04-08-2023, 02:43 PM
পর্ব-৫৪
বাড়ি ফিরতে আমার মা বললেন - খোকা বৌমাকে একবার এখানকার হাসপাতালে দেখিয়ে নিয়ে আয় পরে আমরাই নিয়ে যাবো। আমি শুনে বললাম - হ্যা মা আমিও সেটাই ভেবেছি দিল্লি যাবার আগে নিশা আর কাকলিকে হাসপাতালে দেখিয়ে কার্ড করে রাখতে হবে। রাতের খাওয়া সেরে ল্যাপটপ নিয়ে কেস রিপোর্ট লিখতে বসলাম। রিপোর্ট লিখে একটা পেন ড্রাইভে নিয়ে নিলাম।
পরদিন সকালে রেডি হয়ে কলকাতায় যাবার আগে একটা সাইবার ক্যাফে থেকে প্রিন্টআউট নিয়ে নিলাম। আমার ব্যাংকে পৌঁছে ভিজিলেন্স ডিপার্টমেন্টে যেতেই ইনচার্জ অফিসার-নিলেশ নন্দী- এগিয়ে এসে আমাকে ওনার কাছে বসিয়ে চায়ের অর্ডার দিলেন। মিঃ নন্দী বললেন - কালকে আমাদের ডেপুটির কাছে ফোন এসেছিলো আপনার কাজের খুব প্রশংসা করেছেন। আমাদের ডেপুটি এলে ওনার কাছে নিয়ে যাবো আপনাকে আর কেস রিপোর্ট আপনি অনেকেই দেবেন। চা এলো সাথে দুটো টোস্ট। খেয়ে নিলাম। মিঃ নন্দী বললেন আপনি একটু বসুন আমি দেখে আসছি উনি এসেছেন কিনা। একটু বাদে ফিরে এসে বললেন - চলুন স্যার। আমাকে নিয়ে মিঃ নন্দী ডেপুটির কেবিনে ঢুকলেন। ডেপুটি একজন পাঞ্জাবি কিন্তু ভারী সুন্দর বাংলা বললেন - আসুন আসুন মিঃ দাস রিপোর্ট এনেছেন। আমি কাগজটা বাড়িয়ে দিতে উনি সেটা নিয়ে মন দিয়ে পরে নিন্দির হাতে দিয়ে বললেন - দেখুন একবার রিপোর্ট আর শিখে নিন কি ভাবে রিপোর্ট লিখতে হয়। মিঃ দাস আপনার থেকে অনেক জুনিয়র তবুও ওনার কাজ দেখলে কেউই বলতে পারবেন না যে উনি একদম নতুন অফিসার। কেবিন থেকে বেরিয়ে আমাকে নিয়ে নন্দী ওনার টেবিলে এসে বললেন - স্যার দিল্লিতে কেন পরে আছেন কলকাতায় চলে আসুন না। আমি হেরে বললাম - এখুনি আসতে চাইনা ওখানে আমার সিনিয়র ম্যানেজার অনেক কিছু জানেন ওনার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। দেখি কয়েক বছর ওখানে থেকে কলকাতায় ট্রান্সফারের আবেদন করব।
বেশ কিছুক্ষন নন্দীর সাথে কথা বলতে বলতে লাঞ্চ করে নিলাম। একটা ট্যাক্সি নিলাম শিয়ালদা স্টেশনে যাবো বলে। ট্যাক্সি পার্কসার্কাসে এসে জ্যামে আটকে গেলো। ট্যাঙ্কসির ভদ্রলোককে জিজ্ঞেস করতে বলল - জানিনা দাদা কতক্ষন লাগবে। আমি ওর টাকা মিটিয়ে নেমে পড়লাম।
দেখি অনেক লোক বাস থেকে নেমে হাঁটছে আমিও ওদের সাথে হাটতে লাগলাম। একটা গলি দিয়ে যাবার সময় দেখি অনেক মেয়েরা মেকআপ করে দাঁড়িয়ে আছে। বুঝলাম এরা দেহ ব্যবসা করে অনেকের হাত ধরে টানছে। একটু এগোতে একটা বড় পুরোনো আমলের বাড়ির সামনেও দেখি অনেক মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তাদের মধ্যে কিছু সুন্দরী মেয়েও আছে। হঠাৎ আমার নজর গেলো একটা মেয়ের উপরে খুব চেনা চেনা লাগছে কাছে গিয়ে ভালো করে দেখার পর চিনতে পারলাম সেই ছবি দিলীপের বোন জেক একদিন আমি ভালোবেসেছিলাম। ছবি আমাকে চিনতে না পেরে জিজ্ঞেস করল - বসবেন দুহাজার লাগবে ? আমি অবাক হয়ে গেলাম ছবির পরিণতি দেখে এখন সে বেশ্যা বৃত্তি করছে দেখে।
আমি বললাম - হ্যা যাবো। বলতে ও আমার হাত ধরে একটা ঘরে নিয়ে গেলো। দরজা বন্ধ করে বলল - একঘন্টার জন্য দুহাজার আর সারাদিনের জন্য পাঁচ হাজার লাগবে। ছবি ওর ঘাগড়া আর ব্লাউজ খুলে শুধু প্যান্টি আর ব্রা পরে আমার কাছে এসে বলল - নাও দেখো সব ঠিকঠাক আছে। আমি ওর হাত ধরতে গেলে বলল - আগে টাকা দাও। আমি পকেট থেকে দুহাজার টাকা বের করে দিতে ও ব্রা খুলে বলল - এবার হাত দিয়ে দেখে নাও। আমি অবাক হয়ে শুধু ওকে দেখতে লাগলাম এ কি পরিণতি ওর। এবার আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম - আমাকে চিনতে পারছোনা তুমি আমি সুমন।? ছবির মুখটা একদম কালো হয়ে গেলো ও ব্রা তুলে নিয়ে পরে নিলো। আমি ওকে আবার জিজ্ঞেস করলাম - তুমি তো ছবি ? সে কিছু মুখে বলতে পারলোনা শুধু আমার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষন। তারপর বলল ছবি মোর গেছে সুমন আমি এখন কমলা বিবি সবাই আমাকে এই নামেই চেনে এখানে বলে ঝড় ঝড় করে কেঁদে ফেললো। আমি ওকে কাছে নিয়ে এসে বললাম - তোমার এই অবস্থা দেখে আমার মনটাও কেঁদে উঠছে ছবি। তুমি আমাকে ছাড়লে কেন ? ছবি - একটু হেসে বলল - ভগবান আমাকে শাস্তি দিয়েছেন তোমার মতো একজন সরল ছেলেকে ঠকানোর জন্য আমি সত্যি খুব খারাপ। আমি যার সাথে পালিয়ে এসে বিয়ে করেছিলাম সে ছিল একজন মেয়েদের দালাল এরকম অনেক মেয়ের সাথে প্রেমের অভিনয় করে কিছু দিন নিজে ভোগ করে বেচে দেয়এই পতিতালয়ে। আর তাদের জায়গা হয় এই রকম একটা পতিতালয়ে। আমার সাথেও সেটাই হয়েছে। আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম - তুমি যখন জানতে পারলে তখন কেন তুমি আমাকে ফোন করলে না ? ছবি - আমার ফোন কেড়ে নিয়েছিল আজও আমার কাছে কোনো ফোন নেই। আমি শুনে বললাম - তুমি আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাও না ? ছবি - চাইলেই কি আর সব পাওয়া যায়। থাক এসব কথা তুমি বিয়ে করেছো ? আমি সব ওকে বললাম দীলিপেরও বিয়ে হয়েছে সেটাও বললাম। ছবি জিজ্ঞেস করল আমার মা-বাবা কেমন আছেন ? আমি - তোমার চলে যাবার পরে তোমার মা খুবই অসুস্থ হয়েছিলেন তবে এখন ভালোই আছেন ওপর থেকে দেখে কি আর মনের ভিতরটা পড়া যায়। হয়তো এখনো তোমার কথা ভেবে আড়ালে চোখের জল ফেলেন। ছবির দু চোখ দিয়ে জলের ধারা বয়ে চলেছে। ছবি আমার টাকা ফেরত দিয়ে বলল - আমি তোমাকে চিনতে পারিনি তোমার অনেক পরিবর্তন হয়েছে আগের থেকেও অনেক সুন্দর হয়েছে তোমার সাস্থ। তুমি কি আমার সাথে যাবে এখন ? ছবি - সেটা সম্ভব নয় গো। এখন থেকে কোনো মেয়ের বাইরে যাবার পারমিশন নেই এর আগেও অনেক মেয়ে পালতে চেয়েছিলো তাদের মরতে হয়েছে। আমার মরতে খুব ভয় করে গো আর আমার সাথে তোমাকেও ওরা মেরে ফেলবে আর সেটা আমি চাইনা। আমি শুনে বললাম - আগে তুমি মন ঠিক করো সুযোগ পেলে তুমি আমার সাথে যাবে কি না ? ছবি - আমারো এখানে থাকতে ইচ্ছে করে না আমিও চাই আবার নতুন করে বাঁচতে আবার কলেজে ভর্তি হয় পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে কিন্তু তা হয়তো আর এ জীবনে সম্ভব হবে না। আমি বললাম - দেখো আমি এখন দিল্লিতে থাকি আর সামনের সপ্তাহে চলে যাবো আমার বৌ এখন প্রেগনেন্ট ওকে রাখতেই কলকাতায় এসেছি তুমি চাইলে আমার সাথে দিল্লি আসতে পারো ওখানে আমি তোমাকে কলেজে ভর্তি করিয়ে দেব। ছবি - যদি সুযোগ পাই তো ঠিক যাবো তোমার সাথে। আমি ওকে বললাম দুএকদিন বাদে আমি আবার আসবো তোমার কাছে আর একটা ফোন দিয়ে যাবো সেটা লুকিয়ে রাখবে আর একটু বেশি রাতে আমাকে মিসডকল দেবে যখন তোমার সাথে কথা বলা যাবে। ছবি আমার কাছে সরে এসে বলল -তোমার কাছে ক্ষমা চাইবারও আমার অধিকার নেই তাই বলি যদি পারো তো এই পড়ার মুখীকে ক্ষমা করে দিও। আমি ওকে আর কিছু না বলে বেরিয়ে এলাম। ছবি ছেনালি করতে করতে বেরিয়ে এলো বুঝলাম যে ও এখন অভিনয় করছে।
আমি সেখান থেকে বেরিয়ে গলির বাইরে আসতে দেখি কয়েকজন গুন্ডা প্রকৃতির ছেলে আমাকে দেখছে ওদের পাত্তা না দিয়ে একটা ট্যাক্সি ডেকে সোজা বারাসত চলে এলাম। বাড়িতে ঢুকে পোশাক পাল্টে দিলীপের বাড়িতে গেলাম। দিলীপকে সব ঘটনা বলতে ও কান্নায় ভেঙে পড়ল আমি ওকে থামিয়ে বললাম তুই নিজেকে সামলা কাকিমা দেখলে মুশকিল হবে রে। দিলীপ আমাকে বলল - আমি তোর সাথে আছিরে ভাই ছবিকে যে করেই হোক উদ্ধার করে দিল্লিতে পাঠানোর জন্য যা যা করার করবো। পার্কসার্কাসের দিকে আমার কয়েকটা মাগিবাজ বন্ধু ছিল ওদের সাথে একবার যোগাযোগ করে দেখি কি করা যায়। আমি শুনে বললাম - তুই ওদের খোঁজ কর।
রাতে কাকলিকে সবটা খুলে বললাম শুনে কাকলির চেখেও জল এসে গেলো বলল - দেখোনা গো ওকে ওখান থেকে বের করে তোমার কাছে নিয়ে রাখো আর ওকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করো। আমি জানি তুমি পারবে। সেই মতো দিলীপ ওর সেই বন্ধুদের সাথে দেখা করতে লাগলো। একদিন একজনকে বলল - গুরু এখানে একটা মেয়ে আছে ওই বড়োবাড়িতে থাকে লাইনের মেয়ে কিন্তু আমার খুব পছন্দ ওকে। দেখনা যদি দুদিনের জন্য আমার সাথে ছাড়ে তো ওকে নিয়ে দিঘায় গিয়ে একটু ফুর্তি করে আসি। ওর বন্ধুরা বলল - পাড়ি কিন্তু সেলিম ভাইকে পটাতে হবে। ও রাজি না হলে হবেনা বন্ধু। দিলীপ বলল - দেখনা ওকে পটিয়ে মাগীটাকে আমার কাছে নিয়ে আয় দুদিনের জন্য।
ওর বন্ধুরা সবকটাই দাগি মাগিবাজ আর ওই সেলিমের দোসর। ওদের কোথায় সেলিম রাজি হলো কিন্তু ওকে কুড়ি হাজার টাকা দিতে হবে। দিলীপের এক বন্ধু বলল - গুরু একটু কম করো না গো তোমাকে কুড়ি দিলে ওকে নিয়ে দিঘাতেও তো খরচ আছে। সেলিম - এর কম হবে না যদি ক্যাশ থাকে তো ফুর্তি করো না থাকলে কেটে পড়ো। দিলীপকে কথাটা বলতে দিলীপ বলল - ঠিক আছে ভাই সামনের সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ছুটি নেবো সেদিন সকালের বাসে যাবো আর রবিবার রাতে ফিরে আসবো।
দিলীপ রাতে এসে আমাকে জানাতে বললাম - ঠিক আছে আমি কালকেই তোকে টাকা দিয়েদিচ্ছি তুই ঐদিন খুব সকালে বেরিয়ে যাবি আর ছবিকে নিয়ে দিঘার বাসে উঠবি। আমি অপেক্ষা করবো গাড়ি নিয়ে আমার কাছে দিয়ে তুই চলে যাবি। আর শোন্ তোর ওই বন্ধুদের ফোন করে বলে দিবি যে ছবি বাস থেকে নেবে বাথরুমে যাচ্ছি বলে পালিয়ে গেছে। দিলীপ জিজ্ঞেস করল - তুই কোথায় থাকবি আর কোন জায়গা থেকে পালিয়েছে বলবো ? আমি - দেখ দিঘার সব বাসই কোলাঘাটের একটা ধাবায় থামে বলবি সেখান থেকেই ও পালিয়েছে তাহলে ওদের লোকেরা কোলাঘাট খুঁজবে কিন্তু তুই সাঁত্রাগাছিতেই ছবিকে নিয়ে নেমে জাবি আসামি ওখানেই অপেক্ষা করবো।
সেই মতো কথা হয়ে গেলো আমি রোজি প্রায় ছবির কাছে সন্ধ্যের দিকে যেতে থাকলাম আর ওকে আমার প্ল্যান বলে দিলাম। ছবি শুনে খুশি হলেও একটা ভয় ওকে তারা করে বেড়াচ্ছে। নির্দিষ্ট দিনে দিলীপ আর আমি দুজনেই বেরোলাম। দিলীপ একটা ট্যাক্সি নিয়ে চলে যেতে আমি আগে থেকে ঠিক করা একটা গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। আর এক ঘন্টার মধ্যে সাঁতরাগাছি পৌঁছে গেলাম। সেখানে গাড়ির ছেলেটাকে কিছুটা দূরে গাড়ি রাখতে বলে মেন্ রোডের ধারের একটা চায়ের দোকানে গিয়ে বসে শুধু চাই খেয়ে যাচ্ছি। খুব টেনশন হচ্ছে আর অপেক্ষা করছি দিলীপ কখন আসবে। একটা দিঘার বাস আসতে আমি উঠে বাসের কাছে গেলাম। বাস দাঁড়াতেই দিলীপ আর ছবি নামলো আমাকে দেখে দিলীপ একবার হেসে দিয়ে আমার গাড়ি যেখানে দাঁড়িয়ে ছিল সেদিকে ছবিকে যেতে বলে দিলীপ আবার ওই দিঘার বসেই উঠে পড়ল।
আমি ছবির থেকে অনেকটা তফাৎ রেখে হাটতে লাগলাম। সাঁতরাগাছি স্টেশনের ভিতরে কিছুটা জায়গা আছে আমি সেখানে গিয়ে দাঁড়ালাম আর আমার গাড়ির ড্রাইভারকে ফোনকে করে আসতে বললাম। তার আগে ছবিকে হাত নেড়ে এদিকে আসতে বলে দিয়েছি। আমার গাড়ি এসে যেতে ছবিকে তুলে নিয়ে বললাম সোজা এয়ারপোর্টে যেতে। আমি অবশ্য বাড়ি থেকেই সবাইকে বলে আমার সুটকেস নিয়ে বেরিয়েছিলাম। আমি আগেই আমার সাথে ছবির টিকিট কাটতে বলে দিয়েছিলাম। সে অনুযায়ী বিভাসদা আমাকে দুটো টিকিট মেইল করে দিয়েছিলেন। ছবির সাথে শুধু একটা ব্যাগ ছাড়া কিছুই ছিলোনা। আমরা যখন এয়ারপোর্টে পৌঁছলাম তখন সকাল নটা বাজে আমাদের ফ্লাইট দুপুর ১২:৫০ এখনো অনেক সময় আছে। দিলীপকে ফোন করতে বলল ও কোলাঘাট পৌঁছে গেছে। দিলীপ আরো বলল -জানিস গুরু ছবিকে তুলে দিতে এসেছিলো দুজন লোক আর যতক্ষণ না বাস ছাড়লো সেখানেই দাঁড়িয়ে রইলো। তারপরেও ওরা আমাদের পিছু ছাড়েনি অনেক রাস্তা আমাদের পিছনে এসেছিলো। কিন্তু কোলাঘাটে আসার আগে মনে হয়ওদের গাড়ি কোথাও দাঁড়িয়েছিল। দিলীপ বলল - গুরু এখন রাখছি ওদের ফোন করেছিলাম ওরা এসে গেছে। লোক দুটো আমাকে দেখে জিজ্ঞেস করলো - কোন দিকে গেছিলো ছবি আমি দেখিয়ে দিতে দুজন ওদিকে দাঁড়িয়ে খোঁজাখুঁজি করতে লাগলো আর লোকেদের জিজ্ঞেস করতে লাগলো। কোনো খোঁজ না পেয়ে দিলীপের কাছে এসে বলল -পাওয়া গেলোনা। দিলীপ বলল - গেলো আমার কুড়ি হাজার টাকা আর ফুর্তিও করতে যেতে পারলাম না। ওদের মধ্যে একজন বলল - ঠিক আছে আমি ওস্তাদকে জানাচ্ছি দেখি কি বলে। ফোন করে বলল - সেলিম ভাই পাখি পালিয়েছে অরে সে ছেলেটাই আমাদের ফোন করে বলেছে আমরাও খুঁজে দেখলাম কিন্তু পেলাম না। সেলিম বলল - ঠিক আছে যাবে কোথায় ওখানেই কোথাও গা ঢাকা দিয়ে আছে ঠিক খুঁজে পাবো আর ওই ছেলেটাকে বল যে ওর টাকা যেন ফেরত নিয়ে যায়। লোকটা আমাকে বলতে বললাম - ঠিক আছে দু একদিনের মধ্যে যাবো।
দিলীপ আমাকে ফোনে সব বলল। আমি শুনে বললাম তোকে আর ওই টাকা আনতে যেতে হবে না। ওখানে গেলে তুই ফ্যাসাদে পড়বি।
আমাদের চেকইন ওয়েগেছে। ফালিতে উঠে ছবি আমার পাশে বসে বলল - তুমি আমার কাছে ভগবান তুমি না থাকলে আমাকে কেউই উদ্ধার করতে পারতো না। দিল্লি এয়ারপোর্টে নেমে ছবি চারিদিক দেখে বলল - খুব সুন্দর তাই না। সেখান থেকে ক্যাব নিয়ে উঠে সোজা আমার ফ্ল্যাটে এলাম। ঘরে ঢুকে বললাম -তুমি ঐদিকের ঘরটায় থাকবে দেখিয়ে দিয়ে আমি আমাদের মানে আমার আর কাকলির ঘরে গিয়ে ঢুকলাম। আমি স্নান সেরে নিয়ে ছবির ঘরে উঁকি দিয়ে দেখি ও একদম ল্যাংটো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে দেখে বলল - আমি স্নান করে নিয়েছি কিন্তু কিছুই তো পড়ার নেই। আমি আমার একটা বারমুডা আর টিশার্ট দিলাম। সেগুলো পরে নিয়ে বললাম - এখন একটু ঘুমোও পরে কথা হবে। সন্ধ্যের দিকে পায়েল অফিস থেকে ফিরে আমার ঘরের বেল বাজালো। দরজা খুলতে বলল - সে কোথায় গো জেক তুমি রেসকিউ করে নিয়ে এলে ?
আমি ছবিকে ডেকে আনলাম বললাম - এই সেই মেয়ে জেক উদ্ধার করেছি আর এক সময় ওকেই আমি ভালোবাসতাম। ওকে বলেছিলাম যে কবিয়ে করবো। বাকিটা তোমরা সবাই জানো। পায়েল ছবিকে বলল - দেখো তোমাকে একটা কথা বলছি কিছু মনে করোনা - সুমনের মতো ছেলেকে স্বামী হিসাবে পাওয়ার ভাগ্য থাকতে হয়। ছবি মাথা নিচু করে রইলো। পায়েল ছবির কাছে গিয়ে ওর মুখ তুলে বলল - যা হবার হয়ে গেছে এবার নিজের জীবন নতুন করে শুরু করো আমরা সবাই তোমার পাশে আছি। ছবি পায়েলের কথা শুনে বুঝলো যে আমাকে ও কতটা ভালোবাসে আর আমার কথা ভেবেই পায়েল ওর দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।