13-10-2023, 01:09 PM
পর্ব-৯৪
আমি নার্সিং হোম গিয়ে ডাক্তারের সাথে কথা বললাম। উনি শুনে বললেন - একটু অপেক্ষা করুন আমি একবার পেশেন্টকে চেকাপ করে বলছি।
ডাক্তার কাকলির কেবিনে গিয়ে সব দেখে বললেন - সি ইজ অলরাইট ইউ ক্যান তাকে হার হোম। ফর্মালিটি পূরণ করে আমি দিলীপকে খবর দিলাম তার সাথে কাকলির বাড়িতে আর আমার বাড়িতে। একটু বাদেই দিলীপ এসে গেলো আমরা দুজনে গিয়ে নিশাকে দেখে এলাম আর ডাক্তারের সাথে কথা বোলতে ওনার চেম্বারে গিয়ে দেখি একজন খুব অল্প বয়সী লেডি ডাক্তার। আমরা জানতাম না যে নিশাকে এই ডাক্তারি দেখছে ওনাকে গিয়ে নিশার কথা জিজ্ঞেস করলাম - শুনে ডাক্তার মেয়েটি একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করল - আপনি কি পেশেন্টের স্বামী ?
আমি শুনেই বললাম - না না এই আমার বন্ধু ওর স্ত্রী নিশা। এবার দিলীপকে বলল - আপনার স্ত্রী এখনো দুটোদিন এখানেই থাকবে আমরা রিস্ক নিতে চাইনা। কয়েকটা ওষুধ লিখে দিলেন বললেন - দেখুন ওনার অনেক ব্লিডিং হয়েছে তারজন্য ওনাকে ব্লাড দেওয়া হয়েছে ওনার দেখাশোনা খুব যত্ন নিয়ে করতে হবে। আমি শুনে বললাম - দেখুন ডাক্তার আমরা সব দেখে নেবো। দিলীপকে বলল - আপনি বাইরে যান আমি ওনার সাথে কিছু কথা বলতে চাই। দিলীপ বেরিয়ে যেতে ডাক্তার আমাকে বলল - শুনুন পেশেন্টের দ্বিতীয় ইস্যু আর সম্ভব হবেনা আর সেটা করতে গেলে ওর জীবন হানি হতে পারে তাই আপনার বন্ধুকে পরে বুঝিয়ে বলে দেবেন। আমি একটু চুপ করে থেকে বললাম - ঠিক আছে ম্যাডাম সে আমি বলে দেব তবে নিশার ব্যাপারে আর কিছু যদি জানাতে চান সবটাই আমাকে নির্দ্বিধায় বলতে পারেন। মেয়েটার বয়েস খুবই কম একটু লজ্জা পেয়ে বলল - ঠিক আছে বলছি পেশেন্টের যৌন জীবন আর স্বাভাবিক হবে না। আমি শুনে জিজ্ঞেস করলাম - বৌয়ের সাথে কিছুই করতে পারবে না ? ডাক্তার - না সেটা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছেনা তবে আমি আমার স্যারকে জিজ্ঞেস করেছিলাম উনি সব রিপোর্ট দেখে বলেছেন - সব ঠিক হতে পারে যদি একটা অপারেশন করা যায় আর তাতে বেশ খরচ হবে। আমি শুনে একটু উৎসাহিত জিজ্ঞেস করলাম - তও কত খরচ পড়বে? শুনে বলল - লাখ দুয়েকের থেকে একটু বেশি হবে। আমি শুনে ওকে বললাম -যাই হোক ও আমার বন্ধু আমি সব খরচ করবো। জানেন নিশা বড় ভালো মেয়ে ওর বাবা-মা নেই আমরাই ওর সব। আপনি আমাকে বলেদিন কবে করতে হবে অপারেশন আমি টাকা জোগাড় করছি।
ডাক্তার মেয়েটি কিছুক্ষন আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে বলল - আপনি আপনার বন্ধুর জন্য এতটাকা খরচ করবেন শুনে আমার ভালো লাগছে যে আজকের দিনেও আপনার মতো মানুষ আছে। একটু থেমে বলল - আমি ডক্টর মিরা বোস। আমি শুনে বললাম - আমি সুমন দাস আমি RBI তে চাকরি করি। মিরা আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দিলো আমিও ওর হাতে আমার হাত রাখলাম খুব নরম আর সুন্দর হাতের গড়ন। প্রয়োজনের থেকে বেশি সময় ওর হাতটা আমার হাতের মধ্যে ধরে রাখলাম। এবার মিরা বলল - সুমন বাবু আমার হাতটা ছাড়ুন এবার সারাদিন কি এভাবে হাত ধরে বসে থাকবেন। আমি একটু হেসে হাত ছেড়ে দিয়ে বললাম - সরি এতো সুন্দর হাত আমি এর আগে দেখিনি তাই আর কি ---মিরা হেসে বলল - ঠিক আছে ঠিক আছে অতো ফর্মালিটির দরকার নেই। আমি শুনে বললাম - আর একবার আপনার দুটো হাত একবার ধরতে পারি ? মিরা হেসে জিজ্ঞেস করল - মেয়েদের শুধু হাত ই আপনার ভালো লাগে ? আমি - না না আমার সুন্দরী মেয়েদের দেখলে খুব ভালো লাগে। মিরা এবার একটু জোরে হেসে বলল - আপনি একটা পাগল। আমি ওর দুটো হাতের ওপরে আমার ঠোঁট ছুঁইয়ে চুমু দিলাম আর তাতে মীরার শরীরটা কেঁপে উঠলো। তাই দেখে আমি জিজ্ঞেস করলাম - কি হলো আপনার কি খারাপ লাগলো ? মিরা - নানা খারাপ লাগবে কেন যখন একজন সুপুরুষ কোনো মেয়ের হাতে চুমু দেয় তখন ভালো তো লাগবেই। আমি শুনে বললাম - যাক আমি নিশ্চিন্ত দেখুন আমি রেখে ঢেকে কিছুই বলতে বা করতে পারিনা যা মনে আসে বলেদি। মিরা এবার আমাকে জিজ্ঞেস করল - আপনার দেরি হচ্ছে না তো ? আমি শুনে বললাম - একদমই না আমি সারাদিন আপনার হাত ধরে বসে গল্প করে সময় কাটাতে পারি। মিরা শুনে বলল - ঠিক আছে আমাকে এখন পেশেন্ট দেখতে যেতে হবে বলে একটা কার্ড বের করে আমার হাতে দিয়ে বলল - এই আমার কার্ড আপনি চাইলে রাতে কল করতে পারেন তখন আমি ফ্রি থাকি। আমি জিজ্ঞেস করলাম - আপনার স্বামী থাকেন না ? মিরা - আমার এখনো বিয়েই হয়নি তাই একাই থাকি আমার আসল বাড়ি কৃষ্ণনগর প্রতি সপ্তাহে একবার বাড়ি যাই বাড়িতে মা-বাবা আছেন আর এক বোন ও এখন বিসিএ করছে। আমি তাহলে তো সারারাত কথা বলা যাবে আপনার স্বামী থাকলে সেটা হতো না। মিরা হেসে বলল - আমার জায়গাতে যদি আপনার স্ত্রী হতো তার সাথেও কি সারা রাট গল্প করে কাটিয়ে দিতেন ? আমি বললাম - স্ত্রী সাথে শুধু গল্প হবে না শারীরিক ব্যাপারটাও তো হবে তাইনা। মিরা - আপনি আমার সাথে কথা বললে আপনার স্ত্রীর মনে তো খারাপ ধারণা হতে পারে তাইনা। আমি সাথে সাথে বললাম - আমার স্ত্রী সেরকম মেয়ে নয় আমাকে যেমন ও পুরো স্বাধীনতা দিয়েছে আমিও ওকে দিয়েছি সেদিক থেকে আমার কোনো বাধাই নেই। একটু থেমে বললাম - যাবেন আমার স্ত্রীর সাথে আলাপ করতে ?
মিরা একটু ভেবে বলল - চলুন আমি তো নিশা দেবীকে দেখতে যাচ্ছি তাহলে ওনার সাথেও আলাপ করে নেব। মীরার সাথে বাইরে এসে দেখি কাকলির মা-বাবা এসে গেছেন আমার মা আর এসেছেন সাথে শিউলি। আমাকে দেখে আমার মা বললেন - বাবা কাকলির সব ঠিক আছে তো ?
আমি মিরাকে দেখিয়ে বললাম - যিনি ডাক্তার ম্যাডাম ওনাকে নিয়ে যাচ্ছি কাকলির কাছে একবার চেক করে দেখে নেবেন তাছাড়া কাকলিকে যে ডাক্তার দেখছিলেন উনি বলেই দিয়েছে কাকলি একদম ঠিক আছে। মাকে আবার বললাম - তোমরা বাইরেই থাকো পরে আমি ডেকে নেবো।
আমি আর মিরা কেবিনে ঢুকলাম। মিরা গিয়েই কাকলির হাত ধরে বলল - শরীর ঠিক লাগছে তো দেখুন যদি কোনো অসুবিধা থাকে তো এখনো বলুন। কাকলি বলল - না না আমি একদম ঠিক আছি আমার দিকে তাকিয়ে কাকলি আবার বলল - এই আমার স্বামী সুমন। মিরা শুনে বলল - হ্যা ওনার সাথে আলাপ হয়েছে আপনার সাথে আলাপ করতে এলাম। কাকলি ওকে জিজ্ঞেস করল - তা আলাপ করে কেমন লাগলো ? মিরা - খুব ভালো মানুষ ও মনটা একদম পরিষ্কার। আপনি খুব লাকি যে ওর মতো স্বামী পেয়েছেন। এবার কাকলি মিরাকে বলল - আমি আপনি আপনি করে কথা বলতে পারছিনা তোমার বয়েস আর আমার বয়েস একই হবে তাই আমি তুমি করে বলছি অবশ্য যদি আপত্তি থাকে তো আলাদা কথা।
মিরা শুনে বলল - কোনো আপত্তি নেই তোমাকেও আমার খুব ভালো লেগেছে আজ থেকে আমরা বন্ধু কোনো দরকার হলে আমাকে ফোন করে ডেকে নেবে আমি হাজির হয়ে যাবো। তোমার কর্তার কাছে আমার কার্ড দিয়েছি। দিলীপ কেবিনে ঢুকে বলল - এবার আমাদের বেরোতে হবে গাড়ি এসে গেছে। মিরা আমার হাতে জিনের হাত নিয়ে বলল - তোমাদের সাথে আলাপ করে আমি খুব খুশি তোমরা এসো পরে দেখা হবে আবার।
নার্সিংহোম থেকে বেরিয়ে আমার মা আর কাকলির মা-বাবাকে কাকলিদের বাড়িতে দিয়ে আসতে বললাম। আমি এবার দিলীপকে নিশার ব্যাপারে সব কথা খুলে বললাম। কথা গুলো শুনে দিলীপ মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ল। আমি ওকে সোজা করে বসিয়ে বললাম - কোনো চিন্তা করিস না তুই এখন চ তুই ডাক্তারের সাথে কথা বলে দেখি কবে অপারেশন করবে। দিলীপ শুনে বলল - ভাই অতো টাকাতো আমার নেই রে অপারেশন কি ভাবে করাবো।