10-10-2023, 02:29 PM
পর্ব-৯০
দিলীপ -সেকি আর রাতে বাড়িতে ছিল তোর বরের কাছে গিয়ে শুয়েছিল। কাকলি আমার দিকে তাকিয়ে বলল - আমি ছাড়াও তোমার অনেক গুলি প্রেমিকা হয়ে উঠেছে। দাড়াও না কয়েকমাস যেতে দাও আমিও অনেক গুলো প্রেমিক জোগাড় করে নেবো। আমি হেসে বললাম - আমাকে বলবে আমিও জোগাড় করে দিতে পারি। কাকলি শুনে বলল - তোমার দরকার নেই আমি নিজেই জোগাড় করতে পারবো। আমি আর কিছু না বলে চায়ের কাপ দিলীপকে ধরিয়ে দিয়ে কাকলির কাছে গিয়ে ওর মাথা বুকে জড়িয়ে ধরে বললাম - আমার সোনা বৌ আমার দুই ছেলে মেয়ের মা আমি তোমাকে আগের থেকেও অনেক অনেক বেশি ভালো বাসবো। দিলীপ কেবিনে ঢুকে বলল - এই তোর শশুর শাশুড়ি এসেছেন। আমি কাকলিকে ছেড়ে তুলে বসলাম। ওনারা ঢুকে কাকলির কাছে গিয়ে ওকে দেখে জিজ্ঞেস করলো - তোর বাচ্ছা দুটোকে কোথায় নিয়ে গেলো। কাকলি বলল - ওদের নার্স নিয়ে গেছে চেকআপ করতে এখুনি দিয়ে যাবে। কাকলির মা জিজ্ঞেস করলেন - এই ছেলে মেয়েকে বুকের দুধ খাইয়েছিস তো ? কাকলি - হ্যা মা দুটোই খুব পেটুক আমার বুক খালি করে দুধ খেয়েছে। ওর মা শুনে বললেন - এমন কথা বলতে নেই রে মায়ের নজর লাগবে। ওদের কথা বলতে দিয়ে আমি বেরিয়ে এলাম আমার পিছনে দিলীপ। আমি ফোন বের করে অফিসে কল করলাম নিতে ফোন ধরতে জিজ্ঞেস করলাম অশোক তোমাকে পৌঁছে দিয়েছে দেখে ভালো লাগলো। নীতা বলল - তোমাকে দুদিন অফিসে আসতে মানা করেছেনা ডেপুটি। শুনে আমি ভাবছি আমি একা একা কি করবো। আমি ওকে বললাম - এক কাজ করো কাবার্ড থেকে একটা একটা করে ফাইল বের করে ওগুলি স্টাডি করতে থাকো কিছু বুঝতে না পারলে পুতুল ম্যাডামকে জিজ্ঞেস করে নেবে আর তোমার যা যা মনে হয়েছে সেগুলো নোট করে রাখবে আমি গিয়ে দেখবো। আমি আর দিলীপ বাইরে ছিলাম অশোক এসে হাজির আমার কাছে বলল - দাদা আমি সারাদিনই এখানেই থাকবো ডেপুটি স্যার আমাকে তাই বলেছেন। আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম - সকালে কিছু খেয়েছো ? অশোক বলল - না দাদা খেয়ে নেবো। আমি ওকে নিয়ে একটু দূরের একটা ছোট রেস্টুরেন্টে ঢুকে দিলীপ আমি আর অশোক খেয়ে নিলাম। তারপর আবার কাকলির কাছে গেলাম। কাকলির মা আমাকে বললেন - বাবা কাকলিকে এখন থেকে ছাড়লে আমি আমাদের বাড়িতে নিয়ে কয়েক দিন রাখতে চাই তাই তোমার বাবা-মার অনুমতি দরকার। ওনার কথা শেষ হবার আগেই আমার মা-বাবা কেবিনে ঢুকলেন বললেন - এর জন্য অনুমতি নিতে হবে না আমাদের। ওতো আপনাদেরও মেয়ে আপনি যতদিন খুশি ওকে আপনাদের কাছে রাখুন আমাদের দেখতে ইচ্ছে হলে আপনাদের বাড়িতে গিয়ে দেখে আসবো। কাকলির মা হাত তুলে নমস্কার করে বললেন - আপনাদের মতো মানুষের সাথে আত্মিয়তা হওয়াও ভাগ্যের ব্যাপার।
দুদিন বাদে কাকলিকে ছেড়ে দিলো আমি কাকলিকে নিয়ে ওদের বাড়িতে পৌঁছেছি মাত্র সেই সময় দিলীপ ফোন করে মেক বলল - ভাই একবার নার্সিং হোম আসবি নিশাকে লেবার রুমে নিয়ে গেছে আমার খুব ভয় করছে। আমি কথাটা কাকলিকে বলতে ও বলল - তুমি যাও এখুনি দিলীপ বেচারি খুব ভেঙে পড়েছে। আমি আবার নার্সিং হোম এলাম। দিলীপ আমাকে দেখে বলল - তুই এসে গেছিস এখন আর আমার কোনো চিন্তা নেই। আমি ওর কাঁধে হাত দিয়ে বললাম - আমি আছি তোর সাথে সব সময়। একঘন্টা বাদে একজন ওয়ার্ডবয় এসে আমাদের ডেকে ভিতরে নিয়ে গেলো। আমরা লেবার রুমের বাইরে দাঁড়াতে একজন ডাক্তার এগিয়ে এসে বললেন - পেশেন্টের স্বামী কে ? আমি দিলীপকে দেখিয়ে দিলাম। ডাক্তার বললেন - পেশেন্টের শরীর খুব খারাপ অনেক রক্ত পত্ হয়েছে এখুনি রক্ত দিতে বি পজিটিভ আমাদের নার্সিংহোমে এই গ্রূপের রক্ত নেই শিগগিরই এনিয়ে নেবার ব্যবস্থা করুন। আমি শুনেই বললাম - কোথাও যেতে হবে না ডাক্তার বাবু আমি দেব আমার এই গ্রূপেরই রক্ত।
আমাকে নিয়ে লেবার রুমের পাশে একটা রুমে নিয়ে শুইয়ে দিয়ে রক্ত নিতে লাগল। রক্ত নেয়া হয়ে যেতে আমাকে ডাক্তার বলল - আপনি একটু বিশ্রাম করুন আমি পেশেন্টের কাছে যাচ্ছি। একটু সময় শুয়ে থাকার পর বেরিয়ে এলাম একজন নার্স আমাকে একগ্লাস গ্রাম দুধ দিয়ে বলল ইটা এখুনি খেয়ে নিন। আমি বাইরে একটা বেঁচে গিয়ে বসলাম। একটু বাদে দিলীপ এসে নার্সের হাতে ওষুধের একটা প্যাকেট দিয়ে আমার পাশে বসে বলল - ভাই জানিস তুই আজ নিশাকে মরার হাত থেকে বাঁচালি তোর ঋণ আমি কোনোদিনও শোধ করতে পারবোনা। আমি ওর গালে একটা হালকা থাপ্পড় মেরে শালা নেকামি হচ্ছে এসব মেয়েদের মানায় তোকে নয়। দিলীপ দু হাতে কান ধরে বলল গুরু অন্যায় হয়ে গেছে ক্ষমা করে দে তোর অধম ভাইটাকে। নার্স এসে আমাদের জানাল যে ছেলে হয়েছে আর সে সুস্থ আছে। একটু বাদে ডাক্তার এসে দিলীপকে বলল - কোনো চিন্তা নেই বেবি অনেক বড় হওয়াতে আমাদের সিজার করতে হয়েছে আর সেই কারণেই রক্তের প্রযোজন হয়েছে। মা আর বেবি দুজনেই এখন ভালো আছে। আপনারা একবার দেখা করতে পারেন। আমরা ভিতরে গেলাম - নিশার ঠোঁটের ফাঁকে একটা হাসি দেখা গেলো। আমি গিয়ে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বললাম তোমার সব কিছুই ঠিক আছে তোমার এই ক্যালানে বরকে একটু সামলাও দেখো ওর চোখ মুখের কি অবস্থা। নিশা হাত নেড়ে দিলীপকে কাছে ডেকে বলল - এতো চিন্তা কেন করছো সব ঠিক আছে সুমনের মতো মানুষ তোমার কাছে থাকতে কেন এতো চিন্তা করছো। আমি ডাক্তার বাবুর কাছ থেকে শুনলাম তোমার বন্দু রক্ত দিয়েছে শুনেই আমি বুঝে গেছি এ সুমন ছাড়া আর কেউ না। দিলীপ শুনে বলল - আমার তো একটাই বন্ধু কাম ভাই এই সুমন আর কে হতে যাবে।