13-10-2023, 09:09 AM
পরিতোষের পারিতোষিক
"এই তো তুমি চলে এসেছো। দেখো কে এসেছে? তুমি আমাকে আগে জানাওনি কেন যে পরেশ আমাদের সাথে থাকতে আসছে? আমি তাহলে আগে থেকে গেস্ট রুমটাকে একটু গুছিয়ে-টুছিয়ে রাখতে পারতাম। তুমি না কি বলব, অত্যন্ত ভুলো। চিন্তা করো না। আমি সব ম্যানেজ করে নিয়েছি। এখন একটু লুচি-বেগুনভাজা বানাচ্ছি। চল, তাড়াতাড়ি হাত-মুখ ধুয়ে খেতে বসে পড়ো। পরে জামাকাপড় ছাড়বে।" ছাপাখানার কাজ সেরে বাড়ি ফিরে দরজায় টোকা দিতেই তাঁর রূপসী স্ত্রী শ্রীপর্ণা, ছোট করে পর্ণা, মিষ্টি হেসে তাঁকে সাদর অভ্যর্থনা জানাতে গগনবাবু একেবারে ভড়কে গেলেন।
শ্রী গগন চন্দ্র মালাকার একজন অতি সাদামাটা ভদ্রলোক। তাঁর বয়সও হয়েছে। বর্ষীয়ান নাগরিক হতে আর মাত্র ছয়টি বছর বাকি আছে। তিনি একজন ছোট ব্যবসায়ী। এই ছোট্ট শহরের কলেজ পাড়ায় তিনি একটা ছোট প্রেস চালান। খুবই পরোপকারী মানুষ। ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো তাঁর একটা বদঅভ্যাস। সেই কারণে মাঝেমধ্যেই স্ত্রীয়ের কাছে মুখঝামটা খান। তবুও তাঁর স্বভাবে কোন পরিবর্তন আসেনি। এবারে তিনি একটু বেশিই বাড়াবাড়ি করে ফেলেছেন। কিছুদিন আগে তাঁর গাঁয়ে গিয়ে তাঁর একুশ বছরের ভাগ্নে পরিতোষ কর্মকার ওরফে পরেশকে আগ বাড়িয়ে তাঁর বাড়িতে কিছুদিন থাকতে বলে এসেছেন। পরেশ তাঁর ছোট বোনের ছোট ছেলে। ছোকরাটি বলতে গেলে এক গুণধর রত্ন। যৌবনে পা দিতে না দিতেই একেবারে গোল্লায় গেছে। কলেজ থেকে নাম কাটিয়ে, লেখাপড়ার জলাঞ্জলি দিয়ে, এখন সারাদিন খালি কিছু বখাটে বন্ধুদের সাথে টো টো করে ঘুরে বেড়ায়। সঙ্গদোষে নেশাভান করতে শিখেছে। প্রায় প্রতি রাতেই মদ্যপান করে বাড়ি ফেরে। ছোকরার চরিত্রেরও অবনতি হয়েছে। আজকাল সে এক ভ্রষ্টা বিবাহিতা মহিলার রূপের চটকে মজে, তার স্বামীর অনুপস্থিতে, তাদের বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করছে। ধুমসি মাগী নাকি আবার এক ছেলের মা।
তাঁর বোনের অশ্রুসিক্ত অনুনয়ের সামনে গলে ক্ষির হয়ে, দয়াশীল গগনবাবু তাঁর হাড়বজ্জাত ভাগ্নেটিকে আপন ঘরে রাখতে রাজি হয়ে যান। তাঁর মনে হয়েছিল যে তাঁর ছোট বোন একেবারে উচিত কথাই বলছে। পরেশ বদসঙ্গে মিশে বখে যাচ্ছে। তাঁর ভাগ্নেটিকে যদি গাঁ দূরে সরিয়ে শহরে তাঁর বাড়িতে কিছুদিন রাখা যায়, তাহলে হয়তো সে সত্যিই ভালো হয়ে যাবে। তিনি যদি জানতেন যে খাল কেটে আসলে কুমির ডেকে আনছেন, তাহলে হয়ত অবিবেচকের মত এমন একটা হঠকারী সিদ্ধান্ত নিতে যেতেন না। গগনবাবুর অতি ভালোমানুষীর সুযোগ এর আগে অনেকেই নিয়েছেন আর তাঁর সুন্দরী বউ রণচণ্ডীমূর্তি ধারণ করে সেই নিয়ে বহুবার তাঁকে ভর্ৎসনা করেছে। কিন্তু এইবার সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ভাবে পর্ণাকে খুশি মনে তাঁর সিদ্ধান্তটিকে সমর্থন জানাতে দেখে তিনি বিলকুল তাজ্জব হয়ে গেলেন।
গগনবাবু কিছুটা বিস্মিত, কিছুটা লজ্জিত, আর সর্বাধিক মুগ্ধ চোখে তাঁর চটকদার স্ত্রীয়ের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলেন। পর্ণা একদম সত্যি কথা বলছে। সে রান্না করছিল। তিনি এসে দরজায় কড়া নাড়াতে রান্নাঘর থেকে দৌড়ে এসে দরজা খুলে দিয়েছে। এতক্ষণ সেরান্নাঘরে জ্বলন্ত গ্যাস ওভেনের আঁচের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। তার গা দিয়ে দরদরিয়ে ঘাম ঝরছে। আর পাঁচটা শহুরে আধুনিকা বাঙালী গৃহবধূদের মতো বাড়িতে নাইটি নয়, সে শুধুমাত্র পাতলা সুতির সায়া-ব্লাউজ পরে থাকতেই স্বচ্ছন্দবোধ করে। এমনকি গায়ে শাড়ী পর্যন্ত জড়ায় না। তার দেহে গরম বেশি। একটু গরম পড়লেই সে অতিরিক্ত ঘামে। দিনের অনেক সময় বাড়িতে পর্ণাকে একাই কাটাতে হয়। গগনবাবু সকাল নয়টার মধ্যে কাজে বেরিয়ে যান, আর সন্ধ্যা ছয়টার আগে ঘরে ফেরেন না। তাঁদের কোন সন্তানাদি হয়নি। অতএব সে বাড়ির মধ্যে নিশ্চিন্তে কেবলমাত্র সায়া-ব্লাউজ পরেই চলাফেরা করতে পারে। কেউ এলে পরে, গায়ে শাড়ী চাপিয়ে নেয়। আজ যখন বাড়িতে এক নতুন অতিথির সমাগম হয়েছে, তখন তার শাড়ী পরে থাকার কথা। অবশ্য পরেশ এক অল্পবয়েসী ছোকরা আর সর্বোপরি তাঁদের আপন ভাগ্নে। তাই হয়ত সে আর অনর্থক লজ্জা পেতে যায়নি।
রান্নাঘরের চড়া গরমে পর্ণার গায়ের কাপড়চোপড় সব ঘামে ভিজে জবজব করছে। পাতলা কাপড় বলতে গেলে কতকটা স্বচ্ছ হয়ে উঠেছে। তার সুডৌল শরীরের প্রলুব্ধকর বক্ররেখাগুলি স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। আজ সে হলুদ রঙের সুতির সায়া-ব্লাউজ পরে রয়েছে। ব্লাউজের গলাটা বেশ গভীরভাবে কাটা। এমনকি চারটি হুকের প্রথম দুটোই খোলা। তার বিশাল দুধ দুটো বিয়ের এতগুলো বছর বাদেও দিব্যি খাড়া আছে। কিঞ্চিৎমাত্র নুইয়ে পড়েনি। দুই পর্বতপ্রমাণ দুধের মাঝ বরাবর নির্মিত তার লোভনীয় বিভাজিকাটি বলতে গেলে খানিকটা বেশিই প্রদর্শিত হচ্ছে। পাতলা কাপড়ের তলে তার বুকের বড় বড় বোঁটা দুটো পর্যন্ত আবছা বোঝা যাচ্ছে। পর্ণা তার রসাল নাভির অনেক নিচে সায়া বেঁধেছে। তার হালকা চর্বিযুক্ত থলথলে পেটটাকে সম্পূর্ণ উন্মুক্ত হয়ে আছে। তার ভারী বুকের খাঁজে আর খোলা পেটে অজস্র বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে উঠে তার প্রলোভনসঙ্কুল রূপটিকে আরো বেশি খোলতাই করে তুলেছে। গগনবাবুর মনে হলো যেন বউকে নয়, বরং সাক্ষাৎ যৌনদেবীকে দর্শন করছেন। পর্ণার সাদর অভ্যর্থনা তাঁর কানে প্রবেশ করলো না। তার অপ্সরা সুন্দরী স্ত্রীয়ের ঐশ্বরিক রূপ দেখে সম্পূর্ণ মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে পড়ে তিনি বাড়ির দোরগোড়ায় বোকার মত দাঁড়িয়ে রইলেন।
বৃদ্ধ স্বামীকে বিমূঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে তার দিকে একদৃষ্টিতে চেয়ে থাকতে দেখে পর্ণা হেসে খুন হলো, "আঃ! বলি হচ্ছেটা কি? কি তখন থেকে ফ্যালফ্যাল করে দেখছো বলতো? আমাকে আগে কখনো দেখোনি নাকি? নাকি এখনো দেখতে কিছু বাকি আছে? লক্ষীটি এবার ভিতরে আসো।"
পর্ণা ভালোভাবেই জানে যে তার বয়স্ক স্বামী লোলুপ নজরে আসলে ঠিক কি দেখছে। কিন্তু বুড়োর দৌড় শুধু ওই পর্যন্তই। সুন্দরী বউয়ের লাস্যময়ী শরীরের দিকে ড্যাবড্যাব করে দেখা ছাড়া আর কিছু করার মুরোদ নেই। তার প্রবীণ স্বামী দীর্ঘ দশ বছর যাবৎ শুধু তার ডবকা গতরটার দিকে কেবল তাকিয়েই চলেছে। পর্ণাকে জাপ্টে ধরে যে আদর করবে, বা বিছানায় ফেলে তার রসপূর্ণ দেহটাকে খাবলে খুবলে ভোগ করবে, সেই ইচ্ছে বা ক্ষমতা বুড়োর কোনোটাই নেই। কি ভাবেই বা হবে? একে বুড়ো অক্ষম, তার ওপর আবার হাঁফানির রুগী। একটু খাটাখাটনি করলেই তাঁর দম আটকে যায়। তাই তো তার বৃদ্ধ স্বামী তাকে ছুঁয়েও দেখে না। তার গবদা শরীরটাকে কেবল চোখ দিয়ে গিলেই খুশি থাকে।
এদিকে একটুআধটু আদর খাওয়ার জন্য, পর্ণার তৃষ্ণার্থ দেহখানা সারাদিন শুধু হাঁকপাঁক করে মরে। দীর্ঘ দশ বছর যাবৎ তার গরম গতরখানার দিকে মাঝেমধ্যে কুনজর দেওয়া ছাড়া তার পুরুষত্বহীন স্বামী তার সাথে আর কিছুই করেনি। সোহাগের অভাবে তার কামুক গতরখানা দিনে দিনে যেন আরো বেশি গরম হয়ে উঠছে। তাই তাপমাত্রার পারদ অল্পস্বল্প চড়লেই, সে দরদর করে ঘামে। ভিতরের-বাইরের দুই গরমের ঠেলায় তার প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে ওঠে। মাঝেমধ্যেই দেহের গরম মাথায় চড়ে বসে আর সে মেজাজ হারিয়ে ফেলে। আজকাল পান থেকে চুন খসলেই, সে তার অক্ষম স্বামীকে বেশ করে দুকথা শুনিয়ে দেয়। তাতে গতর না জুড়োলেও, মনটা তো জুড়োয়। বলতে গেলে গগনবাবু তাঁর বদমেজাজি স্ত্রীকে খানিকটা ভয় করেই চলেন। তাই আজ আচমকা বউয়ের মুখে মিষ্টবাণী শুনে তিনি কিছুটা বিভ্রান্ত হয়ে পড়লেন।
পর্ণা আর দাঁড়াল না। কড়াইতে বেগুন পুড়ে যাচ্ছে বলে, পিছন ফিরে তার প্রকাণ্ড পাছার মাংসল দাবনা দুটোতে হিল্লোল তুলে দৌড়ে আবার রান্নাঘরে ঢুকে গেল। গগনবাবু লক্ষ্য করলেন যে তাঁর চটকদার স্ত্রীয়ের ব্লাউজটি পিছন দিকেও অত্যন্ত গভীরভাবে কাটা। পর্ণার চিকন পিঠখানা বলতে গেলে অর্ধেকের বেশি উদলা হয়ে আছে।
পর্ণা তার বৃদ্ধ পতিদেবের থেকে প্রায় পনেরো বছরের ছোট। সে চিরকালই অত্যন্ত কামুকী। কচি বয়সেই সে এঁচোড়ে পেকে গিয়েছিল। মাত্র দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ার সময়ে সতীত্ব হারিয়ে বসে। অবশ্যই সেই জন্য গগনবাবু দায়ী নন। তাঁর সঙ্গে পর্ণার তখনো আলাপ হয়নি। সেই সময়ে দীপ নামক পাড়ার এক সুদর্শন ছোকরার সাথে পর্ণা প্রেম করছে। দুজনে একই ক্লাসে পড়তো। দীপই তার প্রথম প্রেমিক এবং তার সতীচ্ছেদটিও সেই ঘটিয়েছে। তাদের প্রেমটা মাত্র ছয় মাস টিকেছিল। ওই স্বল্প সময়ের মধ্যেই দুই কপোত-কপোতী অন্তত চব্বিশ-পঁচিশ বার সহবাস করে ফেলে। দীপকে লেঙ্গি মারার পর পর্ণা আরো পনেরো জনের বিছানা গরম করেছে। উচ্ছল যৌবনা আর অপরূপ সুন্দরী তার কখনো প্রেমিকের অভাব হয়নি। কচি ছেলে হোক বা বয়স্ক লোক, সকল বয়সের পুরুষেরাই তার গরম দেহে তাদের নোংরা হাত সেঁকার কামনা করতো। কলেজে পড়ার সময়ে তার বর্তমান স্বামীর সাথে পর্ণার প্রথম সাক্ষাৎ। ততদিনে একাধিক ছেলেছোকরার সাথে ঘুরে বেরিয়ে পাড়ায় তার নামে যথেষ্ট কুৎসা রটে গেছে। এমনকি অবাধে প্রেম করতে গিয়ে সে যে বার দুয়েক অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে এবং বাধ্য হয়ে গর্ভপাত করিয়ে আপন সম্মান বাঁচিয়েছে, এমন ভয়ানক গুজবও তার সম্পর্কে রটে গিয়েছিল।
কথায় আছে - যা রটে, তার কিছু বটে। পর্ণার ক্ষেত্রে হয়ত সবটাই। কিশোরী কন্যা হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে তার বাবা শ্রী সুজন ভর মরিয়া হয়ে একজন সুপাত্র খুঁজছিলেন। তিনি হাইকলেজে ইংরেজি পড়াতেন। তাঁকে বেশিদূর যেতে হয়নি। শ্রী গগন মালাকার নামক একজন সজ্জন ব্যক্তি তাঁরই কলেজের কাছে একটি ছোট প্রেস চালাতেন। ভদ্রলোক একজন সৎ চরিত্রের, মৃদুভাষী এবং সহৃদয় ব্যক্তি। সর্বোপরি তাঁর অর্থবল আছে। এক কথায় বলতে গেলে একজন সর্বগুণ সম্পন্ন মানুষ।এমন এক সম্মানিত ব্যক্তির সাথে তার লক্ষীছাড়া মেয়েকে বিয়ে দিতে পারলে, তার জীবনটাই বর্তে যাবে।
সুজনবাবু আর দেরি না করে ওনার পছন্দের পাত্রটিকে বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে বসেন। এক রবিবারে মধ্যাহ্নভোজে ওনার কিশোরী মেয়ের সাথে গগনবাবুর আলাপ হয়। পর্ণার স্বর্গীয় রূপযৌবন দেখে তিনি প্রথম সাক্ষাতেই তার প্রেমে পরে যান। অল্পবয়েসী মেয়েটির দুধে আলতা রঙ, ঢেউ খেলানো লম্বা কালো কুচকুচে চুল, চিকন ত্বক, নিষ্পাপ মুখ, বাঁকা ভুরু, হরিণের মত বড় বড় চোখ, টিকাল নাক, গোলাপের পাপড়ির মত নরম ফুলো ফুলো ঠোঁট, উন্নত বুক আর ভারী নিতম্ব দেখে তাঁর রাতের ঘুম উড়ে যায়। পর্ণার যৌবনোচ্ছল শরীরটাকে ভোগ করার জন্য তিনি পাগল হয়ে ওঠেন। তাই তার বাবা যখন যেচে এসে গগনবাবুর সামনে বিবাহ প্রস্তাব রাখেন, তিনি একবাক্যে রাজি হয়ে যান। এমনকি হবু বউয়ের সম্বন্ধে খোঁজখবর নেবারও প্রয়োজনবোধ করেন না।
পর্ণা অবশ্য এমন পাত্রের সাথে বিয়ে করতে চায়নি যে তার বাবার থেকে মাত্র নয় বছরের ছোট। তদুপরি আবার ভীষণ নীরস। দশটা কথা বললে, একটা জবাব দেয়। সিনেমা দেখতে যায় না। তেমন একটা ঘুরে বেড়াবার শখ নেই। সারাক্ষণ খালি কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকে। আর সুযোগ পেলেই খয়রাত করে থাকে। এমন একজন রসকষহীন আধবুড়ো লোকের সাথে সারাটা জীবন কাটানো তার মত রঙ্গপ্রিয় মেয়ের পক্ষে সত্যিই মুশকিল। পর্ণা প্রথমে এই বিয়েতে কিছুতেই সায় দেয় না। কিন্তু যখন তার মা তার বাবাকে সমর্থন করে তাকে অতিশয় বকাঝকা করেন, তখন তার পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যায়।
শ্রীমতি শীপ্রা ভর স্বামীর সাথে একই কলেজে ইতিহাস পড়াতেন। তিনি অত্যন্ত বিচক্ষণ মহিলা। তাঁর ধিঙ্গি মেয়েকে খুবই ভালোবাসতেন। বলতে গেলে মায়ের আদর পেয়েই পর্ণা ওই কচি বয়সেই অমন বিশ্রীভাবে পেকে উঠেছিল। তখনো পর্যন্ত তিনি তাঁর বেঁড়ে পাকা কন্যাটিকে যা খুশি তাই করার ছাড় দিয়েছিলেন। তিনি বেশ ভাল ভাবেই জানতেন যে দামাল মেয়ের কারণে সমগ্র পরিবারটির কতটা ভয়ঙ্কর সম্মানহানী হচ্ছিল। তবুও এতদিন তাঁর সন্তানস্নেহ তাঁকে অন্ধ এবং বোবা করে রেখেছিল। তবে যখন দেখলেন যে তাঁর কিশোরী কন্যাকে চরম বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে ভগবান স্বয়ং তাঁদেরকে একটি সুবর্ণ সুযোগ দিয়েছেন, তখন আর শীপ্রাদেবী চুপচাপ বসে থাকতে পারলেন না। ভনিতা না করে, তিনি স্পষ্ট কথায় মেয়েকে বুঝিয়ে দিলেন যে তার উড়নচন্ডী স্বভাবের জন্য চারিদিকে তার নামে ঢিঁঢিঁ পড়ে গেছে। পাড়াপড়শি-আত্মীয়স্বজন সবাই তাকে নিয়ে অনেক আজেবাজে কথা বলছে। আশেপাশে তার সম্পর্কে এমনসব কুৎসিত অপবাদ রটেছে, যে সেইসব কথা কানে তুললে পরে কেবলমাত্র কোন বোকাপাঁঠাই তাকে আপন স্ত্রীয়ের স্থান দিতে চাইবে। অতএব যদি পর্ণা সমাজে সসম্মানে বেঁচে থাকতে চায়, তাহলে তার পক্ষে একমাত্র বুদ্ধিমানের কাজ হল, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কারুর গলায় মাল্যদান করা। একবার তার বিয়ে হয়ে গেলে, কেউ আর তার দিকে আঙ্গুল তোলার সাহস দেখাবে না। কেউ তার অতীত ঘাঁটতে যাবে না। সবাই তাকে হাসিমুখে মেনে নেবে। অতএব তার উচিত বাবার দেখা পাত্রটিকে চুপচাপ বিয়ে করে নেওয়া। মায়ের বেদবাক্যে পর্ণার জ্ঞানচক্ষু খুলে যায়। সে আর দ্বিরুক্তি না করে তাঁর উপদেশ মেনে মাত্র উনিশ বছর বয়সে শ্রীমতি গগন চন্দ্র মালাকার হয়ে গেল।
বিয়ের পর থেকে পর্ণা তার মায়ের পরামর্শ যথাসাধ্য মেনে এসেছে। গগনবাবুকে যথাযথ ভালবাসতে না পারলেও তাঁর প্রতি কখনো কর্তব্যের ত্রুটি রাখেনি। সে বিবাহিতা হলেও, তার সুডৌল শরীরের প্রতি পুরুষদের লালসা বিন্দুমাত্র কমেনি। বরং বেড়েছে। কথায় বলে, বিয়ের জল গড়ালে মেয়েরা দেখতে আরো সুন্দরী হয়ে যায়। পর্ণার ক্ষেত্রে অন্তত কথাটি সর্বৈব সত্য হয়ে ফলেছে। বিয়ের পর রোজ রাতে স্বামীর সোহাগ খেয়ে, তার ডাঁসা গতরখানা অতি দ্রুত পরিপক্ক হয়ে উঠেছে। তার বড় বড় বুক-পাছা আরো ভারী হয়েছে। যত সময় পেরিয়েছে, সে পুরনো চালের মত ভাতে বেড়েছে। আরো বেশি লাস্যময়ী হয়ে উঠেছে।
পর্ণার উগ্র যৌন আবেদন সর্বদাই পুরুষমানুষদের মনকে দুর্বল করে এসেছে। কিশোর হোক বা বুড়ো, একবার তার গবদা গতরের দিকে তাকালে সবারই দৃষ্টি আটকে যায়। তদুপরি সে সদালাপী মনোভাবাপন্ন নারী। লোকজনের সাথে হেসে-খেলে মেলামেশা করতে পছন্দ করে। ফলে লম্পট পুরুষেরা মৌমাছির মত মধূর প্রত্যাশায় তার পিছনে সদা ভোঁ ভোঁ করে। বহু বছর ধরে অনেকেই তাকে অনেক ধরণের প্রলোভন দেখিয়েছে। তবে সে ফাঁদে পা দেয়নি। বড়জোর এঁর-ওঁর সাথে ছুটকো-ছাটকা হাসি-মস্করা করেছে। স্বামীর নজর বাঁচিয়ে অল্প-বিস্তর খোলামেলা পোশাকে তাদের সাথে আলগা গা ঢলাঢলি করেছে। তবে কখনো বিবাহ বহির্ভুত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার সাহস দেখায়নি। অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিজের বয়স্ক স্বামীর প্রতি সৎ থেকেছে। সে তার মাকে আঘাত দিতে চায়নি। পর্ণা খুব ভাল করেই জানত যে বিয়ের পর সে যদি কোনধরনের কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে শীপ্রাদেবী কখনোই আর তাঁর মেয়েকে ক্ষমা করবেন না।
অবশ্য, গত মাসে পর্ণার বাবা সুজনবাবু মারা যাওয়ার পরে সমস্ত খেলাটাই পুরো একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে গেছে। তার হিটলার মা আর আগের মতো কঠোর নেই। তিনি হয়তো তাঁর স্বামীর সম্মানের খাতিরে মেয়ের জীবনের লাগামটাকে এতদিন শক্ত হাতে ধরে রেখে দিয়েছিলেন। শিপ্রাদেবী কখনোই তার উচ্ছৃঙ্খল কন্যাকে বিশ্বাস করতে পারেননি। তাঁর আশংকা ছিল যে পর্ণা নির্বোধের মতো কোন অশ্লীল কাণ্ডে লিপ্ত হয়ে অনিবার্যভাবে তার বিয়েটাকে ভেঙে দেবে। তবে বিধবা হওয়ার পর তিনি মেয়ের জীবনে সমস্ত আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। এখন তাঁর বেশিরভাগ সময় প্রভুর নাম জপ করেই কেটে যায়। তার স্বাস্থ্যও আজকাল ভাল যাচ্ছে না। জীবনীশক্তি ফুরিয়ে এসেছে। বলতে গেলে এই পৃথিবীতে তিনি আর মাত্র কয়েক দিনের মেহমান। এদিকে পর্ণাও তার শোকার্ত মাকে নম্র হতে দেখে, এতদিনের বন্দিদশা থেকে মুক্তি লাভের সুযোগ খুঁজছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সেই মৌকা সে পায়নি। সে এতদিন যত্ন সহকারে বাবার শেষকৃত সম্পন্ন করতে ব্যস্ত ছিল। এছাড়াও একজনের মৃত্যুর পর তাঁর কিছু দাপ্তরিক কাজকর্ম অনিবার্যভাবে থেকে যায়। সেইগুলিকেও একটি একটি করে তাকে মেটাতে হয়েছে। তবে পরিস্থিতি বদলানো শুধু সময়ের অপেক্ষা।
প্রতিদানস্বরূপ গগনবাবুও তাঁর রূপবতী স্ত্রীকে ভালোবাসা দিয়ে ভরিয়ে দিয়েছে। তিনিই বউকে আদর করে পর্ণা নামটি দিয়েছেন। যৌবন থাকা কালীন তিনি বিছানায় যথাসম্ভব বউকে খুশি করার চেষ্টা করেন। বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। শীগ্রই তিনি হাঁপানির রুগী হয়ে ওঠেন। তারপর তাঁর পক্ষে আর কিছু করে ওঠা সম্ভব হয় না। অবশ্য যৌনতার অক্ষমতা তিনি টাকা দিয়ে পূরণ করার যথাসাধ্য চেষ্টা করেন। তাঁর প্রেসটি ছোট হলেও ভালই চলে। তিনি তার সুন্দরী স্ত্রীয়ের জীবনে বিলাসিতার অন্তত অভাব রাখেননি। দোতলা বাড়ি-দামি গাড়ি-সোনার গয়না-সাজবার জন্য বিদেশী প্রসাধন সামগ্রী-প্রতি মাসে হাতখরচের টাকা কোনকিছুই বাদ দেননি। বলতে গেলে পর্ণার সমস্ত বায়নাক্কা হাসি মুখে মেনে নিয়েছেন। তাঁর গোঁড়ামি ত্যাগ করে, জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিটিকে অনেক বেশি আধুনিক করে তুলেছেন। তার চটকদার বউয়ের খোলামেলা বেশভূষায় কখনো আপত্তি জানাননি। তাঁর নিজের পছন্দ না হলেও, স্ত্রীকে মাঝেমধ্যে সিনেমায় নিয়ে গেছেন, এদিক-ওদিক থেকে ঘুরিয়ে এনেছেন। রূপসী স্ত্রীকে খুশি রাখতে তাঁর চেষ্টায় কখনো কসুর ছিল না।
অবশ্য সমস্ত ভাল জিনিসই একটা সময়ের পরে শেষ হয়ে যায়। মালাকার দম্পতির ক্ষেত্রেও এর অন্যথা হয়নি। শেষ দশ বছরে স্বামী-স্ত্রীয়ের সম্পর্কে বড়সড় ফাটল ধরেছে। গগনবাবু যতই চেষ্টা করুন না কেন, তার কামবিলাসী বউকে বিছানায় কোনদিনই পুরোপুরি সন্তুষ্ট করতে পারেননি। যাও বা কোনক্রমে ঠেকিয়ে ঠুকিয়ে চালিয়ে নিতে পারছিলেন, বিবাহিত জীবনের মধ্যগগনে এসে এক নিষ্ঠুর দুঃসংবাদ অকস্মাৎ উদয় হয়ে, তাঁদের যৌনজীবনে একেবারে দাঁড়ি টেনে দেয়। বছর দশেক আগে এক মেডিকেল পরীক্ষায় ধরা পরে যে গগনবাবুর শুক্রাণু গণনা মাত্রাতিরিক্ত কম। তিনি কোনদিনই জৈবিকভাবে বাবা হতে পারবেন না। ফার্টিলিটি টেস্টটি গগনবাবু যেচে করেছিলেন। এমনকি তাঁর রূপসী স্ত্রীকেও একরকম জোর করে পরীক্ষায় বসতে বাধ্য করেন। ততদিনে তাঁদের বিবাহিত জীবনের অনেকগুলি বছর পার হয়ে গেছে। অথচ তাঁরা তখনো সন্তানহীন। পিতৃত্বের সুখ পাওয়ার জন্য গগনবাবু রীতিমত মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তাই তিনি একবার পরীক্ষা করে দেখে নিতে চেয়েছিলেন, যে স্বামী-স্ত্রীয়ের মধ্যে কারুর শরীরে কোন সমস্যা রয়েছে কি না। ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাসে, তাঁকেই বেইজ্জত হতে হয়।
অথচ কৈশোর বয়সে দু-দুবার গর্ভপাত করার পরেও, পর্ণা সম্পূর্ণরূপে সুস্থ সাব্যস্ত হয়। অবশ্য তার গর্ভপাতের কথাটা সে তার অক্ষম স্বামীকে কখনই জানতে দেয়নি। জানলে হয়ত গগনবাবু পুরোপুরি ভেঙে পড়তেন। এমনিতেই মেডিকেল রিপোর্টে আপন দুর্ভাগ্যের কথা জানতে পেরে তিনি সম্পূর্ণ আশাহত হয়ে পড়েছিলেন। এই চরম হতাশা থেকে সুন্দরী বউয়ের সাথে সহবাস করার ইচ্ছেটাও তার মন থেকে এমনকি উবে যায়। পর্ণার অবশ্য মা না হতে পারার তেমন কোন দুঃখ ছিল না। সন্তান জন্ম দেওয়া, তারপর তাকে ধীরে ধীরে মানুষ করে তোলা রীতিমত কষ্টসাধ্য কাজ। ওই ভীষণ ঝক্কি নেওয়ার ইচ্ছে তার ছিল না। তার দুরূহ সমস্যা অন্য জায়গায়। প্রবল হতাশায় তার বয়স্ক স্বামী আচমকা ধ্বজভঙ্গ হয়ে পড়ায় সে যথার্থই মুশকিলে পরে গেল। বর অকর্মন্ন হলে, তবুও চলে যায়। কিন্তু সহবাসে সম্পূর্ণ উদাসীন হয়ে পড়লে, একেবারেই চলে না।
"এই তো তুমি চলে এসেছো। দেখো কে এসেছে? তুমি আমাকে আগে জানাওনি কেন যে পরেশ আমাদের সাথে থাকতে আসছে? আমি তাহলে আগে থেকে গেস্ট রুমটাকে একটু গুছিয়ে-টুছিয়ে রাখতে পারতাম। তুমি না কি বলব, অত্যন্ত ভুলো। চিন্তা করো না। আমি সব ম্যানেজ করে নিয়েছি। এখন একটু লুচি-বেগুনভাজা বানাচ্ছি। চল, তাড়াতাড়ি হাত-মুখ ধুয়ে খেতে বসে পড়ো। পরে জামাকাপড় ছাড়বে।" ছাপাখানার কাজ সেরে বাড়ি ফিরে দরজায় টোকা দিতেই তাঁর রূপসী স্ত্রী শ্রীপর্ণা, ছোট করে পর্ণা, মিষ্টি হেসে তাঁকে সাদর অভ্যর্থনা জানাতে গগনবাবু একেবারে ভড়কে গেলেন।
শ্রী গগন চন্দ্র মালাকার একজন অতি সাদামাটা ভদ্রলোক। তাঁর বয়সও হয়েছে। বর্ষীয়ান নাগরিক হতে আর মাত্র ছয়টি বছর বাকি আছে। তিনি একজন ছোট ব্যবসায়ী। এই ছোট্ট শহরের কলেজ পাড়ায় তিনি একটা ছোট প্রেস চালান। খুবই পরোপকারী মানুষ। ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো তাঁর একটা বদঅভ্যাস। সেই কারণে মাঝেমধ্যেই স্ত্রীয়ের কাছে মুখঝামটা খান। তবুও তাঁর স্বভাবে কোন পরিবর্তন আসেনি। এবারে তিনি একটু বেশিই বাড়াবাড়ি করে ফেলেছেন। কিছুদিন আগে তাঁর গাঁয়ে গিয়ে তাঁর একুশ বছরের ভাগ্নে পরিতোষ কর্মকার ওরফে পরেশকে আগ বাড়িয়ে তাঁর বাড়িতে কিছুদিন থাকতে বলে এসেছেন। পরেশ তাঁর ছোট বোনের ছোট ছেলে। ছোকরাটি বলতে গেলে এক গুণধর রত্ন। যৌবনে পা দিতে না দিতেই একেবারে গোল্লায় গেছে। কলেজ থেকে নাম কাটিয়ে, লেখাপড়ার জলাঞ্জলি দিয়ে, এখন সারাদিন খালি কিছু বখাটে বন্ধুদের সাথে টো টো করে ঘুরে বেড়ায়। সঙ্গদোষে নেশাভান করতে শিখেছে। প্রায় প্রতি রাতেই মদ্যপান করে বাড়ি ফেরে। ছোকরার চরিত্রেরও অবনতি হয়েছে। আজকাল সে এক ভ্রষ্টা বিবাহিতা মহিলার রূপের চটকে মজে, তার স্বামীর অনুপস্থিতে, তাদের বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করছে। ধুমসি মাগী নাকি আবার এক ছেলের মা।
তাঁর বোনের অশ্রুসিক্ত অনুনয়ের সামনে গলে ক্ষির হয়ে, দয়াশীল গগনবাবু তাঁর হাড়বজ্জাত ভাগ্নেটিকে আপন ঘরে রাখতে রাজি হয়ে যান। তাঁর মনে হয়েছিল যে তাঁর ছোট বোন একেবারে উচিত কথাই বলছে। পরেশ বদসঙ্গে মিশে বখে যাচ্ছে। তাঁর ভাগ্নেটিকে যদি গাঁ দূরে সরিয়ে শহরে তাঁর বাড়িতে কিছুদিন রাখা যায়, তাহলে হয়তো সে সত্যিই ভালো হয়ে যাবে। তিনি যদি জানতেন যে খাল কেটে আসলে কুমির ডেকে আনছেন, তাহলে হয়ত অবিবেচকের মত এমন একটা হঠকারী সিদ্ধান্ত নিতে যেতেন না। গগনবাবুর অতি ভালোমানুষীর সুযোগ এর আগে অনেকেই নিয়েছেন আর তাঁর সুন্দরী বউ রণচণ্ডীমূর্তি ধারণ করে সেই নিয়ে বহুবার তাঁকে ভর্ৎসনা করেছে। কিন্তু এইবার সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ভাবে পর্ণাকে খুশি মনে তাঁর সিদ্ধান্তটিকে সমর্থন জানাতে দেখে তিনি বিলকুল তাজ্জব হয়ে গেলেন।
গগনবাবু কিছুটা বিস্মিত, কিছুটা লজ্জিত, আর সর্বাধিক মুগ্ধ চোখে তাঁর চটকদার স্ত্রীয়ের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলেন। পর্ণা একদম সত্যি কথা বলছে। সে রান্না করছিল। তিনি এসে দরজায় কড়া নাড়াতে রান্নাঘর থেকে দৌড়ে এসে দরজা খুলে দিয়েছে। এতক্ষণ সেরান্নাঘরে জ্বলন্ত গ্যাস ওভেনের আঁচের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। তার গা দিয়ে দরদরিয়ে ঘাম ঝরছে। আর পাঁচটা শহুরে আধুনিকা বাঙালী গৃহবধূদের মতো বাড়িতে নাইটি নয়, সে শুধুমাত্র পাতলা সুতির সায়া-ব্লাউজ পরে থাকতেই স্বচ্ছন্দবোধ করে। এমনকি গায়ে শাড়ী পর্যন্ত জড়ায় না। তার দেহে গরম বেশি। একটু গরম পড়লেই সে অতিরিক্ত ঘামে। দিনের অনেক সময় বাড়িতে পর্ণাকে একাই কাটাতে হয়। গগনবাবু সকাল নয়টার মধ্যে কাজে বেরিয়ে যান, আর সন্ধ্যা ছয়টার আগে ঘরে ফেরেন না। তাঁদের কোন সন্তানাদি হয়নি। অতএব সে বাড়ির মধ্যে নিশ্চিন্তে কেবলমাত্র সায়া-ব্লাউজ পরেই চলাফেরা করতে পারে। কেউ এলে পরে, গায়ে শাড়ী চাপিয়ে নেয়। আজ যখন বাড়িতে এক নতুন অতিথির সমাগম হয়েছে, তখন তার শাড়ী পরে থাকার কথা। অবশ্য পরেশ এক অল্পবয়েসী ছোকরা আর সর্বোপরি তাঁদের আপন ভাগ্নে। তাই হয়ত সে আর অনর্থক লজ্জা পেতে যায়নি।
রান্নাঘরের চড়া গরমে পর্ণার গায়ের কাপড়চোপড় সব ঘামে ভিজে জবজব করছে। পাতলা কাপড় বলতে গেলে কতকটা স্বচ্ছ হয়ে উঠেছে। তার সুডৌল শরীরের প্রলুব্ধকর বক্ররেখাগুলি স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। আজ সে হলুদ রঙের সুতির সায়া-ব্লাউজ পরে রয়েছে। ব্লাউজের গলাটা বেশ গভীরভাবে কাটা। এমনকি চারটি হুকের প্রথম দুটোই খোলা। তার বিশাল দুধ দুটো বিয়ের এতগুলো বছর বাদেও দিব্যি খাড়া আছে। কিঞ্চিৎমাত্র নুইয়ে পড়েনি। দুই পর্বতপ্রমাণ দুধের মাঝ বরাবর নির্মিত তার লোভনীয় বিভাজিকাটি বলতে গেলে খানিকটা বেশিই প্রদর্শিত হচ্ছে। পাতলা কাপড়ের তলে তার বুকের বড় বড় বোঁটা দুটো পর্যন্ত আবছা বোঝা যাচ্ছে। পর্ণা তার রসাল নাভির অনেক নিচে সায়া বেঁধেছে। তার হালকা চর্বিযুক্ত থলথলে পেটটাকে সম্পূর্ণ উন্মুক্ত হয়ে আছে। তার ভারী বুকের খাঁজে আর খোলা পেটে অজস্র বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে উঠে তার প্রলোভনসঙ্কুল রূপটিকে আরো বেশি খোলতাই করে তুলেছে। গগনবাবুর মনে হলো যেন বউকে নয়, বরং সাক্ষাৎ যৌনদেবীকে দর্শন করছেন। পর্ণার সাদর অভ্যর্থনা তাঁর কানে প্রবেশ করলো না। তার অপ্সরা সুন্দরী স্ত্রীয়ের ঐশ্বরিক রূপ দেখে সম্পূর্ণ মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে পড়ে তিনি বাড়ির দোরগোড়ায় বোকার মত দাঁড়িয়ে রইলেন।
বৃদ্ধ স্বামীকে বিমূঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে তার দিকে একদৃষ্টিতে চেয়ে থাকতে দেখে পর্ণা হেসে খুন হলো, "আঃ! বলি হচ্ছেটা কি? কি তখন থেকে ফ্যালফ্যাল করে দেখছো বলতো? আমাকে আগে কখনো দেখোনি নাকি? নাকি এখনো দেখতে কিছু বাকি আছে? লক্ষীটি এবার ভিতরে আসো।"
পর্ণা ভালোভাবেই জানে যে তার বয়স্ক স্বামী লোলুপ নজরে আসলে ঠিক কি দেখছে। কিন্তু বুড়োর দৌড় শুধু ওই পর্যন্তই। সুন্দরী বউয়ের লাস্যময়ী শরীরের দিকে ড্যাবড্যাব করে দেখা ছাড়া আর কিছু করার মুরোদ নেই। তার প্রবীণ স্বামী দীর্ঘ দশ বছর যাবৎ শুধু তার ডবকা গতরটার দিকে কেবল তাকিয়েই চলেছে। পর্ণাকে জাপ্টে ধরে যে আদর করবে, বা বিছানায় ফেলে তার রসপূর্ণ দেহটাকে খাবলে খুবলে ভোগ করবে, সেই ইচ্ছে বা ক্ষমতা বুড়োর কোনোটাই নেই। কি ভাবেই বা হবে? একে বুড়ো অক্ষম, তার ওপর আবার হাঁফানির রুগী। একটু খাটাখাটনি করলেই তাঁর দম আটকে যায়। তাই তো তার বৃদ্ধ স্বামী তাকে ছুঁয়েও দেখে না। তার গবদা শরীরটাকে কেবল চোখ দিয়ে গিলেই খুশি থাকে।
এদিকে একটুআধটু আদর খাওয়ার জন্য, পর্ণার তৃষ্ণার্থ দেহখানা সারাদিন শুধু হাঁকপাঁক করে মরে। দীর্ঘ দশ বছর যাবৎ তার গরম গতরখানার দিকে মাঝেমধ্যে কুনজর দেওয়া ছাড়া তার পুরুষত্বহীন স্বামী তার সাথে আর কিছুই করেনি। সোহাগের অভাবে তার কামুক গতরখানা দিনে দিনে যেন আরো বেশি গরম হয়ে উঠছে। তাই তাপমাত্রার পারদ অল্পস্বল্প চড়লেই, সে দরদর করে ঘামে। ভিতরের-বাইরের দুই গরমের ঠেলায় তার প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে ওঠে। মাঝেমধ্যেই দেহের গরম মাথায় চড়ে বসে আর সে মেজাজ হারিয়ে ফেলে। আজকাল পান থেকে চুন খসলেই, সে তার অক্ষম স্বামীকে বেশ করে দুকথা শুনিয়ে দেয়। তাতে গতর না জুড়োলেও, মনটা তো জুড়োয়। বলতে গেলে গগনবাবু তাঁর বদমেজাজি স্ত্রীকে খানিকটা ভয় করেই চলেন। তাই আজ আচমকা বউয়ের মুখে মিষ্টবাণী শুনে তিনি কিছুটা বিভ্রান্ত হয়ে পড়লেন।
পর্ণা আর দাঁড়াল না। কড়াইতে বেগুন পুড়ে যাচ্ছে বলে, পিছন ফিরে তার প্রকাণ্ড পাছার মাংসল দাবনা দুটোতে হিল্লোল তুলে দৌড়ে আবার রান্নাঘরে ঢুকে গেল। গগনবাবু লক্ষ্য করলেন যে তাঁর চটকদার স্ত্রীয়ের ব্লাউজটি পিছন দিকেও অত্যন্ত গভীরভাবে কাটা। পর্ণার চিকন পিঠখানা বলতে গেলে অর্ধেকের বেশি উদলা হয়ে আছে।
পর্ণা তার বৃদ্ধ পতিদেবের থেকে প্রায় পনেরো বছরের ছোট। সে চিরকালই অত্যন্ত কামুকী। কচি বয়সেই সে এঁচোড়ে পেকে গিয়েছিল। মাত্র দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ার সময়ে সতীত্ব হারিয়ে বসে। অবশ্যই সেই জন্য গগনবাবু দায়ী নন। তাঁর সঙ্গে পর্ণার তখনো আলাপ হয়নি। সেই সময়ে দীপ নামক পাড়ার এক সুদর্শন ছোকরার সাথে পর্ণা প্রেম করছে। দুজনে একই ক্লাসে পড়তো। দীপই তার প্রথম প্রেমিক এবং তার সতীচ্ছেদটিও সেই ঘটিয়েছে। তাদের প্রেমটা মাত্র ছয় মাস টিকেছিল। ওই স্বল্প সময়ের মধ্যেই দুই কপোত-কপোতী অন্তত চব্বিশ-পঁচিশ বার সহবাস করে ফেলে। দীপকে লেঙ্গি মারার পর পর্ণা আরো পনেরো জনের বিছানা গরম করেছে। উচ্ছল যৌবনা আর অপরূপ সুন্দরী তার কখনো প্রেমিকের অভাব হয়নি। কচি ছেলে হোক বা বয়স্ক লোক, সকল বয়সের পুরুষেরাই তার গরম দেহে তাদের নোংরা হাত সেঁকার কামনা করতো। কলেজে পড়ার সময়ে তার বর্তমান স্বামীর সাথে পর্ণার প্রথম সাক্ষাৎ। ততদিনে একাধিক ছেলেছোকরার সাথে ঘুরে বেরিয়ে পাড়ায় তার নামে যথেষ্ট কুৎসা রটে গেছে। এমনকি অবাধে প্রেম করতে গিয়ে সে যে বার দুয়েক অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে এবং বাধ্য হয়ে গর্ভপাত করিয়ে আপন সম্মান বাঁচিয়েছে, এমন ভয়ানক গুজবও তার সম্পর্কে রটে গিয়েছিল।
কথায় আছে - যা রটে, তার কিছু বটে। পর্ণার ক্ষেত্রে হয়ত সবটাই। কিশোরী কন্যা হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে তার বাবা শ্রী সুজন ভর মরিয়া হয়ে একজন সুপাত্র খুঁজছিলেন। তিনি হাইকলেজে ইংরেজি পড়াতেন। তাঁকে বেশিদূর যেতে হয়নি। শ্রী গগন মালাকার নামক একজন সজ্জন ব্যক্তি তাঁরই কলেজের কাছে একটি ছোট প্রেস চালাতেন। ভদ্রলোক একজন সৎ চরিত্রের, মৃদুভাষী এবং সহৃদয় ব্যক্তি। সর্বোপরি তাঁর অর্থবল আছে। এক কথায় বলতে গেলে একজন সর্বগুণ সম্পন্ন মানুষ।এমন এক সম্মানিত ব্যক্তির সাথে তার লক্ষীছাড়া মেয়েকে বিয়ে দিতে পারলে, তার জীবনটাই বর্তে যাবে।
সুজনবাবু আর দেরি না করে ওনার পছন্দের পাত্রটিকে বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে বসেন। এক রবিবারে মধ্যাহ্নভোজে ওনার কিশোরী মেয়ের সাথে গগনবাবুর আলাপ হয়। পর্ণার স্বর্গীয় রূপযৌবন দেখে তিনি প্রথম সাক্ষাতেই তার প্রেমে পরে যান। অল্পবয়েসী মেয়েটির দুধে আলতা রঙ, ঢেউ খেলানো লম্বা কালো কুচকুচে চুল, চিকন ত্বক, নিষ্পাপ মুখ, বাঁকা ভুরু, হরিণের মত বড় বড় চোখ, টিকাল নাক, গোলাপের পাপড়ির মত নরম ফুলো ফুলো ঠোঁট, উন্নত বুক আর ভারী নিতম্ব দেখে তাঁর রাতের ঘুম উড়ে যায়। পর্ণার যৌবনোচ্ছল শরীরটাকে ভোগ করার জন্য তিনি পাগল হয়ে ওঠেন। তাই তার বাবা যখন যেচে এসে গগনবাবুর সামনে বিবাহ প্রস্তাব রাখেন, তিনি একবাক্যে রাজি হয়ে যান। এমনকি হবু বউয়ের সম্বন্ধে খোঁজখবর নেবারও প্রয়োজনবোধ করেন না।
পর্ণা অবশ্য এমন পাত্রের সাথে বিয়ে করতে চায়নি যে তার বাবার থেকে মাত্র নয় বছরের ছোট। তদুপরি আবার ভীষণ নীরস। দশটা কথা বললে, একটা জবাব দেয়। সিনেমা দেখতে যায় না। তেমন একটা ঘুরে বেড়াবার শখ নেই। সারাক্ষণ খালি কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকে। আর সুযোগ পেলেই খয়রাত করে থাকে। এমন একজন রসকষহীন আধবুড়ো লোকের সাথে সারাটা জীবন কাটানো তার মত রঙ্গপ্রিয় মেয়ের পক্ষে সত্যিই মুশকিল। পর্ণা প্রথমে এই বিয়েতে কিছুতেই সায় দেয় না। কিন্তু যখন তার মা তার বাবাকে সমর্থন করে তাকে অতিশয় বকাঝকা করেন, তখন তার পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যায়।
শ্রীমতি শীপ্রা ভর স্বামীর সাথে একই কলেজে ইতিহাস পড়াতেন। তিনি অত্যন্ত বিচক্ষণ মহিলা। তাঁর ধিঙ্গি মেয়েকে খুবই ভালোবাসতেন। বলতে গেলে মায়ের আদর পেয়েই পর্ণা ওই কচি বয়সেই অমন বিশ্রীভাবে পেকে উঠেছিল। তখনো পর্যন্ত তিনি তাঁর বেঁড়ে পাকা কন্যাটিকে যা খুশি তাই করার ছাড় দিয়েছিলেন। তিনি বেশ ভাল ভাবেই জানতেন যে দামাল মেয়ের কারণে সমগ্র পরিবারটির কতটা ভয়ঙ্কর সম্মানহানী হচ্ছিল। তবুও এতদিন তাঁর সন্তানস্নেহ তাঁকে অন্ধ এবং বোবা করে রেখেছিল। তবে যখন দেখলেন যে তাঁর কিশোরী কন্যাকে চরম বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে ভগবান স্বয়ং তাঁদেরকে একটি সুবর্ণ সুযোগ দিয়েছেন, তখন আর শীপ্রাদেবী চুপচাপ বসে থাকতে পারলেন না। ভনিতা না করে, তিনি স্পষ্ট কথায় মেয়েকে বুঝিয়ে দিলেন যে তার উড়নচন্ডী স্বভাবের জন্য চারিদিকে তার নামে ঢিঁঢিঁ পড়ে গেছে। পাড়াপড়শি-আত্মীয়স্বজন সবাই তাকে নিয়ে অনেক আজেবাজে কথা বলছে। আশেপাশে তার সম্পর্কে এমনসব কুৎসিত অপবাদ রটেছে, যে সেইসব কথা কানে তুললে পরে কেবলমাত্র কোন বোকাপাঁঠাই তাকে আপন স্ত্রীয়ের স্থান দিতে চাইবে। অতএব যদি পর্ণা সমাজে সসম্মানে বেঁচে থাকতে চায়, তাহলে তার পক্ষে একমাত্র বুদ্ধিমানের কাজ হল, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কারুর গলায় মাল্যদান করা। একবার তার বিয়ে হয়ে গেলে, কেউ আর তার দিকে আঙ্গুল তোলার সাহস দেখাবে না। কেউ তার অতীত ঘাঁটতে যাবে না। সবাই তাকে হাসিমুখে মেনে নেবে। অতএব তার উচিত বাবার দেখা পাত্রটিকে চুপচাপ বিয়ে করে নেওয়া। মায়ের বেদবাক্যে পর্ণার জ্ঞানচক্ষু খুলে যায়। সে আর দ্বিরুক্তি না করে তাঁর উপদেশ মেনে মাত্র উনিশ বছর বয়সে শ্রীমতি গগন চন্দ্র মালাকার হয়ে গেল।
বিয়ের পর থেকে পর্ণা তার মায়ের পরামর্শ যথাসাধ্য মেনে এসেছে। গগনবাবুকে যথাযথ ভালবাসতে না পারলেও তাঁর প্রতি কখনো কর্তব্যের ত্রুটি রাখেনি। সে বিবাহিতা হলেও, তার সুডৌল শরীরের প্রতি পুরুষদের লালসা বিন্দুমাত্র কমেনি। বরং বেড়েছে। কথায় বলে, বিয়ের জল গড়ালে মেয়েরা দেখতে আরো সুন্দরী হয়ে যায়। পর্ণার ক্ষেত্রে অন্তত কথাটি সর্বৈব সত্য হয়ে ফলেছে। বিয়ের পর রোজ রাতে স্বামীর সোহাগ খেয়ে, তার ডাঁসা গতরখানা অতি দ্রুত পরিপক্ক হয়ে উঠেছে। তার বড় বড় বুক-পাছা আরো ভারী হয়েছে। যত সময় পেরিয়েছে, সে পুরনো চালের মত ভাতে বেড়েছে। আরো বেশি লাস্যময়ী হয়ে উঠেছে।
পর্ণার উগ্র যৌন আবেদন সর্বদাই পুরুষমানুষদের মনকে দুর্বল করে এসেছে। কিশোর হোক বা বুড়ো, একবার তার গবদা গতরের দিকে তাকালে সবারই দৃষ্টি আটকে যায়। তদুপরি সে সদালাপী মনোভাবাপন্ন নারী। লোকজনের সাথে হেসে-খেলে মেলামেশা করতে পছন্দ করে। ফলে লম্পট পুরুষেরা মৌমাছির মত মধূর প্রত্যাশায় তার পিছনে সদা ভোঁ ভোঁ করে। বহু বছর ধরে অনেকেই তাকে অনেক ধরণের প্রলোভন দেখিয়েছে। তবে সে ফাঁদে পা দেয়নি। বড়জোর এঁর-ওঁর সাথে ছুটকো-ছাটকা হাসি-মস্করা করেছে। স্বামীর নজর বাঁচিয়ে অল্প-বিস্তর খোলামেলা পোশাকে তাদের সাথে আলগা গা ঢলাঢলি করেছে। তবে কখনো বিবাহ বহির্ভুত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার সাহস দেখায়নি। অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিজের বয়স্ক স্বামীর প্রতি সৎ থেকেছে। সে তার মাকে আঘাত দিতে চায়নি। পর্ণা খুব ভাল করেই জানত যে বিয়ের পর সে যদি কোনধরনের কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে শীপ্রাদেবী কখনোই আর তাঁর মেয়েকে ক্ষমা করবেন না।
অবশ্য, গত মাসে পর্ণার বাবা সুজনবাবু মারা যাওয়ার পরে সমস্ত খেলাটাই পুরো একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে গেছে। তার হিটলার মা আর আগের মতো কঠোর নেই। তিনি হয়তো তাঁর স্বামীর সম্মানের খাতিরে মেয়ের জীবনের লাগামটাকে এতদিন শক্ত হাতে ধরে রেখে দিয়েছিলেন। শিপ্রাদেবী কখনোই তার উচ্ছৃঙ্খল কন্যাকে বিশ্বাস করতে পারেননি। তাঁর আশংকা ছিল যে পর্ণা নির্বোধের মতো কোন অশ্লীল কাণ্ডে লিপ্ত হয়ে অনিবার্যভাবে তার বিয়েটাকে ভেঙে দেবে। তবে বিধবা হওয়ার পর তিনি মেয়ের জীবনে সমস্ত আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। এখন তাঁর বেশিরভাগ সময় প্রভুর নাম জপ করেই কেটে যায়। তার স্বাস্থ্যও আজকাল ভাল যাচ্ছে না। জীবনীশক্তি ফুরিয়ে এসেছে। বলতে গেলে এই পৃথিবীতে তিনি আর মাত্র কয়েক দিনের মেহমান। এদিকে পর্ণাও তার শোকার্ত মাকে নম্র হতে দেখে, এতদিনের বন্দিদশা থেকে মুক্তি লাভের সুযোগ খুঁজছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সেই মৌকা সে পায়নি। সে এতদিন যত্ন সহকারে বাবার শেষকৃত সম্পন্ন করতে ব্যস্ত ছিল। এছাড়াও একজনের মৃত্যুর পর তাঁর কিছু দাপ্তরিক কাজকর্ম অনিবার্যভাবে থেকে যায়। সেইগুলিকেও একটি একটি করে তাকে মেটাতে হয়েছে। তবে পরিস্থিতি বদলানো শুধু সময়ের অপেক্ষা।
প্রতিদানস্বরূপ গগনবাবুও তাঁর রূপবতী স্ত্রীকে ভালোবাসা দিয়ে ভরিয়ে দিয়েছে। তিনিই বউকে আদর করে পর্ণা নামটি দিয়েছেন। যৌবন থাকা কালীন তিনি বিছানায় যথাসম্ভব বউকে খুশি করার চেষ্টা করেন। বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। শীগ্রই তিনি হাঁপানির রুগী হয়ে ওঠেন। তারপর তাঁর পক্ষে আর কিছু করে ওঠা সম্ভব হয় না। অবশ্য যৌনতার অক্ষমতা তিনি টাকা দিয়ে পূরণ করার যথাসাধ্য চেষ্টা করেন। তাঁর প্রেসটি ছোট হলেও ভালই চলে। তিনি তার সুন্দরী স্ত্রীয়ের জীবনে বিলাসিতার অন্তত অভাব রাখেননি। দোতলা বাড়ি-দামি গাড়ি-সোনার গয়না-সাজবার জন্য বিদেশী প্রসাধন সামগ্রী-প্রতি মাসে হাতখরচের টাকা কোনকিছুই বাদ দেননি। বলতে গেলে পর্ণার সমস্ত বায়নাক্কা হাসি মুখে মেনে নিয়েছেন। তাঁর গোঁড়ামি ত্যাগ করে, জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিটিকে অনেক বেশি আধুনিক করে তুলেছেন। তার চটকদার বউয়ের খোলামেলা বেশভূষায় কখনো আপত্তি জানাননি। তাঁর নিজের পছন্দ না হলেও, স্ত্রীকে মাঝেমধ্যে সিনেমায় নিয়ে গেছেন, এদিক-ওদিক থেকে ঘুরিয়ে এনেছেন। রূপসী স্ত্রীকে খুশি রাখতে তাঁর চেষ্টায় কখনো কসুর ছিল না।
অবশ্য সমস্ত ভাল জিনিসই একটা সময়ের পরে শেষ হয়ে যায়। মালাকার দম্পতির ক্ষেত্রেও এর অন্যথা হয়নি। শেষ দশ বছরে স্বামী-স্ত্রীয়ের সম্পর্কে বড়সড় ফাটল ধরেছে। গগনবাবু যতই চেষ্টা করুন না কেন, তার কামবিলাসী বউকে বিছানায় কোনদিনই পুরোপুরি সন্তুষ্ট করতে পারেননি। যাও বা কোনক্রমে ঠেকিয়ে ঠুকিয়ে চালিয়ে নিতে পারছিলেন, বিবাহিত জীবনের মধ্যগগনে এসে এক নিষ্ঠুর দুঃসংবাদ অকস্মাৎ উদয় হয়ে, তাঁদের যৌনজীবনে একেবারে দাঁড়ি টেনে দেয়। বছর দশেক আগে এক মেডিকেল পরীক্ষায় ধরা পরে যে গগনবাবুর শুক্রাণু গণনা মাত্রাতিরিক্ত কম। তিনি কোনদিনই জৈবিকভাবে বাবা হতে পারবেন না। ফার্টিলিটি টেস্টটি গগনবাবু যেচে করেছিলেন। এমনকি তাঁর রূপসী স্ত্রীকেও একরকম জোর করে পরীক্ষায় বসতে বাধ্য করেন। ততদিনে তাঁদের বিবাহিত জীবনের অনেকগুলি বছর পার হয়ে গেছে। অথচ তাঁরা তখনো সন্তানহীন। পিতৃত্বের সুখ পাওয়ার জন্য গগনবাবু রীতিমত মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তাই তিনি একবার পরীক্ষা করে দেখে নিতে চেয়েছিলেন, যে স্বামী-স্ত্রীয়ের মধ্যে কারুর শরীরে কোন সমস্যা রয়েছে কি না। ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাসে, তাঁকেই বেইজ্জত হতে হয়।
অথচ কৈশোর বয়সে দু-দুবার গর্ভপাত করার পরেও, পর্ণা সম্পূর্ণরূপে সুস্থ সাব্যস্ত হয়। অবশ্য তার গর্ভপাতের কথাটা সে তার অক্ষম স্বামীকে কখনই জানতে দেয়নি। জানলে হয়ত গগনবাবু পুরোপুরি ভেঙে পড়তেন। এমনিতেই মেডিকেল রিপোর্টে আপন দুর্ভাগ্যের কথা জানতে পেরে তিনি সম্পূর্ণ আশাহত হয়ে পড়েছিলেন। এই চরম হতাশা থেকে সুন্দরী বউয়ের সাথে সহবাস করার ইচ্ছেটাও তার মন থেকে এমনকি উবে যায়। পর্ণার অবশ্য মা না হতে পারার তেমন কোন দুঃখ ছিল না। সন্তান জন্ম দেওয়া, তারপর তাকে ধীরে ধীরে মানুষ করে তোলা রীতিমত কষ্টসাধ্য কাজ। ওই ভীষণ ঝক্কি নেওয়ার ইচ্ছে তার ছিল না। তার দুরূহ সমস্যা অন্য জায়গায়। প্রবল হতাশায় তার বয়স্ক স্বামী আচমকা ধ্বজভঙ্গ হয়ে পড়ায় সে যথার্থই মুশকিলে পরে গেল। বর অকর্মন্ন হলে, তবুও চলে যায়। কিন্তু সহবাসে সম্পূর্ণ উদাসীন হয়ে পড়লে, একেবারেই চলে না।