09-01-2024, 02:13 PM
<×><×><×><×><×><×><×><×><×><×><×><×>
সুরেশের জন্মের পূর্ব কথন
<×><×><×><×><×><×><×><×><×><×><×><×>
অষ্টমঙ্গলার দিন দুপুরে বৌ নিয়ে শ্বশুরবাড়ি পৌঁছোলেন কালি বাঁড়ুজ্জ্যে। একহাত ঘোমটা দিয়ে, শাশুড়ি তাড়াতাড়ি একঘটি জল আর গামছা দিয়ে, দাওয়ায় একটা আসন পেতে দিলেন। শ্বশুর মশাই হাত জোড় করে সামনে দাঁড়িয়ে।
ঘটির জল দিয়ে, হাত-পা ধুয়ে, গামছা দিয়ে মুছে, শাশুড়ির হাতে গামছাটা দিয়ে বললেন,
- - আমি দিবাকালে স্বপাক আহার করি। আপনার মেয়ে জানে। আপনি অনুগ্রহ করে ব্যবস্থা করে দেবেন।
- - সেকি বাবা? তুমি কিছু খাবে না।
- - সান্ধ্যকালীন জপের শেষে, যৎসামান্য ফলাহার করি। কোন বাহুল্যের প্রয়োজন নেই। আপনি আজকেই জোড় খোলার ব্যবস্থা করবেন। আগামীকাল প্রত্যুষে, আমি গুরুদেবের আশ্রমে যাবো। আরেকটা কথা, আপনাদের আহারের শেষে, আমার ঘরে আসবেন। কিছু আলোচনা আছে।
জপ করছেন না মঙ্গলময়ের কাছে অভিযোগ জানাচ্ছেন; বোঝা গেলো না।
অজানা আশঙ্কায় ভীত সন্ত্রস্ত শ্বশুর; দ্বিপ্রাহরিক আহারান্তে জামাইয়ের সামনে এসে বসলেন। শাশুড়ি দরজার পাশে। নববিবাহিত বধু দুর্গা, বাইরের বারান্দায়, খুঁটি আঁকড়ে দাঁড়িয়ে আছে।
- - আপনাদের কন্যা গর্ভবতী? আপনারা জানতেন না?
- - সবই আমার পাপ, আমার ভুল,
- - আমার মেয়েকে ত্যাগ করো না বাবাজীবন।
কাঁদতে কাঁদতে বললেন দুর্গার মা।
- তোমাদের বাড়িতে তো একজন দাসীর প্রয়োজন; আমার মেয়ে না হয় দাসী হয়েই তোমাদের বাড়িতে থাকবে। তুমি যদি পরিত্যাগ কর, তাহলে সবংশে আত্মহত্যা করা ছাড়া, আমাদের আর কোন উপায় থাকবে না। তুমি সাধক মানুষ ব্রহ্মহত্যার পাপ তোমাকে মানাবে না।
- - আমি আপনাদের কথা দিতে পারছি না। কাল উষাকালে আমি গুরুদেবের আশ্রমে যাব। গুরুদেবের সাথে আলোচনা করে, গুরুদেবের দেখানো দিশায় ঠিক করব আপনাদের কন্যার ভবিষ্যৎ। তার আগে, আমি জানিনা ভবিষ্যতের গর্ভে কি আছে?
কালী প্রসাদের অধিকারের সীমা প্রথম লঙ্ঘিত হলো গুরুদেবের আদেশে।
কালিপ্রসাদ ভাবছেন; 'এও কি সম্ভব? আমার মা জেনে শুনে, আমাকে উচ্ছিষ্ট দুর্গার গর্ভ সঞ্চারের আজ্ঞা দিতে পারবেন! জানিনা; গুরুদেব যখন বলছেন, ভবিষ্যতের গর্ভে সেটাই আছে।'
নির্দিষ্ট সময় অন্তে আমার জন্ম।
- - হ্যাঁ! আমিই ভাইচুদীর ছেলে নরেশ।
দাদার কথা শেষ হলো। ঘরের মধ্যে চরম নিস্তব্ধতা।
মানুষের ভবিতব্য বড়ই বিচিত্র। দীর্ঘদিন বাদে, মৃত্যুশয্যায় কালি প্রসাদের মায়ের আদেশ হল দুর্গার গর্ভসঞ্চারের।
স্তম্ভিত কালিপ্রসাদ। জীবনে দ্বিতীয় বার, মাটিতে ভূলুণ্ঠিত, জ্ঞান হারা দুর্গা।
মাতৃ আজ্ঞায় কালীপ্রসাদের অধিকারের দ্বিতীয় উল্লঙ্ঘন।
মায়ের দাহকার্য সমাপনান্তে, সন্ধ্যাহ্নিকের শেষে, কালীপ্রসাদ দুর্গাকে ডাকলেন, … নরেশের মৃদু কণ্ঠস্বর শোনা গেল,
- - তোমার শেষ ঋতুস্নান কতদিন আগে হয়েছে?
- - সাত দিন। … নত মুখে দুর্গার উত্তর।
- - আগামীকাল, অমাবস্যার দিন বাদ দিয়ে; আগামী পরশু থেকে, একুশ দিন; মাতৃ আদেশ এবং গুরুদেবের আজ্ঞা অনুযায়ী, আমি তোমার শরীরে উপগত হব। এই সময়ের মধ্যে যদি তোমার গর্ভ সঞ্চার হয়; তাহলে আমি জানব, আমার পিতৃবংশ লুপ্ত হওয়ার হাত থেকে বাঁচলো। অন্যথায়, কালী সাধকের যা পরিণতি তাই হবে।
- - এই ১৫ দিন, শারীরিক ক্রিয়াকর্মের প্রয়োজন ছাড়া, তুমি সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় মন্দিরেই থাকবে। বাইরের যতোটুকু কাজ থাকবে, আমি করে আসার পরে, আমিও এই মাতৃ মূর্তি সামনে নগ্ন অবস্থায় থাকবো। এই মুহূর্তে ব্রহ্মবীর্য্য ধারণ করার ক্ষমতা তোমার নেই। পাঁচদিন, তোমাকে কারণ পান করিয়ে, অচেতন অবস্থায় সঙ্গম করব আমি। কোন শারীরিক সুখের আশা তুমি আমার থেকে করবে না। তোমার গর্ভ সঞ্চার হয়ে গেলে, অন্যরকম কোন ঘনিষ্ঠতার চেষ্টা করবে না। আমি, আগামী ২১ দিনে যেটা করবো; সেটা সম্পূর্ণ মাতৃ আজ্ঞা পালনার্থে এবং গুরুদেবের ইচ্ছায়। এর অন্যথা যেন না হয়।
- আমার বয়স তখন চোদ্দ বছর। ঠাকুমার মৃত্যুর পরদিনই, আমাকে মামার বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তার কারণ আমি তখন বুঝতে পারিনি। মায়ের মুখে যেটুকু শুনেছি, … নরেশের গলা আবার পাওয়া গেল, … প্রথম পাঁচ দিন কিছুই বুঝতে পারেনি মা। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে দেখতো, নগ্ন শরীরে ভূমি শয্যায় পড়ে আছে। সারা শরীর বীর্যে মাখামাখি। যোনিদেশে অসম্ভব ব্যথা। বৃহদোষ্ঠ্য ফুলে আছো। সারা শরীরে নখক্ষত আর দংশন চিহ্ন।
- এই সমস্ত কথা আমি আগে জানতাম না। উমার জন্মের আগে, মা এই সমস্ত কথা আমাকে খুলে বলে। …
দাদার গলা পাওয়া গেল।