Thread Rating:
  • 90 Vote(s) - 2.98 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Erotic Thriller নন্দনা - NOT OUT (সমাপ্ত)
[Image: Polish-20230830-164439491.jpg]

(২)

অসাবধানতায় পা ফেললে যেমন পিছলে পড়ার ভয় থাকে, ঠিক তেমনভাবেই জীবনের কোনো বাঁকে এসে পরস্পরকে ভুল বুঝে এবং দূরদর্শিতার অভাবে ভুল করে ফেললে, সেই ভুলের মাশুল দিতে দিতে পুরো জীবনটাই শেষ হয়ে যায়। ভুলের পৃষ্ঠে ভুল তার পৃষ্ঠে ভুল একজোট হয়ে তৈরি হয় জীবনের এক নতুন সমীকরণ। যেখানে হয়তো সুর এবং তালের ছন্দপতন হতে হতে সেই কর্কশ ধ্বনিটাও একসময় শ্রুতিমধুর লাগে। যেখানে হয়তো সাত রঙের রামধনু তৈরি হয় না কখনো। যেখানে হয়তো ওই গাঢ় নীল রঙটাকেই আপন করে পেতে ইচ্ছে করে। যেখানে হয়তো আবেগের স্রোতে ভাসতে ভাসতে, কচুরিপানা আর শ্যাওলাতে মেতে উঠতে মন চায়। যেখানে হয়তো জীবনের তরী অস্তাচলের পথে ভেসে চলে উজানের ভ্রাম্যমান ভুলের মাশুল দিতে দিতে।

কোয়েশ্চেন পেপারে প্রতিটা অঙ্কের প্রশ্নের পাশে বাপ্পার লিখে নিয়ে আসা উত্তরগুলো মেলানোর পর নন্দনা দেখলো তার ছেলে একশো নম্বরেরই সঠিক উত্তর দিয়েছে। চিরকাল অঙ্ককে ভয় পেয়ে চলা বাপ্পা ম্যাথ এক্সামে কোনোদিন ষাটের উপর পায়নি। উত্তরগুলো যদি কলেজের অন্য কোনো বন্ধুর থেকে টুকে নিয়ে বসানো না হয়ে থাকে, (যদিও অত চতুর এখনো হয়নি তার ছেলে বা এই ধরনের গর্হিত কাজ সে কোনোদিন করবে না, সেটা ভালো করেই জানে তার মা) তাহলে এবার বাপ্পা পুরো একশো তে একশো পাবে। কথাটা ভেবেই মনটা খুশিতে ভরে উঠলো নন্দনার। আর এই অসাধ্য সাধন সম্ভব হয়েছে তার ভাসুর বিপুলবাবুর জন্য, এটাও মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতে লাগলো নন্দনা। কারণ বাপ্পার অঙ্ক পরীক্ষা যে ভালো হবে, এই ভবিষ্যৎবাণী আগেই করে গিয়েছিলেন তিনি।

বিকেলের দিকে ফোন এলো বন্দনা দেবীর। বাপ্পা তখন ঘুমোচ্ছে, নন্দনও শুয়েছিলো। ছেলের পাশ থেকে ফোনটা নিয়ে উঠে পাশের ঘরে চলে এসে কলটা রিসিভ করলো নন্দনা।

- "সকালবেলা তুই যখন ফোন করেছিলিস তখন কাজে এতটাই ব্যস্ত ছিলাম যে ঠিক করে কথা বলা হলো না তোর সঙ্গে। তাই এখন ফোন করলাম। তুই কি ফ্রী আছিস না বিজি?"  

- "হ্যাঁ ফ্রী আছি .. আমি তো শুয়েই ছিলাম, আর এ-কথা সে-কথা ভাবছিলাম। তুমি ফোন করেছো ভালো হয়েছে দিদিভাই, মাথাটা একটু হাল্কা হবে। বলো কি বলবে?

- "এ-কথা সে-কথা মানে? কাল রাতের কথা? তোর ভাসুরের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর কথা ভাবছিলিস?"

- "হ্যাঁ দিদিভাই .. আর কথাগুলো ভাবলেই আমার ভেতরটা অপরাধবোধে ভরে যাচ্ছে।"

- "কিসের অপরাধবোধ বোন? কার কাছে অপরাধবোধ?"

- "যদিও তুমি সকালে পবিত্রতা এবং অপবিত্রতা যে কতটা আপেক্ষিক এবং পুরোটাই পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে, এই বিষয়টা খুব ভালো করে বোঝালে দিদিভাই! তবুও কালকের রাতের ঘটনার পর নিজের কাছেই নিজেকে ছোট বলে মনে হচ্ছে মাঝে মাঝে। এছাড়াও মনে হচ্ছে আমি যেন আমার স্বামী এবং সন্তানকে অনিচ্ছা সত্ত্বেও ঠকিয়ে ফেললাম।"

- "আচ্ছা, তাই নাকি? এত কিছুর পর, এমনকি তোর ভাসুরের দিয়ে যাওয়া টাকাগুলো হজম করার পরেও নিজেকে ছোট বলে মনে হচ্ছে তোর? তাহলে বাড়িতে বসে কী করছিস? এখনই থানায় গিয়ে রিপোর্ট কর তোর ভাসুরের নামে। বল, যে ও তোকে জোর করে ভোগ করেছে। এতে তোর একটুও সায় ছিলো না এবং ব্যাপারটা তুই একটুও উপভোগ করিস নি। যা যা বেরিয়ে পড়, আর বসে থাকিস না।"

- "তুমি আমার উপর রেগে গেলে, তাই না? আরে আমি কি সেটা বলেছি নাকি? প্রথমটা অবশ্যই উনি আমার উপর জোর করেছিলেন, কিন্তু পরে তো আমিও .."

- "রেগে যাওয়ার মতো কথা বলবি, তো রেগে যাবো না? 'কিন্তু পরে তো আমিও ..' এই কথার মানে কি? অর্ধেক কথা পেটে আর অর্ধেক কথা মুখে থাকে তোর, এই জন্যই তো রাগ ধরে যায় আমার। প্রথমে ইচ্ছে না থাকলেও পরে ধীরে ধীরে তোর ভাসুরের আদর উপভোগ করেছিলিস তুই। এটাই বলতে চাইছিস তো? তাই যদি হয়, তাহলে আবার নিজের কাছে নিজেকে ছোট বলে মনে হওয়ার তো কোনো কারণ নেই! রইলো বাকি তোর স্বামী আর ছেলের কথা। যার স্বামী এতদিন ধরে একজন অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্ক রেখে তার স্ত্রীকে ঠকিয়ে যাচ্ছে, সেই স্বামীর প্রতি স্ত্রীর কিসের দায়বদ্ধতা? আর বাপ্পার কথা যদি বলিস, তাহলে বলবো সন্তানের প্রতি মায়ের দায়িত্ব অবশ্যই থাকা উচিৎ। কিন্তু তাই বলে নিজের শখ-আহ্লাদ জলাঞ্জলি দিয়ে নয়।"

- "তুমি হয়তো ঠিকই বলছো দিদিভাই। কিন্তু তবুও .. যাগ্গে বাদ দাও, তুমি আবার রেগে যাবে! এই জানো, আজকে না বাপ্পা অঙ্ক পরীক্ষায় একশোর মধ্যে একশো নম্বর ঠিক করে এসেছে। জানিনা রেজাল্ট বেরোলে কি হবে; কিন্তু আমার যে কি আনন্দ হচ্ছে, তোমাকে বলে বোঝাতে পারবো না। তবে রাতারাতি বাপ্পার অঙ্কের প্রতি ভীতি চলে যাওয়ার পেছনে কিন্তু ওনার হাত রয়েছে এটা আমি মানি। আচ্ছা বাপ্পার বাবার ব্যাপারে উনি যে কথাগুলো বলেছেন, তোমার কি মনে হয়, কথাগুলো সত্যি?"

- "একশো শতাংশ সত্যি, কারণ যে মানুষটা ভাইয়ের ছেলেকে ভালোবেসে নিজের তন্ত্রসাধনার ক্ষমতা উজাড় করে দিয়ে তার অঙ্ক পরীক্ষার ফল এত ভালো করে দিলো; সে নিজের ভাইয়ের সম্পর্কে মিথ্যে কথা বলবে না। আচ্ছা চিরন্তনের সব থেকে ভালো বন্ধু কে অফিসের সহকর্মীদের মধ্যে? যার সঙ্গে ও সবকিছু শেয়ার করে বা ওর অফিস ট্যুরে যাওয়ার ব্যাপারে যে অনেক কিছু জানতে পারে .. এরকম আছে কেউ?"

- "অফিসে তো কারোর সঙ্গেই খুব একটা বন্ধুত্ব নেই ওর। তবে ওই পাঞ্জাবি ভদ্রলোক মানে হার্জিন্দারের সঙ্গে বাপ্পার বাবার সদ্ভাব আছে বলে মনে হয়। কিন্তু কেনো গো দিদিভাই?"

- "ওকে একবার জিজ্ঞাসা কর .. দ্যাখ, ও যদি কিছু বলতে পারে তোকে চিরন্তনের ব্যাপারে .."

- "না না, উনাকে আর বাড়িতে ডাকছি না আমি বাপু! তোমাকে আজ সকালে বললাম না ওই দিনকার ঘটনার কথা! ইশ্ .. কি লজ্জা কি লজ্জা! এরপর উনার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলতেই আমার লজ্জা করবে .."

- "আরে ওকে বাড়িতে ডাকতে তোকে কে বলেছে বোকা মেয়ে? ওর ফোন নম্বর জানিস না? ফোন করে জানতে চাইবি। আমি বলছি এটা করে দ্যাখ, তাহলে একদম ঘোড়ার মুখের খবর পাবি। আচ্ছা শোন, এখন রাখি। একজন এসেছে, তার সঙ্গে আমাকে একটু বের হতে হবে।"

- "নম্বর তো আমার কাছে নেই, তবে ওর বাবার টেলিফোন ডাইরিতে নিশ্চয়ই পেয়ে যাবো। ঠিক আছে ভেবে দেখি, যদি মনে হয় তাহলে ফোন করবো। কে এসেছে গো দিদিভাই? আর কোথায় বেরোবে তুমি?"

- "বলবো বলবো এরপর একদিন তোকে সব খুলে বলবো। তুই আমার আদরের ছোট বোন। তোকে ছাড়া আর কাকে বলবো বল? আমার কথাগুলো শোনার পর তোর নিজেকে আর নিজের কাছে ছোট মনে হবে না বা অপরাধবোধেও ভুগবি না। চল, এখন রাখলাম টা টা .."

★★★★

তার জেঠতুতো দিদি বন্দনার কথা বলার ধরন এখন অনেকটাই পাল্টে গিয়েছে, এটা লক্ষ্য করেছে নন্দনা। আগে যেমন তারই মতো তার দিদি অনেক ধীরে ধীরে, রয়েসয়ে কথা বলতো; সেই তুলনায় এখন যেন কথার ফুলঝুরি ছোটে। আগের থেকে অনেক চৌকস আর স্মার্ট হয়ে গিয়েছে তার দিদিভাই। বেডরুমে ঢুকে নন্দনা দেখলো বাপ্পা তখনো ঘুমোচ্ছে। 'কালকে তো ছুটি, পরশুদিন ইতিহাস পরীক্ষা। থাক, আর একটু ঘুমোক। একটু পরে ঘুম থেকে তুলে পড়তে বসিয়ে দেবো ওকে ..' এই ভেবে স্টাডিরুমে গিয়ে টেবিলের উপর রাখা টেলিফোন ডায়েরিটা তুলে নিয়ে পাতা উল্টাতে লাগলো নন্দনা। তিন নম্বর পাতার প্রথম দিকেই হার্জিন্দারের নামটা চোখে পড়লো তার। নামটা দেখেই ধপ করে ডায়েরিটা বন্ধ করে টেবিলের উপর রেখে দিলো সে।

চেয়ারের উপর আনমনা হয়ে বসে পড়লো নন্দনা। নিজের মনকে বারংবার প্রশ্ন করে, দ্বিধা দ্বন্দ্বের পাহাড় পেরিয়ে, অশান্ত মনকে শান্ত করে অবশেষে ডায়েরিটা তুলে নিয়ে হার্জিন্দারের নম্বরে ফোন করলো সে।

টানা দু'দিন ধরে চলতে থাকা শ্রমিকদের বিক্ষোভ এবং ঘেরাও কর্মসূচি সামলে আজ দুপুরেই নিজের কোয়ার্টারে ফিরতে পেরেছে হার্জিন্দার। খাওয়া-দাওয়া করে বিছানায় মরার মতো ঘুমোনোর পর, একটু আগে উঠে বাথরুমে গিয়ে শেভিং করছিলো হার্জিন্দার। একাই থাকে পাঞ্জাবীটা, ফাঁকা বাড়িতে তাই জামাকাপড় পরার প্রয়োজন বোধ করেনি লোকটা আজপর্যন্ত কোনোদিন।

সম্পূর্ণ উলঙ্গ অবস্থায় বেসিনের সামনে দাঁড়িয়ে শেভিং করছিলো হার্জিন্দার। ফোনটা বাথরুমের মধ্যেই সেলফের উপর রাখা ছিলো। মোবাইলের ঘন্টা বাজতে থাকায় রেজারটা গাল থেকে সরিয়ে অত্যন্ত বিরক্ত হয়ে "আভি কৌন ডিস্টার্ব করনে কে লিয়ে ফোন কিয়া রে মাদারচোদ!" এইরূপ স্বগতক্তি করে কলটা রিসিভ করলো পাঞ্জাবীটা।

- "হ্যা..হ্যালো এটা হার্জিন্দার জি'র ফোন নাম্বার তো?"

গলার আওয়াজ শুনেই পাঞ্জাবীটা অনুধাবন করতে পারলো এটা কার ভয়েস। তবুও নিশ্চিত হওয়ার জন্য জিজ্ঞাসা করলো, "কে বলছেন?"

- "আজ্ঞে আ..আমি নন্দনা বলছিলাম .. আপনার সহকর্মী চিরন্তনের স্ত্রী .."

"নন্দনা" নামটা শুনেই বাঁড়াটা ঠাটিয়ে উঠলো হার্জিন্দারের। একমুখ শেভিং ক্রিম মেখে চুলসর্বস্ব গাট্টাগোট্টা চেহারার উলঙ্গ পাঞ্জাবীটা বাথরুমের মধ্যে দাঁড়িয়ে নিজের লোমশ আখাম্বা শক্ত-সবল ল্যাওড়াটা হাতে নিয়ে আগুপিছু করতে করতে গদগদ হয়ে বললো, "আরে কি সৌভাগ্য আমার, তুমি আমাকে নিজে থেকে ফোন করছো! মেরা নাম্বার কাঁহা সে মিলা তুমকো?"

- "আমার স্বামীর টেলিফোন ডায়েরি থেকে পেলাম আপনার নম্বরটা। একটা বিশেষ দরকারে আপনাকে ফোন করেছিলাম। আপনি কি এখন ব্যস্ত আছেন?"

- "ম্যায় তো আভি শেভিং , মেরা মতলব শিপিং কে বারে মে থোরা অফিস ওয়ার্ক কর রাহা থা। তুম বাতাও না, কিস লিয়ে ফোন কিয়ে হো! তোমার জন্য হামি সবসময় ফ্রি আছি।"

"আপনাকে জিজ্ঞাসা করতে বা কথাগুলো বলতে আমার ভীষণ লজ্জা করছে। তবুও নিজের জন্য তো এইটুকু করতেই হবে! আপনি তো আমার স্বামীর সহকর্মী, তাছাড়া ওর মুখ থেকে শুনেছি আপনার সঙ্গে ওর খুব ভালো সম্পর্ক। তাই বলছিলাম, আপনি নিশ্চয়ই ওর এই অফিস ট্যুরে যাওয়ার ব্যাপারে সবকিছুই জানেন! মানে আমি বলতে চাইছি, ও তো এতদিনের জন্য কখনো বাইরে যায়নি, এই প্রথম গেলো। ও কি সত্যিই অফিসের কাজে গেছে? নাকি অন্য কোনো .. জানিনা আমি ঠিক বোঝাতে পারলাম কিনা আপনাকে আমার কথাগুলো।" তার দিদির বারবার ইনসিস্ট করায় এবং নিজের নির্বুদ্ধিতায় কথাগুলো বলে ফেলে নন্দনা যে কত বড় ভুল করে ফেললো তা সে নিজেও বুঝতে পারলো না। হয়তো বাকি জীবনটা তাকে এই ভুলের মাশুল দিয়ে যেতে হবে।

প্রকৃত শিকারীরা বরাবরই ধূর্ত হয়, হার্জিন্দারও তার ব্যতিক্রম নয়। নন্দনা যে কোনো একটা ব্যাপারে তার স্বামীকে সন্দেহ করছে, এটা বুঝতে অসুবিধা হলো না পাঞ্জাবীটার। তবুও 'কি বিষয় সন্দেহ করছে' সেটা তার কাছে পরিষ্কার না হওয়ায় একটা ধোঁয়াশার সৃষ্টি করে বললো, "দেখো নন্দনা, মুঝে সব কুছ মালুম হ্যায়। লেকিন তোমার হাজব্যান্ড আমার দোস্ত আছে। তাই তুমি ওর ব্যাপারে কতটুকু কি জানো বা জানতে পেরেছো, সেটা না জানা পর্যন্ত আমার মুখ খোলা ঠিক হোবে না। পহেলে মুঝে সব কুছ খুলকে বাতাও, তারপর হামি বলবো।"

এরপর প্রথমে কিছুটা ইতস্ততঃ করে, কথা বলার মাঝে অনেকবার হোঁচট খেতে খেতে নির্বোধ নন্দনা চতুর পাঞ্জাবীটার ফাঁদে পা দিয়ে গতকাল তার ভাসুরের এই বাড়িতে আসা থেকে শুরু করে তার অলৌকিক ক্ষমতা এবং চিরন্তন সম্পর্কে তার বলা সব কথাগুলো সরল মনে বিশ্বাস করে বলে দিলো হার্জিন্দারকে।

সেদিন চিরন্তনের কোয়ার্টারে গিয়ে ট্রিটমেন্টের নামে হিউমিলিয়েশন আর সিডাকশনে তার স্ত্রী নন্দনাকে জেরবার করে দিয়ে ওখান থেকে আসার পরের দিন সকাল থেকেই তো ফ্যাক্টরিতে ওয়ার্কার্স এ্যাজিটেশন শুরু হয়ে গেলো। তাই ইচ্ছে থাকলেও ওই দিনের সেই ঘটনা নিয়ে আর ভাবার সুযোগ পায়নি থ্রি মাস্কেটিয়ার্স। নন্দনার বলা কথাগুলো শুনে হাতে যেন ট্রাম্পকার্ড পেয়ে গেলো হার্জিন্দার। কিন্তু পরমুহুর্তেই তার মনে হলো, 'ইশ্ , তার স্বামীর সম্পর্কে নন্দনার এই মনোভাব যদি আর দু'দিন আগে জানতে পারতো তারা! তাহলে হয়তো এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারতো। কিন্তু এখন তো সেটা বোধহয় আর সম্ভব নয়। কারণ, টাকা খেয়ে খারাপ গুডস ইন্সপেকশন করে ভালো বলে চালিয়ে দিতে গিয়ে ধরা পড়ে যাওয়ার ফলে আগামীকাল সকালেই তো এখানে ফিরে আসতে হচ্ছে চিরন্তনকে! এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, এই ভুল রিপোর্ট সাবমিট করার কাজ বিগত এক বছর ধরে করে আসছে চিরন্তন। তবে টাকা তো ও একা খায় না, এর শিকড় অনেক গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে রয়েছে .. যা ক্রমশ প্রকাশ্য। যাই হোক, একটা ব্যাপার ভেবে অবাক হলো হার্জিন্দার, তার কাছে অর্থাৎ কোম্পানির কাছে অফিসিয়ালি এই খবরটা আছে। অথচ চিরন্তনের স্ত্রীই জানে না তার স্বামী আগামীকাল ফিরবে? জরুর ডাল মে কুচ কালা হ্যায়। ওদের হাজব্যান্ড আর ওয়াইফের রিলেশনের মাঝে নিশ্চয়ই ছোটখাটো একটা ক্র্যাক সৃষ্টি হয়েছে। এই ক্র্যাকটাকে ফ্র্যাকচারে পরিণত করতে হবে, তবেই তো তার মধ্যে ঢুকতে পারবে তারা। কিন্তু এতকিছু সর্ট আউট করা তো তার কম্ম নয়! এই কাজ একজনই করতে পারে, আর সে হলো শয়তানি বুদ্ধিতে সিদ্ধহস্ত ডক্টর প্রমোদ গঞ্জালভেস।

"দেখো নন্দনা, তুমি যে কথাগুলো আমাকে বললে .. এগুলো সব আমি আগে থেকেই জানি। তবে তোমার হাজব্যান্ড আমাকে বলেনি, বলেছে আমাদের কোম্পানির ডক্টর .. যে তোমার ট্রিটমেন্ট করতে তোমাদের কোয়ার্টারে গিয়েছিলো। চিনতে পেরেছো তো? ম্যা তুমহারা ফোন নাম্বার ডক্টর সাহাব দিয়ে দিচ্ছি, উনি তোমাকে কল করে নেবেন। এখন একটু বেরোতে হবে আমাকে, তাই রাখলাম।" এই কথাগুলো বলে নন্দনার আদৌ অনুমতি আছে কিনা তার নম্বর অন্য কাউকে দেওয়ার, সেটা শোনার প্রয়োজনবোধ না করে ফোনটা কেটে দিলো হার্জিন্দার।

দাড়ি-টাড়ি কাটা সব মাথায় উঠলো হার্জিন্দারের। টাওয়েল দিয়ে মুখে লেগে থাকা শেভিং ক্রিম মুছে নিয়ে উলঙ্গ অবস্থাতেই বাথরুম থেকে বেরিয়ে বেডরুমে এসে ফোন করলো তার অভিন্ন হৃদয় বন্ধু শুধু নয়, ফিলোসফার এন্ড গাইড প্রমোদকে। তারপর একে একে নন্দনার বলা সব কথাগুলো বমি করে দিলো তাকে। তার সঙ্গে এটাও জানালো, "উওহ মাদারচোদ চিরন্তন তো কল হি ওয়াপাস আ রাহা হ্যায় কাবাব মে হাড্ডি হোনে কে লিয়ে। মুছে লাগতা হ্যায়, ইস টাইম কুছ নেহি হো পায়গা।"

"কাবাব মে হাড্ডি নয় চিরন্তনই হবে আমাদের তুরুপের তাস, বুঝলি বাঞ্চোত? কাঁটা দিয়েই কাঁটা তুলতে হবে। রেন্ডিটার বোকামি আর ওর বরের ইগোটাকে হাতিয়ার করে দু'জনের ভেতর মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং আরও বাড়িয়ে দিতে হবে। অর্ধেক কাজটা আজকে রাতেই করে ফেলতে হবে আমাকে, আর বাকিটা চিরন্তন আসার পর কালকে করবো। তুই শুধু একটু পরে আমাদের ক্যাম্পাসের রিক্রিয়েশন ক্লাবে গিয়ে গত বছরের ছোট অ্যালবামটা নিয়ে আসবি আমার কাছে। দেখবি উপরে মেরুন রঙের মলাট দেওয়া রয়েছে। অ্যালবামটা হাতে পেলেই বাকি কাজটা আমি করে দেবো।" ফোনের অপর প্রান্ত থেকে বললো প্রমোদ।

"জরুর লা কে দেঙ্গে, লেকিন উসসে কেয়া হোগা?" জিজ্ঞাসা করলো হার্জিন্দার।

"সব কথা কি এখনই শুনবি নাকি বাঁড়া? আগে দেখতে দে আমাকে অ্যালবামটা! ছবিগুলো পাই আগে হাতে আমি .. তারপর তো খেলাটা সাজাতে হবে! এখন রাখ ফোনটা, ওই গান্ডু চিরন্তনকে ফোন করতে হবে এখন, রবার্টের সঙ্গে কথা বলাবো ওকে। ও শালা নিজেও ডুববে, আমাদেরও ডুবিয়ে মারবে দেখছি। আগে অফিসিয়াল ব্যাপারটা সামলাই, তারপর তো সবকিছু। আগে পেট তারপরে পেটের নিচের জিনিসটার কথা ভাববো।" এই বলে ফোনটা রেখে দিলো প্রমোদ।

★★★★

হোটেল রুমে তখন নিজের জামাকাপড় প্যাক করছিলো চিরন্তন। ফোনের ঘন্টা বেজে উঠতেই মোবাইলটা তুলে নিয়ে দেখলো ডক্টর প্রমোদ ফোন করেছে। এই মুহূর্তে নিজেকে বড় অসহায় মনে হচ্ছিলো চিরন্তনের। এখানে যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তাতে চাকরি তো তার যাবেই, জেল হওয়া থেকেও মনে হয় তাকে কেউ আটকাতে পারবে না। প্রমোদের ফোনটা পেয়ে তাই নিজেকে সামলাতে না পেরে হাউমাউ করে কেঁদে বললো, "আমাকে বাঁচান স্যার, আমাকে বাঁচান। চাকরি গেলে তো বউ-বাচ্চাকে নিয়ে রাস্তায় বসতে হবে। আর যদি আমার জেল হয়, তাহলে তো ভেসে যাবে আমার পরিবার। আমি তো চুনোপুটি, আমি তো উপর মহলের অর্ডারে যা করার করেছি। এখন এই কথাগুলো যদি মালিকের কানে যায়, তাহলে তো আমার মৃত্যু ছাড়া গতি নেই।"

"চুপ একদম চুপ, মেয়েদের মতো ভেউ ভেউ করে কাঁদবে না। তোমাকে জল থেকে ডাঙ্গায় টেনে তোলবার জন্যই ফোনটা করেছি। না হলে ঝেড়ে ফেলে দিতাম, আর তুমি আমাদের চুলটাও বাঁকা করতে পারতে না। এই নাও রবার্টের সঙ্গে কথা বলো। ওই তো এই ব্যাপারগুলো দ্যাখে, ও তোমাকে ভালো করে বুঝিয়ে বলতে পারবে সব।" চিরন্তনের উদ্দেশ্যে ধমকের সুরে কথাগুলো বলে রবার্টকে ফোনটা ধরিয়ে দিলো প্রমোদ।

- "আমি রবার্ট বলছি, আমার কথাগুলো মন দিয়ে শোনো।"

- "আজ্ঞে হ্যাঁ স্যার, বলুন।"

- "একদম টেনশন করার দরকার নেই, আর উত্তেজিত হয়ে বা ভয় পেয়ে গিয়ে ওখানে কাউকে কোনো কথা বলার দরকার নেই এই বিষয়ে। আজ বাকি রাতটা হোটেলেই কাটাও। কাল যেরকম মর্নিং ফ্লাইটে এখানে চলে আসার কথা, চলে এসো। তোমাকে যে ধরেছিলো, মানে উইভিং ডিপার্টমেন্টের ইনচার্জ মিস্টার সুব্রামানিয়াম, ওর খবর আমরা করে দিচ্ছি। তুমি মুখ না খুললে কারোর কোনো চাপ নেই আর তোমারও চিন্তা নেই। ব্যাপারটা আমরা ধামাচাপা দিয়ে দেবো, মালিকের কানে কিছুই পৌঁছবে না। কিন্তু .."

~ পরবর্তী আপডেট কিছুক্ষণের মধ্যেই আসছে ~
[+] 9 users Like Bumba_1's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Somnaath - 15-04-2023, 03:39 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Boti babu - 15-04-2023, 03:39 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Baban - 15-04-2023, 06:19 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by sudipto-ray - 15-04-2023, 07:02 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 15-04-2023, 09:01 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 15-04-2023, 09:04 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 15-04-2023, 09:06 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by nextpage - 16-04-2023, 01:39 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 16-04-2023, 06:43 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Sanjay Sen - 16-04-2023, 10:50 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 16-04-2023, 07:37 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Chandan - 16-04-2023, 02:30 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Rinkp219 - 16-04-2023, 03:12 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 16-04-2023, 07:40 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by masud93 - 18-04-2023, 05:18 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 18-04-2023, 09:16 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by pro10 - 18-04-2023, 11:46 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 18-04-2023, 12:08 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Baban - 22-04-2023, 03:07 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 22-04-2023, 08:17 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 22-04-2023, 08:26 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Rinkp219 - 23-04-2023, 07:29 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by pro10 - 22-04-2023, 08:49 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 22-04-2023, 09:45 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Boti babu - 22-04-2023, 11:24 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by nextpage - 23-04-2023, 01:07 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Baban - 23-04-2023, 01:30 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by chndnds - 23-04-2023, 08:59 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 23-04-2023, 09:46 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 23-04-2023, 09:48 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 23-04-2023, 09:50 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 23-04-2023, 10:18 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Monen2000 - 23-04-2023, 10:45 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Somnaath - 23-04-2023, 11:47 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 23-04-2023, 02:19 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Sanjay Sen - 23-04-2023, 06:05 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 26-04-2023, 10:22 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Somnaath - 26-04-2023, 12:24 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 23-04-2023, 08:14 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Sanjay Sen - 23-04-2023, 09:05 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 23-04-2023, 09:28 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Sanjay Sen - 23-04-2023, 09:30 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 23-04-2023, 09:37 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Sanjay Sen - 23-04-2023, 09:39 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Chandan - 24-04-2023, 02:06 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 24-04-2023, 09:31 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 27-04-2023, 12:20 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Sanjay Sen - 28-04-2023, 01:56 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by nextpage - 28-04-2023, 02:04 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 29-04-2023, 08:28 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Chandan - 01-05-2023, 10:56 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 01-05-2023, 02:27 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Chandan - 01-05-2023, 04:42 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Baban - 29-04-2023, 09:10 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 29-04-2023, 10:08 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Boti babu - 29-04-2023, 11:28 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by pro10 - 29-04-2023, 11:48 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by nextpage - 30-04-2023, 01:07 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Rinkp219 - 30-04-2023, 06:56 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 30-04-2023, 09:04 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 30-04-2023, 09:07 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Rinkp219 - 30-04-2023, 12:01 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by chndnds - 30-04-2023, 09:35 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 30-04-2023, 10:42 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Somnaath - 30-04-2023, 12:29 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 30-04-2023, 02:32 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Sanjay Sen - 30-04-2023, 06:40 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 30-04-2023, 09:18 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT (চলছে) - by Bumba_1 - 08-09-2023, 08:32 PM



Users browsing this thread: 34 Guest(s)