14-10-2023, 03:08 PM
পরের দিন সকালে আমার ভায়রাভাইয়ের ডাকে যখন ঘুম ভাঙলো, তখন ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ন'টা বাজে। ঘুম ভাঙতে অনেকটা দেরি হয়ে গেলো, অবশ্য দেরি হওয়ারই কথা। আগেরদিন রাত একটার পরে শুয়েছি, তারপর ওইরকম বিভীষিকাময় রূপনগর সফরের কথা ভাবতে ভাবতে কখন ঘুম এসেছে জানিনা। শান্তিরঞ্জনের সঙ্গে ওর ঘরেই ঘুমিয়েছিলাম। ফ্রেশ হয়ে এসে ওদের বৈঠকখানার ঘরে ঢুকে দেখলাম ঝুমা, সৈকত আর বাপ্পা বসে রয়েছে। কিন্তু নন্দনাকে কোথাও দেখতে পেলাম না।
আমি এদিক ওদিক তাকাতেই ঝুমা বললো, "বউকে খোঁজা হচ্ছে, তাই তো? ও স্নানে গেছে, এক্ষুনি বেরোবে, আর তোমাকেও তাড়াতাড়ি স্নান করে নিতে বলেছে। ভাতে ভাত চাপিয়ে দিয়েছি, এখান থেকে খেয়ে দেয়ে তারপর বাড়ি যাবে। ও আবার বলছিলো তোমাদের অফিসের নাকি কোন বড়কর্তার সঙ্গে দেখা করবে আজকেই।
আমরা ওখান থেকে তাড়াতাড়ি খেয়েদেয়ে বেরিয়ে পড়লাম বাপ্পাকে নিয়ে। লিলুয়া থেকে ট্রেনে প্রায় আধঘন্টা লাগে আমাদের গন্তব্যের স্টেশনে পৌঁছতে। এমনিতেই পাবলিক প্লেস, সব রকমের কথা বলা যায় না। তার উপর কাল থেকে নন্দনার যার রূপ আমি দেখে আসছি, বলা ভালো ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে ওর পার্সোনালিটির যেভাবে পরিবর্তন ঘটেছে, তাতে করে ওকে কোনো কথা জিজ্ঞেস করার সাহসই পাচ্ছিলাম না আমি। তবুও মনের সাহস যুগিয়ে মৃদুস্বরে নন্দনাকে জিজ্ঞাসা করলাম, "এখন কোথায় যাচ্ছি আমরা? বাড়িতে না অন্য কোথাও?"
"এত বছর ধরে চাকরি করছো, অথচ এখনও একটা জমি কিনতে পেরেছো, নাকি একটাও ইঁট গাঁথতে পেরেছো? তাহলে আবার অন্য কোথাও যাওয়ার প্রশ্ন আসছে কোত্থেকে?" নন্দনার এই চাবুকের মতো উত্তর শুনে চুপ করে গেলাম।
আমাদের গন্তব্য স্টেশনে পৌঁছে, প্ল্যাটফর্ম থেকে নেমে একটা অটো ধরে ক্যাম্পাসের সামনে নামলাম। মনে হলো যেন এক যুগ পর ফিরছি এখানে। দেখলাম, নন্দনা ক্যাম্পাসের গেট দিয়ে না ঢুকে আমাদের ক্যাম্পাসের উল্টোদিকেই ফ্যাক্টরি গেট, সেখানে ঢুকে গেলো। আমি অনুসরণ করলাম ওকে। আমাকে অবাক করে দিয়ে ও আমাদের কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার মিস্টার মনিশ ভার্গবের চেম্বারে ঢুকলো। পিছন পিছন চোরের মতো আমিও ঢুকলাম। এই লোকটাই তো দু'দিন আগে আমাকে টার্মিনেশন লেটার ধরিয়ে দিয়েছিলো।
"নমস্কার স্যার, আমি নন্দনা। আপনার সঙ্গে আজ সকালে কথা হয়েছিলো আমার। আপনাকে তো সবকিছুই ফোনে বলেছি। এই ফোনটাতে ডক্টর প্রমোদ গঞ্জালভেসের সম্পূর্ণ স্বীকারোক্তি রয়েছে। যেখানে ও স্বীকার করেছে, কিভাবে এবং কোন কারণের জন্য ও আর রবার্ট মিলে আমার স্বামীকে ফাঁসিয়েছিলো। আর এই নিন সেই পেপারটা, যেটা আপনি চেয়েছিলেন। যেখানে আমার স্বামীকে দিয়ে ও সই করিয়ে নিয়েছিলো। স্যার অনেক আশা নিয়ে আপনার কাছে আমি এসেছি। আপনি যদি তাড়িয়ে দেন, তাহলে মাথা নিচু করে চলে যাবো। কিন্তু আপনি যদি দয়া করে আপনার পায়ে স্থান দেন আমার স্বামীকে, তাহলে আমরা দুবেলা দুমুঠো খেয়েপড়ে অন্তত বাঁচতে পারি।" ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে আমার সই করা ওই কাগজটা বের করে ভার্গবের হাতে দিয়ে অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে কথাগুলো বললো নন্দনা।
"তুমি আমার থেকে বয়সে অনেক ছোট, তাই তোমাকে 'তুমি' করেই বলছি। এই অডিওটা তোমার হাতে এলো কি করে? ওরা এখন কোথায়?" অডিওটা সম্পূর্ণ শোনার পর আর কাগজটা দেখার পর গম্ভীর গলায় জিজ্ঞাসা করলো ভার্গব।
"আমি কিছু জানি না স্যার। এর বেশি আমি আর কিছু বলতে পারবো না। আমি শুধু এইটুকু জানি আমার স্বামীকে বাঁচাতে হবে, আমার স্বামীকে তার হারিয়ে যাওয়া সম্মান ফিরিয়ে দিতে হবে। তাতে আমার যদি জেল হয়, হোক। আপনার গলা শুনে আমার আমার কেনো জানি না মনে হয়েছিলো আপনাকে ভরসা করা যায়। তাই আপনার কাছে এসেছি স্যার।" হাউ হাউ করে কেঁদে উঠে কথাগুলো বলে আমাদের কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজারের পা জড়িয়ে ধরলো নন্দনা।
"ওঠো ওঠো, এসব কি করছো তুমি অফিসের মধ্যে? কেউ দেখে নিলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে। তোমার জায়গা আমার পায়ে নয় আমার বুকে। ইউ আর লাইক মাই ডটার। তুমি আমার মেয়ের মতো। তাই তুমি যদি কোনো ভুল করেও থাকো, বাবার মতো একজন মানুষ হিসেবে তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম এই ভেবে যে, কোনো কিছু ভালো করার জন্য খারাপ কাজ করাটা পাপ নয়, তাকে অন্তত একবার সুযোগ দেওয়া উচিৎ। যে সুযোগটা আমি তোমাকে দিলাম এখন। আর সতর্ক করলাম এই বলে যে, একবার তোমার ভুল ক্ষমা করেছি বলে বারবার করবো না। এটাই প্রথম আর এটাই যেন শেষ হয়। ব্যাস এর বেশি আমি আর কিছু জানতেও চাই না আর কিছু শুনতেও চাই না। স্কাউন্ড্রেল দুটো আর কোনোদিন এখানে ফিরে না এলে, আমার থেকে বেশি খুশি আর কেউ হবে না। আর তোমার স্বামীর মতো একজন করিৎকর্মা জুট ইন্সপেক্টরের জায়গা আমার পায়ে নয়, ওকে মাথায় করে রাখবে এই কোম্পানি। তবে হ্যাঁ, এটাও ওর কাছে শেষ সুযোগ। এরপর যদি আবার কোনো প্রলোভনে পা দিয়ে ভুল করে চিরন্তন, তাহলে সেটাই এই কোম্পানিতে ওর শেষ দিন হবে।"
আবারও অবাক হওয়ার পালা আমার। আজ ওকে দেখে এটা বুঝতে পারলাম দশ বছর কেনো, সারা জীবন ঘর করেও মানুষকে চেনা যায় না। গতকাল ভোররাতে দেখা স্বপ্নটার কথা মনে পড়লো আমার। নন্দনার কর্মের মাধ্যমেই তাহলে আমার পুনর্জন্ম ঘটলো! সতীর পূণ্যে পতির পূণ্য হলো। চোখের কোণাটা জলে ভিজে গেলো আমার।
বিকেলে ঘুম ভাঙার পর দেখলাম নন্দনা আমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিদ্রায় মগ্ন। আর আমার এপাশে শুয়ে অকাতরে ঘুমোচ্ছে বাপ্পা। ওর কোমল শান্ত স্নিগ্ধ ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে ভাবলাম এই মেয়েটাই গতকাল সন্ধে থেকে রাত পর্যন্ত, না না শুধু রাত পর্যন্ত কেনো, আজ সকাল পর্যন্ত কিসব কান্ড ঘটিয়েছে! ওর গালে একটা আলতো করে চুমু খেতেই চোখ মেলে তাকালো নন্দনা। "ছাড়ো আমাকে, উঠতে হবে। অনেক কাজ বাকি। ইশ্ বাপ্পাটা এখনো ঘুমোচ্ছে, ওকে তুলতে হবে, চা করতে হবে .." আড়মোড়া ভেঙে আমার বাহুবন্ধন থেকে মুক্ত হওয়ার প্রয়াস করে ঘুমজড়ানো গলায় কথাগুলো বললো নন্দনা।
"না ছাড়বো না, আজ বিকেলের চা আমি বানাবো। বিয়ের আগে তো সবকিছু আমি একাই করতাম, বিয়ের পর ঘোড়া দেখে খোঁড়া হয়েছি। রাতের জন্য তোমাকে আর কষ্ট করে রুটি, তরকারি বানাতে হবে না। আজ চাইনিজ খাবো আমরা।" কথাগুলো বলে ওকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। তারপর ওর গালে নিজের নাকটা ঘষতে ঘষতে বললাম, "এখন ধীরে ধীরে অনেক কিছুই আমার কাছে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। শুধু কয়েকটা প্রশ্ন খচখচ করছে মনে। সেগুলো ক্লিয়ার না হওয়া পর্যন্ত, তোমাকে কিছুতেই যেতে দেবো না। হার্জিন্দার আর ইউসুফ কিভাবে মারা গেলো সেটা আমি আন্দাজ করতে পারছি। শান্তিদা'র কাছ থেকে সকালে শুনেছিলাম বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজের জন্য সন্ধ্যের পর থেকে নাকি ওই এলাকাটায় সমুদ্রের জলে কারেন্ট দেওয়া থাকে। যেটা এক কিলোমিটারের মধ্যে প্রচন্ড স্ট্রং থাকে, তার বাইরে ধীরে ধীরে স্থিমিত হয়ে যায়। ওই সময় ওই এলাকায় যদি কেউ জলে নামে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে সে স্পটডেড হয়ে যাবে। ওদের ক্ষেত্রেও সেটাই ঘটেছে নিশ্চয়ই। তোমার ব্রা আর প্যান্টি খুঁজতে যাওয়ার সময় বোধহয় কোনো কারণে জলের সঙ্গে ওদের শরীরের কোনো অংশ টাচ হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু তুমি কিউরারি বিষ পেলে কোথা থেকে? মুন্নার ব্যাপারেও শান্তিদা'র কাছ থেকে আগেই আমি শুনেছি। তবে ওর সঙ্গে তোমার যোগাযোগ হলো কি করে? এই সবকিছু আমাকে খুলে বলো।"
"ওই পাঞ্জাবীটা আর ইউসুফের মৃত্যুর ব্যাপারে তোমার আন্দাজ একেবারে ঠিক। তবে আমি পরে মুন্নার থেকে যেটুকু শুনেছি সেটাই বলছি। আমার অন্তর্বাসগুলো তো জঞ্জালের মধ্যে জলের আওতার অনেকটাই বাইরে পড়েছিলো; তাই ওগুলো খুঁজতে ওদের দুজনকে প্ল্যান করে পাঠানো হলেও, ওরা নিজের ইচ্ছেতে জলে মোটেও পা দেয়নি। অন্ধকারে নৌকার আড়ালে মিশকালো মুন্না সাক্ষাৎ যমদূতের মতো অপেক্ষা করছিলো ওদের জন্য। ওরা ওখানে গিয়ে পৌঁছাতেই পিছন থেকে বাঁশ দিয়ে ওদের মাথায় মারে মুন্না। অতর্কিত এই আক্রমণে ওরা প্রচন্ড আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মাটিতে পড়ে কিছুটা সেন্সলেস অবস্থায় চলে যেতেই, ওদেরকে পাঁজাকোলা করে তুলে জলের মধ্যে ছুঁড়ে ফেলে দেয় মুন্না .. বাকিটা ইতিহাস। ছায়াকে তুমি বোধহয় চিনতে পারোনি। না পারারই কথা। আমাদের বিয়েতে এক ঝলক দেখেছিলে হয়তো ওকে, অতদিন আগেকার কথা, মনে না পড়াই স্বাভাবিক। এমনকি দিদিভাইও ওকে চিনতে পারেনি। আমাদের গ্রামের মেয়ে ছায়া। ওরা যাতে বেদেনী .. সাপ নিয়ে ওদের কারবার। আমার বিয়ের পর শুনেছিলাম ছায়াকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মেয়েটা আমাদের গ্রাম থেকে হঠাৎ উধাও হয়ে গিয়েছে। এতবছর পর ওকে রূপনগরে যেদিন প্রথম দেখলাম, নিজের উচ্ছ্বাস ধরে রাখা আমার পক্ষে মুশকিল হয়ে পড়েছিলো। তবুও নিজেকে সংযত করে, সবার অলক্ষে ওকে নিজের বিপদের কথা জানিয়েছিলাম। ওই আমাকে কিউরারি বিষ এনে দেয় আর ওর বরের সাহায্যে আমাদের পুরো প্ল্যানটা সাকসেসফুল করতে সাহায্য করে।" আমার কাছে আরও সরে এসে, আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বললো নন্দনা। ওর ঘন নিঃশ্বাস আমার মুখের উপর পড়ছিলো।
"তোমার কথাগুলো যত শুনছি আমার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছে। যেন মনে হচ্ছে কোনো রূপকথার গল্প পড়ছি। আচ্ছা, ওদের কোন বিপদ হবে না তো? আর আমাদের? আমাদের যদি কোনো বিপদ হয়?" কিছুটা চিন্তিত হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম নন্দনাকে।
"বিপদ বলতে তুমি পুলিশের কথা বলছো। তাই তো? হ্যাঁ, ওদের খুঁজে না পেয়ে তদন্ত শুরু হবে। ওই বাড়িতে পুলিশ যাওয়ার পর আমাদের সকলের হাতের ছাপ পাবে। কিন্তু ওই ছাপগুলো যে আমাদের হাতের, সেটা পুলিশ জানবে কি করে? ওখানে আমাদের যাওয়ার কোনো ইনফরমেশন এবং প্রমাণ তো পুলিশের কাছে নেই। আমরা গাড়িতে গেছি আর আসার সময় ট্রেনের জেনারেল বগিতে ফিরেছি, রিজার্ভেশন করিনি। তাই আমাদের অস্তিত্বটাই তো অজানা থাকবে তদন্তকারী অফিসারদের কাছে। যে ড্রাইভার আমাদের নিয়ে গেছিলো এই কেলেঙ্কারিতে পড়ার ভয়ে নিজেকে বাঁচাতে সে আর কোনোদিন সামনে আসবে বলে মনে হয় না। রইলো বাকি ওদের পাঁচজনের মোবাইল ফোন। সেগুলোও জলে বিসর্জন করা হয়েছে ওদের মৃতদেহের সঙ্গে। কোনোদিন কঙ্কালের আকারে ওদের মৃতদেহগুলো পাওয়া গেলেও, সিন্ধুতে বিন্দু খোঁজার মতো ফোনগুলো কি আর কোনোদিন খুঁজে পাবে পুলিশেরা? নাকি সেগুলো আর আস্ত থাকবে ততদিন? ছায়ার ওই বাড়িতে কাজ করার কোনো লিখিত প্রমাণ নেই। কেউ দেখেওনি ওকে কোনোদিন। প্রমোদ ওখানে গেলে রান্না করার জন্য কাউকে না কাউকে ডেকে নেয়। এবার ছায়াকে ডেকেছিলো, তাই আমরা বিশেষ করে আমি বেঁচে গেলাম এই যাত্রায়। তবে হ্যাঁ, সব থেকে বেশি রিস্ক নিয়ে কাজ করেছে মুন্না। ও একজন সরকারি কর্মী। ও ধরা পড়লে আমরা আমরা সকলে ফেঁসে যেতাম। কিন্তু আজ সকালে যখন খবর পেলাম কাল মাঝরাতে সবকিছু ঠিকঠাক ভাবে করে ফেলেছে স্বামী-স্ত্রীতে মিলে; তারপর আর আমাদের কোনো চিন্তার কারণ আছে বলে মনে হয় না। এবার উঠি .."
কথাগুলো বলে নন্দনা উঠতে গেলে ওর হাতটা চেপে ধরে বললাম, "লাভ ইউ নন্দনা .. এই ভাবেই নট আউট থেকে ক্রিজে ব্যাটিং করে যাও আর আমার রক্ষাকবচ হয়ে থেকো চিরকাল। একটা কথা বলবো, রাগ করবে না তো? যদি কোনোদিন আমার সেই ভয়ঙ্কর তান্ত্রিক দাদা বিপুল আবার ফিরে আসে, তখন কি হবে?"
"তখন? তখন তোমাদের কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার মনিশ ভার্গব, আমার বাবার মতো একজন মানুষ হিসেবে আমার দ্বিতীয় ভুলটাকেও ক্ষমা করে দেবেন এই ভেবে যে, কোনো কিছু ভালো করার জন্য খারাপ কাজ করাটা পাপ নয়। হিহিহিহি .." কথাগুলো বলে খিলখিল করে হেসে উঠে বাথরুমে ঢুকে গেলো আমার কাছে ক্রমশ রহস্যময়ী হয়ে ওঠা নন্দনা।
ও বাথরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেওয়ার পর, আমার মুখ দিয়ে অস্ফুটে বেরিয়ে এলো, "শাবাশ বাঘিনী .."
আমি এদিক ওদিক তাকাতেই ঝুমা বললো, "বউকে খোঁজা হচ্ছে, তাই তো? ও স্নানে গেছে, এক্ষুনি বেরোবে, আর তোমাকেও তাড়াতাড়ি স্নান করে নিতে বলেছে। ভাতে ভাত চাপিয়ে দিয়েছি, এখান থেকে খেয়ে দেয়ে তারপর বাড়ি যাবে। ও আবার বলছিলো তোমাদের অফিসের নাকি কোন বড়কর্তার সঙ্গে দেখা করবে আজকেই।
আমরা ওখান থেকে তাড়াতাড়ি খেয়েদেয়ে বেরিয়ে পড়লাম বাপ্পাকে নিয়ে। লিলুয়া থেকে ট্রেনে প্রায় আধঘন্টা লাগে আমাদের গন্তব্যের স্টেশনে পৌঁছতে। এমনিতেই পাবলিক প্লেস, সব রকমের কথা বলা যায় না। তার উপর কাল থেকে নন্দনার যার রূপ আমি দেখে আসছি, বলা ভালো ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে ওর পার্সোনালিটির যেভাবে পরিবর্তন ঘটেছে, তাতে করে ওকে কোনো কথা জিজ্ঞেস করার সাহসই পাচ্ছিলাম না আমি। তবুও মনের সাহস যুগিয়ে মৃদুস্বরে নন্দনাকে জিজ্ঞাসা করলাম, "এখন কোথায় যাচ্ছি আমরা? বাড়িতে না অন্য কোথাও?"
"এত বছর ধরে চাকরি করছো, অথচ এখনও একটা জমি কিনতে পেরেছো, নাকি একটাও ইঁট গাঁথতে পেরেছো? তাহলে আবার অন্য কোথাও যাওয়ার প্রশ্ন আসছে কোত্থেকে?" নন্দনার এই চাবুকের মতো উত্তর শুনে চুপ করে গেলাম।
আমাদের গন্তব্য স্টেশনে পৌঁছে, প্ল্যাটফর্ম থেকে নেমে একটা অটো ধরে ক্যাম্পাসের সামনে নামলাম। মনে হলো যেন এক যুগ পর ফিরছি এখানে। দেখলাম, নন্দনা ক্যাম্পাসের গেট দিয়ে না ঢুকে আমাদের ক্যাম্পাসের উল্টোদিকেই ফ্যাক্টরি গেট, সেখানে ঢুকে গেলো। আমি অনুসরণ করলাম ওকে। আমাকে অবাক করে দিয়ে ও আমাদের কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার মিস্টার মনিশ ভার্গবের চেম্বারে ঢুকলো। পিছন পিছন চোরের মতো আমিও ঢুকলাম। এই লোকটাই তো দু'দিন আগে আমাকে টার্মিনেশন লেটার ধরিয়ে দিয়েছিলো।
★★★★
"নমস্কার স্যার, আমি নন্দনা। আপনার সঙ্গে আজ সকালে কথা হয়েছিলো আমার। আপনাকে তো সবকিছুই ফোনে বলেছি। এই ফোনটাতে ডক্টর প্রমোদ গঞ্জালভেসের সম্পূর্ণ স্বীকারোক্তি রয়েছে। যেখানে ও স্বীকার করেছে, কিভাবে এবং কোন কারণের জন্য ও আর রবার্ট মিলে আমার স্বামীকে ফাঁসিয়েছিলো। আর এই নিন সেই পেপারটা, যেটা আপনি চেয়েছিলেন। যেখানে আমার স্বামীকে দিয়ে ও সই করিয়ে নিয়েছিলো। স্যার অনেক আশা নিয়ে আপনার কাছে আমি এসেছি। আপনি যদি তাড়িয়ে দেন, তাহলে মাথা নিচু করে চলে যাবো। কিন্তু আপনি যদি দয়া করে আপনার পায়ে স্থান দেন আমার স্বামীকে, তাহলে আমরা দুবেলা দুমুঠো খেয়েপড়ে অন্তত বাঁচতে পারি।" ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে আমার সই করা ওই কাগজটা বের করে ভার্গবের হাতে দিয়ে অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে কথাগুলো বললো নন্দনা।
"তুমি আমার থেকে বয়সে অনেক ছোট, তাই তোমাকে 'তুমি' করেই বলছি। এই অডিওটা তোমার হাতে এলো কি করে? ওরা এখন কোথায়?" অডিওটা সম্পূর্ণ শোনার পর আর কাগজটা দেখার পর গম্ভীর গলায় জিজ্ঞাসা করলো ভার্গব।
"আমি কিছু জানি না স্যার। এর বেশি আমি আর কিছু বলতে পারবো না। আমি শুধু এইটুকু জানি আমার স্বামীকে বাঁচাতে হবে, আমার স্বামীকে তার হারিয়ে যাওয়া সম্মান ফিরিয়ে দিতে হবে। তাতে আমার যদি জেল হয়, হোক। আপনার গলা শুনে আমার আমার কেনো জানি না মনে হয়েছিলো আপনাকে ভরসা করা যায়। তাই আপনার কাছে এসেছি স্যার।" হাউ হাউ করে কেঁদে উঠে কথাগুলো বলে আমাদের কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজারের পা জড়িয়ে ধরলো নন্দনা।
"ওঠো ওঠো, এসব কি করছো তুমি অফিসের মধ্যে? কেউ দেখে নিলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে। তোমার জায়গা আমার পায়ে নয় আমার বুকে। ইউ আর লাইক মাই ডটার। তুমি আমার মেয়ের মতো। তাই তুমি যদি কোনো ভুল করেও থাকো, বাবার মতো একজন মানুষ হিসেবে তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম এই ভেবে যে, কোনো কিছু ভালো করার জন্য খারাপ কাজ করাটা পাপ নয়, তাকে অন্তত একবার সুযোগ দেওয়া উচিৎ। যে সুযোগটা আমি তোমাকে দিলাম এখন। আর সতর্ক করলাম এই বলে যে, একবার তোমার ভুল ক্ষমা করেছি বলে বারবার করবো না। এটাই প্রথম আর এটাই যেন শেষ হয়। ব্যাস এর বেশি আমি আর কিছু জানতেও চাই না আর কিছু শুনতেও চাই না। স্কাউন্ড্রেল দুটো আর কোনোদিন এখানে ফিরে না এলে, আমার থেকে বেশি খুশি আর কেউ হবে না। আর তোমার স্বামীর মতো একজন করিৎকর্মা জুট ইন্সপেক্টরের জায়গা আমার পায়ে নয়, ওকে মাথায় করে রাখবে এই কোম্পানি। তবে হ্যাঁ, এটাও ওর কাছে শেষ সুযোগ। এরপর যদি আবার কোনো প্রলোভনে পা দিয়ে ভুল করে চিরন্তন, তাহলে সেটাই এই কোম্পানিতে ওর শেষ দিন হবে।"
আবারও অবাক হওয়ার পালা আমার। আজ ওকে দেখে এটা বুঝতে পারলাম দশ বছর কেনো, সারা জীবন ঘর করেও মানুষকে চেনা যায় না। গতকাল ভোররাতে দেখা স্বপ্নটার কথা মনে পড়লো আমার। নন্দনার কর্মের মাধ্যমেই তাহলে আমার পুনর্জন্ম ঘটলো! সতীর পূণ্যে পতির পূণ্য হলো। চোখের কোণাটা জলে ভিজে গেলো আমার।
★★★★
বিকেলে ঘুম ভাঙার পর দেখলাম নন্দনা আমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিদ্রায় মগ্ন। আর আমার এপাশে শুয়ে অকাতরে ঘুমোচ্ছে বাপ্পা। ওর কোমল শান্ত স্নিগ্ধ ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে ভাবলাম এই মেয়েটাই গতকাল সন্ধে থেকে রাত পর্যন্ত, না না শুধু রাত পর্যন্ত কেনো, আজ সকাল পর্যন্ত কিসব কান্ড ঘটিয়েছে! ওর গালে একটা আলতো করে চুমু খেতেই চোখ মেলে তাকালো নন্দনা। "ছাড়ো আমাকে, উঠতে হবে। অনেক কাজ বাকি। ইশ্ বাপ্পাটা এখনো ঘুমোচ্ছে, ওকে তুলতে হবে, চা করতে হবে .." আড়মোড়া ভেঙে আমার বাহুবন্ধন থেকে মুক্ত হওয়ার প্রয়াস করে ঘুমজড়ানো গলায় কথাগুলো বললো নন্দনা।
"না ছাড়বো না, আজ বিকেলের চা আমি বানাবো। বিয়ের আগে তো সবকিছু আমি একাই করতাম, বিয়ের পর ঘোড়া দেখে খোঁড়া হয়েছি। রাতের জন্য তোমাকে আর কষ্ট করে রুটি, তরকারি বানাতে হবে না। আজ চাইনিজ খাবো আমরা।" কথাগুলো বলে ওকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। তারপর ওর গালে নিজের নাকটা ঘষতে ঘষতে বললাম, "এখন ধীরে ধীরে অনেক কিছুই আমার কাছে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। শুধু কয়েকটা প্রশ্ন খচখচ করছে মনে। সেগুলো ক্লিয়ার না হওয়া পর্যন্ত, তোমাকে কিছুতেই যেতে দেবো না। হার্জিন্দার আর ইউসুফ কিভাবে মারা গেলো সেটা আমি আন্দাজ করতে পারছি। শান্তিদা'র কাছ থেকে সকালে শুনেছিলাম বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজের জন্য সন্ধ্যের পর থেকে নাকি ওই এলাকাটায় সমুদ্রের জলে কারেন্ট দেওয়া থাকে। যেটা এক কিলোমিটারের মধ্যে প্রচন্ড স্ট্রং থাকে, তার বাইরে ধীরে ধীরে স্থিমিত হয়ে যায়। ওই সময় ওই এলাকায় যদি কেউ জলে নামে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে সে স্পটডেড হয়ে যাবে। ওদের ক্ষেত্রেও সেটাই ঘটেছে নিশ্চয়ই। তোমার ব্রা আর প্যান্টি খুঁজতে যাওয়ার সময় বোধহয় কোনো কারণে জলের সঙ্গে ওদের শরীরের কোনো অংশ টাচ হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু তুমি কিউরারি বিষ পেলে কোথা থেকে? মুন্নার ব্যাপারেও শান্তিদা'র কাছ থেকে আগেই আমি শুনেছি। তবে ওর সঙ্গে তোমার যোগাযোগ হলো কি করে? এই সবকিছু আমাকে খুলে বলো।"
"ওই পাঞ্জাবীটা আর ইউসুফের মৃত্যুর ব্যাপারে তোমার আন্দাজ একেবারে ঠিক। তবে আমি পরে মুন্নার থেকে যেটুকু শুনেছি সেটাই বলছি। আমার অন্তর্বাসগুলো তো জঞ্জালের মধ্যে জলের আওতার অনেকটাই বাইরে পড়েছিলো; তাই ওগুলো খুঁজতে ওদের দুজনকে প্ল্যান করে পাঠানো হলেও, ওরা নিজের ইচ্ছেতে জলে মোটেও পা দেয়নি। অন্ধকারে নৌকার আড়ালে মিশকালো মুন্না সাক্ষাৎ যমদূতের মতো অপেক্ষা করছিলো ওদের জন্য। ওরা ওখানে গিয়ে পৌঁছাতেই পিছন থেকে বাঁশ দিয়ে ওদের মাথায় মারে মুন্না। অতর্কিত এই আক্রমণে ওরা প্রচন্ড আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মাটিতে পড়ে কিছুটা সেন্সলেস অবস্থায় চলে যেতেই, ওদেরকে পাঁজাকোলা করে তুলে জলের মধ্যে ছুঁড়ে ফেলে দেয় মুন্না .. বাকিটা ইতিহাস। ছায়াকে তুমি বোধহয় চিনতে পারোনি। না পারারই কথা। আমাদের বিয়েতে এক ঝলক দেখেছিলে হয়তো ওকে, অতদিন আগেকার কথা, মনে না পড়াই স্বাভাবিক। এমনকি দিদিভাইও ওকে চিনতে পারেনি। আমাদের গ্রামের মেয়ে ছায়া। ওরা যাতে বেদেনী .. সাপ নিয়ে ওদের কারবার। আমার বিয়ের পর শুনেছিলাম ছায়াকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মেয়েটা আমাদের গ্রাম থেকে হঠাৎ উধাও হয়ে গিয়েছে। এতবছর পর ওকে রূপনগরে যেদিন প্রথম দেখলাম, নিজের উচ্ছ্বাস ধরে রাখা আমার পক্ষে মুশকিল হয়ে পড়েছিলো। তবুও নিজেকে সংযত করে, সবার অলক্ষে ওকে নিজের বিপদের কথা জানিয়েছিলাম। ওই আমাকে কিউরারি বিষ এনে দেয় আর ওর বরের সাহায্যে আমাদের পুরো প্ল্যানটা সাকসেসফুল করতে সাহায্য করে।" আমার কাছে আরও সরে এসে, আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বললো নন্দনা। ওর ঘন নিঃশ্বাস আমার মুখের উপর পড়ছিলো।
"তোমার কথাগুলো যত শুনছি আমার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছে। যেন মনে হচ্ছে কোনো রূপকথার গল্প পড়ছি। আচ্ছা, ওদের কোন বিপদ হবে না তো? আর আমাদের? আমাদের যদি কোনো বিপদ হয়?" কিছুটা চিন্তিত হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম নন্দনাকে।
"বিপদ বলতে তুমি পুলিশের কথা বলছো। তাই তো? হ্যাঁ, ওদের খুঁজে না পেয়ে তদন্ত শুরু হবে। ওই বাড়িতে পুলিশ যাওয়ার পর আমাদের সকলের হাতের ছাপ পাবে। কিন্তু ওই ছাপগুলো যে আমাদের হাতের, সেটা পুলিশ জানবে কি করে? ওখানে আমাদের যাওয়ার কোনো ইনফরমেশন এবং প্রমাণ তো পুলিশের কাছে নেই। আমরা গাড়িতে গেছি আর আসার সময় ট্রেনের জেনারেল বগিতে ফিরেছি, রিজার্ভেশন করিনি। তাই আমাদের অস্তিত্বটাই তো অজানা থাকবে তদন্তকারী অফিসারদের কাছে। যে ড্রাইভার আমাদের নিয়ে গেছিলো এই কেলেঙ্কারিতে পড়ার ভয়ে নিজেকে বাঁচাতে সে আর কোনোদিন সামনে আসবে বলে মনে হয় না। রইলো বাকি ওদের পাঁচজনের মোবাইল ফোন। সেগুলোও জলে বিসর্জন করা হয়েছে ওদের মৃতদেহের সঙ্গে। কোনোদিন কঙ্কালের আকারে ওদের মৃতদেহগুলো পাওয়া গেলেও, সিন্ধুতে বিন্দু খোঁজার মতো ফোনগুলো কি আর কোনোদিন খুঁজে পাবে পুলিশেরা? নাকি সেগুলো আর আস্ত থাকবে ততদিন? ছায়ার ওই বাড়িতে কাজ করার কোনো লিখিত প্রমাণ নেই। কেউ দেখেওনি ওকে কোনোদিন। প্রমোদ ওখানে গেলে রান্না করার জন্য কাউকে না কাউকে ডেকে নেয়। এবার ছায়াকে ডেকেছিলো, তাই আমরা বিশেষ করে আমি বেঁচে গেলাম এই যাত্রায়। তবে হ্যাঁ, সব থেকে বেশি রিস্ক নিয়ে কাজ করেছে মুন্না। ও একজন সরকারি কর্মী। ও ধরা পড়লে আমরা আমরা সকলে ফেঁসে যেতাম। কিন্তু আজ সকালে যখন খবর পেলাম কাল মাঝরাতে সবকিছু ঠিকঠাক ভাবে করে ফেলেছে স্বামী-স্ত্রীতে মিলে; তারপর আর আমাদের কোনো চিন্তার কারণ আছে বলে মনে হয় না। এবার উঠি .."
কথাগুলো বলে নন্দনা উঠতে গেলে ওর হাতটা চেপে ধরে বললাম, "লাভ ইউ নন্দনা .. এই ভাবেই নট আউট থেকে ক্রিজে ব্যাটিং করে যাও আর আমার রক্ষাকবচ হয়ে থেকো চিরকাল। একটা কথা বলবো, রাগ করবে না তো? যদি কোনোদিন আমার সেই ভয়ঙ্কর তান্ত্রিক দাদা বিপুল আবার ফিরে আসে, তখন কি হবে?"
"তখন? তখন তোমাদের কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার মনিশ ভার্গব, আমার বাবার মতো একজন মানুষ হিসেবে আমার দ্বিতীয় ভুলটাকেও ক্ষমা করে দেবেন এই ভেবে যে, কোনো কিছু ভালো করার জন্য খারাপ কাজ করাটা পাপ নয়। হিহিহিহি .." কথাগুলো বলে খিলখিল করে হেসে উঠে বাথরুমে ঢুকে গেলো আমার কাছে ক্রমশ রহস্যময়ী হয়ে ওঠা নন্দনা।
ও বাথরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেওয়ার পর, আমার মুখ দিয়ে অস্ফুটে বেরিয়ে এলো, "শাবাশ বাঘিনী .."
|| পাঠক বন্ধুদের উদ্দেশ্যে ||
এতদিন তোমরা আমার এই সিরিজের পাশে থেকেছো
হয়তো কেউ কেউ আমাকে ভালোবেসেছো
আবার হয়তো কেউ কেউ ঘৃণা করেছো
শুধু একটাই অনুরোধ .. আমাকে ভুলে যেওনা কখনো