27-07-2023, 08:22 PM
(৫)
- "না .. কিন্তু তাতে তোমার কি?"
- "তাতে আমার কি? সেটা বুঝতে পারবে এক্ষুনি। দাঁড়াও, এখনই যাচ্ছি তোমার কাছে। আচ্ছা ধরো আমি এখন তোমার কাছে চলে গেলাম, তাহলে তুমি কি করবে?"
- "ঢুকতেই দেবো না তোমাকে বাড়িতে। আর যদি কোনোভাবে ঢুকেও পড়ো, তাহলে এই দুষ্টু কথাগুলো বলার জন্য আচ্ছা করে কান মুলে দেবো।"
- "তাই? তুমি আমার কান খুলে দেবে? তাহলে আমি তোমার সারা গায়ে কাতুকুতু দিয়ে দেবো। তোমার হাত কাটা নাইটির তলা দিয়ে হাত ঢুকিয়ে তোমার বগলে সুড়সুড়ি দেবো, মাঝে মাঝে চিমটি কাটবো। কখনো আবার নাইটির উপর দিয়ে তোমার বুকদুটোর মাঝখানে নিজের মুখ গুঁজে দেবো।"
- "তুমি না ভীষণ অসভ্য ছেলে! তোমার বন্ধুর মায়ের সঙ্গে এইসব দুষ্টুমি করবে তুমি? আমি তো ভাবতেই পারছি না।"
- "আরে, বন্ধুর মা তো অনেক দূরের ব্যাপার। আমার নিজের মা যদি তোমার মতো এরকম সুন্দরী আর সেক্সি হতো, তাহলে তাকেও ছাড়তাম না। জানো তো আমার একজন মামী আছে, মানে আমার ছোটমামার ওয়াইফ। ওর সঙ্গে আমার বন্ধুর মতো সম্পর্ক। যখনই ওদের বাড়িতে যাই আমরা দু'জনে যা মজা করি, ভাবতে পারবেনা। একদিন দেখি মামী একটা ভীষণ টাইট পাতলা সুতির কাপড়ের হটপ্যান্ট পড়ে রয়েছে। এর ফলে মামীর পাছার দাবনাদুটো আর পাছার মাঝখানের খাঁজটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে। সেই দিকে তাকিয়ে মামীকে জিজ্ঞাসা করলাম .. 'আচ্ছা বলো তো, আমাদের পোঁদজোড়া লম্বালম্বিভাবে বিভক্ত কেন? চওড়ায় বিভাজিত নয় কেন?' মামী উত্তর দিলো .. 'এ আবার কেমন প্রশ্ন? এর answer আমি জানিনা।' আমি বললাম .. 'এর জন্য একমাত্র তোমাদের মতো গুরু নিতম্বিনী মহিলারাই দায়ী। কারণ তাদের পোঁদজোড়া এতটাই বিশাল, মাংসল এবং থলথলে! চওড়ায় বিভাজিত হলে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় থপ থপ থপ থপ করে পশ্চাৎদেশ থেকে হাততালি দেওয়ার মতো আওয়াজ আসতো।' হাহাহাহা .."
- "যেরকম তুমি, সেরকম তোমার মামী .. আমি তোমার মামীর জায়গায় হলে ঠাস করে একটা চড় মেরে দিতাম তোমাকে।"
- "তাই? ঠিক আছে পরে চড় মারার অনেক সুযোগ পাবে, তখন মেরো। তোমার পাছাদুটোও কিন্তু বিশাল সাইজের, মনে হয় যেন দুটো বড় কুমড়ো কেটে এনে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে তোমার পেছনে। ব্রা তো পড়োনি বললে, প্যান্টি পড়েছো? নাকি সেটাও না পড়ে ল্যাংটো পোঁদে শুধু নাইটি পড়ে আমার সঙ্গে চ্যাট করছো?"
- "ছিঃ ছিঃ ছিঃ! তোমার মুখে কি কিছুই আটকায় না?"
- "নাহ্ .. আমার যেটা মনে, সেটাই মুখে। কিন্তু সবাই আমার মতো হতে পারে না। এই যেমন তুমিও কিন্তু মনে মনে ভাবছো, আমি কি পড়ে তোমার সঙ্গে চ্যাট করছি! কিন্তু লজ্জায় জিজ্ঞাসা করতে পারছো না। তোমার জ্ঞাতার্থে জানিয়ে রাখি, আমি এখন পুরো খালি গায়ে খাটের উপর বসে রয়েছি আর একটা কালো রঙের ফ্রেঞ্চি পড়ে রয়েছি নিচে। প্রমাণস্বরূপ এই ফটোটা পাঠালাম।"
- "ইশশশ আমি মোটেই সেটা ভাবছিলাম না, আর তোমার ফটোও দেখতে চাইনি আমি।"
- "দেখতে না চাইলে কি হবে? এখন আমার এই ফটোটা আর আগে যে ফটোটা পাঠিয়েছিলাম, সেই দুটো দেখবে সারা রাত ধরে। ঝুমা চুম্মা দে দে .. একটা কিসি দাও না প্লিজ .."
- "না, একদম না .. আবার দুষ্টুমি হচ্ছে?"
- "প্লিজ প্লিজ প্লিজ একটা চুমু দাও .."
- "নাছোড়বান্দা ছেলের পাল্লায় পড়েছি, কি আর করা যাবে? ঠিক আছে দিলাম নাও .. উম্মম্মম্মা"
- "উম্মম্মম্মাহ উম্মম্মম্মাহ উম্মম্মম্মাহ .. একটা তোমার কপালে, একটা তোমার গালে আর একটা তোমার ঠোঁটে। আচ্ছা বললে না তো প্যান্টি পড়েছো কি না?"
- "তুমি এত খারাপ আর এত অসভ্য কেনো গো? হুঁ পড়েছি .."
- "কোন কালারের? আচ্ছা let me guess, আমার ঝুমা কোন কালারের প্যান্টি পড়েছে সেটা আমাকে guess করতে দাও.. সাদা, right?"
- "হুঁ .."
- "দেখলে তো, আমি আমার ঝুমাকে কতটা চিনে গেছি এই দু'দিনে? তাহলে কালকে আসছো, ফাইনাল তো? বাড়িতে রান্নার ঝামেলা রাখবে না। এখানে ১১টার মধ্যে ঢুকে যাবে, এখানেই লাঞ্চ করবে। আমি এখনই ঠিকানাটা পাঠিয়ে দিচ্ছি .. আচ্ছা শোনো না, একটু সেজেগুজে আসার চেষ্টা করবে। তুমি করতে পারো, এরকম কোনো প্রোডাক্টের মডেল হিসেবে যদি তোমাকে ফিট করা যায়, তাহলে চেষ্টা করে দেখবো। একদম টিপিকাল বাঙালি গৃহবধূদের মতো সেজে আসবে না, এখন থেকেই বলে দিচ্ছি।
- "আচ্ছা, ঠিক আছে, দেখি বাবু জেগে আছে কিনা, ওকে গিয়ে একবার জিজ্ঞাসা করে নি, ও যেতে পারবে কিনা! ও না গেলে কিন্তু আমি একা একা যাবো না! দাঁড়াও তোমাকে এসে জানাচ্ছি।"
★★★★
এতক্ষণ ধরে তার মা আর ইউসুফের হোয়াটসঅ্যাপে লাইভ কথোপকথন পড়তে থাকা সৈকত বুঝতে পারলো, এবার তার মা এই ঘরে আসবে তার সঙ্গে কথা বলতে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো রাত প্রায় পৌনে এগারোটা। ফোনটা অফ করে বালিশের তলায় ঢুকিয়ে রেখে দিয়ে, বিছানা থেকে উঠে দরজার ছিটকানিটা খুলে দিয়ে আবার খাটে এসে সামনে ফিলোসফির একটা মোটা বই খুলে বসলো সে। ঠিক তখনই দরজায় টোকা পড়লো, "বাবু পড়াশোনা করছিস, নাকি শুয়ে পরেছিস?"
"না পড়ছি, দরজা খোলাই আছে, ভেতরে এসো .." সৈকতের গলার আওয়াজ পেয়ে দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলেন বন্দনা দেবী।
"তুই তো সকালে ফোনটা নিয়ে গেলি না! আমার সিমটা তো ফোনের মধ্যেই ঢুকিয়ে দিয়ে গেছিলো তোর ওই বন্ধু। সিমকার্ডটা খুলে যে আমার ছোট ফোনটাতে লাগাবো, সেটাও তো আমি পারিনা। আবার ফোনটা যে অফ করে রাখবো, সেটাও সম্ভব নয়। কারণ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফোন তো আসে! তোর মাসি নন্দনার ফোন আসে, তোর বাবা ফোন করে, তারপরে তোর ঠাকুমা এখন আবার তোর বড় পিসির বাড়ি রয়েছে, সেখান থেকেও ফোন আসতে পারে। তাই মোবাইলটা খোলাই রাখতে হয়েছে। একটা কথা বলতে ভুলে গেছি, তোদের কলেজে ওই ডকুমেন্ট নাকি যেনো হচ্ছে, সেটার জন্য গতকাল আমার মোবাইলে মেসেজ করেছিলো তোর ওই বন্ধু। ফোনটা আমার কাছে আছে বলাতে ও মনে হয় তোকেও মেসেজ করেছে পরে। যাই হোক, কথা প্রসঙ্গে জানতে পারলাম তোর ওই বন্ধু ফিল্মের শ্যুটিং করে। আমার যে শ্যুটিং দেখার বহুদিনের শখ, তুই তো জানিস! কিন্তু আমি বলে দিয়েছি, আমার ছেলে যদি না যায়, তাহলে আমি কোথাও যাবো না। বলছিলাম, কাল একবার যাবি নাকি? ও ঠিকানাও পাঠিয়ে দিয়েছে।
এতক্ষণ ধরে ইউসুফ আর তার মায়ের চ্যাটিং দেখতে থাকার জন্য বন্দনা দেবীর এই ঘরে আসার কারণ আগে থেকেই বুঝতে পেরেছিলো সৈকত। তবে তার মায়ের কথায় আরও কিছু জিনিস খেয়াল করলো সে। প্রথমতঃ তাকে বললেই তো সে ওই স্মার্টফোন থেকে সিমকার্ডটা বের করে তার মায়ের ছোট ফোনে লাগিয়ে দিতো! কিন্তু সেটা না করে তার মা ইউসুফ ভাইয়ের দেওয়া স্মার্টফোনটা এখনো ব্যবহার করার জন্য অনেক কৈফিয়ত দিলো তাকে। তার মানে এটাই দাঁড়ায়, চিরকাল ভালো জিনিসের প্রতি আকাঙ্ক্ষা এবং লোভ সামলাতে না পারা বন্দনা দেবী ডেয়ারি-মিল্ক সিল্ক ক্যাডবেরিটার মতোই এই দামী ফোনটার ভাগও কাউকে দিতে চায় না এবং কাছ ছাড়া করতে চায় না। দ্বিতীয়তঃ নাছোড়বান্দা ইউসুফের হোয়াটসঅ্যাপে ক্রমাগত করতে থাকা মেসেজের জন্যই হোক, কিংবা অন্য কোনো কারণেই হোক, দু'দিন ধরে বন্দনা দেবীর সঙ্গে তার ছেলের বন্ধুর চলতে থাকা হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটিংয়ের কথা, সর্বোপরি তার সঙ্গে দুষ্টু কথা শেয়ার করার অছিলায় উপর্যপুরি নোংরা কথা বলার ব্যাপারটাও চেপে গেলো তার মা। তৃতীয়তঃ মুখে তার মা যতই বলুক না কেনো .. তার ছেলে যদি না যায়, তাহলে সে যাবে না! কিন্তু বন্দনা দেবীর প্রত্যেকটি কথায় তার শ্যুটিং দেখতে যাওয়ার এক অদম্য কৌতূহল ধরা পড়লো সৈকতের কাছে।
আলফা গ্রেট ওরফে ইউসুফের সঙ্গে তার কোথায় কিভাবে আলাপ, এগুলো কিছুই জানেন না বন্দনা দেবী। কিন্তু সৈকত তার বন্ধু ইউসুফের সঙ্গে কথা বলে তার নোংরা অভিসন্ধি সম্পর্কে (যদিও এখনো তার পুরোটাই অজানা, যা ক্রমশ প্রকাশ্য) যেটুকু জেনেছে, তাতে করে ওর পাঠানো ঠিকানায় তার মা'কে নিয়ে শ্যুটিং দেখতে যাওয়ার ব্যাপারে বিশেষ ভরসা পাচ্ছে না সে। এমতাবস্থায় 'ওখানে যাওয়া তাদের জন্য সেফ নয়' এটা বলে তার মা'কে বিরত করতেই পারে সে। কিন্তু "কেন সেফ নয়" এই প্রশ্ন যখন তার মা করবে, তখন কি উত্তর দেবে সৈকত? সে কি বলতে পারবে তার মা'কে যে, কিভাবে, কোন পরিস্থিতিতে আলাপ হয়েছিলো তার আর ইউসুফের? সে কি বলতে পারবে তার মায়ের সম্পর্কে কিরূপ ধারণা পোষণ করে ইউসুফ? সে কি বলতে পারবে তার মায়ের প্রতি ইউসুফের করা নোংরা এবং কুরুচিকর মন্তব্য শুনেও প্রতিবাদ না করে ভেতরে ভেতরে উত্তেজিত হয়েছে সে?
তাই নিজের অপদার্থতা আর ষড়রিপুর প্রথম রিপুর মোহে বশবর্তী হয়ে করে ফেলা তার একটার পর একটা ভুল ঢাকার জন্য, এবং সর্বোপরি ভবিষ্যতে ঘটতে চলা ঘটনাবলীর সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারণা না রেখে তার মা'কে সৈকত বললো, "ঠিক আছে, তোমার যখন সিনেমার শ্যুটিং দেখার ইচ্ছে হয়েছে, আমি নিয়ে যাবো তোমাকে, চিন্তা নেই।"
★★★★
সাধারণত অন্যদিনের মতোই বাড়ি থেকে বেরোলে যে ধরনের পোশাক তিনি পড়েন, অর্থাৎ হাফস্লিভ ব্লাউজ আর তাঁতের কোনো লাইট কালারের শাড়ি পড়ে মার্জিত এবং পরিশীলিত রূপে শ্যুটিং দেখতে যাবেন বলে প্রথমে ঠিক করেছিলেন বন্দনা দেবী। তারপর প্রথমে নিজের বাহ্যিক পুরুষালী রূপ দেখিয়ে, পরবর্তীতে নিজের গুণের মিথ্যা প্রচার করে এবং সবশেষে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে এই ক'দিন ধরে অনবরত নিজের কথার জাদুতে তাকে টিজ এবং সিডিউস করতে করতে তার ভার্চুয়াল চুম্বন আদায় করে ফেলা ইউসুফের বলা , 'একটু সেজেগুজে আসার চেষ্টা করবে। তুমি করতে পারো, এরকম কোনো প্রোডাক্টের মডেল হিসেবে যদি তোমাকে ফিট করা যায়, তাহলে চেষ্টা করে দেখবো। একদম টিপিকাল বাঙালি গৃহবধূদের মতো সেজে আসবে না, এখন থেকেই বলে দিচ্ছি ..' এই কথাগুলো মনে পড়ে যাওয়াতে নিজের নেওয়া সিদ্ধান্তের কিছুটা পরিবর্তন করলেন বন্দনা দেবী।
কালো রঙের ঊর্ধ্বাঙ্গের এবং নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাস আর পেটিকোটের উপর কালো রঙের একটি শিফনের শাড়ি এবং পাতলা সুতির কাপড়ের ওই একই রঙের স্লিভলেস ব্লাউজ পড়লেন বন্দনা দেবী। বাড়ি হোক বা বাইরে, ব্যাঙ্ক হোক বা পোস্ট অফিস, বাজার হোক বা সিনেমা হল .. নাভির নিচে শাড়ি পরার অভ্যাস তার বিয়ের আগের থেকেই। তাই এই দিনও তার অন্যথা ঘটলো না। মুখে অল্প মেকআপ .. বড় লাল রঙের টিপ, হালকা লিপস্টিক এবং চওড়া করে সিঁদুর পরিহিতা তার মায়ের দিকে সৈকতের চোখ পড়তেই চমকে উঠলো সে। কোনো এক অজানা সর্বনাশের আশঙ্কায় বুকটা হুহু করে উঠলো তার।
জীবনে চলার পথে স্থান, কাল, পাত্র বিবেচনা করে চাওয়া-পাওয়ার, আশা-আকাঙ্ক্ষার সীমা থাকা আবশ্যক। তা না হলে লাগামহীন আকাঙ্খা যেমন উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়, অন্যদিকে অজানা মরীচিকার হাতছানিতে ক্ষণিকের ভুলে পদস্খলন ঘটতেও বেশি সময় লাগে না। আগেরদিন হোয়াটসঅ্যাপে না জানালেও, পরেরদিন সকালে ফোন করে জানিয়ে সৈকতদের বাড়ির সামনে গাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিলো ইউসুফ। সদর দরজায় তালা লাগিয়ে সৈকত আর তার মা যখন গাড়িতে বসলো ঘড়িতে তখন সাড়ে দশটা।
বন্দনা দেবী গাড়ির পিছনের সিটে বসলেও, সৈকত তার মায়ের পাশে না বসে সামনে ড্রাইভারের পাশের সিটে বসলো। দু-একটা কথার মাধ্যমে আলাপ হওয়ার পর জানা গেলো ড্রাইভারটির নাম অমর। পাংশুটে মুখমণ্ডলের উপর হাই পাওয়ারের কালো ফ্রেমের চশমা পরিহিত বছর পঞ্চাশের অমরের চেহারাটা অনেকটা শুকনো কাঠের মতো। "আমরা এখন কোথায় যাচ্ছি? মানে আমাদের exact location টা কোথায়? ওখানে ইউসুফ ভাই থাকবে তো?" সৈকতের একটার পর একটা করতে থাকা এইরূপ প্রশ্নে, "গেলেই দেখতে পাবে.." খসখসে গলায় এই একটাই উত্তর দিতে থাকায় এটা বোঝা গেলো যে, লোকটা বাড়তি কথা বলে না এবং এই মুহূর্তে খোলসা করে কিছুই বলতে চায় না।
সৈকত বুঝতে পারলো মুখ সেই অর্থে না চললেও ড্রাইভারির হাতটা কিন্তু বেশ পাকা অমরের। জনবহুল রাস্তা, গাড়ি-ঘোড়া, সরু গলির বাঁক .. নিজের পটু হাতে স্টিয়ারিং ঘুরিয়ে এই সবকিছু খুব সহজেই কাটিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলো ড্রাইভার অমর। ইউসুফ ভাই মোবাইলটা তাকে লুকিয়ে রাখতে বলেছিলো, কারণ তার মা দেখে নিলে হাজারটা প্রশ্ন করবে। তাই মোবাইলটা সঙ্গে করে না আনার জন্য bore হচ্ছিলো সে। গাড়িতে যেতে যেতে ঘাড় ঘুরিয়ে একবার পিছন দিকে তাকিয়ে দেখলো জানলা দিয়ে আসতে থাকা অবিরত হাওয়ার দাপটে বন্দনা দেবীর শাড়ির আঁচলটা বুক থেকে অনেকটাই সরে গিয়ে গভীর স্তন বিভাজিকা প্রকট করে তুলেছে। কিন্তু সেই দিকে তার মায়ের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই, সে একমনে ইউসুফের দেওয়া দামী স্মার্টফোনটা ঘেঁটে যাচ্ছে। তারপর অমরের দিকে চোখ যেতেই চমকে উঠলো সৈকত। সে লক্ষ্য করলো পঞ্চাশ বর্ষীয় শীর্ণকায় ড্রাইভারটি নিজের মোটা কাঁচের চশমার ফাঁক দিয়ে লুকিং গ্লাসের দিকে তাকিয়ে থেকে তার মায়ের বুকের খাঁজ দেখছে।
'এইভাবে অন্যদিকে তাকিয়ে গাড়ি চালালে তো নির্ঘাত এক্সিডেন্ট হবে ..' এই আশঙ্কায় সৈকত ড্রাইভারটিকে কিছু বলতে যাওয়ার মুহূর্তেই ব্রেক কষে গাড়িটা একটা দোতলা বাড়ির সামনে থামলো। জানলা দিয়ে গলা বাড়িয়ে বাড়িটার নিচে শার্টার নামানো লম্বায় বিশাল বড় একটা দোকানের সাইনবোর্ডের দিকে তাকিয়ে সৈকত দেখলো সেখানে লেখা রয়েছে রেস্টুরেন্ট - হাওড়া, শিবপুর। কিন্তু অদ্ভুতভাবে রেস্টুরেন্টের কোনো নাম উল্লেখ করা নেই। বাড়িটা খুব বেশি পুরনো না হলেও শ্রীহীন। চারচৌকো বাক্সের মতো দেখতে রঙচটা বাড়িটির সামনে বা সাইডে কোনো বারান্দা নেই। কালো কাঁচের পাল্লাযুক্ত সবকটা জানলা বন্ধ রয়েছে। বাড়ির সামনে যে রাস্তার উপর তাদের গাড়িটি এসে দাঁড়ালো, রাস্তাটি বেশ সরু। পাশাপাশি দুটি গাড়ি দাঁড়ানো কষ্টকর। বাড়িটার উল্টোদিকে উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা বাগান। পাঁচিলটা এতটাই লম্বা যে, এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত দেখা যাচ্ছে না।
"এসো ঝুমা , we're waiting for you .." ইউসুফের গলার আওয়াজে ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনদিকে তাকিয়ে সৈকত দেখলো গাড়ির ডানদিকের দরজাটা খুলে হাসিমুখে তার মা'কে গাড়ি থেকে নামতে ইশারা করলো তার বন্ধু। সে দেখলো, তার মা কপট রাগ দেখিয়ে তার বন্ধুটির দিকে কটমট করে তাকিয়ে ঘাড় নাড়িয়ে ফিসফিস করে কিছু বললো। তার মা কি বলেছে সেটা শুনতে না পেলেও সৈকত এটা ভালোমতোই বুঝতে পারলো .. হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে যাই বলুক না কেনো, তার সামনে তার মা'কে ডাকনাম ধরে ডেকে 'তুমি' করে বলাতে বেজায় লজ্জা পেয়েছেন বন্দনা দেবী।
অতঃপর সৈকত আর তার মা গাড়ি থেকে নেমে ইউসুফকে অনুসরণ করে বাড়িটার মধ্যে ঢুকলো। বাইরের সাইনবোর্ড দেখে যেটাকে রেস্টুরেন্ট বলে মনে হয়েছিলো সৈকতের, ভেতরে প্রবেশ করে দেখলো .. একতলাটা অনেকটা এ্যাড এজেন্সির অফিসের মতো দেখতে। বাইরে থেকে দেখে বাড়িটাকে যতটা রঙচটা এবং শ্রীহীন মনে হয়েছিলো, ভেতরে ঢোকার পর দেখা গেলো ততটাই ঝাঁ চকচকে। দরজা দিয়ে ঢুকেই একটা বেশ বড়সড়ো প্রায় সাতশো স্কয়্যার ফিটের প্রতীক্ষালয় বা ওয়েটিং রুম গোছের একটি ঘর। মার্বেল দিয়ে বাঁধানো মেঝের উপর গদিতে মোড়ানো হাল ফ্যাশনের গুটিকয়েক সোফা সাজানো রয়েছে। ঘরটির মাঝ বরাবর কাঠের ফ্রেম এবং কাঁচের পার্টিশনের অপর প্রান্তে বেশ বড় আকারের দুটি ঘর দেখা যাচ্ছে। ঘর দুটিকে দেখে অফিস রুম বলেই মনে হলো সৈকতের।
নিচের বড় ঘরটিতে প্রবেশ করার পর বন্দনা দেবী এবং সৈকতকে সোফায় বসার ইশারা করে, "আমি একটু অফিস থেকে আসছি .." এইটুকু বলে কাঠের পার্টিশনের ওই দিকে চলে গেলো ইউসুফ। এর মিনিট পাঁচেক পর একজনকে সঙ্গে করে নিয়ে পুনরায় বড় ঘরটায় প্রবেশ করলো সে। "আলাপ করিয়ে দিই, ইনি মিস্টার রজত বণিক। আমার বিজনেস পার্টনার, এই বাড়িটার ইনিই মালিক, এবং আমি যে ফিল্মগুলোতে অভিনয় করি, সেগুলোর ডিরেক্টর এবং প্রডিউসার এই ভদ্রলোক।"
ইউসুফ পরিচয় করিয়ে দেওয়ার পর তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটার দিকে নজর যেতেই সৈকত লক্ষ্য করলো তার মা বন্দনা দেবী ভীষণরকম চমকে গিয়ে সোফা থেকে উঠে দাঁড়ালো।
~ পরবর্তী আপডেট কিছুক্ষণের মধ্যেই আসছে ~