08-01-2024, 06:56 PM
(This post was last modified: 30-01-2024, 02:18 PM by বয়স্ক মহিলা প্রেমী. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
পর্ব :৫
দেখতে দেখতে প্রথম দিনের অফিস আওয়ার্স শেষ আকর্ষ এর। নতুন জায়গা নতুন মানুষ নতুন পরিবেশ সব মিলিয়ে গুছিয়ে নিতে একটু সময় লাগবে আকর্ষ এর। বেঙ্গালুরু থেকে এসেছে আজকে ৮ দিন। সাত দিন বাড়িতে থাকার পরেই ৮দিনের দিন অফিসে জয়েন করেছে আকর্ষ। জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখলো, সূর্য পশ্চিমের আকাশে ঢোলে পরেছে। আর কিছু সময় পর যে সন্ধ্যা হয়ে যাবে সেটা ভালোই বুঝা যাচ্ছে। তাই নিজের ব্যাগ গুছিয়ে ছিলো। এমন সময় কৌশিক আর জয়দেব আসলো ওর কাছে। কৌশিক বললো
"বাড়িতে কি কোনো কাজ আছে আজকে?"
"নাহ তো কেন?"
"চলো তাহলে আমাদের সাথে সময় কাটাবে তুমি আমাদের নতুন টীমমেম্বার তুমি আসার উপলক্ষে একটু ঘুরে আশা যাক।"
আকর্ষ ও না করতে পারলো না। তাই ওদের সাথে যাওয়ার জন্য রাজি হয়ে গেলো। তারপর সবাই নিজের কাজ আর ডেস্ক গুছিয়ে বের হতে লাগলো। আকর্ষ বললো তোমরা অফিসের সামনে গিয়ে দাড়াও আমি আসছি। এই বলে আকর্ষ নামতে লাগলো। কৌশিক জয়দেব আর রুপা নিচে নেমে গেলো আর ওরা নিজেদের মধ্যেই আড্ডা দিতে লেগে গেলো আর হাসাহাসি করতে লাগলো। আর মধ্যেই দেখলো নায়নী আসছে তাই দেখে ওরা একটু চুপ হয়ে গেলো। সবাইকে এক সাথে দেখে বললো,
"সবাই এক সাথে যে?"
"আসলে ম্যাম আকর্ষ নতুন এসেছে তো তাই ওর জন্য ছোট্ট একটা পার্টির আয়োজন করেছিলাম আর কি।"
রুপা সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলো,
"ম্যাম আপনিও চলুন না আমাদের সাথে।"
এই কথা শুনে নায়নী হেসে দিলো, আর বললো,
" হা হা কি যে বলোনা। আমার কি ঐ বয়স আছে তোমাদের সাথে পার্টি করার। তোমরা যাও। "
তাও ওরা জোড় করতে লাগলো। এমন সময় ওদের পেছনে শোনা গেলো মোটরসাইকেলের একটা জোরালো আওয়াজ। সবাই আওয়াজ লক্ষ্য করে দেখলো কেও একজন একটা মোটরসাইকেল নিয়ে তাঁদের পেছনে দাঁড়িয়ে আছে ওরা সবাই মনে করলো হয়তো যাওয়ার জন্য রাস্তা চাচ্ছে তাই ওরা রাস্তা দিলো। এইটা দেখে আকর্ষ বুঝলো না কি হলো তাই আকর্ষ নিজের হেলমেট খুলে ফেললো। যখন দেখলো আর কেও না, এইটা আকর্ষ সবাই তখন আকর্ষের পাশে গেলো। সবাই একটু অবাক হলো, কারণ এতো দামি মোটরসাইকেল সচরাচর দেখার যায় না। জয়দেব সাথে বলে উঠলো, এইটা "Kawasaki Ninja ZX-4R না?"
আকর্ষ শুধু বললো,
"হ্যা।"
তখন কৌশিক বললো,
"চলো তাহলে দেরি না করাই ভালো।"
সবাই এক সাথে বলে উঠলো হ্যা। যখন রুপা নায়নীকে ডাকতে যাবে তখন দেখে নায়নী রাস্তায় গিয়ে একেবারে ট্যাক্সি ঠিক করে ফেলেছে। তখন রুপা তাড়াতাড়ি করে কাছে গিয়ে বললো,
"দিদি চলো না আমাদের সাথে।"
নায়নী শুধু একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললো,
"যাবো কিন্তু আজকে না আরেকদিন। আজকে তোরা এনজয় কর "
এই বলে একবার আকর্ষের দিকে তাকিয়ে নায়নী চলে গেলো। আকর্ষ বললো,
"তাহলে তোমরা সবাই ট্যাক্সি ঠিক করে উঠে পড়ো আমি তোমাদের সাথে আসছি।"
কৌশিক বললো,
"ঠিক আছে তুমি আমাদেরর পিছনে আসো।"
এই বলে ওরা ট্যাক্সি ঠিক করে উঠে পড়লো। আর আকর্ষ পেছনে পেছনে আসতে লাগলো।
ট্যাক্সি চলছে নিজের আপন গতিতে। আকাশে তাকালে দেখার যায় পশ্চিমের আকাশ লাল হয়ে গেছে সূর্য যে আর বেশিক্ষন নেই সেটা বোঝা যায়। পাখিরাও ঘরে ফিরতে শুরু করেছে নিজেদেড় ডানা ঝাপ্টে। গাড়ির জানালার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে নায়নী ভাবছে, নিজেকে এখন আর একটা মানুষ মনে হয় না। মনে হয় এক যন্ত্র। যার বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে সব আছে। কথাটা কি আসলেই সত্যি? সত্যি বলতে গেলে না। নায়নী এখন একা। নায়নীর মা বাবা গত হয়েছে অনেক আগেই এক ভাই আছে ও ওর কাজের জন্য থাকে দিল্লি। বয়সে বড়ো হলেও বোনের কথায় উঠে বসে। ঐ ভাইটা ছাড়া আর কেও নেই। রাত হলে নিজেকে একা লাগে। ঢুকরে কাঁদতে ইচ্ছা করে নায়নীর। নায়নীর টাকা পয়সা বাড়ি থাকলেও ভালোবাসার একটা মানুষ নেই। যে ওকে আগলে রাখবে। শাসন করবে নিজের মতো করে দেখে রাখবে।
অন্যদিকে ট্যাক্সির পিছনে পিছনে আসছে আকর্ষ। কৌশিক তখন ড্রাইভারের সাথে বসে আছে। কৌশিক পেছন ঘুরে বললো,
"আচ্ছা, জয়দেব আমাকে একটা কথা বলতো?"
"কি?"
"আকর্ষের বাইকটা তো অনেক দামি?"
"হ্যা অনেক দামি। সুপাইবাইক রে ভাই।"
"ইসস কতো সুন্দর বাইকটা।"
"হ্যা রে ভাই অনেক সুন্দর।"
"টাকা হলে আমিও একটা কিনবো।"
এইসব বলছিলো জয়দেব আর কৌশিক। আর রুপা দেখসে আকর্ষকে। রুপার এই প্রথম কোনো ছেলেকে দেখে তারপর তার থেকে মুখে ফেরাতে কষ্ট হচ্ছে।
ট্যাক্সি ঘরে আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে গেসে। সারাদিন কম ধকল যায়না তাই আগে ঘরে এসেই অফিসের জামা কাপড় খুলে ফ্রেশ হতে চলে গেলো ফ্রেশ হয়ে এসে পিঙ্ক কালারের নাইটি পরে নিলো। রাতে এইটাইমে নাইটি পরে থাকে নায়নী। চা করবে এর জন্য পানি গরম দিয়েছে। কিন্তু চায়ের পানি গরম দিয়ে অপেক্ষা করছিলো এর মধ্যেই একটা ফোন আসলো নায়নীর ফোনে। ফোন কানে নিয়ে,
হ্যালো বলতেই।
"তুই আমাকে ভুলে গেছিস।"
এই কথা শুনে অবাকের সর্বোচ্চ সীমানায় পৌঁছে গেলো। নায়নী ফোন তোলার সময় খেয়াল করে দেখেনি কে? ফোনের স্ক্রিনে ভেসে থাকা নাম আর কারো না। নায়নীর বান্ধবী রাখির। রাখি আর নায়নী ২ জনে এক কলেজ ও এক কলেজ থেকেই পড়াশোনা শেষ করেছে। এমন কিছু নেই যে ২ জন ২ জনের ব্যাপারে জানে না। একেবারে বেস্টফ্রেইন্ড যাকে বলে তারা সেটাই। নায়নী আবার ফোন কানে নিয়ে বললো,
"জ্বী আপনি কে? আমি আপনাকে চিনতে পারছি না।"
"এক্টিং বন্ধ কর।"
"তাহলে তুই ও এইটা বলা বন্ধ কর যে আমি তোকে ভুলে গেছি।"
"আমি তো ঐটা মজা করেছি।"
"হ্যা বুঝেছি বল কেমন আছিস?"
"আমি ভালো আছি তুই কেমন আছিস?"
"এইতো যেভাবে দেখেছিলি।"
"অফিস থেকে কখন এসেছিস?"
"এই মাত্র অফিস থেকে এসেই ফ্রেশ হলাম আর এর মধ্যেই তুই ফোন দিলি।"
"আমাকে একটু ফোন দিতে পারিস তো?"
"চাইরে কিন্তু সময় করে উঠতে পারি না, কিন্তু তুই তো দিতো পারিস।"
"জানিস তো আমার ছেলেটা আর স্বামীকে সামলাতে সামলাতে সময় চলে যায়।"
"তা রণ কেমন আছে?"
রণ হলো রাখির ছেলে। বয়স বেশি না। রণ খুব ভক্ত নায়নীর। নায়নী বলতে পাগল রণ।
"রণ আমাকে পাগল করে মারলো। একটুও পড়তে চায় না।"
"বাচ্চা মানুষ একটু বড়ো হোক।"
"হুমম। তা এইভাবে আর কতদিন নায়নী? এইভাবে কি সুখে থাকা যায় "
"কেন কি হলো? আমি তো দিব্বি সুখে আছি।"
"তুই বাইরের দুনিয়াকে বুঝাতে পারিস এই কথা বলে কিন্তু আমাকে বুঝাতে পারবি না।"
"আমি ভালো আছি তুই বেশি চিন্তা করছিস।"
"নায়নী কারো জন্য জীবন থেমে থাকে না সেই ঘটনার ঘটে গেছে আজকে অনেক দিন তুই এইভানে নিজেকে শেষ করে দিস না। তোর একটা জীবন আছে সেটাকে বাঁচতে শেখ। ভেবে দেখ একবার "
"ঠিক আছে বাবা আমি ভেবে দেখবো।"
"নায়নী তুই যাই বলিস বয়স বাড়ছে কিছু দিন পরেই আমরা ৪০ এর ঘরে পা দেবো শরীর আমাদের সাথ ছেড়ে দিবে তখন আর কিছু করার থাকবে না।"
"হুমম বুঝেছি। আমি ভেবে দেখবো।"
"আচ্ছা আজকে রাখছি।"
"ভালো থাকিস।"
"তুই ও ভালো থাকিস।"
এই বলে কল কেটে দেয় নায়নী।
(কিসের কথা বলছে রাখি? কি হয়েছিল নায়নীর সাথে? আপনাদের কি মনে হয় কমেন্ট করে জানাতে পারেন।)
এই গল্প যদি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। যদি কোনো মতামত থাকে জানাতে ভুলবেন না। আমাকে ইমেইল করতে পারেন lf859782; অথবা টেলিগ্রাম এ এসএমএস দিতে পারেন @Paradox78789 এই নামে। আপনাদের এসএমএস এ আমি উৎসাহ পাই। তাই আমাকে বেশি বেশি করে উৎসাহ দিবেন এই আশা করি।