13-08-2023, 09:53 AM
কারো পৌষ মাস কারো সর্বনাশ
দীপকের সময়টা সত্যিই খারাপ চলছে। আগে সেই যে চাকরি খুইয়ে বাড়িতে বেকার হয়ে বসে পড়েছে, আজ পর্যন্ত আর কোনো নতুন কাজ জোটাতে পায়নি। সে একটা কো-অপারেটিভ ব্যাংকে ক্যাশিয়ারের কাজ করতো। মাস তিনেক আগে ব্যাংকের ব্যবসায় বড়োসড়ো কারচুপি ধরা পরে। ফলস্বরূপ মালিকদের জেল হয় আর ব্যাংকে তালা লেগে যায়। নিয়তির করুণ পরিহাসে বিনা অপরাধে দীপককে দুরূহ শাস্তি ভোগ করতে হয়। তারপর থেকে সে রীতিমত গরু খোঁজা খুঁজেও আরেকটা চাকরি জোগার করে উঠতে সক্ষম হয়নি। ভাগ্যদেবী যেন তাকে চিরকালের জন্য পরিত্যাগ করে বসেছেন। অবশ্য এই মন্দা বাজারে তিরিশ বছরের এক অতি সাধারণ মানের ব্যাংক ক্যাশিয়ারের পক্ষে সহসা নতুন করে একটা যথাযথ কাজ জোটানো প্রকৃতপক্ষেই খুব কঠিন।
কথায় আছে বিপদ কখনো একা আসে না। মাস তিনেকের বিষাদময় বেকারত্বের যন্ত্রণা দীপকের যৌন জীবনেও সর্বগ্রাসী থাবা বসিয়ে ছেড়েছে। তার রূপসী বউকে সে আর আগের মতো বিছানায় সুখ দিতে পারে না। ফলে বউয়ের চোখে তার মর্যাদা তলানিতে এসে থেকেছে। এই তিনটে মাসে অকর্মন্ন স্বামীর প্রতি রমার মন একেবারেই বিষিয়ে উঠেছে। তারা একই কলেজে পড়তো। দীপক তার থেকে আড়াই বছরের সিনিয়র। কলেজেই প্রেম এবং শেষমেষ বিয়ে। রমা রীতিমতো রূপবতী, যাকে বলে ডানা কাটা পরী। একরাশ কালো ঘন চুল, ফর্সা চিকন ত্বক, বড় বড় টানা টানা চোখ, টিকালো নাক, গোলাপের পাঁপড়ির মতো লাল ফুলো ঠোঁট, মিষ্টি কণ্ঠস্বর আর সাথে জিভে জল এনে দেওয়া ৩৬ডিডি-২৮-৪০ এর লোভনীয় সুডৌল ফিগার। রমা যখন রাস্তাঘাটে হাঁটে, তখন তার ভারী দুধ-পাছা পোশাকের তলায় এমন দৃষ্টিকটুভাবে দোলে যে লোকজনের নজর তার দিকে আপনা থেকেই চলে যায়। উপরন্তু তার স্বভাবচরিত্রও মোটে সুবিধার নয়। ইচ্ছাকৃত খোলামেলা পোশাক পড়ে তার শাঁসালো শরীরটাকে লোকসমাজে প্রদর্শন করতে ভালোবাসে। স্বচ্ছ সিফন শাড়ির সাথে সামনে-পিছনে গভীরভাবে কাটা আঁটোসাঁটো ব্লাউস পড়ে থাকতে খুবই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। এমন এক রঙ্গপ্রিয় নারী যে স্বভাবত কামুকি হবে, সেটা আর আলাদা করে বলার দরকার হয় না। এবং এটিও বলার অপেক্ষা রাখে না যে নিয়মিত যৌনসহবাসে লিপ্ত হওয়া এমন একজন কামবিলাসীনী মহিলার কাছে শ্বাস নেওয়ার মতোই গুরুত্বপূর্ণ। অতএব ভাগ্যের উপহাসে আচমকা অক্ষমতার শিকার স্বামীর প্রতি এক অতিশয় কামপ্রবণ স্ত্রীয়ের বিমুখ হয়ে ওঠা অত্যন্ত স্বাভাবিক কারণেই অনিবার্য।
নিদারুণ নিরাশার মধ্যে তিনটে মাস কাটানোর পর দীপকের জীবনে বিপদের সর্বশেষ ডঙ্কাটি বাজিয়ে রমা আচমকা তাকে জানালো যে আর সে স্বামীর উপর ভরসা রাখতে পারছে না। তাই সে নিজেই এবার রোজগারের রাস্তায় নামছে। যুগের হাওয়ায় গা ভাসিয়ে আর পাঁচটা সুন্দরী বাঙালী গৃহবধূর মতো রমাও সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলিতে ভীষণভাবে সক্রিয়। রোজ কিছুটা সময় ফেসবুক আর হোয়াটস্যাপ চালিয়ে অপচয় না করলে তার পেটের ভাত হজম হয় না। সংসারের কাজের ফাঁকে ফাঁকে প্রতিদিন চার-পাঁচটা ছবি আর ভিডিও ইনস্টাগ্রামে পোস্ট না করলে তার রাতে ঘুম হয় না। আর অপ্সরা সুন্দরী বলে রমার ফলোয়ারের সংখ্যাও প্রচুর। তবে ইন্টারনেটের মঞ্চটিকে রমা এর আগে কোনোদিনও যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে বিচার করেনি। শুধুমাত্র অঢেল লাইকস-কমেন্টস পাওয়ার লোভে সে এতদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ছবি ও ভিডিও ছেড়ে এসেছে এবং বেজায় সফলতা পেয়েছে। তবে ভুলবশতও কখনো ইন্টারনেট থেকে টাকা রোজগার করার কথা তার মাথাতে আসেনি। কিন্তু তার ইন্সটা ফলোয়ারদের মধ্যে একজন বিশেষ ব্যক্তি আচমকা যখন একটি লোভনীয় প্রস্তাব তার সামনে পেশ করলো, তখন সে সেটা সহজে এড়িয়ে যেতে পারলো না।
এই বিশিষ্ট ফলোয়ারের নাম রাজদীপ সেন। বিনোদন শিল্পের সাথে জড়িত। ওনার একটা ফ্রিল্যান্স এজেন্সি আছে, যেটা মনোরঞ্জনপূর্বক ওয়েবসাইটের জন্য বিভিন্ন ধরণের চিত্তাকর্ষক ভিডিও তোলে। অন্তত ওনার ইন্সটা প্রোফাইল তাই বলছে। রাজদীপবাবু ইনস্টাগ্রামে রমাকে বার্তা লিখে জানিয়েছেন যে তিনি তার ইন্সটা ভিডিওগুলো দেখে ভীষণই প্রভাবিত হয়েছেন এবং ওনার এজেন্সিতে মডেল হিসাবে তাকে সই করাতে চান। তিনি যে প্রস্তাবটি নিয়ে ঠিক কতখানি আন্তরিক, সেটা বোঝাতে ওনার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরটিও বার্তায় উল্লেখ করে দিয়েছেন। ব্যাপারটির গুরুত্ব বুঝে রমা কালবিলম্ব না করে রাজদীপবাবুকে ফোন করে আর উনি পাঁচ মিনিটের মধ্যেই তাকে মডেলিং করার জন্য রাজি করিয়ে ফেলেন। ঠিক হয় রমা সেই সন্ধ্যায় ওনার অফিসে গিয়ে কাগজপত্রে সইসাবুদ করে দিয়ে আসবে। ফোনটা রাখার পর সে সরাসরি স্বামীর কাছে গিয়ে জানায় যে দৈবক্রমে টাকা কামানোর একটা সুবর্ণ সুযোগ তার সামনে এসে হাজির হয়েছে। একটা বিনোদনমূলক এজেন্সি তার সাথে যোগাযোগ করে তাকে মডেল হিসাবে চাইছে। মোটা পারিশ্রমিক দেবে। আজ সন্ধ্যা আটটা নাগাদ তাকে এজেন্সির অফিসে গিয়ে চুক্তিপত্রে সই করে আসতে হবে।
তার চটকদার বউয়ের হঠাৎ করে বিনোদন জগতে ঢুকতে চাওয়াটা দীপকের মোটেও ভালো লাগলো না। সে বাধা দিতে চাইলো। কিন্তু তার প্রতিবাদ ধোপে টিকলো না। রমা সোজাসুজি জানিয়ে দিলো যে বাড়িতে কাউকে না কাউকে রোজগার করে আনতেই হবে। বসে বসে তো আর সারাটা জীবন খাওয়া যায় না। ইতিমধ্যেই সংসারে অভাব দেখা দিয়েছে। ভাগ্য ভালো যে তাদের এখনো কোনো সন্তান হয়নি। হলে যে তাদের অবস্থা যে কতটা সঙ্গিন হয়ে পড়তো তা একমাত্র ভগবানই জানেন। অতএব রান্নাঘরের হাড়ি কাঠে ভাত চড়াতে চাইলে, স্বামী-স্ত্রীয়ের মধ্যে যেকোনো একজনকে টাকা কামানোর রাস্তা দেখতেই হবে। তার অকর্মা বর যখন এতদিন ধরে চেষ্টা করেও একটা কাজ জোটাতে ব্যর্থ, তখন সে নিজে একবার চেষ্টা করে দেখতে চায় যে এই শোচনীয় পরিস্থিতি থেকে তাদেরকে উদ্ধার করা যায় কিনা। দীপককে ঝাঁঝালো কণ্ঠে রমা একেবারে পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দিলো যে এই তিনটে মাসে অভাবের তাড়নায় সে যথেষ্ট মরিয়া হয়ে উঠেছে এবং তা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য এখন সে যে কোনধরণের সুযোগকে যথাযথ কাজে লাগাতে প্রস্তুত।
যা ভাবা তাই কাজ। সন্ধ্যাবেলায় রমা চুল ছেড়ে, মুখে চড়া মেকআপ করে, ঠোঁটে গাঢ় করে লাল লিপস্টিক ঘষে, কালো রঙের ছোট হাতার গভীরভাবে সামনে কাটা পিছনখোলা জর্জেটের ব্লাউজ আর ধূসর রঙের পাতলা ফিনফিনে চুমকি বসানো জর্জেটের শাড়ি গায়ে চাপিয়ে সাথে চার ইঞ্চির একজোড়া কালো হিল তোলা জুতো পায়ে গলিয়ে একটা কালো রঙের চামড়ার ভ্যানিটি ব্যাগ হাতে ঝুলিয়ে আটটা নাগাদ এজেন্সির অফিসে গিয়ে হাজির হলো। নিউটাউনে একটি বারো তলা বিল্ডিংয়ের একদম উপর তলায় ঝাঁ চকচকে নতুন অফিস। গোটা তলাটাই 'ফ্রী লাভ এন্টারটেনমেন্ট সার্ভিসেস' নামক বিনোদনমূলক এজেন্সির নামে নিবন্ধিত। রমা গিয়ে পৌঁছাতেই ফ্রন্টডেস্কের সুন্দরী রিসেপশনিস্টটি তাকে সামনের বড়সড় নরম গদিযুক্ত সোফায় বসে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বললো। তাকে বেশিক্ষণ বসতে হলো না। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই রিসেপশনিস্টটি তাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে সোজা এজেন্সির কর্ণধার রাজদীপ সেনের অফিসে ঢুকিয়ে দিলো।
অফিসটা ছোট হলেও বেশ ছিমছাম। একজন পঁয়ত্রিশ-ছত্রিশের সুদর্শন পুরুষ এক নরম গদিযুক্ত দামি চেয়ারে আরাম করে বসে সামনের কাঁচের টপ লাগানো স্টিলের একটা বড়সড় টেবিলের উপর একটি অ্যাপেলের ল্যাপটপে কাজ করছেন। ওনার পিছনদিকে দেওয়ালের গা ঘেঁষে একটা বড়সড় স্টিলের আলমারি দাঁড় করানো রয়েছে। দুটো নরম গদি লাগানো স্টিলের চেয়ার টেবিলের এপারে পাতা। এজেন্সির কর্ণধার শ্রী রাজদীপ সেন চেয়ারে বসে থাকলেও, দেখেই বোঝা যায় যে উনি বেশ লম্বা। সাদা ব্র্যান্ডেড শার্টের তলা থেকে উঁকি মারা চওড়া ছাতি আর বলিষ্ঠ দুটো হাত স্পষ্ট ইঙ্গিত করে যে উনি নিয়মিত জিমে ওয়েট ট্রেনিং করেন। ব্যাকব্রাশ করা জেল লাগানো চুল। নিখুঁতভাবে কামানো দাড়ি। সংক্ষেপে, বেশ চিত্তাকর্ষক ব্যক্তিত্ব।
অফিসে ঢুকতেই রাজদীপবাবু খুব খাতির করে রমাকে সাদর অভ্যর্থনা জানিয়ে একটি খালি চেয়ারে বসতে ইশারা করে তাকে তারিফের বন্যায় ভাসিয়ে দিলেন, "ওয়াও! ইউ লুক অ্যামেজিং। ভিডিওতে যা দেখেছি, তার থেকে অনেকবেশি হট। ভগবান দেখছি তোমায় অনেক সময় নিয়ে বানিয়েছেন। তুমি তো আগুন জ্বালিয়ে দেবে। তোমার ওই সেক্সি শরীরটা তো পুরো বারুদে ঠাসা। সরি, হয়তো একটু বাড়াবাড়ি করে ফেলছি। কিন্তু বিশ্বাস করো, তোমার মতো সেক্সবোম্বের সামনে সেল্ফ-কন্ট্রোল রাখাটা রিয়ালি ডিফিকাল্ট। তোমার এই ডিভাইন রূপযৌবনের প্রশংসা করার মতো উচিত শব্দ আমার ডিকশনারিতে অন্তত নেই।"
রমাকে সামনাসামনি দেখে উনি যে সত্যিই আনন্দে আত্মহারা হয়েছেন সেটা অবশ্য আলাদা করে বলে না দিলেও চলতো। সে অফিসের ঢোকার সাথে সাথে ওনার দৃষ্টি যেন পুরোপুরি তার দিকে আটকে গেছে। নিতান্ত বেহায়ার মতো লোভাতুর চোখে তার লাস্যময় শরীরটাকে ক্রমাগত গিলে চলেছেন। অবশ্য ওনাকে এমন নির্লজ্জের মতো তার প্রতি আকৃষ্ট হতে দেখে রমা অস্বাচ্ছন্দ্যবোধ করার বদলে আহ্লাদিত হয়ে উঠলো। সে তো এটাই চেয়েছিলো। প্রথম সাক্ষাতেই যাতে এজেন্সির মালিক তার প্রতি যথেষ্ট দুর্বল হয়ে পড়েন, সেইজন্যই তো সে চড়া মেকআপ করে খোলামেলা বেশে ওনার অফিসে এসে হাজির হয়েছে। তার কৌশল যে কাজ করছে, সেটা বুঝতে পেরে সে মনে মনে উল্লসিত হয়ে উঠলো। তবে সেই উচ্ছাস মুখে প্রকাশ করলো না। চেয়ারে বসতে বসতে ওনার প্রশংসার জোয়ারের প্রত্যুত্তরে রমা একগাল হেসে পাল্টা ছোট্ট করে ওনার তারিফ করলো, "থ্যাংক ইউ স্যার! আপনি নিজেও যথেষ্ট হ্যান্ডসাম।"
সুন্দরীর মুখে আপন তারিফ শুনে রাজদীপ সেন অট্টহাসি দিয়ে উঠলেন, "হাঃ হাঃ হাঃ হাঃ! তাই নাকি? তুমি সত্যি বলছো? আই অ্যাম গ্ল্যাড টু হিয়ার দ্যাট ফ্রম এ হট লেডি লাইক ইউ। তোমার মতো সেক্সি লেডির মুখে নিজের প্রশংসা শুনতে যে কোনো পুরুষেরই ভালো লাগবে। আই অ্যাম নো এক্সেপশন। বাট, প্লিজ ডোন্ট কল মি স্যার। কল মি আরডি। আমি ফর্মালিটিতে নয়, ফ্রেন্ডসিপে বিশ্বাস করি। আমার ফ্রেন্ডরা আমাকে আরডি বলেই ডাকে। তুমিও আজ থেকে তাই ডেকো। এনিওয়ে, আমি খোলাখুলি কথাবার্তা বলতে পছন্দ করি। আগেই বলেছি ইনস্ট্রাতে তোমার হট ভিডিওগুলো দেখে তোমাকে আমার ভীষণ মনে ধরেছে। তবে ওগুলো সবকটাই শর্টস। এখানে কিন্তু অনেক লেংথি ভিডিওজ শুট করতে হবে। অনেকবেশি প্রফেশনালিজম শো করতে হবে। এখানে অ্যাটিচুডটাই সব। দ্য বিগ কি টুওয়ার্ডস সাক্সেস। এন্টারটেনমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকবেশি ওপেন মাইন্ডেড হওয়া দরকার। ইউ নিড টু পুশ দ্য বাউন্ডারিজ। বি রিয়ালি ফ্লেক্সিবল। এখানে তোমার থেকে যা এক্সপেক্ট করা হবে, ঠিক সেটাই যথাযথভাবে ডেলিভার করতে হবে। দরকার হলে কম্প্রোমাইজ করতে হবে। বিলিভ মি তোমার মতো হটিনটি র পক্ষে এই ফিল্ডে খুব অল্প সময়ের মধ্যে অঢেল টাকা-পয়সা ইনকাম করাটা কোনো প্রব্লেমই নয়। ইউ জাস্ট নিড টু মেইনটেইন দ্য রাইট কাইন্ড অফ অ্যাটিচুড টুয়ার্ডস দ্য জব। আই উইল হেল্প ইউ ইন এভরি ওয়ে আই ক্যান। আই ক্যান ইজিলি সি দ্যাট সেক্সি বডি অফ ইওরস হ্যাজ অ্যাবান্ড্যান্ট ফায়ারপাওয়ার। আমি তোমার উপর বেট ধরতে রাজি আছি। আমি শুধু জানতে চাই যে তুমি নিজে ঠিক কতদূর যেতে তৈরী?"
তার দিকে আচমকা ধেয়ে আসা চাঁচাছোলা প্রশ্নটির উত্তর দিতে গিয়ে রমা খানিকটা ইতঃস্তত বোধ করলো। এই ছোট্ট প্রশ্নের আড়ালেই যে তার জীবনের চরম সন্ধিক্ষণটি লুকিয়ে রয়েছে, সেটা সে আন্দাজ করতে পারলো। জীবনে উন্নতি করার জন্য কমবেশি সবাইকেই আপোষ করতে হয়। এটাই জগতের নিয়ম। সেও সারাজীবন আপোষই করে এসেছে। কলেজ জীবনে অনেক ভালো ভালো ছেলে তাকে প্রেম নিবেদন করেছিলো। অথচ নির্বোধের ন্যায় দীপকের মতো একটা অকর্মার ঢেঁকিকে বিয়ে করে সে পচা শামুকে পা কেটে বসেছে। তারপর থেকে সে এতদিন ধরে শুধু আপোষই করে এসেছে। কোনোদিনও খুব বেশি বিলাসিতা করে উঠতে পারেনি। এক সাধারণ ক্যাশিয়ারের কিই বা এমন মাইনে হয়। বিয়ের পর থেকে তাকে খুব হিসাব করে সংসার চালাতে হয়েছে। তাও প্রতিমাসে সমস্ত খরচের পর তার হাতে কিছু টাকা বাঁচতো। স্বামীর চাকরি চলে যাওয়ার পর থেকে তো সেই সুবিধাটাও আর নেই। তদুপরি গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো তিন মাস ধরে তার যৌনজীবনটিরও দফারফা হয়ে বসে আছে। এখন তো তার এমনই দুরাবস্থা যে সর্বক্ষণ যৌনসহবাসের জন্য তার গরম দেহখানা হাঁকপাঁক করে। সে কতবার কত শত রকম ভাবে কসরত করে তার বরকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু হতভাগাটার যেন কিছুতেই আর খাড়া হতে চায় না। পরিস্থিতি এখন এতটাই দুঃসহনীয় হয়ে উঠেছে যে, ভাতারকে ছেড়ে নাগর পুষলে তার পক্ষে মনে হয় যথার্থ হয়।
অতএব এই দুঃসহ যন্ত্রণাময় জীবনযাত্রা থেকে নিস্তার পেতে রমা যেকোনো ধরণের আপোষ করতে একবাক্যে প্রস্তুত। তবে ঠিক কিভাবে কতখানি আপোষ করার কথা এখানে বলা হচ্ছে, সেটা জানা সর্বাগ্রে দরকার। আরো একবার আপোষের রাস্তায় হাঁটবার পর সে মোটেই আর আফসোস করতে রাজি নয়। সে হাসিমুখে জবাব দিলো, "চাইলে আমি সব বাউন্ডারী ক্রস করতে পারি। তবে কিনা যথার্থ মূল্যে। আমি যদি সত্যিই লাভবান হই, তাহলে যে কোনো সীমানা ভাঙতে আমার কোনো আপত্তি নেই। আপনি যদি আরো পরিষ্কারভাবে বলে দেন যে আমার থেকে ঠিক কি প্রত্যাশা করছেন, তাহলে আমিও একশো শতাংশ গ্যারেন্টি দিয়ে বলতে পারি যে আপনাকে আজই আমার মানসিকতা ও সামর্থ্যের একটা নমুনা দেখিয়ে দেবো।"