13-01-2024, 11:56 PM
(This post was last modified: 30-01-2024, 02:19 PM by বয়স্ক মহিলা প্রেমী. Edited 3 times in total. Edited 3 times in total.)
পর্ব ৭
আজকে দ্বিতীয় দিন আকর্ষের এই অফিসে। কালকে রাত্রে অফিস থেকে বাসায় যেতে অনেকটায় সময় লেগে গিয়েছিলো। অনেক দিন পর একটু সুন্দর মুহূর্ত কাটালো। বাসায় যেতে দেরি হয়েসে গিয়ে দেখে আকর্ষের মা আকর্ষের জন্য খাবার নিয়ে বসে আছে। আকর্ষ যখন বাসায় থাকে তখন আকর্ষের মা আকর্ষকে ছাড়া খায় না। কালকেও তাই হয়েছে। আকর্ষ গিয়ে দেখে মা বসে আছে তার জন্য। কিছুটা খারাপ লাগলো। তাই আকর্ষ ফ্র্রিৰ্শ হয়ে এসেই মায়ের সাথে খেতে বসতে পড়লো। তারপর আকর্ষ মাকে ওষুধ দেখিয়ে দিলো কোনটা খেতে হবে। আকর্ষ নিজের প্রথম দিনের অভিজ্ঞতাও বলতে লাগলো। কেমন মানুষ কেমন পরিবেশ এই সব। এর মাঝেই আকর্ষের মা বলতে শুরু করলো,
"এইবার বিয়ে করেনে। আমি অনেক ভালো ভালো মেয়ে দেখেছি কিছুদিন।"
এই কথা শুনে আকর্ষ বললো,
"এখন না মা আমি যখন প্রস্তুত হবো তোমাকে নিজেই বলবো।"
"হ্যা এই কথা শুনতে শুনতে আমি বুড়ি হয়ে গেলাম। আমার বান্ধবীদের ঠাকুমা ডাক শোনা শেষ আর আমার ছেলে এখন বিয়ে করলো না।"
"করবো মা আমাকে একটু সময় দাও।"
এরপর আরো কিছু সময় মায়ের সাথে কথা বলে নিজের রুমে চলে আসলো। বই পড়তে খুব ইচ্ছে করলেও পড়তে পারলো না, কারণ কালকে একটা মিটিং আছে। তাই আর দেরি না করে ঘুমিয়ে পড়লো।
আজকে অ্যালার্ম বাজার কিছুক্ষন আগেই ঘুম থেকে উঠে পড়লো নায়নী। খুব বেশি ঘুম হয়নি আজ। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে হালকা ব্যায়াম করে এক কাপ কফি আর হালকা ব্রেকফাস্ট করে অফিসের জন্য রওনা দিলো। অফিসে আসার পর দেখে এখনও অফিসের লোকজন সেভাবে আসেনি। নায়নী নিজের কেবিনে গিয়ে আজকের মিটিং এর জন্য প্রস্তুতি নিতে লাগলো। দেখতে দেখতে সবাই এসে পড়লো নায়নী আসার কিছুক্ষন পরেই আসলো আকর্ষ। দেখতে দেখতে মিটিং এর সময় আসলো। সবাই মিটিং রুমে উপস্থিত। সবাই আগে হাত মেলালো তারপর মিটিং শুরু হলো। মিটিং এ নতুন প্রোডাক্ট নিয়ে আলোচনা করা হলো, কিভাবে কি করতে হবে। আর কোন টীম কি কি করবে সেটা বুঝিয়ে দেওয়া হলো। নায়নীদের টীম মার্কেটিংয়ের দ্বায়িত্বে আছে। প্রোডাক্ট টা মার্কেটে আসতে আর সময় লাগবে ৭ দিন এই ৭ দিনের মধ্যেই ওদের সব অ্যাড আর ক্যাম্পেইন চালাতে হবে। মিটিং শেষ হওয়ার পর নায়নী ওর টীম নিয়ে ছোট্ট একটা মিটিং করলো। সেখানে ডিসিশন নেওয়া হলো কে কি কি দেখবে। নায়নী আর রুপা দেখবে টিভি অ্যাড, কৌশিক আর জয়দেব দেখবে অফলাইন অ্যাড আর আকর্ষ দেখবে অনলাইন অ্যাড। তারপর সবাই লেগে পড়লো কাজে। রুপা আর নায়নী চলে গেলো টিভি অ্যাড এর জন্য। জয়দেব আর কৌশিক কোথায় কোথায় ব্যানার পোস্টার লাগানো যাবে সেটা সেটা নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলতে লাগলো আর জায়গা দেখতে লাগলো। আকর্ষ ফেসবুক ইনস্টাগ্রাম এইসব সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে কোথায় কোথায় মার্কেট করা যাবে সেগুলো খুঁজতে লাগলো। কাজটা অনেক বড়ো আর অনেক বড়ো একটা কোম্পানির ভালো করে করতে পারলে আরো ডিল পাবে আর নিজেদের প্রমোশন হওয়ার চান্স থাকে তাই সবাই নিজের সর্বোচ্চটা দিতে চাই। আকর্ষ এই প্রোডাক্ট এর জন্য টার্গেটেড কাস্টমারকে আর তাঁদের কাছে কিভাবে এই প্রোডাক্ট পৌঁছানো যায় সেইটাও দেখতে লাগলো। কাজ করতে করতে কখন যে সন্ধ্যা হয়ে গেছে সেটার খেয়ালি নেই। সবাই চলে গেছে শুধু আকর্ষ আর নায়নী আছে। সবাই বলছিলো কখন যাবে ওদের বলেছে একটু কাজ বাকি আছে সেগুলো করেই যাবে। দেখতে দেখতে রাত ৮ টা বেজে গেছে। নায়নী কেবিন থেকে বের হতেই দেখলো ওদের টিমের নতুন ছেলেটা আছে। নায়নী খেয়াল করেছে, যখন ছেলেটার কাজ করে তখন সেটা নিয়েই কথা আর কোনো কথা নেই। কাজের ক্ষেত্রেও অনেক ডেডিকেশন দিয়ে কাজ করে। যা আজকাল কার ছেলেদের মধ্যে খুব বেশি একটা দেখার যায় না। নায়নী তাই যাওয়ার সময় বললো,
"আকর্ষ আপনি আজকে চলে যান কালকেও করা যাবে।"
এই কথা শুনে একটু ভয় পেল, আকর্ষ অনেক মনোযোগ দিয়ে একটা ডাটাশীট দেখছিলো। কথা শুনেই ছিটকে গিয়েছিলো। পিছনে ঘুরে দেখলো আর কেও নায়নী। নায়নীকে দেখে বললো,
"Yes, ম্যাম যাবো একটু কাজ বাকি ছিলো শেষ হলো।"
এই কথা বলেই কাঁধে অফিস ব্যাগটা ঝুলিয়ে নিলো। আর নায়নীর সাথে বের হতে লাগলো। অফিসে মানুষ নেই বললেই চলে। অফিস আওয়ার্ শেষ হয়েছে অনেক আগেই তাই অফিস খালি। নায়নী আর আকর্ষ একসাথে লিফট নিলো। পুরো লিফটে আকর্ষ আর শুধু নায়নী। আকর্ষের নাকে একটা সুন্দর ঘ্রাণ যাচ্ছে। সেই ঘ্রাণটা খুব তীব্র না হলেও ঘ্রাণটা খুব ভালোভাবে নাকে আসছে। প্রথমে বুঝতে পারেনি এতো সুন্দর স্মেল কোথায় থেকে আসছে। যখন দেখলো নায়নীর পাশে গেলে ঘ্রানটা তীব্র হয় তখন বুঝলো ঘ্রাণটা নায়নীর শরীরের। নারী শরীরের ঘ্রাণ অনেক নিয়েছে আকর্ষ কিন্তু এটাতে কিছু আছে যা পুরো মাথার ১২টা বাজিয়ে দিচ্ছে। আকর্ষ নেশাক্ত লোকের মতো সেই ঘ্রাণ শুকতে লাগলো নিজেকে পাগল পাগল মনে হচ্ছে, ঘ্রানটা আরেকটু ভালোভাবে নেওয়ার জন্য যখনই একটু কাছে কাছে যাবে ততক্ষনে দেখলো লিফট এসে পড়েছে। দুইজনেই লিফট থেকে বের হয়ে গেলো। আকর্ষের চিন্তা হলো, যে রাত তো অনেক হলো এতো দূর যেতে সমস্যা হবে না তো। তাই জিজ্ঞেস করলো,
"ম্যাম, রাত তো অনেক হয়েসে আপনার সমস্যা না থাকলে আমি আপনাকে নামিয়ে দিয়ে আসি। "
এই কথা শোনার পর নায়নী এমন ভাবে তাকালো দেখে মনে হলো খুব অবাক হয়েছে। নায়নীর চাহনি দেখে ভাবলো কিছু আবোল তাবোল বলেনি তো। একবার মনে করে দেখলো না কোনো উল্টা পাল্টা কিছু বলেনি। আকর্ষের দিকে তাকিয়ে বললো,
"ধণ্যবাদ। কিন্তু আমি যেতে পারবো। আপনি দেখে যাবেন।"
এই বলে নায়নী চলে গেলো।
নায়নী থাকে বেহালাতে। এখন থেকে যেতেও অনেক সময় লাগে। আর আকর্ষ থাকে অফিসের পাশের এলাকায়। তাই আর নিয়ে যেতে চাইলো না। এতো দূর একজনকে নিয়ে যাবে। শুধু শুধু একজনকে কেন এতো কষ্ট দিবে। আর সেই ঘটনার পর থেকেই পুরুষ মানুষকে ভয় হয় নায়নীর। নায়নী ট্যাক্সি নিয়ে চলে গেলো।
আকর্ষের ইচ্ছে হচ্ছিলো আরো একটু ঐ নারীর সানিদ্ধ পেতে। আকর্ষের নারীর ওপর এতো ইন্টারেস্ট আসে না কিন্তু এই নায়নীর বেলায় সেই কথাটা কেন যেন লাঘব হয় না। কেন? এই কথাটার উত্তর আকর্ষের কাছেও নেই। আকর্ষের আজকে নিজেকে লোভী লোভী লাগছে। সেই ঘ্রাণ এখন যেন তার চারপাশে আছে।
নায়নী ভাবছে অন্য সবার চেয়ে এই ছেলেটা আলাদা। অন্য অনেক লোক নায়নীকে কামনার চোখে দেখলেও এই ছেলের চোখে দেখে মুগ্ধতা। যা নায়নীকে ভাবায়। সবাই নায়নীকে সজ্জা সঙ্গী হিসেবে চায় সেটা আঁকার ইঙ্গিতে বুঝায়, কিন্তু নাহ ছেলেটা তার উল্টো। যা নায়নীকেও অবাক করে। নায়নী ছেলেটার ডেডিকেশন দেখেও মুগ্ধ। অনেক কর্মঠ ছেলেটা। সবার আগে নিজের কাজকে প্রাধন্য দেয়। অবশ্য হয়েছেও মাত্র ২ দিন এতো তাড়াতাড়ি কাউকে জাজ করা ঠিক না কিন্তু এই কাজে অনেক দিন অনেক মানুষের সাথের সাথে কাজ করেছে এই ছেলেটা অন্যরকম। নায়নী ঘরে এসে আগে ফ্রেশ হয়ে নিলো। শুধু একটা নাইটি পরে নিলো সারাদিন এই অফিসের ড্রেস পরে থাকতে ভালো লাগে না। সারাদিন পরে যখন নাইটিটা পরে তখন নিজেকে অনেক হালকা মনে হয়।
চলবে
এই গল্প যদি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। যদি কোনো মতামত থাকে জানাতে ভুলবেন না। আমাকে ইমেইল করতে পারেন lf859782; অথবা টেলিগ্রাম এ এসএমএস দিতে পারেন @Paradox78789 এই নামে। আপনাদের এসএমএস এ আমি উৎসাহ পাই। তাই আমাকে বেশি বেশি করে উৎসাহ দিবেন এই আশা করি।