09-08-2023, 11:51 PM
(This post was last modified: 10-08-2023, 12:49 AM by Shuhasini22. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
(20-06-2023, 07:17 PM)Bumba_1 Wrote: 'ক্রিং ক্রিং ক্রিং ক্রিং' একটানা বাজতে থাকা অ্যালার্ম ঘড়ির কর্কশ শব্দে ঘুম ভাঙলো নন্দনা দেবীর। ঘুম ভেঙেই খাটের উপর ধড়মড় করে উঠে বসলো সে। প্রথম কয়েক মুহূর্ত সময় লাগলো তার নিজের অস্তিত্ব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হতে, এর কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে বিভীষিকাময় গত রাতের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা কথা মনে পড়ে গেলো তার।এটা অসাধারণ ছিলো চশমা পরা মহিলার সেক্স খুবই কম পাওয়া যায়
নন্দনার চোখের সামনে ধীরে ধীরে ভেসে উঠলো উদ্দাম যৌনতায় ভরা গতকালের রাত। ভাসুরের ঘন থকথকে বীর্যে তার যৌনাঙ্গ, মুখগহবর, এবং গভীর নাভির চেরা বারংবার পরিপূর্ণ হচ্ছিলো .. নির্লজ্জের মতো বারবার সে তার ভাসুরের চোখের সামনে রাগমোচন করছিলো। এমনকি শোওয়ার ঘরে তার ছেলের সামনে তার সতীত্ব হরণ করার পরেও তাকে রেহাই দেয়নি ওই দুশ্চরিত্র লোকটা। তার অপরিষ্কার দেহকে পরিষ্কার করে দেওয়ার অছিলায় সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় তাকে পাঁজাকোলা করে বাথরুমে নিয়ে গেছে তার ভাসুর। এমনিতেই রতিক্রিয়ার পর পেচ্ছাপের বেগ চাপে। তার উপর অনেকক্ষণ বাথরুমে যেতে না পারার জন্য পেচ্ছাপের প্রেসার সামলাতে না পেরে তার লম্পট ভাসুরের লোভাতুর দৃষ্টির সামনে বাধ্য হয়ে হিসি করতে হয়েছে তাকে .. একজন নারীর পক্ষে সেটা যে কি পরিমাণ লজ্জার, তা একমাত্র একজন নারীর পক্ষেই বোঝা সম্ভব। বারংবার বাধা দিয়েও সে ঠেকাতে পারেনি তার দুশ্চরিত্র ভাসুরকে। এলইডি টিউবের ঝলমলে আলোয় বাথরুমের মধ্যে সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় স্নান করেছে দু'জনে। সাবান মাখিয়ে দেওয়ারও অছিলায় নন্দনা দেবীর সারা শরীর, বিশেষত তার ভারী স্তনজোড়া এবং মাংসালো নিতম্বদ্বয় কচলে, টিপে, চটকে ব্যথা করে দিয়েছে তার ভাসুর। অবশেষে বাথরুমের মেঝেতে শুয়ে কখনো মিশনারি পজিশনে, কখনো তাকে বুকের উপর উঠিয়ে, আবার কখনো ডগি স্টাইলে বিপুল বাবু তার যৌনাঙ্গ ভরিয়ে দিয়েছে নিজের থকথকে বীর্যে। দৃশ্যগুলো চোখের সামনে ভেসে উঠতেই মনের ভিতর আবার অজানা সেই নিষিদ্ধ শিহরণ অনুভব করলো নন্দনা দেবী।
তারপর ধীরে ধীর পরবর্তী ঘটনাগুলো মনে পড়লো নন্দনার। মনের স্বাদ মিটিয়ে তার ভাইয়ের সুন্দরী স্ত্রীকে স্নান করানোর পর প্রায় ঘুমের কোলে ঢলে পড়া ক্লান্ত পরিশ্রান্ত নন্দনাকে পাঁজাকোলা করে ধরে বেডরুমে নিয়ে এসে বিছানায় তার ছেলের পাশে শুইয়ে দিয়ে একটাও কথা না বলে পাশের ঘরে চলে গিয়েছিলো তার ভাসুর। কিছুক্ষণ চুপচাপ বিছানায় শুয়ে থাকার পর সদর দরজা খোলার আওয়াজ পেলো সে, তারপর 'দড়াম' করে দরজা বন্ধ করে দেওয়ার শব্দ কানে এলো নন্দনা দেবীর।
'তাহলে কি শেষপর্যন্ত বিভীষিকার পরিসমাপ্তি ঘটলো? তার ভাসুর কি বেরিয়ে গেলো?' কথাগুলো ভাবতে ভাবতে নগ্ন অবস্থাতেই বিছানা থেকে উঠে ধীরপায়ে ওদের মাস্টার-বেডরুমে ঢুকে খাটের উপরে রাখা শাড়িটা গায়ে জড়িয়ে নিয়ে ড্রয়িংরুমে গিয়ে কাঁচের বন্ধ জানলার পর্দা সরিয়ে দেখলো পাঁচ ফুট আট ইঞ্চি লম্বা দশাসই চেহারার লাল রঙের আলখেল্লার মতো পোশাকটা পড়ে বিপুল বাবু তাদের বাড়ির সামনের লনটা ধরে সোজা পশ্চিম দিকে অর্থাৎ ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের দিকে দ্রুতপায়ে চলে যাচ্ছে। ঘড়িতে তখন ভোর পৌনে চারটে।
★★★★
সকাল আটটায় অ্যালার্ম দিয়েছিলো সে, এখন বাজে সাড়ে আটটা। অ্যালার্মের সুইচ বন্ধ না করলে এই ঘড়িটাতে আধঘন্টা পর পর অ্যালার্মের ঘন্টি বাজার সিস্টেম রয়েছে। তারমানে প্রথমবার অ্যালার্মের শব্দে ঘুম ভাঙেনি তার। খুব স্বাভাবিকভাবেই অত্যন্ত ক্লান্তির জন্য গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন থাকার ফলে সে শুনতে পায়নি। তার একমাত্র আদরের সন্তানের কথা মনে পড়তেই, পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখলো পাশে শুয়ে তখনো অঘোরে ঘুমোচ্ছে বাপ্পা।
'ইশ .. অনেকটা বেলা হয়ে গিয়েছে। আজ তো বাপ্পার অঙ্ক পরীক্ষা! দশটার সময় গাড়ি আসবে নিতে, তার আগে স্নান করিয়ে খাইয়ে দাইয়ে রেডি করে দিতে হবে ওকে। তার উপর কাজের মাসি মালতী গতকাল বলে গেছিলো আজ আসবে না। তবে ভগবান যা করেন মঙ্গলের জন্যই করেন। এতক্ষণে মালতী আসার সময় হয়ে গিয়েছিলো, সে এসে গৃহকর্ত্রীকে এই অবস্থায় দেখলে অপ্রস্তুতে পড়তে হতো তাকে। আর এদিকে বাপ্পারও এখনো পর্যন্ত ঘুম না ভেঙে ভালোই হয়েছে। সে আগে উঠে বাথরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিক, তারপর বাপ্পাকে ডেকে তুলে ওকে স্নান করিয়ে ওর জন্য টিফিন তৈরি করে দেবে।' এইসব সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে কাপড়টা গায়ে জড়ানো অবস্থাতেই বিছানা থেকে নামলো নন্দনা দেবী। তারপর ধীরে ধীরে পা ফেলে তাদের মাস্টার-বেডরুমের অ্যাটাচ বাথরুমটাতে ঢুকে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো।
গায়ে জড়ানো শাড়িটা খুলে ফেলে সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে বেসিনের পাশে ডানদিকের দেওয়ালে আটকানো প্রায় আপাদমস্তক লম্বা আয়নাটির সামনে দাঁড়ালো চিরন্তন বাবুর স্ত্রী। ভোর চার'টে থেকে সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত টানা সাড়ে চার ঘণ্টা ঘুমানোর ফলে চোখের নিচে তেমন ভাবে ক্লান্তির ছাপ ধরা না পড়লেও, কাল রাতে যে তার শরীরের উপর দিয়ে প্রবল ঝড় বয়ে গিয়েছে, তার প্রতিচ্ছবি নন্দনা দেবীর সমগ্র মুখমন্ডলে এবং সারা শরীরে স্পষ্ট।
নন্দনা দেবী লক্ষ্য করলো, তার লাল আপেলের মতো টসটসে গালদুটোতে তার লম্পট ভাসুরের দাঁত বসানোর দাগ বিদ্যমান। ঠোঁটদুটো অপেক্ষাকৃত ফুলে রয়েছে, ওষ্ঠদ্বয়ের রস আস্বাদনের সময় দুর্বৃত্তটার দ্বারা বারংবার কামড়ের ফলে ঠোঁটের কোণার কাছটা কেটে গিয়েছে। গলায়, ঘাড়ে, তলপেটে নাভির চারপাশে, সুগঠিত দুই উরুতে সর্বত্র তার দুশ্চরিত্র পার্ভার্ট ভাসুরের আঁচড় এবং কামড়ের দাগ। তবে তান্ত্রিক বিপুল সব থেকে বেশি নির্দয় ছিলো নন্দনার দুই লোভনীয় ভারী মাংসল স্তনের প্রতি .. বড়োসড়ো পাকা পেঁপের মতো মাইদুটো আঁচড়ে-কামড়ে একেবারে একসা করেছে। স্বাভাবিকভাবেই নিজের শরীরের গোপনাঙ্গ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন্দনা লক্ষ্য করলো তার বোঁটাদুটো দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থে আগের থেকে অনেকটাই বেশি ফুলে রয়েছে এখনো। আসলে একবারের জন্যও তো ওই শয়তান লোকটা তার স্তনবৃন্তকে রেহাই দেয়নি .. কখনো দাঁত, কখনো নখ, কখনো জিভ দিয়ে নিপীড়ন করেছে ওখানে।
'নারী শরীরের শ্রেষ্ঠ আকর্ষণ তার স্তন। বিশেষত নন্দনার মতো নারীর প্রবৃদ্ধ এবং বর্তুলাকার স্তনজোড়ার অমোঘ সৌন্দর্য, যা আমরা আমাদের কল্পনার জগতেই দেখে থাকি, বাস্তবে যার অস্তিত্ব খুবই কম। এইরূপ ভয়ঙ্কর উত্তেজক দুটি স্তনকে নিয়ে খেলা করা তো দূরস্থান, ভালোভাবে কোনোদিন হাত পর্যন্ত দেয়নি তার স্বামী। অথচ তার ভাসুর যেভাবে ওই দুটোকে নিয়ে নিজের ইচ্ছে মতো খেলেছে কাল সারারাত থেকে আজ ভোররাত পর্যন্ত, এতে তার জা রুনার বলা একটা কথা অক্ষরে অক্ষরে ফলে যাচ্ছে। যতই লম্পট, দুশ্চরিত্র, খারাপ লোক হোক বিপুল বাবু .. আসলে সে প্রকৃত পুরুষ মানুষ।' কথাগুলো ভেবে নিজেকে আবার উত্তেজিত করে ফেলে, পুনরায় তার সতীমনের চোখ রাঙানোর ফলে বাস্তবের মাটিতে ফিরে এসে আয়নার দিকে পিছন করে দাঁড়িয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে নিজের তানপুরার মতো মাংসল পাছার দাবনাজোড়ার দিকে তাকালো নন্দনা দেবী। স্তনজোড়ার মতো তার নিতম্বের উপর প্রবল যৌন নিপীড়নের ছাপ স্পষ্ট। দাবনাদুটির বেশ কিছু জায়গায় কামড়ের দাগ তার সঙ্গে কামোদ্দীপক আক্রোশে চড় মারার ফলে এখনও লাল হয়ে আছে জায়গা দুটি।
'অনেক সময় অতিবাহিত হয়ে গেলো, আর বেশি দেরি করলে বাপ্পার পরীক্ষাটাই হয়তো দিতে যাওয়া হবে না। তার উপর ঘর সংসারের প্রচুর কাজ পড়ে রয়েছে' .. মাথার উপর শাওয়ারটা খুলে দিলো নন্দনা দেবী।
★★★★
ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে যখন তার ছেলেকে নন্দনা দেবী ডেকে ঘুম থেকে তুললো। বিছানায় উঠে বসার পর চোখ কচলে তার মায়ের দিকে কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো বাপ্পা। তারপর খুব স্বাভাবিকভাবে জিজ্ঞাসা করলো, "জেঠু কই মা?"
ছেলের প্রশ্ন শুনে প্রথমে কি বলবে কিছু বুঝে উঠতে না পেরে কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলো নন্দনা। তারপর কিছুটা ইতস্ততঃ করে বললো, "জেঠু? মানে কাল সকালে যিনি এসেছিলেন? তুমি তো দেখলেই, তিনি দুপুরবেলায় না খেয়েই চলে গেলেন। এখন এখানে তোমার জেঠু কোথা থেকে আসবে?" জীবনে এই প্রথম তার ছেলের সামনে অবলীলায় এত বড় মিথ্যে কথা বললো নন্দনা। কিন্তু কেনো সে মিথ্যে বললো, সেটা নিজেও অনুধাবন করতে পারলো না। এদিকে বাপ্পাও তার আদরের মা'কে অন্ধের মতো বিশ্বাস করে আগেরদিন রাতে তার ভয়ের স্বপ্ন দেখে উঠে বসা, তারপর তার মা'কে ডাকা, প্রথমে বিছানায় পরে তাদের ওই দিকের বাথরুমটাতে তার মা আর জেঠুকে সম্পূর্ণ উলঙ্গ অবস্থায় দেখা .. এই সবকিছুকেই দুঃস্বপ্ন বলে মনে করলেও, ভেতরে ভেতরে তার মনে একটা চাপা দ্বন্দ্ব থেকেই গেলো।
এগারোটা থেকে পরীক্ষা শুরু, দশটার সময় তাকে গাড়ি নিতে আসবে। ঘড়ির কাঁটা সাড়ে ন'টা অতিক্রম করে গিয়েছিলো। "দেরি হয়ে যাচ্ছে, তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও, ভালো করে পরীক্ষা দেবে কিন্তু! আর মনে করে কোশ্চেন পেপারে প্রতিটা অঙ্কের প্রশ্নের পাশে উত্তরটা লিখে আনবে .. ভুল যেন না হয়!" বাপ্পাকে ঘুম থেকে তোলার পর, স্নান করিয়ে, কলেজ ইউনিফর্ম পড়িয়ে, খাওয়াতে খাওয়াতে কথাগুলো বললো তার মা নন্দনা দেবী।
বাপ্পা বেরিয়ে যাওয়ার পর সাংসারিক জীবনের গোলকধাঁধায় ঘুরপাক খেতে খেতে আজ একটু দেরিতেই দিন শুরু হলো নন্দনা দেবীর। তবে রোজকার চেনা ছন্দটা কিছুতেই ফিরে পাচ্ছিলো না সে। কাজের ফাঁকে ফাঁকে গত রাতের কথা মনে পড়ে যেতেই, বারবার ছন্দপতন ঘটছিলো তার। কোনোদিন যেটা করেনা, আজকে সেটাই করলো চিরন্তন বাবুর স্ত্রী। আগেরদিন রাত জাগার ক্লান্তিতে বাপ্পা কলেজ থেকে ফেরার আগেই তাড়াতাড়ি খাওয়া-দাওয়া করে শুয়ে পড়লো নন্দনা। আর শোওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়লো সে।
কলিংবেলের আওয়াজে ঘুম ভাঙলো নন্দনা দেবীর। বিছানায় উঠে বসে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো ঘড়িতে কাঁটায় কাঁটায় দুপুর দু'টো। তাড়াতাড়ি গিয়ে দরজা খুলে দিয়ে দেখলো হাসি হাসি মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে বাপ্পা। তার তো আগেই খাওয়া হয়ে গিয়েছিলো। ছেলে ফেরার পর তার জামাকাপড় ছাড়িয়ে, হাতমুখ ধুইয়ে, খেতে দিয়ে অঙ্কের প্রশ্নপত্র খুলে বসলো নন্দনা দেবী। প্রত্যেকটি অঙ্কের প্রশ্নের পাশে তার ছেলের লিখে আনা উত্তরগুলো গণিত বইয়ের উত্তরমালার সঙ্গে মিলিয়ে দেখলো .. একটা এক নম্বরের অবজেক্টিভ টাইপ, আর একটা তিন নম্বরের পাটিগণিতের অঙ্ক ভুল করেছে বাপ্পা .. বাকি সব কটা ঠিক। যে ছেলে অঙ্কে কোনোদিন পঁয়ষট্টি থেকে সত্তরের উপর পায়নি, সে আজ ছিয়ানব্বই নম্বরের সঠিক উত্তর দিয়ে এলো। অথচ কাল সকালেও বাপ্পা একটার পর একটা অঙ্ক ভুল করে যাচ্ছিলো। এটা ম্যাজিক ছাড়া আর কিই বা হতে পারে! এবং এই অসাধ্য সাধন যে একজনের জন্যেই সম্ভব হয়েছে .. এটা বুঝতে কোনো অসুবিধা হলো না নন্দনা দেবীর। আপনা আপনি মুখের কোণায় একটা কৃতজ্ঞতার হাসি ফুটে উঠলো তার।
সকালে তার অর্ধেক কাজ করা হয়নি, তাই বিকেল বেলায় বৈঠকখানার ঘরে সেন্টার টেবিলের উপরে পাতা টেবিল-ক্লথটা ঝাড়তে গিয়ে নন্দনা দেখলো তার উপরে একটা সাদা কাগজের খাম রাখা রয়েছে। অবাক কান্ড, এতক্ষণ এটা তার চোখেই পড়েনি! তৎক্ষণাৎ সোফার উপর বসে খামটা খোলার সঙ্গে সঙ্গে নন্দনা দেবী চমকে উঠলো। খামের ভেতর থেকে কড়কড়ে পাঁচশো টাকার একটা বান্ডিল বের হলো, অর্থাৎ পঞ্চাশ হাজার টাকা। টাকার বান্ডিলের সঙ্গে একটা ছোট সাদা ভাঁজ করা কাগজও বেরিয়ে এলো। টাকাটা টেবিলের একপাশে রেখে দিয়ে কাগজটা খুলে পড়তে শুরু করলো নন্দনা দেবী ..
"টাকা না দিয়ে যদি তোমাকে কোনো উপহার কিনে দিতাম, তাহলে হয়তো কৈফিয়ৎ দিয়ে এত লম্বা একটা চিঠি আমাকে লিখতে হতো না। কিন্তু যেহেতু টাকা দিলাম, তাই তোমার মনে অনেক প্রশ্ন আসতে পারে .. কিসের বিনিময়ে টাকা? এটা কি তোমার পারিশ্রমিক, নাকি অন্য কিছু? বিশ্বাস করো এটা এইগুলোর মধ্যে কোনোটাই নয়, এটা তোমার প্রতি আমার ভালোবাসার উপহার। আমি জানি তুমি চিরকালই আমাকে অপছন্দ করতে এবং কালকের পর থেকে আমাকে ঘৃণা করতে শুরু করেছো। কিন্তু আমি যে ভালোবেসে ফেলেছি আমার ভাইয়ের এই সুন্দরী বউটাকে। তাই সে যদি ভবিষ্যতে আমাকে ডাকে, তাহলে তার জন্য এরকম অনেক অনেক অনেক উপহার আমি নিয়ে আসবো। এখন হয়তো আমার লেখা এই কথাগুলো তোমার ভালো লাগছে না, কিন্তু পরে সময় করে বসে ভেবে দেখো। আজকাল টাকাটাই সব, নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে টাকা উপার্জন করাটা ভীষণ জরুরী। তা না হলে তোমার থেকে অযোগ্য ব্যক্তি যেমন তোমার স্বামী, তোমাকে প্রতিনিয়ত অপমান করার স্পর্ধা দেখাবে/দেখিয়ে চলেছে। তাই বলছি, নিজের পায়ে দাঁড়াও, দেখিয়ে দাও তোমার স্বামীকে, যে তুমিও পারো। আর একটা কথা বলি, অন্যভাবে নিও না .. তোমার কাছে যে অমূল্য সম্পদ রয়েছে, তা দিয়ে তুমি এই জগৎটাকেই কিনতে পারো .. বাকিটা তোমার ইচ্ছে। একটা বিশেষ কাজে আমাকে তারাপীঠ যেতে হচ্ছে, পরে আবার নিশ্চয়ই আমাদের দেখা হবে। ভালো থেকো, সুখে থেকো। ওহো, আসল কথাটাই তো বলা হয়নি। মানুষ হিসেবে আমি খারাপ, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তন্ত্রবিদ্যায় আমার পারদর্শিতার ধারেকাছে কেউ নেই .. এটাও সত্যি। তোমার দেখা ওই দুঃস্বপ্নটা আর কোনোদিন ফিরে আসবে না তোমার কাছে। আর একটা কথা .. রেজাল্ট বেরোলে তোমার ছেলে অঙ্ক পরীক্ষায় যা নম্বর পাবে, তা আগে কোনোদিন পায়নি, কথাটা মিলিয়ে নিও। জয় লিঙ্গ মহারাজের জয়।" চিঠিটা পড়ে প্রথমে কি করবে কিছু বুঝে উঠতে না পেরে সোফার উপর দুই হাত দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে চুপচাপ বসে রইলো নন্দনা দেবী।
আজ দু'দিন হয়ে গেলো তার স্বামী চিরন্তন তাকে ফোন করে না। একটা সামান্য ভুল বোঝাবুঝি থেকে কিছু ব্যক্তির, বিশেষত ডাক্তার প্রমোদ আর তার ভাসুর বিপুলের আগুনে ঘি ঢালার ফলে সাঙ্ঘাতিক পর্যায়ে চলে গেছিলো ব্যাপারটা। রাগ, ক্ষোভ, জেদ, অভিমান .. এই সবকিছু ছাপিয়ে যাচ্ছিলো স্বামীর প্রতি তার ভালোবাসা আর বিশ্বাসকে। সেন্টার টেবিলের উপর রাখা তার মোবাইলটা তুলে নিলো নন্দনা। "হ্যালো .. দিদিভাই .. ব্যস্ত আছিস? তোর সঙ্গে কিছু কথা ছিলো।" তার জ্যাঠতুতো দিদি বন্দনা দেবীকে ফোন করলো সে।
"না রে, সেরকম কিছু নয়, সাগরের জামাকাপড় গুলো ভাঁজ করছিলাম। বল, কি বলবি .." বন্দনা দেবী ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে কথাগুলো বলার পর .. "একটা রাত আমার জীবনকে ওলট-পালট করে দিয়েছে দিদিভাই। আমি অপবিত্র হয়ে গেছি .. এরপর লোকসমাজে আমি মুখ দেখাবো কি করে?" এইরূপ উক্তি করে তার স্বামীর চরিত্রহীনতার কথা, চিরন্তন বাবু অফিস ট্যুরে বাইরে যাওয়ার পর থেকে হার্জিন্দার, এবং তার দুই বন্ধু রবার্ট আর ডক্টর প্রমোদের উপস্থিতিতে তার সঙ্গে ঘটে চলা প্রত্যেকটা ঘটনা থেকে শুরু করে, গতকাল সকালে তার ভাসুর বিপুল বাবুর এই বাড়িতে আগমন এবং সবশেষে কাল রাতের সেই বিভীষিকাময় লজ্জাকর ঘটনা তার দিদিকে ধীরে ধীরে ব্যক্ত করলো নন্দনা।
"পবিত্রতা এবং অপবিত্রতা এই সবকিছুই ভীষণ আপেক্ষিক, পরিস্থিতির উপর নির্ভরশীল। তাছাড়া পবিত্রতা তো লুকিয়ে থাকে মনের মধ্যে। মন চাইলে তোর শরীর পবিত্র আর না চাইলে অপবিত্র। বুঝতে পারলি না, তাইতো? যে ঘটনাগুলো তোর সঙ্গে এই ক'দিনে ঘটে গেছে, তার একটাও কি প্রি-প্ল্যান্ড ছিলো? মানে তুই কি নিজে থেকে সেই ঘটনাগুলো ঘটিয়েছিস? ঘটাসনি তো! সবগুলোই ঘটেছে পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে। তাই আমি মনে করি তোর নির্মল মনটাকে গ্ৰাস করতে পারেনি এখনো কেউ। এত ভাবিস না এইসব নিয়ে .. যার স্বামীর চরিত্রের ঠিক নেই, তার স্ত্রীকে নিজের সতীত্ব প্রমাণের জন্য সমাজের ঠুনকো আয়নার সামনে দাঁড়ানোর কোনো প্রয়োজন আমি দেখি না। কথাগুলো আমাকে বলেছিস ঠিক আছে, আর কাউকে বলার দরকার নেই, এমনকি তোর স্বামীকেও না। যদি মনে হয় এটা একটা কালো অধ্যায় তোর জীবনে, তাহলে এটাকে দুঃস্বপ্ন ভেবে ভুলে যাস। আর যদি মনে হয় .. না থাক আর কিছু বলতে চাই না। শুধু এইটুকুই বলবো, ঘরের মধ্যে বসে বসে কষ্ট না পেয়ে লাইফটা এনজয় করতে শিখতে হবে। রাখলাম রে .." নন্দনার কাছ থেকে সমস্ত কথা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে শোনার পর প্রথমে তার ক্রন্দনরতা বোনকে কিছুক্ষণ সান্তনা দিয়ে এই কথাগুলো বলে ফোনটা রেখে দিলেন বন্দনা দেবী।
তার দিদিভাইয়ের মুখে কথাগুলো শোনার পর চুপচাপ কিছুক্ষণ ড্রয়িংরুমে সোফার উপরেই বসে রইলো নন্দনা। তারপর গলাটা একটু ঝেড়ে নিয়ে, "আমার যে সব দিতে হবে, সে তো আমি জানি .. আমার যত বিত্ত, প্রভু, আমার যত বাণী .. সব দিতে হবে .." এই রবীন্দ্রসঙ্গীতটা গুনগুন করতে করতে পঞ্চাশ হাজার টাকার বান্ডিলটা সেন্টার টেবিলের উপর থেকে তুলে নিয়ে মাস্টার বেডরুমে ঢুকে আলমারিটা খুলে তার মধ্যে ঢুকিয়ে রাখলো নন্দনা।
নন্দনার অধ্যায় সমাপ্ত
|| পাঠক বন্ধুদের উদ্দেশ্যে ||
আমার এই সিরিজের প্রথম অধ্যায় সমাপ্ত হলো। ফোনে তার বোন নন্দনাকে তার জ্যাঠতুতো দিদি বন্দনা দেবীর ওই কথাগুলো বলার পেছনে কি কারণ থাকতে পারে, সেটা জানার জন্য পরবর্তী অধ্যায়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। সামনের সপ্তাহ থেকেই শুরু হবে এই সিরিজের দ্বিতীয় অধ্যায়। আশা করি, সিরিজের প্রথম খন্ডের মতোই দ্বিতীয় খন্ডেও আপনাদের সহযোগিতা এবং ভালোবাসা পাবো। সঙ্গে থাকুন এবং অবশ্যই পড়তে থাকুন।
ভালো লাগলে আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাবেনলাইক এবং রেপু দিয়ে উৎসাহিত করবেন