03-09-2023, 08:24 PM
মেসেজ করে কিংবা কমেন্ট করে বেশ কিছুদিন ধরে পাঠকবন্ধুরা এই সিরিজে একটি অল্পবয়সী নারী চরিত্র আনার জন্য একনাগাড়ে অনুরোধ করে যাচ্ছিলো আমাকে। আমি পূর্বেই বলেছি, আমি যখন কোনো উপন্যাস লেখা শুরু করি, তখনই আমার উপন্যাসের শেষ লাইনটা পর্যন্ত ভাবা হয়ে যায়। মাঝে হয়তো দু-একটা ছোটখাটো চরিত্র এদিক ওদিক হয়। তাই নতুন কোনো বড় চরিত্রর অন্তর্ভুক্তিতে ভীষণ বেগ পেতে হয়। যারা লেখালেখি করে, এটা একমাত্র তারাই বুঝবে। তবুও আমি এমন একজন লেখক, যে কখনো তার পাঠকদের নিরাশ করেনি/করেনা (পাঠকেরা অবশ্য আমাকে অনেকবার নিরাশ করেছে)। যাইহোক, ওনাদের অনুরোধ মাথায় রেখে একটি নারীচরিত্র নিয়ে এলাম এই সিরিজে। যে চরিত্রটির উল্লেখ ভবিষ্যতে আর পাওয়া না গেলেও, এই পর্ব অবশ্যই পরবর্তী পর্বগুলির জন্য একটি যোগসূত্র স্থাপন করবে।
শূন্য দৃষ্টি দিয়ে ঘটমান অতীতের সাথে কথা বলা। যেখানে বিরাজ করছে স্তব্ধতা, যেখানে নশ্বর জীবনের পাতায় পাতায় কতই না নিষিদ্ধ কারুকাজ। যুগ যুগান্ত মিশে যায় ক্ষণে বীক্ষণে। থেমে থাকা পদচিহ্ন খুঁজে বেড়ায় হৃদয়ের সাগর তলে। চেতনার ধারা নীরবে এসে অপেক্ষা করে মননের গভীরে। হয়তো তরঙ্গহীন এবং ধূসর, তবুও কেন জানি দোলে জীবনতরী। হে অন্ধ অতীত, তুমি কথা কও .. সেই চেনা সুর ধরে।
'এইট বি বাই টু' চিরন্তন আর নন্দনার কোয়ার্টারের একটা অতীত আছে। বহু বছর আগেকার অতীত। এমন কিছু অদ্ভুত স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে, যা বুভুক্ষু হায়নার মতো ঘুরে বেড়ায় সর্বত্র। বাতাসে মিশে থাকে অদৃশ্য হয়ে সকলের দৃষ্টির অগোচরে। সেই অতীতেরও মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় পুরনো ঘটনাগুলো ঝালিয়ে নিতে, যা সে ফেলে এসেছে দূরে .. বহু দূরে। তারও ইচ্ছে হয় রাত জেগে অতীতের সুখস্মৃতি হাতড়ে বেড়াতে। তারও ইচ্ছে হয় ভেতর ভেতর উত্তেজিত হতে, সেই ঘটনাবহুল দিনগুলি মনে করে। কিছু স্মৃতি তারও পুষতে ইচ্ছে মনের গভীরে। কিছু স্মৃতি এই কোমল হৃদয় ক্ষতবিক্ষত করে দিলেও, সে কবর রচনা করে তার একান্ত নিজস্ব অন্ধ অতীতের।
নন্দনার সঙ্গে বিয়ের আগে থেকেই চিরন্তন বেশ কয়েক বছর ধরে রয়েছে এই কোয়ার্টারে। তবে চিরন্তন আসার আগে বেশ কিছু বছর (সংখ্যাটা স্পষ্ট করে বলা যায় না) বন্ধ ছিলো কোয়ার্টারটা। নাহ্ , কোনো ভুতুড়ে ব্যাপার বা নৃশংস কোনো ঘটনার জন্য নয়। দক্ষিণ-পূর্ব খোলা হলেও সম্পূর্ণ একটি অন্য কারণে নিজেদের ফ্যামিলি নিয়ে কেউ থাকতে চাইতো না এই কোয়ার্টারে।
অমিত কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থে পুষ্ট একটি পাট গবেষণা সংস্থায় চাকরি করতো। নিজের গবেষণার কাজে মাঝে মাঝেই তাকে বিভিন্ন জুটমিলে যেতে হতো থিওরিটিক্যাল প্রোজেক্টগুলোর বাস্তব প্রয়োগের ফল কিরকম হবে, তারই পরীক্ষানিরীক্ষার জন্য। এসব ব্যাপারে অবশ্য জুটমিলের সুপারভাইসার থেকে শুরু করে ম্যানেজার এবং অন্যান্য কর্মচারীদের সাহায্য সে পেতো। এই ধরনের কেন্দ্রীয় সংস্থা থেকে যারা আসে, অফিসের গাড়ি তাদের বাড়ি থেকে ফ্যাক্টরিতে দেওয়া-নেওয়া করে। তবে সেটা বড়জোর পাঁচ থেকে দশ কিলোমিটারের মধ্যে বাড়ি হলে।
অমিতের বাড়ি ছিলো বাঁকুড়া জেলায়, কলকাতায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করে সে থাকতো। সেখান থেকেই অফিসে যাতায়াত করতো। বছর তিনেক হলো বিয়ে হয়েছিলো তার। স্ত্রী পম্পা বাঁকুড়ায় শ্বশুরবাড়িতেই থাকতো। তাদের সন্তান হয়নি তখনও, হওয়ার কোনো আশাও ছিলো না। ডাক্তারি পরীক্ষায় জানা গিয়েছিল, দোষটা পম্পার। যদিও সে রিপোর্ট পম্পা চোখে দেখেনি। শনি-রবি এই দুই দিন তার অফিস ছুটি থাকতো, তাই উইকেন্ডে অমিত বাড়ি যেতো। কিন্তু হুগলি ডিস্ট্রিক্টের এই জুটমিলে ছ'মাসের প্রজেক্টে আসার পর, কলকাতা থেকে রোজ রোজ গাড়ি করে তাকে নিয়ে আসা আর পৌঁছে দেওয়া সম্ভব ছিলো না। তাই, ফ্যাক্টরি সংলগ্ন ক্যাম্পাসে কোয়ার্টার নম্বর 'এইট বি বাই টু' বরাদ্দ হলো অমিতের জন্য। জুটমিলে কোনো নির্দিষ্ট দিনে ছুটি হয় না। এখানে ডে অফ সিস্টেম। তাই উইকেন্ডে অমিতের বাড়ি যাওয়ার বিষয়টাও বন্ধ হয়ে গেলো ধীরে ধীরে।
অমিতের বাবা-মা, এক অবিবাহিত ভাই, এক দূর সম্পর্কের পিসিমা .. অনেকেই ছিলো বাঁকুড়ায় তার বাড়িতে। তাই ঠিক হলো এবার কাজের জায়গায় তার স্ত্রী পম্পাকে নিয়ে আসবে অমিত। যেমন কথা, তেমন কাজ .. দু'দিনের ছুটি নিয়ে তার দেশের বাড়ি বাঁকুড়ায় গিয়ে সেখান থেকে তার স্ত্রীকে নিয়ে অমিত এলো নিজের কর্মক্ষেত্রে।
"চ-ট-ক-ল .. কোথাও কোনো আকার নেই। যার আকার নেই সে তো নিরাকার! তার তো কোনও পরিবর্তন হয় না। তাই চটকলেরও কোনো পরিবর্তন নেই। একশো বছর আগেও যা ছিলো, আজও তাই আছে। তবে হ্যাঁ ভায়া, চোখ-কান খোলা রাখবে সর্বদা। চটকল কিন্তু ভয়ঙ্কর জায়গা।" কথাগুলো অমিতকে বলেছিলেন ফ্যাক্টরির কোয়ালিটি কন্ট্রোল ইনচার্জ মিস্টার শেখর অধিকারী। বয়স্ক লোক, রিটায়ারমেন্টের দোরগোড়ায় চলে এসেছিলেন। বেশ মজার মানুষ ছিলেন উনি।
আসলে জুটমিলের কর্মরত মানুষজন বা সেই এলাকার লোকজন 'চটকল' বলতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। চটকলের মধ্যশ্রেণী থেকে উচ্চশ্রেণীর কর্মীরা এক জায়গায় বেশিদিন থাকেন না। বিভিন্ন চটকলে ঘুরে ফিরে বেড়ান। এইজন্য কোথাও একজনের সাথে আরেকজনের দেখা হলে প্রথমে ‘'কেমন আছেন?’' না বলে ‘'এখন কোথায় আছেন?'’ জিজ্ঞাসা করেন।
যদি কোনোদিন মিলের গেটে পৌঁছতে অমিতের বেলা এগারোটা বেরিয়ে যেত, তাহলে আর দুর্ভোগের শেষ থাকতো না। হাজারের ওপর শ্রমিক গেট দিয়ে বেরোনোর পর রাস্তা পুরোপুরি ক্লিয়ার হতে অন্তত মিনিট পনেরো। বাধ্য হয়ে অমিতকে গাড়ি নিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হতো গেটের বাইরে। তবে এই ব্যাপারগুলোতে ইউজ টু হয়ে গেছিলো সে। সাধারণত তিন শিফটে কাজ হয় জুটমিলে। সকাল ছ’টায় ‘এ’ শিফটে যারা কাজে আসে, মাঝে কিছুক্ষণের সাময়িক বিরতি দিয়ে তাদের ডিউটি চলে দুপুর দু'টো পর্যন্ত। এরপর শুরু হয় ‘বি’ শিফট। যেটা চলে দুপুর দু'টো থেকে পাঁচটা। আবার কিছুক্ষণের বিরতি দিয়ে একেবারে রাত্রি দশ'টা পর্যন্ত। ‘সি’ শিফট অথবা নাইট শিফট শুরু হয় রাত দশটা থেকে ভোর ছ’টা পর্যন্ত। কলের চাকা বন্ধ হয় না।
বছর চারেক হলো চাকরিতে ঢুকেছে ঊনত্রিশ বছরের অমিত। এর আগে হাওড়ার দুটো জুটমিলে প্র্যাকটিক্যাল প্রোজেক্টের কাজ সে করেছিলো। সে ক্ষেত্রে কম্পাউন্ডে থাকতে হয়নি তাকে, বাড়ি থেকেই গাড়িতে করে যাতায়াত করতো সে। কিন্তু এবারে যে রিসার্চ প্রোজেক্টটা সে হাতে পেয়েছে, তাতে ল্যাবরেটরির নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে আর কারখানার বাস্তব পরিবেশে পরীক্ষানিরীক্ষার কতটা তফাত হয়, সেটা জানতে এমনিতেই তাকে অনেকটা বেশি সময় কাটাতে হতো ফ্যাক্টরিতে। এমতাবস্থায় কোয়ার্টার পেয়ে এবং তার সঙ্গে নিজের স্ত্রীকে একান্তভাবে কাছে পেয়ে বেজায় খুশি অমিত।
কথায় বলে .. অল্প বয়সে পাকলে বাল, তার দুঃখ চিরকাল। অমিতেরও হয়েছিলো সেই অবস্থা। ছোটবেলা থেকে বাবা-মার কথার অবাধ্য হয়ে অত্যাধিক পরিমাণে মিষ্টি এবং ফাস্টফুড খাবার ফলস্বরূপ যুবক বয়সেই সুগারের পেশেন্ট হয়ে গিয়েছিলো সে। তার উপর ছাত্রাবস্থায় অকালপক্ব কিছু বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে প্রায় নিয়মিত হস্তমৈথুন করতে করতে বর্তমানে বাঁড়ার রগগুলো তো ঢিলা হয়ে গেছেই, তার সঙ্গে স্নায়ুজনিত সমস্যারও সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে অমিতের যৌবনের যাবতীয় উদ্দাম উদ্দীপনা সবকিছু শেষ হয়ে গিয়েছে তিরিশ বছরে পৌঁছানোর আগেই।
বছর ছাব্বিশের গৌরবর্ণা, মাঝারি উচ্চতার, ছিপছিপে চেহারার পম্পার স্থুলতা যদি কোথাও থাকে, তবে তা কেবল তার স্তনে, জঙ্ঘায় এবং নিতম্বে। মাথার কিছুটা লালচে পাতলা চুল কাঁধের নিচ পর্যন্ত বিস্তৃত। মুখমন্ডলে কটা চোখ, তীক্ষ্ণ সাদা ঝকঝকে দাঁত এবং টিকালো নাক দেখলে মনে হতো যেনো চাঁদের কিরণ জমাট বেঁধেছে পাম্পার নারী শরীরের আনাচে-কানাচে।
এহেন পাশ্চাত্য দেশের সিনেমার নায়িকাদের মতো দেখতে পম্পা যখন রাতে বিছানাতে কেবলমাত্র কাঁধের কাছে সরু সুতো দিয়ে বাঁধা একটা অন্তর্বাসবিহীন বেবিডল নাইটি পরে স্বামীর সাথে আলিঙ্গনে আবদ্ধ হয়ে আহ্লাদীপনা করতে যেত, "উফফ আবার শুরু করলে তুমি? সবসময় এতো উত্তেজনা তোমার কোথা থেকে আসে, বুঝি না। তাও যদি একটা সন্তান দিতে পারতে! ছাড়ো তো, বিরক্ত করো না আমাকে। তাছাড়া কাজের যা চাপ যাচ্ছে, কাল আবার মিস্টার দীক্ষিতের সঙ্গে মিটিং রয়েছে। এখন আমার ঘুম দরকার, তুমি সরে শোও।" এই বলে এক ঝটকাতে অমিত তার কামুকী সহধর্মিনীর ওই কামজাগানো রূপ অগ্রাহ্য করে তার বাহুবন্ধন থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতো।
একদিকে সন্তান দিতে না পারায় স্বামীর অবহেলার পাত্রী হয়ে থাকার জন্য দুঃখ, অন্যদিকে যৌন হতাশার এক অসহ্য বেদনায় কখনো নীরবে বালিশে মুখ গুঁজে কাঁদতে কাঁদতে একসময় ঘুমিয়ে পড়তো পম্পা, আবার কখনো উত্তেজনা চরমে পৌছলে বাথরুমে গিয়ে নিজের দুই পায়ের ফাঁকে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দিয়ে শান্ত করতো নিজেকে।
শুধুমাত্র ভালো চাকরি করে, মোটা টাকা মাইনে পেয়ে নিজের স্ত্রীর ম্যাটারিয়ালিস্টিক চাহিদা পূরণ করাটাই যে শুধুমাত্র সুখী দাম্পত্য জীবনের চাবিকাঠি হতে পারে না, এই ধারণাটাই ছিলো না তার। অর্থের থেকে অনেক সময় রিপুর টান বড় হয়ে দাঁড়ায়, সেটা বুঝতে অনেক দেরি করে ফেলেছিলো অমিত। ওদিকে এই অল্প বয়সে স্বামীর এই অকর্মণ্যতায়, কামক্ষুধায় ভরপুর ছাব্বিশ বছরের পম্পা নিজের অজান্তেই ক্রমশ নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছিলো নিজের উপর থেকে।
ছয় মাসের মধ্যে রিসার্চ প্রোজেক্টটা শেষ করতে হবে, এটা মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে নিয়েছিলো সে। ছ'মাস অতিক্রান্ত হলেও কিছু যেতো আসতো না, কিন্তু তার মধ্যে প্রোজেক্টটা শেষ করতে পারলে অফিসে তার নাম হবে, হয়তো পদোন্নতিও হতে পারে .. এই ভেবে রাতদিন এক করে ফেলেছিলো অমিত। ডে অফের দিনগুলোতেও তাই অফিসেই কাটাতো সে। তবে অমিত বাড়িতে না থাকলেও বা কম থাকলেও বাজার দোকান করার লোকের অভাব ছিলো না। শিফটিং ডিউটির শিফট চেঞ্জের সময় কারখানার কোনো না কোনো ওয়ার্কার বাড়িতে এসে মুদিখানার জিনিসপত্র এবং প্রতিদিনের কাঁচাবাজার পৌঁছে দিয়ে যেতো।
কিন্তু চাল, ডাল, তেল, মশলাপাতি, সব্জি, মাছ, মাংস .. এগুলোই তো শুধুমাত্র জীবনের প্রয়োজনীয় জিনিসের মধ্যে পড়ে না। আরও এমন বেশ কিছু দরকার থাকে, যার জন্য মানুষকে বাইরে বেরোতে হয়। সেটা পোশাক-আশাক, প্রসাধনী, ওষুধপত্র .. এরকম অনেক কিছুই হতে পারে। তাই সেই দরকারটা পূর্ণ করতে পম্পাকেই বেরোতে হতো।
বাঁকুড়ায় শ্বশুরবাড়িতে থাকাকালীন শাড়ি আর তার সঙ্গে হাফস্লিভ ব্লাউজ ছাড়া আর কিছু না পড়লেও, এখানে আসার পর পাখনা গজিয়েছে অমিতের স্ত্রীর। শাড়ি ছেড়ে জিন্স আর টি-শার্ট ধরেছে পম্পা। কিছু আড়াল করতে গেলে তো, কিছু ছাড়তে হয়। সামনে স্বীকার না করলেও, অমিত তার যৌন অক্ষমতার কথা ভালো করেই জানতো। তাই বউয়ের এই পোশাকর ট্রান্সফর্মেশনে তাকে একপ্রকার বাধ্য হয়েই প্রচ্ছন্ন সম্মতি দিতে হয়েছিলো। তবে বাজার-দোকানে বের হলে আজকাল একটু বেশিমাত্রায় শরীর দেখিয়ে পোশাক পড়ে পম্পা। বাড়িতে না থাকার জন্য স্বভাবতই সেইদিকে নজর যায়নি অমিতের।
জিন্স আর টি-শার্ট তো আছেই, তবে বাড়ির বাইরে বের হলে আজকাল প্রায়শই স্কিনটাইট লেগিংস আর বগলের কাছে অনেকটা কাটা স্লিভলেস টপ করে বেরোয় পম্পা। এখন যদিও বন্ধ হয়ে গেছে, তবে সেইসময় এই এলাকায় দু'নম্বর বাস চলতো। সেদিন লেগিংস আর আর হাতকাটা একটা সুতির কুর্তি পড়ে বাজার যাওয়ার উদ্দেশ্যে একটা দু'নম্বর বাসে উঠে পড়েছিলো পম্পা। বাসটাতে বেশ ভিড় ছিলো। ক্যাম্পাস থেকে বাজারের বেশি দূরত্ব নয়, খুব বেশি হলে দুই কিলোমিটার হবে। কিন্তু এই পাঁচ মিনিটের বাস জার্নিতে অন্তত জ'না দুয়েক পার্ভার্ট বয়স্ক ব্যক্তি এবং কমবয়সি ছেলে অমিতের যুবতী স্ত্রীর লেগিংসের পাতলা গেঞ্জির কাপড়ের আবরণে ঢাকা মাংসল পাছাতে ভীড়ের সুযোগে হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলো। আবার কখনো সুযোগ বুঝে খামচে ধরছিলো। পম্পা ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলো একটা অল্পবয়সী ষন্ডামার্কা ছেলে নিজের মধ্যমাটা তার পাছার ফুটোর কাছে নিয়ে এসে লেগিংসের পাতলা গেঞ্জির কাপড়ের আবরণ ভেদ করে আঙুলটা পোঁদের গর্তের ভেতরে ঢোকাতে চেষ্টা করছিলো। অ্যাডভেঞ্চার করতে গিয়ে ভয়ে গলা শুকিয়ে গিয়েছিলো পম্পার। ঠিক সেই মুহূর্তে "গঞ্জ বাজার এসে গেছে" এই বলে কন্ডাক্টর হাঁক দেওয়ায়, ধরে প্রাণ ফিরে পেয়ে তাড়াতাড়ি বাস থেকে নেমে গিয়েছিলো সে।
বাঁকুড়া থেকে এখানে আসার সময় এক ডজন ব্রা সঙ্গে করে এনেছিলো সে। যদিও সেগুলো একটাও নতুন নয়, সবগুলোই তার ব্যবহার করা হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু তার মধ্যে দু-তিনটে ছাড়া বেশিরভাগই হয় ঢিলা হয়ে গিয়েছিল, না হয় স্ট্র্যাপের কাছটা ছিঁড়ে গিয়েছিল, কিংবা হুক ভেঙে গিয়েছিল। এবার যদি নতুন ব্রা না কেনা হয়, তাহলে এরপর বাকিগুলোর কন্ডিশন খারাপ হয়ে গেলে তাকে ঊর্ধ্বাঙ্গের অন্তর্বাস ছাড়াই থাকতে হবে। টুকটাক কয়েকটা জিনিস কিনে বাজারের শেষ প্রান্তে একটা অন্তর্বাসের দোকানে ঢুকলো পম্পা।
"আন্ডার গার্মেন্টস দেখাবেন তো ভাই .." ফাঁকা দোকানটার একমাত্র বিক্রেতা তারই বয়সী একজন পঁচিশ ছাব্বিশ বছরের যুবককে কাঁপা কাঁপা গলায় বললো পম্পা।
"আন্ডার গার্মেন্টসের মধ্যে কি দেখাবো ম্যাডাম?" জিজ্ঞাসা করলো যুবকটি।
- "ওই যে, শার্ট বা কামিজের নিচে পড়ে না! ওইগুলো দেখান।"
- "গেঞ্জি? স্যান্ডো দেখাবো, না হাফস্লিভ দেখাবো ম্যাডাম?"
- "আরে না না, গেঞ্জি কেন হতে যাবে? আরে ভেতরে পড়ে না! ওই দুটোর উপর .. সেইগুলো দেখান।"
- "কোন দুটোর উপর? আরে ম্যাডাম যা বলবেন পরিষ্কার করে বলুন। আপনার কি গলায় সমস্যা রয়েছে? গলার খিঁচখিঁচ দূর করার জন্য ভিক্সের ট্যাবলেট দেবো নাকি?"
- "উফ, এ যে দেখছি কিছুই বোঝেনা। মেয়েদের আন্ডার গার্মেন্টস চাই, উপরে পড়ার। ব্রেসিয়ার .. এবার বুঝতে পেরেছেন? নাকি আরো বুঝিয়ে বলতে হবে?"
- "আচ্ছা এই ব্যাপার? এটা প্রথমে বললেই মিটে যেতো .. এতে এত লজ্জা পাওয়ার কি আছে?"
- "আসলে কি জানেন তো ভাই, আমি ফার্স্টটাইম একা একা কোনো আন্ডার গার্মেন্টসের দোকানে এলাম। আমি তো আগে বাঁকুড়ায় থাকতাম। এখানে কয়েক মাস হলো এসেছি। ওখানে আমার শাশুড়ির সঙ্গে এইসব জিনিস কিনতে যেতাম, উনিই সবকিছু দেখে শুনে কিনতেন, আমি পাশে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতাম। তাই বলতে কিছুটা লজ্জা পাচ্ছিলাম।"
- "বুঝলাম .. তা কিরকম ব্রা দেখাবো বলুন আপনাকে .. প্যাডেড? স্ট্র্যাপলেস? পুশআপ?"
- "নরম্যাল .. নরম্যাল .."
- "ঠিক আছে, আপনার সাইজটা বলুন। সেই অনুযায়ী বের করছি .."
- "সাইজ? এইরে, সেটা তো বলতে পারবো না ভাই। আমার শাশুড়ি জানেন।"
- "ব্রায়ের স্ট্র্যাপের উপর তো সাইজ লেখা থাকে! আবার কোনো কোনো ব্রায়ের দুটো কাপের মাঝখানে যে কানেক্টরটা থাকে, সেখানে লেখা থাকে সাইজ। লক্ষ্য করেন নি কোনোদিন?"
- "না, আমি ওসব লক্ষ্য করিনি। আচ্ছা ভাই আপনার কি মনে হয় না, এইসব কাজের জন্য আপনার দোকানে একাধিক না হোক, অন্তত একজন মহিলা কর্মচারী রেখে দেওয়া উচিত! তাহলে তো মহিলা কাস্টমারেরা একটু কমফোর্টেবল ফিল করবে!"
পম্পার কথাগুলো শুনে দোকানে থাকা যুবকটির মনে হলো, এই মেয়েটা সত্যিই একজন সরল সাদাসিধে ভালো মনের মানুষ। তাই মিষ্টি হেসে বললো, "আমি আপনার কথাটা বুঝতে পারছি এবং আপনার কথাগুলোকে সম্মান করেই বলছি, পুরুষদের থেকে এইসব জিনিস কিনতে আপত্তিটা কোথায়? আমরা যে জিন্স টি-শার্ট এগুলো পড়ি, আপনি যে এই লেগিংস আর কুর্তি পরে এসেছেন, এগুলোর মতোই অন্তর্বাস হলো এক ধরনের পোশাক। এবং এগুলোর মতোই ভীষণ প্রয়োজনীয়। আপনি অন্তর্বাস ছাড়া কোথাও বেরোতে পারবেন কি? পারবেন না। আপনি কি জানেন ম্যাডাম, যে ফ্যাক্টরিতে এগুলো তৈরি হয় সেখানে আশি শতাংশ পুরুষ কারিগর! আপনার কথা অনুযায়ী তাহলে তো তাদেরও সরিয়ে দিয়ে সেখানে শুধুমাত্র মহিলা কারিগর নিযুক্ত করা উচিত। কিন্তু সেটা কি কোনোদিনও সম্ভব হবে? তাই বলছি, এটা যখন আমাদের এতটাই প্রয়োজনীয়, তখন এগুলো কিনতে এসে লজ্জা পাওয়ার কোনো মানেই হয় না।"
(১)
শূন্য দৃষ্টি দিয়ে ঘটমান অতীতের সাথে কথা বলা। যেখানে বিরাজ করছে স্তব্ধতা, যেখানে নশ্বর জীবনের পাতায় পাতায় কতই না নিষিদ্ধ কারুকাজ। যুগ যুগান্ত মিশে যায় ক্ষণে বীক্ষণে। থেমে থাকা পদচিহ্ন খুঁজে বেড়ায় হৃদয়ের সাগর তলে। চেতনার ধারা নীরবে এসে অপেক্ষা করে মননের গভীরে। হয়তো তরঙ্গহীন এবং ধূসর, তবুও কেন জানি দোলে জীবনতরী। হে অন্ধ অতীত, তুমি কথা কও .. সেই চেনা সুর ধরে।
'এইট বি বাই টু' চিরন্তন আর নন্দনার কোয়ার্টারের একটা অতীত আছে। বহু বছর আগেকার অতীত। এমন কিছু অদ্ভুত স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে, যা বুভুক্ষু হায়নার মতো ঘুরে বেড়ায় সর্বত্র। বাতাসে মিশে থাকে অদৃশ্য হয়ে সকলের দৃষ্টির অগোচরে। সেই অতীতেরও মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় পুরনো ঘটনাগুলো ঝালিয়ে নিতে, যা সে ফেলে এসেছে দূরে .. বহু দূরে। তারও ইচ্ছে হয় রাত জেগে অতীতের সুখস্মৃতি হাতড়ে বেড়াতে। তারও ইচ্ছে হয় ভেতর ভেতর উত্তেজিত হতে, সেই ঘটনাবহুল দিনগুলি মনে করে। কিছু স্মৃতি তারও পুষতে ইচ্ছে মনের গভীরে। কিছু স্মৃতি এই কোমল হৃদয় ক্ষতবিক্ষত করে দিলেও, সে কবর রচনা করে তার একান্ত নিজস্ব অন্ধ অতীতের।
নন্দনার সঙ্গে বিয়ের আগে থেকেই চিরন্তন বেশ কয়েক বছর ধরে রয়েছে এই কোয়ার্টারে। তবে চিরন্তন আসার আগে বেশ কিছু বছর (সংখ্যাটা স্পষ্ট করে বলা যায় না) বন্ধ ছিলো কোয়ার্টারটা। নাহ্ , কোনো ভুতুড়ে ব্যাপার বা নৃশংস কোনো ঘটনার জন্য নয়। দক্ষিণ-পূর্ব খোলা হলেও সম্পূর্ণ একটি অন্য কারণে নিজেদের ফ্যামিলি নিয়ে কেউ থাকতে চাইতো না এই কোয়ার্টারে।
অমিত কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থে পুষ্ট একটি পাট গবেষণা সংস্থায় চাকরি করতো। নিজের গবেষণার কাজে মাঝে মাঝেই তাকে বিভিন্ন জুটমিলে যেতে হতো থিওরিটিক্যাল প্রোজেক্টগুলোর বাস্তব প্রয়োগের ফল কিরকম হবে, তারই পরীক্ষানিরীক্ষার জন্য। এসব ব্যাপারে অবশ্য জুটমিলের সুপারভাইসার থেকে শুরু করে ম্যানেজার এবং অন্যান্য কর্মচারীদের সাহায্য সে পেতো। এই ধরনের কেন্দ্রীয় সংস্থা থেকে যারা আসে, অফিসের গাড়ি তাদের বাড়ি থেকে ফ্যাক্টরিতে দেওয়া-নেওয়া করে। তবে সেটা বড়জোর পাঁচ থেকে দশ কিলোমিটারের মধ্যে বাড়ি হলে।
অমিতের বাড়ি ছিলো বাঁকুড়া জেলায়, কলকাতায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করে সে থাকতো। সেখান থেকেই অফিসে যাতায়াত করতো। বছর তিনেক হলো বিয়ে হয়েছিলো তার। স্ত্রী পম্পা বাঁকুড়ায় শ্বশুরবাড়িতেই থাকতো। তাদের সন্তান হয়নি তখনও, হওয়ার কোনো আশাও ছিলো না। ডাক্তারি পরীক্ষায় জানা গিয়েছিল, দোষটা পম্পার। যদিও সে রিপোর্ট পম্পা চোখে দেখেনি। শনি-রবি এই দুই দিন তার অফিস ছুটি থাকতো, তাই উইকেন্ডে অমিত বাড়ি যেতো। কিন্তু হুগলি ডিস্ট্রিক্টের এই জুটমিলে ছ'মাসের প্রজেক্টে আসার পর, কলকাতা থেকে রোজ রোজ গাড়ি করে তাকে নিয়ে আসা আর পৌঁছে দেওয়া সম্ভব ছিলো না। তাই, ফ্যাক্টরি সংলগ্ন ক্যাম্পাসে কোয়ার্টার নম্বর 'এইট বি বাই টু' বরাদ্দ হলো অমিতের জন্য। জুটমিলে কোনো নির্দিষ্ট দিনে ছুটি হয় না। এখানে ডে অফ সিস্টেম। তাই উইকেন্ডে অমিতের বাড়ি যাওয়ার বিষয়টাও বন্ধ হয়ে গেলো ধীরে ধীরে।
অমিতের বাবা-মা, এক অবিবাহিত ভাই, এক দূর সম্পর্কের পিসিমা .. অনেকেই ছিলো বাঁকুড়ায় তার বাড়িতে। তাই ঠিক হলো এবার কাজের জায়গায় তার স্ত্রী পম্পাকে নিয়ে আসবে অমিত। যেমন কথা, তেমন কাজ .. দু'দিনের ছুটি নিয়ে তার দেশের বাড়ি বাঁকুড়ায় গিয়ে সেখান থেকে তার স্ত্রীকে নিয়ে অমিত এলো নিজের কর্মক্ষেত্রে।
"চ-ট-ক-ল .. কোথাও কোনো আকার নেই। যার আকার নেই সে তো নিরাকার! তার তো কোনও পরিবর্তন হয় না। তাই চটকলেরও কোনো পরিবর্তন নেই। একশো বছর আগেও যা ছিলো, আজও তাই আছে। তবে হ্যাঁ ভায়া, চোখ-কান খোলা রাখবে সর্বদা। চটকল কিন্তু ভয়ঙ্কর জায়গা।" কথাগুলো অমিতকে বলেছিলেন ফ্যাক্টরির কোয়ালিটি কন্ট্রোল ইনচার্জ মিস্টার শেখর অধিকারী। বয়স্ক লোক, রিটায়ারমেন্টের দোরগোড়ায় চলে এসেছিলেন। বেশ মজার মানুষ ছিলেন উনি।
আসলে জুটমিলের কর্মরত মানুষজন বা সেই এলাকার লোকজন 'চটকল' বলতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। চটকলের মধ্যশ্রেণী থেকে উচ্চশ্রেণীর কর্মীরা এক জায়গায় বেশিদিন থাকেন না। বিভিন্ন চটকলে ঘুরে ফিরে বেড়ান। এইজন্য কোথাও একজনের সাথে আরেকজনের দেখা হলে প্রথমে ‘'কেমন আছেন?’' না বলে ‘'এখন কোথায় আছেন?'’ জিজ্ঞাসা করেন।
যদি কোনোদিন মিলের গেটে পৌঁছতে অমিতের বেলা এগারোটা বেরিয়ে যেত, তাহলে আর দুর্ভোগের শেষ থাকতো না। হাজারের ওপর শ্রমিক গেট দিয়ে বেরোনোর পর রাস্তা পুরোপুরি ক্লিয়ার হতে অন্তত মিনিট পনেরো। বাধ্য হয়ে অমিতকে গাড়ি নিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হতো গেটের বাইরে। তবে এই ব্যাপারগুলোতে ইউজ টু হয়ে গেছিলো সে। সাধারণত তিন শিফটে কাজ হয় জুটমিলে। সকাল ছ’টায় ‘এ’ শিফটে যারা কাজে আসে, মাঝে কিছুক্ষণের সাময়িক বিরতি দিয়ে তাদের ডিউটি চলে দুপুর দু'টো পর্যন্ত। এরপর শুরু হয় ‘বি’ শিফট। যেটা চলে দুপুর দু'টো থেকে পাঁচটা। আবার কিছুক্ষণের বিরতি দিয়ে একেবারে রাত্রি দশ'টা পর্যন্ত। ‘সি’ শিফট অথবা নাইট শিফট শুরু হয় রাত দশটা থেকে ভোর ছ’টা পর্যন্ত। কলের চাকা বন্ধ হয় না।
বছর চারেক হলো চাকরিতে ঢুকেছে ঊনত্রিশ বছরের অমিত। এর আগে হাওড়ার দুটো জুটমিলে প্র্যাকটিক্যাল প্রোজেক্টের কাজ সে করেছিলো। সে ক্ষেত্রে কম্পাউন্ডে থাকতে হয়নি তাকে, বাড়ি থেকেই গাড়িতে করে যাতায়াত করতো সে। কিন্তু এবারে যে রিসার্চ প্রোজেক্টটা সে হাতে পেয়েছে, তাতে ল্যাবরেটরির নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে আর কারখানার বাস্তব পরিবেশে পরীক্ষানিরীক্ষার কতটা তফাত হয়, সেটা জানতে এমনিতেই তাকে অনেকটা বেশি সময় কাটাতে হতো ফ্যাক্টরিতে। এমতাবস্থায় কোয়ার্টার পেয়ে এবং তার সঙ্গে নিজের স্ত্রীকে একান্তভাবে কাছে পেয়ে বেজায় খুশি অমিত।
★★★★
কথায় বলে .. অল্প বয়সে পাকলে বাল, তার দুঃখ চিরকাল। অমিতেরও হয়েছিলো সেই অবস্থা। ছোটবেলা থেকে বাবা-মার কথার অবাধ্য হয়ে অত্যাধিক পরিমাণে মিষ্টি এবং ফাস্টফুড খাবার ফলস্বরূপ যুবক বয়সেই সুগারের পেশেন্ট হয়ে গিয়েছিলো সে। তার উপর ছাত্রাবস্থায় অকালপক্ব কিছু বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে প্রায় নিয়মিত হস্তমৈথুন করতে করতে বর্তমানে বাঁড়ার রগগুলো তো ঢিলা হয়ে গেছেই, তার সঙ্গে স্নায়ুজনিত সমস্যারও সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে অমিতের যৌবনের যাবতীয় উদ্দাম উদ্দীপনা সবকিছু শেষ হয়ে গিয়েছে তিরিশ বছরে পৌঁছানোর আগেই।
বছর ছাব্বিশের গৌরবর্ণা, মাঝারি উচ্চতার, ছিপছিপে চেহারার পম্পার স্থুলতা যদি কোথাও থাকে, তবে তা কেবল তার স্তনে, জঙ্ঘায় এবং নিতম্বে। মাথার কিছুটা লালচে পাতলা চুল কাঁধের নিচ পর্যন্ত বিস্তৃত। মুখমন্ডলে কটা চোখ, তীক্ষ্ণ সাদা ঝকঝকে দাঁত এবং টিকালো নাক দেখলে মনে হতো যেনো চাঁদের কিরণ জমাট বেঁধেছে পাম্পার নারী শরীরের আনাচে-কানাচে।
এহেন পাশ্চাত্য দেশের সিনেমার নায়িকাদের মতো দেখতে পম্পা যখন রাতে বিছানাতে কেবলমাত্র কাঁধের কাছে সরু সুতো দিয়ে বাঁধা একটা অন্তর্বাসবিহীন বেবিডল নাইটি পরে স্বামীর সাথে আলিঙ্গনে আবদ্ধ হয়ে আহ্লাদীপনা করতে যেত, "উফফ আবার শুরু করলে তুমি? সবসময় এতো উত্তেজনা তোমার কোথা থেকে আসে, বুঝি না। তাও যদি একটা সন্তান দিতে পারতে! ছাড়ো তো, বিরক্ত করো না আমাকে। তাছাড়া কাজের যা চাপ যাচ্ছে, কাল আবার মিস্টার দীক্ষিতের সঙ্গে মিটিং রয়েছে। এখন আমার ঘুম দরকার, তুমি সরে শোও।" এই বলে এক ঝটকাতে অমিত তার কামুকী সহধর্মিনীর ওই কামজাগানো রূপ অগ্রাহ্য করে তার বাহুবন্ধন থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতো।
একদিকে সন্তান দিতে না পারায় স্বামীর অবহেলার পাত্রী হয়ে থাকার জন্য দুঃখ, অন্যদিকে যৌন হতাশার এক অসহ্য বেদনায় কখনো নীরবে বালিশে মুখ গুঁজে কাঁদতে কাঁদতে একসময় ঘুমিয়ে পড়তো পম্পা, আবার কখনো উত্তেজনা চরমে পৌছলে বাথরুমে গিয়ে নিজের দুই পায়ের ফাঁকে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দিয়ে শান্ত করতো নিজেকে।
শুধুমাত্র ভালো চাকরি করে, মোটা টাকা মাইনে পেয়ে নিজের স্ত্রীর ম্যাটারিয়ালিস্টিক চাহিদা পূরণ করাটাই যে শুধুমাত্র সুখী দাম্পত্য জীবনের চাবিকাঠি হতে পারে না, এই ধারণাটাই ছিলো না তার। অর্থের থেকে অনেক সময় রিপুর টান বড় হয়ে দাঁড়ায়, সেটা বুঝতে অনেক দেরি করে ফেলেছিলো অমিত। ওদিকে এই অল্প বয়সে স্বামীর এই অকর্মণ্যতায়, কামক্ষুধায় ভরপুর ছাব্বিশ বছরের পম্পা নিজের অজান্তেই ক্রমশ নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছিলো নিজের উপর থেকে।
★★★★
ছয় মাসের মধ্যে রিসার্চ প্রোজেক্টটা শেষ করতে হবে, এটা মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে নিয়েছিলো সে। ছ'মাস অতিক্রান্ত হলেও কিছু যেতো আসতো না, কিন্তু তার মধ্যে প্রোজেক্টটা শেষ করতে পারলে অফিসে তার নাম হবে, হয়তো পদোন্নতিও হতে পারে .. এই ভেবে রাতদিন এক করে ফেলেছিলো অমিত। ডে অফের দিনগুলোতেও তাই অফিসেই কাটাতো সে। তবে অমিত বাড়িতে না থাকলেও বা কম থাকলেও বাজার দোকান করার লোকের অভাব ছিলো না। শিফটিং ডিউটির শিফট চেঞ্জের সময় কারখানার কোনো না কোনো ওয়ার্কার বাড়িতে এসে মুদিখানার জিনিসপত্র এবং প্রতিদিনের কাঁচাবাজার পৌঁছে দিয়ে যেতো।
কিন্তু চাল, ডাল, তেল, মশলাপাতি, সব্জি, মাছ, মাংস .. এগুলোই তো শুধুমাত্র জীবনের প্রয়োজনীয় জিনিসের মধ্যে পড়ে না। আরও এমন বেশ কিছু দরকার থাকে, যার জন্য মানুষকে বাইরে বেরোতে হয়। সেটা পোশাক-আশাক, প্রসাধনী, ওষুধপত্র .. এরকম অনেক কিছুই হতে পারে। তাই সেই দরকারটা পূর্ণ করতে পম্পাকেই বেরোতে হতো।
বাঁকুড়ায় শ্বশুরবাড়িতে থাকাকালীন শাড়ি আর তার সঙ্গে হাফস্লিভ ব্লাউজ ছাড়া আর কিছু না পড়লেও, এখানে আসার পর পাখনা গজিয়েছে অমিতের স্ত্রীর। শাড়ি ছেড়ে জিন্স আর টি-শার্ট ধরেছে পম্পা। কিছু আড়াল করতে গেলে তো, কিছু ছাড়তে হয়। সামনে স্বীকার না করলেও, অমিত তার যৌন অক্ষমতার কথা ভালো করেই জানতো। তাই বউয়ের এই পোশাকর ট্রান্সফর্মেশনে তাকে একপ্রকার বাধ্য হয়েই প্রচ্ছন্ন সম্মতি দিতে হয়েছিলো। তবে বাজার-দোকানে বের হলে আজকাল একটু বেশিমাত্রায় শরীর দেখিয়ে পোশাক পড়ে পম্পা। বাড়িতে না থাকার জন্য স্বভাবতই সেইদিকে নজর যায়নি অমিতের।
জিন্স আর টি-শার্ট তো আছেই, তবে বাড়ির বাইরে বের হলে আজকাল প্রায়শই স্কিনটাইট লেগিংস আর বগলের কাছে অনেকটা কাটা স্লিভলেস টপ করে বেরোয় পম্পা। এখন যদিও বন্ধ হয়ে গেছে, তবে সেইসময় এই এলাকায় দু'নম্বর বাস চলতো। সেদিন লেগিংস আর আর হাতকাটা একটা সুতির কুর্তি পড়ে বাজার যাওয়ার উদ্দেশ্যে একটা দু'নম্বর বাসে উঠে পড়েছিলো পম্পা। বাসটাতে বেশ ভিড় ছিলো। ক্যাম্পাস থেকে বাজারের বেশি দূরত্ব নয়, খুব বেশি হলে দুই কিলোমিটার হবে। কিন্তু এই পাঁচ মিনিটের বাস জার্নিতে অন্তত জ'না দুয়েক পার্ভার্ট বয়স্ক ব্যক্তি এবং কমবয়সি ছেলে অমিতের যুবতী স্ত্রীর লেগিংসের পাতলা গেঞ্জির কাপড়ের আবরণে ঢাকা মাংসল পাছাতে ভীড়ের সুযোগে হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলো। আবার কখনো সুযোগ বুঝে খামচে ধরছিলো। পম্পা ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলো একটা অল্পবয়সী ষন্ডামার্কা ছেলে নিজের মধ্যমাটা তার পাছার ফুটোর কাছে নিয়ে এসে লেগিংসের পাতলা গেঞ্জির কাপড়ের আবরণ ভেদ করে আঙুলটা পোঁদের গর্তের ভেতরে ঢোকাতে চেষ্টা করছিলো। অ্যাডভেঞ্চার করতে গিয়ে ভয়ে গলা শুকিয়ে গিয়েছিলো পম্পার। ঠিক সেই মুহূর্তে "গঞ্জ বাজার এসে গেছে" এই বলে কন্ডাক্টর হাঁক দেওয়ায়, ধরে প্রাণ ফিরে পেয়ে তাড়াতাড়ি বাস থেকে নেমে গিয়েছিলো সে।
বাঁকুড়া থেকে এখানে আসার সময় এক ডজন ব্রা সঙ্গে করে এনেছিলো সে। যদিও সেগুলো একটাও নতুন নয়, সবগুলোই তার ব্যবহার করা হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু তার মধ্যে দু-তিনটে ছাড়া বেশিরভাগই হয় ঢিলা হয়ে গিয়েছিল, না হয় স্ট্র্যাপের কাছটা ছিঁড়ে গিয়েছিল, কিংবা হুক ভেঙে গিয়েছিল। এবার যদি নতুন ব্রা না কেনা হয়, তাহলে এরপর বাকিগুলোর কন্ডিশন খারাপ হয়ে গেলে তাকে ঊর্ধ্বাঙ্গের অন্তর্বাস ছাড়াই থাকতে হবে। টুকটাক কয়েকটা জিনিস কিনে বাজারের শেষ প্রান্তে একটা অন্তর্বাসের দোকানে ঢুকলো পম্পা।
"আন্ডার গার্মেন্টস দেখাবেন তো ভাই .." ফাঁকা দোকানটার একমাত্র বিক্রেতা তারই বয়সী একজন পঁচিশ ছাব্বিশ বছরের যুবককে কাঁপা কাঁপা গলায় বললো পম্পা।
"আন্ডার গার্মেন্টসের মধ্যে কি দেখাবো ম্যাডাম?" জিজ্ঞাসা করলো যুবকটি।
- "ওই যে, শার্ট বা কামিজের নিচে পড়ে না! ওইগুলো দেখান।"
- "গেঞ্জি? স্যান্ডো দেখাবো, না হাফস্লিভ দেখাবো ম্যাডাম?"
- "আরে না না, গেঞ্জি কেন হতে যাবে? আরে ভেতরে পড়ে না! ওই দুটোর উপর .. সেইগুলো দেখান।"
- "কোন দুটোর উপর? আরে ম্যাডাম যা বলবেন পরিষ্কার করে বলুন। আপনার কি গলায় সমস্যা রয়েছে? গলার খিঁচখিঁচ দূর করার জন্য ভিক্সের ট্যাবলেট দেবো নাকি?"
- "উফ, এ যে দেখছি কিছুই বোঝেনা। মেয়েদের আন্ডার গার্মেন্টস চাই, উপরে পড়ার। ব্রেসিয়ার .. এবার বুঝতে পেরেছেন? নাকি আরো বুঝিয়ে বলতে হবে?"
- "আচ্ছা এই ব্যাপার? এটা প্রথমে বললেই মিটে যেতো .. এতে এত লজ্জা পাওয়ার কি আছে?"
- "আসলে কি জানেন তো ভাই, আমি ফার্স্টটাইম একা একা কোনো আন্ডার গার্মেন্টসের দোকানে এলাম। আমি তো আগে বাঁকুড়ায় থাকতাম। এখানে কয়েক মাস হলো এসেছি। ওখানে আমার শাশুড়ির সঙ্গে এইসব জিনিস কিনতে যেতাম, উনিই সবকিছু দেখে শুনে কিনতেন, আমি পাশে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতাম। তাই বলতে কিছুটা লজ্জা পাচ্ছিলাম।"
- "বুঝলাম .. তা কিরকম ব্রা দেখাবো বলুন আপনাকে .. প্যাডেড? স্ট্র্যাপলেস? পুশআপ?"
- "নরম্যাল .. নরম্যাল .."
- "ঠিক আছে, আপনার সাইজটা বলুন। সেই অনুযায়ী বের করছি .."
- "সাইজ? এইরে, সেটা তো বলতে পারবো না ভাই। আমার শাশুড়ি জানেন।"
- "ব্রায়ের স্ট্র্যাপের উপর তো সাইজ লেখা থাকে! আবার কোনো কোনো ব্রায়ের দুটো কাপের মাঝখানে যে কানেক্টরটা থাকে, সেখানে লেখা থাকে সাইজ। লক্ষ্য করেন নি কোনোদিন?"
- "না, আমি ওসব লক্ষ্য করিনি। আচ্ছা ভাই আপনার কি মনে হয় না, এইসব কাজের জন্য আপনার দোকানে একাধিক না হোক, অন্তত একজন মহিলা কর্মচারী রেখে দেওয়া উচিত! তাহলে তো মহিলা কাস্টমারেরা একটু কমফোর্টেবল ফিল করবে!"
পম্পার কথাগুলো শুনে দোকানে থাকা যুবকটির মনে হলো, এই মেয়েটা সত্যিই একজন সরল সাদাসিধে ভালো মনের মানুষ। তাই মিষ্টি হেসে বললো, "আমি আপনার কথাটা বুঝতে পারছি এবং আপনার কথাগুলোকে সম্মান করেই বলছি, পুরুষদের থেকে এইসব জিনিস কিনতে আপত্তিটা কোথায়? আমরা যে জিন্স টি-শার্ট এগুলো পড়ি, আপনি যে এই লেগিংস আর কুর্তি পরে এসেছেন, এগুলোর মতোই অন্তর্বাস হলো এক ধরনের পোশাক। এবং এগুলোর মতোই ভীষণ প্রয়োজনীয়। আপনি অন্তর্বাস ছাড়া কোথাও বেরোতে পারবেন কি? পারবেন না। আপনি কি জানেন ম্যাডাম, যে ফ্যাক্টরিতে এগুলো তৈরি হয় সেখানে আশি শতাংশ পুরুষ কারিগর! আপনার কথা অনুযায়ী তাহলে তো তাদেরও সরিয়ে দিয়ে সেখানে শুধুমাত্র মহিলা কারিগর নিযুক্ত করা উচিত। কিন্তু সেটা কি কোনোদিনও সম্ভব হবে? তাই বলছি, এটা যখন আমাদের এতটাই প্রয়োজনীয়, তখন এগুলো কিনতে এসে লজ্জা পাওয়ার কোনো মানেই হয় না।"
~ পরবর্তী আপডেট কিছুক্ষণের মধ্যেই আসছে ~