। আকর্ষ কিছু বলতে বলতেও বলতে পারছে না। নায়নী সেটা বুঝলো, তাই নায়নী নিজেই জিজ্ঞেস করলো,
"কিছু বলবে।"
"আসলে ম্যাম। কিভাবে বলি?"
"বলো সমস্যা নেই।"
"সত্যি  বলতে আমার একটু স্মোকিং এর অভ্যেস আছে। আমি একটু স্মোক করতাম। যদি পারমিশন দিতেন।"
নায়নী এই কথা শুনে হেসে দিলো, আর বললো
"ঠিক আছে করো।"
নায়নীর পারমিশন চেয়েই আকর্ষ একটা সিগারেট ধরলো।  সিগারেটের ধোয়া ভেতর ছাড়তে ছাড়তে পার্কে ঢুকলো নায়নী আর আকর্ষ। নায়নী গিয়ে একটা ব্রেঞ্চে বসলো। আকর্ষ একটু দূরে দাঁড়িয়ে স্মোকিং করে এসে নায়নীর পাশে বসলো। আকর্ষ বললো,
"ধন্যবাদ ম্যাম।"
"তুমি যদি আমার কাছে থেকে পারমিশন না নিয়েও খেতে তাহলেও আমি কিছু বলতাম না।"
"হয়তো চাইলেও করতে পারতাম। কিন্তু আপনি আমার সিনিয়র আর এখনও অফিসের কাজের আছি আমরা তাই আপনার কাছে থেকে পারমিশন নিলাম।"
"গুড। আচ্ছা আমার একটা প্রশ্ন আছে।"
"হ্যা ম্যাম বলুন না।"
"আমি শুনেছি তুমি আগের অফিসে টীম লিডার ছিলে তাহলে সেই পদ ছেড়ে এখানে আসলে কেন?"
"সত্যি বলতে ম্যাম। আমার মা একা আমার বাবা নেই আমার মার বয়স হয়েছে। উনি একা থাকতে চান না। আর মার শরীরের কন্ডিশনও খুব বেশি ভালো না। তাই আমি এখানে এসে পড়েছি। "
"তোমার বাবার কি হয়েছিল?"
"আমার বাবা আমাকে ক্লাস ১০ এ থাকতে হার্ট এটাক করে মারা যায়।"
"ওহ আমি দুঃখিত।"
"আরে না না ম্যাম কোনো সমস্যা নেই।"
"তোমাকে নিয়ে তো অফিসে কানাঘুষা হচ্ছে তুমি জানো? "
আকর্ষ নায়নীর দিকে অবিশ্বাসের চোখে তাকালো,
আর জিজ্ঞেস করলো,
"কেন ম্যাম?"
"তোমার কি গার্লফ্রেন্ড আছে কিনা? বা তোমার গার্লফ্রেন্ড থাকার পরেও তুমি কি লুকিয়ে রেখেছো কিনা এইসব। তুমি কিন্তু মহিলা মহলে খুব পপুলার।"
এই কথা শুনে, আকর্ষ জোরে জোরে হেসে দিলো আর বললো,
"নাহ ম্যাম আমার গার্লফ্রেইন্ড নেই। কিন্তু হ্যা একটা সময় ছিলো।"
"কেন এখন নেই কেন?"
"তাহলে আমাকে অনেক কিছু বলতে হবে।"
"বলো আমি শুনছি।"
আকর্ষ নায়নীর দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করলো,
" বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারের হাল ধরে আমার মা। বাবা বেঁচে থাকতে আমাদের পরিবার সুখেই ছিলো। বাবা ছিলেন কলেজ টিচার। বাবা মারা যাওয়ার পর সেই দায়িত্ব আমার মা কাঁধে তুলে নেন। ক্লাস ১১ এ আমার একটা সম্পর্ক হয় আমাদের কলেজের একটা মেয়ের সাথে। তখন কতই বা বয়স নতুন নতুন প্রেমে পড়েছি পড়াশোনা বাদ দিয়ে সারাদিন ওকে নিয়ে ভাবা ওকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়া এইসব একদিন ওর ফ্যামিলি আর আমার মা ব্যাপারটা জেনে যায়। তারপর শুরু হয় সমস্যা। মা আমাকে বলে সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে কিন্তু আমি আসিনা জিদ করে আমি সম্পর্ক চালিয়ে যাই, মায়ের সাথে প্রায় ঝগড়া হতো আমি পড়া লেখার করা ছেড়ে দিলাম সব ছেড়ে শুধু ওর পিছনে পরে থাকতাম ওকে জিয়ে ভাবতাম কিন্তু কথায় আছে না, গরিবের কথা বাসি হলেও ফলে আমার হলো সেই  দশা। যার জন্য এতো ঝগড়া এতো কিছু সেই একদিন আমাকে ছেড়ে চলে গেলো। তারপর আমি সেই কষ্ট সহ্য করতে পারলাম না সারাদিন ঘরে আটকে রাখতাম নিজেকে। খেতাম না ঠিক মতো মনে হয়েছিল আমার সব শেষ। আস্তে আসতে আমার ট্রাস্ট পরীক্ষা এসে পড়লো। আমি না পড়ার ফলে ফেল করে বসলাম ২টা সাবজেক্টে। আমি যেনো পরীক্ষা দিতে পারি তার জন্য মা হেডস্যারের সামনে গিয়ে কান্না করে দিলো। আমি আমার মার কান্না দেখে নিজেকে আটকাতে পারলাম না। মাকে নিয়ে ঘরে চলে আসলাম আর নিজেকে নিজেই প্রমিস করলাম আর মাকে কষ্ট পেতে দিবো না। তারপর আবার ক্লাস ১২ এ পড়া স্টার্ট করলাম দিন রাত ভুলে সব সময় পড়তাম যেখানে থেকে পারতাম নোট কালেক্ট করতাম। নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করলাম। দেখতে দেখতে বোর্ড পরীক্ষা এসে পড়লো। আমি পরীক্ষা দিলাম। আর সরকারি কলেজের জন্য প্রিপারেশন নিতে লাগলাম। রেজাল্ট দিলো আমি কলেজের মধ্যে সব চেয়ে ভালো রেজাল্ট করলাম। ভালো নাম করা সরকারি কলেজে চান্স পেলাম। সেখানেই পড়া শুরু করলাম। চান্স পাওয়ার পর নারী শরীররের অভাব হয়নি। নারী শরীর তখন হাতের নাগালেই ছিলো। কিন্তু আমি কউকে ভালোবাসতে পারতাম না। শুধু শরীরের ক্ষুদা মেটানোর জন্য নারী শরীর চাইতাম। এমন না যে আমি জোড় করে কাউকে ভোগ করেছি। যারা আমাকে সুজোগ দিয়েছে আমি তাঁদের ভোগ করেছি আর এতে আমি কোনো গিল্টি ফীল করি না। তারপর ভালো রেজাল্ট করে কলেজ থেকে বের হয়েই বেঙ্গালুরুতে চাকরিতে চলে গেলাম। "
এতো গুলো কথা বলে থামলো আকর্ষ। নায়নী চুপ করে সব শুনলো। কিছুই জিজ্ঞেস করেনি।
"এখনও কি তাকে ভালোবাসো?"
"নাহ তাকে আমি এখন ভালোবাসি না আবার ঘৃণাও করি না। তার সাথে আমার কিছু সুন্দর মুহুর্ত কেটেছে কিছু ভালো সময় কেটেছে আর সে না চলে গেলে আজকের আকর্ষ আমি হতে পারতাম না। ওহ আমি কিন্তু কলেজে ক্যাবলা কান্ত ছিলাম। ও চলে যাওয়ার পর নিজেকে পরিবর্তন করেছি।"
এই বলেই আকর্ষ হেসে দিলো।
নায়নী সেই হাসির দিকে তাকিয়ে থাকতে পারলো না। কিছু একটা আছে যা নায়নীর মনে ঝড় তুলে।
নায়নী তাই জিজ্ঞেস করলো,
"তাহলে কেমিকন মেয়ে পছন্দ তোমার?"
"কেন?"
"আমার আশেপাশে থাকলে আমি খুঁজে দিতাম?"
"যদি বলি আপনাকে পছন্দ।"
এই বলে আকর্ষ হেসে দিলো। নায়নী চোখ বড়ো করে করে তাকিয়ে বললো,
" কি বললে? "
নায়নীর কানে কথাটা বাজছে ও কি বললো?
আকর্ষ উত্তর দিলো,
"আরে বাবা একটু মজা করলাম। আপনি এই রকম করছেন কেন?
এই কথা শুনে নায়নী হাফ ছেড়ে বাঁচলো।
এমন সময় আকর্ষের ফোন বেজে উঠলো। দেখলো ড্রাইভার ফোন করেছে।
আকর্ষ বললো,
"চলুন ম্যাম। গাড়ি চলে এসেছে।"
এই বলে আকর্ষ উঠলো। আর নায়নীও আকর্ষের পিছনে পিছনে গাড়িতে গিয়ে বসলো। গাড়ি ছেড়ে দিলো কলকাতার উদ্দেশ্যে।


চলবে
অনেকদিন পর নতুন আপডেট দিলাম কেমন লাগলো জানাবেন। আজকে বড়ো করেই দিয়েছি। এই গল্পের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড়ো আপডেট এইটা।
এই গল্প যদি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। যদি কোনো মতামত থাকে জানাতে ভুলবেন না।  আপনাদের এসএমএস এ আমি উৎসাহ পাই। তাই আমাকে বেশি বেশি করে উৎসাহ দিবেন এই আশা করি।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অসম বয়সের বসন্ত(১০ম আপডেট) - by বয়স্ক মহিলা প্রেমী - 30-01-2024, 01:56 AM



Users browsing this thread: 10 Guest(s)