10-12-2023, 06:58 PM
(10-12-2023, 11:09 AM)Henry Wrote:
মূলত এটি ইরো সাহিত্য। কোনো চটি পানু গল্প নয়। সাধারণ উপন্যাসের সাথে ইরোটিক উপন্যাসের ফারাক হল; সাধারণ উপন্যাসে যৌনতার বিষয়ের প্রয়োজন থাকলে তা নিমিত্ত মাত্র এবং কয়েক পংক্তিতে বর্ণিত হয়। ইরোটিক উপন্যাসে যৌনতার বিষয়ের বর্ণনা খুঁটিনাটি এবং বিস্তৃত হয়। এবং যৌনতাকে উত্তেজক করে তোলার বিষয়গুলি সরল শৈল্পিক শব্দে তুলে ধরা হয়। আবার চটি পানুর গল্পের সাথে ইরোটিকার ফারাক অনেক বেশি। চটি পানু গল্পতে সেক্স ছাড়া আর কোনো বিষয় থাকে না। সেখানে প্রয়োজন থাকে না শিল্প সাহিত্যে কিংবা বিস্তৃত ঘটনা বা প্রেক্ষাপটের। যেমন খুশি করে সেক্সকে তুলে ধরে পাঠককে তৃপ্ত করাই উদ্দেশ্য তার।
ইরো সাহিত্য অনেক ভেবেচিন্তে লিখতে হয়। আমরা জানি হেনরি মিলার, ডি এইচ লরেন্স, গুন্টার গ্রাস, ভ্লাদিমির নবোকভ, আলবার্তো মোরাভিয়াদের মত দাপুটে সাহিত্যিকরা খ্যাতিমান ইরোটিক নভেল লিখেছেন। এমনকি খোদ তলস্তয়, পুশকিনরাও ইরো সাহিত্য লিখেছেন। এটা তেমনই ধারার, আবার এতে তার চেয়ে অধিক যৌন দৃশ্য থাকবে, তবে তাড়াহুড়ো নয়। আমার মনে হয়েছে এ দেশের রক্ষনশীল সমাজের জন্য বাংলা সাহিত্যে বহু উপন্যাস সাহসিকতার অভাবে ইরোটিক হয়ে উঠতে পারেনি। তাকে সংযত করে রাখতে হয়েছে যৌনতার বিষয়গুলিকে নিমিত্ত করে। এই প্লাটফর্ম সেক্ষেত্রে ভালো, এখানে রক্ষণশীলতা যেমন কম, তেমন মূল্যবোধের বাঁধনও আছে। আমি সমর্থন করি নাবালকদের যৌনতায় অংশগ্রহণ বিষয়ে এই ফোরামের কঠোর আইনকে। এদিকে আমি 'খিদে'র মত গল্প লিখেছি যা শৈল্পিক সাহিত্যরসহীন বিকৃত কাম, ম্লেচ্ছতায় ভরপুর। তা যেমন পাঠকদের ভালো লেগেছে, তেমন অসমাপ্ত 'হেমন্তের অরণ্যে', 'পদ্ম নাগের বিষ' এর ক্ষেত্রেও পাঠক মহলে রেসপন্স ভালো পাচ্ছি। আবার 'পজেশন', 'দহন', 'ব্রুট', 'ছাই চাপা আগুন', এই গল্পগুলি উভয় ধারার মিশেল। সেগুলিও পাঠক পছন্দ করেছে।
সম্পূর্ণ সহমত আপনার সাথে। লেখার জগতে বিশেষত এমন প্লাটফর্মে লেখার সুবিধা হল কেউ তোমায় জাজ করবেনা যে তুমি কতটা অশ্লীল বা ভদ্র। ভদ্র হয়েও অশ্লীললতার পথে হেঁটে দারুন দারুন সব ইরো গল্প উপহার দেওয়া সম্ভব। এখানে সবাই আসেন নিজের বাস্তব জীবন থেকে সাময়িক বিরতি নিয়ে একটু মনের সুপ্ত ইচ্ছা পূরণ করতে। যেখানে গল্পের চরিত্রের সাথে কখনো তারা মিলেমিশে এক হয়ে যান, আবার কারো কাছে শুধুই টাইম পাস। কেউ লেখকের সৃষ্টি কাহিনীর চরিত্র হয়ে নিজেই অন্য চরিত্রকে ভোগ করেন, কেউ আবার সম্পূর্ণ দর্শক হয়ে পুরোটার সাক্ষী হয়ে চরম সুখ উপভোগ করেন।
কাহারো কাছে স্থিরতা ও মিলন পূর্বের মুহুর্তই আসল উত্তেজনার খোরাক , আবার কারো কাছে চরম মিলনটাই সেরা মুহুর্ত। তাছাড়া একটি গল্প লেখার ক্ষেত্রে কি শৈলীতে কি ভাবে লেখা হবে সেটা যেমন লেখক নির্ধারিত করেন, তেমন কিছু গল্প স্বয়ং নিজের জন্য যোগ্য বিভাগ খুঁজে নেন। ইরো গল্পে পারিপার্শিক অবস্থা, চরিত্রের মানসিক পরিবর্তন ও তার ফলে তার আশেপাশের মানুষ জনের সমস্যা, কিছু ক্ষেত্রে ভৌগোলিক অবস্থান এই সব পরিষ্কার রূপে ফুটিয়ে তোলা প্রয়োজন। নইলে পাঠক একাত্ম হবে কিভাবে। ওই এলো আর পকাৎ পকাৎ শুরু হয়ে গেল সেগুলো মাঝে মাঝে ভালোই লাগে কিন্তু সবসময় নয়।
পানু গল্পে খলনায়কের মূলত কোনো শেড থাকেনা। সে এসেই সুখী পরিবারে ঢুকে তাদের মধ্যে থেকে একজনকে বেছে তাকে নিয়ে বিছানা গরম করতে। ব্যাস ওটাই তার মূল লক্ষ। কিন্তু ইরো গল্পে খলনায়ক অনেকটা সময় ধরে নিজের পরিচয় দেবার সময় পায়। তার অন্তরের নিকৃষ্ট মানুসিকতা সম্পূর্ণ রূপে মেলে ধরেন। সেটা আরও বেশি ইরোটিক। আবার এই গল্পের মতোও কিছু গল্প হয় যেখানে ভিলেন বলে কিছুই থাকেনা। পরিস্থিতিই সবচেয়ে বড়ো খলনায়ক হয়ে ওঠে। আমি আগেও বলেছিলাম এই কাহিনী কোনো অশ্লীল ব্যাভিচারের গল্প নয়, এটি ভালোবাসা ও মানবিকতার গল্প। আজ বেশ কিছু সময় তো পার করলাম এই গসিপিতে লেখক পাঠক দুই রূপেই। তাই আমার মনে হয় এটা হেনরিদার নিজের কাছেও সবচেয়ে কঠিন সৃষ্টি। কারণ পরকীয়া করে সুখে ভেসে যাওয়ার গল্প তো তার থেকে আগেও পেয়েছি কিন্তু সন্তানকে মায়ের বুকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য এক পরপুরুষের এই প্রচেষ্টাই অন্য গল্পকে তার অন্য সৃষ্টির থেকে আলাদা করে।
আজকের পর্ব খুব সুন্দর লাগল। এক মায়ের মানসিক কষ্ট, এক স্বামীর ভয়, এক বিষধর ভোলাভালা মানুষের ভালোবাসা খুব ভালো ভাবে ফুটে উঠেছে। চলতে থাকুক। ♥️