Thread Rating:
  • 90 Vote(s) - 2.98 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Erotic Thriller নন্দনা - NOT OUT (সমাপ্ত)
[Image: Polish-20230801-144024815.jpg]

(৭)

এরই মধ্যে ড্রাইভার অমর এই ঘরে এসে চা দিয়ে চলে গিয়েছে। চা আর কুকিজ বিস্কুট সহযোগে বিকেলের টিফিন সমাধা করতে করতে প্রায় চারটে বেজে গেলো।

যে জন্য সৈকত আর ঋষিকে উপরে ডেকে পাঠানো হয়েছিলো, সেই কাজটা খুব ভালোভাবে সম্পন্ন করা গিয়েছে, তাই ওদের দু'জনের বোধহয় প্রয়োজন ফুরিয়েছিলো এই ঘরে। "চা-টা তো খাওয়া হলো, এখনো এখানে বসে বসে কি করছিস তোরা দু'জন? ইয়াং ছেলে, একটু ঘুরেটুরে দ্যাখ এদিক ওদিক। একটা কাজ কর .. আমি পয়সা দিয়ে দিচ্ছি, তুই ঝুমার ছেলেটাকে বি'গার্ডেন দেখিয়ে নিয়ে আয়। আজকে না হয়, বাইরেই খাওয়া দাওয়া করিস! ততক্ষণে আমরা কাজের কথাগুলো সেরে নিই, তারপর তো তোর মাও চলে আসবে!" পুনরায় নিজের গম্ভীর গলায় কথা বলার ভঙ্গিমায় ফিরে গিয়ে এইরূপ উক্তি করে পকেট থেকে পাঁচশো টাকার দুটো নোট বের করে ঋষির দিকে বাড়িয়ে দিলো তার বাবা রজত বাবু।

মনে তার বাবার প্রতি ঘৃণা জমে থাকলেও, লোকটার হাত থেকে টাকা নিতে একটুও দ্বিধাবোধ করলো না সে। তার বাবার কাছ থেকে টাকাটা নিয়ে নিজের পকেটস্থ করে সৈকতকে ইশারায় তার সঙ্গে আসতে বলে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো ঋষি। নিজের মায়ের দিকে করুণ চোখে তাকিয়ে তার পিসতুতো দাদাকে অনুসরণ করলো সৈকত।

"তোমার মা তো রাঁচিতে আছে বললে, তাহলে পিসেমশাই যে বললো তোমার মা নাকি আসবে একটু পরে!" সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে জিজ্ঞাসা করলো সৈকত।

- "তোমার মতো আতাক্যালানে ছেলে আমি জীবনে খুব কম দেখেছি। আমার বাবার মতো ওইরকম একটা লম্পট, চরিত্রহীন, দুর্বৃত্ত যে কোনো মূল্যে নিজের কাজ হাসিল করার জন্য মিথ্যে কথা বলতে পারে, এটা বুঝলে না? একজন মহিলার উপস্থিতি বরাবরই তার উল্টোদিকের মহিলাকে সেই জায়গার সম্পর্কে নিরাপদ ফিল করায়। তার উপর সেই মহিলা সম্পর্কে আমার মামী অর্থাৎ তোমার মায়ের ননদ হয় .. এই কথাটা শোনার পর এখানে থাকতে যে তোমার মা রাজি হয়ে যাবে, এটা খুব ভালো করেই জানতো মিস্টার বণিক। তাই আমার মায়ের আসার মিথ্যে কথাটা বলেছে সে।"

- "কিন্তু উনি তো আসবেন না! উনার না আসার ব্যাপারে তখন আমার মা প্রশ্ন করলে কি হবে?"

- "তুমি ভাই বড্ড বেশি হ্যাজাও সবকিছু নিয়ে। তোমার মা প্রশ্ন করলে কি হবে, সেটা না হয় যখন উনি প্রশ্ন করবেন, তখন দেখা যাবে! একটা কথা সবসময় মনে রাখবে .. দুষ্টের ছলের অভাব হয় না। আমার মা'কে এখানে আনার কথা যখন বলা হয়েছে, তখন এখানে তার না আসার পক্ষেও নিশ্চয়ই একটা অকাট্য যুক্তি আগে থেকেই ঠিক করে রাখা হয়েছে। এইসব বাজে কথা বাদ দিয়ে কাজের কথা শোনা। তুমি কি সত্যি সত্যি এখন বাইরে গিয়ে আমার সঙ্গে বি'গার্ডেন দেখতে যেতে চাও? নাকি এই বাড়িতেই থাকতে চাও?"

- "না না, আমি কোথাও যাবো না, এখানেই থাকবো। তাছাড়া আকাশটা কিরকম কালো করে এসেছে দেখেছো? এক্ষুনি হয়তো বৃষ্টি নামবে।"

- "ঠিক আছে, বাবা I mean মিস্টার বণিকের তখন আমার হাতে হাজার টাকা দেওয়ার অর্থ হলো, আমরা যেন বাইরে খাওয়াদাওয়া করে নিই। রাতের বেলায় ডিনারের সময় যেন উপরে গিয়ে ওদের আর ডিস্টার্ব না করি। ডিনার নিয়ে অসুবিধা হবে না, অমর দা'কে বলে দেবো, অফিসরুমে রাতের খাবার রেখে দিয়ে চলে যাবে। পরে আমরা সময় করে খেয়ে নিলেই হবে। এক বিষয় ভালই হলো, আমার হাজার টাকা বেঁচে গেলো। তখন তোমাকে বলছিলাম না, এই অফিসে রাত কাটানোর বা সারাদিন অতিবাহিত করার একটা খোরাক আমি পেয়ে গেছি! চলো আমার সঙ্গে সেই জায়গায়। সেখানে গেলে তুমি ওটির ভেতরে পেশেন্টের সাথে কিরকম ট্রিটমেন্ট হচ্ছে, তার সবকিছুই দেখতে পাবে। তাহলে আর মনটা অশান্ত হবে না তোমার।"

★★★★

নিজের কথা শেষ করে ঋষি কাঠের পার্টিশনের দিকে এগিয়ে গেলো। সকালবেলা এই  ঘরটির মাঝ বরাবর কাঠের ফ্রেম এবং কাঁচের পার্টিশনের অপর প্রান্তে বড় আকারের দুটি ঘর দেখেছিলো সৈকত। তার মধ্যে একটিতে প্রবেশ করেছিলো তারা, যেটি তার ছোট পিসেমশাই এবং ইউসুফের অফিস ঘর ছিলো। এবার সে দেখলো, তার পিসতুতো দাদা পাশের ঘরটিতে প্রবেশ করলো। তাকে অনুসরণ করলো সৈকত।

ঘরে প্রবেশ করে সৈকত দেখলো পাশের অফিস রুমের থেকে আকারে অনেকটাই ছোটো এই ঘরটা। ঘরটিতে কোনো জানলা নেই, তবে এসি রয়েছে। অর্থাৎ এসি চালিয়ে না রাখলে এই ঘরে একমুহূর্ত টেকা মুশকিল। একটা সিঙ্গেল বেডের থেকে একটু বড়ো বিছানা, একটা আলমারি এবং ছোট্ট একটা কম্পিউটার টেবিল আর তার সঙ্গে একটা চেয়ার .. এই কয়েকটা আসবাবপত্র দিয়েই পরিপূর্ণ হয়ে গেছে ঘরটা। পা ফেলার বিশেষ জায়গা নেই। কম্পিউটার টেবিলের পাশে একটা বন্ধ দরজা দেখা যাচ্ছে, সম্ভবত ওটা বাথরুম।

"ওয়েলকাম টু মাই রুম .. এটাই আমার ঘর, এখানেই আমি থাকি। এবার মুখে টু শব্দটি না করে আমাকে ফলো করো।" কথাটা বলে বাথরুমের দরজাটা খুলে ভেতরে ঢুকলো ঋষি।

কাপড়ের দোকানের ভেতর উপরে অর্থাৎ দোতালায় বা দেড় তলায় যাওয়ার জন্য যেমন ফলস সিলিং ভেদ করে সম্পূর্ণ আলাদা করে বসানো একটি খাড়া কাঠের সিঁড়ি উঠে যায়, বাথরুমের ভেতর ঢুকে ঠিক সেইরকম খুব সরু একটি লোহার খাড়া সিঁড়ি দেখতে পেলো সৈকত। যেটি বাথরুমের সিলিং ভেদ করে উপরে উঠে গেছে। বাথরুমের সিলিংয়ের যে অংশটা ভেদ করে সিঁড়িটা উপর দিকে উঠেছে সেই দিকে তাকিয়ে সে দেখলো ঘুটঘুটে অন্ধকার।

"এই বাড়িটা তো আমার বাবা, মানে মিস্টার বণিক তৈরি করেননি, উনি এটা কিনেছিলেন। কেনার পর এই বাথরুমের ভেতর সিঁড়ির উপস্থিতি এবং এরকম একটা অদ্ভুত ব্যাপার দেখে, উনি এই সিঁড়িটা উর্দিবাজারে আসলাম চাচার হার্ডওয়ার্সের দোকানে দান করে দিয়ে, কংক্রিটের সিলিংয়ে সিঁড়ি ঢুকে যাওয়ার গর্তটা প্লাই দিয়ে ঢেকে দেন। কিন্তু তার আগেই আমি হাফ বেলার জন্য বাড়িটা খালি পেয়ে এই সিঁড়িটা দিয়ে উপরে উঠে যা দেখার দেখে নিয়েছিলাম। তখনই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম এখানে একা এইটুকু ঘরে দমবন্ধ হয়ে থাকতে থাকতে আমি একদিন মরে যাবো, তাই আর কিছু না হোক নিজের এন্টারটেনমেন্টের জন্য সিঁড়িটা ফিরিয়ে এনে জায়গাটা আবার আগের মতো করে তৈরি করতে হবে। মাস ছয়েক আগে উনি রাঁচিতে গিয়েছিলেন দিন সাতেকের জন্য। ইউসুফও তখন হায়দ্রাবাদ গিয়েছিলো একটা বিশেষ কাজে। আমি তখন আসলাম চাচার দোকানে গিয়ে উনার হাতেপায়ে ধরে, আমার মাসোহারা থেকে দু'হাজার টাকা দিয়ে আমার বাবাকে যেন এই কথাটা উনি না বলেন, এটা প্রমিস করিয়ে ওর দোকান থেকে ট্রলি ভ্যান করে সিঁড়িটা নিয়ে আসি। এরপর নিজেই প্লাই দেওয়া অংশটা লোহার রড দিয়ে মেরে ভেঙে ফেলি। তারপর এই সিঁড়িটা ওই গর্তের মধ্যে ঢুকিয়ে আবার আগের মতো সেট করে ফেলি। এই পুরো কাজটা করতে আমার পাক্কা তিনদিন সময় লেগেছিলো। কোনো সাক্ষী রাখবো না বলে একার হাতে সবকিছু করেছিলাম। তিনদিন পর যখন কাজ শেষ হলো, তারপর দুদিন বিছানা থেকে উঠতে পারিনি। তারপর থেকে ইউসুফ বা মিস্টার বণিক, এরা কেউই আমার ঘরে ঢোকার প্রয়োজন বোধ করেনি, এই ছোট্ট বাথরুমে ঢোকা তো অনেক দূরের ব্যাপার। ওদের এত সময় কোথায়? তাছাড়া আমি যে এরকম একটা কাজ করতে পারি, সেটা ওরা কোনোদিন স্বপ্নেও ভাবতে পারেনা। কারণ আমাকে ওরা কোনোদিন গুরুত্বই দেয়নি। তবে হ্যাঁ, কোনোদিন যদি ধরা পড়ে যাই, তাহলে সেদিনই আমার শেষ দিন হবে এই পৃথিবীতে, আমি সেটা খুব ভালো করেই জানি। যাইহোক, যা কথা বলার নিচেই বলে নিচ্ছি, উপরে উঠে একটাও কথা বলবো না। বললেও খুব মৃদুস্বরে বলতে হবে। এই বাথরুমের সিলিংয়ের ওই গর্তটা দিয়ে সিঁড়িটা উঠে যেখানে শেষ হয়েছে, সেখানে এর থেকেও ছোট একটা কুঠুরি হয়েছে। এই বাড়ি আগে যার ছিলো, সে হয়তো নিজের বিকৃত মানসিকতা চরিতার্থ করার জন্য বা হয়তো কোনো গোপন অভিসন্ধিতে এইরকম একটা চোরা কুঠুরি বানিয়েছিলো। আমি যখন ওখানে প্রথমবার উঠেছিলাম তখন ওখানে আরশোলা আর মাকড়সার রাজত্ব ছিলো। পরে আমি সমস্ত পরিষ্কার করে একদম ঝকঝকে করে রেখেছি। কিন্তু জায়গাটা ঘুটঘুটে অন্ধকার। অন্ধকার চোখ সয়ে না এলে আমরা কিন্তু একে অপরকে দেখতে পাবো না। আর এই অন্ধকারটাই হলো/হবে আমাদের প্লাস পয়েন্ট। ওই অন্ধকার কুঠুরির দেওয়ালে দুটি ভেন্টিলেশন পয়েন্ট রয়েছে। যে দুটি উপরের দুটো ঘরের ভেন্টিলেশন পয়েন্টের সঙ্গে যুক্ত। বাকিটা উপরে গিয়ে দেখবে। চুপচাপ আমার পেছনে উঠে এসো।" এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে বাথরুমের সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে লাগলো ঋষি।

সৈকতের কেন জানি না মনে হলো, তার থেকে তার পিসতুতো দাদা উপরের ঘরে‌ ঘটতে চলা অথবা ঘটতে থাকা পরিস্থিতি জানার জন্য বেশি উৎসাহী। ঋষি সিঁড়ি দিয়ে উঠে সুরঙ্গটার মধ্যে প্রবেশ করে যাওয়ার পর তাকে অনুসরণ করে অন্ধকার কুঠুরির মধ্যে ঢুকলো সৈকত। উপরে উঠেই বুঝতে পারলো তার দাদা ঠিক কথাই বলেছিলো। দুটি ঘরেই আলো জ্বলছে তাই ভেন্টিলেশন হোলের মধ্যে দিয়ে আলো এসে পড়েছে অন্ধকার এই কুঠুরিতে। সেই আবছা আলোয় সৈকত দেখলো মেঝেটা পরিষ্কার হলেও জায়গা অত্যন্ত অল্প। অসাবধানতায় ভুলভাল জায়গায় পায়ের স্টেপ পড়ে গেলে সুরঙ্গ দিয়ে ধপাস করে সোজা নিচে বাথরুমের মেঝেতে পড়ে যেতে পারে সে।

"চিন্তা করো না, আমাদের কেউ দেখতে পাবে না। ভেন্টিলেশন পয়েন্টের নিচে দ্যাখো, একটা বেশ চওড়া কাঠের বাক্স রাখা আছে। সাবধানে বাক্সটার উপর উঠে পয়েন্টে চোখ রাখো, আমি পরে উঠছি।" তার পিসতুতো দাদা ঋষির কথায় খুব সন্তর্পনে বাক্সটার উপর উঠে ভেন্টিলেশন হোলে চোখ রাখলো সৈকত।

★★★★

চারচৌকো ভেন্টিলেশন পয়েন্টটির বাইরে ছোট ছোট ছিদ্রের জাল দিয়ে ঢাকা ছিলো।‌ তাই জালের ওপারে সম্পূর্ণ অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকা কোনো ব্যক্তিকে দেখে ফেলার কোনো সম্ভাবনাই ছিলো না ঘরে উপস্থিত ব্যক্তির পক্ষে। ভেন্টিলেশন হোল দিয়ে উঁকি মেরে সৈকত দেখলো এটা পাশের অপেক্ষাকৃত ছোট ঘরটি। এই ঘরে কেউ থাকবে না সেটা মনে করে বাক্সের উপর থেকে নামতে যাবে, সেই মুহূর্তে দরজা খুলে হাতে একটা ফোন নিয়ে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করলো তার ছোট পিসেমশাই। তারপর একটা নম্বর ডায়াল করে কানে লাগালো ফোনটা।

ভেতরের আওয়াজ পরিষ্কারভাবে বাইরে আসছিলো। কান খাড়া করে সৈকত শুনলো তার পিসেমশাই ফোনে একজনকে বলছে, "আমি মিনিট পনেরো পরে তোমাকে আবার ফোন করবো। একটু আগে ঠিক যেভাবে শিখিয়ে দিয়েছিলাম, সেইভাবেই কথাগুলো বলবে। তোমার বাড়ির ঠিকানা যদি মাগীটা জিজ্ঞাসা করে, তাহলে বলবে .. তুমি এখানে লুকিয়ে আসো। বর্তমানে যার সঙ্গে তুমি লিভ-ইন করো, সে চায় না তোমার আত্মীয়দের সঙ্গে সম্পর্ক থাকুক বা তারা তোমার বাড়ি যাক। বোঝা গেলো?" এইটুকু বলে ফোনটা কেটে দিলো তার পিসেমশাই। তারপর আবার ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।

ফোনে তার পিসেমশাইয়ের বলা কথাগুলোর মাথামুন্ডু কিছুই বুঝলো না সৈকত। রজত বাবু ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর, বাক্সের উপর থেকে নেমে খুব সন্তর্পনে বাক্সটা আস্তে আস্তে ঠেলে সরিয়ে পাশের ভেন্টিলেশন পয়েন্টের নিচে নিয়ে গিয়ে পুনরায় বাক্সের উপর উঠলো সৈকত। তবে এবার সে একা নয়, সঙ্গী হিসেবে রইলো তার পিসতুতো দাদা ঋষি।

"হঠাৎ করেই এই অসময়ে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো। ছেলেটা আবার এই সময় বাইরে গেলো, খুব চিন্তা হচ্ছে আমার।" খাটের উপর বিরাজমান তার মায়ের মুখে এই মন্তব্য শুনে সৈকত বুঝতে পারলো বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে। তারা এই বদ্ধ কুঠুরিতে আছে বলে, বৃষ্টির কোনো আওয়াজ কানে আসেনি তাদের।

"অসময় আবার কোথায়? সেপ্টেম্বর মাসে আজকাল বৃষ্টি হয় তো, সবই গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কুফল। তবে হ্যাঁ, আজকের বৃষ্টিটা যেন একটু বেশিই জোরে হচ্ছে আর প্রচন্ড বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। তোমার ছেলে তো একা যায়নি, তার সঙ্গে তো ঋষিও গেছে। ঋষির পকেট ভর্তি টাকা থাকে, তাছাড়া ওকে আমি হাজার টাকা দিলাম, দেখলে তো! ওরা নিশ্চয়ই ক্যাব বুক করেই গেছে। তাই ওদের বিপদ কিছু হবে না। আরও কিছুক্ষণ যাক, তারপর না হয় আমি ফোন করে খবর নেবো ওদের।" তার পিসেমশাইয়ের মুখে কথাগুলো শোনার পর, সৈকত দেখলো তাকে ইশারায় বাক্সের উপর থেকে নামতে বলছে ঋষি।

দাদার আজ্ঞা পালন করে নিচে নামার পর সৈকত দেখলো, সিঁড়ি দিয়ে পুনরায় বাথরুমে নেমে যাচ্ছে ঋষি। সৈকতও তাকে অনুসরণ করে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে লাগলো। বাথরুমের মেঝেতে নেমেই পকেট থেকে ফোনটা বের করলো ঋষি। তারপর সৈকতের দিকে তাকিয়ে বললো, "তোমার মায়ের ফোন নম্বরটা তাড়াতাড়ি বলো।"

- "ও আচ্ছা, এবার বুঝতে পেরেছি। তখন উপরে ফোনের কথা হলো বলে তুমি ভাবছো .. যদি ওরা তোমাকে ফোন করে, তাহলে ফোনের আওয়াজ ওদের কানে যেতে পারে। তাই আগেভাগেই ফোন করে ব্যাপারটা মিটিয়ে নিতে চাইছো, তাই তো?

- "এইতো, ছেলের বুদ্ধি খুলেছে। আমার এই মোবাইলটা থেকে তোমার মা'কে ফোন করে বলো .. 'আমরা সেফ আছি, চিন্তা করার কোনো দরকার নেই। আমাদের ফিরতে রাত হবে।' ব্যাস এইটুকু বলেই ফোনটা রেখে দেবে। বাবার হাতে যেন ফোনটা না যায়! তাহলে মুশকিল হয়ে যেতে পারে।"

ঋষির নির্দেশমতো তার মা'কে ফোন করে কথাগুলো বলে ফোনটা রেখে দিলো সৈকত। তারপর আবার তার পিসতুতো দাদার পিছন পিছন উঠে গেলো লোহার সিঁড়িটা বেয়ে। উপরে উঠে পুনরায় কাঠের বাক্সের উপর চড়ে ভেন্টিলেশন পয়েন্টে চোখ লাগিয়ে সৈকত এবং ঋষি যা দেখলো এবং শুনলো, তাতে অনেকটাই নিশ্চিন্ত হলো।

"ওরা যে ঠিক থাকবে, এটা তো আগেই বলেছিলাম আমি। তুমি শুধু শুধু চিন্তা করছিলে।" কথাগুলো বলে খাটে সৈকতের মায়ের ঠিক পাশে গিয়ে বসলো রজত বাবু।

- "বাইরে যা বৃষ্টি পড়ছে আর বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে, তাতে ছোড়দি কি করে আসবে সেটাই ভাবছি।"

- "সেই কথা তো আমিও ভাবছি। আমার সঙ্গে তো ওর একটু আগেই কথা হলো। তুমি এসেছ শুনে ও দারুণ খুশি। বললো, একটু পরেই নাকি আসবে; কিন্তু তারপরেই এমন বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো! আমি ফোনটা ধরিয়ে দেবো? তুমি নিজে একবার কথা বলে দেখো, ও কি বলছে .."

রজত বাবুর এই কথায় যেন তার ওপর ভরসা এবং বিশ্বাস হাজারগুণ বেড়ে গেলো বন্দনা দেবীর। তার সঙ্গে এত বছর পর তার ননদের কথা হবে, এটা ভেবেই দারুণ খুশি হয়ে উঠলেন তিনি। "হ্যাঁ ফোনটা ধরিয়ে দিন, আমি কথা বলবো .." আনন্দিত হয়ে বললেন বন্দনা দেবী।

ফোনের ওপ্রান্তের ব্যক্তির গলার আওয়াজ শোনা না গেলেও, ফোনের এপ্রান্তে থাকা বন্দনা দেবীর কথাগুলো পরিষ্কার শোনা গেলো .. "হ্যালো ছোড়দি? আমি ঝুমা বলছি গো। না না, আমি সকাল বেলাতেই এসেছি। আমাদের তো বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথা। কিন্তু রজত দা বললো তুমি আসবে, তাই থেকে গেলাম। এখন তুমি বলছো আসতে পারবেনা। অবশ্য যেরকম ভাবে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে আর বাজ পড়ছে, তার সঙ্গে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে! তুমি আসবেই বা কি করে? হ্যাঁ, মা ভালো আছেন। আচ্ছা, তোমার গলাটা কিন্তু একদম অন্যরকম শোনাচ্ছে। আগে তোমার গলার আওয়াজটা অনেক সরু ছিলো, এখন কিরকম যেন ভারী লাগছে। ও আচ্ছা সর্দি হয়েছে? তুমি সত্যিই আসতে পারবেনা? ঠিক আছে, কি আর করা যাবে। বাজ পড়ার জন্য এই এলাকাটা পুরো লোডশেডিং হয়ে গেছে। শুধু এই বাড়িতে জেনারেটর দিয়ে আলো, পাখা সব চলছে। এখন যা বৃষ্টি পড়ছে গাড়িতে করেও বাড়ি ফিরতে পারবো বলে মনে হচ্ছে না। আচ্ছা তোমার বাড়ির ঠিকানাটা দেবে? যদি বৃষ্টি কমে, তাহলে পরে কোনোসময় গিয়ে একবার দেখা করতাম। ও আচ্ছা, উনি চান না তুমি পুরনো আত্মীয়দের, বিশেষ করে তোমার শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখো! ঠিক আছে আর কি বলবো বলো! ভালো থেকো, রাখলাম।"

তার মায়ের কথাগুলো শোনার পর সৈকত বুঝতে পারলো কিছুক্ষণ আগে তার পিসেমশাই পাশের ঘরে এসে কি বিষয়ে কথা বলছিলো। তারমানে, তার পিসেমশাইয়ের কোনো পরিচিতা মহিলা এতক্ষণ ফোনে তার ছোটপিসির ভূমিকায় অভিনয় করলো।

"দেখলে তো, আমি বলেছিলাম না .. আমার মা'কে এখানে আনার কথা যখন বলা হয়েছে, তখন এখানে তার না আসার পক্ষেও নিশ্চয়ই একটা অকাট্য যুক্তি আগে থেকেই ঠিক করে রাখা হয়েছে। তার উপর এই আকাশভাঙ্গা বৃষ্টি এসে ওদের কাজটা আরও সহজ হয়ে গেলো।" তার পাশে বাক্সের উপর দাঁড়িয়ে ফিসফিস করে কথাগুলো বললো ঋষি।

ইউসুফ ভাইয়ের দেওয়া চ্যালেঞ্জটা এ্যাকসেপ্ট করে সে যে বিশাল বড় ভুল করে ফেলেছে, সেটা বুঝতে বাকি রইলো না সৈকতের। কিন্তু ভাগ্যের এমনই পরিহাস, এই পরিস্থিতিতে শুধু দর্শক হয়ে সমস্ত ঘটনা দেখা ছাড়া আর কিছু করার নেই তার। ঋষির দিক থেকে চোখ সরিয়ে পুনরায় ভেন্টিলেশন পয়েন্টে চোখ রাখলো সৈকত।

~ পরবর্তী আপডেট কিছুক্ষণের মধ্যেই আসছে ~
[+] 12 users Like Bumba_1's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Somnaath - 15-04-2023, 03:39 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Boti babu - 15-04-2023, 03:39 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Baban - 15-04-2023, 06:19 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by sudipto-ray - 15-04-2023, 07:02 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 15-04-2023, 09:01 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 15-04-2023, 09:04 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 15-04-2023, 09:06 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by nextpage - 16-04-2023, 01:39 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 16-04-2023, 06:43 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Sanjay Sen - 16-04-2023, 10:50 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 16-04-2023, 07:37 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Chandan - 16-04-2023, 02:30 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Rinkp219 - 16-04-2023, 03:12 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 16-04-2023, 07:40 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by masud93 - 18-04-2023, 05:18 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 18-04-2023, 09:16 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by pro10 - 18-04-2023, 11:46 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 18-04-2023, 12:08 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Baban - 22-04-2023, 03:07 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 22-04-2023, 08:17 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 22-04-2023, 08:26 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Rinkp219 - 23-04-2023, 07:29 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by pro10 - 22-04-2023, 08:49 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 22-04-2023, 09:45 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Boti babu - 22-04-2023, 11:24 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by nextpage - 23-04-2023, 01:07 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Baban - 23-04-2023, 01:30 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by chndnds - 23-04-2023, 08:59 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 23-04-2023, 09:46 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 23-04-2023, 09:48 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 23-04-2023, 09:50 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 23-04-2023, 10:18 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Monen2000 - 23-04-2023, 10:45 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Somnaath - 23-04-2023, 11:47 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 23-04-2023, 02:19 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Sanjay Sen - 23-04-2023, 06:05 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 26-04-2023, 10:22 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Somnaath - 26-04-2023, 12:24 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 23-04-2023, 08:14 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Sanjay Sen - 23-04-2023, 09:05 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 23-04-2023, 09:28 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Sanjay Sen - 23-04-2023, 09:30 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 23-04-2023, 09:37 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Sanjay Sen - 23-04-2023, 09:39 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Chandan - 24-04-2023, 02:06 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 24-04-2023, 09:31 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 27-04-2023, 12:20 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Sanjay Sen - 28-04-2023, 01:56 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by nextpage - 28-04-2023, 02:04 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 29-04-2023, 08:28 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Chandan - 01-05-2023, 10:56 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 01-05-2023, 02:27 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Chandan - 01-05-2023, 04:42 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Baban - 29-04-2023, 09:10 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 29-04-2023, 10:08 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Boti babu - 29-04-2023, 11:28 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by pro10 - 29-04-2023, 11:48 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by nextpage - 30-04-2023, 01:07 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Rinkp219 - 30-04-2023, 06:56 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 30-04-2023, 09:04 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 30-04-2023, 09:07 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Rinkp219 - 30-04-2023, 12:01 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by chndnds - 30-04-2023, 09:35 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 30-04-2023, 10:42 AM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Somnaath - 30-04-2023, 12:29 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 30-04-2023, 02:32 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Sanjay Sen - 30-04-2023, 06:40 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT - by Bumba_1 - 30-04-2023, 09:18 PM
RE: নন্দনা - NOT OUT (চলছে) - by Bumba_1 - 05-08-2023, 08:38 PM



Users browsing this thread: 26 Guest(s)