Thread Rating:
  • 11 Vote(s) - 3.09 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery হোম ডেলিভারি by avi5774
#19
‘কোন * স্তানি ছেলে?’ আমি জিজ্ঞাস করলাম।
সুবলা মাথা নিচু করে বললো ‘ওই যে মাল দিতে আসে ছেলেটা। বড় সরল ছেলেটা। আমার ভাল লেগে গেছিলো। মনের দিক দিয়ে নয় গো। আমার থেকে তো অনেক ছোট। মালের গন্ডোগোল করলে, মুখ করলে কেমন চুপ করে দাড়িয়ে থাকে।’
এতটুকু বলে সুবলা আবার কেঁদে দিলো, কাঁদতে কাঁদতেই বললো।
আমিই ওকে নষ্ট করেছি। আমিই ডেকেছিলাম। ও এর আগে মেয়েছেলে ছোয়নি পর্যন্ত। ওর কোন দোষ নেই। জানি এটা তোমার বাড়ি, ধরা পরলে তোমার সন্মান নষ্ট হবে, কিন্তু সহ্য করতে পারছিলাম না। শরিরে মনে জ্বালা ধরছিলো। রাতের বেলা ছটফট করতাম মালতির সাথে আমার উনি সজ্জা করছে ভেবে, এসব কথা ভাবতে গা জ্বলে যাচ্ছিলো, ঠিক করে নিয়েছিলাম এমন হাট্টাকাট্টা জোয়ান ছেলের সাথে সজ্জা করলে যেন শোধ নেওয়া হবে। কয়েকদিনেই মনে হচ্ছিলো সব পেয়ে গেছি। ও আমাকে পালিয়ে নিয়ে বিয়েও করবে বলছিলো। রোজ রাতে ও আসছিলো, ভয় লাগলেও বারন করতে পারতাম না। নিজেরও ইচ্ছে ছিলো যে। কিন্তু গ্যাঁজারেটা যে এটা খেয়াল করেছে সেটা বুঝতে পারিনি। একদিন মাঝরাতে ছেলেটা বেরোতেই ওকে ধরেছে, কি নোংরা নোংরা কথা যে বলেছে কি বলবো, বলেছে ঘরের মেয়েকে ফ্রিতে করে যাবি হবেনা। ওর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার জন্যে জোরাজুরি করছিলো, বাধ্য হয়ে আমি আমার থেকে ওকে টাকা দিয়ে ছেলেটাকে ওই জানোয়ারটার হাত থেকে ছারাই। তারপর থেকে ছেলেটাকে পাড়ার লোক দিয়ে মার খাওয়ানোর ভয়ে, আমাকে তোমার কাছে বলে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ছেলেটার থেকে আমার থেকে ও টাকা নেয়। ছেলেটারও নেশা ধরে গেছে আমার শরীরের ওপরে। তাই রাতে আসে আর ওকে টাকা দেয়। কি বলবো দিদি, আমার এই ভুলের জন্যে ও আমাকে বেশ্যা বানিয়ে দিয়েছে। দু দুজন লোককে নিয়ে এসেছিলো ও। আমাকে ওদের সাথে শুতে হয়েছে। আমার হাতে অনেকগুলো করে টাকা দিয়েছিলো লোকগুলো। ওরা চলে যেতেই ও সেগুলো কেড়ে নেয়। আবার বলে কি, নোংরামির পয়সা দিয়ে কি করবি? এতটা খারাপ আমি না, পয়সার জন্যে কাপর তুলবো না। জানি আমার মুখের কথায় তুমি বিশ্বাস করবেনা। ’ এতটুকু বলে সুবলা আবার কেঁদে দিলো।
আমি অনেক কিছুই এখন বুঝতে পারছি, দুইইয়ে দুইয়ে চার করার চেষ্টা করছি।
‘এইরকম একদিন ওই ছেলেটা চলে যাওয়ার পরে আমার ঘরে ঢুকে সিগেরেটে ভরে গাঁজা টানে, তারপর তোমাকে জানিয়ে দেবে এই ভয় দেখিয়ে জোর করে আমাকে ভোগ করে। বলে পাড়ার মধ্যে বেশ্যাগিরি করার জন্যে সাস্তি লোক ডেকে মাথা মুরে মুখে কালি লাগিয়ে ঘোরানো। দিদি কি বলবো, নরক যদি কোথাও থাকে তো ওর সাথে সজ্জা করা নরকভোগ। কুকুর ছাগলে এরকম করেনা, ও যা করে। ছিরে খুরে খায় যেন। নোংরামোর রাজা। কি বলবো, মুখে আনতে ঘেন্না হয়, সেসব কথা। গাঁজা খাবে আর বদামো করবে। কি ভুল যে আমি করলাম। নিজের স্বামির ওপর প্রতিশোধ নিতে গিয়ে কি গাড্ডায় যে পরলাম।
সুবলা কান্নায় ভেঙ্গে পরলো।
আমি চুপ করে মনে মনে সেই রাতের ঘটনার কথা মনে করছি আর সুবলার বর্ননার সাথে মিলিয়ে চলেছি। মিলে যাচ্ছে। ছেলেটা গাঁজা খায় তাহলে। সেই জন্যেই ওরকম এলমেলো হয়ে থাকে রাতের বেলায়। আমি গন্ধ চিনিনা কিন্তু পাড়াগায়ের মেয়ে সুবলা ভুল বলবে না। ও নিশ্চয় জানে গাঁজা কেমন হয়। সেই জন্যেই অদ্ভুত পোড়া পোড়া গন্ধ বেরোয় পশুটার গায়ের থেকে। অনেক রহস্যই আসতে আসতে পরিস্কার হচ্ছে।
আমি কিছুক্ষন চুপ করে রইলাম। তারপর মাথায় এলো রাহুলের ঘরে একবার যদি ঢুকে দেখা যায়, মন বলছে কিছু না কিছু অজানার হদিস পেতে পারি। এই সুযোগ। সুবলাকে পাহাড়ায় রেখে অনায়াসে ওর ঘরে ঢোকা যায়।
সুবলাকে বললাম, ‘ও কে, কোথায় থাকে কিছু জানিস? আমাকে তো বলেছে মুর্শিদাবাদের খুব বড় পরিবারের ছেলে, সেই জন্যেই তো ওকে ভাড়া দিয়েছিলাম।’
‘আমি তো কিছু জানিনা।’
‘তুই জানিস আমি বলছি কি? আমি বলছি কিছু বুঝতে পারিস কি?’
‘না গো।’
‘এক কাজ কর, তুই ওকে বুঝতে দিবিনা যে আমাকে বলে দিয়েছিস। ও আসলে আমি তোর সাথে গম্ভির ভাবেই কথা বলে যাবো, যেন আমি কিছু শুনিনি তোর মুখ থেকে। আর কি করতে হবে সেটা ভেবে বলবো। এখন যেটা দরকার ও আসার আগে ওর ঘরে একবার ঢুকতে হবে। ও আমাদের অনেক বড় ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। সেটা আটকানো দরকার। তুই বারান্দায় দাড়া, ওকে যদি আসতে দেখিস তাহলে আমাকে ডাক দিবি দৌড়ে গিয়ে। আমি ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে ওর ঘরটা খুলে দেখি একটু, কিছু বুঝতে পারি কিনা।

প্রায় দৌড়ে ছাদে গিয়ে পৌছুলাম। ওর ঘর খুলতেই ভ্যাপসা একটা গন্ধ নাকে লাগলো। সত্যি নরক করে রেখেছে এই ঘর। কি ভেবেছিলাম আর কি হোলো। আমি নিজে এই ঘরে ওর সাথে অভিসারের উদ্দেশ্যে এসেছিলাম। মনটা কেমন করে উঠলো মুহুর্তের জন্যে, পরের মুহুর্তে ওর সেই পাশবিক অত্যাচার সবকিছু ছাপিয়ে মনের মধ্যে ভেসে উঠলো।

একটা চামড়ার সুটকেস আছে। অনেক খুজেও সেটার চাবি পেলাম না। সেটা থেকেই হয়তো কিছু সুত্র পেতাম। কিন্তু এই যাত্রায় সেটা হোলোনা। হাতে কত সময় আছে জানিনা। সেদিনের দেখা সেইরকম দানাগুলো ঘরময় পরে রয়েছে। কয়েকটা কুড়িয়ে নিলাম সেখান থেকে। ঘরের কোনে কিছু কাগজ রাখা, ধুলোর আস্তরন পরে গেছে। সেরকম কিছু দেখলাম না ওগুলোর মধ্যে। একটা দুমরানো ট্রেনের টিকিট পেলাম, বনগা থেকে শিয়ালদাহ। তারিখ বুঝতে পারলাম না, কিন্তু অনেকদিন আগের হবে। রাহুল কি তাহলে বনগার ছেলে?
এদিক ওদিক তাকাতে দেখলাম একটা আধোয়া গামছা পরে রয়েছে। হাত দিয়ে সরাতে গিয়ে গা ঘিনিয়ে উঠলো। করকর করছে শক্ত হয়ে। পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে যৌনরস ওটা দিয়ে মোছা হয়েছে। স্বেচ্ছায় এরকম নোংরার মধ্যে মনে হয় কোন মানুষ থাকবেনা।
এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে একটা ডায়েরি দেখতে পেলাম। সেটা চাদরের তলা থেকে উকি মারছে। খুলে দেখি সেই হোম ডেলিভারি যেটার গল্প ও রিয়াকে করছিলো। টেনশানে ভালো করে পরতে পারলাম না। কিন্তু পাতা উলটে বুঝতে পারলাম, এটা ছোটবেলার দেখা হলুদ পাতার পর্ণ গল্পগুলো কে হাড় মানায়। কিভাবে এক বিধবা নিজের জীবনকে উপভোগ করছে এক অল্প বয়েসি ছেলেকে ব্যবহার করে তার বর্ননা মনে হোলো। এখানেও ছেলেটার বিকৃত মনই ফুটে উঠেছে। এখানেও সে মিথ্যচার করেছে। সত্যি কথা বলতে তো পারেনি বরঞ্চ আমাকে এমন ভাবে প্রকাশ করছে যেন আমি ওকে আমার যৌনদাস বানিয়ে রেখেছি। চাদরের তলা থেকেই একটা প্লাস্টিকের প্যাকেট বেরিয়ে এলো, তাতে শুকনো পাতার মতন কিছু রয়েছে। প্যাকেটের তলায় এই বিচিগুলো পরে রয়েছে। এগুলোই কি গাঁজা? নিয়ে যাবো? যদি সন্দেহ করে? আবার চাদর যেরকম অগোছালো ছিলো সেরকম করে দিলাম। যা পেলাম সেগুলো আমি জানতাম। কিন্তু মন বলছে আসল সব কিছু রয়েছে ওই সুটকেসের মধ্যে। ধুলো পরে গেছে, ধরলে বুঝতে পারবে তাই চেষ্টা করলাম না, ধুরন্ধর চিজ ও। বুঝে যেতেই পারে। আবার চাবি বন্ধ করে বেরিয়ে এলাম। সুবলা তখনো রাস্তার দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বারান্দায় । ওকে বিচিগুলো দেখাতেই ও বলে উঠলো এগুলো গাঁজার দানা।
আমি সুবলাকে বললাম ‘তুই ওকে বিন্দুমাত্র বুঝতে দিবিনা আমি জেনে গেছি। বারবার করে বলছি। যেরকম চলছে চলুক।’
‘দিদি তোমার পায়ে পরি, আমি সহ্য করতে পারছিনা আর। কি বলবো তোমাকে, আমি পায়খানা করতে বসতে পারছিনা এমন করেছে ও। আমার উনি অনেক মারধোর করতো, কিন্তু কোনদিন বিছানায় নোংরামো করেনি, গরিব হলেও আমাদেরও ইচ্ছে অনিচ্ছে আছে তো, কোনদিন এরকম করার চেষ্টাই করেনি’ বলে ফুঁপিয়ে উঠলো।
‘দ্যাখ যে করে হোক তুই সামলা, আমার নাম করে তুই যদি ওকে ধমক দিস, তাহলে ও আরো বারাবারি করবে।’ সুবলা অসহায়ের মতন আমার দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষন চুপ করে থেকে জিজ্ঞেস করলো ‘তুমি কেন ওকে ভয় পাচ্ছো?’
আমি কি উত্তর দেবো বুঝতে পারছিনা তবু স্বভাবিক গলায় ওকে বললাম ‘কারন আছে, তোকে এক্ষুনি বলতে পারবো না, তবে সময় মতন সব জানতে পারবি। একটু ধৈর্য্য ধরতে হবে। তবে এটুকু শুনে রাখ এ বাড়িতে ও এমন কিছু হাতে পেয়ে গেছে যেটা ভাঙ্গিয়ে আমাদেরই বাড়ি ছাড়া করতে পারে। তোকে কেন আমাকেও ইচ্ছে করলে ও বিছানায় নিয়ে যেতে পারে। আমি শুধু রিয়াকে বাঁচাতে হবে বলে দাঁতে দাঁত চেপে আছি।’
‘ও দিদি কি বলছো গো? আমার তো হাত পা পেটের ভিতরে ঢুকে যাচ্ছে। পাড়ার ছেলেদের বললে হয় না, মেরে হাত পা ভেঙ্গে ওকে মুর্শিদাবাদে দিয়ে আসতো।’
‘এ হলে তো কবেই বলে দিতাম। ও যা পাপ করছে ওকে ওর মতন সাস্তি দিতে হবে। মারধোর তো নগন্য। ধৈর্য্য ধর।’

রাতের বেলা রিয়ার সাথে কথা বলবো ঠিকই করে রেখেছিলাম। জানি সরাসরি ওকে জিজ্ঞেস করলে ও জেদ ধরে কিছু চেপে যেতে পারে। আমি এখন উভসঙ্কটে, ছলচাতুরি যাই হোক না কেন আমার অভিষ্ট লাভেই সবার লাভ। রিয়াকে আটকাতে পারা সাথে রাহুলকে উতখাত করা। রিয়ার সাথে কথা না বলে অনুরাধার সাথে যোগাযোগ করাটা উচিত হবেনা।

একথা সেকথা বলতে বলতে হঠাত করে আমি সেই রনিতার প্রসঙ্গটা তুললাম। ‘তোর সেই বান্ধবির কি খবর রে?’
‘কার কথা বলছো?’
‘সেই যে টিভিতে দেখেছিলাম, একটা ফ্ল্যাটে ধরা পরেছিলো?’
‘ও হ্যাঁ হ্যাঁ। ও ভালোই আছে। দেশে তো আইন কানুন বলে কিছু আছে নাকি? ওর কোন দোষ নেই ও শাস্তি পাবে কেন? ওকে ফাঁসানো হয়েছিলো।’
‘ফাঁসানো হয়েছিলো? শুধু শুধু ওকে কে ফাঁসাবে?’
‘জানো না কে করতে পারে এসব?’
‘কার কথা বলছিস? অনুরাধার?’
‘আবার কার?’
‘ও আবার অনুরাধার খপ্পরে পরলো কি করে?’
‘সে অনেক গল্প মা। অনুরাধা যে কি জিনিস সেটা যে ওর খপ্পরে পরেছে সে ছাড়া আর কেউ জানেনা। অজগর সাপের মতন। প্যাঁচ মেরে পিশে ফেলবে আর সাথে পুরো গিলে খেয়ে নেবে।’
‘রনিতা কি এখন কলেজে যাচ্ছে?’
‘না?’
‘তাহলে? কি করে ও এখন?’
‘বাড়িতেই থাকে। যা সন্মান নষ্ট হয়েছে ওর তাতে আর লোকসমাজে মুখ দেখানোর উপায় নেই।’
‘ইশ। তোরই বয়েসি একটা মেয়ে, কি অবস্থা, কি বদনাম? শত্রুরও যেন এরকম না হয়।’
‘শত্রুরও যেন এরকম না হয় বলে, বলো শত্রু যেন অনুরাধার মতন না হয়। ওর সময় ঘনিয়ে এসেছে, দেখছো চারপাশে কেমন বদলের হাওয়া উঠেছে, এবার সেটা ঝর হয়ে ওকে উড়িয়ে নিয়ে যাবে। একবার শুধু পালাবদল হতে দাও।’ রিয়াকে খুব উত্তেজিত দেখালো। আমি জানি আমি ধিরে ধিরে হলেও লক্ষ্যের দিকে সঠিক পথে এগোচ্ছি।
‘তাতে তোর কি আর আমার কি? আমাদের তো বদল কিছু হবেনা।’
রিয়া তাচ্ছিল্যের হাসি হেঁসে বললো ‘তোমার হবেনা, তবে আমার হবে? তোমার জগত তো এই রান্নাঘর আর সুবলামাসি। আমি তো বাসে ট্রামে, অটোতে চরে ঘুরে বেরাই, লোকজনের সাথে মেলামেশা করি, আমার কাজে দেবে হয়তো।’
‘তুই আবার রাজনিতি টিতি করছিস নাকি?’
‘রাজনিতি না? অন্যায়ের প্রতিবাদ করছি। সবাই তো করেনা, কেউ যদি না করে তাহলে কি করে হবে?’
‘আমি বাবা এসব বুঝিনা। তবে তোকে একটা কথা বলি, অনুরাধা কিন্তু আমাদের উপকার করেছে, ওর সাথে কোন ঝামেলাই জড়াস না।’
রিয়া একটু থমকে গেল। আমার মুখের দিকে ভালো করে লক্ষ্য করলো। আমি চোখে মুখে বিনতি ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করছি, সাথে আমি যে ব্যাপারটা জানি সেটা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করছি।
‘মা এটা একা অনুরাধা না, অনুরাধাদের মতন লোক শয়ে শয়ে রয়েছে আমাদের আশে পাশে। এদের উচিত শিক্ষা না দিলে এরা একের পর এক অপরাধ করে যাবে। আজ রনিতার হয়েছে কাল যদি আমার হয়, তুমি চাইবেনা এর বিহিত হোক। তুমি জানো রনিতার মা বাবার কি অবস্থা। যার মেয়ের নামে কলগার্ল ছাপ্পা পরেছে তাদের কি হতে পারে?’
‘আমার ভয় লাগে রে। তুই ছাড়া আমার কে আছে বল? এসব কিছুতে জড়িয়ে পরে তোর যদি কোন ক্ষতি হয়ে যায় তো আমার কি হবে একবার ভেবে দ্যাখ।’
‘এই একটা জিনিস। ভয়। এটাকেই ওরা কাজে লাগায়। যদি কিছু হয়ে যায়? কি আর হবে? হয় রেপ করে দেবে, নাহলে মেরে ফেলবে। মেয়ে হয়ে এই দুটো ভয় যদি জয় করা যায় তাহলে দুনিয়ার সাথে লড়া যায়।’
‘একশো তে তো একটা হলেও এরকম ঘটনা ঘটে। যার হচ্ছে তার তো একার কিছু হচ্ছেনা। হচ্ছে সবার। তোর কিছু হলে আমারই সেটা হওয়ার মতন হোলো না কি? না, আমি স্বস্তির নিস্বাস ফেলবো যাক গে মেয়ের হয়েছে হয়েছে, আমার তো কিছু হয়নি। কথাও বলিস। এগুলো কারা পারে, যাদের পিছুটান নেই, তারা।’
‘মা, এই ভেবে যদি সবাই চুপ করে হাত গুটিয়ে বসে থাকে তাহলে কি করে চলবে? সবাই প্রথমে একাই শুরু করে, তারপর সবাই সেটা ফলো করে। তুমি অযথা চিন্তা করবে তাই বলিনি এতদিন, রনিতার ব্যাপার নিয়ে আমরা অনেক দূর পৌছে গেছি। কিছুদিনের মধ্যেই পালের গোদারা জালে পরবে। দেখবে কতসত রাঘব বোয়াল ভেসে ওঠে। আর আমি একা না, অনেকে আছে আমার সাথে। এখন আমার কিছু হয়ে গেলে, এমন কি রাস্তায় যদি আমি গাড়ি চাপাও পরি, তাহলেও ওরা হাড়িকাঠে গলা দেবে। আর কিছুদিন অপেক্ষা করো সব জানতে পারবে।’
‘কি বলছিস তুই? তুই এসবের মধ্যে জড়ালি কেন? হায় ভগবান, এ মেয়ে নিয়ে আমি যে কি করি? অনুরাধা সব বুঝতে পেরে যাবে, তারপর দেখিস কি উতপাত করে।’
‘কিচ্ছু করার ক্ষমতা নেই ওর। মানুষ জেগেছে। দেখলে না সেদিন বাড়ির তলায় ওর দলের একটা ছেলেকে কি বেধরক মার দিলো। রাজ্যের সব জায়গায় এখন পালটা দেওয়া শুরু হয়েছে। এতদিন মানুষ জানতো এদের কিছু করা যায়না, কিন্তু এখন দেখছে প্রতিবাদ করে ফল পাওয়া যাচ্ছে, তাই দলবদ্ধ হচ্ছে, লড়ছে। কলার তুলে ঘোরার দিন শেষ। তারওপর নিরিহ মানুষজন কে এই ভাবে ফাঁসিয়ে দেওয়া আর মেনে নেওয়া হবেনা।’
‘কি করতে চাইছিস তুই?’
‘বললেই তো টেনশান শুরু করবে, আর চোখ মুখ ফুলিয়ে সারাদিন আতঙ্কে থাকবে।’
‘সেতো থাকবো, তাবলে জানবো না তুই কি করছিস, মা হয়ে এটুকু অধিকার তো আছে আমার।’
‘এই তো সেণ্টু দিচ্ছো। আমি তোমাকে জানাতাম, কিন্তু একটা জায়গায় পৌছে জানাবো ভেবেছিলাম, কিন্তু তুমি যখন চাপাচাপি করছো তাহোলে বলি। কিন্তু আমার মাথা ছুয়ে বলো যে এসব কথা কারোর সাথে আলোচনা করবেনা।’
‘হ্যাঁ আমি তো পান মুখে করে গলির মুখে দাঁড়িয়ে লোক খুজি গল্প করার জন্যে, কথাও বলিস না যে কি বলবো।’
‘ওকে ওকে। শোনো। রনিতাকে অনুরাধা ফাসিয়েছে।’
‘সেটাই তো বোঝার চেষ্টা করছি, একটা মেয়ে কি করে ফেঁসে গেলো? তুই তো ফাদে পরিস নি ও পরলো কি করে?’
‘এগুলো অনেক বড় চক্র জানোনা। রনিতা মডেল হওয়ার চেষ্টা করছিলো। দু একটা ছোট খাটো কাজ করলেও সেরকম ভাবে কলকে পাচ্ছিলো না। সব গুন থাকা সত্বেও পাচ্ছিলো না। এর কারন ওর সুপারিস করার জন্যে কেউ ছিলো না। ও বুঝতে পেরেছিলো, যারা এরকম গ্ল্যামার শো করে তাদের তেল দিতে না পারলে এ লাইনে থাকার কোন মানে হয়না। বড় বড় শো এর কর্মকর্তা, সিনেমার প্রযোজক, নির্দেশক কিম্বা হিরোদের থেকে সুপারিস না এলে উঠতি মডেলদের ভাগ্য খোলেনা। আর কি করে এদের কাছাকাছি যেতে হয় সেটা তোমাকে নিশ্চয় বলে দিতে হবেনা। এ লাইনের মেয়েদের এসব ব্যাপার জলভাত। কিন্তু রনিতা দেখতে ন্যাচারাল সুন্দরি হলেও ও এগুলো পছন্দ করতো না। কিন্তু সেই ওকেই অডিশান দেওয়ার নাম করে এক হোটেলে ডেকে নিয়ে গিয়ে ওর সর্বনাশ করে এক নামি ব্যক্তি ও তার কয়েকজন সঙ্গি। এমন কি ওর ছবি ভিডিও করে রেখেছিলো। এরপর জোর করে ওকে এই লাইনে আসতে বাধ্য করে।’
‘তুই কি করে বুঝলি যে রনিতা সব সত্যি কথা বলছে?’
‘অন্তত আমাকে মিথ্যে কথা বলবে না। আর কেনই বা বলবে, এতে তো ওর সন্মান আর ফিরে পাবেনা ও।’
‘আমার খুব ভয় লাগছে রে মা। যা বললি তাতে আমার কেন যে কোন কারুরই ভয় লাগবে। এ ভাবে একটা মেয়ের সর্বনাশ করা...।’
‘তোমাকে বললাম না, এখন পাশা উলটে গেছে। এখন আর অনুরাধাকে ভয় পাওয়ার মতন কিছু নেই। একবার ইলেকশান ডিক্লেয়ার হতে দাও পুলিশ, প্রশাসন আর ওর হাতে থাকবে না, তখন বোমটা ফাটাবো। কামর তো দুরের ব্যাপার, ফোঁস ও করতে পারবেনা। ’
‘দ্যাখ সময় আসলে আমে দুধে এক হয়ে যায়, তখন তুই কিন্তু একা পরে যাবি।’
‘সেরকম সঙ্গে আমি নেই। সবাই বিক্রি হয় না মা। আমার সাথে যে আছে তাকে কেনা মুখের কথা না। তার এক কথায় পুলিশ কমিশনার ও আমাকে টাইম দিয়েছে। ধৈর্য্য ধরে আমার সব কথা শুনেছে। আমাদের সৌভাগ্য যে উনি নিজে এই ব্যাপারে উতসাহ দেখাচ্ছেন।’
‘সেও তো স্বার্থের জন্যেই। এর পেছনেও তো রাজনিতিই আছে। যে লঙ্কায় যায় সেই তো রাবন হয়, দেখছি তো তাই।’
‘উনি রাজনিতির লোক নন, কিন্তু নতুন সরকার হলে মন্ত্রি তো হবেনই। হতে পারে রাজনিতির মাধ্যম, কিন্তু আদপে উনি প্রতিবাদি। আর মা উনার নাম শুনলে তুমিও বুঝবে কেমন লোক।’
‘কে?’
‘আমাদের বাড়িতে উনি এসেছিলেন, মনে পরছে সেই অমিত রায়।’
আমি থমকে গেলাম। কোথাকার জল কোথায় গড়িয়েছে বুঝতে আমার ঘাম ছুটে যাচ্ছে। এই অমিত রায় আমার বাড়ির প্রোমোটিং করতে চলে এলো, এ আবার ভবিষ্যতের শাসক, এ আবার সত্যন্বেষী। আমার অবস্থানটা তাহলে কোথায়। রিয়াকে কিভাবে থামাই। উনিই তো রাহুলের সন্মন্ধে আমাকে সাবধান করেছিলো, তাহলে রাহুলকে চেনে না? আজকে রিয়া রাহুলকে নিয়ে কোথায় গেছিলো? উনি এখানে আসার আগে কি জানতেন না যে এই বাড়িতে রিয়া থাকে? অমিয়দার সাথে পরিচয় বললেন। যে অমিয়দার সাথে অনুরাধার অন্তরের সম্পর্ক। সেই অনুরাধার বিরোধি কারোর সাথে অমিয়দার সখ্যতার কারন কি? মাথা গুলিয়ে যাচ্ছে আমার।
‘তুই কি আজ রাহুলের সাথে বেরিয়েছিলি?’
‘হ্যাঁ। কেন?’
‘না মানে রাহুলও কি এই ব্যাপারে তোকে সাহাজ্য করছে?’
‘না না। আমাদের এক প্রফেসার টিভিতে শো করবেন, কিছু আর্ট কাট আউট লাগবে, সেই জন্যে নিয়ে গেছিলাম।’
‘বাব্বা ও আবার আর্ট করে নাকি? কত গুন? এদিকে ভাড়া দিচ্ছেনা, কাজও করেনা। তারওপর তুই দান খয়রাত করে চলেছিস, খাওয়া দাওয়াও ফ্রী করে দিয়েছিস। সব পেয়ে যাচ্ছে, বিন্দু মাত্র ঘাম না ঝড়িয়ে।’
‘তোমার কিসের এত রাগ বলোতো ওর ওপরে?’
‘ছেলে কাজের হলে এত কিছু বলতাম না। কিছু না করে ধান্দাবাজি করে চলেছে, এমন কি কাজের কথা বলা হোলো সেটাও করছে না, এর পর কি আশা করিস।’
‘হয়তো লজ্জা পাচ্ছে, লোকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাওয়ার দিয়ে আসতে, মুখের ওপর না বলতে পারেনি আমাদের।’ রিয়ার চোখে কৌতুক দেখতে পেলাম।
‘তাহলে ভাড়াটা দিচ্ছে না কেন? দ্যাখ তোকে একটা কথা বলি, ও কিন্তু বিশেষ সুবিধের ছেলে নয়। তুইও বুঝতে পারবি সময় হলে। এই বাড়ি ও আগ বাড়িয়ে আমাদের না জানিয়ে প্রোমোটিং করাবে বলে প্যাঁচ কষছে। সম্পত্তির ব্যাপার, বাপ ছেলে কাটাকাটি হয়, এতো পরের ছেলে, তারওপর আমরা মেয়ে মানুষ।’
‘তোমার অল্পতেই টেনশান করার অভ্যেস হয়ে গেছে।’ রিয়া আমাকে ধমক দিয়ে বললো।
‘হ্যাঁ আমি তো পাগল হয়ে গেছি যে ইচ্ছে করে লোকের খুঁত বের করছি? যেটা সত্যি সেটা তোকে বলছি। এরকম কুঁড়ে ছেলে আমি দেখিনি। আমার তো ওকে একদম এই বাড়িতে রাখার ইচ্ছে নেই। মাঝে মাঝে ছাদে যাই যখন, তখন ওর ঘরের ভিতরে চোখ পরলে খুব রাগ ওঠে। কি অবস্থা করে রেখেছে, এই নতুন তৈরি হয়েছে কেউ বলবে?’
রিয়া চুপ করে রইলো। কিছুক্ষন চুপ করে রইলো তারপর বললো ‘একটু ধৈর্য্য ধরো। দেখোনা কি হয়। বের করে দিতে তো দু মিনিট লাগে। হয়তো দেখো ও একদিন খুব নাম করবে। শিল্পি মানুষরা এরকম ন্যালাভোলাই হয়।’
‘তুই ধৈর্য্য রাখিস?’
রিয়া আবার চুপ করে গেলো। আমি জানি এখন ও আর মুখ খুলবে না। যার হয়ে ওকালতি করছে সে যে কি মাল ও বোঝে নিশ্চয়। আমার কাজ আমাকেই করতে হবে। এই মুহুর্তে গুরুত্বপুর্ন তথ্য যেটা পেলাম সেটা হোলো অমিত বাবু রিয়ার পিছনে আছে।

রিয়ার মুখে যা শুনলাম, ভদ্রলোককে একঝলক যা দেখেছি তাতে মনে হয় উনাকে বাগে আনা কঠিন। অন্তত রিয়াকে বুঝিয়ে এই কেসটা থেকে বিরত করার ব্যাপারে। এরকম ভদ্রলোক কি করে রাজনিতির দিকে হেলে যায় বুঝতে পারিনা। সব ক্ষমতাই কি রাজনিতির আশ্রয়ে চুড়ায় ওঠে। তাই হবে। নাহলে পড়াশুনা জানা আইএএস, আইপিএস এরা অঙ্গুঠা ছাপ নেতাদের কথায় ওঠবস করে কেন।
কিভাবে উনাকে বোঝাবো। হিতে বিপরিত হয়ে গেলে? রিয়ার কানে যদি খবর পৌছে যায়?
এক মায়ের অনুনয় বিনয় কতটা মনে ধরবে। আরেকটা অস্ত্র আছে, কিন্তু আমি জানিনা সেটার ধার কেমন আর ওর ওপর প্রয়োগ করতে পারবো কিনা। শুনেছি তো বিপত্নিক। আমার আপত্তি নেই শরীর দিয়ে উনাকে বস করতে। এই জানোয়ারটাকে শরীর যখন দিতে পেরেছি, আর আমার ছুতমার্গ নেই এ ব্যাপারে। অনুরাধা এই সিড়ি ধরেছিলো ওপরে ওঠার জন্যে, আমি ধরবো, আমার জায়গা ধরে রাখতে। প্রয়োজনে এটা ব্রহ্মাস্ত্র। কিন্তু আমার মনে হয়না আমি এই সুযোগ পাবো। এসব ভাবতে গেলে মনে হয় রাহুলকে খাওয়ার সাথে বিষ মিশিয়ে দি। তাতে জেল জেতে হলে যাবো। কিন্তু আমার সেই সাহসও নেই।
যা বেচে আছে সেটাকে বাচিয়ে রাখতেই আমার প্রান গলায় চলে আসছে। নিজের হাতে তৈরি এই ব্যাবসাটাই উঠতে বসেছে এই কারনে।
অনুরাধা নিশ্চয় জানে অমিত রায়ের কথা। এত খোঁজ নিয়েছে এটা জানেনা?

দেরি না করে অমিত রায়কে ফোন করলাম। উনার সাথে দেখা করার একটা সময় চেয়ে নিলাম। দুপুরের দিকে টাইম দিয়েছে।
কি জানি যদি কাজে লেগে যায় সেই ভেবে নিজেকে সুন্দর করে সাজিয়ে নিলাম। এখনো আমার জৌলুস কমেনি, যদিও পরনের শাড়ি মুখের মেকাপ, কিছুটা সাহাজ্য করছে এই জৌলুস বাড়াতে।আয়নায় নিজেকে বারবার দেখছি। টানা টানা চোখ, সামঞ্জস্য রাখা টিকালো নাক, মসৃন ত্বক আর পিঠ ছারানো হাল্কা ঢেউ খেলানো চুল আমার তুরুপের তাস। সেটা আমি ভালো করেই জানি। এখনো বলিরেখা এই মুখে, গলায় প্রভাব ফেলতে পারেনি। নিজেকে আত্মবিস্বাসে ভরপুর লাগছে। মনের হিনমন্যতা চাপা পরে গেছে। ইচ্ছে করে একটা লোকাট ব্লাউজ পরেছি, সাথে পিঠটাও অনেকটা খোলা মতন। নাভির নিচেই শাড়ি পরেছি। দেখাই যাক না। আজকাল তো সবাই এরকমই পরে। রাস্তার লোকে কি আর বুঝতে পারছে যে আমি বিধবা। আর বুঝলেই বা কি যায় আসে। আর ভাবছি না, লোকে কি ভাববে আর নিজের বিবেক কি বলবে এসব। আমাকে জিততে হবে শুধু এটুকুই আমার লক্ষ্য।
আমিত রায়ের বাড়ির দারোয়ানটার চোখ চিকচিক করে উঠলো আমাকে দেখে, মানুষের চোখ মনকে লুকাতে পারেনা। মুখের প্রতিক্রিয়া যতই স্বাভাবিক থাকুক না কেন। পুরুষ মানুষের এই লোভাতুর দৃষ্টিটাই আমার পুরস্কার এখন।
স্বাভাবিক ভাবেই অমিত রায়ের চোখে মুখে সেরকম কোন প্রতিক্রিয়া দেখতে পেলাম না। ভালো করেই বোঝার চেষ্টা করলাম, সেটা। মনটা ভার হয়ে গেলো। তবুও এখনো অনুনয় বিনয় এগুলো পরে রয়েছে।
সেটা করেই উনাকে বুঝিয়ে বললাম আমার অসহায়তা। এমন ভাব করলাম যেন সেদিন আমি এই কথাগুলোই বলতে চাইছিলাম।
আমার সব কথা শুনে উনি আমাকে বললেন ‘দেখুন আমি জানি এত সহজে সব হয়ে যাবে না, প্রদিপও নিভে যাওয়ার আগে দপ করে জ্বলে ওঠে, এরা তো রক্তমাংসের মানুষ। এদের বিরুদ্ধে যাওয়া মানে আপনাকে পিছুটানহীন হতে হবে। নাহলে কোন না কোন ভাবে এরা প্রত্যাঘাত করবেই। সেটা যাতে না করতে পারে সেটাই দেখা হচ্ছে। নাহলে তো এতদিনে সব খবরের কাগজেই চলে আসতো। আর আপনিও মা, রনিতার মাও মা। ওদের কথা একবার ভেবে দেখুন তো। একটা মেয়ে দুচোখে স্বপ্ন নিয়ে এলো নিজের কেরিয়ার করবে বলে, তার বদলে কি পেলো। রনিতাও তো আমাদের ঘরেরই মেয়ে।’
আমি কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বললাম ‘আচ্ছা একটা কথা বলুন তো, রিয়ার কি এই ব্যাপারে সামনে না আসলেই নয়? আমি বলতে চাইছি। সবই তো জানা হয়ে গেছে, তাহলে ওকে আর কি জন্যে দরকার?’
‘রিয়াই রনিতার মনের জোর জুগিয়ে চলেছে। দু দুবার আত্মহত্যা করতে গেছিলো বেচারি। এরকম একটা ব্যাপার ফাঁস হয়ে যাওয়া তো যা তা ব্যাপার নয়। আর আমি আপনি তো সমাজবদ্ধ মধ্যবিত্ত প্রানি। এসব খবর যদি চাউর হয় কি করে মুখ দেখাই।’
কিছুতেই বাগে আনতে পারছিনা এই লোকটাকে। আমার শরীর রুপ এদিকে কোন মনোযোগই নেই। কেমন যেন সন্ন্যাসির মতন শান্ত সমাহিত। এই লোক কি করে ইট বালি সিমেণ্টের সাথে ঘর করে। এই লোকের তো কলম নিয়ে কবিতা লেখা উচিত ছিলো।
আমতা আমতা করে বললাম ‘দেখুন আমাকে খারাপ ভাববেন না, তবু আমার মনে হয় ব্যাপারটা আরেকবার তলিয়ে দেখুন। একটা মেয়ে রাতের বেলা বাড়িতে নেই, সে ধরা পরলো এমন যায়গায় যেটা আইনত অপরাধ। সেখানে অন্য মেয়েরাও ছিলো। নাহয় রিয়া ওর বান্ধবি, কিন্তু আপনারা কি বাকি মেয়েগুলোর সাথে কথা বলেছিলেন?’
‘না তাতো বলিনি!’
‘তাহলে কি করে বুঝে গেলেন রনিতা যা বলছে সেগুলো সত্যি। বাকি মেয়েদেরও যদি করা হোতো, তাহলে একজোট হয়ে প্রতিবাদ হলে কি ভালো হোতো না। আমার রনিতার ওপর সম্পুর্ন সহানুভুতি আছে, ও আমার মেয়েরই মতন, আমার বাড়িতেও এসেছে, কিন্তু আমার মনে হয় ওর মুখের কথায় সম্পুর্ন ভরসা না করে আরেকটু তলিয়ে দেখুন। সবসময় তো আমরা চোখে যা দেখছি তা সত্যি হয়না। বিশেষ করে কাউকে এরকম দোষে দোষী প্রমান করার আগে। আপনাদের তো অনেক সোর্স আছে একবার দেখুন না, রনিতার মনের কথা হয়তো আমি আপনি জানিনা। হয়তো আমাদের কাছে ও সত্যি বলতে পারছেনা। নিজেকে সবাইই বাঁচাতে চায়।’
অমিত রায় আমার মুখের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে রইলো। আমি বুঝতে পারছিনা ও কি ভাবছে।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: হোম ডেলিভারি by avi5774 - by ronylol - 10-06-2019, 07:28 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)