Thread Rating:
  • 11 Vote(s) - 3.09 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery হোম ডেলিভারি by avi5774
#12
রিয়া রাহুলকে ডাকতে গেছিলো। রাহুল বলেছে শরীর খারাপ তাই খাবেনা। শুয়ে আছে দেখেছে। খারাপ লাগলেও ভালই হয়েছে। ওর মুখোমুখি হওয়ার মতন সাহস আর আমার নেই।
রিয়া খেতে খেতে বললো ‘তোমার কথার একশান না তো? দুপুরে কোথায় খেয়েছিলো? তুমি তো রান্না করোনি।’
‘দুপুরে ও ছিলোনা, বাইরে বেরিয়েছিলো, তাই তো রান্না করিনি। আমি ওর জন্যে অনেক অপেক্ষা করেছি।’

‘কি রাজ কার্য্য করে কে জানে?’ রিয়া স্বাভাবিক ভাবে কথা বলছে দেখে আমি স্বস্তি পেলাম।

রিয়া ঘুমানোর আগে রিয়ার ঘরে কিছুক্ষন কাটালাম, দুজনে পুরানো দিনের অনেক গল্প করলাম। ভাল সময়ের গল্প, যখন আমরা তিনজন ছিলাম। অনেকদিন জিজ্ঞেস করবো করবো ভাবছি আজ হয়তো সুযোগ।
‘একটা কথা আমাকে বলবি?’
‘কি কথা মা?’
‘রাহুল আর তোর...?’
‘বুঝেছি মা আর জিজ্ঞেস করতে হবেনা? আমাদের সমস্যাটা কি জানোতো আমরা এখনো ছেলে আর মেয়েরা প্রেমিক প্রেমিকা ছাড়াও বন্ধু হোতে পারে সেটা বুঝিনা, তুমিও সেই দলে।’
‘সেটা নিয়ে দ্বন্ধে আছি বলেই তো জিজ্ঞেস করলাম?’
‘মা একটা কথা শোন, ঘর জামাই হয়ে থাকবে, এরকম ছেলে আমাকে কোনদিন পাবেনা।যে যতই রামচন্দ্র হোক না কেন, রাবন অনেক কর্মঠ। আমি রাম চাইনা। আমি চাই এমন এক পুরুষ মানুষ যে আমার দায়িত্ব নিতে পারবে। আরে বাবা পুরুষ মানুষ, হাত চালাবে, মাথা চালাবে, উপার্জন করবে, সংসার করবে, ঝগড়া করবে তবে তো পুরুষ মানুষ। এতো ভালো ছেলের যোগ্য আমি না।’
‘এরকম বলছিস কেন? তোর বাবা তো এক পয়সাও উপার্জন করতো না আমাদের যখন বিয়ে হয়, দায়িত্ব পরলে সবাই পুরুষ মানুষ হয়ে ওঠে।’ আমি ওকে বাজানোর জন্যে জিজ্ঞেস করলাম। নিজের মেয়ের সাথে চালাকি করছি ভাবতে খারাপ লাগছে কিন্তু আমার জানা দরকার।
‘বাবা, বাবা ছিলো, তার জন্যে তুমি ছিলে। আমিতো আর তুমি না। এমনি কথাবার্তা হাসিঠাট্টা ঠিক আছে মা। ঘরে কেউ নেই কথা বলার তাই ও কেন, কোন মেয়ে এলেও তুমি আমাকে এইভাবেই দেখতে। আসলে তুমি আমাকে কোনদিন এই ঘরের বাইরে দেখোনি বলে তুমি জানোনা আমি কতটা প্রানখোলা। তুমি ব্যস্ত থাকো বলেই, আমার আর তোমার কথা হয়না। নাহলে দেখতে তোমার সাথেও আড্ডা মেরে চলেছি। আড্ডা মারতে আমার ভালো লাগে, কলেজের প্রফেসারদের সাথেও আড্ডা মারি। এক ম্যামের সাথে তো বিউটি প্রোডাক্ট নিয়েও আলোচনা হয়।’
‘কখন করিস রে বাবা এত আলোচনা, সময় পাশ কখন?’
‘সবাই সময় বের করে নেয় নিজের জন্যে, শুধু আমার মা সারাদিন হেঁসেল ঠেলে চলেছে। এইভাবে ক্লান্ত হয়ে পরবে মা, নিজেকে একটু ভালোবাসো, সারাদিনে নিজের জন্যে কিছু সময় বের করো। রিলাক্স করো, দেখবে অনেক কঠিন কাজও সহজ লাগছে।’



শুয়ে শুয়ে ভাবছি ওপর থেকে আমাদের কত ভুল ধারনা থাকে। রিয়া আর রাহুলের মাঝে আমি ঢুকে পরেছি ভেবে খুব অন্যায় বোধ হচ্ছিলো। আজকালকার শিক্ষা সামাজিকতা কত পরিবর্তিত। রিয়া কত সহজে রাহুলকে তুচ্ছ্য করে দিলো। আমাদের সময় একসাথে একটা অনাত্মীয় ছেলে আর মেয়ে একসাথে হাটা মানে তাদের মধ্যে প্রেম রয়েছে, আর আজকে গায়ে হাত দেওয়াও কিছু নয়। তবুও কি স্বচ্ছ আর দৃঢ় ওদের ধারনা। আর আমি এখনও নিজের মনের মধ্যে খাবি খেয়ে বেরাচ্ছি, ঠিক আর ভুলের দাড়িপাল্লা হাতে নিয়ে।
কিন্তু এরপর যদি রাহুল চলে যায়, আর রিয়া জিজ্ঞেস করে কেন তাহলে কি ওর আমার এই টানাপোরেনের ব্যাপারটা রিয়া বুঝতে পারবেনা? সব কি আর মুখে বলে দিতে হয়। টিভি সিরিয়ালে তো অহরহ এরকম দেখায়। কারো মনের ভাব কেউ না কেউ ঠিক বুঝে নিচ্ছে, সে যতই মিথ্যে কথা বলুক। রাহুল কি পারবে সঠিক অজুহাত দিতে?
মনের মধ্যে একটা মিশ্র অনুভুতি, মন অনেক হাল্কা লাগছে রিয়ার সাথে মনমালিন্য মিটে যাওয়াতে। আমি অনেক ভেবে ফেলেছিলাম, সেই তুলনায় সেরকম কিছু এগোয়নি। একদিকে মন খুব খারাপ লাগছে যে এরকম একটা কাজ করে ফেললাম, নিজের অজান্তে, এ যেন চুরি করে ধরে পরে যাওয়ার মতন। তাও যদি গৃহস্তের চুরি করতাম, দু ঘা খেতাম তাতেও শান্তি ছিলো, কিন্তু এই চুরি হচ্ছে মেয়ে হয়েও ছোটবেলায় লুকিয়ে পর্ন বই পড়ার সময় বাবা মার হাতে ধরা পরে যাওয়ার মতন, এই চুরি হচ্ছে খুব ভালো ছেলের ঝোঁকে পরে লেডিজ হস্টেলে উকি মেরে ধরা পরে যাওয়ার মতন। মৃত্যুদন্ড না কিন্তু একটা ঘেন্না তাচ্ছিল্য সারাজিবন বয়ে বেড়াতে হবে।

ঘুম আসছেনা। সেটাই স্বাভাবিক, এই চিন্তা সহজে যাবেনা। আর আমি কখনোই গুছিয়ে চিন্তা করতে পারিনা। গুছিয়ে চিন্তা করলে হয়তো একটা সমাধানে আসতে পারি কিন্তু বেশি চিন্তা করলেই আমার মাথা জট পাকিয়ে
যায়। যেমন এখন হচ্ছে। কিন্তু এটাই সময় আমার। এই সময় ছাড়া চিন্তা করবো কখন?

কিছুক্ষন এইভাবে চিন্তার শ্রোতে ভেসে যাচ্ছিলাম। খুব মনে করতে চেষ্টা করছিলাম কি হয়েছিলো, কিন্তু সব চেষ্টা বৃথা। ভাবছি ঘুমিয়ে পরি, হয়তো নতুন সকাল, নতুন রোদ, নতুন দিন আমাকে নতুন শক্তি দেবে, এই ভুলকে নিজের মনে মানিয়ে নেবো, এটা আরো হাল্কা হয়ে যাবে, আবার স্বাভাবিক জীবন যাপন করবো।
ভাবি এক, আর হয় আরেক। উপর থেকে বেহালার করুন সুর ভেসে এলো। আজ যেন আরো করুন। এতদিন চুপ ছিলো এই বেহালা, আজ কেন আবার শুরু করলো। হয়তো আমার ওকে ওইভাবে চলে যেতে বলা উচিত ছিলোনা। অসম্ভব ছিলোনা ওকে বুঝিয়ে দূরে সরিয়ে রাখা। ভুল হয়ে গেছে। শারীরিক উত্তেজনায় তো মানুষ অনেক ভুল করে। কিন্তু আমি দুম করে ওকে চলে যেতে বললাম। ওর মুখ দেখিনি, কিন্তু গলা মনে করে বুঝতে পারছি ও খুব দুঃখ পেয়েছে।
যাবো একবার বুঝিয়ে বলবো? রিয়া তো ঘুমিয়ে পরেছে। আশা করি আজকেই সব মিটিয়ে নিতে পারবো। রিয়ার সাথে যেমন মিটে গেছে।
হাউসকোটটা গায়ে দিয়ে নিলাম। বাইরে হাল্কা ঠান্ডা ভাব। সন্তর্পনে দরজা লক করে ছাদের দিকে উঠছি। বুক দূরদূর করছে। বেহালার আওয়াজ জোড়ালো হচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন গোপন অভিসারে যাচ্ছি।

ঘরের বাইরে কিছুক্ষন থমকে দাড়ালাম। নক করবো? এখানে এসে ফিরে যাবো? যদি আবার দুর্বল হয়ে যাই?
মনের জোর সঞ্চয় করে দরজায় নক করলাম। দরজা খোলা। তাও হাল্কা করে ঠেলে ফাঁক করলাম। এতই বিভোর যে কারু উপস্থিতিও ওর সঙ্গীতে ব্যাঘাত ঘটাতে পারছেনা। দরজা আরেকটু ফাক করলাম। উঁকি দিলাম। একি কেউ তো নেই ঘরে? ঘর থেকেই তো বাজছে বেহালা। ভালো করে খেয়াল করে দেখলাম, দুটো ছোট ছোট বক্স বাজছে। ছোট হলে কি হবে ঘর গমগম করছে। এমা একি? আমি কি সাঁতপাচ ভেবে চলে এলাম ওপরে। এর আগের দিনগুলোও কি এই বক্সই বাজছিলো। আর আমি কত কি না কি ভাবছিলাম। ছবির ফ্রেমটা দেখলাম একটা বেডশিট দিয়ে ঢাকা।
রাহুল কোথায় গেলো? যাক ফিরে যাই? ঘুরতেই সোজা রাহুলের মুখোমুখি। আমি ভুত দেখার মতন চমকে উঠলাম। ওর গায়ের থেকে কেমন একটা পোড়া পোড়া গন্ধ বেরোচ্ছে, সিগেরেটের কাছাকাছি কিন্তু সিগেরেট না। সিগেরেটের গন্ধ আমি চিনি। বিড়ি হবে কি?

‘চলে যাচ্ছো?’
আমি ওর দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালাম।
ও বলছে ‘আমি জানতাম তুমি আসবে?’
আমি ভুলে যাওয়ার আগেই ওকে জিজ্ঞেস করলাম ‘বেহালা তুমি বাজাও না?’
‘এখন আমি না, এটা রেকর্ড করেছি সন্ধ্যেবেলা, নিজেই বাজিয়ে, রাত হয়েছে তাই চালিয়ে শুনছিলাম কেমন হয়েছে? নিজে বাজানোর সময় অনেক সময় ভুলগুলো বোঝা যায় না তাই...।’
আমি আস্বস্ত হোলাম। তারপর মনে সাহস এনে ওকে বললাম ‘তুমি ব্যস্ত না থাকলে কয়েকটা কথা বলার ছিলো।’
‘এই রাতে আর কি ব্যাস্ত থাকবো? তবে এখনো কি কিছু বলার আছে?’ রাহুল মুখটা ঘুরিয়ে নিলো।
আমি চুপ করে রইলাম।
‘চলুন ভিতরে বসবেন, এখানে ওঁশ পরছে। যদিও আপনারই বাড়ি তাও আমার ভালো লাগবে যদি ভিতরে এসে বসেন?’ বুঝলাম যে চলে যেতে বলাতে ওর অভিমান রয়ে গেছে। এরকম নরম সরম ছেলে সত্যি আমার রিয়ার উপযুক্ত নয়। রিয়া ওকে এই হাত দিয়ে কিনবে ওই হাত দিয়ে বেচে দেবে।
আমাকে একটা ছোট টুল দিয়ে নিজে মেঝেতে পাতা বিছানার ওপর বসলো।
গলা খাকারি দিয়ে বললাম ‘যদি তোমাকে থেকে যেতে বলি তুমি থাকবে তো?’ কথাটা বলে বুঝলাম আমার মনের দুর্বলতাটা অনেকটাই ফুটে উঠেছে। আরেকটু গাম্ভির্য্য দরকার ছিলো।
ও মাথা নিচু করে বসে আছে। পাদুটো হাটু থেকে ভাজ করা, হাত দুটো পায়ের ওপর রেখে ভারসাম্য রেখেছে। চোখদুটো কেমন লাল দেখাচ্ছে, সাথে ভাসা ভাসা। বড় বড় চুলগুলো কপালের ওপর এলোমেলো ভাবে এসে পরেছে। ইস এমন সুন্দর আমার একটা ছেলে হতে পারতো, আর আমি কি করলাম। আমার মতন হয়তো ওও কেঁদেছে তাই চোখ লাল।
‘এরপর কি করে থাকবো বলুন তো, তুমি বলেছো বলে বলছি না? এক হাতে তো আর তালি বাজেনা। আমিও নিজেকে সামলাতে পারতাম। তোমার এই ক্ষনিকের ভ্রমটাকে আমি প্রশ্রয় দিয়ে কোন পথে নিয়ে গেলাম। সারাদিন এই কথা ভাবছি, আর ভাবছি তোমার মুখোমুখি হবো কি করে? তুমি আর কিছু বলবে না আমি চলেই যাই। কি দরকার জীবন কে জটিল করে।’
‘দেখো আমি তোমাকে বাঁধা দিতাম না, হয়তো তুমি ঠিকই ভাবছো, কিন্তু রিয়ার কথাও ভাবো...’
‘আমি তো তোমাকে বললাম যে রিয়া আর আমি...।’
‘আমি জানি, কিন্তু ও তো তোমাকে ভালো বন্ধু ভাবে, ও যে আবার একা হয়ে যাবে।আর তুমি চলে গেলে আমিই বা কি কারন বলবো? এত দায়িত্ব তোমাকে দেওয়া হবে বলে ভাবা হচ্ছিলো... সেখানে আমার ভুলের জন্যে...।’
‘ওই ভাবে দেখবে না, তোমার ভুল একার না, আমিও ভুল করেছি, লোভ সামলাতে পারিনি। কিন্তু আমি কিছুতে অভিনয় করতে পারিনা, আমার ভয় হচ্ছে, যদি রিয়া কিছু বুঝে ফেলে?’
‘কি বলছো আমি বুঝতে পারছিনা?’
‘কি উত্তর দেবো আমি তাও জানিনা?’
‘তুমি যা ইচ্ছে আমাকে বলতে পারো, আমি জানি যেটা হয়েছে সেটা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার না এত সহজেই এটাকে মুছে দেওয়া যায়না। তুমি নির্ভয়ে বলতে পারো।’ আমি আমার আত্মবিশ্বাস ফিরে পাচ্ছি।
রাহুল কিছুক্ষন মাথা নিচু করে রইলো তারপর মাথা তুলে আমার দিকে হতাশ একটা দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো ‘আমি যে তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি। সন্ধ্যে থেকে লড়ে যাচ্ছি, নিজেকে বোঝানোর চেষ্টা করছি কিন্তু মন বুঝছেনা।’
আমি পাথরের মতন হয়ে গেলাম। কি উত্তর দেবো এই কথার।
রাহুল কিছুক্ষন চুপ করে বসে রইলো তারপর হঠাত আমার পা জড়িয়ে ধরলো। ‘হয়না এটা কি হয়না? বয়েসটাই কি সব? স্বামিহারা মহিলাদের কি মনে প্রেম নেই, ভালবাসতে নেই?’
আমি ক্ষিন স্বরে বললাম ‘এ হয়না? আমাদের সমাজে এ সম্ভব না?’
‘কেউ যদি না জানতে পারে?’
‘সেটা হয়না? আমি কোনদিন তোমাকে সেই চোখে দেখতে পারবো না। তুমি আমার মেয়ের বয়েসি। এক ভুল করে নিজের ভিতরে জ্বলছি আরেকটা আমি করতে পারবোনা।’
‘আপনি তো নিজেকে দেখতে পাননি, আমি দেখেছি আপনার ভিতরে কত ভালোবাসা, কত প্রেম। তাও আপনি সমাজের কথা, মেয়ের কথা ভেবে নিজেকে বঞ্চিত করছেন সাথে আমাকেও। সামান্য যত্ন নিলেই আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি এই সম্পর্ক। একবার সুযোগ দিয়ে দেখুন অভিযোগ করতে পারবেন না।’
‘সেই অবকাশ নেই, যে জিনিস আমি চিন্তাই করিনা সেটাকে জোর করে মনে গেথে দেওয়ার চেষ্টা করে লাভ নেই। তুমি বলছো আমি শুনছি ব্যাস এইটুকুই। প্রেমের বয়েসেই প্রেম হয়, প্রেম মানুষ একবারই করে। সেটা আমি করেছি, সে এখন নেই, নতুন করে কাউকে নিয়ে ভাবতে পারবোনা। আর আমি তোমাকে কিই বা দিতে পারি? এর থেকে ভালো নয় কি তুমি তোমার বয়েস অনুযায়ি কাউকে পেয়ে যাও। আর খোঁজার দরকারও হয়না, সে নিজের থেকেই আসে।’
‘নিজের থেকেই তো এসেছে। তাই তো বলছি।’
‘আমার কথা ভুলে যাও প্লিজ। ক্ষনিকের আবেগে অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি, এর শাস্তি আমাকে পেতেই হবে, কিন্তু নতুন করে আর কাউকে মন দিতে পারবো না।’
‘সে আপনি ভুলে যেতে পারেন, আমি পারবোনা। আপনার মনেও যেমন একজনই, আমার মনেও আপনি চিরকাল থাকবেন। হয়তো না পেলেই সেই থাকাটা স্বার্থক হবে।’
আমি এসেছিলাম ওর চলে যাওয়া আটকাতে। কিন্তু নতুন করে অস্বস্তিতে পরতে হোলো। সত্যি বলছি ওর জন্যে আমার শরীর জাগতো, এখন আমার মায়া হচ্ছে, কিন্তু প্রেম কখনোই নয়। ওর এই আচরনে আমার রিতিমত অস্বস্তি হচ্ছে। কিন্তু ছেলেটা ভালো তাই আর নতুন করে কোন রুক্ষ কথা বলতে চাইছিনা। অন্য কেউ হলে এই নিয়ে আমাকে অনেক ব্ল্যাকমেল করতে পারতো, ইচ্ছে না থাকলেও বারবার মিলিত হতে হোতো।
‘তুমি যাই বলো, তুমি কিন্তু যাচ্ছোনা এখান থেকে।’ আমি প্রায় অভিভাবকের সুরে ওকে বললাম।
‘না। সেটা আর সম্ভব না। দয়া করে আর আমাকে অনুরোধ করবেনা।’
‘তুমি কি স্থির করে ফেলেছো যে তুমি চলে যাবে?’
‘আপনার সাথে একবার কথা হবে জানতাম সেই জন্যে সিদ্ধান্তটা নিইনি, কিন্তু এখন আমার আর কোন সংসয় নেই?’
‘রিয়াকে কি বলবে?’
‘সেটা নিয়ে চিন্তা করবেন না। আমি ঠিক ওকে ম্যানেজ করে নেবো।’
‘তুমি কিন্তু জেদ করছো?’
‘তুমি করছো না? তুমি কি একাই পারো জেদ করতে?’
‘আমি কি বলছি আর তুমি কি বলছো? এটা কি সম্ভব? মনের জানলা কি সবার জন্যে খোলে?’
‘সকালে আপনি আমাকে স্যর ভেবেছিলেন। ক্ষনিকের জন্যে হলেও, সেরকমই ভাবতে পারেন না?’
‘ভাবলেই কি প্রেম চলে আসবে? সে একরকম আর তুমি একরকম। মানুষ মাত্রই ভিন্ন হয়? সেখানে আমি তোমাকে কি করে বসাবো? আর তুমি ভালো করে জানো, সকালের কাজটা ঠিক না ভুল?’
‘আমি কিছু জানিনা শুধু জানি আমি আপনাকে ভালোবাসি ব্যস এইটুকু বলতে পেরে আমি ধন্য। এর সাথে আমার থাকা না থাকা, রিয়ার ভালো লাগা সব যদি আমি মেনে চলি আমি কি পাবো? সারাক্ষন দূর থেকে আপনাকে দেখা ছাড়া।’
‘আমি জানিনা, তবে এটা আমি অনুরোধ করেছিলাম যে সকালের ঘটনার জেরে তুমি চলে গেলে আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারবোনা। কিন্তু এরপর আমার আর কিছু বলার নেই। যেটা সম্ভব না সেটা জর করে করানো যায় না। আমার মনে তোমার জন্যে কোনদিনই প্রেমিকের স্থান হবেনা। এটা তো শরীরের ব্যাপার না এর সাথে মন আত্মা সব জড়িত।’
‘শরীরের ব্যাপার হলে কি রাজি হোতেন?’
আমি চুপ করে গেলাম, পাকা উকিলের মতন ও আমার কথা ধরেছে।
একটু ভেবে জবাব দিলাম ‘তুমি যদি আবার ভুল করতে চাও বা আমাকে এইভাবে শাস্তি দিতে চাও তাহলে আমি বাধ্য হবো?’
‘আমি জোর করতে চাইনা তোমাকে? জোর করে মানুষ ভালোবাসা কিনতে পারেনা। ইতিহাস এর সাক্ষী। ‘আমি তোমার চোখে কামনা দেখতে চাই শুধু আমার জন্যে, আর কারো জন্যে না। জীবনের প্রথম, তাও প্রক্সি দিলাম। এই খেঁদটা আমার মনে থেকে যাবে।’
‘সেটা তো সম্ভব না? তুমি ভালো করেই জানো।’
‘কেন নয় সেটাই বোঝার চেষ্টা করছি? একবার ভুল করে হয়েছে, সেই ভুল শুধড়ে তো দুজন দুজনকে নতুন করে চিনে নিতে পারি? না হয় কোন নাম হোলো না এই সম্পর্কের। কিন্তু পৃথিবীতে এমন জিনিস আগে হয়নি তাতো নয়। শুধু সামান্য যত্ন নিতে হবে, যাতে এটা সমাজের চোখে ধরা না পরে? সেটাও খুব কঠিন নয়?’
‘তুমি কি আমার শরীর চাইছো?’ আমি ওকে দৃঢ় ভাবে জিজ্ঞেস করলাম।
‘মন চাইলে সম্ভব না বলছো, শরীরের মাধ্যমেই মন ছুতে চাইছি তোমার? তোমার তো যৌবন আছে, শরীরও জাগে তাহলে নিজেকে বঞ্চিত করছো কেন?’
‘আমার কাউকে খুন করার ইচ্ছে করলেই কি আমি করতে পারি?’
‘খুন তো সেইভাবেই হয়? কারো তো খুন করতে ইচ্ছে করে।’
‘সবাই পারেনা? আমি তো নাই’
‘তুমি নিজেকে সেইভাবে দেখছো তাই। ইচ্ছে করলে তুমি সব পারো, তোমার ইচ্ছে অনিচ্ছেই সব। দৈহিক ভালবাসাও এক প্রেম। সেই ভালবাসার অনেক রিতিনিতি আছে, যা আমি তোমাকে শেখাতে পারি দেখাতে পারি, শরীর দিয়ে কিভাবে মন ছোয়া যায় সেটা আমি জানি।দুজনে মিলে অনেক অচেনাকে আবিষ্কার করতে পারি।’
‘কি করে? এই তো বললে প্রথম বার তোমার?’
‘আমি ভাবতে পারি? দৈহিক মিলনও এক শিল্প। সেটাকে শিল্পের মতন কি করে করতে হয় আমি ভাবতে পারি।’
আমি উঠে দাড়ালাম। কথার পিঠে এই কথা এসে গেছিলো। তাই ওকে প্রশ্রয় না দেওয়ায় ভালো। রাহুল ম্লান হাঁসলো।
‘তুমি থাকবে কি না থাকবে তোমার ইচ্ছে’ বলে আমি দরজার দিকে পা বাড়ালাম।
‘তোমার ইচ্ছে হলে আমার দরজা খোলাই আছে।’
‘আমি ভেবেছিলাম তুমি অন্যরকম ছেলে, কিন্তু সাধারন যে কেউ যেরকম রিএকশান করতো তুমি তাই করলে। তুমি আমাকে শরীরের লোভ দেখাচ্ছো।’ আমি শ্লেষ নিয়ে এই কথাগুলো ওর উদ্দেশ্যে বললাম।
ও চুপ করে মাথা নিচু করে নিলো আর স্বগোতক্তির মতন বললো ‘এই পৃথিবী আমার জন্যে না, কেউ আমার কথা বুঝলো না।’
আমি থমকে দাঁড়ালাম। কি বলতে চাইলো? জিজ্ঞেস করলাম কি বলতে চাইছে ও?
‘তুমি খাঁদে তলিয়ে যাচ্ছো, আমি হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলাম, আমাকে দোষ দিয়ে চলে যাচ্ছো। আজকের আগে কি আমার আচরন এরকম দেখে্ছো? আজকে আমি ছিলাম বলে, অন্য কেউ হলে কি হোত? কাল আবার তোমার এরকম হবেনা তুমি হলফ করে বলতে পারো?’
কথাগুলো আমার সেই স্বপ্নের সাথে মিলে যাচ্ছে। ক্রমশঃ দুর্বল হয়ে পরছি, ভাবছি নিয়তি কি এটাই চাইছে? তবু মুখে বললাম ‘না পারিনা? কিন্তু নিজেকে নিয়ন্ত্রন তো করতে হবে? সেই বয়েস আমার হয়েছে নিশ্চয়?’
‘সেখানেই আমি আপত্তি করছি?সেটা তুমি বুঝছোনা। এই ভাবে নিজের ইচ্ছে চেপে রাখলে একদিন না একদিন সেটা বিস্ফোরন করবে, তখন স্থান কাল পাত্র দেখবে না। তখন কি হবে?’
আমি চুপ করে রইলাম।
‘ঠিক আছে তুমি যাও। আমি আর কিছু বলবো না।’ একটা বালিশের মধ্যে মুখ গুজে দিলো ও।
আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলাম। কতক্ষন জানিনা। শরীর ভিতরে ভিতরে জাগছে। কিন্তু প্রচন্ড ভয় লাগছে, যদি কোন জটিলতায় জড়িয়ে পরি? এতো আমার থেকে অনেক ছোট। এর সাথে কি করে? আবার কেউ বলছে, বয়েস দেখে কি হবে, লুকিয়ে চুরিয়ে শরীর সুখ পেলে ক্ষতি কি? এই ছেলেতো আর পাড়ায় গিয়ে বলবেনা, বা রাস্তার লোফার ছেলেও না। শুধু বয়েস দেখে পিছিয়ে যাচ্ছিস?’ মনে পরে যাচ্ছে আমাদের বাড়ীওয়ালির কথা। একদিন দুদিন, তারপর তো লোকে বুঝতে পারবেই। সেরকম করে না করলেই হয়। যখন ইচ্ছে হবে রাতের অন্ধকারেই তো অনেক সুযোগ। কেন সু্যোগ হাতছারা করবি? নাঃ আজ থাক একটু ভাবি, সময় তো আছেই, এগিয়ে গেলেই তো সব পুর্ন হয়। কাল যদি ভোরের আলোয় ও অনুতপ্ত হয় তোকে এই প্রস্তাব দেওয়ার জন্যে? এমন সু্যোগ হাতছাড়া করবি? তোর চোখের তলার কালি, তোর মনের অসুখ সব সেরে যাবে, আর ভাবিস না এগিয়ে যা। তোর আর কে আছে? মেয়ে? সেও দুদিন পরে অন্যের ঘরে চলে যাবে। তারপর? তুই একা একা কিভাবে কাটাবি? আর বেশিদিন নেই এই আগুন তোর মধ্যে, করলে আজ নাহলে কখোনোই পাবিনা।
হৃদপিণ্ডের আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি, আমি এক পা এক পা করে এগিয়ে যাচ্ছি রাহুলের দিকে। আমার আওয়াজ পেয়ে রাহুল ঘার ঘুরিয়ে দেখছে। জীবনে প্রথম সজ্ঞানে অন্যায় করতে চলেছি। পার্থকে ঠকাতে চলেছি। রিয়াকে ধোঁকা দিচ্ছি, নিজের শরীরের ক্ষিদের জন্যে।
মত্ত হস্তিনির মতন ধিরে ধিরে ওর পাশে গিয়ে বসলাম। রাহুল বোঝার চেষ্টা করছে আমার মনের ভাব, হয়তো বুঝতেও পারছে, কিন্তু আত্মবিশ্বাস পাচ্ছেনা নিজের থেকে এগোতে, হয়তো ভাবছে আমি অসুস্থ বোধ করছি।
আমি থরথর করে কাঁপছি। চোখ বুজে আসছে উত্তেজনায়, একহাত দিয়ে রাহুলের একটা হাত চেপে ধরলাম। তারপর ওর বুকের মধ্যে ঢলে পরলাম। আমার পক্ষে বেশি উত্তেজনা হয়ে গেছিলো তাই জ্ঞান হারিয়েছিলাম।
চোখ খুললাম রাহুলের বিছানায়। চোখ মুখ, কানের দুপাশ ভেজা, টেবিল ফ্যানটা জোরালো আওয়াজ করে ঘুরছে। আমি উঠতে গেলাম রাহুল আমাকে চেপে শুইয়ে দিলো। ‘উঠবে না, আবার মাথা ঘুরে যাবে।’
আমি তাও উঠে বসলাম বালিশে ঠেস দিয়ে। রাহুল আমার দিকে তাকিয়ে আছে, মুখে হাসি।
‘ভালো ডাক্তার দেখাতে হয় তো?’
আমি চুপ করে রইলাম। হাটু ভাজ করে বসার ফলে গুদের ভিতর একটা চাপ সৃষ্টি হয়েছে, তাতেই বুঝতে পারছি বেশ ভিজে গেছে, এখনো সেই আবেশ আছে শরীরে। মন আবার প্রমাদ গুনছে। ভাবছে এই অচেনা ছেলের সাথে এইভাবে ওর বিছানায়, এতো বাজারের বেশ্যাদের মতন ব্যাপার। কিন্তু উত্তেজিত শরীর সব চিন্তা ঢেকে দিচ্ছে। ঘনঘন নিঃশ্বাস পরছে আমার। রাহুল আমার কপালের ওপর থেকে চুলগুলো সরিয়ে দিচ্ছে আঙ্গুল দিয়ে আমি চুপ করে বসে আছি। ওর আঙ্গুলের স্পর্শ আমার মাথার ভিতর পর্যন্ত দাগ কেটে দিচ্ছে। আমার দিকে এগিয়ে আসছে। ‘শরীর ভালো লাগছে, ঘুমোবেন না?’
এই কথাটা শুনে কেমন যেন বিরক্ত লাগলো। ঘুমানোর কথা ও বলছে কেন? যেনতেনপ্রকারেন আমাকেই এগোতে হবে, ওর যেন ইচ্ছে নেই, বেশি ন্যাঁকা ন্যাঁকা।
আমি বিরক্ত হয়ে উঠে যেতে গেলাম, রাহুল আমাকে চেপে শুইয়ে দিলো, আমার শরীরের ওপর শুয়ে পরলো। আমি বাঁধা না দিয়ে ওর জন্যে অপেক্ষা করছি। আমার মুখের ওপর ও মুখ নিয়ে এলো আমি চোখ বুজে নিলাম। বুঝলাম ঠোঁট দিয়ে আমার ঠোঁটের সন্ধান করছে। আমি মেলে দিলাম আমার অধরোষ্ঠ। দুজনের লাল এক হয়ে যাচ্ছে। খেয়াল করলাম আমি ওকে নিজের সাথে চেপে ধরছি, ওর মাথার চুলে আঙ্গুল বুলাচ্ছি। নাচতে নেমে আর ঘোমটার কি দরকার। সময় নিয়ে নিয়ে আমার কান গলা ঘার চেটে চুমু খেয়ে আমাকে নিংরে নিচ্ছিলো। এখন বুকের খাঁজে নাকগুজে দিয়েছে। আমার হাত চেপে ধরেছে, আমি শিহরন সহ্য না করতে পেরে ওকে সরিয়ে দিতে চাইছি তাই। কখন দুজনে পুরো উলঙ্গ হয়ে গেছি খেয়ালই নিয়ে। সত্যি ও শিল্পির মতনই আমার শরীরের মধ্যে জিভ আর আঙ্গুলের আকিবুকি কেটে চলেছে। মনে হয়না শুধু শিল্পি সত্তা দিয়েই এটা সম্ভব, অভিজ্ঞতা ওর আছে। আমার অভিজ্ঞতা তাই বলছে।প্রথম প্রথম আমাদের যখন হোতো, আমরা ভাবতাম রাগমোচনই সব, আর এমন ভাবে এগোতাম যেন কেউ তাড়া করছে। ধিরে ধিরে সেটা সময় নিয়ে যখন শুরু করেছিলাম সেই সুখটার জাতই আলাদা।
কিন্তু এ কেরকম করছে তাতে আমার কিছু যায় আসেনা। কিন্তু ও নাড়ি শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বিক্রিয়া সন্মন্ধে জানে। যে ভাবে ও আমার ঘারে মুখ ঘসছে আর মেয়েলি ঘ্রান নিচ্ছে, তাতে তাই বোঝা যায়। আনাড়ি ছেলে হলে চুমু খেতো। জানিনা আর জানার দরকারও নেই। এখন আমি সুখের সমুদ্রে সাতার কাটছি, আর পিছনে ফিরে দেখার সুযোগ নেই। ভালো আর মন্দের বিচারে মন্দ জিতলো। সুখের সাথে, আশঙ্কা এখন আমার নিত্তদিনের সঙ্গি সেটা নিঃসন্দেহ। কারন আমি সংস্কার ভেঙ্গেছি। আজকে আমি সঠিক বুঝতে পারছি অবৈধ সম্পর্ক অনেক সময় ইচ্ছে করলেও না জড়িয়ে পারা যায় না, তাই আমার প্রাক্তন বাড়িওয়ালির আচরন নিয়ে আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। উনি অসিম সাহসিনী, তাই মাথা উঁচু করে হাঁটে, আমি তা নই, আমি মধ্যবিত্ত মানসিকতার, দুর্বলচিত্ত, তাই আমাকে পাঁপবোধ সরিয়ে রেখে এই রাস্তায় বারবার আসতে হবে। আমি জানি এই মুহুর্তে আমার তরফ থেকে এটা শেষবারের মতন দৈহিক মিলন না।
[+] 1 user Likes ronylol's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: হোম ডেলিভারি by avi5774 - by ronylol - 10-06-2019, 07:25 PM



Users browsing this thread: