Thread Rating:
  • 11 Vote(s) - 3.09 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery হোম ডেলিভারি by avi5774
#18
আমি জ্বলছি নিজের জ্বালায়, তারওপর মিমির এই কান্ড, আমাকে আরো অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে, এসেছিলাম সমাধানের জন্যে, কিন্তু নতুন করে সমস্যার জালে জড়িয়ে পরছি। এই মুহুর্তে ফলাও করে বেশ্যাবৃত্তির ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তা করতে ইচ্ছে করছেনা। মনের মধ্যে খালি দুশ্চিন্তা ঘুরে বেরাচ্ছে, এত রাত রিয়া যদি টের পেয়ে যায় আমি নেই তাহলে আরেক সমস্যার সৃষ্টি হবে।
অনুরাধা আবার একটা সিগেরেট ধরিয়ে মাথা হেলিয়ে ছাদের দিকে তাক করে ধোয়া ছারলো। এরকম ভঙ্গিমা পার্থকেও করতে দেখতাম।
কিছুক্ষন চুপ করে থেকে অনুরাধা আবার বলতে শুরু করলো ‘পার্টির অবস্থা ভালো না। শিক্ষিত ছেলে মেয়ে আর আমাদের পছন্দ করছেনা। আমি নিজেও সব কিছু সমর্থন করতে পারছিনা। যাই করি না লোকের ব্যক্তিগত ব্যাপারে নাক গলানো আমার পছন্দ নয়, এর কারন এই নয় যে আমার নিজের পিছনে গন্ধ আছে। পালাবদল হলে আমার ভয় নেই, কারন বিরোধি দলের নেতারাও আমার হাতের মুঠোই। কিন্তু প্রসাশনের অনেকে আমার প্রভাব বিশেষ সহ্য করতে পারেনা। সামনের বছর লোকসভা নির্বাচন। তাতেই বোঝা যাবে সামনের বার আমরা ফিরতে পারবো কিনা। ইতিমধ্যে দলের মধ্যে বিরোধি আসন গ্রহন করা নিয়ে আলোচনা ঊঠেছে। আমার ভয় একটাই যে যাদের ওপর এতদিন ছরি ঘুরিয়েছি তারাই আমাকে কামরানোর জন্যে উঠে পরে লেগেছে। বিশেষ করে পুলিশের এক অংশ। এর মধ্যে তোর মেয়ে সেই কবে ঘটে যাওয়া একটা ঘটনা নিয়ে কেঁচো খুরে চলেছে তাতে ভয় হচ্ছে শেষ বয়েসটা জেলে না কাটাই। এর মধ্যে শুনেছি আমার স্বামি তলে তলে বিরোধি দলের লোকজনের সাথে যোগাযোগ রেখে চলেছে, সু্যোগ পেলে ও আমাকে এক ঝটকায় ঝেরে ফেলবে। আর আমার এই ঘটনা সামনে এলে, বিশেষ করে এই বাজারে, পার্টির ভাবমুর্তিতে বিড়াট প্রভাব পরবে। মুখ্যমন্ত্রি প্রবল চেষ্টা করছে সেটা ফিরিয়ে আনার। এর মধ্যে এসব কিছু ফাঁস হলে পার্টিও আমার সাথে দুরত্ব তৈরি করবে। জেলে পঁচে মরা ছাড়া আর কিছু থাকবেনা আমার। পুলিশ মহলের এক অংশ প্রবল ভাবে চাইছে আমাকে ফাঁসাতে। বলেনা দাঁত গজালে শূয়োড় প্রথমে নিজের বাপের পোঁদে কামর বসায়। এদের ব্যাপার সেরকম হয়েছে। রিয়ার পিছনেও এক মাথা রয়েছে, যে ওকে পরিচালনা করছে। লোকটাকে ম্যানেজ করা একটু সমস্যার, সৎ লোক। কিন্তু সবারই কিছু না কিছু দুর্বলতা থাকে সেটা আমি এখনো খুজে পাইনি।
আমি থেমে নেই, আপ্রান চেষ্টা করে চলেছি কিছু না কিছু সমাধান সুত্র বের করতে। তুই শুধু রিয়াকে কিছুদিনের জন্যে আটকা। এটা অনুরোধ, বিন্দুমাত্র হুকুম না। তুই ওর মা হয়ে নিশ্চয় পারবি। ও নিঃসন্দেহে ভালো কাজ করছে। কিন্তু আমার একটা বক্তব্য আছে। আমি যদি জোর করে এই লাইনে কাউকে টেনে আনতাম তাহলে ও আমাকে দোষি বলতে পারতো, কিন্তু এক্ষেত্রে সেরকম কিছুই ঘটেনা। আমার কাছে থাকে খদ্দের, মেয়েদের কাছে থাকে প্রয়োজন, আর আমার খদ্দেররা যা দাম দিতে পারবে সেটা আর কেউ পারবেনা। এই দুজনের মেলবন্ধন আমি ঘটাই। আমি ওকে যথাসাধ্য সমর্থন করতাম, কিন্তু এখানে আমি নিজে জড়িত, তাই আমার বাঁচাটা দরকার। জেলে পচার থেকে আমি নিজেকে শেষ করে দেবো। যোগ্যতার থেকে অনেক বেশি পেয়েছি, আর কি দরকার। কিন্তু অনেকে আছে যারা আমাকে আঁকরে ধরে বাঁচে তারা ভেসে যাবে। অনেক চ্যারিটি আছে, অমিয় এমন কিছু লোকজনের কথা বলে গেছিলো যাদের আমি অনামে সাহাজ্য করি, বৃদ্ধাশ্রম থেকে অনাথালয় অনেক যায়গা আছে যেখানে আমি এই পাপের টাকাগুলো শুদ্ধ করার জন্যে খরচ করি। আমার নাম নেই ওসব জায়গায়। আর কিই বা হবে নাম কিনে। তাতে কি আমার অতিত, আমার কলঙ্ক মুছে যাবে। পুন্যর ভাগ বেড়ে ভালো কিছু হবে? তাহলে অমিয় এত কষ্ট পেলো জীবনে, সেগুলো কেন? ওতো লোকের ভালোই করেছে, শেষ মুহুর্তেও তো নিজের লোকের সাথ পেলোনা। রক্তের সম্পর্কগুলোও বেইমানি করলো। আমিই তো পাড়ার থেকে টাকা তোলার নাম করে ওকে বড় নার্সিংহোমে ভর্তি করিয়েছিলাম। তারপর দেখভাল করার জন্যে ওর ভাইকে সেই মেয়েছেলের কেসের হুমকি দিয়েছিলাম। সেসব গল্প তোকে পরে একদিন শোনাবো। কিন্তু আগে তুই চেষ্টা কর প্লিজ। আমি সারাজীবন তোর পায়ের দাসি হয়ে থাকবো।
‘আমি আপ্রান চেষ্টা করবো দিদি, কিন্তু আমি নিজে অনেক সমস্যার মধ্যে আছি।’
কি জানি ওকে কেন আমি সমব্যাথি মনে করলাম, কেন যেন মনে হোলো ও আমার কথার গুরুত্ব দেবে আমি সব কথা ওকে খুলে বললাম, এমন কি রাহুলের সাথে আমার শারীরিক সম্পর্কের কথাও, কিভাবে পার্থ ভেবে ওকে কাছে টেনে নিয়েছিলাম।
আমার কথা খুব মন দিয়ে শুনলো। মাঝে একবার মদ ঢেলে নিলো আর সিগেরেট অনবরত খেয়ে চললো। মাথা ওর ভালোই কাজ করছে সেটা কয়েকটা প্রশ্নে বুঝতে পারলাম,কিন্তু শরীর ওর সঙ্গ দিচ্ছেনা, ঘরোয়া শাড়ীটার আচল অনেকক্ষন আগেই খসে পরেছে। ব্রা ছাড়া এমনি ব্লাউজ পরেছে, বয়েসের সাথে বেড়ে ওঠা অতিরিক্ত বড় স্তনগুলোর অনেকাংশই ব্লাউজ থেকে প্রায় বেরিয়ে এসেছে। আলুথালু হয়ে সোফায় বসে রয়েছে ক্লান্ত শরিরে। আমার দিকে কেমন একটা ঘোরের মধ্যে রয়েছে মতন তাকিয়ে রয়েছে।
কিছুক্ষন সেই ভাবে তাকিয়ে থেকে আমাকে বললো ‘ব্যাপারটা জটিল। এত সাহস পাচ্ছে কোথা থেকে। আমার অভিজ্ঞতা বলে এরা হয় ক্রিমিনাল, নাহয় বড় কোন মাথা আছে এর পিছনে। আমার নিজেই ভেবে কুল করতে পারছিনা তো তোর অবস্থা ভালোই বুঝতে পারছি। মাথা ঠান্ডা করে কয়েকদিন অপেক্ষা কর। ব্যাপারটা নিয়ে আমাকে ভালো করে ভাবতে দে, তুই পারলে জাসুসি কর ওর ওপরে, আর আমিও চেষ্টা করছি খোঁজ খবর নিতে। এর মধ্যে যতই প্ররোচনা করুক তুই ওর সাথে আর শুবিনা, এমন কি এরকম খবরও যদি পাস কি তোর মেয়েকে কেউ তুলে নিয়ে গেছে তাহলেও না। ব্যাটা ছবি টবি তুলে রাখলে সমস্যা হবে। আমাকেও পরিস্থিতির চাপে পরে চুপচাপ থাকতে হচ্ছে, বেশিরভাগ ছেলেই পাল্টি খেয়ে অন্য সুরে গাইছে, যেগুলো আছে সেগুলোও খুব একটা কম্মের নয়, নাহলে এত ভাবতামই না। কবে হাওয়া করে দিতাম। তারওপর এখন পুলিশও আমার পোঁদে লেগেছে। ধৈর্য্য ধর কিছু একটা উপায় বেরোবে।’


মাথার কিছুটা খালি কিছুটা ভর্তি করে বাড়ি ফিরলাম। রিয়াকে কিভাবে বোঝাবো সেটা আমার কাছে একটা চ্যলেঞ্জ। চাদরে ঢাকা থাকার দরুন রাস্তায় আমার ছায়াটা ভুতুরে দেখাচ্ছে। একটা রিকশাওয়ালা আমার দিকে অদ্ভুত ভাবে তাকাতে তাকাতে চলে গেলো। এইএলাকায় এত রাতে মেয়েছেলে দেখা মানে রহস্যজনক ব্যাপার। কয়েকটা কুকুর তারস্বরে চিল্লে চলেছে আমাকে দেখে। দ্রুত পায়ে হেটে চলেছি বাড়ির দিকে।
বিড়ালের মতন নিঃশব্দে গেট খুলে ঢুকলাম। কোলাপ্সিবল গেট নিঃশব্দে খোলার জন্যে প্রাইজ থাকলে আমি পেতামই। দরজা খুলেই সুবলার ঘর। থমকে দাঁড়ালাম। ভিতরে কিছু হচ্ছে নাকি বোঝার জন্যে। নাঃ সব স্বাভাবিকই লাগছে। কেমন যেন সাহস ফিরে পেলাম, মনে হোলো সব তো ঠিকই আছে। এ হতে পারেনা। হঠাত করেই মনের থেকে কেমন যেন আতঙ্কের পরিবেশটা হাল্কা হয়ে গেলো। হয়তো রাহুল আর আমার সম্পর্কটা লোক জানাজানি হবে সেই ভয়টা কিছুটা কমে গেছে সেই জন্যে, অনুরাধাদি কে বলেও যেন পাপের বোঝা ভাগ করে নিলাম।
আমি যেন আমার স্বাভাবিকত্ব ফিরে পেয়েছি, তাই নিজের বাড়ি, এই অধিকার বজায় রাখতে ইচ্ছে হোলো ছাদের দিকে যাই। মনে মনে ঠিক করে রেখেছি, এখন রাতের বেলা রাহুল যদি কিছু করার চেষ্টা করে তাহলে আমি ওর মাথায় লোহার রডের বাড়ি মারবো। সেই রড কোথায় রাখা আছে সেটা আমি জানি।
সেরকম কিছু করতে হোলো না। আমি কিছুক্ষন ছাদে কাটিয়ে নিচে চলে এলাম। রিয়ার ঘর থেকেও ঢিমে তালে ফ্যান ঘোরার শব্দ আসছে। রাতের বেলা কত অদ্ভুত, কত রহস্যময় হয়। আমি আর পার্থ প্রায়ই মজা করতাম, এই এখন কত লোক লাগাচ্ছে, এই মুহুর্তে কতজন মাল ফেললো... এরকম নানান কথা।
নিজের মনেই হেঁসে উঠলাম। সেটা বুঝতে পেরে ভালোও লাগছে হাসতে পারছি ভেবে, মনটা মরে যায়নি তাহলে।

রিয়াকে কিভাবে ম্যানেজ করবো সেটা চিন্তা করতে করতে কখন ঘুমিয়ে পরেছি খেয়াল করিনি। ঘুম ভাঙ্গলো, চোখে রোদ পরাতে। ধরমর করে উঠে বসতে গিয়ে থমকে গেলাম, রাতে সব স্বাভাবিক মনে হচ্ছিলো কারন কারোর মুখোমুখি হতে হয়নি। এখন দিনের আলোয় নিজেকে লুকাবো কি করে?
রিয়া আমার ঘরে এলো, আমি পিছন ফিরে ছিলাম ওর দিকে, তাই হয়তো ঘুমাচ্ছি ভেবে আর ডাকেনি। কাল রাতের অনুরাধার কথাগুলো মাথায় ঘুরছে। রিয়া রাজনৈতিক কারো মদতে ওই রনিতাকে নিয়ে লড়ে যাচ্ছে। সেই লোকটা বা লোকগুলোও নিশ্চয় নিজেদের স্বার্থে রিয়াকে ব্যাবহার করছে, অনুরাধার বিরুদ্ধে, শাসক দলের বিরুদ্ধে। রিয়াকে আমি চিনি, যা জেদি ও, নিশ্চয় এর শেষ দেখে ছাড়বে। কি হবে? আমার কথা, আমার অনুরোধ কি শুনবে। কি কারনে ওকে অনুরোধ করছি, সেটা যদি বলতাম, তাহলে হয়তো ও সরে দাড়াতো, কিন্তু এ বাড়িতে আর জলস্পর্শ করবে না ও। কি করি আমি? একদিকে নিজের অস্তিত্ব বিপন্ন, অন্যদিকে এই দেহব্যবসার চক্র। মেয়েগুলোরই বা এত লোভ কেন বুঝিনা। যেরকমই হোক না কেন, স্বামী তো পছন্দ করে নিতেই পারে। যারা ওদের সাথে শুতে আসে, তাড়া কি বিয়ে থা করে না, সেরকম কাউকেই তো বেছে নিতে পারে। অনুরাধাদি যতই বলুক না কেন, এদের গুদে স্বাভাবিকের থেকে বেশি চুলকানি। কই রিয়া তো এরকম না। আমি কি ওকে পাহাড়া দিয়ে রেখেছি। দেখতে সুন্দরি, শরীরও আকর্ষনীয়, ও কি পারে না এসব করতে? সবই পরিবেশের ওপর নির্ভর করে। এদের মা বাবারও নিশ্চয় গাফিলতি আছে, নাহলে মেয়েরা এরকম লাগাম ছাড়া হয় কি করে। কিন্তু আমিও কি ভালো কিছু করেছি। হতেই পারে রাহুলের সাথে আমার শারীরিক সম্পর্কের কথা জানতে পেরে গিয়ে রিয়াও খারাপ পথে নেমে গেলো। বুকটা ধক করে ধাক্কা দিয়ে উঠলো। হে ভগবান আমাকে যেন সেদিন দেখতে না হয়।

শুনতে পেলাম, রিয়া সুবলাকে বলছে রান্নাবান্নার দায়িত্ব নিতে, আমার শরীর খারাপ। ও না খেয়েই বেরিয়ে গেলো। চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে আসছে আমার। কি পাপ যে করেছি আমি, এরকম অভিনয় করতে হচ্ছে, নিজের মেয়েকেও ঠকিয়ে চলেছি, দিনের পর দিন। বেচারির কপালে ঘরের খাওয়াটাও জুটছে না।

নাঃ। এইভাবে চলতে পারেনা। যে রাস্তায় একবার দুর্ঘটনা ঘটে, সে রাস্তা এড়িয়ে গেলে জিবনেও দুর্ঘটনার ভয় কাটবেনা। মনের ক্ষেত্রেও তাই। ভয় চেপে বসে গেলে এ ভয় আর তাড়াতে পারবোনা। আমাকে বাস্তবের মুখোমুখি হতে হবে।
বাথরুম সেরে পোষাক বদলে রান্না ঘরে গিয়ে উপস্থিত হোলাম। আয়নায় নিজেকে দেখে মনে হোলো সত্যিই আমি অসুস্থ। আমাকে দেখে সুবলা মৃদু স্বরে বলে উঠলো ‘আমি করে নিতে পারবো দিদি, তুমি বিশ্রাম নাও।’
ইচ্ছে করে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে হেঁসে বললাম ‘কিছু হয়নি আমার, আমি করতে পারবো। তুই বেটে দে, যে রকম দিস, সারাজীবন তো আর শুয়ে কাটাতে পারবো না।’

মশলা কষানোর ঝাঁঝে, চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে এলো, এই সুযোগ খুজি, মনের বোঝা চোখের জলের মাধ্যমে বের করে দি।
মেয়েমানুষ অনেক বুঝদার হয়। সুবলা কি বুঝলো জানিনা, হঠাত আমার পা জড়িয়ে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো।
‘আমার ভুল হয়ে গেছে দিদি, কি অন্যায় যে আমি করেছি, নরকেও আমার ঠাই হবেনা।’
‘ছার পা ছার’ বলতে গিয়ে আমার গলাও কেঁপে উঠলো। ও আমার দুপায়ের মাঝখানে মুখ গুজে দিয়ে দমকে দমকে কাঁদছে। অশিক্ষিত মানুষ, ঠিক করে আবেগ প্রকাশ করতেও জানেনা, চিৎকার করে কাঁদছে মনে হচ্ছে যেন প্রিয়জনকে হাড়িয়েছে।
আমার অস্বস্তি হচ্ছে এই ভেবে যে ও বলে দিলে ও হাল্কা হয়ে যাবে, আমি আমার ভার হাল্কা করতে পারবো না। অস্বস্তি হচ্ছে কেউ শুনে না নেয়, যে ভাবে ও কাঁদছে। বিশেষ করে রাহুল। কিন্তু ওর কান্নাতে অভিনয় নেই আমি জানি। তাই আমার চোখও ছলছল করছে, সেটা মশলার ঝাঁঝ দিয়ে ঢাকার আপ্রান চেষ্টা করছি। মন বলছে হয়তো ঘরপোড়া গরু ঘরে ফিরছে, হয়তো ওকে ফিরে পাচ্ছি নিজের দলে। বিশ্বস্ত কারো পদস্খলন হয়, সে যখন ফিরে আসে নিজের ভুল বুঝে, তার মতন বিশ্বস্ত আর কেউ হয় না। ভুল থেকেই মানুষ শেখে। সুবলাও হয়তো নিজের ভুলের দরুন আত্মগ্লানিতে ভুগছে।
‘এরকম করিস না, মশলা পুড়ে যাবে।’ আমি কোনরকমে আবেগ চেপে ওকে বলতে পারলাম।
‘দিদি আমাকে ক্ষমা করে দাও, জানি এ পাপের প্রায়শ্চিত্ত হয়না তবুও আমাকে দূর করে দিওনা। দেশে ফিরে যাওয়ার ও আর যায়গা নেই আমার।’
‘আমি ক্ষমা করার কে বলতো?’
‘তুমি আমার অন্নদাতা, তুমি রুষ্ট থাকলে আমার মরেও শান্তি নেই, আমাকে ক্ষমা করে দাও দিদি।’
‘ছার পা ছার। আমি পরে যাবো। এখন কাজের সময়, পরে কথা বলিস, হাত চালিয়ে কাজ সেরে নে।’
‘এখন না হলে আর পারবোনা, ওই শয়তানটা কখন আবার এসে হাজির হবে, মিমিদিদির সাথে কোথায় বেড়িয়েছে যেন, সেদিনের পর থেকে দুচোখের পাতা এক করতে পারিনি, কখন তোমার কাছে ক্ষমা চাইবো, সেই সুযোগে ছিলাম।’
রিয়ার সাথে বেড়িয়েছে। আবার কি মতলব আটছে? কয়েক মুহুর্তের জন্যে ভুলে গেলাম সুবলা এখনো আমার দু পা জাপ্টে ধরে আছে। রিয়ার সাথে এ ব্যাপারে কথা বলতে হবে।
আমি সুবলাকে জিজ্ঞেস করলাম ‘তুই জানিস কোথায় গেছে?’
‘না জানিনা, তবে মিমি দিদি বলছিলো শুনলাম, দুপুরবেলা কলেজে ক্লাস আছে। তার মানে ওর সাথে থাকবেনা।’
নিজের অজান্তেই আমার মুখ থেকে বেরিয়ে এলো ‘রিয়ার সাথে কোথায় গেলো আবার?’ গলায় চিন্তা ফুটে উঠলো।
সুবলা আমার পা ছেড়ে নিজেকে গুছিয়ে নিলো, স্বগোতক্তির মতন বললো ‘খুব বদ ছেলে, আমি তোমার সুস্থ হওয়ার অপেক্ষা করছিলাম। মিমি দিদিকে তুমি সাবধান করে দিও, ওর সাথে মেলামেশা যেন না করে? আমি কিছু বললে সেটা ছোট মুখে বড় কথা হয়ে যাবে বলে বলিনি, ও যে কি শয়তান সেটা আমি হাড়ে হাড়ে জানি।’
‘জানিস তো ওর সাথে শুতে যাস কেন?’
সুবলা চুপ করে রইলো। এ কথাগুলো বলবে বলেই পা জড়িয়ে কাঁদছিলো, এখন সরাসরি প্রশ্নের মুখে পরে কেমন গুটিয়ে গেলো।
‘কিরে এখন চুপ করে আছিস কেন?’
‘সেদিন তোমার সাথে যা করলো মনে হচ্ছিলো ওকে খুন করে জেলে চলে যাই’
‘করলি না কেন?’ আমি ঝাঁঝের সাথেই বললাম। যদি রাহুল ওকে আমার ব্যাপারে বলেও থাকে সেটা আমি অস্বিকার করবো সেটা ভেবে নিয়েছি।
দুহাটুর মধ্যে মুখ ঢেকে নিলো সুবলা।
আমি গ্যাসটা নিভিয়ে দিলাম। হোক দেরি। কিন্তু শোনা দরকার ও কি করে রাহুলের অন্তরঙ্গ হোলো। রাহুল নেই মানে এই মস্ত সুযোগ।
আমার নিজেরও ভয় আছে তাই আর চাপ দিলাম না। মৃদু গলায় ওকে বললাম ‘বল তুই, বলে যদি হাল্কা হোস। দেখি তোর কথা শুনে কিছু উপায় করতে পারি কিনা একে তাড়ানোর।’
‘তুমি পারবেনা দিদি। এ স্বয়ং ভগবান এলেও পারবেনা। এ শয়তানের বাচ্চা। শয়তানও একে জন্ম দিয়ে আফশোষ করে হয়তো। মানুষ না পিশাচ আমার সন্দেহ হয়। মানুষের বাচ্চা এরকম হয়না।
‘এত জানিস তো পাছা তুলে বসেছিলি কেন?’
আমার মুখে এরকম ভাষা শুনে সুবলা থমকে আমার দিকে তাকালো। আবার মাথা নিচু করে বললো ‘জানি তো যে দেখবে সেই এরকম ভাববে। তুমি যদি আমার মুখ দেখতে তাহলে এ কথা বলতে না।’
‘কেন? ও কি তোকে জোর করে করেছে?’
‘আমার মুখে কাপড় বেধে দিয়ে জোর করে পায়খানার দ্বার দিয়ে ঢোকায় জানো?’
রাহুলে এই বিকৃতকামের সাক্ষি আমি, তাই অবাক হোলাম না। বুঝলাম সুবলা সত্যি কথা বলছে। কিন্তু মুখে সেটা প্রকাশ করলাম না, উলটে বললাম ‘তুই পাছা তুলে বসেছিস বলে তো ও সুযোগ পেয়েছে।’
‘জানোয়ার গো দিদি জানোয়ার ও। ওর কাছে ইচ্ছে নেই বললে তার দাম দিতে হয়। হাতে পায়ে ধরেছি। এ বয়েসে এগুলো করা যায়?’
‘ও এগুলো না করে অন্য কিছু করলে ও ভালো হোতো তাই না?’
‘আমি কি সেই কথা বললাম?’ সুবলা খোঁচা খেয়ে মৃদু প্রতিবাদ করে উঠল।
‘কি বলতে চাইছিস সেটাই তো বুঝছিনা। দুটো বড় বড় ছেলের মা তুই, এরকম কি করে করলি?’
‘দোষ আমার। ও সেটার সু্যোগ নিয়ে এসব করছে। তবে শুধু মাত্র তোমার ভয় ছিলো, তুমি যখন মেনে নিলে আমি আর আজ থেকে ওকে ছুতে দেবোনা।’
‘সেই ঘুরিয়ে পেচিয়ে বলে চলেছিস। কি মেনে নিলাম আমি?’
‘দাঁড়াও দিদি, আর কথা শুনিও না আমাকে। অন্যায় তো করেছি, তাও অন্নদাতার সাথে, তোমার লাথি ঝ্যাটাই আমার কপালে আছে, তবু তুমি আমার গার্জেনের মতন, আমাকে একটু সইয়ে নিতে দাও, একটু সবুর করো, বলছি সব গুলিয়ে যাচ্ছে কেমন আমার।’
নিজের মনের মধ্যে একটা অপরাধ বোধ কাজ করছে। আমি নিজে কি করেছি? এই প্রশ্নটা বারবার উকি দিচ্ছে মনে। তবু আমার দৃঢ় ধারনা যে রাহুল আমার ব্যাপারে ওকে কিছু বলেনি। তার কারন, এক) বললে সুবলা এখন এই সন্মানটা আমাকে দিতো না, দুই) বলে দিলে রাহুলের একটা মোক্ষম অস্ত্র বেরিয়ে পরলো হাত থেকে, ওর শুধু আমার প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছু থাকতো না। এই ব্ল্যাকমেলের পরিবেশটা যে ওকে জিইয়ে রাখতে হবে।
কিছুক্ষন চুপ করে থেকে সুবলা বলতে শুরু করলো।

‘জীবনে কিছু পেলাম না। হা হুতাশই করে গেলাম। স্বামি বরাবর চোলাই ঠেকের মালতির সাথে শোয়, আমি জানতাম, ঘর ভাঙ্গার ভয়ে কিছু বলিনি। হুলো বেড়ালের জাত, এদিক ওদিক ধামসে বেরাবে জানি। কিন্তু, এবার যখন দেখলাম ওর সাথে ঘর করতে শুরু করেছে আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনি। আমি বুঝি ব্যাটাছেলে একটু উড়ে বেড়াবে, এদিক ওদিক জল ঝারবে, তার ওপোর আমি থাকিনা, খিদে মেটানোর জন্যে করে ভেবে মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু ঘর করছে মানে ওদের পিরিত ছিলো আগের থেকেই, এটাকে কি ঠকানো বলেনা? ওরা তো জানেনা কলকাতা শহরে দু পয়সা রোজগার করা মানে কি? তাও আমি তোমার কাছে আছি, আমাদের দখিনের অন্য মেয়েদের কথা তো শুনি জল তুলতে গিয়ে, পিছন ফেটে যায়, দৌড়ে দৌড়ে এ বাড়ী ও বাড়ি ঠিকে কাজ করতে। সেই আমার, সেই আমার, পয়সায় ওই বেবুশ্যেটাকে মালা কিনে দেওয়া থেকে শুরু করে সেন্ট দেওয়া, শাড়ী দেওয়া কি না করতো। বুঝেও কিছু বলিনি। খবর তো পেতাম। গ্রামের দিকে কান ভাঙ্গানোর লোক তো আছেই। কিন্তু পিরিত কেন করবে বলোতো দিদি। এটা অন্যায় না? সেই গিয়ে ওর সাথেই ঘর করা শুরু করলো। এরপর কি ঠিক থাকতে পারি? ঠিক করে নিয়েছিলাম, আমিও সুযোগ পেলে আর সতি থাকবোনা। দেখি তুই তো একটা মেয়েছেলে নিয়ে আছিস, আমি রোজ রোজ মদ্দা নিয়ে থাকবো। মনে মনে ভেবেছিলাম ঠিকই, কিন্তু সাহস বা ইচ্ছে কিছুই ছিলো না। কিন্তু * স্তানি ছেলেটাকে দেখে ঠিক থাকতে পারিনি।
[+] 1 user Likes ronylol's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: হোম ডেলিভারি by avi5774 - by ronylol - 10-06-2019, 07:27 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)