27-07-2023, 08:24 PM
"আরে ঝুমা না? কেমন আছো? তোমরা তো আর যোগাযোগই রাখো না! এক হাতে তো তালি বাজানো সম্ভব নয়, তাই তোমার ছোট ননদও আর যোগাযোগ করতে চায়নি তোমাদের সঙ্গে। যাগ্গে বাদ দাও, তুমিই তাহলে ইউসুফের নতুন আবিষ্কার? ও তোমার কথা গতকাল বলছিলো আমাকে। তোমার নাম বললে বা ছবি দেখালে হয়তো চিনতে পারতাম। হয়তো কেনো, নিশ্চয়ই চিনতে পারতাম। কিন্তু ও আমাকে বলেছিলো সারপ্রাইজ দেবে। তবে সারপ্রাইজটা যে এত বড় একটা ধামাকা হবে সেটা বুঝতে পারিনি। যাই বলো ঝুমা, তোমাকে তো চেনাই যাচ্ছে না গো! দারুন সেজেছো তুমি, খুব সুন্দর লাগছে তোমাকে।" কথাগুলো বলে ইউসুফের বিজনেস পার্টনার রজত একদম সামনে এসে দাঁড়ালো বন্দনা দেবীর।
সোফায় বসে থাকা অবস্থায় সৈকত লক্ষ্য করলো মাথার উপর ফুল স্পিডে ঘুরতে থাকা পাখার হাওয়ায় মাঝে মাঝে সরে যাওয়া কালো রঙের পাতলা সিফনের শাড়ির আঁচলের আড়ালে উঁকি দেওয়া বিপজ্জনক স্তন বিভাজিকা থেকে শুরু করে চর্বিযুক্ত মোলায়েম ঈষৎ ফোলা তলপেট এবং তার মাঝখানে বেশ বড়ো একটি গভীর উত্তেজক নাভি, স্লিভলেস ব্লাউজের অত্যন্ত সরু স্লিভের আড়াল থেকে বারবার প্রকট হয়ে ওঠা বাহুমূল .. এই সবকিছুই দৃশ্যমান হওয়া স্লিভলেস ব্লাউজ এবং নাভির বেশ কিছুটা নিচে নামিয়ে শাড়ি পরিহিতা তার মায়ের দিক থেকে চোখ ফেরাতে পারছিলো না ইউসুফ আর রজত নামের ওই লোকটা। মুখে সেরকম চড়া মেকআপ না নিলেও হাল্কা ফেস পাউডারের ছোঁয়া, ঠোঁটে গাঢ় লাল লিপস্টিক, স্বামী সোহাগী না হলেও সধবা হওয়ার ফলস্বরূপ অনিচ্ছা সত্ত্বেও সিঁথিতে চওড়া করে দেওয়া সিঁদুর, এবং কপালে লাল রঙের বড়োসড়ো একটি টিপ পড়াতে বন্দনা দেবীর এই রূপ দেখে ব্রহ্মচর্য পালন করা থেকে সংসারধর্ম ত্যাগ করে বাণপ্রস্থে যাওয়া ব্যক্তিদের পর্যন্ত লোম খাড়া হয়ে যাবে .. এটা বললে একটুও অত্যুক্তি করা হয় না।
"আচ্ছা তোমার সঙ্গে ছোকরাটি কে? তোমার ছেলে নাকি? হ্যাঁ ঠিকই তো, ওর বাবার সঙ্গে মুখের মিল রয়েছে বটে। ওকে তো লাস্ট দেখেছিলাম বোধহয় যখন ওর তিন-চার বছর বয়স হবে। নাম কি হে তোমার ছোকরা? কোন ক্লাসে পড়ো? চিনতে পারছো না তো আমাকে? ভাবছো এই লোকটা আবার কোথা থেকে উদয় হলো, যে তোমার মা'কে তার ডাকনাম ধরে ডাকছে? আমি তোমার ছোট পিসেমশাই .." কথাটা বলে আদর করার নাম করে সোফায় বসে থাকা সৈকতের পিঠে বেশ জোরে একটা থাপ্পড় মারলো লোকটা।
প্রচন্ড ব্যথা পেলেও মা আর তার বন্ধু ইউসুফের সামনে প্রেস্টিজ পাংচার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় মুখে একটা মেকি হাসি এনে সোফা থেকে উঠে লোকটার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে নিজের নাম আর তার পড়াশোনার ব্যাপারে জানালো সৈকত। তারপর পুনরায় সোফায় বসে বেশ ভালো করে নিরীক্ষণ করতে লাগলো, তার বন্ধু ইউসুফের বিজনেস পার্টনার ওরফে তার ছোট পিসেমশাইকে। লোকটার চেহারা অনেকটা পাশ্চাত্য সিনেমার মরুপ্রধান শুষ্ক অঞ্চলের বর্গী ঘোড়সওয়ারদের মতো। মধ্য চল্লিশের, রৌদ্রে পুড়ে গায়ের রঙ তামাটে হয়ে যাওয়া, লম্বা-চওড়া চেহারার অধিকারী, মাথার চুল ক্রমশ পাতলা হয়ে যাওয়ার দিকে অগ্রসর হতে থাকলেও গালের প্রায় অর্ধেক পর্যন্ত নেমে আসা মোটা এবং লম্বা জুলফি, নিজের নামের সঙ্গে সাদৃশ্য রেখে গজদন্তের অধিকারী, হাতের বেরিয়ে থাকা অংশ এবং কর্ণ গহ্বরে চুলের আধিক্য দেখলে বোঝা যায় এই ব্যক্তির শরীর কেশ সর্বস্ব। সর্বক্ষণ অস্থির চোখদুটি আপাতদৃষ্টিতে আমুদে মনে হলেও ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখা যায় অপেক্ষাকৃত স্থির বাঁ'চোখের মণি অনেকটা হিংস্র হায়েনার মতো।
"প্রায় ১৫-১৬ বছর পর তোমাকে দেখলাম ঝুমা। আগের থেকে একটু মোটা হয়েছো, তবে মুখশ্রীর একটুও পরিবর্তন হয়নি বরং আমি তো বলবো, গ্ল্যামার বেড়ে গেছে তোমার। সর্বোপরি আজ এত ডেয়ারিং ড্রেসআপ করে এসেছো যে, তোমার দিক থেকে চোখ সরাতেই পারছি না। আমার যতদূর মনে পড়ছে নাভির নিচে শাড়ি তুমি আগেও পড়তে। তবে স্লিভলেস ব্লাউজ পড়তে তোমাকে কখনো দেখিনি। সেই যে গো, সেবার জামাইষষ্ঠীর দিন, দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর তোমাদের ছাদে যখন আমি সিগারেট খাচ্ছিলাম, তুমি শুকনো কাপড়গুলো তুলতে এসেছিলে ছাদ থেকে। তোমার দুটো হাতই ব্যস্ত ছিলো দড়ি থেকে ক্লিপগুলো খুলে কাপড় তোলাতে। সেদিন ভীষণ হাওয়া দিচ্ছিলো, আর সেই হাওয়ায় তোমার শাড়ির আঁচলটা বারবার সরে গিয়ে তোমার দাগহীন মসৃণ তলপেট আর বিশাল বড় নাভিটা বেরিয়ে যাচ্ছিলো আমার সামনে। সেদিকে তাকিয়ে আমি মজা করে তোমার উদ্দেশ্যে বলেছিলাম, 'নাভির গর্তটা কি বানিয়েছো গো ঝুমা? এটার মধ্যে তো আরামসে দু-টাকার কয়েন ঢুকে যাবে!' তুমি বলেছিলে, 'ধ্যাৎ কি সব আজেবাজে কথা বলছেন?' আমি তখন তোমার দিকে এগিয়ে গিয়ে, 'বটে? আমি আজেবাজে কথা বলছি? আমার কথা ঠিক না ভুল, এক্ষুনি প্রমাণ করে দিচ্ছি ..' এই বলে নিজের পকেট থেকে একটা দু টাকার কয়েন বের করে একহাতে পেটের উপর থেকে তোমার আঁচলটা সরিয়ে আরেক হাত দিয়ে কয়েনটা ঢুকিয়ে দিলাম তোমার নাভির গর্তের ভেতর। তখনকার দু-টাকার কয়েন আজকালকার দিনের মতো এরকম পাতলা এবং ছোট সাইজের ছিলো না, বেশ বড় ছিলো। পুরোটাই অনায়াসে ঢুকে গিয়েছিলো তোমার নাভির ফুটোর মধ্যে। তুমি তখন কি করবে বুঝে উঠতে না পেরে নাভির গর্তে কয়েনটা ঢোকানো অবস্থাতেই কাপড়গুলো নিয়ে ছাদ থেকে নেমে নিচে দৌড়ে পালালে। মনে পড়ে সেসব দিনের কথা? ওটাই আমার লাস্ট যাওয়া তোমাদের বাড়িতে। তারপর তো একদিন তোমার ওই ক্যালানে, অপদার্থ বরটা বিজনেস থেকে টাকা নিয়ে শেয়ার মার্কেটে খাটাতে গিয়ে সমস্ত টাকা লস হয়ে যাওয়ার দায় শ্বশুরমশাইয়ের কাছে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে চুরির বদনামের মাধ্যমে চাপিয়ে দিয়েছিলো। আমি তো চাকরি করতাম না, তোমার শ্বশুরবাড়ি মানে আমারও শ্বশুরবাড়ির কাপড়ের ব্যবসাটাই দেখতাম তোমার বরের সঙ্গে পার্টনারশিপে। সেই মিথ্যে চুরির অপবাদে সেখান থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর আমাদের জীবনটা একদম অন্য খাতে বইতে শুরু করেছিলো। শুধু স্ট্রাগল, স্ট্রাগল আর স্ট্রাগল। তারপর ধীরে ধীরে নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছি, বলা ভালো ফুলেফেঁপে উঠেছি। আজ আমার কাছে এত টাকা আছে যে, ওই ব্যাটা শান্তির ছেলে শান্তিরঞ্জনের মতো পাঁচটা দোকানদারকে আমি এক হাটে কিনে অন্য হাটে বেচে দিতে পারি।" সৈকত লক্ষ্য করলো কথাগুলো বলতে বলতে প্রথম দিকে যেরকম তার ছোট পিসেমশাইয়ের চোখে লালসার প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠছিলো, পরের দিকে তার মুখমণ্ডলে একটা প্রতিহিংসার ছাপ প্রকট হলো। সেটা অবশ্যই শ্বশুরবাড়ি থেকে তাকে অন্যায় ভাবে বিতাড়িত করে দেওয়ার কথাগুলো বলতে গিয়ে হয়েছে, এটা বলাই বাহুল্য।
প্রথমে তার আজকের শাড়ি পড়া নিয়ে প্রশংসার ছলে ওইরকম সিডাক্টিভ মন্তব্য। তারপর পুরনো দিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে, তার নাভির গর্তে কয়েন ঢুকিয়ে দেওয়ার মতো অশ্লীল ঘটনার উল্লেখ করা। এবং সবশেষে তার স্বামীকে যথেচ্ছ গালমন্দ করে পারিবারিক কেচ্ছার কথা জনসমক্ষে, সর্বোপরি তার নিজের পেটের সন্তানের সামনে প্রকাশ করা .. হঠাৎ করেই ঘটে যাওয়া এইসব ঘটনার সম্মিলিত প্রভাবের ফলস্বরূপ লজ্জায় কুঁকড়ে গিয়েছিলেন বন্দনা দেবী। "আপনার সঙ্গে যেটা হয়েছিলো, সেটা অন্যায়। আমি সেদিনও এটা স্বীকার করেছিলাম, আজও করছি। কিন্তু তখন তো প্রতিবাদ করার কোনো উপায় ছিলো না আমার!" মিনমিন করে কৈফিয়ৎ দেওয়ার মতো কথাগুলো বললো সৈকতের মা।
"hold on পার্টনার, hold on .. তোমাকে surprise দিতে গিয়ে তো সবচেয়ে বড় চমকটা আমিই পেলাম! তুমিই তাহলে ওর sister in law এর হাজব্যান্ড? তবে আমার ঝুমাকে, मेरा मतलब ঝুমাকে তুমি কিন্তু এইভাবে বলতে পারোনা পার্টনার! ও কিন্তু আমাকে বলেছে যে, তোমাদের সঙ্গে অন্যায় হয়েছিলো। তবে এটা ঠিক, ওর বুড়ো-হাবড়া বর'টা সুগারের পেশেন্ট আর হেঁপোরোগী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যথেষ্ট হারামিও বটে, সেটা বুঝতে পারলাম তোমার কথায়।" বন্দনা দেবীকে হিউমিলিয়েশনের হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টায় তার পাশে সরে এসে একেবারে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে, শাড়ির আঁচলটা একপাশে সরে গিয়ে ওনার উন্মুক্ত হয়ে যাওয়া নগ্ন কোমরটা শক্ত করে নিজের হাতে জড়িয়ে ধরে রজত বণিকের উদ্দেশ্যে কথাগুলো বলে সৈকতের মা'কে অতিরিক্ত লজ্জায় ফেলে দিলো ইউসুফ।
"না না, ঝুমাকে আমি দোষারোপ করছি না তো! ওর মতো মিষ্টি স্বভাবের মেয়েই হয় না। ওদের পরিবারে ওই একমাত্র ভালো, বাকি সবকটা ঢ্যামনা। যাগ্গে যা ঘটে গেছে, সেসব কথা তুলে আর লাভ নেই। জামাইষষ্ঠীর ওইদিনের পরে তো আর তোমাদের বাড়িতে যাওয়া হয়নি আমার। কিন্তু মনে মনে ভেবে রেখেছিলাম তোমার সঙ্গে যদি কোনোদিন দেখা হয়, তাহলে আমার ওই দুই-টাকার কয়েনটা ফেরত চাইবো। কোথায় আমার কয়েন? এখনো কি তোমার নাভির ওই গর্তটায় ঢুকিয়ে রেখেছো ওটাকে? হাহাহাহা .. মজা করছিলাম। এখানে দাঁড়িয়েই কি সব কথা হবে? লাঞ্চ দিয়ে দিয়েছে এতক্ষণে বোধহয় আমাদের অফিস রুমে। চলো, ওখানে চলো। একসঙ্গে লাঞ্চ করবো। আর খেতে খেতে কাজের কথাগুলোও সেরে নেওয়া যাবে।" সৈকত দেখলো পুনরায় তার মা'কে অত্যন্ত লজ্জায় ফেলে দিয়ে অসভ্যের মতো এইরূপ উক্তি করে কাঠের পার্টিশনের দিকে যেতে লাগলো তার ছোট পিসেমশাই। তাকে অনুসরণ করলো ইউসুফ এবং সৈকত আর তার মা।
অফিস ঘরে ঢুকে দেখা গেলো টেবিলের উপর চিকেন কাটলেট, বাসন্তী পোলাও, মটন কষা আর বিভিন্নরকম মিষ্টান্নের সহযোগে লাঞ্চের সমাহার সাজানো রয়েছে। সামনে এত ভালো ভালো খাবার দেখেও সৈকতের মন কিন্তু এক মুহূর্তের জন্যও শান্ত হতে পারছিলো না। তার বারবার মনে হচ্ছিলো এখানে যা কিছু হচ্ছে, সেটা স্বাভাবিক নয়। কোথাও যেন কিছু একটা গন্ডগোল রয়েছে। সুসজ্জিত অফিস ঘরটির দেওয়াল জুড়ে বিভিন্ন মাঝবয়সী মহিলাদের ছবি লাগানো রয়েছে। তারা কেউ টপ আর লেগিন্স পড়ে, আবার কেউ জিন্স আর টি-শার্ট পড়ে, কেউ আবার শাড়ি পড়ে রয়েছে। বোঝাই গেলো এগুলোই তার মা'কে ইউসুফের বলা সেইসব মহিলা বা গৃহবধূ, যারা লোকাল গার্মেন্টস কোম্পানিগুলির মডেল হওয়ার সুযোগ পেয়েছে।
হঠাৎ করেই অফিস ঘরের ডানদিকের দেয়ালে চোখ গেলো সৈকতের। সেখানে একটি কাঠের ফ্রেমের উপরে our exclusive models লেখা রয়েছে। তার ঠিক নিচে কাঠের ফ্রেমবন্দি চারটি ছবি কোলাজ করে আটকানো আছে সেখানে। কৌতুহলবশত কাঠের ফ্রেমটির দিকে এগিয়ে যেতেই বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠলো সৈকতের। সে তো চেনে এই চারজন মডেলকে, বলা ভালো অভিনেত্রীকে। তার প্রিয় ভারতীয় পর্ণ সাইটের খুব জনপ্রিয় একদম খাঁটি বাঙালি নায়িকা এরা .. সুচরিতা, টিনা, দোলন এবং দিয়া। আরও ভালো করে লক্ষ্য করে সৈকত দেখলো চারজনই শাড়ি পড়ে রয়েছে। কিন্তু অদ্ভুতভাবে প্রত্যেকের শাড়িগুলোই বৃষ্টির জল বা শাওয়ারের নিচে দাঁড়ালে যেরকম ভিজে যায় শাড়ি অথবা অন্য জামাকাপড় ঠিক সেই রকম ভাবেই ভেজা, এবং শাড়ির নিচে সায়া, ব্লাউজ আর ব্রা কোনোটাই পড়েনি এরা। ভিজে জবজব করতে থাকা শাড়ির তলা দিয়ে প্রত্যেকের স্তন এবং স্তনবৃন্ত, আর নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাস স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।
ছবিগুলো দেখেই ভেতর ভেতর গরম হয়ে উঠলো সৈকত। পরক্ষণেই "আমি ওসব জিনিস দেখা বা পড়ার ঊর্ধ্বে চলে গেছি বাওয়া। আমি খবর দেখি না, খবর পড়ি না, খবর তৈরি করি .." ইউসুফের বলা এই কথাগুলো মনে পড়ে যাওয়াতে শিরদাঁড়া দিয়ে একটা ঠান্ডা স্রোত নেমে গেলো সৈকতের। তার মানে কি ইউসুফ ভাই সত্যি সত্যি এদেরকে নিয়ে .. আর ভাবতে পারলো না সৈকত।
"কি করছিস ওখানে? লাঞ্চ দেওয়া হয়েছে তো! খেতে আয়, না হলে এবার ঠান্ডা হয়ে যাবে খাবারগুলো।" ইউসুফের গলার আওয়াজে তৎক্ষণাৎ ছবির সামনে থেকে সরে গিয়ে টেবিলের দিকে এগিয়ে গেলো সৈকত। চারচৌকো টেবিলটিতে ইউসুফ আর তার মা পাশাপাশি বসেছে, উল্টোদিকে সৈকত আর তার পিসেমশাই।
একটা অল্পবয়সী তেইশ চব্বিশ বছরের ছেলে টেবিলে খাবার সার্ভ করে দিচ্ছিলো। ছেলেটার কাঁপা কাঁপা হাতে আনকোরার মতো খাওয়ার পরিবেশন এবং পোশাক-আশাক আর মুখ-চোখ দেখে আর যাই হোক বাবুর্চি বলে মনে হলো না সৈকতের। হয়তো ছেলেটা এই অফিসেরই একজন ফোর্থক্লাস স্টাফ, হয়তো কোনো কারনে আজকেই খাবার সার্ভ করছে .. তাই হয়তো ঠিকঠাক করতে পারছে না। সৈকত লক্ষ্য করলো ছেলেটা তাকে চোখের ইশারায় কিছু বলতে বা বোঝাতে চাইছে, কিন্তু বারংবার চেষ্টা করা সত্ত্বেও বোঝাতে ব্যর্থ হচ্ছিলো। চোখ সৈকতের দিকে থাকায় বন্দনা দেবীর সামনে প্লেটটা রাখার বদলে টেবিলের উপর উল্টো করে রাখা তার ডানহাতের উপর অসাবধানতায় প্রচন্ড গরম থাকা পোলাও এবং মাংসের কাঁচের প্লেটটা রাখলো ছেলেটা। সঙ্গে সঙ্গে , "আহ্ .. উহঃ বাবা গোওওও .." বলে চিৎকার করে উঠলেন বন্দনা দেবী।
"কি করলি এটা তুই? পুড়িয়ে দিলি তো ঝুমার হাতটা? এবার ও খাবে কি করে? একটা কাজ যদি তোকে দিয়ে ঠিকঠাক ভাবে হয় .. অপদার্থ! তোকে আর এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। এখানে খাওয়ার সময় কারোর কিছু দরকার হলে আমরা নিজেরাই নিয়ে নেবো, ভাগ শালা এখান থেকে! না হলে আবার সেদিনকার মতো প্যাঁদানি খাবি আমার হাতে .." রজত বণিকের বাজখাঁই গলার ধমক শুনে ছেলেটি সঙ্গে সঙ্গে একপ্রকার দৌড়ে পালিয়ে গেলো ওখান থেকে।
"ছেলেটাকে ওইভাবে বকলেন কেন রজত দা? বেচারার বোধহয় অভ্যাস নেই, তাই ভুল করে ফেলেছে। আমার লাগেনি .." পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য কথাগুলো বললেন বন্দনা দেবী।
"না লাগলে তুমি অত জোরে চিৎকার করে উঠতে নাকি? ফ্রিজে আইস ব্যাগ রয়েছে। চুপচাপ বসে থাকো, আমি নিয়ে আসছি .." এই বলে চেয়ার থেকে তৎক্ষণাৎ উঠে অফিস রুমের বাঁদিকের দেওয়ালের কর্নারে রাখা ১১০ লিটারের ছোট ফ্রিজটার ভেতর থেকে একটা আইস ব্যাগ বের করে নিয়ে এসে বন্দনা দেবীর ঠিক পাশে গিয়ে দাঁড়ালো রজত বাবু। তারপর তার শ্যালকের স্ত্রীর ডান হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে হাতের কব্জির জায়গায় আইস ব্যাগটা বেঁধে দিয়ে ইউসুফের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো, "আমি যতদূর জানি ঝুমা ল্যাটা নয়, ডান হাতেই খায়। কিন্তু এই অবস্থায় ও খাবে কি করে? ওর হাতে তো আইস ব্যাগ বাঁধা রয়েছে। আমার শালার বউ হলেও ও তো তোমার বান্ধবী হয়, তুমি একটু দ্যাখো ব্যাপারটা!
তার পার্টনার রজতের কথাটা যেন লুফে নিলো ইউসুফ। "আমি তো আগেই বলেছি, যখন Yusuf is here, তখন don't fear .. আমি খাইয়ে দেবো তো ঝুমাকে .." এইটুকু বলে বন্দনা দেবীর সামনে রাখা খাবারের প্লেটটা তুলে ধরে, মাংসের ঝোল দিয়ে কিছুটা পোলাও মাখিয়ে নিয়ে ইউসুফ নিজের হাতটা নিয়ে গেলো সৈকতের মায়ের মুখের সামনে।
"আরে, কি করছো তুমি? আমার ছেলে এখানে বসে রয়েছে! আইস ব্যাগটা খুলে দিলে আমি নিজে নিয়েই খেতে পারবো .." এই বলে চেয়ারে বসে থাকা অবস্থাতেই নিজের মুখটা সরিয়ে নিলেন বন্দনা দেবী।
দু'কান কাটা বেহায়া কোনো ব্যক্তি যদি একটি নির্দিষ্ট কর্ম করার জন্য মনে মনে সংকল্প নিয়ে নেয়, তবে তার থেকে তাকে বিরত করা একপ্রকার অসম্ভব হয়ে যায়। "তোমার হাতে ছ্যাঁকা লেগেছে কি লাগেনি .. সেটা বলো আগে?" হাতটা বন্দনা দেবীর মুখের কাছে ধরা অবস্থাতেই জিজ্ঞাসা করলো ইউসুফ।
- "সে তো একটু লেগেইছে .."
- "এখনো জ্বলছে হাতের ওই জায়গাটা?"
- "হুঁ জ্বলছিলো তো .. আইস ব্যাগটা লাগানোর পর একটু কমেছে।"
- "খিদে পায়নি তোমার?"
- "হ্যাঁ .."
- "হাতে ছ্যাঁকা লেগেছে .. এটা ঠিক। তার জন্য আইস ব্যাগ দেওয়ার ফলে জ্বলুনিটা কমছে ধীরে ধীরে .. এটাও ঠিক। তোমার খিদে পেয়েছে .. নিজের মুখেই স্বীকার করলে। অথচ ডান হাতের কব্জিটা বাঁধা থাকার জন্য নিজের হাতে খেতে পারছো না। আমি খাইয়ে দিতে চাইলে শুধু এটা ভেবেই আপত্তি জানাচ্ছ যে, তোমার ছেলে সামনে বসে রয়েছে। কি তাইতো? তোমার মনের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব এখুনি দূর করে দিচ্ছি। ভাই সৈকত, আমি যদি তোর মা'কে খাইয়ে দিই, তাহলে কি তোর কোনো প্রবলেম আছে?"
মটনের থেকে চিকেনটাই বরাবর প্রিয় তার। চিকেন কাটলেটে সবে একটা কামড় বসিয়েছে, সেই মুহূর্তে ইউসুফের এই প্রশ্ন শুনে কিছুটা থতমত খেয়ে গেলো সৈকত। এমতাবস্থায় তার কি করা উচিৎ .. এটা জানার জন্য ছোটবেলা থেকেই তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত না নিতে পারা সৈকত গোবেচারা মুখ নিয়ে তার মায়ের দিকে তাকিয়ে দেখলো, তার মা লজ্জায় মাথা নামিয়ে রেখেছে। উল্টোদিক থেকে কোনোরকম সাহায্য না পেয়ে, এই প্রথম তার কাছ থেকে বাইরের কেউ কোনো কাজ করার জন্য পারমিশন চাইছে এবং অনির্দিষ্টকাল ধরে অপেক্ষা করে ভাবতে থাকলে চলবে না, চটজলদি সিদ্ধান্ত নিতে হবে .. এত কিছুর সম্মিলিত চাপের প্রভাবে, এর পরিণাম কি হতে পারে তার সম্বন্ধে বিন্দুমাত্র জ্ঞান না থাকা সৈকত মিনমিন করে বললো, "না না, আমার প্রবলেমের কি আছে?"
সেই মুহূর্তে বন্দনা দেবী চোখ তুলে তাকিয়ে তার ছেলেকে চোখের ইশারায় বারণ করতে গেলো। ততক্ষণে সৈকত লজ্জাতেই হোক বা নিজের খাবারে মনোনিবেশ করার জন্যই হোক, প্লেটের দিকে নিজের মাথা নামিয়ে নিয়েছে। ফ্র্যাকশন অফ সেকেন্ডের পার্থক্যের জন্য দৃষ্টি বিনিময় না হওয়ায় অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেলো।
"উম্মম্মম্ম, কষা মাংস আর বাসন্তী পোলাওটা মারাত্মক খেতে হয়েছে পার্টনার। গ্রিন সিগনাল তো পেয়েই গেলে ওর ছেলের কাছ থেকে। এবার তাড়াতাড়ি খাইয়ে দাও তোমার বান্ধবীকে! আমি শিওর এটা খেলে ঝুমা আঙুল চাটতে থাকবে .." সৈকতের পাশে বসা তার ছোট পিসেমশাই আগুনে ঘি ঢেলে এইরূপ মন্তব্য করলো। তার পার্টনারের এই কথায় অতি উৎসাহী ইউসুফ পোলাওতে মাংসের ঝোল মাখানো নিজের হাতটা নিয়ে গেলো সৈকতের মায়ের মুখের একদম কাছে। তারপর দৃঢ় অথচ শান্ত গলায় বললো "দেখো তো ঝুমা, খেতে কেমন হয়েছে! ভালো লাগলে পুরোটা চেটেপুটে খেতে হবে কিন্তু!"
ইউসুফ আর তার ননদের স্বামীর দেওয়া প্রত্যেকটা যুক্তির কাছে হেরে গিয়ে, তার অপদার্থ ছেলের নির্বুদ্ধিতায়, এবং অবশ্যই পেটে প্রচন্ড খিদে থাকা সত্ত্বেও সামনে এতো ভালো ভালো খাবার দেখেও খেতে না পারার কারণে নিরুপায় হয়ে তার ছেলের বন্ধুসম সৈকতের হাত থেকে মাংসের ঝোল দিয়ে মাখানো পোলাওটা নিজের মুখে নিলেন বন্দনা দেবী। খাবার গলধঃকরণ করানোর পর সৈকতের মায়ের গোলাপী ঠোঁটে নিজের হাতের ধবধবে সাদা নির্লোম তর্জনীটা স্পর্শ করে ইউসুফ জিজ্ঞাসা করলো "রান্না কেমন হয়েছে ঝুমা?"
রজত বাবুর কথা না হয় আলাদা, সে তার আপন নন্দাই। কিন্তু তার থেকে বয়সে অনেকটাই ছোট তার ছেলের বন্ধুর মতো একজন তাকে বারংবার 'ঝুমা' বলে সম্বোধন করছে এবং তার ছেলের চোখের সামনে খাইয়ে দিচ্ছে, এটা বন্দনা দেবীর কাছে যে কত বড় হিউমিলিয়েশনের, সেটা একমাত্র তিনিই বুঝতে পারছেন। ইউসুফের প্রশ্নে মৃদুস্বরে শুধু, "হুঁ .." বললেন তিনি।
"আরে ওকে খাওয়াতে গিয়ে তো তুমি নিজেই খেতে ভুলে গেলে পার্টনার! তুমিও খাও, এক থালা থেকেই খাও দু'জনে। লাগলে না হয় ওর মধ্যেই আরও নিয়ে নেবে খাবার। এতে অসুবিধার তো কিছু নেই.." তার শ্যালকের স্ত্রীর হিউমিলিয়েশনের মাত্রা বৃদ্ধি করে এইরূপ অসভ্যের মতো উক্তি করলো রজত বণিক।
"হ্যাঁ ঠিকই বলেছো, আমারও বড্ড খিদে পেয়েছে। রান্না যখন তোমার পছন্দ হয়েছে, তাহলে কথা মতো এবার আমার আঙুলটা চেটে পরিষ্কার করে দাও তো সোনা, मेरा मतलब ঝুমা। চেটেপুটে খাবার খেলে তবেই তো তৃপ্তি হয়, isn't it? যে খাচ্ছে তারও আর যে খাওয়াচ্ছে তারও .." এক দলা পোলাও নিজের মুখের মধ্যে পুরে, তারপর মাংসের ঝোল আর সুসিদ্ধ বাসমতি রাইস লেগে থাকা নিজের তর্জনীটা বন্দনা দেবীর ঠোঁটের একদম কাছে নিয়ে গিয়ে আব্দারের সুরে কথাগুলো বললো ইউসুফ।
এইরূপ অনৈতিক আব্দারের, বলা ভালো দাবির প্রত্যুত্তরে কি করবে বা কি বলবে বুঝে উঠতে না পেরে চুপচাপ মুখ বুজে বসে রইলেন বন্দনা দেবী। ছেলে এবং নন্দাইয়ের সামনে বসে থাকা শুধুমাত্র তার কথায় নিজের টিপিকাল আটপৌড়ে গৃহবধুর বেশভূষা পাল্টে মর্ডান হয়ে সেজে আসা সৈকতের মায়ের এরকম দ্বিধাদ্রস্ত মনোভাবে আর একমুহূর্ত অপেক্ষা না করে একগুঁয়ে এবং সুযোগসন্ধানী ইউসুফ বন্দনা দেবীর গোলাপী ঠোঁট ভেদ করে নিজের তর্জনীটা ধীরে ধীরে প্রবেশ করালো তার মুখের মধ্যে। তারপর আগুপিছু করতে লাগলো তার আঙুলটা। ঠিক এক হাত দূরে, চেয়ারের উপর বসে থেকে সৈকত দেখলো, তর্জনীর পর তার মাতৃদেবীর মুখ গহ্বরের মধ্যে নিজের মধ্যমা ঢোকালো তার বন্ধু ইউসুফ। এবং তার সঙ্গে এটাও বেশ ভালোভাবেই লক্ষ্য করলো, তার অসহায় মা চুষতে বাধ্য হচ্ছে বিধর্মী ইউসুফের দুটো আঙুল।
"ওইভাবে হাঁ করে ওদিকে কি দেখছিস? তোর বন্ধু, তোর মা'কে খাওয়াতে থাকুক। ততক্ষণ আমরা এই বাড়ির উপরটা একটু ঘুরে আসি। উপরে স্টুডিও আছে .. চল তোকে দেখিয়ে আনি।" খাওয়া শেষ হয়ে যাওয়া সৈকতের দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বললো রজত বণিক। তার ছোট পিসেমশাইয়ের ওইরকম বাজখাঁই গলার অনুরোধ, আদেশের মতো মনে হলো সৈকতের কাছে। সে চুপচাপ চেয়ার থেকে উঠে পিছু নিলো রজত বাবুর।
সোফায় বসে থাকা অবস্থায় সৈকত লক্ষ্য করলো মাথার উপর ফুল স্পিডে ঘুরতে থাকা পাখার হাওয়ায় মাঝে মাঝে সরে যাওয়া কালো রঙের পাতলা সিফনের শাড়ির আঁচলের আড়ালে উঁকি দেওয়া বিপজ্জনক স্তন বিভাজিকা থেকে শুরু করে চর্বিযুক্ত মোলায়েম ঈষৎ ফোলা তলপেট এবং তার মাঝখানে বেশ বড়ো একটি গভীর উত্তেজক নাভি, স্লিভলেস ব্লাউজের অত্যন্ত সরু স্লিভের আড়াল থেকে বারবার প্রকট হয়ে ওঠা বাহুমূল .. এই সবকিছুই দৃশ্যমান হওয়া স্লিভলেস ব্লাউজ এবং নাভির বেশ কিছুটা নিচে নামিয়ে শাড়ি পরিহিতা তার মায়ের দিক থেকে চোখ ফেরাতে পারছিলো না ইউসুফ আর রজত নামের ওই লোকটা। মুখে সেরকম চড়া মেকআপ না নিলেও হাল্কা ফেস পাউডারের ছোঁয়া, ঠোঁটে গাঢ় লাল লিপস্টিক, স্বামী সোহাগী না হলেও সধবা হওয়ার ফলস্বরূপ অনিচ্ছা সত্ত্বেও সিঁথিতে চওড়া করে দেওয়া সিঁদুর, এবং কপালে লাল রঙের বড়োসড়ো একটি টিপ পড়াতে বন্দনা দেবীর এই রূপ দেখে ব্রহ্মচর্য পালন করা থেকে সংসারধর্ম ত্যাগ করে বাণপ্রস্থে যাওয়া ব্যক্তিদের পর্যন্ত লোম খাড়া হয়ে যাবে .. এটা বললে একটুও অত্যুক্তি করা হয় না।
"আচ্ছা তোমার সঙ্গে ছোকরাটি কে? তোমার ছেলে নাকি? হ্যাঁ ঠিকই তো, ওর বাবার সঙ্গে মুখের মিল রয়েছে বটে। ওকে তো লাস্ট দেখেছিলাম বোধহয় যখন ওর তিন-চার বছর বয়স হবে। নাম কি হে তোমার ছোকরা? কোন ক্লাসে পড়ো? চিনতে পারছো না তো আমাকে? ভাবছো এই লোকটা আবার কোথা থেকে উদয় হলো, যে তোমার মা'কে তার ডাকনাম ধরে ডাকছে? আমি তোমার ছোট পিসেমশাই .." কথাটা বলে আদর করার নাম করে সোফায় বসে থাকা সৈকতের পিঠে বেশ জোরে একটা থাপ্পড় মারলো লোকটা।
প্রচন্ড ব্যথা পেলেও মা আর তার বন্ধু ইউসুফের সামনে প্রেস্টিজ পাংচার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় মুখে একটা মেকি হাসি এনে সোফা থেকে উঠে লোকটার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে নিজের নাম আর তার পড়াশোনার ব্যাপারে জানালো সৈকত। তারপর পুনরায় সোফায় বসে বেশ ভালো করে নিরীক্ষণ করতে লাগলো, তার বন্ধু ইউসুফের বিজনেস পার্টনার ওরফে তার ছোট পিসেমশাইকে। লোকটার চেহারা অনেকটা পাশ্চাত্য সিনেমার মরুপ্রধান শুষ্ক অঞ্চলের বর্গী ঘোড়সওয়ারদের মতো। মধ্য চল্লিশের, রৌদ্রে পুড়ে গায়ের রঙ তামাটে হয়ে যাওয়া, লম্বা-চওড়া চেহারার অধিকারী, মাথার চুল ক্রমশ পাতলা হয়ে যাওয়ার দিকে অগ্রসর হতে থাকলেও গালের প্রায় অর্ধেক পর্যন্ত নেমে আসা মোটা এবং লম্বা জুলফি, নিজের নামের সঙ্গে সাদৃশ্য রেখে গজদন্তের অধিকারী, হাতের বেরিয়ে থাকা অংশ এবং কর্ণ গহ্বরে চুলের আধিক্য দেখলে বোঝা যায় এই ব্যক্তির শরীর কেশ সর্বস্ব। সর্বক্ষণ অস্থির চোখদুটি আপাতদৃষ্টিতে আমুদে মনে হলেও ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখা যায় অপেক্ষাকৃত স্থির বাঁ'চোখের মণি অনেকটা হিংস্র হায়েনার মতো।
★★★★
"প্রায় ১৫-১৬ বছর পর তোমাকে দেখলাম ঝুমা। আগের থেকে একটু মোটা হয়েছো, তবে মুখশ্রীর একটুও পরিবর্তন হয়নি বরং আমি তো বলবো, গ্ল্যামার বেড়ে গেছে তোমার। সর্বোপরি আজ এত ডেয়ারিং ড্রেসআপ করে এসেছো যে, তোমার দিক থেকে চোখ সরাতেই পারছি না। আমার যতদূর মনে পড়ছে নাভির নিচে শাড়ি তুমি আগেও পড়তে। তবে স্লিভলেস ব্লাউজ পড়তে তোমাকে কখনো দেখিনি। সেই যে গো, সেবার জামাইষষ্ঠীর দিন, দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর তোমাদের ছাদে যখন আমি সিগারেট খাচ্ছিলাম, তুমি শুকনো কাপড়গুলো তুলতে এসেছিলে ছাদ থেকে। তোমার দুটো হাতই ব্যস্ত ছিলো দড়ি থেকে ক্লিপগুলো খুলে কাপড় তোলাতে। সেদিন ভীষণ হাওয়া দিচ্ছিলো, আর সেই হাওয়ায় তোমার শাড়ির আঁচলটা বারবার সরে গিয়ে তোমার দাগহীন মসৃণ তলপেট আর বিশাল বড় নাভিটা বেরিয়ে যাচ্ছিলো আমার সামনে। সেদিকে তাকিয়ে আমি মজা করে তোমার উদ্দেশ্যে বলেছিলাম, 'নাভির গর্তটা কি বানিয়েছো গো ঝুমা? এটার মধ্যে তো আরামসে দু-টাকার কয়েন ঢুকে যাবে!' তুমি বলেছিলে, 'ধ্যাৎ কি সব আজেবাজে কথা বলছেন?' আমি তখন তোমার দিকে এগিয়ে গিয়ে, 'বটে? আমি আজেবাজে কথা বলছি? আমার কথা ঠিক না ভুল, এক্ষুনি প্রমাণ করে দিচ্ছি ..' এই বলে নিজের পকেট থেকে একটা দু টাকার কয়েন বের করে একহাতে পেটের উপর থেকে তোমার আঁচলটা সরিয়ে আরেক হাত দিয়ে কয়েনটা ঢুকিয়ে দিলাম তোমার নাভির গর্তের ভেতর। তখনকার দু-টাকার কয়েন আজকালকার দিনের মতো এরকম পাতলা এবং ছোট সাইজের ছিলো না, বেশ বড় ছিলো। পুরোটাই অনায়াসে ঢুকে গিয়েছিলো তোমার নাভির ফুটোর মধ্যে। তুমি তখন কি করবে বুঝে উঠতে না পেরে নাভির গর্তে কয়েনটা ঢোকানো অবস্থাতেই কাপড়গুলো নিয়ে ছাদ থেকে নেমে নিচে দৌড়ে পালালে। মনে পড়ে সেসব দিনের কথা? ওটাই আমার লাস্ট যাওয়া তোমাদের বাড়িতে। তারপর তো একদিন তোমার ওই ক্যালানে, অপদার্থ বরটা বিজনেস থেকে টাকা নিয়ে শেয়ার মার্কেটে খাটাতে গিয়ে সমস্ত টাকা লস হয়ে যাওয়ার দায় শ্বশুরমশাইয়ের কাছে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে চুরির বদনামের মাধ্যমে চাপিয়ে দিয়েছিলো। আমি তো চাকরি করতাম না, তোমার শ্বশুরবাড়ি মানে আমারও শ্বশুরবাড়ির কাপড়ের ব্যবসাটাই দেখতাম তোমার বরের সঙ্গে পার্টনারশিপে। সেই মিথ্যে চুরির অপবাদে সেখান থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর আমাদের জীবনটা একদম অন্য খাতে বইতে শুরু করেছিলো। শুধু স্ট্রাগল, স্ট্রাগল আর স্ট্রাগল। তারপর ধীরে ধীরে নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছি, বলা ভালো ফুলেফেঁপে উঠেছি। আজ আমার কাছে এত টাকা আছে যে, ওই ব্যাটা শান্তির ছেলে শান্তিরঞ্জনের মতো পাঁচটা দোকানদারকে আমি এক হাটে কিনে অন্য হাটে বেচে দিতে পারি।" সৈকত লক্ষ্য করলো কথাগুলো বলতে বলতে প্রথম দিকে যেরকম তার ছোট পিসেমশাইয়ের চোখে লালসার প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠছিলো, পরের দিকে তার মুখমণ্ডলে একটা প্রতিহিংসার ছাপ প্রকট হলো। সেটা অবশ্যই শ্বশুরবাড়ি থেকে তাকে অন্যায় ভাবে বিতাড়িত করে দেওয়ার কথাগুলো বলতে গিয়ে হয়েছে, এটা বলাই বাহুল্য।
প্রথমে তার আজকের শাড়ি পড়া নিয়ে প্রশংসার ছলে ওইরকম সিডাক্টিভ মন্তব্য। তারপর পুরনো দিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে, তার নাভির গর্তে কয়েন ঢুকিয়ে দেওয়ার মতো অশ্লীল ঘটনার উল্লেখ করা। এবং সবশেষে তার স্বামীকে যথেচ্ছ গালমন্দ করে পারিবারিক কেচ্ছার কথা জনসমক্ষে, সর্বোপরি তার নিজের পেটের সন্তানের সামনে প্রকাশ করা .. হঠাৎ করেই ঘটে যাওয়া এইসব ঘটনার সম্মিলিত প্রভাবের ফলস্বরূপ লজ্জায় কুঁকড়ে গিয়েছিলেন বন্দনা দেবী। "আপনার সঙ্গে যেটা হয়েছিলো, সেটা অন্যায়। আমি সেদিনও এটা স্বীকার করেছিলাম, আজও করছি। কিন্তু তখন তো প্রতিবাদ করার কোনো উপায় ছিলো না আমার!" মিনমিন করে কৈফিয়ৎ দেওয়ার মতো কথাগুলো বললো সৈকতের মা।
"hold on পার্টনার, hold on .. তোমাকে surprise দিতে গিয়ে তো সবচেয়ে বড় চমকটা আমিই পেলাম! তুমিই তাহলে ওর sister in law এর হাজব্যান্ড? তবে আমার ঝুমাকে, मेरा मतलब ঝুমাকে তুমি কিন্তু এইভাবে বলতে পারোনা পার্টনার! ও কিন্তু আমাকে বলেছে যে, তোমাদের সঙ্গে অন্যায় হয়েছিলো। তবে এটা ঠিক, ওর বুড়ো-হাবড়া বর'টা সুগারের পেশেন্ট আর হেঁপোরোগী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যথেষ্ট হারামিও বটে, সেটা বুঝতে পারলাম তোমার কথায়।" বন্দনা দেবীকে হিউমিলিয়েশনের হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টায় তার পাশে সরে এসে একেবারে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে, শাড়ির আঁচলটা একপাশে সরে গিয়ে ওনার উন্মুক্ত হয়ে যাওয়া নগ্ন কোমরটা শক্ত করে নিজের হাতে জড়িয়ে ধরে রজত বণিকের উদ্দেশ্যে কথাগুলো বলে সৈকতের মা'কে অতিরিক্ত লজ্জায় ফেলে দিলো ইউসুফ।
"না না, ঝুমাকে আমি দোষারোপ করছি না তো! ওর মতো মিষ্টি স্বভাবের মেয়েই হয় না। ওদের পরিবারে ওই একমাত্র ভালো, বাকি সবকটা ঢ্যামনা। যাগ্গে যা ঘটে গেছে, সেসব কথা তুলে আর লাভ নেই। জামাইষষ্ঠীর ওইদিনের পরে তো আর তোমাদের বাড়িতে যাওয়া হয়নি আমার। কিন্তু মনে মনে ভেবে রেখেছিলাম তোমার সঙ্গে যদি কোনোদিন দেখা হয়, তাহলে আমার ওই দুই-টাকার কয়েনটা ফেরত চাইবো। কোথায় আমার কয়েন? এখনো কি তোমার নাভির ওই গর্তটায় ঢুকিয়ে রেখেছো ওটাকে? হাহাহাহা .. মজা করছিলাম। এখানে দাঁড়িয়েই কি সব কথা হবে? লাঞ্চ দিয়ে দিয়েছে এতক্ষণে বোধহয় আমাদের অফিস রুমে। চলো, ওখানে চলো। একসঙ্গে লাঞ্চ করবো। আর খেতে খেতে কাজের কথাগুলোও সেরে নেওয়া যাবে।" সৈকত দেখলো পুনরায় তার মা'কে অত্যন্ত লজ্জায় ফেলে দিয়ে অসভ্যের মতো এইরূপ উক্তি করে কাঠের পার্টিশনের দিকে যেতে লাগলো তার ছোট পিসেমশাই। তাকে অনুসরণ করলো ইউসুফ এবং সৈকত আর তার মা।
★★★★
অফিস ঘরে ঢুকে দেখা গেলো টেবিলের উপর চিকেন কাটলেট, বাসন্তী পোলাও, মটন কষা আর বিভিন্নরকম মিষ্টান্নের সহযোগে লাঞ্চের সমাহার সাজানো রয়েছে। সামনে এত ভালো ভালো খাবার দেখেও সৈকতের মন কিন্তু এক মুহূর্তের জন্যও শান্ত হতে পারছিলো না। তার বারবার মনে হচ্ছিলো এখানে যা কিছু হচ্ছে, সেটা স্বাভাবিক নয়। কোথাও যেন কিছু একটা গন্ডগোল রয়েছে। সুসজ্জিত অফিস ঘরটির দেওয়াল জুড়ে বিভিন্ন মাঝবয়সী মহিলাদের ছবি লাগানো রয়েছে। তারা কেউ টপ আর লেগিন্স পড়ে, আবার কেউ জিন্স আর টি-শার্ট পড়ে, কেউ আবার শাড়ি পড়ে রয়েছে। বোঝাই গেলো এগুলোই তার মা'কে ইউসুফের বলা সেইসব মহিলা বা গৃহবধূ, যারা লোকাল গার্মেন্টস কোম্পানিগুলির মডেল হওয়ার সুযোগ পেয়েছে।
হঠাৎ করেই অফিস ঘরের ডানদিকের দেয়ালে চোখ গেলো সৈকতের। সেখানে একটি কাঠের ফ্রেমের উপরে our exclusive models লেখা রয়েছে। তার ঠিক নিচে কাঠের ফ্রেমবন্দি চারটি ছবি কোলাজ করে আটকানো আছে সেখানে। কৌতুহলবশত কাঠের ফ্রেমটির দিকে এগিয়ে যেতেই বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠলো সৈকতের। সে তো চেনে এই চারজন মডেলকে, বলা ভালো অভিনেত্রীকে। তার প্রিয় ভারতীয় পর্ণ সাইটের খুব জনপ্রিয় একদম খাঁটি বাঙালি নায়িকা এরা .. সুচরিতা, টিনা, দোলন এবং দিয়া। আরও ভালো করে লক্ষ্য করে সৈকত দেখলো চারজনই শাড়ি পড়ে রয়েছে। কিন্তু অদ্ভুতভাবে প্রত্যেকের শাড়িগুলোই বৃষ্টির জল বা শাওয়ারের নিচে দাঁড়ালে যেরকম ভিজে যায় শাড়ি অথবা অন্য জামাকাপড় ঠিক সেই রকম ভাবেই ভেজা, এবং শাড়ির নিচে সায়া, ব্লাউজ আর ব্রা কোনোটাই পড়েনি এরা। ভিজে জবজব করতে থাকা শাড়ির তলা দিয়ে প্রত্যেকের স্তন এবং স্তনবৃন্ত, আর নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাস স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।
ছবিগুলো দেখেই ভেতর ভেতর গরম হয়ে উঠলো সৈকত। পরক্ষণেই "আমি ওসব জিনিস দেখা বা পড়ার ঊর্ধ্বে চলে গেছি বাওয়া। আমি খবর দেখি না, খবর পড়ি না, খবর তৈরি করি .." ইউসুফের বলা এই কথাগুলো মনে পড়ে যাওয়াতে শিরদাঁড়া দিয়ে একটা ঠান্ডা স্রোত নেমে গেলো সৈকতের। তার মানে কি ইউসুফ ভাই সত্যি সত্যি এদেরকে নিয়ে .. আর ভাবতে পারলো না সৈকত।
"কি করছিস ওখানে? লাঞ্চ দেওয়া হয়েছে তো! খেতে আয়, না হলে এবার ঠান্ডা হয়ে যাবে খাবারগুলো।" ইউসুফের গলার আওয়াজে তৎক্ষণাৎ ছবির সামনে থেকে সরে গিয়ে টেবিলের দিকে এগিয়ে গেলো সৈকত। চারচৌকো টেবিলটিতে ইউসুফ আর তার মা পাশাপাশি বসেছে, উল্টোদিকে সৈকত আর তার পিসেমশাই।
একটা অল্পবয়সী তেইশ চব্বিশ বছরের ছেলে টেবিলে খাবার সার্ভ করে দিচ্ছিলো। ছেলেটার কাঁপা কাঁপা হাতে আনকোরার মতো খাওয়ার পরিবেশন এবং পোশাক-আশাক আর মুখ-চোখ দেখে আর যাই হোক বাবুর্চি বলে মনে হলো না সৈকতের। হয়তো ছেলেটা এই অফিসেরই একজন ফোর্থক্লাস স্টাফ, হয়তো কোনো কারনে আজকেই খাবার সার্ভ করছে .. তাই হয়তো ঠিকঠাক করতে পারছে না। সৈকত লক্ষ্য করলো ছেলেটা তাকে চোখের ইশারায় কিছু বলতে বা বোঝাতে চাইছে, কিন্তু বারংবার চেষ্টা করা সত্ত্বেও বোঝাতে ব্যর্থ হচ্ছিলো। চোখ সৈকতের দিকে থাকায় বন্দনা দেবীর সামনে প্লেটটা রাখার বদলে টেবিলের উপর উল্টো করে রাখা তার ডানহাতের উপর অসাবধানতায় প্রচন্ড গরম থাকা পোলাও এবং মাংসের কাঁচের প্লেটটা রাখলো ছেলেটা। সঙ্গে সঙ্গে , "আহ্ .. উহঃ বাবা গোওওও .." বলে চিৎকার করে উঠলেন বন্দনা দেবী।
"কি করলি এটা তুই? পুড়িয়ে দিলি তো ঝুমার হাতটা? এবার ও খাবে কি করে? একটা কাজ যদি তোকে দিয়ে ঠিকঠাক ভাবে হয় .. অপদার্থ! তোকে আর এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। এখানে খাওয়ার সময় কারোর কিছু দরকার হলে আমরা নিজেরাই নিয়ে নেবো, ভাগ শালা এখান থেকে! না হলে আবার সেদিনকার মতো প্যাঁদানি খাবি আমার হাতে .." রজত বণিকের বাজখাঁই গলার ধমক শুনে ছেলেটি সঙ্গে সঙ্গে একপ্রকার দৌড়ে পালিয়ে গেলো ওখান থেকে।
"ছেলেটাকে ওইভাবে বকলেন কেন রজত দা? বেচারার বোধহয় অভ্যাস নেই, তাই ভুল করে ফেলেছে। আমার লাগেনি .." পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য কথাগুলো বললেন বন্দনা দেবী।
"না লাগলে তুমি অত জোরে চিৎকার করে উঠতে নাকি? ফ্রিজে আইস ব্যাগ রয়েছে। চুপচাপ বসে থাকো, আমি নিয়ে আসছি .." এই বলে চেয়ার থেকে তৎক্ষণাৎ উঠে অফিস রুমের বাঁদিকের দেওয়ালের কর্নারে রাখা ১১০ লিটারের ছোট ফ্রিজটার ভেতর থেকে একটা আইস ব্যাগ বের করে নিয়ে এসে বন্দনা দেবীর ঠিক পাশে গিয়ে দাঁড়ালো রজত বাবু। তারপর তার শ্যালকের স্ত্রীর ডান হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে হাতের কব্জির জায়গায় আইস ব্যাগটা বেঁধে দিয়ে ইউসুফের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো, "আমি যতদূর জানি ঝুমা ল্যাটা নয়, ডান হাতেই খায়। কিন্তু এই অবস্থায় ও খাবে কি করে? ওর হাতে তো আইস ব্যাগ বাঁধা রয়েছে। আমার শালার বউ হলেও ও তো তোমার বান্ধবী হয়, তুমি একটু দ্যাখো ব্যাপারটা!
তার পার্টনার রজতের কথাটা যেন লুফে নিলো ইউসুফ। "আমি তো আগেই বলেছি, যখন Yusuf is here, তখন don't fear .. আমি খাইয়ে দেবো তো ঝুমাকে .." এইটুকু বলে বন্দনা দেবীর সামনে রাখা খাবারের প্লেটটা তুলে ধরে, মাংসের ঝোল দিয়ে কিছুটা পোলাও মাখিয়ে নিয়ে ইউসুফ নিজের হাতটা নিয়ে গেলো সৈকতের মায়ের মুখের সামনে।
"আরে, কি করছো তুমি? আমার ছেলে এখানে বসে রয়েছে! আইস ব্যাগটা খুলে দিলে আমি নিজে নিয়েই খেতে পারবো .." এই বলে চেয়ারে বসে থাকা অবস্থাতেই নিজের মুখটা সরিয়ে নিলেন বন্দনা দেবী।
দু'কান কাটা বেহায়া কোনো ব্যক্তি যদি একটি নির্দিষ্ট কর্ম করার জন্য মনে মনে সংকল্প নিয়ে নেয়, তবে তার থেকে তাকে বিরত করা একপ্রকার অসম্ভব হয়ে যায়। "তোমার হাতে ছ্যাঁকা লেগেছে কি লাগেনি .. সেটা বলো আগে?" হাতটা বন্দনা দেবীর মুখের কাছে ধরা অবস্থাতেই জিজ্ঞাসা করলো ইউসুফ।
- "সে তো একটু লেগেইছে .."
- "এখনো জ্বলছে হাতের ওই জায়গাটা?"
- "হুঁ জ্বলছিলো তো .. আইস ব্যাগটা লাগানোর পর একটু কমেছে।"
- "খিদে পায়নি তোমার?"
- "হ্যাঁ .."
- "হাতে ছ্যাঁকা লেগেছে .. এটা ঠিক। তার জন্য আইস ব্যাগ দেওয়ার ফলে জ্বলুনিটা কমছে ধীরে ধীরে .. এটাও ঠিক। তোমার খিদে পেয়েছে .. নিজের মুখেই স্বীকার করলে। অথচ ডান হাতের কব্জিটা বাঁধা থাকার জন্য নিজের হাতে খেতে পারছো না। আমি খাইয়ে দিতে চাইলে শুধু এটা ভেবেই আপত্তি জানাচ্ছ যে, তোমার ছেলে সামনে বসে রয়েছে। কি তাইতো? তোমার মনের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব এখুনি দূর করে দিচ্ছি। ভাই সৈকত, আমি যদি তোর মা'কে খাইয়ে দিই, তাহলে কি তোর কোনো প্রবলেম আছে?"
মটনের থেকে চিকেনটাই বরাবর প্রিয় তার। চিকেন কাটলেটে সবে একটা কামড় বসিয়েছে, সেই মুহূর্তে ইউসুফের এই প্রশ্ন শুনে কিছুটা থতমত খেয়ে গেলো সৈকত। এমতাবস্থায় তার কি করা উচিৎ .. এটা জানার জন্য ছোটবেলা থেকেই তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত না নিতে পারা সৈকত গোবেচারা মুখ নিয়ে তার মায়ের দিকে তাকিয়ে দেখলো, তার মা লজ্জায় মাথা নামিয়ে রেখেছে। উল্টোদিক থেকে কোনোরকম সাহায্য না পেয়ে, এই প্রথম তার কাছ থেকে বাইরের কেউ কোনো কাজ করার জন্য পারমিশন চাইছে এবং অনির্দিষ্টকাল ধরে অপেক্ষা করে ভাবতে থাকলে চলবে না, চটজলদি সিদ্ধান্ত নিতে হবে .. এত কিছুর সম্মিলিত চাপের প্রভাবে, এর পরিণাম কি হতে পারে তার সম্বন্ধে বিন্দুমাত্র জ্ঞান না থাকা সৈকত মিনমিন করে বললো, "না না, আমার প্রবলেমের কি আছে?"
সেই মুহূর্তে বন্দনা দেবী চোখ তুলে তাকিয়ে তার ছেলেকে চোখের ইশারায় বারণ করতে গেলো। ততক্ষণে সৈকত লজ্জাতেই হোক বা নিজের খাবারে মনোনিবেশ করার জন্যই হোক, প্লেটের দিকে নিজের মাথা নামিয়ে নিয়েছে। ফ্র্যাকশন অফ সেকেন্ডের পার্থক্যের জন্য দৃষ্টি বিনিময় না হওয়ায় অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেলো।
"উম্মম্মম্ম, কষা মাংস আর বাসন্তী পোলাওটা মারাত্মক খেতে হয়েছে পার্টনার। গ্রিন সিগনাল তো পেয়েই গেলে ওর ছেলের কাছ থেকে। এবার তাড়াতাড়ি খাইয়ে দাও তোমার বান্ধবীকে! আমি শিওর এটা খেলে ঝুমা আঙুল চাটতে থাকবে .." সৈকতের পাশে বসা তার ছোট পিসেমশাই আগুনে ঘি ঢেলে এইরূপ মন্তব্য করলো। তার পার্টনারের এই কথায় অতি উৎসাহী ইউসুফ পোলাওতে মাংসের ঝোল মাখানো নিজের হাতটা নিয়ে গেলো সৈকতের মায়ের মুখের একদম কাছে। তারপর দৃঢ় অথচ শান্ত গলায় বললো "দেখো তো ঝুমা, খেতে কেমন হয়েছে! ভালো লাগলে পুরোটা চেটেপুটে খেতে হবে কিন্তু!"
ইউসুফ আর তার ননদের স্বামীর দেওয়া প্রত্যেকটা যুক্তির কাছে হেরে গিয়ে, তার অপদার্থ ছেলের নির্বুদ্ধিতায়, এবং অবশ্যই পেটে প্রচন্ড খিদে থাকা সত্ত্বেও সামনে এতো ভালো ভালো খাবার দেখেও খেতে না পারার কারণে নিরুপায় হয়ে তার ছেলের বন্ধুসম সৈকতের হাত থেকে মাংসের ঝোল দিয়ে মাখানো পোলাওটা নিজের মুখে নিলেন বন্দনা দেবী। খাবার গলধঃকরণ করানোর পর সৈকতের মায়ের গোলাপী ঠোঁটে নিজের হাতের ধবধবে সাদা নির্লোম তর্জনীটা স্পর্শ করে ইউসুফ জিজ্ঞাসা করলো "রান্না কেমন হয়েছে ঝুমা?"
রজত বাবুর কথা না হয় আলাদা, সে তার আপন নন্দাই। কিন্তু তার থেকে বয়সে অনেকটাই ছোট তার ছেলের বন্ধুর মতো একজন তাকে বারংবার 'ঝুমা' বলে সম্বোধন করছে এবং তার ছেলের চোখের সামনে খাইয়ে দিচ্ছে, এটা বন্দনা দেবীর কাছে যে কত বড় হিউমিলিয়েশনের, সেটা একমাত্র তিনিই বুঝতে পারছেন। ইউসুফের প্রশ্নে মৃদুস্বরে শুধু, "হুঁ .." বললেন তিনি।
"আরে ওকে খাওয়াতে গিয়ে তো তুমি নিজেই খেতে ভুলে গেলে পার্টনার! তুমিও খাও, এক থালা থেকেই খাও দু'জনে। লাগলে না হয় ওর মধ্যেই আরও নিয়ে নেবে খাবার। এতে অসুবিধার তো কিছু নেই.." তার শ্যালকের স্ত্রীর হিউমিলিয়েশনের মাত্রা বৃদ্ধি করে এইরূপ অসভ্যের মতো উক্তি করলো রজত বণিক।
"হ্যাঁ ঠিকই বলেছো, আমারও বড্ড খিদে পেয়েছে। রান্না যখন তোমার পছন্দ হয়েছে, তাহলে কথা মতো এবার আমার আঙুলটা চেটে পরিষ্কার করে দাও তো সোনা, मेरा मतलब ঝুমা। চেটেপুটে খাবার খেলে তবেই তো তৃপ্তি হয়, isn't it? যে খাচ্ছে তারও আর যে খাওয়াচ্ছে তারও .." এক দলা পোলাও নিজের মুখের মধ্যে পুরে, তারপর মাংসের ঝোল আর সুসিদ্ধ বাসমতি রাইস লেগে থাকা নিজের তর্জনীটা বন্দনা দেবীর ঠোঁটের একদম কাছে নিয়ে গিয়ে আব্দারের সুরে কথাগুলো বললো ইউসুফ।
এইরূপ অনৈতিক আব্দারের, বলা ভালো দাবির প্রত্যুত্তরে কি করবে বা কি বলবে বুঝে উঠতে না পেরে চুপচাপ মুখ বুজে বসে রইলেন বন্দনা দেবী। ছেলে এবং নন্দাইয়ের সামনে বসে থাকা শুধুমাত্র তার কথায় নিজের টিপিকাল আটপৌড়ে গৃহবধুর বেশভূষা পাল্টে মর্ডান হয়ে সেজে আসা সৈকতের মায়ের এরকম দ্বিধাদ্রস্ত মনোভাবে আর একমুহূর্ত অপেক্ষা না করে একগুঁয়ে এবং সুযোগসন্ধানী ইউসুফ বন্দনা দেবীর গোলাপী ঠোঁট ভেদ করে নিজের তর্জনীটা ধীরে ধীরে প্রবেশ করালো তার মুখের মধ্যে। তারপর আগুপিছু করতে লাগলো তার আঙুলটা। ঠিক এক হাত দূরে, চেয়ারের উপর বসে থেকে সৈকত দেখলো, তর্জনীর পর তার মাতৃদেবীর মুখ গহ্বরের মধ্যে নিজের মধ্যমা ঢোকালো তার বন্ধু ইউসুফ। এবং তার সঙ্গে এটাও বেশ ভালোভাবেই লক্ষ্য করলো, তার অসহায় মা চুষতে বাধ্য হচ্ছে বিধর্মী ইউসুফের দুটো আঙুল।
"ওইভাবে হাঁ করে ওদিকে কি দেখছিস? তোর বন্ধু, তোর মা'কে খাওয়াতে থাকুক। ততক্ষণ আমরা এই বাড়ির উপরটা একটু ঘুরে আসি। উপরে স্টুডিও আছে .. চল তোকে দেখিয়ে আনি।" খাওয়া শেষ হয়ে যাওয়া সৈকতের দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বললো রজত বণিক। তার ছোট পিসেমশাইয়ের ওইরকম বাজখাঁই গলার অনুরোধ, আদেশের মতো মনে হলো সৈকতের কাছে। সে চুপচাপ চেয়ার থেকে উঠে পিছু নিলো রজত বাবুর।
~ পরবর্তী আপডেট কিছুক্ষণের মধ্যেই আসছে ~