23-10-2023, 01:50 PM
<×><×><×><×><×><×><×><×><×><×><×><×>
অ্যাকশন বিগিনস
<×><×><×><×><×><×><×><×><×><×><×><×>
একটা দুঃসাহসিক পদক্ষেপ নিলো ম্যাড। এতক্ষণ কাম্মার কোলে মাথা রেখে, চিৎ হয়ে শুয়েছিলো। এখন ঘুরে গিয়ে, দু'হাতে কাম্মার কোমর জড়িয়ে ধরে; পেটের মধ্যে মুখ গুঁজে দিলো। বিষন্ন স্বরে বলে উঠলো,
- ছোটুর ব্যাপারে কি কিছু ঠিক করলে? বড্ড দেরী হয়ে যাচ্ছে! ছোটু কি এর পরে, আমাকে ওর পাপা হিসেবে মেনে নিতে পারবে? হয়তো, মায়ের স্বামী হিসেবে মেনে নেবে। কিন্তু, পাপা ভাবতে পারবে না! … মুহূর্তের জন্য কাম্মার শরীরটা আড়ষ্ট হয়ে, আবার শিথিল হয়ে যায়। … ম্যাড বলতেই থাকে, কাকিমাকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে।
- ভদ্রার ব্যাপারেও তুমি কিছু ভাবছো না! ওর জন্মদিন তো এসেই গেলো। এখনই এই ব্যাপারে আলোচনা না করলে, ওটা আবার পিছিয়ে যাবে।
তুমি যদি নিজেকে, অন্ধকারের গোলকধাঁধা থেকে বার করতে না পারো; তাহলে, আমাদেরকে ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়ে ,আশ্রমবাসিনী হয়ে থাকো। মহারাজ নিশ্চয়ই তোমাকে বাধা দেবেন না। আমরা ভাগ্যের হাতে নিজেদের ছেড়ে দেবো।
- হ্যাঁ! আমি জানি, কাকাইকে তুমি নিজের প্রাণের চেয়ে বেশী ভালবাসতে। অকালে কাকাইয়ের চলে যাওয়া; আমরাও মানতে পারছি না। কিন্তু, আমরা কেউ-ই কি তোমার ভালোবাসা পেতে পারি না? মহারাজের শিক্ষা তো এটাই, জীবন চলমান। তাকে থামিয়ে রাখা যায় না। জৈবিক ক্ষুধা দমন করতে গিয়ে, মানুষ যেমন নিজের প্রতি অন্যায় করে, তেমনই সমাজেরও ক্ষতি করে।
আমরা আর পারছি না কাম্মা। পরিবারের প্রধান হিসেবে তুমি যদি হাল না ধরো; তাহলে, মাঝ নদীতে আমাদের ছেড়ে দিয়ে, সাঁতরে পারে চলে যাও। আমরা যদি নিজেরা যুদ্ধ করে বাঁচতে পারি, বাঁচবো। অন্যথায়??? … যা হবার তাই হবে। মুখটা সজোরে কাকিমার কোলে গুঁজে দিয়ে ফুলে ফুলে কাঁদতে লাগলো।
এই ইমোশনাল ব্ল্যাকমেল, মাতা রুপকলার মস্তিষ্কপ্রসূত। সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কায় মাতা তার প্রাণ বিসর্জন দিতে দ্বিধা করে না। এক্ষেত্রে, সব বাঁধন ছিড়ে ফেলে; স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসাটাই স্বাভাবিক, সুতনুকার পক্ষে। কারণ, সুতনুকা জানে, ভাইয়ের অকাল মৃত্যু, বড়দাকে ভীষণ ভাবে প্রভাবিত করেছে। বড়দি তাকে নিয়ে ব্যতিব্যস্ত। দু' নৌকায় পা রাখা, ম্যাডের পক্ষে সম্ভব নয়। মা-বাবার সেবা করতে হলে তাকে চাকরি ছাড়তে হবে। শুধু তাকেই নয়। কল্পনাকেও ছাড়তে হবে চাকরি। না হলে, ছোটুর ব্যাপারটা ঘেঁটে যাবে। এ গুলো কোনটাই সম্ভব নয়। সুতরাং, সুতনুকাকেই ফিরে আসতে হবে ছন্দোবদ্ধ জীবনে। সব সমস্যার সমাধান সেখানেই।
মাধূর্য্যের কান্নাটা কৃত্রিম নয়। সে সত্যিই বিড়ম্বিত। কাম্মাকে পাশে না পেলে, কোনও কিছুর সুষ্ঠ সমাধান নেই।
ধীরে ধীরে আধ শোওয়া অবস্থা থেকে সোজা হয়ে বসেন সুতনুকা। দু'হাতে মাধুর্য্যের মুখটা তুলে ধরে নিজের সামনে নিয়ে আসেন। আঁচল দিয়ে চোখের জল মুছিয়ে, ঠোঁটের ওপর একটা চুমু দিয়ে মুখটা চেপে ধরেন নিজের বুকে। পিঠে হাত বোলাতে বোলাতে বলেন,
- পাগল একটা! … এখন ঘুমিয়ে পড়। আমাকে কালকের দিনটা সময় দে। কল্পনার সঙ্গে আমার কিছু কথা আছে। তারপর তোরা যা চাইবি!! ধীরে ধীরে নেমে দাঁড়ায় বিছানা থেকে। দরজা বন্ধ করতে বলে, নিজের ঘরে চলে যায়।
ঘড়িতে রাত এগারোটা। কেস হিস্ট্রি লিখবে পরে। ফোন লাগায় রুপকলা মাতাজীকে। পুরো ডিটেইল শোনেন মাতাজী; তারপর, কনফারেন্স কলে ডেকে নেন, ভির আর ভদ্রাকে। আধ ঘন্টা কথা বলেন সবার সঙ্গে। তারপর ভিরকে আলাদা কিছ নির্দেশ দিয়ে ফোন কেটে দেন। আগামী দিনের চিন্তায়, ম্যাড আজকেও নির্ঘুম কাটায়।
আজ শুক্রবার, অ্যাজ য়্যুজুয়াল, ম্যাড যখন বিছানা ছাড়লো, তখন ঘড়িতে ছ'টা বাজেনি। টয়লেট করে, চোখেমুখে জল দিয়ে, ছাতে গেলো। অনেকদিন পর একটু ফ্রি-হ্যান্ড করার ইচ্ছে।
মনটা ভরে গেলো ছাদে উঠেই। অনেকদিন পরে কাম্মা ছাদে উঠেছে।