02-09-2023, 07:39 PM
পর্ব ১৬
রাজীব ধীরে ধীরে অনুরিমার হাতে মালিশ করতে লাগলো। ঠান্ডা শীতল হলে তার কোমল হাতকে ঘষে গরম করছিলো যাতে তার মনে অল্প হলেও এক চিলতে উষ্ণতার আগুন জ্বলে। তারপর রাজীব নিজের বাম হস্ত দ্বারা অনুরিমাকে জড়িয়ে বুকে টেনে নিলো। না পারতে অনু রাজীবের ডান বাহুটি জাপটে ধরলো , যাতে সে সিটের সামনে মুখ থুবড়ে না পড়ে। তখন তার মুখটা ছিল রাজীবের বক্ষ জুড়ে। রাজীব সেখান থেকে মুখটা টেনে উপর দিকে আনলো, চুম্বন দেবে বলে। সে প্রথমে অনুরিমার ঠোঁটে চুম্বন এঁকে দিলো। তারপর মুখশ্রীর চারপাশে চুম্বনের বর্ষণ করতে লাগলো।
চুম্বনের প্রবণতা বাড়তে থাকলো, ফলে অবচেতন মননেই দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরলো। পেছন থেকে সেটা চাক্ষুষ অভিজ্ঞতা নিচ্ছিলো সমীর। রাজীব ও অনুরিমা উষ্ণ চুম্বনের মাধ্যমে খুব কাছাকাছি চলে এসেছিলো। রাজীব তো পারলে অনুরিমাকে নিজের কোলেই তুলে নিচ্ছিলো। অনুরিমা নিজের শরীরের ভার-টা কে প্রায় রাজীবের উপরই ছেড়ে দিয়েছিলো। রাজীব দু'দিক দিয়ে নিজের হস্তযুগলের দ্বারা অনুরিমাকে শেকলের ন্যায় জাপ্টে রেখেছিলো।
এলোপাথাড়ি চুমুতে অনুরিমার বদন সে যেন ভিজিয়ে দিচ্ছিলো। অনুরিমা কি করবে বুঝে উঠতে পাচ্ছিলো না। রাজীবের দামালপনায় যে তার উত্তেজনার পারদ ক্রমশ বেড়েই চলেছিলো। সে এসেছিলো এখানে শুধু রিহার্সালের জন্য , কিন্তু রাজীবের দুস্টুমি তাকে এ কোন অতল সমুদ্রে তলিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ! ডুবে যাওয়ার আগে এক্ষুনি নিজেকে সামলে নিতে হবে নাহলে যে বড্ড দেরী হয়ে যাবে ! এই ভেবে অনুরিমা রাজীবকে থামতে বললো। বাধ্য ছেলের মতো রাজীবও নিজের কারুকার্য সাময়িকভাবে বন্ধ রেখে অনুরিমার পানে চেয়ে রইলো , এটা জানার জন্য যে আবার কেন হঠাৎ ছন্দপতন ?
অনুরিমা বললো , "আমাদের মনে হয় এর থেকে বেশি এগোনো উচিত নয়। রিহার্সাল করতে করতে আমরা যেন অজান্তেই বারংবার ক্যারিড অ্যাওয়ে হয়ে যাচ্ছি। এরকম চলতে থাকলে না চাইতেও বড়োসড়ো একটা অনাচার হয়ে যাবে আমাদের দ্বারা , যেটা কোনোমতেই কাঙ্খিত নয়। তাই আমার মনে হয় আজকের মতো এখানেই আমাদের রিহার্সালের ইতি টানা যাক। "
অনুরিমার কথা শুনে রাজীবের প্রচন্ড রাগ উঠছিলো। কারণ তার যৌনউত্তেজনা তখন সীমানা পেরিয়ে গেছিলো। তার মন চাইছিলো অনুরিমাকে হলের মেঝেতে শুইয়ে মর্দন করতে। সে কোনোমতে নিজের চাহিদার উপর লাগাম টেনে বললো , "ঠিক আছে , তুমি যদি এখন আর কমফোর্টেবল ফীল না করো , তাহলে আজ এই পর্যন্তই থাক ! তোমার কমফোর্ট জোনের বাইরে গিয়ে আমি কিছু করতে চাইনা। তবে মনে রেখো , আগামী দিন তোমাকে আরো প্রস্তুত হয়ে আসতে হবে। আজকে যা হলো তা আশানরুপ হয়নি। তোমাকে মনকে আরো বেশি শক্ত ও দৃঢ় করতে হবে। মনে রাখবে , তুমি যা করছো তোমার সমীরের ভালোর জন্যই করছো। "
অনুরিমা চুপ করে মন দিয়ে রাজীবের কথা গুলো শুনলো। রাজীবের হ্যাঁ তে হ্যাঁ মেলালো। রাজীব বললো আর এখানে সময় নষ্ট করে লাভ নেই , এমনিতেও তারা সিনেমা দেখতে আজ আসেনি , বেশিরভাগ সময়ই তারা মনোযোগ দিয়ে সিনেমাটা দেখেনি। তাই এখন তাদের ওঠবার পালা। রাজীবের কথামতো অনুরিমাও নিজের সিট থেকে উঠলো। সমীর দেখলো দুজন কে সিনেমা শেষ হওয়ার প্রাক্কালেই হল ত্যাগ করে চলে যেতে। সে তাও কিছুক্ষণ বসে রইলো , পাছে তারা আবার ফিরে আসে। সমীর তাদের কারুকার্য দেখতে পেলেও , তাদের কথোপকথন তো সে শুনতে পায়নি। তাই তাদের এতো তাড়াতাড়ি হঠাৎ উঠে যাওয়ার কারণ সে ঠাহর করে উঠতে পাচ্ছিলো না। তবে কি রাজীব ও অনুরিমা অন্য কোথাও যাওয়ার প্ল্যান করলো ? অন্য কোথাও গিয়ে তারা এসব করবে ? রাজীব অনুরিমাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেনা তো ? এইসব আশঙ্কা সমীরের মনের ভেতর ঘুরতে লাগলো।
কিন্তু রাজীব তো তাকে বলেছিলো আগাম সবকিছু সে আগে থেকে সমীরকে জানিয়ে রাখবে ! সেই ভেবে সমীর পকেট থেকে ফোনটা বের করে চেক করতে লাগলো রাজীবের তরফ থেকে তার উদ্দেশ্যে নতুন কোনো আপডেট আছে কিনা। ফোনটা সাইলেন্ট ছিল যাতে কোনোভাবে হঠাৎ বেজে না ওঠে। রিংটোন টা তো অনুরিমার চেনা ছিল , তার কানে এসে পৌঁছলে সাড়ে সর্বনাশ হতো। সমীর ফোন খুলে কিছু না পেয়ে খানিকটা ডিসাপয়েন্টেড হলো। ভাবলো যে সেও এখন উঠবে। হল থেকে বেরিয়ে দেখবে কোথায় গেলো ওরা দুজন। সেইমতো সমীরও সিনেমা হল ছেড়ে বেরিয়ে গেলো। বাইরে বেরিয়ে তাদের খুঁজে পেলো না সে। কিছুটা নিরাশ , কিছুটা হতভম্ব হয়ে রইলো। কি করবে সেটা ভেবে উঠে পাচ্ছিলো না। রাজীবকে কল করবে ? নাহঃ ! অনুরিমা তো ওর সাথে আছে । তাহলে কি একটা মেসেজ দেবে ? ভাবতে ভাবতে সমীরের কাঁধে একটা হাত এসে পড়লো। সমীর চমকে উঠলো। পিছন ফিরে দেখে , রাজীব দাঁড়িয়ে। যথারীতি আর কেউ চিনুক না চিনুক রাজীব ঠিক ওকে আইডেন্টিফাই করতে পেরেছিলো।
"কি , কেমন দেখলেন আমাদের ?", রাজীব জিজ্ঞেস করলো।
সমীর ভয়ে ভয়ে চারপাশটা দেখলো , অনুরিমা নেই তো ! রাজীব বুঝতে পারলো , "অনুরিমাকে খুঁজছেন ? চিন্তা নেই , সে চলে গ্যাছে। আমি বললাম এগিয়ে দিই , উনি রিফিইউস করলেন। আমি আপনাকে অনেক আগেই খেয়াল করেছি , সেই একই ছদ্মবেশ নিয়েই তো এসেছেন। হলে পিছনের রো তে বসেছিলেন, সব নোটিশ করেছি। "
রাজীবের কথা শুনে সমীর খানিকটা অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়লো। তা দেখে রাজীব আর তার অস্বস্তি না বাড়িয়ে বললো , "অতো লজ্জা পাবেন না। যে পথে আপনি নেমেছেন সেই পথে লজ্জা ঘেন্না ভয় তিন থাকতে নয়। আপনার মুখ-চোখ দেখে বোঝা যাচ্ছে যে আপনি ভয়ে ভয়ে ছিলেন পাছে অনুরিমা আপনাকে চিনে ফেলে। এখন আমি আপনাকে চিনতে পারায় আপনি লজ্জিত বোধ করছেন। আর ঘেন্না ? সেটা আপনার অভিরুচির উপর নির্ভর করছে , আপনি কিরকম ফীল করলেন আমাকে আর অনুরিমাকে একসাথে দেখে। "
- "আসলে আমি ঠিক বলে বোঝাতে পারবো না আমার ফিলিংসটা কে। একদিকে যেন ভেতরটা পুড়ে খাঁক হয়ে যাচ্ছিলো ওই দৃশ্য দেখে আবার অন্যদিকে অদ্ভুত এক অবিরাম উত্তেজনার সৃষ্টি হচ্ছিলো। অনুরিমা কোনোদিনও আমাকে ছাড়া অন্য কোনো পুরুষকে স্পর্শ করেনি , সেই প্রাণের প্রিয়া অনুরিমাকে আপনার সাথে দেখে কিছুটা হলেও ঘেন্না হচ্ছিলো বইকি। আর হ্যাঁ ভয় আমি পেয়েছিলাম , অনুরিমার কাছে ধরা পড়ার। এই অবস্থায় এইসব নিয়ে আপনার সাথে কথা বলতে লজ্জা বোধও করছি। তাই স্বীকার করতে বাধা নেই যে আমার এখনও লজ্জা ঘৃণা ভয় কোনোটাই যাইনি , সবকটি চেতনা বর্তমান রয়েছে।"
- "বেশ , তাহলে আপনিই বলুন , এখন আপনি কি চান ? আমি কি আপনার স্ত্রীয়ের সাথে কন্টিনিউ করবো নাকি এখানেই ইতি টানবো ? আপনার সাধ কি মিটে গ্যাছে ?"
- "বুঝতে পারছি না ডাক্তার বাবু , এক অদ্ভুত অন্তর্দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ে গেছি। মন চাইছেনা এসব মানতে কিন্তু হরমোন বারবার উত্তেজিত হয়ে পড়ছে , আরো কিছু দেখবার বা অনুভব করবার আশায়। "
- "তার মানে মুখে যাই বলুন না কেন, এখনও আপনার আঁশ মেটেনি। কি তাই তো ?"
সমীর মাথা নিচু করে রইলো , তারপর কিছুক্ষণ থেমে সে জিজ্ঞেস করলো , "আচ্ছা আমি যদি আপনাকে অ্যালাও করি তাহলে কতদূর আপনি অনুরিমার সাথে যাবেন ? "
"যতদূর আপনি অ্যালাও করবেন ততদূর ", সপাটে জবাব দিলো রাজীব।
"তার মানে আমি থামতে না বললে আপনি সবকিছু করে ফেলবেন আমার স্ত্রীয়ের সঙ্গে ", বলে শিউরে উঠলো সমীর।
- "আমার যা বলার আমি বলে দিয়েছি। এবার এটাকে ইন্টারপ্রেট করার পালা আপনার।"
রাজীবের সাথে অনুরিমা , নগ্ন অবস্থায় ! এক লহমায় কল্পনা করতেই সমীরের মাথা চট করে ঘুরে গেলো। তা দেখে রাজীব তাকে ধরে সামলে নিয়ে বললো , "আপনি ঠিক আছেন, মিস্টার মল্লিক ?"
"আমিঃ ...... আমি একটু জল খাবো। ....." , কাঠ গলায় সমীর বলে উঠলো।
- "দাঁড়ান আমি ব্যবস্থা করছি , আপনি একটু বসুন এখানে। "
সমীরকে বসিয়ে রাজীব গেলো জল কিনে আনতে। জল এনে দিয়ে সমীরকে সে পান করালো। কাঁধে হাত রেখে বললো , "আমি বলি কি আপনি আপনার গেট আপ-টা চেঞ্জ করে এবার বাড়ি ফিরে যান। অনেকক্ষণ এই ছদ্মবেশে রয়েছেন। পাগড়ি পড়ার অভ্যাস নেই আপনার তাই মাথায় এতো চাপ পড়ছে। বাড়ি গিয়ে শান্ত মনে ভাবুন , আপনিই কি চান ! নিজের ভাগ্যের নির্ধারক এখন আপনি নিজেই। আপনি যদি আপনার অবচেতনে মন বানিয়ে থাকেন অনুরিমাকে আমার বিছানায় পাঠানোর তাহলে সেটা নিয়ে আত্মবিশ্লেষণ করুন। ভাবুন আপনি সেই দৃশ্য সহ্য করতে পারবেন কিনা ? তবেই আমি এগোবো আপনার কথামতো , নাহলে নয়। "
- "আচ্ছা , অনুরিমা রাজি হবে আপনার সাথে যেতে ? ওর স্বামী বলে বলছিনা , কিন্তু সত্যি ও খুব আলাদা মেয়ে। ওর পক্ষে দ্বিচারিতা করা সত্যিই নেক্সট টু ইম্পসিবল। "
- "দ্রৌপদীও তো শুধু অর্জুনকেই বিয়ে করতে চেয়েছিলো , তাঁর ব্যাতিত অন্য কাউকে মন দিতে সে দৃঢ়ভাবে অরাজি ছিল। কিন্তু সেই দ্রৌপদীকেও পরিস্থিতির জাঁতাকলে পড়ে তাঁর ভাসুর ও দেওরদের শুধু বিয়েই করতে হয়নি , শরীরও দিতে হয়েছিলো। পরিস্থিতি মানুষ তথা দেবতাকে দিয়েও অনেক কিছু করায়। নিঃসন্দেহে আপনার স্ত্রী একজন পতিব্রতা নারী , কিন্তু কালচক্রে তার সতীত্বও নষ্ট হতে পারে যদি আপনি চান। "
- "কিন্তু এর ফলে যদি ও আমার থেকে দূরে সরে যায় ?"
- "কার কাছে যাবে ? আপনি তো তাকে আমার কাছেই পাঠাচ্ছেন ? আর এরকম ক্রিয়া আমি তো প্রথমবার করছিনা। আমি যদি আপনার মতো পেশেন্টের সাথে প্রতারণা করে তাদের স্ত্রীদের ইলোপ করে নিতাম তাহলে তো আমার পশাড় কবেই উঠে যেত মশাই।"
- "তার মানে এর আগেও আপনি ......?"
- "অতো ডিটেইলস-এ আপনাকে বলবো না , কারণ আমি আমার সব পেশেন্টের গোপনীয়তাটা-কে মেইনটেইন করি। নিজের ঢাক পেটানোর জন্য একজন পেশেন্টের খবর অন্য পেশেন্টকে দিইনা। এটা আমার এথিক্স এর বাইরে। তবে এইটুকু বলতে পারি যে আমি পূর্বেও কিছু বিবাহিতা নারীর সাথে যৌনকার্যকলাপে লিপ্ত হয়েছি। বেশিরভাগ সময়ে তা হয়েছে তাদের স্বামীর অনুমতির দ্বারা। বেশ কিছু নিঃসন্তান দম্পত্তির কোল আমি ভরিয়েছি স্ত্রীদের সহিত বিছানা ভাগ করে। তবে আপনার স্ত্রীয়ের মতো এতো দৃঢ় মানসিকতার মেয়ে আমি আগে একটাও দেখিনি। আগে যে সকল কেস আমার কাছে এসছে , তা সবই প্রায় সেলিব্রিটি কেস , যারা লোকলজ্জার ভয়ে আইভিএফ পদ্ধতির শরণাপন্ন হতে চায়না। অদ্ভুত সোশ্যাল ডগমা কাজ করে তাদের মধ্যে। তাই তারা তাদের বাড়িতে আমায় নিমন্ত্রণ জানায় , বলা ভালো বিছানায় নিমন্ত্রণ জানায় , বাড়ির বধূকে অন্তঃসত্ত্বা করার জন্য। কেউ কেউ নিজের কাকোল্ড ফ্যান্টাসি পূরণ করার জন্যও আমার সাথে কনসাল্ট করেছে। কিন্তু সেইসব ক্ষেত্রে দেখা গ্যাছে স্বামী স্ত্রী উভয়ই রাজি এই পরিকল্পনায় শামিল হতে। আপনাদের ব্যাপারটাই খুব ইউনিক এবং জটিল। যেখানে আপনি চান এই রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতাকে অনুভব করতে , আর আপনার স্ত্রী চান তা থেকে আপনাকে বিরত রাখতে। "
- "তাহলে আপনি আমার স্ত্রীয়ের সেই ইচ্ছেকে প্রাধান্য না দিয়ে আমার ইচ্ছেটাকেই কেন প্রাধান্য দিচ্ছেন ?"
- "কারণ আমি জানি আপনি নাছোড়বান্দা ব্যক্তি। মুখে না বললেও আপনার হাবেভাবে তা বোঝা যায়। ডেসপারেশনে এসে আপনি কোনো ভুল পদক্ষেপ না নিয়ে ফেলেন , তার জন্যই আপনারই ইচ্ছেটাকে আমায় বেশি গুরুত্ব দিয়ে বিচার করতে হচ্ছে। আমি চাইলে আজকে আরো অনেক কিছু করতে পারতাম , যদিও আপনার স্ত্রী রাজি ছিলোনা , তাও কোনোমতে তাকে রাজি করিয়ে ফেলতাম। কিন্তু কেন করলাম না জানেন ? আপনার জন্য ! আপনার কথা ভেবে। আগে দেখতে চাইলাম আপনার কিরকম রিঅ্যাকশন হয় এই স্বল্প অনুভবে। আমি চাইনা আপনার আর অনুরিমার সম্পর্ক খারাপ হোক। আমি দেখতে চাই আপনি কতোটা তৈরী নিজের ফ্যান্টাসির বাস্তবে সম্মুখীন হওয়ার জন্য। সেই বুঝে ব্যবস্থা নেবো আমি।"
"তাহলে এখন আমার কি করণীয় ডাক্তার বাবু ?", হতভম্বের মতো সমীর জিজ্ঞেস করলো।
- "ওই যে বললাম , আপনি এখন নিজের গেট আপটা চেঞ্জ করে বাড়ি ফিরে যান। বাড়ি ফিরে আগে ভাবুন আপনি কতদূর অবধি নিজের ফ্যান্টাসিটা-কে বাস্তব রূপ দিতে চান। আমি ধাপে ধাপেই এগোবো। যখন মনে হবে জল মাথার উপর দিয়ে বইছে , তখন বলবেন আমি থেমে যাবো। কিন্তু সাবধান ! অনুরিমার মন উচাটন হলে তখন আমার হাত থেকে খেলাটা বেরিয়ে যাবে। তখন উল্টে আমাকে ওর ডাকে সাড়া দিতে হবে , দিতেই হবে। আমি কোনো মেয়েকে উত্তেজিত করে উপোসী রাখতে পারবো না , তাতে কামদেব আমায় পাপ দেবে। "
- "আচ্ছা , এরপর আপনি কি করতে চলেছেন ওর সাথে ?"
- "আগে নিজের মনকে স্থির করুন। একটা সিদ্ধান্তে এসে পৌঁছন। করলে আজকেও অনেক কিছু করতে পারতাম , তখন দেখতেন আমার পরবর্তী কার্যক্রম গুলো। কিন্তু আজকে আপনার স্ত্রী প্রাথমিকভাবে আমায় বাধা দিলেন , আমিও প্রথমদিন বলে তেমন বিশেষ জোর করলাম না। আপনার স্ত্রী এখনও সংকুচিত হয়ে রয়েছে। আপনার স্ত্রী আজ আপনার কথা ভেবেই অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিজের ডানা মেলতে এসছিলেন। তার মানে এখনও খেলাটা আমার নিয়ন্ত্রনেই আছে। আপনি বললে দান দেবো নাহলে ছেড়ে দেবো। এবার আপনি ম্যাচ রেফারি , বললে ম্যাচ আবার আরম্ভ হবে নাহলে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হবে।"
রাজীব ও সমীরের কথা শেষ হলো। রাজীব নিজ বাড়ি ফিরে গেলো। যাওয়ার আগে পুনরায় তার কথা গুলো সমীরকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে গেলো। সমীর গাড়িতে বসে নিজের গেট আপটা খুলে আসল রূপে ফিরে এলো। সেও বাড়ির দিকে রওনা দিলো। মাঝপথে সে একটি পার্কে এসে বসলো। এখনও তার টাইম হয়নি বাড়ি ফেরার। সময়ের আগে বাড়ি ফিরলে যদি অনুরিমা কোনো প্রশ্ন করে ? নার্ভাস হয়ে উল্টোপাল্টা উত্তর যদি দিয়ে ফেলে ? নাহঃ নাহঃ , এসব ফালতু রিস্ক একদম নেওয়া যাবেনা। তার চেয়ে বরং বাড়ির ছেলে যথা সময়ে বাড়ি ফিরুক। আর তার মধ্যে সে আরো একবার রাজীবের বলা কথা গুলোকে নিজের বিচার বিবেচনা দিয়ে ঝালিয়ে নিক।
সেই মতো পার্কে বসে সমীর রাজীবের কথা গুলো নিয়ে মনে মনে চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে লাগলো। একটা সিদ্ধান্তে যে তাকে পৌঁছতেই হবে। হয় ইস্স পার নাহলে উস্স পার। মনে মনে কৌতূহল জাগছিলো রাজীবের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে। তাই সে অনেক ভেবে চিন্তে ডিসাইড করলো যে সে রাজীবকে আরো একটা চান্স দেবে নিজের বিরল প্রতিভাকে অনুরিমার উপর প্রয়োগ করে তার সামনে তা প্রদর্শিত করানোর জন্য।