Thread Rating:
  • 16 Vote(s) - 3.13 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica সে যেন আমার পাশে - ছোট গল্প
#21
Star 
[Image: 20231023-021941.png]


শেষ পর্ব


- আসব?

সারা দুপুরে বন্ধুর আতিথেয়তা, নিজের গুপ্ত অতীত আর এ বাড়ির বর্তমান গৃহিনীর রূপের কথা ভাবতে ভাবতে কখন যে সময় পার হয়ে গিয়েছে বুঝিনি। চোখ খুলতেই দেখেছিলাম সূর্যের সোনালী রশ্মির ঝিকিমিকি বিদায় নিয়েছে, আর উজ্জ্বল আকাশের গায়ে গাঢ় নীলের ছটা। ঘরের দরজা খুলে কিছুক্ষন বাইরে দাঁড়িয়ে চারিপাশটা দেখে নিলাম। বন্ধুর থেকে শুনেছিলাম এ বাড়ি তার দাদুর বানানো নিজের যৌবনে। কর্তা নাকি অনেক যত্ন নিয়ে বানিয়েছিলেন এ বাড়ি। উকিল মানুষ ছিলেন। কিন্তু আজ সেই বাড়িটাও নিজের যৌবন হারিয়েছে। পুনরায় ঘরে এসে চেয়ারে বসে আমার থলি থেকে খাতা কলম বার করে মনের মধ্যে হটাৎ আগত দুটো লাইন লিখতে যাবো তখনি পেছন থেকে দরজায় টোকা আর ওই কণ্ঠটা কানে আসলো।

আমি পেছন ঘুরে কে? বলতেই ভেতরে প্রবেশ করল সে। পারুল! অমরেশ বাবাজির বোন। তাকে সেই আমাদের ছোটবেলায় দেখেছিলাম। সে ছোট্ট মেয়েটা আজ এতটা পাল্টে গেছে! সেদিনের বালিকা যে আজ পরিপূর্ণ নারী। যখনই মামার বাড়ি আসতো সে নিজের দাদাভাইয়ের কাছে তখন অমরেশ ওকেও নিয়ে আসতো আমাদের সাথে খেলতে। আমরা দল বেঁধে খেলতাম নানান মজার খেলা। ওকে কাছে পেলেই গাল দুটো টিপে দিতাম জোরে আর ও "আহ দাদা লাগছে" বলে চিল্লিয়ে উঠতো।

- কি গো? চিনতে পারছো?

বলেই হেসে উঠলো সে। আমি চিনতে তাকে প্রথমেই পেরেছি কিন্তু এতটা পরিবর্তন এসেছে তার মধ্যে যা কল্পনাতেও আসেনি। আর এই কিনা আমি লেখক হতে চাই? ছি ছি! মুখের মধ্যে সেই আগের মতোই সারল্য ও মিষ্টতা থাকলেও প্রকৃতির নির্মম নিয়মে শরীরে আসা স্বাভাবিক পরিবর্তন গুলো বড্ড চোখে লাগছে। সেদিনের সেই পুচকি খুকিকে যেন কিছুতেই আগের মতো সরল ভাবে দেখতে পারছিনা। এযে একেবারে ঠাসাঠাসী যৌবন, নিতম্ব পর্যন্ত লম্বা চুল আর বক্ষদ্বয় উর্বর। আজও এতদিন পর তার সাথে আলাপ হবার পর বড্ড খেলার সাধ জাগছে হৃদয়ে। তবে আমার নয়, ওই লুকানো পুরুষটা খেলতে চায় এই নন্দিনীর সহিত। তার যে প্রথম পরিচয় হলো পারুলের সাথে। আর তার এই রূপ বাধ্য করছে পুরুষটিকে খেলায় নামতে। তবে এবারের খেলা হবে একটু ভিন্ন। এ হবে বড়োদের গোপন খেলা।

"তুমি তো একেবারে পাল্টে গেছো? সেই ছোট্ট খুকুটি দেখেছিলাম তোমায়।" কোনোরকমে নিজের ইচ্ছা নিজের মধ্যে লুকিয়ে মিথ্যে হাসি হেসে জিজ্ঞেস করেছিলাম আমি। সেও হালকা হেসে চায়ের কাপটা টেবিলে রেখে আমার পাশে দাঁড়িয়ে সোজা আঁখি পানে চেয়ে বললো "তুমিও তো অনেক পাল্টে গেছো... আর আমি পাল্টাবোনা?" আমি হেসে বললাম "তা তো ঠিকই, সেদিনের সেই খুকি আজ ওই যাকে বলে বিগ গার্ল হয়ে গেছে.... তা সকালে দেখা পেলাম না যে? বিদ্যা সংগ্রহ করতে বেরিয়েছিলে বুঝি?"

সে হ্যা সূচক মাথা নাড়িয়ে চোখের ইশারায় আমায় চা পান করতে বলল। আমি চুমুক দিতেই মুখের ভেতরটা এক অদ্ভুত মিষ্টি স্বাদে ভোরে গেলো। মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো "বাহ্! দারুন!" আমার মুখে প্রশংসা শুনে তার মুখ যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠলো। আমার বুঝতে বাকি রইলোনা এই মিষ্টি চা তার হাতেই বানানো। তাহলে কি আমার জন্যই.....? কানে কানে সে যেন বলে গেলো "হুম। শুধুই তোমার জন্য। ও যে তোমায় সেই কবে থেকেই......."

 মুচকি হাসলাম তারপরে আবারো তার পানে চেয়ে চুমুক দিয়ে বললাম "দারুন বানিয়েছো চা টা" সে অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলো যে আমি কিকরে জানলাম। ভুরু নাচিয়ে রহস্যময় এক হাসি হেসে বললাম " তাহলে ঠিক ধরেছি তাইতো? এমন মিষ্টি চা একটা মিষ্টি মেয়ে ছাড়া আর কেউ বানাতেই পারেনা"। সে লজ্জা পেয়ে মাথা নামিয়ে বললো "ওসব কিছু নয়। বাড়ি থাকলে আমি নয়তো বৌদিই চা বানায়। আজ আমি বানালাম। এমন কিছু মিষ্টিও দিইনি। আর ওতো ভালো চাও আমি বানাইনা। বৌদি আমার থেকে অনেক ভালো চা বানায়। ওই আমায় শিখিয়েছে"। আমি আবারো চুমুক দিয়ে তার পানে চেয়ে বললাম "খুব ভালো বৌ হবে তুমি, যখনই স্বামীর সাথে কথা কাটাকাটি হবে কিংবা কিছু চাওয়ার থাকবে এই হাতে চা বানিয়ে খাইয়ে দেবে.... ব্যাস দেখবে কেমন পতি বাবাজি না করতে পারবেনা।" যদিও আমি আমার মনের কথার সামান্য অংশটুকুই মেলে ধরেছিলাম তার সামনে। আমি মূলত বলতে চেয়ে ছিলাম চা হাতে এই সুন্দরী নন্দিনী যখন মিষ্টি হেসে স্বামীর কাছে এসে পাশে বসে নিজ হাতে স্বামীর হাত নিয়ে কাঁধে রাখবে নিজের মাথা..... ওসব মান অভিমান ভুলে স্বামী তাকে নিয়েই মেতে উঠবে। ওই চায়ের কাপে চোখও যাবেনা। কারণ ধুমায়িত চায়ের থেকেও উত্তপ্ত পতিদেব নিজেকে ঠান্ডা করতে হিমশিম খাবে। রতিদেব মাথায় চোড়ে বসবে তখন। আচ্ছা? ওই স্বামীর স্থানে বারবার নিজেকে কল্পনা করতে ইচ্ছে জাগছে কেন? সেটা কি শুধুই এই সম্মুখে উপস্থিত নারীর যৌবনকে ভোগের ইচ্ছার কারণে? নাকি সবার চোখের সামনে তাকে নিজের করে নিয়ে একান্তে তাকে নিয়ে মেতে ওঠার অছিলা? অথবা এমনও তো হতে পারে আমার হাত তাকে স্পর্শ করলো ঠিকই কিন্তু সেটা শুধুই ভালোবাসার পরশে?

ওর হাতটা বড্ড ধরতে ইচ্ছা করছে। ধরবো? আবারো সেই শীতল অদৃশ্য বাতাসে ভেসে সে যেন কানে কানে বলে গেলো "বুদ্ধু একটা! এখনো অপেক্ষা করে আছো? আর এদিকে যে মেয়েটা তোমার স্পর্শের অপেক্ষায়। আজ থেকে নয়, সেদিন থেকে যেদিন সে ভালোবাসাও বোঝেনা। শুধুই বোঝে ওর দাদার এই বন্ধু ওর কান্না মুছিয়ে দিয়ে কপালে চুম্বন করেছিল। সামান্য চোট লাগা হাতে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলেছিলো কিচ্ছু হবেনা, দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে। সেই ছিল তার প্রথম পুরুষ স্পর্শ। বুকটা কেঁপে উঠেছিল অজান্তে। সেদিনের সামান্য চোট হয়তো সে রাতেই ভুলে গেছিলো কিন্তু যে অজানা ব্যাথা তার বুকে অজান্তে তুমি দিয়েছিলে সেই ব্যাথা আজও বয়ে চলেছে সে এই বিরাট বুকে। সে ব্যাথা বড্ড মিষ্টি। তার মলম যে একমাত্র তোমার কাছে আছে। আর তুমি ভীতু হয়ে ভেবে চলেছো? কেমন পুরুষ তুমি বাপু? ধরো এখুনি!"

আশ্চর্য! হাওয়া এতো কথাও বলতে পারে? কি জানি হবে হয়তো। কিন্তু আমি আর অপেক্ষায় না থেকে তার কথা শুনে হাত বাড়িয়ে তার কোমল হাত ধরে পুরুষালি দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলেছিলাম ধন্যবাদ। লাজে রাঙা রূপসী সুন্দরী যে কতটা অসাধারণ লাগে সেটার সাক্ষী যে পুরুষ না হয়েছে সে বুঝবেনা। উঠে দাঁড়িয়ে এগিয়ে গেলাম তার কাছে। আমার বিশাল বুকের সাথে তাকে মিশিয়ে দিতে বড্ড ইচ্ছা জাগছিলো কিন্তু সেটা না করে জিগ্যেস করলাম "চা খেয়েছো?" মাথা নস্তক অবস্থাতেই মাথা নেড়ে জানালো ফিরে গিয়ে খাবে। আমি নিজের কাপটা তার ঠোঁটের কাছে নিয়ে গিয়ে বললাম - নাও। এইবারে সে ওপরে আমার পানে চাইলো। গাল দুটি লাল হয়ে গেছে বেচারির। আমি আরও কিছুটা এগিয়ে এসে নিজের হাতেই তাকে আবারো বললাম "একটু আমার হাতেই খাও না। এক চুমুক। নইলে কিন্তু....." বাকিটুকু বলার প্রয়োজন হলোনা। আমার হাতে ধরা কাঁপে চুমুক দিলো সে একটু। আর তারপরেই চোখ বড়ো হয়ে গেলো তার।

"এমা! আমি তো চিনিই....!  ইশ....আর তুমি বলছো না? খেয়ে যাচ্চো?"

ওর কথা শুনে আমি অবাক হবার ভান করে  "তাই নাকি? কই দেখি "  বলে চুমুক দিলাম কাপে। আবারো সেই একই স্বাদে ভোরে গেলো মুখ। কিন্তু মুখে বললাম "এ বাবা! এ যে আরও মিষ্টি হয়ে গেছে! এতো মিষ্টি খাইয়ে দিলে? এবার যে মিষ্টির প্রেমে পড়ে যাবো আমি! "

- ধ্যাৎ অসভ্য তুমি খুব!

ছুটে বেরিয়ে গেলো পারুল ঘর থেকে। আর আমি? আবারো চায়ে চুমুক দিলাম। জীবন স্রোতে ভাসতে যখন জীবনকে আরও ভালো করে জানতে নতুন অভিযানে বেড়িয়েছি তখন ডুবে নোনতা স্বাদ তো বারবার পেতেই হবে। সে জায়গায় তো এই চা সত্যিই মিষ্টি। বড্ড ইচ্ছে করছিলো ওর পালিয়ে যাবার ঠিক পূর্বে ওর ওই হাতটা ধরে কাছে টেনে নি ওকে। বুকে জড়িয়ে ধরি। পিষে ফেলি ওকে নিজের সাথে। হয়তো সেও বাঁধা দিতোনা। বরং ওর ভীত চোখে ও কম্পিত ঠোঁটে আমন্ত্রণ পেতাম খুঁজে। আর তারপরে আমিও..........

অজান্তেই বিশেষ এক স্থানে কেমন যেন একটা মৃদু স্পন্দন অনুভব করতেই হেসে ফেললাম। ধুর! আমিও না! লেখক বাবু হয়ে বড্ড বেশি ভেবে ফেলছি আজকাল। আবারো ঠান্ডা হাওয়া বয়ে গেলো কানের পাশ দিয়ে। যেন বলে গেলো - "ঐযে আরেক জন আসছে তোমার খোঁজে। সত্যিই লেখক বাবু.... ভাগ্য বটে তোমার। একা আমিতে হচ্ছেনা না? আরও চাই? অসভ্য একটা।"

সামান্য পরেই ঘরে প্রবেশ করলেন এ গৃহের দ্বিতীয় সুন্দরী। হয়তো একটু আগেই স্নান সেরে পূজা দিয়েছে। এমন মহেন্দ্র ক্ষনে নারীজাতি অস্বাভাবিক সৌন্দর্যের অধিকারিণী হন। সে রূপ তার কাছে যতটা পবিত্র ঠিক ততটাই আকর্ষক এক পুরুষের কাছে। বিশেষ করে যে পুরুষ স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসে। আর স্বপ্ন যদি হয় মুক্ত আকাশে ভেসে চলা মেঘের পিঠে বসে থাকা দুস্টু কোনো দানবের। চোখে লালসা ও পেটে ক্ষিদে নিয়ে মেঘে চড়ে ভেসে যায় সে দানব আর শিকার পেলেই তাকে নিজের সাথে নিয়ে যায় তুলে। ভাসমান মেঘে শিকার শিকারি গভীর খেলায় মত্ত হয়ে হারিয়ে ফেলে নিজেদের অতীত ভবিষ্যত। শুধুই বর্তমানকে মাথা পেতে মেনে আদিম পূজায় মাথা নত করে দানব।

- পারুল এসেছিলো না? কি বলছিলো ও?

বন্ধু পত্নীর প্রশ্ন যতটা স্বাভাবিক ততটা কিন্তু তার মুখশ্রী লাগলোনা। যেন কিছু একটা কারণে সে অখুশি। সেটার কারণ কি পারুল?  নাকি আমি? তবু প্রশ্ন মনে রেখেই হেসে সত্যিটা বলেই দিলাম। আমার হাতে ধরা কাপটা দেখে সেই দুই চোখে যেন হালকা একটা ব্যার্থতা লক্ষ করলাম আমি। তবে সেটা শুধুই এক পলকের জন্য। তারপরেই আবারো ওই ঠোঁটে হাসির রেখা ফুটে উঠলো। যদিও সে হাসিতে নেই কোনো উজ্জ্বলতা। আমি ভদ্রতার খাতিরে তাকে ভেতরে এসে বসতে বললাম। বৌদি আসলেন ঠিকই কিন্তু যেন কোন ভাবনায় ডুবে যাচ্ছিলেন জানিনা। খাটে বসে আমার সাথে কথা বলার পাশাপাশি বাঁ হাতের নখ দিয়ে বারবার চাদরটাকে শাস্তি দিচ্ছিলেন। হায়রে বেচারা..... কার ভাগের দন্ড কে পায়। আমার পিতা মাতার কুশলতার খোঁজ নিয়ে অন্যান্য ব্যাপারে কিছুক্ষন কথা বলে একটু থেমে হটাৎই প্রশ্ন করলেন শ্রীমতি -

- কি লিখছেন এখন? বিষয় কি?

- শুনবেন?

- হুমমম

- রাগ করবেন না তো আবার?

- এ মা? রাগ করবো কেন? রাগ করার মতো কোনো বিষয় নাকি?

- একদমই তাই। শুনেই মাথায় রক্তে চড়ে যাবে।

- তাই বুঝি? তা আগে  শুনি। শুনে রেগে গেলে না হয় ভেবে দেখবো কি শাস্তি আপনার যোগ্য।

- হুমমমমমম...... বেশ তবে তাই হোক। ভাবছি এইবারের আমার সৃষ্টি হোক আদিম রিপুকে নিয়ে। যাকে বিচার করার ক্ষমতা অন্তত এই সংসারে কারোর নেই। যাকে হয়তো আমরা নানান নাম দিয়ে, নানা ভাবে অপরকে বা নিজেকেই বোঝানোর চেষ্টা করি কিন্তু বারবার অসফল হই। কারণ তাকে সম্পূর্ণ রূপে বোঝা আমাদের কম্ম নয়।
তাই তাকে ওতো না বুঝে অনুভব করে তার অস্তিত্ব আবারো প্রমান করার কাহিনী হবে আমার। আর সেটা ব্যাভিচার ছাড়া কি সম্ভব?

- ব্যাভিচার?

- আজ্ঞে.... এই ধরুন আপনজনকে নিয়ে প্রতিদিন ঘর করার পরেও, তাকে সব কিছু উজাড় করে ভালোবাসার পরেও হটাৎ করে নতুন রূপের সাক্ষাৎ পেয়ে তাকে নিয়ে অজান্তেই ভাবতে শুরু করা। আপনজনকে আদর করার মাঝেই তার মধ্যে সেই নতুন মুখটা খুঁজে নেবার অসফল চেষ্টা কিংবা নিজের সাথে অনন্ত কাল ধরে লড়তে লড়তে শেষে পরাজিত হয়ে সেই নতুন মানুষটাকে হৃদয়ে স্থান দেওয়া। তাও আবার তার অজান্তেই। কি দারুন ব্যাপার না? সেই মানুষটা জানতেও পারলোনা দুটো অচেনা চোখ তাকে শুধু প্রতিদিন লুকিয়ে দেখছেই না বরং তাকে নিয়ে নানানা সব কথা ভাবছে। তার অজান্তেই সে কোনোদিন নাগিনী রূপে কিংবা অপ্সরা রূপে রতিসুখ দিচ্ছে সেই দুষ্টু পুরুষকে। এও তো এক প্রকার ব্যাভিচার। বাস্তবিক রূপে না হোক কাল্পনিক ভাবে তো অবশ্যই।

- হুমমম তা ঠিক। তা আপনার গল্পটা কেমন শুনি একটু। যদি আপত্তি না থাকে।

- শুনবেন? উমম আমার গল্পের নায়ক যিনি আমার মতোই একজন শিল্প ভুখা মানুষ। যে আঁকতে ভালোবাসে, লিখতেও ভালোবাসে আবার গড়তেও ভালোবাসে মাটির নানান সব মূর্তি। আর তার সেরা কাজটা ফুটে ওঠে তখন যখন সে রেগে থাকে।

- ও বাবা? রেগে থাকলে তার কাজ ভালো হয়? তা কার ওপর সে রেগে থাকে?

- সবার ওপর। বা বলতে পারেন সব কিছুর ওপর। বাবা মা থেকে প্রতিবেশী, অতীতের ক্রুর শিক্ষক থেকে সমাজ ব্যবস্থা, বন্ধু থেকে আত্মীয় সবার ওপর। যে মনে করে পুরো পৃথিবী তার শত্রু। শুধুমাত্র তার সৃষ্টিই তার বন্ধু। বলতে পারেন একজন শর্ট টেম্পার পাগলাটে পুরুষ। কিংবা বলতে পারেন সুপুরুষ। তবে তার সবচেয়ে বেশি রাগ কার ওপর জানেন?

- কার?

- আয়নার সামনে দাঁড়ালে যে লোকটাকে রোজ দেখতে পায় তার ওপর। লোকটা আসলে ওকে এমন একটা ক্ষত দিয়ে গেছে যে আজও সেই ক্ষত বুকে বিয়ে বেড়াতে হয় তাকে। তাই যতবার ওই শয়তানটাকে আয়নায় দেখে..... ওর ইচ্ছে করে গলা টিপে মারতে কিন্তু ও ব্যাটা আয়নার ওপারে দাঁড়িয়ে হাসতে থাকে। এতে আরও রাগ চেপে যায় বেচারার ওপর। আর তখন সে তার সমস্ত রাগ উগ্রে দেয় সৃষ্টির ওপর। সেরাটা বেরিয়ে আসে তার মধ্যে থেকে। তারপরে নোংরা হাতে হাঁপাতে হাঁপাতে তাকিয়ে থাকে সেটার দিকে। আর এক সময় সে প্রচন্ড উত্তেজিত হয়ে ওঠে। যৌন উত্তেজনা। তখন সে তাকায় পাশের বাড়ির ফাঁকা ছাদের দিকে। ওখানেই তো প্রায় প্রতিদিন দেখা পেতো সে তার। রোদে ভেজা শরীরটা রোজ যখন কাপড় তুলতে যেত এবাড়ির ছেলেটা হা করে গিলতো ওই শরীরটা। বড্ড ভালো লাগতো তাকে ঐভাবে লুকিয়ে দেখতে। কত কিছু আকাশ পাতাল ভাবতো সে তাকে নিয়ে। কিন্তু আজ আর সে আসেনা ছাদে। আর সে আসেনা এ বাড়িতে মায়ের সাথে গল্প করতে। আর শোনা যায়না তার শাশুড়ির সাথে ঝগড়া চিৎকার। আজ বড্ড শান্ত ওই বাড়িটা।

- কেন? সে কি বাড়ি পাল্টে অন্য কোথাও চলে গেছে থাকতে? নাকি........

আমি বন্ধু পত্নীকে এসব বলার সময় এক টানা তাকিয়ে ছিলাম খোলা দরজাটার দিকে। হাওয়ায় অনবরত দুলে চলেছে পর্দাটা। মাঝে মাঝে আলো ছায়ায় মনে হচ্ছে যেন দরজার বাইরের চুপটি করে দাঁড়িয়ে কেউ সব শুনছে। আমি জানি সেই শুনছে। লুকিয়ে সব দেখছে আর হাসছে নিশ্চই। পাষান হৃদয় তার। তার হাসি আজকাল অসহ্য লাগে আমার। ইচ্ছে করে তাকে একটা ক্ষত দিতে কিন্তু আমি যে অক্ষম। সেটা বুঝেই তার পৈশাচিক আনন্দ হয় যেন।

- কি হলো? বললেন না?

- আজ্ঞে? কি? কি বলবো?

বন্ধু পত্নী বুঝতে পারলেন যে সামনে বসে থাকা পুরুষটা হয়তো বর্তমান পরিস্থিতির বাইরে গিয়ে অন্য কোনো দুনিয়ায় হারিয়ে গেছিলো ক্ষনিকের জন্য। হতে পারে গল্পের চরিত্রদের নিয়ে কিংবা অন্য কিছু। তাই পুনরায় একই প্রশ্ন না করে সে এবার জিজ্ঞেস করলো - আপনার গল্পের নায়ক তো বেশ রহস্যময় মনে হচ্ছে। তা সে কি প্রয়োজনে কাউকে খুন টুনও করতে পারে নাকি? এমন চরিত্রদের বিশ্বাস নেই। এরা যা ইচ্ছে করতে পারে।

আমি হেসে চায়ে চুমুক দিয়ে বললাম - তা হয়তো পারে। যেমন ধরুন নিজের উগ্র যৌনতার বিষ ঝেড়ে ফেলতে বেশ্যালয় যাওয়া এমন পুরুষের কাছে কোনো বড়ো ব্যাপার নয়। সেখানের কোনো কাম কক্ষে গিয়ে মেয়েমানুষ নিয়ে মেতে উঠতে উঠতে হয়তো আবার সেই ক্রোধ মাথাচারা দিতেই পারে। তখন সমস্ত রাগ গিয়ে হয়তো পড়লো ওই রমণীর ওপর। ব্যাস খেলা শেষ। আচ্ছা আপনি কি বলেন? সে কেন খুন করবে সেই নারীকে? রতিক্রিয়ায় অসফলতা নাকি নারী জাতির প্রতি তার ক্ষোভ।

আমার প্রশ্নবানে প্রাথমিক ভাবে ঘাবড়ে গেলেও নিজেকে সামলে নিতে বেশি সময় লাগলো না আমার বন্ধুপত্নীটির। কিছুক্ষন হয়তো আমার প্রশ্নের উত্তরটা ভেবে নিলো সে। আমি কিন্তু তাকিয়ে খোলা দরজার দিকে। আমি জানি সে সব শুনছে। আমারও অন্তরে একটা লোভ বেড়ে চলেছে। ইচ্ছে করছে এক্ষুনি সামনে বসে থাকা সুন্দরী রমণীর ওপর ঝাঁপিয়ে তাকে ছিন্ন ভিন্ন করে ফেলি। না তার প্রতি যে আমার বিকৃত নজর আমায় বাধ্য করছে তা মোটেও নয়, আমি দেখতে চাই ওই লুকিয়ে সাক্ষী হওয়া সত্তার হেরে যাওয়া মুখটা দেখতে। তখন বড্ড আনন্দ হবে আমার। কিন্তু কোনোরকমে নিজের সেই ইচ্ছেটা নিজের মধ্যে চেপে রেখে তার উত্তরের অপেক্ষায় আমি। সে বলতে শুরু করলো -

"উহু.... আমার কিন্তু মনে হয় এই ধরণের পুরুষের কামশক্তি ভয়ানক প্রবল হয়। যাকে বলে বীর্যবান পুরুষ। তাই ঐটা বাস্তবিক নয়। ধরুন অতীতে হয়তো এমন কিছুর সাক্ষী হয়েছে সে যার জন্য নারীদের প্রতি তার ভয়ানক ক্ষোভ, ক্রোধ। নারী হয়তো তার কাছে বড্ড অপবিত্র। হয়তো নিজের মাকে কেন্দ্র করে কিংবা প্রেমিকার থেকে বঞ্চনা কিংবা স্ত্রীয়ের ব্যাভিচার। এর থেকে তার এই পাপ কর্মে লিপ্ত হওয়া। কি? খুব একটা মন্দ বললাম কি?"

মহিলার উত্তর শুনে আমি কিছুটা অবাকই হলাম। এমন সুন্দরী শান্ত ভদ্র রমণীর অন্তরে এই পরিমান বুদ্ধি থাকতে পারে সেটা ভাবতে পারিনি। এটা সত্যিই আমার একটা বড়ো ভুল। নারীজাতিকে হয়তো কোনোদিনই চিনতে পারবোনা আমি। নিজের অক্ষমতা নিজের মধ্যেই লুকিয়ে হেসে হাসিমুখে তার প্রশংসা করে বললাম - "মানতেই হবে। আপনার জবাব নেই। তা এতটা যখন বললেন তাহলে এটাও বলুন আপনার বর্ণিত অতীত গুলোর মধ্যে থেকে আমার গল্পের জন্য কোনটা সবথেকে বেশি মানাবে?"

বন্ধুপত্নী মুচকি হেসে বললেন - "লেখক কে? আমি না আপনি?"

আমিও প্রত্তুতরে বললাম - "সবসময় যে লেখক নিজের সৃষ্টি নিজের মস্তিষ্ককে কাজে লাগিয়েই লেখে তা তো নয়, খুঁজলে এমন বহু নামি লেখক পাওয়া যাবে যারা তাদের সৃষ্টির বীজ খুঁজে পেয়েছেন ওপর কোনো সৃষ্টিকর্তার বাগানে। লক্ষ কোটি পাতা ভর্তি লেখার ভিড়ে একটু ছল চাতুরী চলেই। এই গল্পের জন্য সহায়িকা হিসেবে না হয় আপনার নামও সংযোজন করবো। বলুন না? কোনটা সবচেয়ে যোগ্য?"

সে যেন আগের থেকে অনেকটা পরিবর্তিত এবার। হেসে উঠে হাত নেড়ে বললো - "নানা বাবা! আমার নাম টাম দেবার কোনো প্রয়োজন নেই। তারপরে ওই লেখায় সহায়িকা হিসেবে আমার নাম দেখতে পেলে আপনার বন্ধুই আমাকে ঘাড় ধরে তাড়িয়ে দেবেন। তখন কি আপনার কুটিরে গিয়ে উঠবো নাকি?"

"আমার তাতে কোনো আপত্তি নেই।" হেসে বলে উঠলাম আমি। তাতে সে কি বুঝলো জানিনা কিন্তু এক অদ্ভুত চাহুনি আমায় উপহার দিয়ে চুপচাপ বসে রইলো সে। এক অসহ্য নীরবতায় ভোরে গেলো ঘর খানি। আমিও চায় চুমুক দিতে ব্যাস্ত হয়ে পড়লাম। সত্যিই চা পানে এতো সুখ কোনোদিন পাইনি তো। সেটা কি হাত পরিবর্তিত বলে? হবে হয়তো। খুব ইচ্ছে করছে তাকে পারুলকে দেখতে আবারো। মেয়েটার মধ্যে একটা আলাদা মাধুর্য আছে যেটা বারবার আকৃষ্ট করে। তাকে খুব কাছে পেতে ইচ্ছে জাগছে। চায়ে কিছু মিশিয়ে দেয়নি তো? নিশ্চই আঙ্গুল ডুবিয়ে নিজের দেহের ইতর মিশিয়ে দিয়েছে মেয়েটা। দাঁড়াও! একবার হাতের নাগালে পাই। এমন শাস্তি দেবো যে আমার চিরকাল মনে রাখবে। শুধু মনেই রাখবেনা, শাস্তিটাকে একটু একটু করে বড়োও করবে নিজের গর্ভে। উফফফফ ইচ্ছাটা মনে জাগতেই আবার নিষিদ্ধ চাহিদাটা অনুভব করলাম। এদিকে যে আরেকজন আমার ঘরে উপস্থিত সেটা ভুলে গেলেও চলবেনা। আকর্ষণের দিক থেকে সেও বা কম কিসে? বরং ইনি আরও পরিপূর্ণ। ঠিক সুস্বাদু পাকা আমের মতন। বহু ঝড় ঝাপ্টা উত্তাপ সামলে আজ সে রসে মাখামাখি রূপের রানী।

" আমি হলে প্রথমটা বেছে নিতাম" হটাৎ বলে উঠলো সে। আমি অন্য খেয়ালে হারিয়ে ছিলাম বলে সামান্য পরে হু? বলে উঠলাম। সে আবারো বললো - প্রথমটা।

- মানে মায়ের দিকটা?

- হুমমম.... এসব ব্যাপারে পুরুষ নষ্ট হবার পেছনে মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি থাকে। ধরুন ছোটবেলার কোনো স্মৃতি যা চিরকালের জন্য একটা জঘন্য ক্ষত দিয়ে দিয়েছে সেই ছেলেটিকে। যা পচে পচে তাকে আজ মানুষ রুপী জানোয়ার বানিয়ে তুলেছে। যার চোখে নারী মানেই নষ্টা, কলঙ্কিনী। তাদের ভোগ করে তারপরে তাদের শেষ করে এক চরম সুখ হয় তার। আপনি কি বলেন?

- মানে মায়ের ব্যাভিচারের সাক্ষী তাইতো? হ্যা মন্দ নয়। তবে এতটা গভীরে যাওয়া কি উচিত হবে? রসের গল্পে এতটা ক্রাইম ঢোকানো হয়তো অনেকেই পছন্দ করবেনা। তারা ব্যাভিচারের আগুনে পুড়তে রাজি কিন্তু খুনের বিবরণ পড়তে কতটা আগ্রহ পাবে সেটা নিয়ে সন্দেহ আছে আমার।

- আপনার কাছে নিজের গল্প আগে নাকি পাঠক? যদি শুধুই পাঠকদের কয়েক মুহূর্তের সুখ দিতে এসব লেখেন তাহলে নিজেকে আর যাই বলুন লেখক বলবেন না। লেখক সে যিনি নিজের কাছে আগে প্রতিজ্ঞা করেন মোহগ্রস্থ হয়ে ভুল পথে চালিত না হবার, নিজের সৃষ্টিকে বেশ্যার মতো রাস্তায় না নামানোই তো লেখকের প্রথম কর্তব্য। ভুলে যাবেন না আপনি সৃষ্টি করলেও আপনার প্রথম পাঠক আপনি নিজেই। যদি নিজেকেই না খুশি করতে পারলেন তবে কি সাহসে পাতার পর পাতা নষ্ট করেন? আমি যাই। আমার অনেক কাজ আছে।

এমন দৃঢ় কণ্ঠে প্রতিবাদ করে উঠে দাঁড়িয়ে সে চলে যেতে গিয়েও দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কি ভেবে ঘুরে ঘরে বসে থাকা অতিথির দিকে তাকিয়ে আবার সেই আগের শান্ত ধীর কণ্ঠে বলে গেলো - "আসি...... কিছু মনে করবেন না। আমি খুব ভুলভাল বলে ফেলি। তাইতো শাশুড়িমা আমায়..... যাইহোক.... আবার দেখা হবে। আসি।"

চোখের সামনে দিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেলো সে। আমি তাকিয়েই রইলাম দুলন্ত পর্দার দিকে। ওপারে দাঁড়িয়ে যে সবটা শুনছিলো সেও বোধহয় মিশে গেছে প্রকৃতির বুকে। আমি এখন একাই জড় পদার্থ হয়ে বসে রয়েছি। বাইরে থেকে ভেসে আসা ছাতিম ফুলের গন্ধে কখন যেন ভোরে উঠেছে ঘরটা। মুচকি হেসে শেষবারের মতো চায় চুমুক দিয়ে নিজের কাজে ডুব দিলাম। নানান সব বিচিত্র লেখায় ভরিয়ে ফেলতে লাগলাম পাতার পর পাতা। কানের পাশ দিয়ে মুক্ত শীতল অবাদ্ধ হাওয়াটা বয়ে গেলো আবারো। শুনতে পেলাম সে বলছে - ইশ, এসব কেউ লেখে নাকি? নির্লজ্জ একটা হিহিহিহি।


পরের অংশ এক্ষুনি আসছে
[+] 7 users Like Baban's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.


Messages In This Thread
RE: সে যেন আমার পাশে - ছোট গল্প - by Baban - 23-10-2023, 08:45 PM



Users browsing this thread: 5 Guest(s)