01-12-2023, 03:47 PM
(This post was last modified: 01-12-2023, 08:08 PM by Rupuk 8. Edited 3 times in total. Edited 3 times in total.)
পর্ব-৩১
শান্তিনগর শহর থেকে মাহীনের পদ্মপুর গ্রাম ৮ ঘন্টার পথ। মাহীনের গ্রামের বাড়িতে পৌঁছাতে দুপুর হয়ে গেলো ছায়াদের। গাড়িটা এসে মাহীনের বাড়ির সামনে থামলো। শমিক বাবু প্রথমে গাড়ি থেকে নামলেন তারপর একে একে ছায়া আর মাহীন গাড়ি থেকে নেমে পড়লো। গাড়ি থেকে নেমে মাহীন বেশ অবাক হলো, কাকু আর কাকিমা তাকে গ্রামের বাড়িতে কেন নিয়েছেন। কাকু তোমরা আমাকে বাড়িতে কেন নিয়ে এলে? ভিতরে চল মাহীন। বাড়ির সামনে অনেক লোকজন ভিড় করে দাঁড়িয়ে আছে। মাহীন কিছুই বুঝতে পারছে না এতো লোকজন কেনো তার বাড়ির সামনে ভিড় করছে। শমিক বাবু মাহীনকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকলো। বাড়ির ভিতর ঢুকেও মাহীন দেখলো অনেক লোকজন দাঁড়িয়ে আছে পা রাখার মতো জায়গা নেই। এতো মানুষ কিসের জন্য এসেছে তার বাড়িতে মাহীন বুঝতে পারছে না। লোকজন সবাই মাহীনের মুখের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। লোকজনের ভিড় ঢেলে শমিক বাবু মাহীনকে নিয়ে সামনের দিকে গেলো। বাড়িতে প্রচুর ভিড়। উঠোনে অনুরাধা দেবী আর তপন বাবুর লাশ শুইয়ে রাখা আছে। লাশের পাশে বসে ছিল মাহীনের বড় পিসি সুধা দেবী। মাহীনকে আসতে দেখে সুধা দেবী দাঁড়িয়ে গেলো তারপর মাহীনের কাছে গিয়ে জরিয়ে ধরে চিৎকার করে কাদঁতে লাগলো। মাহীনের চোখের সামনে লাশ হয়ে শুয়ে আছে তার বাবা-মা। মাহীনের মাথায় উপর বাজ পড়লো। সে কি কোনো দুঃস্বপ্ন দেখছে নাকি সত্যি দেখছে। এখনও মাহীনের বিশ্বাস হচ্ছে না তার বাবা-মা আর বেঁচে নেই। মাহীন ভিড়ের ফাঁক গলে অনুরাধার লাশের পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। মাহীনের মনে হতে থাকে অনুরাধা এখনই উঠে বসবে। আর বলবে-মাহীন বাবা আমার কেমন আসিস তুই? কত দিন পর তোর মুখ টা দেখছি। তোকে এতো শুকনা দেখাচ্ছে কেন ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া করিস না নাকি। শুকনো মুখে ছায়া লাশের পাশে দাঁড়িয়ে আছে । মাহীন চুপ করে বসে পড়ে লাশের পাশে। বিকালের দিকে ভিড়ের মধ্যে গুঞ্জন উঠে-লাশ বেশীক্ষণ রাখা ঠিক হবেনা।এইবার লাশ বের করা হোক।কয়েজন মিলে লাশ খাটিয়ায় তোলে।বল হরি,হরি বল-শব্দগুলি জোড়ালো হওয়ার সাথে সাথে চারিদিকে কান্নার রোল ওঠে।সুধা পিসি উঠোনে পড়ে হাঁউ মাউ করে কাঁদতে থাকে। ছায়া সুধার কাছে গিয়ে সুধাকে সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করে। খাটিয়ায় করে লাশ দুটো গ্রামের শ্মশান ঘাটে নিয়ে যাওয়া হলো। শ্মশান ঘাটে পাশাপাশি দুটো কাঠের চিতায় শুয়ানো হলো মাহীনের বাবা আর মাকে। শমিক বাবু মাহীনের হাত ধরে চিতার সামনে নিয়ে আসলেন। মরদেহ দুটোর মুখাগ্নি করলো মাহীন। চিতার আগুন দাউদাউ করে জ্বলছে। শেষকৃত্য সম্পন্ন করে শ্মশান ঘাট থেকে মাহীনকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরলেন শমিক বাবু। পরের দিন শ্রাদ্ধের আয়োজন করেছিল শমিক বাবু। মাহীনের সব আত্মীয় স্বজনদের এবং পাড়া প্রতিবেশীদের দাওয়াত করা হয়েছেছিল সবাই এসেছিলেন। তিন দিনের মতো পদ্মপুর গ্রামে ছিলেন ছায়া, শমিক বাবু আর মাহীন। মাহীন আরও কিছুদিন গ্রামে থাকতে চেয়েছিল। কিন্তু ছায়া থাকতে দেয় নি, ছায়া মাহীনকে বললো, আমি তোমার বাবা-মাকে কথা দিয়েছিলাম। তোমাকে ভালোমতো পড়াশোনা শিখিয়ে একজন শিক্ষিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবো। তোমার বাবা-মার স্বপ্ন তোমাকেই পূরণ করতে হবে। মানুষের জীবনে কিছু মহামূল্যবান জিনিস থাকে, সেগুলো একবার হারিয়ে গেলে চাইলও দ্বিতীয়বার পাওয়া সম্ভব না। জীবন সবসময় তোমাকে দিবে না, মাঝে মধ্যে তোমার কাছে থেকে কেড়েও নিবে। এটার নামই জীবন এই সময় ধৈর্য ধারণ করতে হবে ভেঙ্গে পড়লে চলবে না, উঠে দাঁড়িয়ে আবার সামনে দিকে এগিয়ে যেতে হবে
আর সামনে তোমার টেস্ট পরীক্ষা এখানে থাকলে পড়াশোনার ক্ষতি হবে। আমাদের সঙ্গেই ফিরে চলো, ছায়ার কথায় শেষ পযন্ত মাহীন তাদের সাথে ফিরে যেতে রাজি হয়। মানুষ যা চায়, তার চেয়েও বেশি হারায়। আহ জীবন। কত সুন্দর তার বৈচিত্র্য, কত গভীর তার দুঃখ। শান্তিনগরের বাসায় ফিরে আসার পর থেকে এক সপ্তাহের বেশি হলো মাহীন বাসা থেকে কোথাও বের হয়নি নিজের রুমে মধ্যে সারাদিন থাকে। ছায়াও বুঝতে পারছে মাহীন মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে বের হতে ওর আরও কিছু দিন সময় লাগবে। কাল রাতে শমিক বাবু, ছায়াকে বললো ছায়ার পাসপোর্ট হয়েছে গেছে, পাসপোর্ট অফিস থেকে ফোন করেছিল পাসপোর্ট নিয়ে আসার জন্য। আজকে পাসপোর্ট অফিস হয়ে তারপর কলেজে যাবে ছায়া।
এক সপ্তাহ পরে, মাহীন আবার কলেজ যাওয়া শুরু করেছে। ইন্দানিং মাহীন আর খুব একটা বাহিরে আড্ডা দিয়ে সময় নষ্ট করে না। মাহীনের অনেক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। পড়াশোনায় নিজে থেকে মনোযোগী হয়েছে ছায়ার আর কিছুই বলা লাগে না।
শান্তিনগর শহর থেকে মাহীনের পদ্মপুর গ্রাম ৮ ঘন্টার পথ। মাহীনের গ্রামের বাড়িতে পৌঁছাতে দুপুর হয়ে গেলো ছায়াদের। গাড়িটা এসে মাহীনের বাড়ির সামনে থামলো। শমিক বাবু প্রথমে গাড়ি থেকে নামলেন তারপর একে একে ছায়া আর মাহীন গাড়ি থেকে নেমে পড়লো। গাড়ি থেকে নেমে মাহীন বেশ অবাক হলো, কাকু আর কাকিমা তাকে গ্রামের বাড়িতে কেন নিয়েছেন। কাকু তোমরা আমাকে বাড়িতে কেন নিয়ে এলে? ভিতরে চল মাহীন। বাড়ির সামনে অনেক লোকজন ভিড় করে দাঁড়িয়ে আছে। মাহীন কিছুই বুঝতে পারছে না এতো লোকজন কেনো তার বাড়ির সামনে ভিড় করছে। শমিক বাবু মাহীনকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকলো। বাড়ির ভিতর ঢুকেও মাহীন দেখলো অনেক লোকজন দাঁড়িয়ে আছে পা রাখার মতো জায়গা নেই। এতো মানুষ কিসের জন্য এসেছে তার বাড়িতে মাহীন বুঝতে পারছে না। লোকজন সবাই মাহীনের মুখের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। লোকজনের ভিড় ঢেলে শমিক বাবু মাহীনকে নিয়ে সামনের দিকে গেলো। বাড়িতে প্রচুর ভিড়। উঠোনে অনুরাধা দেবী আর তপন বাবুর লাশ শুইয়ে রাখা আছে। লাশের পাশে বসে ছিল মাহীনের বড় পিসি সুধা দেবী। মাহীনকে আসতে দেখে সুধা দেবী দাঁড়িয়ে গেলো তারপর মাহীনের কাছে গিয়ে জরিয়ে ধরে চিৎকার করে কাদঁতে লাগলো। মাহীনের চোখের সামনে লাশ হয়ে শুয়ে আছে তার বাবা-মা। মাহীনের মাথায় উপর বাজ পড়লো। সে কি কোনো দুঃস্বপ্ন দেখছে নাকি সত্যি দেখছে। এখনও মাহীনের বিশ্বাস হচ্ছে না তার বাবা-মা আর বেঁচে নেই। মাহীন ভিড়ের ফাঁক গলে অনুরাধার লাশের পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। মাহীনের মনে হতে থাকে অনুরাধা এখনই উঠে বসবে। আর বলবে-মাহীন বাবা আমার কেমন আসিস তুই? কত দিন পর তোর মুখ টা দেখছি। তোকে এতো শুকনা দেখাচ্ছে কেন ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া করিস না নাকি। শুকনো মুখে ছায়া লাশের পাশে দাঁড়িয়ে আছে । মাহীন চুপ করে বসে পড়ে লাশের পাশে। বিকালের দিকে ভিড়ের মধ্যে গুঞ্জন উঠে-লাশ বেশীক্ষণ রাখা ঠিক হবেনা।এইবার লাশ বের করা হোক।কয়েজন মিলে লাশ খাটিয়ায় তোলে।বল হরি,হরি বল-শব্দগুলি জোড়ালো হওয়ার সাথে সাথে চারিদিকে কান্নার রোল ওঠে।সুধা পিসি উঠোনে পড়ে হাঁউ মাউ করে কাঁদতে থাকে। ছায়া সুধার কাছে গিয়ে সুধাকে সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করে। খাটিয়ায় করে লাশ দুটো গ্রামের শ্মশান ঘাটে নিয়ে যাওয়া হলো। শ্মশান ঘাটে পাশাপাশি দুটো কাঠের চিতায় শুয়ানো হলো মাহীনের বাবা আর মাকে। শমিক বাবু মাহীনের হাত ধরে চিতার সামনে নিয়ে আসলেন। মরদেহ দুটোর মুখাগ্নি করলো মাহীন। চিতার আগুন দাউদাউ করে জ্বলছে। শেষকৃত্য সম্পন্ন করে শ্মশান ঘাট থেকে মাহীনকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরলেন শমিক বাবু। পরের দিন শ্রাদ্ধের আয়োজন করেছিল শমিক বাবু। মাহীনের সব আত্মীয় স্বজনদের এবং পাড়া প্রতিবেশীদের দাওয়াত করা হয়েছেছিল সবাই এসেছিলেন। তিন দিনের মতো পদ্মপুর গ্রামে ছিলেন ছায়া, শমিক বাবু আর মাহীন। মাহীন আরও কিছুদিন গ্রামে থাকতে চেয়েছিল। কিন্তু ছায়া থাকতে দেয় নি, ছায়া মাহীনকে বললো, আমি তোমার বাবা-মাকে কথা দিয়েছিলাম। তোমাকে ভালোমতো পড়াশোনা শিখিয়ে একজন শিক্ষিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবো। তোমার বাবা-মার স্বপ্ন তোমাকেই পূরণ করতে হবে। মানুষের জীবনে কিছু মহামূল্যবান জিনিস থাকে, সেগুলো একবার হারিয়ে গেলে চাইলও দ্বিতীয়বার পাওয়া সম্ভব না। জীবন সবসময় তোমাকে দিবে না, মাঝে মধ্যে তোমার কাছে থেকে কেড়েও নিবে। এটার নামই জীবন এই সময় ধৈর্য ধারণ করতে হবে ভেঙ্গে পড়লে চলবে না, উঠে দাঁড়িয়ে আবার সামনে দিকে এগিয়ে যেতে হবে
আর সামনে তোমার টেস্ট পরীক্ষা এখানে থাকলে পড়াশোনার ক্ষতি হবে। আমাদের সঙ্গেই ফিরে চলো, ছায়ার কথায় শেষ পযন্ত মাহীন তাদের সাথে ফিরে যেতে রাজি হয়। মানুষ যা চায়, তার চেয়েও বেশি হারায়। আহ জীবন। কত সুন্দর তার বৈচিত্র্য, কত গভীর তার দুঃখ। শান্তিনগরের বাসায় ফিরে আসার পর থেকে এক সপ্তাহের বেশি হলো মাহীন বাসা থেকে কোথাও বের হয়নি নিজের রুমে মধ্যে সারাদিন থাকে। ছায়াও বুঝতে পারছে মাহীন মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে বের হতে ওর আরও কিছু দিন সময় লাগবে। কাল রাতে শমিক বাবু, ছায়াকে বললো ছায়ার পাসপোর্ট হয়েছে গেছে, পাসপোর্ট অফিস থেকে ফোন করেছিল পাসপোর্ট নিয়ে আসার জন্য। আজকে পাসপোর্ট অফিস হয়ে তারপর কলেজে যাবে ছায়া।
এক সপ্তাহ পরে, মাহীন আবার কলেজ যাওয়া শুরু করেছে। ইন্দানিং মাহীন আর খুব একটা বাহিরে আড্ডা দিয়ে সময় নষ্ট করে না। মাহীনের অনেক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। পড়াশোনায় নিজে থেকে মনোযোগী হয়েছে ছায়ার আর কিছুই বলা লাগে না।