Thread Rating:
  • 135 Vote(s) - 3.69 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery পদ্ম নাগের বিষ
#34
ড্রয়িং রুমে এসে চমকে গেল রমা। চাঁপা বলল---আজ কার জনম দিন গো দাদা?

পীযুষ বলল---তোর বৌদিকে জিজ্ঞেস কর।

রমা স্মিত হেসে বলল---আজ মার্চের ২৭, তাই না? ওমা, সত্যিই তো ভুলে গেছি।

পিকলু তালি মেরে বলে উঠল---হ্যাপি বার্থডে মা। তাড়াতাড়ি এসো, কেক কাটতে হবে।

রমা শাড়ির আঁচলে হাত মুছতে মুছতে বলল---এসব নিশ্চই তোর বাবার আইডিয়া।

পীযুষ বললে---আমি তো ভুলেই গেছিলাম ডার্লিং। তোমার ছেলেই মনে করিয়ে রেখেছে।

এতক্ষনে চাঁপা বুঝতে পারলো, আনন্দ উদ্বেলিত চোখে মুখে বলে উঠল---আজ বৌদি তোমার জনম দিন?

টেবিলে কেকের ওপর রাখা মোমের আলোতে প্রাঞ্জল হয়ে রয়েছে 'ঊনচল্লিশ' লেখাটা। ঊনচল্লিশে পা দিল রমা। পীযুষের সাথে তার বয়সের ফারাকটা পাঁচ-ছয় বছরের। এই ঊনচল্লিশ বসন্তে হয়ে গেল তাদের দাম্পত্যও দেড় দশকের বেশি। রমার মনে পড়তে লাগলো বিয়ের প্রথম দিকের জন্মদিনগুলো। কিংবা তারও আগে ইউনিভার্সিটির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পাতলা চেহারার পীযুষকে। হাতে একগুচ্ছ ফুল। ওরা দেখা করত ইউনিভার্সিটি থেকে খানিক হাঁটলে বঙ্কিম দার ছোট্ট দোকানে। ওখানে একটা বড় গাছ ছিল। এমন জন্মদিনেই রমাকে প্রথম চুম্বন করেছিল পীযুষ। সেটাও পীযুষেরই শ্যামবাজারের ভাড়া বাড়িতে। কি রাগ হয়েছিল সেদিন রমার। পীযুষ বললে---কি হল, কেক কাটো। এভাবে কতক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখবে।

কেক কাটবার পর পীযুষ মুক্তোর হারের বাক্সটা খুলে পেছন থেকে পরিয়ে দিল রমাকে। চমকে উঠল রমা। সামনে থেকে স্পর্শ করে বোঝার চেষ্টা করতে লাগলো। তারপর নেড়েচেড়ে দেখে বললে----ওমা! চন্দ্রানী পালস!

---পছন্দ হয়েছে?

রমা মৃদু হাসলো। বলল---বুড়ো বয়সে তোমার প্রেম জেগেছে দেখছি।

পীযুষ মিথ্যে রাগ করে বললে---এই পিকলু, তোর মা কিন্তু আবার আমাকে বুড়ো বলল।

চাঁপা বলল---বেশ মানাইছে গো বৌদি। দাদাকে বুড়ো বইলছ কেন? দাদারে হ্যান্ডাসুম লাগে।

রমা হেস বললে---তোকে আর দাদার প্রশংসা করতে হবে না। আর হ্যান্ডাসুম না কি যেন বললি, ওটা হ্যান্ডসাম।

---এই দেখলি তো চাঁপা, তোর বৌদি আমার প্রশংসা সহ্য করতে পারে না। পীযুষ ফোড়ন কেটে বলল।

পিকলু মুখ টিপে হাসছিল। রমা ধমক দিয়ে বলল--এই পিকলু তুই হাসছিস কেন?

পিকলু সরল ভাবে বললে---তুমিই তো সেদিন কাপড় কাচবার সময় বলেছিলে চাঁপা মাসিকে; বাবাকে ব্লু চেক জামাটায় হ্যান্ডসাম দেখায়।

---এই দেখো রমা তুমিও পেছনে আজকাল আমাকে হ্যান্ডসাম বলো। চলো এবার হ্যান্ডসাম বরের জন্য তোমার কি উপহার আছে দেখি।

চাঁপা হতবাক হয়ে বলল----জনম দিন তো বৌদির, তালে বৌদি কেন উপহার দিবে গো দাদা?

---দিতরে দিত আগে, তোর বৌদি খুব উপহার দিত। পীযুষ মুচকি হেসে রমার দিকে তাকিয়ে বলল।

লাজুক মুখে রমা কথা এড়িয়ে বলল---অনেক রাত হল। চাঁপা তুই কি বাড়ি যাবি না। যাবার সময় রান্না ঘর থেকে টিফিন বাক্স দুটো নিয়ে যাস।

বাড়িতে ভালোমন্দ রান্না হলে চাঁপা বেরিয়ে যাবার আগে ওর হাতে কিছু খাবার প্যাক করে দেয় রমা। ওর ছেলেটা সাত বছরের। এ বাড়িতে চাঁপা কাজ করছে নয় নয় করে প্রায় চার বছর হয়ে গেল। মেয়েটা স্বামী পরিত্যাক্তা। এ বাড়িতে ও যেন এখন একজন অঙ্গ হয়ে গেছে।

রাতের খাবার টেবিলে রমা বললে---মিঠু দি'র ছেলে কী বলছিল গো?

মাংসের হাড় চিবোতে চিবোতে পীযুষ বলল---কি আর, প্রয়োজন ছাড়া আর কেউ আসে নাকি! অতীনের একটা লোনের দরকার। ওদের বারাসতে ব্যাংকে আমার এক কলেজ সহপাঠী নাকি ম্যানেজার। অদ্ভুত সব দাবী!

---তাই বলো। এতদিন মানুষটি এলেন না। বোধ হয় তোমার মা মারা যাবার সময়ও আসেননি। আজ হঠাৎ উদয় হলেন কেন!
রমাও সন্দেহ প্রকাশ করে বলল কথাটা। তারপর পুনরায় বলল---তোমার বন্ধু যখন, চেষ্টা করে দেখতে পারো। যাইহোক মায়ের মুখে শুনেছি ছেলেবেলায় মিঠু দি তোমাকে খুব ভালোবাসতেন।

পীযুষ চামচ দিয়ে ট্রে থেকে অল্প ভাত নিয়ে বলল---বানিব্রতকে তোমার নিশ্চই মনে আছে?

----কে বলো তো? রমা পিকলুর থালায় মাংস দিতে দিতে জিজ্ঞেস করল।

----ইউনিভার্সিটি তে তোমার ব্যাচমেট ছিল। জুওলজিতে পড়ত।

চমকে উঠল রমা। বলল---ও, হ্যা মনে পড়েছে। তবে সে তো আমার ব্যাচমেট ছিল! তোমার কি করে হয়?

পীযুষ মৃদু হেসে বলল---বাণীব্রতের দাদা হল গিয়ে সুব্রত দাস। ওদের বাড়ি ঐ মেদিনীপুরের দাসপুরের দিকে। সুব্রত হল গিয়ে ঐ ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার।

রমার মনে পড়ল বানিব্রতর কথা। বড্ড বখাটে ছেলে ছিল। ইউনিভার্সিটিতে পড়বার সময় রমার পেছনে পড়েছিল বেশ কয়েকদিন। একবার তো পীযুষ দেখা করতে এলে বেশ শাসিয়ে ছিল পীযুষকে। পরে অবশ্য পীযুষ ওর এক বন্ধু পার্টি করত, ওকে বলে ইউনিয়নের ছেলেদের দিয়ে শায়েস্তা করেইছিল বাণীব্রতকে।

খাবার পর রান্না ঘরে এঁটো বাসন কোচন গুছিয়ে রেখে হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে যখন পিকলুর ঘরে ঢুকল রমা, পিকলু তখন কম্পিউটারের সামনে বসে গেম খেলতে ব্যস্ত। ধমকের সুরে ছেলেকে সে বললে---কি রে, এখনো বন্ধ করলি না, কাল না তোর সকালে টিউশন আছে!

---আর একটু জাগতে দাও না মা।

ছেলের জন্য বিছানা রেডি করতে করতে রমা বলল----ও মা! কেন? এমনিতেই রাত্রি সাড়ে এগারোটা হল।ডাকছি তোর বাবাকে দাঁড়া।

বাধ্য হয়ে কম্পিউটার শাট ডাউন করল পিকলু। একমুখ বিরক্তি নিয়ে ও বিছানায় চলে গেল। রমা ওর বিছানার মাথার কাছে জানালাটা বন্ধ করে আলোগুলো নিভিয়ে নিজের বেডরুমে ঢুকল যখন তখন ঘড়িতে বারোটা বাজতে দশ মিনিট বাকি। চিৎ হয়ে শুয়ে আছে পীযুষ। হাতে একটা জীব বিজ্ঞানের মোটা বই। পাশে অ্যাশ ট্রেতে মাঝে মধ্যে নামিয়ে রাখছে ছাই।

রমা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মাথার চুল খুলে মেলে ধরল। কালো দীর্ঘ এই চুলের প্রেমে পড়েছিল একদিন পীযুষ। চুলে পাক দিয়ে খোঁপা করে মুখে চেপে রাখা গাডারটা বেঁধে নিল। আয়নার প্রতিবিম্বে একটু দেখলো নিজেকে, পরনে হালকা সবুজ রঙের সুতির শাড়ি, কালো ব্লাউজ। কোমরের কাছে শাড়িটা আলগা করে নেয় ও, সারাদিন যা গরম; পেটের কাছে যেন চেপে থাকে।
চশমার ওপর দিয়ে বই থেকে মুখ সরিয়ে নিজের স্ত্রীকে দেখতে লাগলো পীযুষ। ফর্সা পিঠে চাপ চাপ ঘাম জমেছে রমার।
রমারও আয়নায় নজর পড়ল স্বামীর দিকে। বললে---কি ব্যাপার এতক্ষনে তো ঘুমিয়ে কাদা হয়ে পড়তে। এখনও জেগে আছো যে আজ?

ঘড়ির দিকে তাকালো পীযুষ। বারোটা বাজতে এখনো মিনিট দশেক বাকি। বইটা বন্ধ করে উঠে গেল রমার কাছে। পেছন থেকে জড়িয়ে ধরল ওকে। ঘর্মাক্ত গ্রীবাদেশে মৃদু চুমু দিয়ে বলল---আজ একটু আদর করতে ইচ্ছে করছে তোমাকে।

---এই গরমে! আজ বড্ড টায়ার্ড।

পীযুষ রমার ব্লাউজের উপর থেকে পিঠের অনাবৃত অংশ পর্যন্ত ইতিউতি চুমু দিতে দিতে বললে---এসিটা বাড়িয়ে দাও বরং।

রমারও আজ একটু চাপা ইচ্ছে আছে বটে। অনেকদিনই তো হয়নি। হঠাৎ হঠাৎই হয় ওদের মধ্যে, তেমন কোনো রুটিন নেই। যদিও আজকাল সেই আগের মত হয় না। তবু সপ্তাহ মাঝে কোনো এক রাতে হঠাৎ ইচ্ছেতেই তারা মিলিত হয়ে থাকে, এই ইচ্ছেটা কখনো মাস পেরোয়, কখনো হপ্তা। এবার বোধ হয় শেষবার দিন কুড়ি আগে মিলিত হয়েছিল তারা।

গলার হারটা খুলতে খুলতে রমা বলল---পিকলু বোধ হয় এখনো ঘুমোয়নি।

---জানি। একটু আগে তোমার ধমকের আওয়াজে বুঝতে পেরেছি। আঃ হারটা খুলছ কেন? বেশ তো মানিয়েছে।

----ধ্যাৎ এই গরমে এসব পরে থাকা যায় না।

পীযুষ রমাকে তার দিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করালো। রমা এখন স্বামীর নগ্ন বুকে আবদ্ধ। পীযুষ রমার কপালে, গালে চুমু এঁকে দিতে দিতে বলল---আহা! কি মিষ্টি গন্ধ তোমার গায়ে!

রমা হেসে ছাড়িয়ে নিয়ে বললে---ধ্যাৎ। একটু পিঠে পাউডার লাগিয়ে দাও দেখি।
Like Reply


Messages In This Thread
পদ্ম নাগের বিষ - by Henry - 21-10-2023, 11:21 PM
RE: পদ্ম নাগের বিষ - by Henry - 24-10-2023, 10:57 PM



Users browsing this thread: fulimadam, চিত্রক, 7 Guest(s)