19-01-2024, 06:52 PM
(This post was last modified: 30-01-2024, 02:20 PM by বয়স্ক মহিলা প্রেমী. Edited 3 times in total. Edited 3 times in total.)
পর্ব:৯
{আপনার অনেকেই বলেছেন আপডেট তাড়াতাড়ি আসে না কেন? আসলে আমি একজন স্টুডেন্ট আমার পড়াশোনা থাকে আর মাঝে মাঝে আমার ইউনিভার্সিটিতে সারাদিন কেটে যায়। আমি জানি আপনারা আশায় থাকেন কিন্তু কি করবো বলুন আমার হাত বাধা। আর হ্যাঁ মঙ্গল ও বুধবার আপডেট আসবে না। এই দুইদিন ছাড়া প্রত্যেকদিন আপডেট আসবে। ধণ্যবাদ।}
এই কয়েকটা দিন খুব কষ্ট হলো নায়নীদের। সবাই হাড় ভাঙা পরিশ্রম করেছে এই কয়েকদিন। আজকে সেই পরিশ্রমের ফল পাওয়ার দিন। ওদের অ্যাড অনেক সুন্দর হয়েছে সবাই ওদের খুব বাহবা দিচ্ছে। আজকে একটু আগেই ওদের ক্লায়েন্ট কোম্পানির সাথে মিটিং হয়েছে। তারা খুব প্রশংসা করেছে নায়নীর আর ওর টীম মেম্বারদের। সবাই অনেক খুশি আজকে।
নায়নী নিজের কেবিনে বসে কাজ করছিলো, সৌমিত্র তখন ফোন করে বললো,
"হ্যালো নায়নী।"
"ইয়েস স্যার বলুন।"
"আমার কেবিনে আসো তো একটু।"
সৌমিত্র এর কেবিনে যাওয়ার সময় দেখলো,
ওর টীম কাজ করছে। আকর্ষ নিজের ফুল হাতা শার্ট গুছিয়ে কিছুটা হাফ হাতা বানিয়ে কম্পিউটারে কিছু টাইপ করছে।
এই ছেলে কি সব সময় সিরিয়াস থাকে নাকি, ভেবে পায় না নায়নী। ওর বয়সের ছেলেরা যেখানে কাজ করতে চায় না ফাঁকি দেয় সেখানে ফাঁকি তো দূরের কথা উল্টো বেশি কাজ করে। যা নায়নীর খুব ভালো লেগেছে বলা যায়।
নায়নী সৌমিত্রর কেবিনে এসে নক করলো,
"মে আই কাম ইন স্যার?"
"ইয়েস কাম ইন।"
নায়নী সৌমিত্রর কেবিনে গিয়ে বসলো, সৌমিত্র বললো,
"খুব ভালো হয়েছে কাজ, ক্লায়েন্ট খুব খুশি। কীপ ইট আপ।"
"ধণ্যবাদ স্যার।"
"আকর্ষ কেমন কাজ করেছে?"
"স্যার ছেলেটা ভালো। খুব পরিশ্রমী আর কাজ নিয়ে খুব সিরিয়াস।"
"হ্যা আমিও শুনেছি ও অনেক পরিশ্রমী।"
"হ্যা স্যার একবার কাজ করতে করতে সারারাত অফিসেই কাটিয়ে দিয়েছে।"
এই কথা শুনে সৌমিত্র যে অবাক হয়েসে সেটা দেখেই বুঝা যাচ্ছে। সৌমিত্র বললো,
"বাহ্ এইটা তো খুব ভালো।"
"হ্যা আসলেই ভালো স্যার।"
"ঠিক আছে এইভাবেই কাজ করবে তোমরা এই আশা করি। আর কোনো সমস্যা হলে আমাকে জানাবে।"
"ঠিক আছে।"
নায়নী আরো কিছু কথা বলে সৌমিত্রর কেবিন থেকে বের হয়ে গেলো। আগে ওদের প্রজেক্ট নিয়ে একটু বেশি কাজ করতে হতো কিন্তু এখন নতুন ছেলেটার জন্য এইটা করতে হয় না ঠিক টাইমে কাজ সাবমিট করতে পারে।
নায়নী ভাবলো সবাই অনেক কষ্ট করেছে এই কয়েকটা দিন নিজেরও অনেক কষ্ট হয়েসে তাই চিন্তা করলো আজকে ছোট্ট একটা ট্রিট তো দেওয়া যাই, যে ভাবা সেই কাজ ওর টীম মেম্বারদের ডেস্কে আসলো। আর বললো,
" শোনো তোমরা আমাদের প্রজেক্ট খুব ভালো হয়েছে আর স্যারও আমাদের প্রজেক্টের খুব প্রশংসা করেছে। তাই আজকে তোমাদের আমার তরফ থেকে ট্রিট। ঠিক আছে কাজ শেষ হলে আমরা সবাই খেতে যাবো। "
এইনকথা শুনে সবাই অনেক উচ্ছাস প্রকাশ করলো সবাই যে খুশির হয়েসে সেটা বুঝাই যায়।
তাই আরো বললো,
"সবাই বের হয়ে অফিসের সামনে দাঁড়াবে।"
সবাই রাজি হয়ে গেলো।
দেখতে দেখতে কাজ শেষ হয়ে গেলো। আজকের মতো আর কাজ নেই। তাই ওরা আস্তে আস্তে বের হতে শুরু করলো সবাই বের হয়ে গেলো। কিন্তু নায়নী এখনও আসেনি। তাই ওরা একটু অপেক্ষা করছে আর একটু পরেই নায়নী এসে পড়লো। ওরা একটু দূরেই একটা চাইনিজ রেস্টুরেন্টে খেতে যাবে। কিন্তু সমস্যা হলো ওরা ৫ জন আকর্ষের বাইক আছে কিন্তু একটা ট্যাক্সিতে ৩ জন ভালো করে বসতে পারে তাহলে আর একজন কিভাবে যাবে। তখন আকর্ষ বলে উঠলো,
"কেও আমার সাথে আসুক তাহলেই তো হয়।"
সবাই মিলে ডিসিশন নিলো আকর্ষ আর নায়নী একসাথে আসবে। যে ভাবা সেই কাজ। কৌশিক জয়দেব রুপা ট্যাক্সিতে উঠলো। আর অন্য দিকে আকর্ষ ও নায়নী এক সাথে করে বাইকে। কৌশিক আর বাকি সবাই মিলে ট্যাক্সিতে করে চলে গেছে কিন্তু নায়নী আকর্ষের বাইকে উঠতেই পারেনি, নায়নীর বাইকে চড়ার অভিজ্ঞতা নেই বললেই চলে
তাই একটু ভয় করছে নায়নীর। আকর্ষ নায়নীকে দেখিয়ে দিলো কিভাবে বসলে নায়নীর জন্য সুবিধা। নায়নী সেইভাবে বসলো। নায়নী বসার পর আকর্ষ বাইক স্টার্ট করলো, আকর্ষ বললো,
"ম্যাম আমার কাঁধে হাত রেখে ধরে বসুন না হলে পরে যাবেন। "
কিন্তু নায়নী শুনলো। নায়নী হাত না দিয়েই বসে রইলো। বাইক চলতে শুরু করলো। একটু কিছু দূর যাওয়ার পরেই একটা ছোট গর্তের জন্য গাড়ি পরে নায়নীর পরে যাওয়ার অবস্থা কিন্তু নিজেকে সামলিয়ে নিলো আর ধরে বসলো। আকর্ষ লুকিং গ্লাসে এই কান্ড দেখলো আর হাসলো। আকর্ষ যে হাসছে সেটা নায়নী দেখছে। একটু লজ্জাও লাগছে এই টুকু একটা ছেলে ওর ওপর হাসছে। কিন্তু কি করবে। সামনে রাস্তায় আরো ছোট ছোট কিছু গর্ত আছে তাই আকর্ষ বললো,
"ম্যাম শক্ত করে ধরে বসুন না হলে আবার পরে যেতে পারেন।"
এই বলে হাসলো, এই কথা শুনে নায়নী লজ্জায় লাল হয়ে গেলো। কিন্তু কি করবে কিছুই করার নেই। তাই ধরেই বসলো। যখনই বাইক ছোট একটা খাঁদে পড়ছে আর নায়নীর বড়ো ২তো মাই যখন আকর্ষের শরীরের সাথে সাথে লাগছে আকর্ষের শরীরে তখন বিদ্যুৎ খেলে যাচ্ছে। ইসস সেই অনুভূতি বলে প্রকাশ করা যাবে না। আকর্ষের বাঁড়া মহারাজ সেই স্পর্শে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে আকর্ষ খুব কষ্টে তা লুকিয়ে রাখলো না হলে ম্যান সম্মান সব শেষ
আকর্ষ দেখলো নায়নী নিজেকে যতটা পারছে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করছে কিন্তু রাস্তার কারণে টা হয়ে উঠছে না। তাই আকর্ষ বাইকের স্পিড একটু ধীর করে দিলো যেনো আস্তে আস্তে যেতে পারে নায়নীর যেনো কোনো সমস্যা না হয়। এইভাবে আস্তে আস্তে করেই নায়নীকে নিয়ে আকর্ষ রেস্টুরেন্টে পৌছালো। রেস্টুরেন্টে গিয়ে দেখল কৌশিকরা সবাই এসে পড়েছে, তাই নায়নীকে নামিয়ে দিয়ে তাড়াতাড়ি করে বাইক পার্ক করে রেস্টুরেন্টের ভেতরে ঢুকলো আকর্ষ। সেখানে ওরা একটা টেবিলে বসলো আর ওদের জন্য খাবার অর্ডার করলো, কৌশিক আর জয়দেব নুডলস অর্ডার করলো আর রুপা স্যুপ। আর নায়নী চিকেন উইংস আর আকর্ষ নিজের জন্য সুশী। ওরা সবাই খেতে বসলো, সবাই অনেক হাসা হাসি করছে তার সাথে নায়নীও করছে হাসাহাসি। আকর্ষ মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে নায়নীর দিকে একটা ৩৭ বছরের মহিলা, না না মহিলা বললে অনেক বড়ো পাপ হবে বলা যায় ৩৭ বছরের এক তরুণীকে দেখছে আকর্ষ। কি সুন্দর তাঁর হাসি কি সুন্দর তার চাহনি একেবারে বুকে গিয়ে লাগছে আকর্ষের। ফর্মাল ড্রেস নেই কোনো মেকাপ শুধু চোখে হালকা কাজল দেয়া তাতেই যেনো আকর্ষকে ভস্ম করে দিচ্ছে নায়নী। নায়নীর পাশেই বসেছে আকর্ষ নায়নীর শরীরের সেই কড়া ঘ্রাণ আকর্ষের নাকে যাচ্ছে। আকর্ষের বার বার এই ঘ্রানে মাথা খারাপ হবার জোগাড়। এই হাসি এই চোখ এতো সুন্দর একজন মানুষ কেন হাসে না? এইটা ভেবে খুব মন খারাপ হলো আকর্ষের। কথায় কথায় আকর্ষকে নিয়ে কথা উঠলো, আকর্ষ যে কাজ করতে করতে অফিসেই ঘুমিয়ে পড়েছিল সেটা নিয়ে হাসা হাসি করছিলো সবাই। তখন আকর্ষ বললো,
"কি করবো আর কাজের এত চাপ ছিলো যে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি সেটা জানি না। আর না আছে বউ না আছে গার্লফ্রেন্ড যে কেও মনে করিয়ে দিবে আমাকে যে রাত হয়ে গেছে।"
শেষের কথাটা নায়নীর দিকে তাকিয়েই বললো আকর্ষ। নায়নী এই কথা শুনে সাথে সাথে খাওয়ায় মন দিলো। কৌশিক তখন সাথে সাথে বলতে শুরু করলো,
"নাহ ভাই এইটা মানতে খুব কষ্ট হচ্ছে যে তোমার গার্লফ্রেন্ড নেই।"
"কষ্ট হলেও কি হবে গার্লফ্রেন্ড যে নেই।"
এই রকম নানান কথায় কথায় ওদের খাওয়া দাওয়া শেষ হলো আকর্ষ বিল পেমেন্ট করতে গিয়েছিল কিন্তু নায়নী তা করতে দেয়নি, বলেছে,
"আমি তোমাদের খেতে নিয়ে আসছি আমি তোমাদের খাওয়াবো।"
তাই আর কেও বিল পে করেনি। খাওয়া দাওয়া শেষ করে সবাই যখন বের হলো তখন ট্যাক্সি নিয়ে সবাই চলে গেলো বাকি রইলো, আকর্ষ আর নায়নী। যত গুলো ট্যাক্সিকেই বলছে, সবাই বলছে কেও যাবে না। নায়নী তো পরে গেলো মহা সমস্যায় এখন কি হবে নায়নীর?
চলবে
এই গল্প যদি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। যদি কোনো মতামত থাকে জানাতে ভুলবেন না। আমাকে ইমেইল করতে পারেন lf859782; অথবা টেলিগ্রাম এ এসএমএস দিতে পারেন @Paradox78789 এই নামে। আপনাদের এসএমএস এ আমি উৎসাহ পাই। তাই আমাকে বেশি বেশি করে উৎসাহ দিবেন এই আশা করি।