Thread Rating:
  • 139 Vote(s) - 3.73 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery পদ্ম নাগের বিষ
পর্ব ৯

সকাল বেলা পীযুষ বেরিয়ে গেল ঠিক সাতটার আগে। যাবার আগে টিফিন বাক্সে দুপুরের লাঞ্চ রেডি করে দিয়েছে রমা। পীযুষ অবশ্য বারণ করছিল, ও আজ ক্যান্টিনে খেয়ে নেবে। রমা আবার বাইরে খাওয়া পছন্দ করে না।

পীযুষ যাবার পর পিকলুকে খাওয়াচ্ছিল রমা। শম্ভু আজ দেরীতেই ঘুম থেকে উঠল। পদ্মের নেশায় যখন ওর শরীরে ঝিম ধরে যেত, তখন ও এমন দেরী করে উঠত।

রমা বললে---শম্ভু, মুখ ধুয়ে এসো। আমি তোমার জলখাবার বানিয়ে দিচ্ছি।

কলতলায় জল ভরে বালতি হাতে বাথরুমে গেল শম্ভু। রমা ওর জন্য চা জলখাবার রেডি করে রেখেছে। চায়ে চুমুক না দিয়ে একবার পিকলুর পাশে বসল ও। তারপর পিকলুর মাথায় হাত বুলিয়ে বললে---সকালে শরবতটা খায়েছো পিকলু বাবু?

পিকলু মাথা নাড়লো। তখনও চা, জলখাবার পড়ে থাকতে দেখে রমা বললে---শম্ভু, খাবার ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। খেয়ে নাও। আজ একটু বাজার করে দিতে হবে ভাই।


শম্ভু কোনো উত্তর করল না। অদূরে বাজার ব্যাগ আর তার সাথে রমার করা লিস্ট ও টাকা রাখা। কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে গেল ও। পড়ে রইল জলখাবার। ষষ্ঠীপদর বউ লতা এসে বললে---দিদিমণি, বুলির বাপটা চিংড়ি ধইরেছিল। দিয়ে পাঠাইছে।

---এখন! এখন চিংড়ি বাছতে পারবো না লতা।

---চিন্তা কইরছেন কেন দিদিমণি? আমারে একটা গামলা দেন দিখি, আমি বেইছে দিচ্ছি।

রমা হেসে বলল---তাই ভালো। আর এদিকে দেখো, না খেয়ে শম্ভু বাজার বেরিয়ে গেল।


বাজার ব্যাগ হাতে যখন শম্ভু ফিরল তখন সাড়ে আটটা। ব্যাগ নামিয়ে রেখে পুঁটলিটা কাঁধে ঝুলিয়ে বেরোতে গেলেই, রমা এবার কড়া অনুশাসনের সুরে বললে---কি হল সকালে খেলে না যে? দাঁড়াও, আগে খেয়ে তারপর যেখানে যাওয়ার যেও।

কিন্তু শম্ভু এখনো নিরুত্তর। শম্ভু আর রমার এই মনোমালিন্য নজর এড়ালো না লতার। মনে মনে খুশি হল সে। একটা সর্বনেশে ফন্দি আঁটল। আজই মোক্ষম সময়, রমা দিদিমণির সাথে শম্ভুর অত ভাবভালোবাসার ইতি টানবে সে। আগুনে ঘি দিলেই আগুন আরো জ্বলে ওঠে। শম্ভুর যে কোনো কারণেই হোক রমার ওপর যে ক্ষোভ জন্মেছে সেটা লতা বুঝতে পারছে। আজই সে এমন কিছু করবে, শম্ভুর মনে শুধু দিদিমণির জন্য ঘৃণাই থাকবে।

পুঁটলিতে বাঁধা আছে কেউটেটা। ওটাকে বার করে গলায় জড়িয়ে হাঁটতে লাগলো শম্ভু। হাঁটতে হাঁটতে হাজির হল বাস স্ট্যান্ডে। সাপ দেখে জটলা হতেই ও বললে---দিখাবো লা কি? বাবুরা, মা মনসার জীবটার খেল। দিব লা কি ওষুধ, জড়ি বুটি।

কিছু লোকে কৌতুহলী হয়ে দেখতে লাগলো সাপ নিয়ে শম্ভুর কীর্তি। কিছু লোকে জড়ি বুটি নিল। ফেরার সময় একটা মোটর বাইক তার সামনে এসে দাঁড়ালো অকস্মাৎ। গগন ঘোষকে চিনতে পারলো শম্ভু। আগের চেয়ে রোগা হয়ে গেছে খানিক। গগন ঘোষ মোটর সাইকেল থামিয়ে বললে----কি রে ভীমনাগের ব্যাটা, শনিবার আসা বন্ধ করে দিলি কেন? দিলি তো আমার নেশাটা ছাড়িয়ে!

শম্ভুর এখন কিছুই ভালোলাগার কথা নয়। অনিচ্ছে স্বত্বেও হেসে বললে---গগন ঘোষ ন্যাশা ছাইড়ে দিবে, ইটা আর যে বিশ্বাস করুক, ই শম্ভু বেদে বিশ্বাস কইরবে লাই। আর কারে ধইরলে মশাই?

গগন সশব্দে হেসে উঠল। বলল----আসে সে এক বেদে, তোর মত তার ক্যারিশমা নাই। ছেড়েই দিয়েছি নেশাটা বলতে পারিস। শুনলাম তুই নাকি শহর থেকে লোকের বউ তুলে এনে বিয়ে করেছিস?

---কে এসব কয়, ঘোষমশাই? শম্ভু আর বে! তা হয় লাকি!

---আহা রে! তাহলে কি আমি ভুল শুনলুম? যাকে বিয়ে করেছিস সে নাকি শিক্ষিত, প্রচুর পড়াশোনা। তোর মত বেদের গলায় ঝুলল কি করে সেটাই আমি ভাবছি।

---তা লে ভাবেন গগন ঘোষ। আমার মত বেদের গলায় কোনো পড়ালিখা করা মেয়েছেলে যদি ঝুইলতে লা পারে, তা হইলে কুথাটা মিছা আছে।

---সত্যি রে বেদে তুই বিয়ে করিসনি?

---বে কইরেছি বইললে কি তুমি আমারে টাকা দিবে লা কি?

---নিশ্চই, টাকা নয়, তবে তোকে উপহার দেব। তুই আমার নেশার যোগান ছিলি এতদিন। তোর বাপ আমার নেশা যোগান দিত। আর তুই বিয়ে করবি উপহার দেব না?

---কি দিবে গগন ঘোষ? সোনাদানা নাকি? চালকলের মালিক তুমি, সে তো দিতেই পাইরো।

গগন ঘোষ বলল---তুই জানিস জীবনে অনেক পয়সা করেছি। কিন্তু ছেলে-মেয়ের মুখ দেখলাম না। বুড়ো হয়ে মরতে যাব। তোর বৌদিও আর নেই। আজ একমাস হল ও চলে গেছে। যা আছে আমার সব, কে নেবে বলতো। ভাগ্না এক আছে, ঐ যদি নেয়।

---কি কন ঘোষ মশাই। বৌদি মইরে গেছে! তোমার নেশা ছাড়াইবার লগে কত জাগায় মানত কইরেছিল বেচারা।

গগন ঘোষ চুপ করে রইল। বলল---তুই চল দেখি আমার সাথে।

---কুথায়?

---আরে ওঠ না আমার বাইকে। তার আগে তোর এই কেউটেটাকে ঢোকা পুঁটলিতে।

শম্ভু হেসে বললে---সাপের বিষটার যার ন্যাশা। সে আবার কামড় খাতে ডরে।


শম্ভুকে গগন ঘোষ নিয়ে এলো তার বাড়িতে। মস্ত বাড়িটা যেন কেমন একটা পাংশু দেখাচ্ছে। শম্ভু বুঝতে পারছে গগন ঘোষের স্ত্রী না থাকায় ঘরের শ্রী'টা বদলে গেছে পুরোদস্তুর।

দালান বাড়ির তিনতলার একটা ছোট ঘর। ঐ ঘরের বড় একটা ছবিতে মালা দেওয়া গগনের বউয়ের ছবিতে। একটা বড় সিন্দুকের সামনে শম্ভুকে এনে দাঁড় করালো গগন। বললে----তোর বৌদির যা সোনার গয়নাগাটি ছিল তার সবটাই ও লকারে রাখতো। ওসবের দিকে আমার ভাগ্নেটার নজর আছে। কেউ যখন কোথাও নিজের নেই, তাই আমারও বিশেষ আগ্রহ নেই ওসব নিয়ে। এই সিন্দুকে আছে তোর বৌদির সেকেলে সব রুপোর গহনা। আমার শাশুড়ি মা'ই বিয়ের সময় দিয়েছিল তার মেয়েকে। সেসব তুই নিয়ে যাস উপহার হিসেবে।

শম্ভু গররাজি হতে গগন সিন্দুকের ডালাটা খুলে ফেলে বললে---বড় দাদা যদি আমাকে মানিস তবে, না করিস না। যদিও তোর বাপ আর আমার বয়স প্রায় একই। তবু তো তোকে ছোট ভাইর মত দেখি। না করিস না ভাইটি। এসব তোর বৌদির ইচ্ছে অকাতরে দান করার। আমি তোকে দান করছি না, তোর বউয়ের জন্য উপহার দিচ্ছি।

শম্ভু লক্ষ্য করল একটা রুপোর ঝুমুর দেওয়া কোমরবন্ধনী। ভারী সুন্দর তার সেকেলে নকশা। পান আঁকা বাঁধন হতে ঝুলছে একের পর এক ঝুমুর। কোনো নারী পরলেই ঝুমর শব্দে নেচে উঠবে সারা ঘর। তার সাথে পায়ে পরার জন্যে রুপোর চওড়া নুপুর। শম্ভুর মনে পড়ে এমন নুপুর তার মা কমলারও ছিল। সে যে এখন কোথায় আছে কে জানে। শম্ভুর হাতে একজোড়া নূপুর আর কোমরবন্ধনীটি তুলে দিল গগন ঘোষ।

উপহার নিল বটে শম্ভু, কিন্ত গগন ঘোষ যে জানে না তার বিয়েটা নকল। আসলেই এই উপহার দেওয়ার মত তার কেউ নেই। কেউ নেই এই ঝুমুর দেওয়া কোমরবন্ধনী আর নূপুরজোড়া পরে তার দোচালার ঘরে ঝংকার তুলবে। তবু সে ফিরবার সময় কল্পনার চোখে একজন নারীকেই দেখছে। দিদিমণির কোমরে শোভা পাচ্ছে এই ঝুমুর দেওয়া বন্ধনী। দোচালার ঘরে দিদিমণির সংসার বৃত্তের কাজকর্মে বেজে উঠছে ঝুমুর ধ্বনির সুর।

সবই নিছক কল্পনা শম্ভুর। কল্পনামদিরতা থেকে বার হয়ে সে এসে পড়ল বাস্তবের মাটিতে। রুক্ষ পিচ রাস্তা বরাবর সে খালি পায়ে হাঁটছে। এনএইচ দিয়ে ধুলো ছুটিয়ে গাড়িগুলো সাঁই সাঁই ছুটে যাচ্ছে। কালরাতে সে যখন দিদিমণিকে মাস্টারবাবুর সাথে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলেছিল, সে সহ্য করতে পারছিল না। এক লহমায় বুকটা তার ঈর্ষা, অভিমান, দুঃখে ফেটে পড়তে চাইছিল। অনেক রাত অবধি ঘুমোয়নি সে। নিজেকে বুঝিয়েছে রমা দিদিমণির প্রতি বাসনা, অনুরাগ সব তার অসম। এসব থেকে দূরে থাকবে সে। কখনোই কোনো আবেগে জড়িয়ে যাবে না।
অথচ সকাল বেলা দিদিমণিকে দেখেই তার আবেগী অভিমান আবার গাঢ় হয়ে ওঠে। দিদিমণি নিশ্চই কাল রাতে স্যারের সাথে মেতে উঠেছিল। ওরা যে স্বামী-স্ত্রী। তাদের দেহ একে অপরকে চেনে, তাদের উভয়ের ভালোবাসায় জন্ম নিয়েছে পিকলু। এসব ভাবনার পরও শম্ভুর অভিমান কমার চেয়ে বেড়েছে।

এখন সে ধমক দিচ্ছে নিজেকে--দিদিমণি দায়ে পইড়ে দুটা দিন তোমার ঘরটাতে আছে বইলে, নকল বে টা কইরছে বলে কি তু শম্ভু বেদে দিদিমণির স্বামীটা ভাইবছিস লিজেকে!
শম্ভুর আত্ম দ্বন্দ্ব যত জোরালো হচ্ছে তত তার যন্ত্রনা অভিমানও বাড়ছে। সে যে এখুনি কামনা করছে দিদিমণির ফর্সা কোমল শরীরের উপর তার যৌনক্ষুধার তীব্র আগুন উদ্গীরন করতে, দিদিমণির পেটের মেদের ভাঁজে বিন্দু বিন্দু ঘামের সাথে এই কোমরবন্ধনীর ঝুমুরগুলি বেজে উঠুক সঙ্গমের দুরন্ত পাশব তালে। আজ রাতেও তাকে এই কোমরবন্ধনী হাতে দিদিমণিকে কল্পনা করে হস্তমৈথুন করতে হবে। দানবটাকে শান্ত করতে হবে ঝুমুরের কল্পিত তালগুলি মনে সেধে। আর মাস্টারবাবু কিনা সেই সৌভাগ্যবান, যে একরাতে থেকেই স্বামীর অধিকারে ভোগ করে যাবে দিদিমণির শরীরের সর্বাঙ্গের পাহাড় চূড়ো, গিরিখাদগুলি।

শম্ভু ধিক্কার দিয়ে উঠল নিজেকে। মনের মধ্যে গালি করে নিজেকেই বলে উঠল---হরদিন তুই রাতে ধন খাড়াই বুসে রইবি, শম্ভু! আর শালা তুর দোচালা ঘরেই দিদিমণির গুদ মাইরবে তার বরটা এক রাতটা থেইকে থেইকে।

এখন যেন ঘৃণা, রাগ, ক্ষোভ, অভিমান শুধু তার নিজের ওপর হচ্ছে না, রমার ওপরও হচ্ছে একইরম। অস্পষ্ট ভাবে ফাঁকা রাস্তায় পাগলের মত বলে উঠল সে---দিদিমণি তুরে আমি চাই!
+++++
Like Reply


Messages In This Thread
পদ্ম নাগের বিষ - by Henry - 21-10-2023, 11:21 PM
RE: পদ্ম নাগের বিষ - by Henry - 24-12-2023, 10:42 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)