Poll: এই গল্প কি চলবে
You do not have permission to vote in this poll.
হ্যা ?
100.00%
4 100.00%
না ?
0%
0 0%
Total 4 vote(s) 100%
* You voted for this item. [Show Results]

Thread Rating:
  • 3 Vote(s) - 2.33 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
গল্প-তুইতেই আমি (নতুন রানিং)
#18
?তুইতেই আমি?
লেখিকাঃইসরাত আয়রা ইচ্ছে
পর্বঃ১৩

???
 

এরপরে দুইদিন এভাবেই কেটে গেলো। আমাদের ভালোলাগার গল্প গুলো দিনে দিনে যেন বেড়েই চলছে।। সুযোগ বুঝে আমাকে খাওয়ানো, চুল টেনে দেয়া মাথায় তেল দিয়ে দেয়া।আমার হাতের কাজ কেড়ে নেওয়াই ছিলো আহানের কাজ।

বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি সকালের খুব মিষ্টি একটা রোদ মুখে পরছে।এই রোদ গায়ে পরলে আলাদা ভালো লাগা তৈরি হয়। গায়ে মেখে নেয়া যায় অনায়াসেই। লুকানোর প্রয়োজন হয় না নিজেকে।

পিছন থেকে চুলে টান লাগলো। বুঝতেই পারলাম আহানের কাজ।

-- আহান লাগছে তো আমার

--লাগুক।মেয়েদের সহ্য শক্তি বেশি থাকতে হয় বুঝলি?পৃথিবীতে সব থেকে বেশি ব্যাথা সন্তান প্রসবের ব্যাথা। একটা মেয়ে মানুষ সহ্যের অধিক ব্যাথা সহ্য করে সন্তান পৃথিবীতে আনে। আর তুই কিনা এতেই আহান লাগছে

মানুষটার সভাবই জ্ঞান দেয়া জ্ঞান দেয়া হয়ে গেছে।

-- ওটা সবাই সময় মতো সহ্য করে।আমি সেটা মনে করে এখন ব্যাথা সহ্য করবো নাকি?

-- আচ্ছা ছেড়ে দিলাম। কি রান্না করবি?

--প্রতিদিন যা করি

-- দিনে দিনে তুই অলস হয়ে যাচ্ছিস জানিস তো একদম অলস। তোকে এখন উচিত মাটির কাজ করে যেসব মহিলা অনাদের সাথে একটা বাংলা শাড়ি পরাইয়া নামিয়ে দেয়া।আহ আমার চোখে ভাসছে জানিস তো তাতে যদি অলসতা কাটে। কি সুন্দর হবে সেই দৃশ্য আহ

--আপনি এটা বলতে পারলেন আহান?আপনাকে প্রতি বেলা গরম খাবার খাওয়াই না আমি? 

-- হ্যা প্রযুক্তিই দিলো তোদের কাজ সহজ করে।

ইচ্ছে মিনমিন করে বললো 
-- আপনি কি করেন হ্যা।শুধু কম্পিউটার ফোন আর আমার পিছনে লাগা

-- দিলি আমার মন ভেঙে দিলি। আমার কাজ নিয়ে কেউ খোটা দিলো না এই জীবনে আর তুই কিনা কি সাহস তোর 

--সরি আহান আমি আর কখনো বলবো না

এর মধ্যেই ইচ্ছের ফোনে কল এলো। 

-- কিরে ফোন আসছে ধর

-- হুম ধরছি।

-- আমি যাব?পারসোনাল ফোন হতে পারে

--না যাবেন কেন?আর কিসের পারসনাল? এক মিনিট  

ইচ্ছে দিপুর ফোন রিসিভ করলো।ওপাশের কথা শুনা যাচ্ছে না।
-- হ্যা হ্যালো দোস্ত। 
.হ্যা ভালো আছি তুই কেমন আছিস?
.আজ বিকেলে? নারে আসতে পারবো না। সমস্যায় আছি।
. এমন কি কাজ যে আজ দেখা করতেই হবে?
.অস্থির? কেন? কি অপেক্ষা করতে পারছিস না কিছুই বুঝতে পারছি না.
. আচ্ছা আসবো। হ্যা কথা দিলাম আসবো। ওরে বাবা হ্যা আসবো। 

ফোন কাটতেই আহান জিজ্ঞেস করলো
-- কি বললো তোর দিপু

-- আমার দিপু কখন হলো?

-- ওই হইলে হয় বল

-- বললো বিকালে দেখা করতে।আপনি কি বিজি আহান?নইলে আপনি আমার সাথে যাবেন। 

-- হ্যা তুই না বললেও যেতাম। আফটার অল আমার...

-- কি?

-- চিনি

--মানে?

-- চিনি চিনি সুগার

-- আমি সুগার?

-- হু

-- কি জানি বাবা আপনার কথা আমি৷ বুঝি না

-- বুঝাতে বলিও না

???

বিকেল বেলা দিপুর সাথে দেখা করতে যাব তাই তৈরি হয়ে নিলাম।আহানকে গিয়ে দেখি সে হাতের ওয়াচ আটকাচ্ছে।কি হ্যান্ডসাম লাগছে।খোচা খোচা চাপ দাড়িই যেন তার সৌন্দর্য বৃদ্ধির প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি তার দিকে অপলকভাবে তাকিয়ে আছি। সে কখন আমার সামনে এলো খেয়াল করতেই পারি নি।

-- দেখা হয়ে গেলে চল চারটা বেজে গেছে।

-- আর একটু দেখি না

-- না আর দেখে না

ঘোরের মধ্যে কথাটা বলে ফেললাম খেয়ালি করি নি।সেও সাভাবিকভাবেই নিলো।তাই আর কথা বাড়িয়ে লজ্জায় পরার মানেই হয় না।হাত ধরে টানতে টানতেই নিচ পর্যন্ত নিলো। দরজা লক করে বাইক নিয়ে আমার সামনে দাড়ালো। 

-- উঠ

উঠে বসতেই বললো

-- আমার কিন্তু বার বার ব্রেক কষার রোগ আছে সামনের দিক সামলানোর দায়িত্ব তোর... পরে আমায় খারাপ ভাবিস না।আমি ভালো নিসন্দেহে ভালো ছেলে।কলেজ কলেজে আমার মেইলি খারাপ রেকর্ড নেই।

দাত খিচিয়ে বললাম 
-- জানি আহান।আমি আমাকে খুব সামলে রাখবো। আপনাকে আমার সামনের বিষয় নিয়ে টেনশনে মাথা ফাটাতে হবে না কেমন?

-- নাহ ফাটাচ্ছি না।আমি ভদ্র ছেলে তো অ্যালার্ট করলাম নইলে বলবি সুযোগ নি

-- হ্যা আহান আপনি ভালো সেটা আমার থেকে কেউ ভালো জানে না।আপনাকে চিনলে একমাত্র আমিই চিনি

-- তুই আমার চরিত্রের দিকে আঙুল তুললি?

আস্তে করে বললাম
-- চোরের মনে... বাকিটুক বাকিই রাখলাম।আহান হয়তো শুনতে পায় নি।নইলে আমার গর্দান যেত।আহান আপনি যাবেন কিনায়ায়ায়ায়া

-- যাচ্ছি তো।

এই বলে বাইক চলতে শুরু করলো।

--তা দিপু ভাইর কাছে যাওয়ার এতো তাড়া কেন?

-- আমার অনেক তাড়া আহান।তাড়া ছাড়া আমার চলেই না।আমার সব কিছুতে তাড়া...শুধু আপনি জানেন না বোঝেন না

-- হ্যা ভাবার বিষয়। ভেব্ব দেখবো জানা যায় কিনা...

???

পার্কে বসে আছি। আমি আহান একপাশে আর দিপু অন্য পাশে।মাথার উপরে বড় ছাতা ছায়া দিচ্ছে।আহান আসায় দিপু বেশ বিরক্ত তা দিপুর চেহারায় স্পষ্ট । কপালে আঙুল টানতে টানতে বলেই ফেললো 

-- আহান ছোট ভাই কি কোনো কাজে এসেছো?

-- হ্যা এই যে আপনি ইচ্ছেকে ডাকলেন। তাই এলাম। বলতে গেলে একপ্রকার কাজেই এসেছি।

-- মাঝে মাঝে তো ইচ্ছেকে আপনি বা আপু করেও ডাকতে পারো

আহান হাল্কা হেসে বললো না পারি না

-- ওহ।সেটা তোমাদের ব্যাপার।আসলে ছোট ভাই আমার ইচ্ছের সাথে আলাদা কিছু কথা আছে। তুমি কি একটু যাবে? 

আহান যে রাগ করেছে তার মুখেই ফুটে উঠেছে।ইচ্ছে তরিঘরি করে বলে উঠল।

-- কেন আহান কেন যাবে? আপনি বসেন আহান।দিপু তুই কি বলবি বল। আহানের সামনে আমার শুনতে প্রবলেম নেই সো তোর বলতে প্রবলেম হবার কথা না নিশ্চয়ই?

-- তোর আপনির সামনে কেমনে বলি আমাদের একটা প্রাইভেসি আছে না?

-- আমাদের ভুল বললি। কই আমার তো প্রাইভেসি নেই।তোর কি এমন কথা যে প্রাইভেসি প্রয়োজন? আমি আদোও বুঝতে পারছি না দিপু

দিপু আহানের দিকে তাকিয়ে হালকা বিরক্তি মাখা অনিচ্ছাকৃত হাসি দিয়ে বললো 
-- অকে আহান তোমার সাথে আমার মোস্ট ইমপরটেন্ট সময়টা শেয়ার করছি।

আহান কোনো উত্তর না দিয়ে হাত মুঠ করে বসে আছে।

--ইচ্ছে একটু দাড়াবি?  

-- কেন?

আমি আহানের দিকে তাকাতে আহান ইশারায় দাড়াতে বললো। 

আহানও উঠে দাঁড়ালো।দিপু এবার আহানের পাশে এসে কানে ফিসফিসিয়ে বললো 

--তুমি দাঁড়ালে কেন শালা বাবু?

-- শালাবাবু আমাকে যে দাঁড়াতেই হবে।

-- মানে?আমি তোমার শালা কেমনে ভাই তুমি আমার শালা...

-- কিছু না দিপু ভাই কাজে যাও

দিপু ইচ্ছের সামনে গিয়ে হুট করে হাটু গেড়ে বসে পরলো।পকেট থেকে একটা ছোট বক্স বের করলো। বক্সটা খুলে একটা আংটি।আংটিটা হাতে নিয়ে বললো 

-- ইচ্ছে উইল ইউ মেরি মি?(কিছুটা থেমে করুন চোখে) আই রিয়েলি লাভ ইউ দোস্ত 

দিপুর এমন কাজে আমি সত্যিই অবাক হয়ে গেছি।অবাকের চরম পর্যায় আমি। আমার সাথে মাঝে মাঝে মজা করে বলতো তুই আমার জিএফ লাগিস।আবার নিজেই বলতো দোস্ত সিরিয়াস নিবি না। আম জোকিং।এর আগেও ফ্রেন্ডস রা একসাথে ঘুরেছি।বাট আজকে এমন কাজ করবে আমার ভাবনার বাইরে।

--এইগুলা কি দিপু।উই আর ফ্রেন্ডস গুড ফ্রেন্ডস। এগুলো কি? প্রথমেই বিয়েতে চলে গেছিস।

দিপু মিষ্টি হেসে বললো 
-- তোকে আমি জীবনে চাই ইচ্ছে।জীবনে পেতে হলে বিয়ে আবশ্যক। রিস্ক নিতে চাই না তাই আগেই বুক করতে চাইছি

এই বলেই আমার হাত ধরতে গেলো খুব সম্ভব আংটি পরানোর জন্য।

আহান এতক্ষণ চুপ করে হাত মুঠ করে সহ্য করেছে কিন্তু আর করলো না।দিপু ধরার আগেই ইচ্চের বাম হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় মুষ্টিবদ্ধ করে নিলো।আহানের এমন কাজে দিপু বেশ আহত হলো।কিছুক্ষণ তাকিয়ে বলেই ফেললো।

-- আহান ওর হাতটা ছাড়ো আমার কাজ সম্পুর্ন হয় নি

-- দিপু ভাই উঠে দাঁড়ান।এভাবে বসিয়ে অপমান করার ইচ্ছা আমার নেই। একটু আগে আপনাকে শালাবাবু বললাম তার জবাব টা মুখে দিতে চাচ্ছি না।আমার কাজেই জবাব পেয়ে যাবেন। 

দিপু অবাক হয়েই উঠে দাড়ালো।
--কি দেখাবে দেখাও।

আহান নিচু হয়ে কয়টা বড় ঘাস ছিড়লো। ঘুরিয়ে পেচিয়ে রিং টাইপের বানালো।

-- দিপু ভাই আমি এই ঘাসের রিংটা ইচ্ছের সামনে ধরবো আর আপনি আপনার সোনার বা ডায়মন্ডের হোয়াটএভার.. রিংটা ইচ্ছের সামনে ধরবেন।দেখেন কি হয়।

দিপু কিছুক্ষণ হাসলো।
-- বোকা তুমি আহান মেয়ে মানুষ চেনো না।তোমার আরও বড় হতে হবে বুঝলে তো।ছোট মানুষ আবেগে পরেছো।ইচ্ছের তোমায় স্নেহ করে। তুমি তার মূল্য দিলে না যাই হোক ছোট মানুষের আবদার রাখতে হয় কে যেন বলেছিলো।তাই তোমার কথা রাখলাম

-- উওর না হয় পরেই দিলাম ভাই যা বললাম তাই করেন।

আহান দিপু আমার সামনে রিং দুইটা ধরলো। আমার রিংটা বেছে নিতে একটু কষ্ট হয় নি আর না পরতে হয়েছে দোটানায়।আমি খুব সহজেই আহানের ঘাসের রিং টা ওর হাত থেকে হাতে পরে নিলাম মুখে সীমাহীন হাসির ঝলকানি।এটা ভেবে মন তৃপ্তি পেল যে আহান নিজের জিনিস বুঝে নিতে জানে।আর আহানের ঠোঁটে বাকা হাসি ঝুলে আছে।আমার এমন কাজে দিপুর মাথায় আকাশ ভেঙে পরলো। 

-- তুই এটা কি করলি ইচ্ছে।

আমাকে কোনো উত্তর দিতে হয় নি। তখনই আহান বলে উঠে 

-- দিপু ভাই আপনাকে মেয়েদের সামনে বসিয়ে অপমান করি নি আপনার ভাগ্য ভাবতে পারেন।আহান কাউকে ছেড়ে দেয় না।আবার বড়োদের সম্মানেও কমতি রাখে না।শালাবাবু আপনাকে কেন বলেছি বুঝেছেন আশা করি।ইচ্ছে আমাকে স্নেহ করে না.. কি করে তাও বুঝেছেন অবশ্যই আফটার অল ফিটার তো খান না সেহেতু বোঝার কথা।আয়মান আহানের টাকার অভাব নেই। ওমন ডায়মন্ডে ভরিয়ে দিতে পারবো আমি।আর কি বললেন মেয়েদের চিনি না?ইচ্ছেকে আপনার গোল্ডডিগার মনে হয়? তাহলে সরি টু ছে আপনি মেয়েদের চিনেছেন ইচ্ছেকে চিনেন নি।কিন্তু আমি ইচ্ছেকে চিনেছি অন্য মেয়েদের চিনি নি।আমি ইচ্ছেকে চিনি যখন আমার বয়স ৫ মিনিট । ওর থেকে এতো বছরে দূরে থেকেছি মাত্র ২০দিন।এক বছরের ফ্রেন্ডশিপে কি আর চিনলেন?নাথিং। আমি ওর মধ্যে কখনো বিলাশিতা অহংকার চাহিদা দেখেনি।সো আবারও বলি ইচ্ছেকে চিনতে ভুল করেছেন।আসি দিপু ভাই

আহানের চোখের তীক্ষ্ণ ইশারায় দিপু কেপে উঠলো।এইটুক ছেলের ম্যাচুরিটিতে দিপু সত্যিই অবাক।

আহানের দিকে আমি এক ভালোবাসার দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছি।কি সুন্দর বললেন উনি। এখন খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছে খুব খুব।দিপুকে থ্যাংকস ওর জন্য আমাদের বিষয়টা সহজ হয়ে গেছে।কিন্তু লজ্জা যে বেড়ে গেলো? ধুর তাতে কি ভালোবাসায় লজ্জা বিশেষ ভুমিকা রাখে।ভালোবাসা। 

চলবে,
Like Reply


Messages In This Thread
RE: গল্প-তুইতেই আমি (নতুন রানিং) - by Raj Bai 23 - 17-09-2023, 06:09 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)