Thread Rating:
  • 11 Vote(s) - 3.09 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery হোম ডেলিভারি by avi5774
#5
রিয়া ঘরে ঢুকেই বললো, ‘মা আমি কিছু খাবোনা। স্যারের বাড়িতে আজকে সবাইকে খাইয়েছে। স্যারের নাতনি আমেরিকায় একটা রিসার্চ করে খুব নাম করেছে, কালকের পেপারে দেখতে পাবে।’
তারপর হঠাত করে জিজ্ঞেস করলো ‘তোমাকে কেমন যেন দেখাচ্ছে। কিছু হয়েছে নাকি?’
আমি শতর্ক হয়ে গেলাম। দুটো ঘটনা হয়েছে আজকে। কোনটার ছাপ পরেছে বুঝতে পারছিনা।
‘না কিছু হয়নিতো।’
আমি কিছু বলার আগেই সুবলা হরহর করে দুপুরে পাগলের গল্পটা বলে দিলো।
‘তোমাকে বলেছি মা তুমি একটা লোক রাখো। হোম ডেলিভারি তো ভালোই চলছে। নাহয় আমি কয়েকটা টিউশানি করবো, তাতে আমারও লাভ, আমার চর্চা বাড়বে।’

‘আরে এসবের জন্যে বিশ্বস্ত লোক চাই, এগুলো কি যাকে তাকে দিয়ে হয় নাকি?’
‘তুমি আর বিশ্বস্ত লোক খুঁজে পাবে না। কেউ ই বিশ্বস্ত হয় না, কাউকে ভরসা করে দেখতে হয়। সবাই যে ঠকায় তাও নয়।’


মাসখানেক গতানুগতিক ভাবে কেটে গেলো। জীবন বয়ে চলেছে। কোন কুলে গিয়ে ঠেকবে জানিনা, এ সমুদ্রের তো কুল নেই মনে হয়, তাই ভাসিয়ে দিয়েছি নিজেকে। মেয়েটা নিজের পায়ে দাড়াক, সংসার করুক এটাই একমাত্র উদ্দেশ্য।

সন্ধ্যেবেলা বেলের আওয়াজে নিচে দেখলাম অমিয়দা আর একটা ছেলে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
আমি চাবি ফেলে দিলাম নিচে।
বুঝতে পারলাম, বাছাই করে আমার জন্যে ভাড়াটে নিয়ে এসেছেন। উনি যখন দায়িত্ব নিয়ে এনেছেন, আমার চিন্তা নেই।
দরজা খুলে দাঁড়িয়ে রইলাম, ওদের অপেক্ষায়। স্বয়ং লক্ষ্মী ঠাকুর যেন পা ফেলে উঠে আসছেন।
সিড়িটা ঘুরতেই আমার চোখ আটকে গেলো নবাগতর দিকে। এই তো সেই ছেলেটা, সেদিন দুপুরের।
সেই চোখ, সেই টিকালো নাক। ১৫ই আগষ্ট খেলায় চোট পেয়ে মাঠের ধারে শুয়ে কাতরাচ্ছিলো। সঙ্গি খেলোয়ার আর পাড়ার ক্লাবের অনান্য ছেলেরা ওর শুশ্রূষা করছিলো। এই তো সেদিনের কথা। ছিপছিপে চেহারা, সেই টীকালো নাক আর ভাসা ভাসা যন্ত্রনাকাতর দুটো চোখ আমার মনে গেথে গেছিলো। ইচ্ছে করছিলো ওর মাথাটা কোলে নিয়ে ওকে যন্ত্রনা ভুলিয়ে দি। সেই চোখগুলোকেই ও দিনের দিনের পর দিন নিজের দিকে সপ্রশংস তাকিয়ে থাকতে দেখেছে।
এতো সেই চোখ, সেই টিকালো নাক, সেই টানটান মেদহীন চৌক মুখমন্ডল।
‘নে নিয়ে এলাম তোর লোক।’
আমি চমকে উঠলাম কি বলছে অমিয়দা!
‘আর দেখ বেছে বেছে কেমন বের করেছি ঠিক যেন পার্থর মুখ বসানো।’
ছেলেটাও বলে উঠলো ‘আরে ম্যাডাম সেদিন দুপুরে তো...।’
আমি মুখের উপর এসে পরা চুলির কুচি সরাতে সরাতে কোনরকমে বললাম ‘হ্যাঁ আমিও চিনতে পেরেছি, যা উপকার করেছিলেন সেদিন...।’
ওদেরকে ঘরে বসতে বলে সুবলাকে চা বানাতে বললাম। বুকের ভিতরটা কেমন ধক ধক করছে। কথা আটকে যাচ্ছে।
মনে পরে যায়, পার্থর সাথেও প্রথম দিনে আমি কিছুই বলতে পারিনি। কথা আটকে গেছিলো। ও অনেক কথা বলছিলো আমি কিছুই উত্তর দিতে পারিনি। পরের দিন টুম্পাকে দিয়ে একটা চিঠিতে সব খুলে বলেছিলাম ওকে। মনের মানুষকে কাছে পেয়ে কেমন বাক্যহারা হয়ে গেছিলাম।
জল খেয়ে নিলাম। মনের আন্দোলনটা চাপা দেওয়ার জন্যে। চায়ের জোগানের অছিলায় একটু সময় নিয়ে নিজেকে সামলাতে চেষ্টা করলাম।
সব ঠিক হয়ে গেলো। সামনের মাসের প্রথম থেকে ও এই বাড়িতে থাকবে। পরিচয়পত্র থানায় জমা দেওয়ার কাজকর্ম অমিয়দা করে দেবে।
ছেলেটা চাকরি খুজছে। খুব বড় পরিবারের ছেলে। মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতায় এসেছে। সেখানে ওদের নানাবিধ কারবার। প্রায় জমিদার বলা চলে। ওর দাদুর নামে বাজার, রাস্তার নাম এসব আছে। কিন্তু ও নিজে কিছু করতে চায়। তাই কলকাতায়। গান গাইতে ভালোবাসে, কবিতা লেখে, আঁকে। হাতের লম্বা আঙ্গুলগুলো দেখলে ওর শিল্পিসত্বার পরিচয় পাওয়া যায়।
বাড়ির চাপে বাধ্য হয়ে অঙ্ক নিয়ে উত্তরবঙ্গ ইউনিভার্সিটিতে পরাশুনো করেছে। এখানে চাকরি দরকার অন্য সখগুলোকে বাচিয়ে রাখতে।

ওরা চলে যেতে আমি চুপ করে বসে রইলাম। আমার মনে এরকম কেন হচ্ছে? হতে পারেনা কি; সম্পর্ক নেই তবু দুটো মানুষ একই রকম দেখতে। আর হলেই আমার এরকম সাতপাঁচ ভাবার কি আছে।
ও ওপরের তলায় ওর মতন থাকবে, আলাদা চাবি থাকবে ও আসা যাওয়া করবে। আমাদের তাতে কি? মাসের শেষে আমি ভাড়া পেলেই হোলো। আমিই পাগলের মতন এলোমেলো চিন্তা করছি। হিসেব করলে তো মিমির প্রায় সমবয়েসি বা একটু বড়।
[+] 1 user Likes ronylol's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: হোম ডেলিভারি by avi5774 - by ronylol - 10-06-2019, 07:17 PM



Users browsing this thread: